সংশয়ঃ
ইলম শিক্ষাকালীন অন্য কোন ফিকির করা কি ক্ষতিকর?
ইলম শিক্ষাকালীন অন্য কোন ফিকির করা কি ক্ষতিকর?
আলেম ও তালেবুল ইলমদের মধ্যে একটা বিষয় ব্যপক ভাবে প্রচারিত হয়। মাদ্রাসা পড়াকালীন ভিন্ন কোন ফিকিরের সাথে যুক্ত হওয়া যাবে না, কোন দ্বীনি জামাতের সাথেও যুক্ত হওয়া যাবে। এখানে কোন পার্থক্য ছাড়াই সবকিছুকেই তারা উদ্দেশ্য করে থাকেন। আর বলা হয় যদি কেহ এমন কাজ করে তাহলে ভাল আলেম হতে পারবে না, উম্মাহর জন্যে বড় কোন খেদমত করতে পারবে না। আসলেই কি তাই?
সাহাবারা হচ্ছেন মুসলিম উম্মাহর জন্যে অনুসরনীয়, তারাই উম্মাহর মধ্যে ইসলামের মূল খেদমত করেছে। দ্বীনের এমন কোন অংশ নেই যেখানে তারা পরিপূর্ন ভাবে ইসলামকে বাস্তবায়ন করেন নি। তাদের বুঝ, তাদের ফিকির ও তাদের আমল হচ্ছে পূর্ন সঠিক ও বাস্তবসম্মত। এই জন্যে সর্বক্ষেত্রে তাদেরকে আমাদের জন্যে মাপকাঠি বানানো হয়েছে। আমাদের কোন কাজ, ফিকির বা বুঝ তাদের মত হলেই সেটা সঠিক হবে। আর যে কোন কাজ, ফিকির বা আমল তাদের মত না হলে যত ভালই হোক, পরিত্যাজ্য। চাই তা যত বড় আলেম বা বুজুর্গ বলুক, কারণ সাহাবাদের পরে কাউকে দ্বীনের মাপকাঠি মানা গোমরাহি।
বিদায় হজ্জের সময় সাহাবাদের সংখ্যা ছিল লক্ষাধিক। এত বিশাল পরিমান সাহাবাদের মধ্যে কতজন মুফতি ছিলেন যাদের কাছে মানুষ ফাতাওয়া জিজ্ঞাস করত? কয়জন মুহাদ্দিস ছিলেন? কয়জন মুফাসসির ছিলেন যারা পূরা কুরআনের তাফসির করত? আল্লাহর নবীর জীবদ্দশায় সাহাবাদের এমন হালত কি উনি জনতেন না? বড়রা তো আছেই,ছোট সাহাবীরা পর্যন্ত সার্বক্ষনিক ইলমের আহরনে লিপ্ত ছিলেন না। তা কি উনি বুঝতেন না? নাকি কাকতালীয় ভাবে হয়ে গেছে? অল্প বয়সের সব সাহাবীদেরকে অন্য সব ফিকির বাদ দিয়ে ইলমের মেহনতে লিপ্ত থাকতে বলেছেন, এমন কোন জায়ীফ হাদীসও কি আছে?
ধারাবাহিক ইলম চর্চা না থাকায় সব সাহাবী কি জাহেল ছিলেন? কক্ষনোই না। ইবনে মাসুদ রাজিয়াল্লাহু আনহু সাহাবাদের পরিচয় দিতে গিয়ে বলেনঃ
من كان مستنا فيلستن بمن قد مات فإن الحي لا تؤمن عليه الفتنة. اولئك أصحاب محمد صلي الله عليه و سلم. كانوا أفضل هذه الأمة أبرها قلوبا و أعمقها علما و أقلها تكلفا اختارهم الله لصحبة نبيه و لإقامة دينه فاعرفوا لهم فضلهم و اتبعوا علي اثارهم و تمسكوا بما استطعتم من أخلاقهم و سيرتهم. فانعم كانوا علي الهدي المستقيم
এখানের সবগুলো বিষয়ই অনেক গুরুত্বপূর্ন, তবে আমরা একটা অংশ নিয়ে আলোচনা করব। সাহাবাদের ইলমের বর্ননা দিতে বলেছেনঃ তারা ছিলেন গভীর ইলমের অধিকারী। এটা বলেন নি যে, তারা অধিক ইলমের অধিকারী ছিলেন। অর্থাৎ তারা অনেক বেশী ইলমের অধিকারী না হলেও সবাই দ্বীনের মৌলিক ইলম জানতেন। তারা সবাই বুঝতেন দ্বীনের জন্যে কি ধরনের কাজ করা দরকার, তারা জানতেন দ্বীন তাদের থেকে কি চায়। ফলে সমস্ত সাহাবী দ্বীনের সেই খেদমতেই জান-মাল সব বিলীন করে দিয়েছেন। আর এটাই হচ্ছে ইলমের মূল উদ্দেশ্য। ইলমের উদ্দেশ্য এটা নয় যে শতশত পৃষ্ঠার কাল হরফ মুখস্ত করে রাখবে, কিন্তু বুঝবে না দ্বীন তার থেকে কি ধরনের খেদমত চায় বা দ্বীনের জন্যে এখন কি করনীয়। ফলে এদের দ্বারা দ্বীনের লাভ না হয়ে ক্ষতিই হবে বেশি।
আলেমরা হচ্ছেন নবীর উত্তরাধিকারি। কোন ছেলে তার বাবার সম্পদের উত্তরাধিকার তখনই হবে যখন তা সঠিকরূপে ব্যবহার করবে। যদি শুধু তার নামে লিখে দেয়া থাকে কিন্তু সে তা ব্যবহার না করে নষ্ট করে, তাহলে সে সঠিক উত্তরাধিকারী নয়। ঠিক তেমনি কোন আলেম যদি নবী আলাইহিস সালামের ইলমের সঠিক ব্যবহার না করে, নবীর কাজগুলোকে আঞ্জাম না দেয় তাহলে সে সঠিক উত্তরাধিকারী নয়। নবীর কাজ সম্পর্কে কুরআনে বর্নিত হয়েছেঃ
هو الذي بعث في الأميين رسولا منهم يتلو عليهم أياته و يذكيهم و يعلمهم الكتاب و الحكمة و إن كانوا من قبل لفي ضلال مبين – سورة جمعة 2
যে জাতি গোমরাহিতে লিপ্ত ছিল তাদের কাছে আল্লাহ তায়ালা নবী প্রেরন করেছেন চারটি কাজ দিয়ে। অর্থাৎ এই চারটি কাজের মাধ্যমেই সর্ব যুগের গোমরাহ সমাজকে ঠিক করা হবে। আর এই চারটি কাজ সঠিক ভাবে না হলে ভাল সমাজও পথভ্রষ্ট হয়ে যাবে। সে চারটি কাজ হলঃ ১/ কুরআন তেলাওয়াত করা ২/ তাজকিয়া করা ৩/ কিতাব শিক্ষা দেয়া ৪/ হিকমাহ শিক্ষা দেয়া। নবী আলাইহিস সালাম তো পূর্নভাবে সমাজে তা বাস্তবায়ন করে গেছেন। এখন আমরা দেখব আমাদের সমাজে যাদের বাস্তবায়নের দায়িত্ব তারা তা করছে কিনা? যদি না করে তাহলে কি ক্ষতি হচ্ছে।
নবীর ওয়ারেস হিসেবে আবশ্যকীয় ভাবেই এই কাজ যাদের ঘাড়ে এসে বর্তায় তারা হচ্ছেন উলামায়ে কেরাম। আর যেহেতু নবী সা. এর কাজগুলো পূরা উম্মাহর জন্যে ছিল তাই উলামাদেরকেও সমস্ত মানুষের উপর তা বাস্তবায়নের চেষ্টা করা আবশ্যক। আসুন আমরা বর্তমানে মানুষের কাছে তাজকিয়া ও ইলম-হিকমাহ পৌছে দেয়ার মূল মাধ্যমগুলো নিয়ে পর্যালোচনা করি, সঠিকভাবে তা আদায় হচ্ছে কিনা?
ওয়াজ-নসিহাতঃ এটা হচ্ছে মানুষের কাছে ইলম ও হিকমাহ পৌছে দেয়ার মৌলিক একটা মাধ্যম। এই ক্ষেত্রে এমন পর্যাপ্ত পরিমান আলেম দরকার যারা হবে মুত্তাকি, মুহাক্কিক ও পূর্ন দ্বীনের অনুসারী। যারা দুনিয়ার লোভ ত্যাগ করে ইখলাসের সাথে মানুষকে ইলম-হিকমাহ শিক্ষা দিবে। আর এটা তৈরি দায়িত্ব মাদ্রাসার, তারা সেখানে মুত্তাকী ও মুহাক্কিক ছাত্রদেরকে লেখাপড়ার পাশাপাশি কিভাবে সমাজের মানুষকে উত্তম ভাবে ওয়াজ-নসিহাতের মাধ্যমে ইলম শিক্ষা দিবে ও নিজেদেরকে সম্পদ ও সম্মানের আকর্ষন থেকে মুক্ত রাখবে তা শিক্ষা দেয়া আবশ্যক ছিল।
কিন্তু উস্তাদরা যখন বলছেন, পড়া ছাড়া অন্য ফিকির থেকে নিজেদেরকে মুক্ত রাখতে হবে, তখন ভাল ছেলেগুলো ফিরে যাচ্ছে। কিন্তু অযোগ্য ছাত্রগুলো ঠিকই এদিকে এগিয়ে আসছে। ফলাফল আমরা দেখছি বর্তমানে অধিকাংশ বক্তা অযোগ্য ও সম্পদ-সম্মানের লোভে পূর্ন। ফলে সমাজের মানুষ সঠিক ইলম-হিকমাহ না পেয়ে গোমরাহিতে নিমজ্জিত হচ্ছে। সমাজ ধ্বংসের এই দায়ভার কার?
দাওয়াত-তাবলীগঃ যদিও বর্তমান এই মেহনতের ব্যক্তিদের মাঝে সমস্যা আছে, কিন্তু এদের মূল কাজটা ত্বাগুতী সমাজে মানুষের কাছে ইলম-হিকমাহ পৌছে দেয়ার সুন্দর একটা মাধ্যম। দলবেঁধে বিভিন্ন মাসজিদে যাবে এবং সমাজের মানুষকে মাসজিদে এনে তা’লীমের মাধ্যমে সঠিক ইলম শিক্ষা দিবে। যারা আরো বেশি সময় দিতে চায় তাদেরকে নিজেদের সাথে নিয়ে যাবে। এটা সঠিক ভাবে ব্যবহার করতে পারলে মানুষকে ইলম-হিকমাহ শিক্ষা দেয়ার চমৎকার একটা মাধ্যম হতে পারত।
এই জন্যে উলামাদের করনীয় ছিল তাদের মুহাক্কিক ছাত্রদেরকে এই কাজটা সুন্দর ভাবে শিখাবে। কিভাবে মানুষকে ইলম শিখাবে ও পরিচালনা করবে। ফলে তারা তাবলীগ জামাতে গিয়ে শরিয়াহর আলোকে ভাল-মন্দ যাচাই করে পূরা সিস্টেমকে ঢেলে সাজাবে অন্যথায় তারা নিজেরাই নতুন একটা সিস্টেম চালু করবে। কিন্তু এখন অযোগ্যতার কারণে না পারছে নিজেরা ব্যক্তিগত ভাবে মানুষের কাছে এই সিস্টেমে ইলম পৌছাতে, না পারছে আগের সিস্টেমটাকে মডিফাই করতে। ফলে উম্মাহকে ইলম-হিকমাহ পৌছানোর বিশাল একটা সিস্টেম জাহেলদের হাতে চলে গেছে। সমাজকে এইভাবে আরো গোমরাহির দিকে পাঠানোর দায়ভার কার?
তা’লিমঃ ইসলামের শুরু থেকেই মানুষকে তা’লিম দেয়ার ভিবিন্ন পদ্ধতি চলে আসছে। সালাফদের সময়ে এমন কিছু পদ্ধতি ছিল যেখানে আমভাবে মানুষ ইলম অর্জন করতে পারবে, সেটা মাজলিস হোক বা অন্য কোন সিস্টেম। কিন্তু আমাদের তা’লিমের মাজলিসগুলো অল্প কয়েকজন ছাত্রের মাঝে সীমাবদ্ধ হয়ে গেছে। না আছে সেখানে আমভাবে অংশ গ্রহনের সুযোগ আর না মানুষের কাছে গিয়ে তা’লিম করা হচ্ছে। ফলে ব্যপকভাবে মানুষ জাহেল থেকে যাচ্ছে, সমাজ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। মানুষকে এইভাবে গোমরাহির দিকে ঠেলে দেয়ার দায়ভার কার?
লেখালিখিঃ তাসনিফের কাজ ইসলামের শুরু যুগ থেকেই ছিল উম্মাহকে ইলম-হিকমাহ পৌছানোর গুরুত্বপূর্ন মাধ্যম। এখন যদিও কিছু তাসনিফের কাজ হচ্ছে তবে তা প্রয়োজনের তুলনায় কিছুই না। আর যারা ভাল আলেম তারা এই কাজ দক্ষ নয়। কারণ তাদেরকে তাসনিফের কাজ শিখানো হয় নি বরং বিভিন্ন ভাবে বাধাগ্রস্থ করা হয়েছে। ফলে এই অঙ্গনেও আগাছা দিয়ে ভরে যাচ্ছে, যারা বাহ্যিক ভাবে মানুষের কাছে গ্রহনযোগ্য হলেও ইসলামের বুঝ ও পালন থেকে অনেক দূরে। ফলে মানুষের কাছে পূর্ন ভাবে ইলম পৌছাচ্ছে না, মানুষ আরো গোমরাহির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
তাজকিয়াঃ আমাদের আমলের দুইটা দিক রয়েছে। একটা হচ্ছে ক্বলবের আমল, আরেকটা হচ্ছে অংগ-প্রত্যঙ্গের আমল।। ক্বলব হচ্ছে ইমান-কুফুর সহ সমস্ত ভাল-খারাপের উৎস। ক্বলব ভাল হলে সব ভাল, ক্বলব খারাপ হলে সব খারাপ। তাকজিয়া হচ্ছে, ক্বলবের সমস্যা অর্থাৎ কুফুর, নিফাক, কিবর, দুনিয়ার লোভ, রিয়া ইত্যাদি গুলোকে দূর করা। সেখানে ভাল আমল অর্থাৎ ইমান, ইয়াকীন, তাওয়াক্কুল, রিজ্বা বিল কাজা, তাকওয়া, মাহাব্বাতুল্লাহ ইত্যাদিকে শুরু করে দেয়া। এই তাজকিয়ার কাজ কিভাবে করতে হবে তা কুরআন, সুন্নাহ ও সিরাতে স্পষ্ট ভাবে বর্ননা করা আছে। যার ইলম শিক্ষা করা ও আমলে বাস্তবায়ন করা ফরজে আইন।
এই ক্ষেত্রে আমাদের এতটাই গাফেল, অধিকাংশ ব্যক্তি জানেই না এমন কিছু ফরজ ইলম ও আমল রয়েছে। ফলে যারা অগ্রসর হচ্ছে তারা প্রচলিত ভুল পদ্ধতির দিকে যাচ্ছে যার সাথে শরিয়ার কিছু সম্পর্ক রয়েছে। ফলে মানুষকে তাজকিয়া করানো তো পরের ব্যপার, উলামাদের মাজলিসে-মাহফিলে পর্যন্ত তাজকিয়ার নামে অনেক সময় কুফুরী-শিরকী কথা বলা হচ্ছে যার থেকে আমরা বেখবর। উম্মাহর এই অধপতনের দায়ভার কার?
এগুলো তো হল সমাজের মানুষকে ইলম-হিকমাহ ও তাজকিয়া শিখানোর ব্যপার। এখন আমরা নিজেদের “অন্য সব ফিকির বাদ দিয়ে ইলমের মেহনত” থেকে কতটুকু ফায়দা হচ্ছে তাই একটু যাচাই করছি।
প্রত্যেক মুসলিমের মাঝেই যে বিষয় গুলো থাকতে হবে, আল্লাহ-রাসূলকে নিজের জীবনের সব কিছু থেকে মহাব্বত করা, দ্বীনের জন্যে নিজের সবকিছুকে কুরবানী করার মানসিকতা, দুনিয়ার লোভ ও মৃত্যুর ভয় থেকে মুক্ত থাকা, কুরআন-সুন্নাহকে আকড়ে ধরা, হক জামাতকে আকড়ে ধরা, নিজের মধ্যে উম্মাহর ফিকির লালন করা, জিহাদের জন্যে প্রস্তুতি নেয়া ইত্যাদি আরো অনেক বিষয়। এগুলো আমাদের মাদ্রাসা থেকে শিখানো হয়? ফলে আমাদের অবস্থা কতটা খারাপের দিকে গেছে চিন্তা করতে পারেন?
কয়জন আছে যারা স্ত্রী-পরিজন বা দুনিয়ার জন্যে দ্বীনকে ত্যাগ করছে না? ব্যপকভাবে কুরান-সুন্নাহের বিপরীত কথাকে আকাবিরের নামে গ্রহন করা হচ্ছে, হক জামাত তালাশ করবে তো দূরের কথা যে যেভাবে পারছে বিরোধীতা করছে। এই ভাবে আমরা নিজেরা যে গোমরাহির দিকে যাচ্ছি তার দায়ভার কার?
উপরের সবকিছু বাদ দিলাম, একজন মুমিন ঈমানদার হওয়ার জন্যের যে তাওহীদ জানা-বুঝা প্রয়োজন তা কি হচ্ছে? যারা কুফুরী গনতন্ত্র করবে বা সন্তুষ্টি প্রকাশ করবে সবাই একই অপরাধী। এখন উলামাদের মধ্যে ব্যপকভাবে এই মহামারী ছড়িয়ে পরেছে। অন্যদিকে হাসিনা শুধু ত্বাগুত নয় বরং শাতেমে রাসূলদের গডমাদার, তার সাথে যে কোন ধরনের সম্পর্ক ঈমানকে নষ্ট করে দিবে। কয়জন জানে এই বিষয় বা কয়জন বিরত থাকছে? এমন আরো অনেক কুফুরী-শিরকী বিষয়ে আমরা লিপ্ত হচ্ছি তার দায়ভার কার উপরে বর্তাবে?
সার্বিক ভাবে আমরা মুসলিম হিসেবে ইসলামে কয়টা বিষয় মানছি? ব্যক্তিগত, পারিবারিক, প্রাতিষ্ঠানিক, সামাজিক বা রাষ্ট্রীয় কোন বিষয়ে আমরা ইসলামের হুকুম ফলো করার প্রয়োজন মনে করছি? সারা দিনে অসংখ্য কাজ করছি নিজের বুঝে, যার ইসলাম বহির্ভূত। কয়টা বিষয়ে আমরা জানতে পারছি? প্রতিষ্ঠানের দোহাই দিয়ে কাউকে দ্বীন প্রতিষ্ঠার কাজে বাধা দেয়া, ফরজে কিফায়া ইলমের জন্যে মারা, দান-জাকাতের টাকার যতেচ্ছা ব্যবহার বা নিজেদের সম্পদ, সময় ও শ্রমকে মনমত ব্যবহার ইত্যাদি শত শত বিষয়ের সাথে আছে কি ইসলামের কোন সম্পর্ক?
তাহলে সব ফিকির বাদ দিয়ে সারা দিন ইলম আহরনের লিপ্ত থেকে নিজেদের, উম্মাহর বা দ্বীনের কতটুকু ফায়দা হচ্ছে? ইহার পক্ষে যতই যুক্তি দেয়া হোক, সমাজের এই ধংসের কোন উত্তর কি দেয়া যাবে আল্লাহর কাছে?
ভিন্ন দিকে যে ব্যক্তিরা উম্মাহকে ঈমান-তাওহীদ শিখাচ্ছে,ইবাদুস সালিহিনের গুনাবলী শিখাচ্ছে, ফরজ ইলম ও আমল শিখাচ্ছে, সাহাবাদের মানহাজে দ্বীনের খেদমত করা শিখাচ্ছে, মানুষের কাছে ইলম-হিকমাহ পৌছে দেয়ার পদ্ধতি গুরুত্বের সাথে শিখাচ্ছে, নিজেরা কিভাবে সঠিকভাবে পরিশুদ্ধ হয়ে অন্যদেরকে তাজকিয়াহ করাবে তা কুরআন-সুন্নাহ থেকে শিখাচ্ছে। তাদেরকে ব্যপারে ছাত্রদের মাঝে সন্দেহ ঢুকান হচ্ছে, বাধা দেয়া হচ্ছে, বিরোধীতা করা হচ্ছে।আল্লাহর কাছে যখন তারা নালিশ দিবে, পারবে কেহ কোন জবাব দিতে?
হে আল্লাহ, আমাদের সবাইকে পূর্ন দ্বীনের বুঝ দান করুন এবং দ্বীনের পথে সঠিক ভাবে আমল করে যাওয়ার তাওফীক দান করুন।
Comment