Announcement

Collapse
No announcement yet.

[৪র্থ পর্ব] আরব্য রজনীর নতুন অধ্যায় || নির্বাসনের চিরকুট ||সূচনা

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • [৪র্থ পর্ব] আরব্য রজনীর নতুন অধ্যায় || নির্বাসনের চিরকুট ||সূচনা

    .

    ||আরব্য রজনীর নতুন অধ্যায় ||নির্বাসনের চিরকুট ||
    ( সূচনা )
    .
    ৯/১১ এর হামলার লক্ষ্য ছিল অ্যামেরিকাকে দক্ষিণ এশিয়ায় একটি যুদ্ধে টেনে আনা। ২০০৮ এর ২৬/১১ মুম্বাই হামলা ছিল হুশিয়ারি — আল-কায়েদা তাদের যুদ্ধকে পূর্ব দিকে বিস্তৃত করছে এবং মধ্য এশিয়ার দেশগুলো থেকে শুরু করে ভারত হয়ে বাংলাদেশের সীমানা পর্যন্ত অঞ্চলটিতে এমন আরো ঘটনাই আগামীতে ঘটবে। আল-কায়েদার আদর্শ ও দৃষ্টিভঙ্গি অনুযায়ী এটি হল “শেষ জমানার যুদ্ধ” -এর প্রস্তুতি, নবী মুহাম্মাদ (সাঃ) হাদিসে যার ভবিষ্যৎবাণী করে গেছেন। হাদিস অনুযায়ী শেষ জমানার যুদ্ধের পটভূমি হিসেবে বর্তমান ইরান, আফগানিস্তান, পাকিস্তান এবং মধ্য এশিয়া নিয়ে গঠিত অঞ্চলের কথা বলা হয়েছে। যা প্রাচীন খুরাসান নামে পরিচিত। হাদিস অনুযায়ী পশ্চিমের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত লড়াইয়ের আগে, শেষ জমানার যুদ্ধের প্রথম ময়দান হবে খুরাসান। আর সর্বশেষ যুদ্ধ হবে মধ্য প্রাচ্যে, ফিলিস্তিনসহ দখলকৃত সব মুসলিম ভূমির মুক্তির জন্য।
    .

    .
    জাস্ট পেস্ট লিঙ্কঃ https://justpaste.it/nc-pbr4

    আল-কায়েদার লক্ষ্য হল, সেই সময় আসার আগে, বিশ্বের শক্তিশালী রাষ্ট্রগুলোকে আফগানিস্তানের দুর্গম, কঠিন মাটিতে এক অসম্ভব যুদ্ধের ফাঁদে আটকে ফেলা। যার পেছনে মূল উদ্দেশ্য হল মধ্য এশিয়া থেকে বাংলাদেশ পর্যন্ত পশ্চিমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের ময়দান বিস্তৃত করার আগেই, তাদের শক্তিকে নিঃশেষ করে ফেলতে তাদেরকে বাধ্য করা।

    ৯/১১ এর হামলার কয়েক বছর পর, ২০০৯ এর অক্টোবরে, আল-কায়েদার মিলিটারী কমিটির চেয়ারম্যান, এবং গ্রেফতার হওয়া মার্কিন নাগরিক ডেভিড হ্যাডলির দেয়া তথ্য অনুযায়ী ২০০৮ এর ২৬/১১ মুম্বাই হামলার প্রধান পরিকল্পনাকারী কমান্ডার মুহাম্মাদ ইলিয়াস কাশ্মীরী, আমাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তাদের ভবিষ্যত পরিকল্পনার একটি ছবি তুলে ধরেছিলেন। তিনি বলেছিলেনঃ

    .
    “আমরা এ যুদ্ধের প্ল্যান করেছি বড় শয়তান (আমেরিকা) এবং তার মিত্রদের এই জলাভূমিতে (আফগানিস্তান) আটকে ফেলার কথা মাথায় রেখে। আফগানিস্তান হল বিশ্বের মধ্যে এমন এক বিরল জায়গা, যেখানে একজন শিকারীর ফাঁদ পাতার জন্য সব ধরণের সুযোগ রয়েছে। আমরা মনে করি মরুভূমি, নদী, পাহাড়, এমনকি শহরাঞ্চলেও ফাঁদ পাতা সম্ভব। আমরা বিশ্বব্যাপীআমেরিকার চক্রান্তসমূহে বিরক্ত এবং আমরা আমেরিকার মৃত্যুর লক্ষ্যে কাজ করছি যাতে এই দুনিয়াকে শান্তি ও ন্যায়ের জায়গাতে পরিণত করতে পারি। আত্ম-অহংকারে ভরপুর এই শয়তান আফগানদেরকে অসহায় মূর্তির মত মনে করে, কোন রকমের পালটা আক্রমন কিংবা প্রতিশোধের হুমকি ছাড়াই, যাদেরকে সহজেই চারদিক থেকে থেকে আমেরিকান যুদ্ধযন্ত্র তথা ওয়ার মেশিন দ্বারা আক্রমণ করা যেতে পারে।”। (এশিয়ান টাইমস অনলাইন, অক্টোবর ১৫, ২০০৯ ইংরেজি)
    .
    ২০০১ এ শুরু হওয়া পশ্চিমাদের বিরুদ্ধে আল-কায়েদার যুদ্ধের বীজ রোপন করা হয়েছিল ১৯৮০র দশকে দখলদার সোভিয়েত ইউনিয়নের বিরুদ্ধে এক দশক ধরে চলা জিহাদের সময়ই। আফগান যোদ্ধাদের সাথে যোগ দেয়ার জন্য আফগানিস্তানে আসা আরবদের মোটা দাগে দুই ভাগে ভাগ করা যায়- ইয়েমেনী এবং মিশরীয়। নিজ দেশের আলেমদের দ্বরা অনুপ্রাণিত হয়ে কেবল ধর্মীয় আবেগের টানে আফগানিস্তানে আসা আরবদের বেশির ভাগই যোগ দেয় ইয়েমেনী ক্যাম্পে। যখন তারা যুদ্ধে ব্যস্ত থাকতো না, তাদের সময় কাটতো ব্যায়াম আর দিনভর কঠোর মিলিটারী ট্রেনিংয়ে। তারা নিজেদের খাবার নিজেরাই রান্না করতো এবং এশার নামাযের পরপরই ঘুমিয়ে পড়ত। ৮০ দশকের শেষ দিকে আফগান জিহাদ যখন সমাপ্তির দিকে ধাবিত হচ্ছিল, এই জিহাদীদের বেশির ভাগই নিজ নিজ দেশে ফিরে যায়। আবার অনেকে বিয়ে করে আফগান অথবা পাকিস্তানীদের সাথে মিলেমিশে সেখানেই থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।। আল-কায়েদার চিন্তাধারার লোকেরা শেষের এই মানুষগুলোকে বলতো দরবেশ(সহজ-সরল)।

    অন্যদিকে মিশরীয় ক্যাম্পে এমন বহু লোক ছিল যাদের চিন্তা ছিল তীব্রভাবে রাজনৈতিক ও আদর্শিক দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে অনুপ্রাণিত। যদিও তাদের বেশির ভাগই ছিল মুসলিম ব্রাদারহুডের সদস্য, কিন্তু বিপ্লবের মাধ্যমে সমাজে পরিবর্তন আনার বদলে গণতন্ত্র এবং নির্বাচনের ওপর জোর দেয়ায় সংগঠনটির ওপর তারা নাখোশ ছিল। আফগান জিহাদ এই সমমনা মানুষগুলোকে একত্রিত করেছিল। তাদের মধ্যে অনেকে ছিল ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার এবং অন্যরা ছিল মিশরীয় সেনাবাহিনীর প্রাক্তন অফিসার এবং ড. আইমান আয-যাওয়াহিরীর (বর্তমানে আল-কায়েদার আমির) আন্ডারগ্রাউন্ড সংগঠন “মিশরীয় ইসলামি জিহাদ” –এর সদস্য।


    ১৯৮১ সালে মিশরের প্রেসিডেন্ট আনওয়ার সাদাতের হত্যাকান্ডের জন্য ড. যাওয়াহিরীর এই সংগঠনটি দায়ী ছিল। ইসরায়েলের সাথে ক্যাম্প ডেভিডে শান্তি চুক্তি করার কারণে আনওয়ার সাদাতকে হত্যা করা হয়। এ চিন্তাধারার সকলেই দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করতো আরব বিশ্বের সর্বনাশ ও হতাশার পেছনে মূল কারণ হল অ্যামেরিকা এবং মধ্য প্রাচ্যে তাদের দালাল সরকারগুলো। মিশরীয় ক্যাম্পটি ছিল যাওয়াহিরীর অধীনে এবং এশার নামাযের পর তাদের সময় কাটতো আরব বিশ্বের সমসাময়িক নানা সমস্যা নিয়ে আলোচনায়। এই ক্যাম্পের নেতারা সবচেয়ে শক্তভাবে যে মেসেজ বা বার্তাটি প্রচার করতো তা হল, মুসলিম দেশগুলোর সামরিক বাহিনীগুলোকে আদর্শিকভাবে অনুপ্রাণিত করার জন্য চেষ্টা করা উচিত।

    ১৯৯০ এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে যখন আফগান প্রেসিডেন্ট প্রফেসর বুরহানুদ্দীন রব্বানী ও তার প্রভাবশালী প্রতিরক্ষা মন্ত্রী আহমেদ শাহ মাসুদ, বিন লাদেনকে সুদান থেকে আফগানিস্তানে আসার সুযোগ দিলে মিশরীয় ক্যাম্পটি বহু লোককে তার অধীনে নিয়ে আসে। বিভিন্ন মুয়াসকার তথা ট্রেনিং ক্যাম্প পরিচালনার মাধ্যমে তারা ভবিষ্যত যুদ্ধের জন্য স্ট্র্যাটিজি(কৌশল) শেখানো শুরু করে। যতোদিনে তালেবান আফগানিস্তানে একটি প্রভাবশালী শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়, ততদিনে মিশরীয় ক্যাম্প তাদের কৌশলগুলো চূড়ান্ত করে ফেলেছে। যার মধ্যে সবচেয়ে গুরত্বপূর্ণ কৌশলগুলো ছিলঃ

    দুর্নীতিগ্রস্ত এবং স্বৈরাচারী মুসলিম সরকারগুলো বিরুদ্ধে প্রচারণা চালানো, জনগনের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করা, তাদেরকে টার্গেট বানানো যাতে করে রাষ্ট্র, শাসক এবং জাতির সাথে যাদের সম্পর্ক আছে সেই সাধারণ মানুষদের চোখে এই শাসকবর্গের ভাবমূর্তি ধ্বংস হয়ে যায়।
    মুসলিম দুর্দশার পেছনে আমেরিকার ভূমিকার প্রতি মনোযোগ আকর্ষন করা। অ্যামেরিকাই যে ইসরায়েল এবং মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর অত্যাচারী শাসকবর্গকে সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে এ সত্য সবার সামনে স্পষ্ট করে তোলা।

    এই ছিল সোভিয়েতদের বিরুদ্ধে আফগান জিহাদের সময়কার অবস্থা এবং এই সময়ই মিশরীয় ক্যাম্প সারা বিশ্ব থেকে জড়ো হওয়া বহু মুসলিম যুবকের মনকে প্রস্তুত (ও প্রভাবিত) করেছিল।
    .
    .

    (চলবে ইনশাআল্লাহ)
    .

  • #2
    সুপ্রিয় ভাই,অপেক্ষার পালা শেষ হলো,আল্লাহ আমাকে আপনাকে আমাদেরকে কবুল কঅরুন, আমীন।
    ولو ارادوا الخروج لاعدواله عدةولکن کره الله انبعاثهم فثبطهم وقیل اقعدوا مع القعدین.

    Comment


    • #3
      মাশাআল্লাহ ভাই খুব সুন্দর হয়েছে
      জিহাদই হলো মুমিন ও মুনাফিকের মাঝে
      পার্থক্যকারী একটি ইবাদাহ

      Comment


      • #4
        link ta to kaj korse na
        আল্লাহ ও তার রাসূল(স) কে কটূক্তি করা যদি তোমাদের বাক স্বাধীনতার অংশ হয়ে থাকে
        তাহলে জেনে রাখ
        তোদের ঘাড় থেকে মাথাকে আলাদা করাও আমাদের পবিত্র ধর্মের অংশ

        Comment


        • #5
          জাযাকাল্লাহ, পড়ে ভাল লাগল। আর অপেক্ষায় আছি, কবে যে আমাদের বিজয়ের দিন আসবে!! মুসলিমদের নির্যাতিত হওয়ার দিন শেষ হবে!! আর আল্লাহর বিধাল চালু হবে। আল্লাহ সেই দিনের আগমনকে খুব দ্রুত করুন!
          আশপাশের সমস্ত পরিবেশটা জুলুমে ভরে গেছে। আমাদের সমাজগুলো অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়েগেছে।

          Comment


          • #6
            আল্লাহ, আপনি আমাদের মুজাহিদ হিসেবে কবুল করুন,আমীন।
            আল্লাহ আমাদের ঈমানী হালতে মৃত্যু দান করুন,আমিন।
            আল্লাহ আমাদের শহিদী মৃত্যু দান করুন,আমিন।

            Comment


            • #7
              আল্লাহ আমাদেরকে আপনার দ্বীনের জন্য জান কোরবান করার তাওফিক দান করুন ৷
              মৃত্যু ও বন্দিত্বের ভয় ঝেড়ে ফেলে চলুন ঝাঁপিয়ে পড়ি ইসলামের শত্রুদের বিরুদ্ধে।

              Comment


              • #8
                মাশাআল্লোহ ॥
                খুবই রোমাঞ্চকর সিরিজ!
                চালিয়ে যান ভাই ইনশাআল্লাহ!

                Comment

                Working...
                X