কেন আমি আল কায়দায় অংশগ্রহণ করলাম
মূল
শায়খ আবু মুসআব মুহাম্মদ উমায়ের আল কালাবী আল আওলাকী রহ.
ভাষান্তর
আবু হামযা আল হিন্দী
লেখকের ভূমিকা
‘তাঈফায়ে মানসূরাহ’ বা সাহায্যপ্রাপ্ত দলের গুণাবলী আমি তাদের মাঝে অন্যদের তুলনায় অধিক পেয়েছি। ইসলামী দলসমূহের মধ্যে চারিত্রিক দিক থেকে আমি তাদেরকে সর্বোত্তম পেয়েছি এবং আল্লাহর জন্য ভ্রাতৃত্ব বন্ধন বা ইসলামী ভ্রাতৃত্বের ক্ষেত্রে তাদেরকে আমি একটি আদর্শ ইসলামী দল হিসেবে দেখেছি। আমি দেখতে পেয়েছি যে, আল কায়েদা ও অন্যান্য মুজাহিদগণ সবচে’ কঠিন ও অন্ধকার সময়ে সাহায্য বঞ্চিত হচ্ছে। অথচ তারা ইসলামের সুরক্ষার জন্য বিশ্বের পরাশক্তিগুলোর মুখোমুখি হচ্ছে। আমি দেখেছি, তারা আল্লাহর জন্যই বিদ্বেষ পোষণ করে এবং তাগূতের সাথে সম্পর্কচ্ছেদ করে। অন্যদের তুলনায় তারা মিল্লাতে ইবরাহীমকে বেশি দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরেছে। আমি যা বলছি এমনিতেই বলছি না। বিস্তারিত বর্ণনার সময় আশা করি আপনারও একই বোধ হবে। তারা আল্লাহর রাস্তায় নিজেদের জান-মাল উৎসর্গ করে দিয়েছে। আমি তাদের পথে চলে এতটাই সুখ ও শান্তি লাভ করেছি যা পূর্বে কখনো পাই নি। সুতরাং হে সম্মানিত আলেমগণ, হে তালিবুল ইলম ভাইগণ, আপনাদের ভাইদের ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় করুন। তাদের সহযোগিতা পরিত্যাগ করবেন না।
মুজাহিদদের প্রতি_বিশেষ করে আল কায়েদার প্রতি_সদয় হোন। তাদের থেকে আপনাদের দূরে থাকা বা অন্যকে দূরে রাখা তাগূত, ইহুদী ও খ্রিস্টানদের স্বার্থসিদ্ধি করবে। আপনারা হয়ত তা টেরও পাবেন না। মুজাহিদদের ভুলগুলো ন্যায়সঙ্গত দৃষ্টিতে দেখুন এবং শরীয়তের নীতিমালার আলোকে তাদের ভুলগুলো যাচাই করুন, সূরা বাকারায় আব্দুল্লাহ ইবনে জাহশ রাদি.এর ‘সারিয়্যা’র ঘটনায় যেমনটি আপনারা পান এবং তাদের সাথে নববী আচরণ করুন যেমন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ওহুদ যুদ্ধে করেছিলেন এবং হযরত উসামা, খালিদ রা. ও মক্কা-বিজয়ের পর ইসলামগ্রহণকারী অন্যান্য সাহাবাগণের সাথে হুনাইনের যুদ্ধে করেছিলেন। যদি আল কায়েদার একাধিক ভুল থেকে থাকে (তবে তাতে তেমন কোন সমস্য নেই।) কারণ জিহাদের ক্ষেত্রে সাহাবাদের থেকেও অনেক ভুল বা পদস্খলন ঘটেছে। ভুল অবশ্যই অস্বীকার্য, কিন্তু এই ভুল সমস্ত কীর্তিকে নষ্ট করে দিতে পারে না এবং এই ভুলের কারণে এতটা নিন্দা করা অনুচিত যে, তা শরীয়তের নির্ধারিত সীমা অতিক্রম করে যায়।
(হে আলেম ও তালিবুল ইলমগণ,) যদি আপনারা আল কায়েদার ভুলগুলোর এতই নিন্দা করেন তাহলে আপনারা জিহাদ থেকে আপনাদের বসে থাকা, মুজাহিদদের সাহায্য না করা, আপনাদের কতিপয়ের তাগুতকে সমর্থন ও সহযোগিতা করা, উম্মতকে জিহাদের শিক্ষা না দেওয়া এবং ‘ইদাদ’ ওয়াজিব হওয়া সত্ত্বেও তা না করার কারণে কেন নিজেদের ভর্ৎসনা করেন না? সুতরাং আপনাদের ভাইদের ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় করুন। জেনে রাখুন, তাদের সাহায্য করা মানে ইসলামকেই সাহায্য করা এবং তাদের পরাজয় ইসলামেরই ক্ষতির কারণ হবে।
আমি জানি, অনেক বিরোধী তালিবুল ইলম এই মাসআলাগুলোর ক্ষেত্রে আপত্তি উত্থাপিত করেছে অন্যের অন্ধ অনুসরণে। তাদের অবশ্যই আরেকবার ভেবে দেখা উচিত তাদের আরোপিত আপত্তিগুলো নিয়ে।
আমি আল কায়েদার মানহাজকে গ্রহণ করেছি চল্লিশটি কারণে। আমি আল্লাহর কাছে তাওফিক ও ইখলাস প্রার্থনা করি এবং আশা করি যে, তিনি এই লেখাটি সত্যান্বেষী ব্যক্তির জন্য কল্যাণের পথপ্রদর্শক বানাবেন।
এই লেখাটি সকাল-সন্ধ্যায় তৈরি হয়ে যায়নি; বরং এটা দীর্ঘ গবেষণা, গভীর চিন্তাভাবনা ও দলিল খোঁজাখুঁজির ফল।
(হে মন,) কষ্ট করো, জীবন তো খুবই ছোট, আল্লাহর কাছেই তো হবে আমাদের প্রত্যাবর্তন। সুতরাং পথের বন্ধুরতা যেন তোমার মনে ভীতি সঞ্চার না করে। তাহলে তুমি নিন্দিত হবে এবং লজ্জায় পড়বে। সত্য তো স্পষ্ট এবং আলোকিত, মিথ্যা অস্পষ্ট এবং ঘোলাটে। তুমি তাদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না যারা সঠিক পথের উপর শান্তির পথকে প্রাধান্য দিয়েছে।
সুতরাং হে পাঠক, আপনি ন্যায়বিচারক হন এবং দ্রুত সমালোচনা করতে যাবেন না; বরং পড়ুন ও চিন্তা করুন। এবং সতর্ক থাকুন এমন ব্যক্তিদের থেকে যারা কতিপয় বিষয়ের তাত্ত্বিক আলোচনা করে, অথচ কর্মক্ষেত্রে তার বিপরীত করে। জেনে রাখুন, রিজাল (মনীষী) দিয়ে সত্যকে চেনা যায় না, সত্য দিয়েই রিজাল (মনীষী) চিনতে হয়।
যদি এই চল্লিশটি কারণ আপনার জন্য যথেষ্ট না হয় তবে নিজেকে অন্তত আরেকবার জিজ্ঞেস করুন এবং তাদের প্রতি মন্দ আক্রমণাত্মক দৃষ্টিদানকারী হয়ে থাকলে আপনার আক্রমণকে লঘু করুন। জেনে রাখবেন, তারা এক মহান লক্ষ্যের উপর প্রতিষ্ঠিত আছে এবং তাদের কাছে তাদের পক্ষে এমন দলিল আছে যা অন্যদের কাছে নেই।
হে আল কায়েদার প্রতি তীর নিক্ষেপকারীগণ, এই পৃষ্ঠাগুলো সত্যানুসন্ধিৎসা নিয়ে পড়ুন এবং এই বিষয়টি উপলব্ধি করুন যে, আপনাদের মুজাহিদ ভাইদের তিরস্কার থেকে ইসলামের শত্রুরাই সর্বপ্রথম ফায়দা হাসিল করছে। আপনারা গোপন হস্তসমূহের ধোঁকা থেকে সতর্ক থাকুন।
وَاللَّهُ غَالِبٌ عَلَى أَمْرِهِ وَلَكِنَّ أَكْثَرَ النَّاسِ لَا يَعْلَمُونَ
‘আল্লাহ তাঁর কার্য সম্পাদনে অপ্রতিহত; কিন্তু অধিকাংশ মানুষ তা জানে না।’
আপনাদের তালিবুল ইলম ভাই
আবু মুসআব আল-আওলাকী
জিলহজ্ব ১৪৩০হি.
১.কারণ তারা জিহাদের পথ অবলম্বন করেছে।
আমি আল কায়েদায় অংশগ্রহণ করেছি। কারণ তারা জিহাদের পথে চলেছে আর জিহাদই হল উম্মাহর লাঞ্ছনা দূরীকরণ এবং উম্মাহর হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনার একমাত্র শরীয়ত নির্দেশিত পন্থা। এই সময় মুসলিম উম্মাহ একটি দুর্বলতার স্তর অতিক্রম করছে। ইসলামী দলগুলোও খিলাফাহ ফিরিয়ে আনার জন্য বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করে যাচ্ছে। ইসলামী খিলাফাহ ফিরিয়ে আনার জন্য তাদের কর্মপন্থায় ভিন্নতা দেখা দেয়। যেমন,
১. কেউ কেউ এমন একটি ইসলামী দলে যুক্ত হয়ে কাজ করাকে উত্তম মনে করছে, যারা কিতালের চিন্তা প্রত্যাখ্যান করে সমাজে প্রচলিত আইনের গণ্ডির মধ্যে থেকে দাওয়াতী কার্যক্রম চালিয়ে যাবে।
২. কেউ কেউ বর্তমান শাসকদের ইসলাম বিরোধী মনোভাব ও কুফরি প্রকাশ পাওয়া সত্ত্বেও তাদেরকে শরয়ী শাসক (খলীফা) মনে করে এবং তাদের আনুগত্য আবশ্যক জ্ঞান করে।
৩. কেউ কেউ শিক্ষা-দীক্ষাকে অগ্রগণ্য মাধ্যম হিসেবে গণ্য করছে।
৪. কেউ কেউ দাওয়াতের উদ্দেশ্যে সেবামূলক সংস্থা ও সাংগঠনিক কার্যক্রমকে উত্তম মনে করছে।
কিন্তু আল কায়েদা মনে করে, উম্মাহর বর্তমান অবস্থা থেকে উত্তরণের একমাত্র পথ হল আল্লাহর রাস্তায় ‘জিহাদ’ করা। আর এটাই হচ্ছে শরয়ী পদ্ধতি যে ব্যাপারে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলআইহি ওয়া সাল্লামের সুস্পষ্ট বর্ণনা রয়েছে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
সুতরাং জিহাদই হল একমাত্র চিকিৎসা। আল্লাহ তাআলা বলেন,
আল্লাহ তাআলা আরো বলেন,
আল কায়েদা আমাদের মুরতাদ শাসকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করাকেও জিহাদ মনে করে। কারণ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
প্রিয় পাঠক, আপনি নিশ্চয় জানেন যে, মানবরচিত আইন কুফর। আল্লাহ বলেন,
হে মুসলিম ভাই, তুমি কি চাও যে, আমেরিকান ট্যাংকে চড়ে আফগানিস্তানে আসা কোন ব্যক্তি মুসলমান হোক? তুমি কি কাউকে ইরাকবাসীদের জিহাদ ছেড়ে ভোটাভুটির প্রতি আহ্বান করার অনুমতি দিবে? তুমি কি তাকে ক্ষমা করবে, যে এমন দুই ব্যক্তির হুকুমের মাঝে কোন পার্থক্য করে না, যাদের একজন কোন ক্ষেত্রেই আল্লাহর নাযিলকৃত বিধান দিয়ে ফয়সালা করে না আর অপরজন নির্দিষ্ট কিছু ক্ষেত্রে আল্লাহর নাযিলকৃত বিধান অনুযায়ী ফায়সালা করে না? ফলে সে এখনকান শাসকদের_যারা শরীয়তকে পরিবর্তন করে দিয়েছে, ইহুদি ও খ্রিস্টানদের বন্ধু বানিয়েছে এবং ইসলামের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে_বনু উমাইয়া ও বনু আব্বাসের শাসকদের সাথে তুলনা করে_যারা শরীয়ত দিয়ে বিচারকার্য পরিচালনা করত এবং আল্লাহর রাস্তায় জিহাদের জন্য সৈন্য প্রেরণ করতো, কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে আল্লাহর নাযিলকৃত বিধান মানত না।
আল কায়েদা জিহাদের পথে চলেছে, আর যারা জিহাদের পথে চলে বিরোধীরা কিংবা সাহায্য পরিত্যাগকারীরা তাদের কোন ক্ষতি করতে পারে না। যদি তুমি এই বিষয়ে দ্বিধাগ্রস্ত হও তবে তোমার দ্বিধা ছেড়ে এই কুরআনী আয়াতগুলো অনুসরণের তীব্র আকাঙ্ক্ষা নিয়ে সম্মানের সাথে একটু চিন্তা করে পড় এবং মানুষের কথাবার্তার প্রতি মোটেও ভ্রুক্ষেপ করো না; যদিও তারা চমকপ্রদ কথা বলে। আল্লাহ বলেন,
কেউ যদি বলে, ‘যুদ্ধ করে যদি কোন ফায়দা হয় এবং কাফিরদের শক্তি প্রতিহত করা যায় তবেই আমরা যুদ্ধ করবো; আর যদি কাফিরদের শক্তি প্রতিহত করা না যায় তাহলে আমরা যুদ্ধ করবো না।’ তার প্রতিউত্তরে আমরা বলবো, আজকের যুদ্ধে কাফেরদের শক্তি প্রতিহত হবে কি হবে না এটা কে নির্ধারণ করে দিবে? উত্তর হবে, মুজাহিদগণই নির্ধারণ করে দিবে; কেননা তারা যুদ্ধ সম্বন্ধে সবচে’ বেশি অবহিত, আর তারাই তো যুদ্ধের ময়দানে অবতীর্ণ হয়েছে এবং শত্রুর প্রকৃত অবস্থা অনুধাবন করেছে। কাফিরদরে শক্তি সম্পর্কে এমন ব্যক্তি কিন্তু কিছুই জানাতে পারবে না যে কাফেরদের শক্তিকে বড় করে দেখে এবং যুদ্ধে যায় না; বরং কখনো কাফেরদের শক্তি বর্ধনে কুচক্রী মিথ্যাবাদী মিডিয়ার দ্বারা প্রতারিত হয়। মোটকথা, মুজাহিদগণই এই বিষয় সবচে’ বেশি অবহিত। তাই তো আমরা দেখতে পাই, তারা আফগানিস্তান, ইরাক ও আন্যান্য জায়গায় বিজয় লাভ করছেন এবং কুফরী শক্তগুলো পরাজিত হচ্ছে। অনুগ্রহ ও কৃপা তো আল্লাহরই।
(আলেমদের প্রতি একটি পরামর্শ : আলেমগণ চিকিৎসা বা আন্য কোন বিষয়ে কিছু বলতে চাইলে যেমন ঐ শাস্ত্রের বিশেষজ্ঞদের সাথে পরামর্শ করে থাকেন তেমনি জিহাদের ক্ষেত্রেও মুজাহিদদের সাথে পরামর্শ করা উচিৎ। কারণ জিহাদের ক্ষেত্রে মুজাহিদদেরে অভিমতটাই সঠিক হয়। কেননা তারা ময়দানের বিষয়াবলীতে অভিজ্ঞ।)
পরবর্তী পর্বগুলোও অতি শীঘ্রই দেয়া হবে ইনশাআল্লাহ.... আপনাদের নেক দোআয় ভুলবেন না...
মূল
শায়খ আবু মুসআব মুহাম্মদ উমায়ের আল কালাবী আল আওলাকী রহ.
ভাষান্তর
আবু হামযা আল হিন্দী
লেখকের ভূমিকা
الحمد لله الهادي إلى الصواب، وأشهد أن لا إله إلا الله الكريم الوهاب، وأشهد أن سيدنا محمد رسول الله من آتاه الله الحكمة وفصل الخطاب، اللهم صل وسلم وبارك عليه وعلى آله وصحبه ومن أحيا سنته إلى يوم الدين... أما بعد:
আল্লাহ তাআলা যখন কোন কিছুর ইচ্ছা করেন তখন তিনি নিজেই তার উপায়-উপকরণ তৈরি করে দেন। আমি কোনদিন কল্পনাও করতাম না যে,আমি আল কায়েদার সদস্য হবো। কারণ আল কায়েদা সম্পর্কে মিডিয়া যেমন ব্যাপকভাবে বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা চালাচ্ছিল তেমনি কতিপয় আলেম ও তালিবুল ইলমও একই কাজে লিপ্ত হচ্ছিলো; যারা হয়ত সরকারী আলেম বা হকপন্থী আলেম, কিন্তু এক্ষেত্রে তাদের পদস্খলন হয়েছে। জনৈক কবির বক্তব্যে তাদের অবস্থার পরিপূর্ণ বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে,رام نفعا فضر من غير قصد ومن البر ما يكون عقوقا
‘সে উপকার করতে চেয়েছে, কিন্তু অনিচ্ছায় ক্ষতি করে বসেছে। কিছু কিছু সদ্ব্যব্যবহার দুর্ব্যবহারও হয়ে থাকে।’
অতঃপর যখন আমি ঐ মাসআলাগুলো নিয়ে গবেষণা করলাম_যার ব্যাপারে বিরোধীদের পক্ষ থেকে আল কায়েদার উপর আপত্তি উত্থাপিত হয়_ তখন আমি দেখলাম ইসলামের মৌলিক বিষয়গুলোর ক্ষেত্রে আল কায়েদার কারো সাথে কোন দ্বিমত নেই। কিন্তু বর্তমান ইজতিহাদী কিছু বিষয়ে তাদের মতভিন্নতা রয়েছে। আর ইজতিহাদী বিষয়ে মতভিন্নতা থাকাটাই স্বাভাবিক।‘তাঈফায়ে মানসূরাহ’ বা সাহায্যপ্রাপ্ত দলের গুণাবলী আমি তাদের মাঝে অন্যদের তুলনায় অধিক পেয়েছি। ইসলামী দলসমূহের মধ্যে চারিত্রিক দিক থেকে আমি তাদেরকে সর্বোত্তম পেয়েছি এবং আল্লাহর জন্য ভ্রাতৃত্ব বন্ধন বা ইসলামী ভ্রাতৃত্বের ক্ষেত্রে তাদেরকে আমি একটি আদর্শ ইসলামী দল হিসেবে দেখেছি। আমি দেখতে পেয়েছি যে, আল কায়েদা ও অন্যান্য মুজাহিদগণ সবচে’ কঠিন ও অন্ধকার সময়ে সাহায্য বঞ্চিত হচ্ছে। অথচ তারা ইসলামের সুরক্ষার জন্য বিশ্বের পরাশক্তিগুলোর মুখোমুখি হচ্ছে। আমি দেখেছি, তারা আল্লাহর জন্যই বিদ্বেষ পোষণ করে এবং তাগূতের সাথে সম্পর্কচ্ছেদ করে। অন্যদের তুলনায় তারা মিল্লাতে ইবরাহীমকে বেশি দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরেছে। আমি যা বলছি এমনিতেই বলছি না। বিস্তারিত বর্ণনার সময় আশা করি আপনারও একই বোধ হবে। তারা আল্লাহর রাস্তায় নিজেদের জান-মাল উৎসর্গ করে দিয়েছে। আমি তাদের পথে চলে এতটাই সুখ ও শান্তি লাভ করেছি যা পূর্বে কখনো পাই নি। সুতরাং হে সম্মানিত আলেমগণ, হে তালিবুল ইলম ভাইগণ, আপনাদের ভাইদের ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় করুন। তাদের সহযোগিতা পরিত্যাগ করবেন না।
মুজাহিদদের প্রতি_বিশেষ করে আল কায়েদার প্রতি_সদয় হোন। তাদের থেকে আপনাদের দূরে থাকা বা অন্যকে দূরে রাখা তাগূত, ইহুদী ও খ্রিস্টানদের স্বার্থসিদ্ধি করবে। আপনারা হয়ত তা টেরও পাবেন না। মুজাহিদদের ভুলগুলো ন্যায়সঙ্গত দৃষ্টিতে দেখুন এবং শরীয়তের নীতিমালার আলোকে তাদের ভুলগুলো যাচাই করুন, সূরা বাকারায় আব্দুল্লাহ ইবনে জাহশ রাদি.এর ‘সারিয়্যা’র ঘটনায় যেমনটি আপনারা পান এবং তাদের সাথে নববী আচরণ করুন যেমন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ওহুদ যুদ্ধে করেছিলেন এবং হযরত উসামা, খালিদ রা. ও মক্কা-বিজয়ের পর ইসলামগ্রহণকারী অন্যান্য সাহাবাগণের সাথে হুনাইনের যুদ্ধে করেছিলেন। যদি আল কায়েদার একাধিক ভুল থেকে থাকে (তবে তাতে তেমন কোন সমস্য নেই।) কারণ জিহাদের ক্ষেত্রে সাহাবাদের থেকেও অনেক ভুল বা পদস্খলন ঘটেছে। ভুল অবশ্যই অস্বীকার্য, কিন্তু এই ভুল সমস্ত কীর্তিকে নষ্ট করে দিতে পারে না এবং এই ভুলের কারণে এতটা নিন্দা করা অনুচিত যে, তা শরীয়তের নির্ধারিত সীমা অতিক্রম করে যায়।
(হে আলেম ও তালিবুল ইলমগণ,) যদি আপনারা আল কায়েদার ভুলগুলোর এতই নিন্দা করেন তাহলে আপনারা জিহাদ থেকে আপনাদের বসে থাকা, মুজাহিদদের সাহায্য না করা, আপনাদের কতিপয়ের তাগুতকে সমর্থন ও সহযোগিতা করা, উম্মতকে জিহাদের শিক্ষা না দেওয়া এবং ‘ইদাদ’ ওয়াজিব হওয়া সত্ত্বেও তা না করার কারণে কেন নিজেদের ভর্ৎসনা করেন না? সুতরাং আপনাদের ভাইদের ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় করুন। জেনে রাখুন, তাদের সাহায্য করা মানে ইসলামকেই সাহায্য করা এবং তাদের পরাজয় ইসলামেরই ক্ষতির কারণ হবে।
আমি জানি, অনেক বিরোধী তালিবুল ইলম এই মাসআলাগুলোর ক্ষেত্রে আপত্তি উত্থাপিত করেছে অন্যের অন্ধ অনুসরণে। তাদের অবশ্যই আরেকবার ভেবে দেখা উচিত তাদের আরোপিত আপত্তিগুলো নিয়ে।
আমি আল কায়েদার মানহাজকে গ্রহণ করেছি চল্লিশটি কারণে। আমি আল্লাহর কাছে তাওফিক ও ইখলাস প্রার্থনা করি এবং আশা করি যে, তিনি এই লেখাটি সত্যান্বেষী ব্যক্তির জন্য কল্যাণের পথপ্রদর্শক বানাবেন।
এই লেখাটি সকাল-সন্ধ্যায় তৈরি হয়ে যায়নি; বরং এটা দীর্ঘ গবেষণা, গভীর চিন্তাভাবনা ও দলিল খোঁজাখুঁজির ফল।
(হে মন,) কষ্ট করো, জীবন তো খুবই ছোট, আল্লাহর কাছেই তো হবে আমাদের প্রত্যাবর্তন। সুতরাং পথের বন্ধুরতা যেন তোমার মনে ভীতি সঞ্চার না করে। তাহলে তুমি নিন্দিত হবে এবং লজ্জায় পড়বে। সত্য তো স্পষ্ট এবং আলোকিত, মিথ্যা অস্পষ্ট এবং ঘোলাটে। তুমি তাদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না যারা সঠিক পথের উপর শান্তির পথকে প্রাধান্য দিয়েছে।
يُريدُ المَرءُ أن يُعطى مناهُ ويأبى الله إلا ما يشـاء
وكلُّ شديدةٍ نزلت بقومٍ سيأتي بعد شدتِها رخاء
وكلُّ شديدةٍ نزلت بقومٍ سيأتي بعد شدتِها رخاء
“মানুষ চায় তার ইচ্ছা পুরন হোক, কিন্তু আল্লাহ যা ইচ্ছা করেন তাই হয়। যে সম্প্রদায়ের উপরই দুর্দশা আপতিত হয়েছে সেই দুর্দশার পর অবশ্যই সুখ আসে।”
যেই বিষয়গুলো আমি আলোচনা করবো তা এমন নয় যে কেবল তাদের মাঝেই পাওয়া যাবে। কিন্তু গুণগুলোর সমন্বয় কেবল তাদের মাঝেই হয়েছে। সুতরাং হে পাঠক, আপনি ন্যায়বিচারক হন এবং দ্রুত সমালোচনা করতে যাবেন না; বরং পড়ুন ও চিন্তা করুন। এবং সতর্ক থাকুন এমন ব্যক্তিদের থেকে যারা কতিপয় বিষয়ের তাত্ত্বিক আলোচনা করে, অথচ কর্মক্ষেত্রে তার বিপরীত করে। জেনে রাখুন, রিজাল (মনীষী) দিয়ে সত্যকে চেনা যায় না, সত্য দিয়েই রিজাল (মনীষী) চিনতে হয়।
যদি এই চল্লিশটি কারণ আপনার জন্য যথেষ্ট না হয় তবে নিজেকে অন্তত আরেকবার জিজ্ঞেস করুন এবং তাদের প্রতি মন্দ আক্রমণাত্মক দৃষ্টিদানকারী হয়ে থাকলে আপনার আক্রমণকে লঘু করুন। জেনে রাখবেন, তারা এক মহান লক্ষ্যের উপর প্রতিষ্ঠিত আছে এবং তাদের কাছে তাদের পক্ষে এমন দলিল আছে যা অন্যদের কাছে নেই।
হে আল কায়েদার প্রতি তীর নিক্ষেপকারীগণ, এই পৃষ্ঠাগুলো সত্যানুসন্ধিৎসা নিয়ে পড়ুন এবং এই বিষয়টি উপলব্ধি করুন যে, আপনাদের মুজাহিদ ভাইদের তিরস্কার থেকে ইসলামের শত্রুরাই সর্বপ্রথম ফায়দা হাসিল করছে। আপনারা গোপন হস্তসমূহের ধোঁকা থেকে সতর্ক থাকুন।
وَاللَّهُ غَالِبٌ عَلَى أَمْرِهِ وَلَكِنَّ أَكْثَرَ النَّاسِ لَا يَعْلَمُونَ
‘আল্লাহ তাঁর কার্য সম্পাদনে অপ্রতিহত; কিন্তু অধিকাংশ মানুষ তা জানে না।’
আপনাদের তালিবুল ইলম ভাই
আবু মুসআব আল-আওলাকী
জিলহজ্ব ১৪৩০হি.
১.কারণ তারা জিহাদের পথ অবলম্বন করেছে।
আমি আল কায়েদায় অংশগ্রহণ করেছি। কারণ তারা জিহাদের পথে চলেছে আর জিহাদই হল উম্মাহর লাঞ্ছনা দূরীকরণ এবং উম্মাহর হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনার একমাত্র শরীয়ত নির্দেশিত পন্থা। এই সময় মুসলিম উম্মাহ একটি দুর্বলতার স্তর অতিক্রম করছে। ইসলামী দলগুলোও খিলাফাহ ফিরিয়ে আনার জন্য বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করে যাচ্ছে। ইসলামী খিলাফাহ ফিরিয়ে আনার জন্য তাদের কর্মপন্থায় ভিন্নতা দেখা দেয়। যেমন,
১. কেউ কেউ এমন একটি ইসলামী দলে যুক্ত হয়ে কাজ করাকে উত্তম মনে করছে, যারা কিতালের চিন্তা প্রত্যাখ্যান করে সমাজে প্রচলিত আইনের গণ্ডির মধ্যে থেকে দাওয়াতী কার্যক্রম চালিয়ে যাবে।
২. কেউ কেউ বর্তমান শাসকদের ইসলাম বিরোধী মনোভাব ও কুফরি প্রকাশ পাওয়া সত্ত্বেও তাদেরকে শরয়ী শাসক (খলীফা) মনে করে এবং তাদের আনুগত্য আবশ্যক জ্ঞান করে।
৩. কেউ কেউ শিক্ষা-দীক্ষাকে অগ্রগণ্য মাধ্যম হিসেবে গণ্য করছে।
৪. কেউ কেউ দাওয়াতের উদ্দেশ্যে সেবামূলক সংস্থা ও সাংগঠনিক কার্যক্রমকে উত্তম মনে করছে।
কিন্তু আল কায়েদা মনে করে, উম্মাহর বর্তমান অবস্থা থেকে উত্তরণের একমাত্র পথ হল আল্লাহর রাস্তায় ‘জিহাদ’ করা। আর এটাই হচ্ছে শরয়ী পদ্ধতি যে ব্যাপারে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলআইহি ওয়া সাল্লামের সুস্পষ্ট বর্ণনা রয়েছে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
إذا تبايعتم بالعينة وأخذتم أذناب البقر ورضيتم بالزرع وتركتم الجهاد، سلط الله عليكم ذلاً لا ينزعه حتى ترجعوا إلى دينكم
‘যখন তোমরা ‘ঈনাহ’ নামক সুদের ব্যবসায় জড়িয়ে পড়বে এবং গরুর লেজ ধরে কেবল চাষ-বাস নিয়েই সন্তুষ্ট হয়ে যাবে আর জিহাদ পরিত্যাগ করবে তখন আল্লাহ তোমাদের উপর এমন লাঞ্ছনা চাপিয়ে দিবেন; যা তোমাদের থেকে ততক্ষণ পর্যন্ত দূর করবেন না যতক্ষণ না তোমরা তোমাদের দীনে(জিহাদে) ফিরে আস।’ (আবু দাউদ)সুতরাং জিহাদই হল একমাত্র চিকিৎসা। আল্লাহ তাআলা বলেন,
قَاتِلُوهُمْ يُعَذِّبْهُمُ اللَّهُ بِأَيْدِيكُمْ وَيُخْزِهِمْ وَيَنْصُرْكُمْ عَلَيْهِمْ وَيَشْفِ صُدُورَ قَوْمٍ مُؤْمِنِينَ*وَيُذْهِبْ غَيْظَ قُلُوبِهِمْ وَيَتُوبُ اللَّهُ عَلَى مَنْ يَشَاءُ وَاللَّهُ عَلِيمٌ حَكِيمٌ
তোমরা তাদের সাথে লড়াই করো; আল্লাহ তাআলা তাদেরকে তোমাদের হাতে শাস্তি দিবেন, তাদেরকে লাঞ্ছিত করবেন,তাদের বিরুদ্ধে তোমাদের সাহায্য করবেন ও মুমিনদের চিত্ত প্রশান্ত করবেন এবং তাদের অন্তরের ক্রোধ দূর করবেন। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা তার প্রতি ক্ষমাপরায়ণ হন। আল্লাহ সর্বজ্ঞ,প্রজ্ঞাময়। (তাওবা, আয়াত ১৪ ও ১৫) আল্লাহ তাআলা আরো বলেন,
وَقَاتِلُوهُمْ حَتَّى لَا تَكُونَ فِتْنَةٌ وَيَكُونَ الدِّينُ كُلُّهُ لِلَّهِ
তোমরা তাদের সাথে যুদ্ধ করতে থাকো যতক্ষণ না ফেতনা নির্মূল হয় এবং দীন পরিপূর্ণ আল্লাহর হয় (অর্থাৎ আল্লাহর দীন সামগ্রিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়)। (সূরা আনফাল, ৩৯)আল কায়েদা আমাদের মুরতাদ শাসকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করাকেও জিহাদ মনে করে। কারণ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
ولا تنازعوا الأمر أهله، إلا أن تروا كفراً بواحاً عندكم من الله فيه برهان.
তোমরা শাসকদের আনুগত্য পরিত্যাগ কর না, তবে যদি তোমরা এমন প্রকাশ্য কুফর দেখতে পাও যার ব্যাপারে তোমাদের কাছে আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রমাণ রয়েছে ( তবে তার আনুগত্য পরিত্যাগ করো)। (বুখারী ও মুসলিম) সুতরাং এই বিষয়টির সমাধানের জন্য কোন ব্যাখ্যা বা দর্শনের প্রয়োজন নেই। আমাদের কাজ শুধু জিহাদের পথে চলা, যাতে এই উম্মাহ থেকে লাঞ্ছনা দূরীভূত হয় এবং আমরা পরপিূর্ণভাবে কাফের ও মুরতাদদের থেকে মুক্ত হতে পারি।প্রিয় পাঠক, আপনি নিশ্চয় জানেন যে, মানবরচিত আইন কুফর। আল্লাহ বলেন,
وَقَاتِلُوهُمْ حَتَّى لَا تَكُونَ فِتْنَةٌ وَيَكُونَ الدِّينُ كُلُّهُ لِلَّهِ.
তোমরা তাদের সাথে লড়াই করে যাও যতক্ষণ না ফিতনা নির্মূল হয় এবং দীন পরিপূর্ণ আল্লাহর হয়ে যায় (অর্থাৎ আল্লাহর দীন সামগ্রিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়)। (সূরা আনফাল, আয়াত : ৩৯) কিন্তু এখন দীন পুরোটা আল্লাহর হয়ে যায় নি এবং আল্লাহর দীন সামগ্রিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হয় নি। এ অবস্থায় মুসলমানদের করণীয় সম্পর্কে শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ. বলেন, فإذا كان بعض الدين لله وبعضه لغير الله وجب القتال حتى يكون الدين كله لله
যদি দীন কিছু আল্লাহর হয় আর কিছু আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো হয় তবে ততক্ষণ পর্যন্ত কিতাল করা ওয়াজিব যতক্ষণ না পুরো দীন আল্লাহর জন্য হয়ে যায়। (আল-ফাতাওয়াল কুবরা, ৫/৫৩৪) হে মুসলিম ভাই, তুমি কি চাও যে, আমেরিকান ট্যাংকে চড়ে আফগানিস্তানে আসা কোন ব্যক্তি মুসলমান হোক? তুমি কি কাউকে ইরাকবাসীদের জিহাদ ছেড়ে ভোটাভুটির প্রতি আহ্বান করার অনুমতি দিবে? তুমি কি তাকে ক্ষমা করবে, যে এমন দুই ব্যক্তির হুকুমের মাঝে কোন পার্থক্য করে না, যাদের একজন কোন ক্ষেত্রেই আল্লাহর নাযিলকৃত বিধান দিয়ে ফয়সালা করে না আর অপরজন নির্দিষ্ট কিছু ক্ষেত্রে আল্লাহর নাযিলকৃত বিধান অনুযায়ী ফায়সালা করে না? ফলে সে এখনকান শাসকদের_যারা শরীয়তকে পরিবর্তন করে দিয়েছে, ইহুদি ও খ্রিস্টানদের বন্ধু বানিয়েছে এবং ইসলামের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে_বনু উমাইয়া ও বনু আব্বাসের শাসকদের সাথে তুলনা করে_যারা শরীয়ত দিয়ে বিচারকার্য পরিচালনা করত এবং আল্লাহর রাস্তায় জিহাদের জন্য সৈন্য প্রেরণ করতো, কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে আল্লাহর নাযিলকৃত বিধান মানত না।
আল কায়েদা জিহাদের পথে চলেছে, আর যারা জিহাদের পথে চলে বিরোধীরা কিংবা সাহায্য পরিত্যাগকারীরা তাদের কোন ক্ষতি করতে পারে না। যদি তুমি এই বিষয়ে দ্বিধাগ্রস্ত হও তবে তোমার দ্বিধা ছেড়ে এই কুরআনী আয়াতগুলো অনুসরণের তীব্র আকাঙ্ক্ষা নিয়ে সম্মানের সাথে একটু চিন্তা করে পড় এবং মানুষের কথাবার্তার প্রতি মোটেও ভ্রুক্ষেপ করো না; যদিও তারা চমকপ্রদ কথা বলে। আল্লাহ বলেন,
فَقَاتِلْ فِي سَبِيلِ اللَّهِ لَا تُكَلَّفُ إِلَّا نَفْسَكَ وَحَرِّضِ الْمُؤْمِنِينَ عَسَى اللَّهُ أَنْ يَكُفَّ بَأْسَ الَّذِينَ كَفَرُوا وَاللَّهُ أَشَدُّ بَأْسًا وَأَشَدُّ تَنْكِيلًا
তুমি আল্লাহর রাস্তায় যুদ্ধ করো; তোমাকে শুধু তোমার নিজের জন্যই দায়ী করা হবে আর মুমিনগণকে উদ্বুদ্ধ কর, আশা করা যায় আল্লাহ কাফিরদের শক্তি প্রতিহত করবেন। আল্লাহ শক্তিতে প্রবলতর এবং শাস্তিদানে কঠোরতর। (নিসা, আয়াত:৮৪)কেউ যদি বলে, ‘যুদ্ধ করে যদি কোন ফায়দা হয় এবং কাফিরদের শক্তি প্রতিহত করা যায় তবেই আমরা যুদ্ধ করবো; আর যদি কাফিরদের শক্তি প্রতিহত করা না যায় তাহলে আমরা যুদ্ধ করবো না।’ তার প্রতিউত্তরে আমরা বলবো, আজকের যুদ্ধে কাফেরদের শক্তি প্রতিহত হবে কি হবে না এটা কে নির্ধারণ করে দিবে? উত্তর হবে, মুজাহিদগণই নির্ধারণ করে দিবে; কেননা তারা যুদ্ধ সম্বন্ধে সবচে’ বেশি অবহিত, আর তারাই তো যুদ্ধের ময়দানে অবতীর্ণ হয়েছে এবং শত্রুর প্রকৃত অবস্থা অনুধাবন করেছে। কাফিরদরে শক্তি সম্পর্কে এমন ব্যক্তি কিন্তু কিছুই জানাতে পারবে না যে কাফেরদের শক্তিকে বড় করে দেখে এবং যুদ্ধে যায় না; বরং কখনো কাফেরদের শক্তি বর্ধনে কুচক্রী মিথ্যাবাদী মিডিয়ার দ্বারা প্রতারিত হয়। মোটকথা, মুজাহিদগণই এই বিষয় সবচে’ বেশি অবহিত। তাই তো আমরা দেখতে পাই, তারা আফগানিস্তান, ইরাক ও আন্যান্য জায়গায় বিজয় লাভ করছেন এবং কুফরী শক্তগুলো পরাজিত হচ্ছে। অনুগ্রহ ও কৃপা তো আল্লাহরই।
(আলেমদের প্রতি একটি পরামর্শ : আলেমগণ চিকিৎসা বা আন্য কোন বিষয়ে কিছু বলতে চাইলে যেমন ঐ শাস্ত্রের বিশেষজ্ঞদের সাথে পরামর্শ করে থাকেন তেমনি জিহাদের ক্ষেত্রেও মুজাহিদদের সাথে পরামর্শ করা উচিৎ। কারণ জিহাদের ক্ষেত্রে মুজাহিদদেরে অভিমতটাই সঠিক হয়। কেননা তারা ময়দানের বিষয়াবলীতে অভিজ্ঞ।)
পরবর্তী পর্বগুলোও অতি শীঘ্রই দেয়া হবে ইনশাআল্লাহ.... আপনাদের নেক দোআয় ভুলবেন না...
Comment