শত্রুকে ধোঁকা দেয়া
প্রায় সাড়ে চৌদ্দশো বছর আগে প্রিয় নাবী (সল্লাল্লাহু আ’লাইহিওয়াসাল্লাম) বলে গেছেন, “যুদ্ধ মানে ধোঁকা” (বুখারী)
আর বর্তমান আধুনিক বিশ্বে সবাই এই নীতিতে বিশ্বাসী যে, “All war based on deception”.
যুদ্ধে প্রতিপক্ষকে ধোঁকা দিতে পারা বা প্রতারিত করতে পারা মানেই হচ্ছে সাময়িকভাবে আপনি শত্রুপক্ষের উপর বিজয়ী থাকবেন। আর যদি শত্রুপক্ষের মাঝে এই সাময়িক বিজয়ের প্রভাবকে বিস্তৃত করা যায় তাহলে এটা তাদের মনোবল ভেঙ্গে দেয়া ও শত্রুপক্ষকে পরাস্ত করার জন্য কার্যকরী হবে ইনশাআল্লাহ।
প্রাথমিকভাবে আমরা আলোচনা করবো “পজিশনাল এডভান্টেজ” তথা “অবস্থানগত সুবিধা” সম্পর্কে। বিষয়টা আমরা ওয়ার স্ট্র্যাটেজির দিক থেকে বুঝার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ।
১. “জিহাদের সাধারণ দিক নির্দেশনা” ও “উপমহাদেশীয় মুজাহিদীনদের আচরণবিধি” অনুযায়ী আল-কায়দা বাংলাদেশ শাখার বহুল পরিচিত ও অন্যতম যুদ্ধ কৌশল হচ্ছে উপমহাদেশীয় কুফরের মাথা ভারতকে প্রধান টার্গেট হিসেবে বাছাই করা। আর আমরা জানি যে, উপমহাদেশে বাংলাদেশের স্বাধীনতা এবং ইসলামের প্রধান ও প্রকাশ্য শত্রু হচ্ছে ভারত। এই অবস্থান থেকে বাংলাদেশের আপামর জনগন এটা জানে যে, ভারত কখনোই বাংলাদেশের বন্ধু রাষ্ট্র ছিলো না, এখনো নেই আর ভবিষ্যতেও হবে না। এর অনেক অনেক নজির আমাদের কাছে মজুদ আছে। তাই শত্রু নির্ধারণে আল-কায়দা বাংলাদেশ শাখার এই অবস্থান এদেশের আপামর জনসাধারণের পক্ষের অবস্থান। অপরদিকে ভারত ইস্যুতে এ দেশের তাগুত সরকারের দৃষ্টিভঙ্গী ও অবস্থান খুবই নাজুক। কারণ, জনগণের উপর জুলুম চাপিয়ে মালাউনদের তাবেদারী করার মাধ্যমে এ তাগুত সরকার জনগনের মাঝে যে অসন্তুষ্টি ও ক্ষোভের জন্ম দিয়ে চলেছে এর ফলে জনসমর্থনের দিক থেকে নিকট ভবিষ্যতে বাংলাদেশে প্রয়োগকৃত আল-কায়দার বৈশ্বিক যুদ্ধ কৌশল অনেক শক্ত অবস্থানে পৌঁছে যাবে ইনশাআল্লাহ।
২. কোন সারিয়া (ছোট অভিযান) পরিচালনার জন্য আল-কায়দা বাংলাদেশ শাখার মুজাহিদ ভাইয়েরা প্রথমেই যেসব টার্গেটকে নির্ধারণ করেছিলো তারা প্রত্যেকে ছিলো শাতীম তথা আল্লাহ, আল্লাহ’র দ্বীন, আল্লাহর কিতাব, রসুল (সল্লাল্লাহুআলাইহিওয়াসাল্লাম) এবং সম্মানিত উম্মুল মুমিনীনদের (রদিয়াল্লাহু আনহুমা) নিয়ে কটুক্তিকারী নাস্তিকরা। এদের মানসিকতা, কটুক্তি এতোটাই নিকৃষ্ট ও নিচুমানের ছিলো যে একজন পাপী মুসলিমও ক্রোধে প্রতিশোধ পরায়ন হয়ে উঠতো। চিন্তুা করে দেখুন, শুধু এই নাস্তিকদের ইস্যুকে কেন্দ্র করে ২০১৩ সালের ৫ই মে নবী প্রেমিক লাখ লাখ মুসলিমের পদচারণায় ঢাকা অচল হয়ে পড়েছিলো। তাই, টার্গেট নির্ধারনেও আল-কায়দা বাংলাদেশ শাখা দক্ষতার যে প্রমান রেখেছে তা নিতান্তই প্রশংসার দাবিদার। অল্প কিছুদিনের মধ্যেই টার্গেট নির্ধারণে তাদের এ দক্ষতার সুফল প্রকাশ পেয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশে এমন কোন নাস্তিক খুঁজে পাওয়া যাবে না যারা প্রকাশ্যে দম্ভভরে ইসলাম সম্পর্কিত কোন বিষয় নিয়ে কটুক্তি করার সাহস রাখে। হাতে গোনা যে ২/৩ জনকে পাওয়া যায় তারাও কোন না কোন পশ্চিমা রাষ্ট্রে অবস্থান করে তাদের বিদ্বেষ ছড়ানোর চেষ্টা করছে। তবে আশা রাখা যায়, নিকট ভবিষ্যতে আসিফ মহিউদ্দীনদের গর্দান উড়িয়ে দেয়ার জন্য এদেশের মুজাহিদ ভাইদেরকে জার্মানীতেও আত্মপ্রকাশ করতে দেখা যাবে ইনশাআল্লাহ।
৩. সুযোগ থাকলেও মাফসাদা ও জনসমর্থনের দিক বিবেচনা করে আল-কায়দা বাংলাদেশ শাখার মুজাহিদ ভাইয়েরা দেশীয় তাগুত বাহিনীগুলোর সাথে সংঘাত এড়িয়ে চলে। বিশেষ করে দূর্নীতি ও অন্যায়ের সবচেয়ে উঁচু স্তরে থাকা পুলিশ বাহিনীর সাথে। এর প্রধানতম কারণ হিসেবে তিনটি বিষয়কে চিহ্নিত করা যায় –
ক) স্থানীয় শত্রুর মোকাবিলা করতে গিয়ে মূল শত্রু থেকে যেন পিছিয়ে না পড়তে হয় এবং মূল শত্রুকে আঘাত করার আগেই স্থানীয় শত্রুর মোকাবিলায় নিজেদের শক্তি কমে না যায়।
খ) বাংলাদেশের জনগণকে তাগুত বাহিনীগুলোর অসংখ্য অপরাধ সম্পর্কে অবগত হওয়ার সুযোগ দেয়া যেন জনগণের কাছে এদের স্বরুপ পূর্ণরুপে প্রকাশিত হয়। আলহামদুলিল্লাহ, ইতিমধ্যে সাধারণ চিন্তাশক্তির অধিকারী জনগণও তাগুত বাহিনীগুলোর বিষয়ে সম্যক ধারণা লাভ করেছে।
খ) তাগুত বাহিনীগুলোর মধ্যেও কিছু কিছু লোক এমন আছে যারা ধর্মপ্রাণ এবং খাঁটি দেশ প্রেমিক। তারা যেন ক্ষতিগ্রস্থ না হয় সেদিক বিবেচনা করে তাদেরকেও পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত হওয়ার সুযোগ রাখা এবং তারা যেন হক্বের প্রতি অগ্রগামী হয়ে তার ক্ষেত্র তৈরি করা।
৪. পার্শ্ব শত্রু যেমন – বিজাতীয় বিভিন্ন আগ্রাসী সংগঠন, পশ্চিমা অর্থায়নে পরিচালিত ইসলাম বিদ্বেষী বিভিন্ন এনজিও/ সংস্থা ইত্যাদি পার্শ্ব শত্রুদের ব্যাপারেও আল-কায়দা বাংলাদেশ শাখা এড়িয়ে চলার নীতি অনুসরণ করে। কৌশল বিবেচনায় যা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। এর একটি প্রধান কারণ হলো, স্থানীয় শত্রু না বাড়িয়ে মূল শত্রুকে ক্ষতিগ্রস্থ করতে থাকা এবং মূল শত্রুর বিরুদ্ধে নিজেদের শক্তিমত্তা বৃদ্ধি করতে থাকা।
৫. আক্রমণ পরিচালনার ক্ষেত্রে আল-কায়দা বাংলাদেশ শাখা বরাবরই সাধারণ জনগনের নিরাপত্তার বিষয়টি চিন্তা করে টার্গেট নির্ধারণ করে থাকে যেন জনগন ক্ষতিগ্রস্থ না হয় এবং মুসলিম জনসাধারণ জিহাদ বিষয়ে সংশয়ে পতিত না হয়। পাশাপাশি এমন উস্কানি প্রদান করা থেকেও বিরত থাকে যার কারণে বাংলাদেশে অবস্থানরত নিরীহ সংখ্যালঘুরা জুলুমের শিকার হতে পারে। তবে সংখ্যালঘুদের মধ্য থেকেও যদি কেউ ইসলাম বিদ্বেষী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে তাহলে তার বিদ্বেষের মাত্রানুযায়ী মুজাহিদ ভাইয়েরা সঠিক পন্থাই অবলম্বন করবেন ইনশাআল্লাহ।
এবার আসুন ময়দানে উক্ত হাদীসের উপর আমল সংক্রান্ত কয়েকটি উদাহরণ জানা যাক –
১. রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বদরের যুদ্ধে যখন এক কুরাইশ বন্দিকে জিজ্ঞাসাবাদ করছিলেন, তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একটি কৌশল অবলম্বন করেছিলেন যার ফলে সে ধোঁকায় ফেলা যায় এবং তার থেকে একটি প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করা যায়। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জানতে চাচ্ছিলেন ইসলামের বিরুদ্ধে লড়তে কতজন শত্রু জড়ো হয়েছে। প্রশ্নটি সরাসরি না করে (কারণ এতে লোকটি সাথীদের সাহায্যার্থে মিথ্যে বলতে পারে) তিনি জিজ্ঞাসা করলেন তারা কতগুলো উট জবেহ করেছে। লোকটি বলল প্রতিদিন ১০টা করে। রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তখন হিসাব করলেন এক একটা উট ১০০ জনের মত খেতে পারে। বাস্তবিকই দেখা গেল সেদিন কুরাইশদের নেতৃত্বে ১০০০ লোক ছিল।
২. অপর এক যুদ্ধে মুসলিম শিবিরে প্রতি রাতে একটি করে রান্নার চুলা কমিয়ে দেয়া হচ্ছিলো ফলে শত্রুরা মনে করেছিলো যে, মুসলিম শিবির থেকে প্রতিদিন যোদ্ধারা চলে যাচ্ছে। অথচ মুসলিম শিবিরে সৈন্য সংখ্যা অপরিবর্তিত ছিলো। এর ফলে শত্রুপক্ষ চরমভাবে ধোঁকায় পড়ে গিয়েছিলো।
৩. শত্রুপক্ষকে ধোঁকা দেয়া এবং অবস্থানগত সুবিধার নমুনা হিসেবে ইয়ারমুকের যুদ্ধ একটি উৎকৃষ্ট উদাহরণ। বাইজান্টাইন রোমানদের বিরুদ্ধে ইয়ারমুকের যুদ্ধে খালিদ বিন ওয়ালিদ রদিয়াল্লাহুআনহু ইয়ারমুক প্রান্তরে পশ্চিম দিকে মুখ করে পজিশন নিয়েছিলেন। এর ফলে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত প্রতিপক্ষ বাইজান্টাইনদের চোখে সূর্য পড়তো, ফলে দূর থেকে তারা মুসলিম সেনাদের সঠিক সংখ্যা বুঝতে পারতো না। উপরন্তু খলিফা উমার রদিয়াল্লাহুআনহু নির্দেশ দিলেন যেন প্রতিদিন সকালে মুসলিম সেনারা ছোট ছোট দলে ঢাক ঢোল পিটিয়ে খালিদের বাহিনীতে যুক্ত হয়। ফলে বাইজান্টাইনরা ভাবতে লাগলো, প্রতিদিনই মুসলিম শিবিরে না জানি কতশত নতুন সেনা যোগ দিচ্ছে। ব্যাপারটা সামান্য হলেও এর প্রভাব ছিলো অনেক বড়। কারণ বিপক্ষ শিবিরে সেনা সংখ্যা বৃদ্ধির ভাবনাটি বাইজান্টাইনদের মধ্যে ভীতির সঞ্চার করেছিলো।
গুরুত্বপূর্ণ নোটঃ
ক) “যুদ্ধ মানেই ধোঁকা” হাদীসের উপর গুরুত্ব দিয়ে আমল করতে হবে। সেটা হোক ময়দানে অথবা ইদাদরত অবস্থায়।
খ) উত্তমভাবে নিজেদের জন্য অবস্থানগত সুবিধা নিতে হবে। সেটা হোক ময়দানে অথবা যুদ্ধ কৌশল গ্রহণের মাধ্যমে বা নিজেদের পক্ষে জনমত তৈরি করার ক্ষেত্রে।
গ) মাঝে মাঝে নিজেদের সক্ষমতা গোপন রাখতে হবে যেন শত্রুপক্ষ মনে করে মুজাহিদরা দুর্বল হয়ে পড়েছে।
ঘ) মাঝে মাঝে এমন কিছু করতে হবে যেন শত্রুপক্ষ তটস্থ হয়ে পড়ে। উদাহরণ স্বরুপ বলা যায়, বাংলা ভাষায় প্রকাশিত প্রথম লোন উলফ হামলার নির্দেশিকার কথা। আলহামদুলিল্লাহ, ম্যাগাজিন প্রকাশিত হয়েছে বাংলাদেশে অথচ ইন্ডিয়ান গোয়েন্দা সংস্থা “র” এবং মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা “সিআইএ” পর্যন্ত নড়েচড়ে বসেছিলো। এ ম্যাগাজিনের উপর উপর্যুপরি গবেষণা করা হয়েছে এবং রাষ্ট্রিয়ভাবে এদেশে অবস্থিত তাদের লোকদেরকে সতর্ক করা হয়েছে।
ঙ) শত্রুর বিশেষ সামর্থ্যকে চিহ্নিত করতে হবে, স্ট্রেন্থ তথা শক্তি এড়িয়ে চলতে হবে এবং দুর্বল জায়গার উপর আঘাত করতে হবে।
চ) শত্রুপক্ষকে তখনই উস্কে দেয়া ঠিক হবে যখন তাদেরকে তছনছ করে দেয়ার মতো সামর্থ্য থাকবে।
ছ) শত্রুর উস্কানি থেকে বেঁচে থাকতে হবে। বাংলাদেশ তাগুত সরকার পদে পদে আল-কায়দার মুজাহিদ ভাইদেরকে উস্কে দিয়ে মাঠে নামানোর চেষ্টা করেছে কিন্তু আল্লাহর রহমতে তারা তাগুতের এ উস্কানি থেকে নিজেদেরকে বাঁচিয়ে রাখতে সক্ষম হয়েছে।
জ) শত্রুকে ফাঁদে ফেলার জন্য প্রলুব্ধ করতে হবে, যেন সহজেই তাদেরকে ঘায়েল করা যায় এবং নিজের শক্তির খুব সামান্যই ক্ষয় হয়।
ঝ) আঘাত হানার জন্য উপযুক্ত সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। বেশি বেশি হিসেব কষতে হবে, পরিকল্পনা করতে হবে এবং পরিস্থিতি অনুযায়ী যুদ্ধ কৌশল, কর্মপদ্ধতিতে উপযোগী পরিবর্তন আনতে হবে।
ঞ) শত্রু প্রস্তুত হওয়ার আগেই আঘাত করতে হবে এবং এমন দিক থেকে আঘাত করতে হবে যেদিক দিয়ে শত্রু কস্মিনকালেও আক্রান্ত হবে বলে ভাবেনি। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, বাংলাদেশে যখন আল-কায়দার মুজাহিদ ভাইয়েরা একের পর এক শাতিমদের গর্দান উড়িয়ে দিচ্ছিলো ঠিক ওই রকম একটা পরিস্থিতিতে তারা টার্গেট নির্ধারণের ক্ষেত্রে একটা বড় ধরনের পরিবর্তন নিয়ে আসে। সেটি ছিলো সমকামী সংগঠক জুলহাস মান্নান ও তানভীর তনয় হত্যাকান্ড। বাংলার তাগুত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, গোয়েন্দা বাহিনী চিন্তাও করেনি এরকম হামলার বিষয়ে। এটি কতো বড় মাপের হামলা ছিলো তা হত্যাকান্ডের পর এ্যামেরিকান অফিশিয়াল’সদের দৌড়াদৌড়ি দেখে খুব সহজেই অনুমান করা গেছে।
এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে ঘটা একটি ঘটনাও উল্লেখ করা যায়। গালফ ওয়ারে সাদ্দাম হোসেন কুয়েত দখলের পর কুয়েতের মাটিতে খুব শক্তিশালী ডিফেন্স নিয়েছিলো। শোয়ার্জকফের নেতৃত্বে মিত্র বাহিনীও সেই ডিফেন্স বরাবর সৌদি আরবের মাটিতে অবস্থান নিলো। তারপর এমন একটা পরিস্থিতি তৈরি করলো যে সাদ্দাম বিশ্বাস করলো এটাক যদি হয়, তাহলে তা হবে পার্সিয়ান গালফ দিয়ে। উভয়মুখী হামলা ঠেকাতে আরো ইফোর্ট দিলো। কিন্তু ধূর্ত শোয়ার্জকফ কুয়েত থেকেও অনেক পশ্চিমে ইরাকের ভিতর দিয়ে ঢুকে আক্রমন করে সাদ্দামকে চমকে দিয়েছিলো। এই যুদ্ধে রিপাবলিকান গার্ডসহ সাদ্দাম হোসেন মাত্র ৪ দিনের মধ্যে গ্রেফতার হয়েছিলো।
শত্রুকে চাপের মুখে রাখা
শত্রুকে ক্রমাগত চাপের মুখে রাখতে হবে। শত্রুপক্ষের বাহিনীগুলোর মধ্যে পারস্পারিক কোন্দল উস্কে দিয়ে বা শত্রুপক্ষের অপরাধ জনগনের সামনে উন্মুক্ত করে দিয়ে বা শত্রুপক্ষের দুর্বল জায়গাগুলোতে আঘাত করার মাধ্যমে বা হঠাৎ করে নিজেরা সাময়িকভাবে আন্ডারগ্রাউন্ড হওয়ার মাধ্যমে (যেন কোথাও নেই) এই চাপ সৃষ্টি করা যায়। এর বহুমুখী সুবিধা ও প্রয়োজনীয়তা আছে। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো –
· মুজাহিদদের উপর আঘাত হানার চেয়ে শত্রুপক্ষ নিজেদের অবস্থান সুসংহত করতে বেশি ব্যস্ত থাকবে।
· মুজাহিদদের কাজের ক্ষেত্র, কাজের পরিধি এবং পরবর্তী পরিকল্পনা বুঝতে ব্যর্থ হবে।
· আক্রোশবসত অনেক ভূল কাজ করবে ও ভূল কথা বলবে যা জনমতকে বিষিয়ে তোলার জন্য যথেষ্ট।
· সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে ভূল করবে ইত্যাদি।
আলহামদুলিল্লাহ, কৌশলগত দিক থেকে আল-কায়দার মুজাহিদ ভাইয়েরা বাংলাদেশের তাগুত সরকারকে এখন পর্যন্ত যে চাপের মুখে রাখতে সক্ষম হয়েছে তার প্রমানস্বরুপ নিচে সামান্য একটি নথি পেশ করা হলো –
***
আল-কায়দাপন্থী জঙ্গী সংগঠন এখন ঝুঁকির কারণ - https://www.prothomalo.com/bangladesh/article/1610445
চলবে ইনশাআল্লাহ.....
প্রায় সাড়ে চৌদ্দশো বছর আগে প্রিয় নাবী (সল্লাল্লাহু আ’লাইহিওয়াসাল্লাম) বলে গেছেন, “যুদ্ধ মানে ধোঁকা” (বুখারী)
আর বর্তমান আধুনিক বিশ্বে সবাই এই নীতিতে বিশ্বাসী যে, “All war based on deception”.
যুদ্ধে প্রতিপক্ষকে ধোঁকা দিতে পারা বা প্রতারিত করতে পারা মানেই হচ্ছে সাময়িকভাবে আপনি শত্রুপক্ষের উপর বিজয়ী থাকবেন। আর যদি শত্রুপক্ষের মাঝে এই সাময়িক বিজয়ের প্রভাবকে বিস্তৃত করা যায় তাহলে এটা তাদের মনোবল ভেঙ্গে দেয়া ও শত্রুপক্ষকে পরাস্ত করার জন্য কার্যকরী হবে ইনশাআল্লাহ।
প্রাথমিকভাবে আমরা আলোচনা করবো “পজিশনাল এডভান্টেজ” তথা “অবস্থানগত সুবিধা” সম্পর্কে। বিষয়টা আমরা ওয়ার স্ট্র্যাটেজির দিক থেকে বুঝার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ।
১. “জিহাদের সাধারণ দিক নির্দেশনা” ও “উপমহাদেশীয় মুজাহিদীনদের আচরণবিধি” অনুযায়ী আল-কায়দা বাংলাদেশ শাখার বহুল পরিচিত ও অন্যতম যুদ্ধ কৌশল হচ্ছে উপমহাদেশীয় কুফরের মাথা ভারতকে প্রধান টার্গেট হিসেবে বাছাই করা। আর আমরা জানি যে, উপমহাদেশে বাংলাদেশের স্বাধীনতা এবং ইসলামের প্রধান ও প্রকাশ্য শত্রু হচ্ছে ভারত। এই অবস্থান থেকে বাংলাদেশের আপামর জনগন এটা জানে যে, ভারত কখনোই বাংলাদেশের বন্ধু রাষ্ট্র ছিলো না, এখনো নেই আর ভবিষ্যতেও হবে না। এর অনেক অনেক নজির আমাদের কাছে মজুদ আছে। তাই শত্রু নির্ধারণে আল-কায়দা বাংলাদেশ শাখার এই অবস্থান এদেশের আপামর জনসাধারণের পক্ষের অবস্থান। অপরদিকে ভারত ইস্যুতে এ দেশের তাগুত সরকারের দৃষ্টিভঙ্গী ও অবস্থান খুবই নাজুক। কারণ, জনগণের উপর জুলুম চাপিয়ে মালাউনদের তাবেদারী করার মাধ্যমে এ তাগুত সরকার জনগনের মাঝে যে অসন্তুষ্টি ও ক্ষোভের জন্ম দিয়ে চলেছে এর ফলে জনসমর্থনের দিক থেকে নিকট ভবিষ্যতে বাংলাদেশে প্রয়োগকৃত আল-কায়দার বৈশ্বিক যুদ্ধ কৌশল অনেক শক্ত অবস্থানে পৌঁছে যাবে ইনশাআল্লাহ।
২. কোন সারিয়া (ছোট অভিযান) পরিচালনার জন্য আল-কায়দা বাংলাদেশ শাখার মুজাহিদ ভাইয়েরা প্রথমেই যেসব টার্গেটকে নির্ধারণ করেছিলো তারা প্রত্যেকে ছিলো শাতীম তথা আল্লাহ, আল্লাহ’র দ্বীন, আল্লাহর কিতাব, রসুল (সল্লাল্লাহুআলাইহিওয়াসাল্লাম) এবং সম্মানিত উম্মুল মুমিনীনদের (রদিয়াল্লাহু আনহুমা) নিয়ে কটুক্তিকারী নাস্তিকরা। এদের মানসিকতা, কটুক্তি এতোটাই নিকৃষ্ট ও নিচুমানের ছিলো যে একজন পাপী মুসলিমও ক্রোধে প্রতিশোধ পরায়ন হয়ে উঠতো। চিন্তুা করে দেখুন, শুধু এই নাস্তিকদের ইস্যুকে কেন্দ্র করে ২০১৩ সালের ৫ই মে নবী প্রেমিক লাখ লাখ মুসলিমের পদচারণায় ঢাকা অচল হয়ে পড়েছিলো। তাই, টার্গেট নির্ধারনেও আল-কায়দা বাংলাদেশ শাখা দক্ষতার যে প্রমান রেখেছে তা নিতান্তই প্রশংসার দাবিদার। অল্প কিছুদিনের মধ্যেই টার্গেট নির্ধারণে তাদের এ দক্ষতার সুফল প্রকাশ পেয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশে এমন কোন নাস্তিক খুঁজে পাওয়া যাবে না যারা প্রকাশ্যে দম্ভভরে ইসলাম সম্পর্কিত কোন বিষয় নিয়ে কটুক্তি করার সাহস রাখে। হাতে গোনা যে ২/৩ জনকে পাওয়া যায় তারাও কোন না কোন পশ্চিমা রাষ্ট্রে অবস্থান করে তাদের বিদ্বেষ ছড়ানোর চেষ্টা করছে। তবে আশা রাখা যায়, নিকট ভবিষ্যতে আসিফ মহিউদ্দীনদের গর্দান উড়িয়ে দেয়ার জন্য এদেশের মুজাহিদ ভাইদেরকে জার্মানীতেও আত্মপ্রকাশ করতে দেখা যাবে ইনশাআল্লাহ।
৩. সুযোগ থাকলেও মাফসাদা ও জনসমর্থনের দিক বিবেচনা করে আল-কায়দা বাংলাদেশ শাখার মুজাহিদ ভাইয়েরা দেশীয় তাগুত বাহিনীগুলোর সাথে সংঘাত এড়িয়ে চলে। বিশেষ করে দূর্নীতি ও অন্যায়ের সবচেয়ে উঁচু স্তরে থাকা পুলিশ বাহিনীর সাথে। এর প্রধানতম কারণ হিসেবে তিনটি বিষয়কে চিহ্নিত করা যায় –
ক) স্থানীয় শত্রুর মোকাবিলা করতে গিয়ে মূল শত্রু থেকে যেন পিছিয়ে না পড়তে হয় এবং মূল শত্রুকে আঘাত করার আগেই স্থানীয় শত্রুর মোকাবিলায় নিজেদের শক্তি কমে না যায়।
খ) বাংলাদেশের জনগণকে তাগুত বাহিনীগুলোর অসংখ্য অপরাধ সম্পর্কে অবগত হওয়ার সুযোগ দেয়া যেন জনগণের কাছে এদের স্বরুপ পূর্ণরুপে প্রকাশিত হয়। আলহামদুলিল্লাহ, ইতিমধ্যে সাধারণ চিন্তাশক্তির অধিকারী জনগণও তাগুত বাহিনীগুলোর বিষয়ে সম্যক ধারণা লাভ করেছে।
খ) তাগুত বাহিনীগুলোর মধ্যেও কিছু কিছু লোক এমন আছে যারা ধর্মপ্রাণ এবং খাঁটি দেশ প্রেমিক। তারা যেন ক্ষতিগ্রস্থ না হয় সেদিক বিবেচনা করে তাদেরকেও পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত হওয়ার সুযোগ রাখা এবং তারা যেন হক্বের প্রতি অগ্রগামী হয়ে তার ক্ষেত্র তৈরি করা।
৪. পার্শ্ব শত্রু যেমন – বিজাতীয় বিভিন্ন আগ্রাসী সংগঠন, পশ্চিমা অর্থায়নে পরিচালিত ইসলাম বিদ্বেষী বিভিন্ন এনজিও/ সংস্থা ইত্যাদি পার্শ্ব শত্রুদের ব্যাপারেও আল-কায়দা বাংলাদেশ শাখা এড়িয়ে চলার নীতি অনুসরণ করে। কৌশল বিবেচনায় যা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। এর একটি প্রধান কারণ হলো, স্থানীয় শত্রু না বাড়িয়ে মূল শত্রুকে ক্ষতিগ্রস্থ করতে থাকা এবং মূল শত্রুর বিরুদ্ধে নিজেদের শক্তিমত্তা বৃদ্ধি করতে থাকা।
৫. আক্রমণ পরিচালনার ক্ষেত্রে আল-কায়দা বাংলাদেশ শাখা বরাবরই সাধারণ জনগনের নিরাপত্তার বিষয়টি চিন্তা করে টার্গেট নির্ধারণ করে থাকে যেন জনগন ক্ষতিগ্রস্থ না হয় এবং মুসলিম জনসাধারণ জিহাদ বিষয়ে সংশয়ে পতিত না হয়। পাশাপাশি এমন উস্কানি প্রদান করা থেকেও বিরত থাকে যার কারণে বাংলাদেশে অবস্থানরত নিরীহ সংখ্যালঘুরা জুলুমের শিকার হতে পারে। তবে সংখ্যালঘুদের মধ্য থেকেও যদি কেউ ইসলাম বিদ্বেষী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে তাহলে তার বিদ্বেষের মাত্রানুযায়ী মুজাহিদ ভাইয়েরা সঠিক পন্থাই অবলম্বন করবেন ইনশাআল্লাহ।
এবার আসুন ময়দানে উক্ত হাদীসের উপর আমল সংক্রান্ত কয়েকটি উদাহরণ জানা যাক –
১. রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বদরের যুদ্ধে যখন এক কুরাইশ বন্দিকে জিজ্ঞাসাবাদ করছিলেন, তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একটি কৌশল অবলম্বন করেছিলেন যার ফলে সে ধোঁকায় ফেলা যায় এবং তার থেকে একটি প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করা যায়। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জানতে চাচ্ছিলেন ইসলামের বিরুদ্ধে লড়তে কতজন শত্রু জড়ো হয়েছে। প্রশ্নটি সরাসরি না করে (কারণ এতে লোকটি সাথীদের সাহায্যার্থে মিথ্যে বলতে পারে) তিনি জিজ্ঞাসা করলেন তারা কতগুলো উট জবেহ করেছে। লোকটি বলল প্রতিদিন ১০টা করে। রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তখন হিসাব করলেন এক একটা উট ১০০ জনের মত খেতে পারে। বাস্তবিকই দেখা গেল সেদিন কুরাইশদের নেতৃত্বে ১০০০ লোক ছিল।
২. অপর এক যুদ্ধে মুসলিম শিবিরে প্রতি রাতে একটি করে রান্নার চুলা কমিয়ে দেয়া হচ্ছিলো ফলে শত্রুরা মনে করেছিলো যে, মুসলিম শিবির থেকে প্রতিদিন যোদ্ধারা চলে যাচ্ছে। অথচ মুসলিম শিবিরে সৈন্য সংখ্যা অপরিবর্তিত ছিলো। এর ফলে শত্রুপক্ষ চরমভাবে ধোঁকায় পড়ে গিয়েছিলো।
৩. শত্রুপক্ষকে ধোঁকা দেয়া এবং অবস্থানগত সুবিধার নমুনা হিসেবে ইয়ারমুকের যুদ্ধ একটি উৎকৃষ্ট উদাহরণ। বাইজান্টাইন রোমানদের বিরুদ্ধে ইয়ারমুকের যুদ্ধে খালিদ বিন ওয়ালিদ রদিয়াল্লাহুআনহু ইয়ারমুক প্রান্তরে পশ্চিম দিকে মুখ করে পজিশন নিয়েছিলেন। এর ফলে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত প্রতিপক্ষ বাইজান্টাইনদের চোখে সূর্য পড়তো, ফলে দূর থেকে তারা মুসলিম সেনাদের সঠিক সংখ্যা বুঝতে পারতো না। উপরন্তু খলিফা উমার রদিয়াল্লাহুআনহু নির্দেশ দিলেন যেন প্রতিদিন সকালে মুসলিম সেনারা ছোট ছোট দলে ঢাক ঢোল পিটিয়ে খালিদের বাহিনীতে যুক্ত হয়। ফলে বাইজান্টাইনরা ভাবতে লাগলো, প্রতিদিনই মুসলিম শিবিরে না জানি কতশত নতুন সেনা যোগ দিচ্ছে। ব্যাপারটা সামান্য হলেও এর প্রভাব ছিলো অনেক বড়। কারণ বিপক্ষ শিবিরে সেনা সংখ্যা বৃদ্ধির ভাবনাটি বাইজান্টাইনদের মধ্যে ভীতির সঞ্চার করেছিলো।
গুরুত্বপূর্ণ নোটঃ
ক) “যুদ্ধ মানেই ধোঁকা” হাদীসের উপর গুরুত্ব দিয়ে আমল করতে হবে। সেটা হোক ময়দানে অথবা ইদাদরত অবস্থায়।
খ) উত্তমভাবে নিজেদের জন্য অবস্থানগত সুবিধা নিতে হবে। সেটা হোক ময়দানে অথবা যুদ্ধ কৌশল গ্রহণের মাধ্যমে বা নিজেদের পক্ষে জনমত তৈরি করার ক্ষেত্রে।
গ) মাঝে মাঝে নিজেদের সক্ষমতা গোপন রাখতে হবে যেন শত্রুপক্ষ মনে করে মুজাহিদরা দুর্বল হয়ে পড়েছে।
ঘ) মাঝে মাঝে এমন কিছু করতে হবে যেন শত্রুপক্ষ তটস্থ হয়ে পড়ে। উদাহরণ স্বরুপ বলা যায়, বাংলা ভাষায় প্রকাশিত প্রথম লোন উলফ হামলার নির্দেশিকার কথা। আলহামদুলিল্লাহ, ম্যাগাজিন প্রকাশিত হয়েছে বাংলাদেশে অথচ ইন্ডিয়ান গোয়েন্দা সংস্থা “র” এবং মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা “সিআইএ” পর্যন্ত নড়েচড়ে বসেছিলো। এ ম্যাগাজিনের উপর উপর্যুপরি গবেষণা করা হয়েছে এবং রাষ্ট্রিয়ভাবে এদেশে অবস্থিত তাদের লোকদেরকে সতর্ক করা হয়েছে।
ঙ) শত্রুর বিশেষ সামর্থ্যকে চিহ্নিত করতে হবে, স্ট্রেন্থ তথা শক্তি এড়িয়ে চলতে হবে এবং দুর্বল জায়গার উপর আঘাত করতে হবে।
চ) শত্রুপক্ষকে তখনই উস্কে দেয়া ঠিক হবে যখন তাদেরকে তছনছ করে দেয়ার মতো সামর্থ্য থাকবে।
ছ) শত্রুর উস্কানি থেকে বেঁচে থাকতে হবে। বাংলাদেশ তাগুত সরকার পদে পদে আল-কায়দার মুজাহিদ ভাইদেরকে উস্কে দিয়ে মাঠে নামানোর চেষ্টা করেছে কিন্তু আল্লাহর রহমতে তারা তাগুতের এ উস্কানি থেকে নিজেদেরকে বাঁচিয়ে রাখতে সক্ষম হয়েছে।
জ) শত্রুকে ফাঁদে ফেলার জন্য প্রলুব্ধ করতে হবে, যেন সহজেই তাদেরকে ঘায়েল করা যায় এবং নিজের শক্তির খুব সামান্যই ক্ষয় হয়।
ঝ) আঘাত হানার জন্য উপযুক্ত সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। বেশি বেশি হিসেব কষতে হবে, পরিকল্পনা করতে হবে এবং পরিস্থিতি অনুযায়ী যুদ্ধ কৌশল, কর্মপদ্ধতিতে উপযোগী পরিবর্তন আনতে হবে।
ঞ) শত্রু প্রস্তুত হওয়ার আগেই আঘাত করতে হবে এবং এমন দিক থেকে আঘাত করতে হবে যেদিক দিয়ে শত্রু কস্মিনকালেও আক্রান্ত হবে বলে ভাবেনি। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, বাংলাদেশে যখন আল-কায়দার মুজাহিদ ভাইয়েরা একের পর এক শাতিমদের গর্দান উড়িয়ে দিচ্ছিলো ঠিক ওই রকম একটা পরিস্থিতিতে তারা টার্গেট নির্ধারণের ক্ষেত্রে একটা বড় ধরনের পরিবর্তন নিয়ে আসে। সেটি ছিলো সমকামী সংগঠক জুলহাস মান্নান ও তানভীর তনয় হত্যাকান্ড। বাংলার তাগুত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, গোয়েন্দা বাহিনী চিন্তাও করেনি এরকম হামলার বিষয়ে। এটি কতো বড় মাপের হামলা ছিলো তা হত্যাকান্ডের পর এ্যামেরিকান অফিশিয়াল’সদের দৌড়াদৌড়ি দেখে খুব সহজেই অনুমান করা গেছে।
এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে ঘটা একটি ঘটনাও উল্লেখ করা যায়। গালফ ওয়ারে সাদ্দাম হোসেন কুয়েত দখলের পর কুয়েতের মাটিতে খুব শক্তিশালী ডিফেন্স নিয়েছিলো। শোয়ার্জকফের নেতৃত্বে মিত্র বাহিনীও সেই ডিফেন্স বরাবর সৌদি আরবের মাটিতে অবস্থান নিলো। তারপর এমন একটা পরিস্থিতি তৈরি করলো যে সাদ্দাম বিশ্বাস করলো এটাক যদি হয়, তাহলে তা হবে পার্সিয়ান গালফ দিয়ে। উভয়মুখী হামলা ঠেকাতে আরো ইফোর্ট দিলো। কিন্তু ধূর্ত শোয়ার্জকফ কুয়েত থেকেও অনেক পশ্চিমে ইরাকের ভিতর দিয়ে ঢুকে আক্রমন করে সাদ্দামকে চমকে দিয়েছিলো। এই যুদ্ধে রিপাবলিকান গার্ডসহ সাদ্দাম হোসেন মাত্র ৪ দিনের মধ্যে গ্রেফতার হয়েছিলো।
শত্রুকে চাপের মুখে রাখা
শত্রুকে ক্রমাগত চাপের মুখে রাখতে হবে। শত্রুপক্ষের বাহিনীগুলোর মধ্যে পারস্পারিক কোন্দল উস্কে দিয়ে বা শত্রুপক্ষের অপরাধ জনগনের সামনে উন্মুক্ত করে দিয়ে বা শত্রুপক্ষের দুর্বল জায়গাগুলোতে আঘাত করার মাধ্যমে বা হঠাৎ করে নিজেরা সাময়িকভাবে আন্ডারগ্রাউন্ড হওয়ার মাধ্যমে (যেন কোথাও নেই) এই চাপ সৃষ্টি করা যায়। এর বহুমুখী সুবিধা ও প্রয়োজনীয়তা আছে। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো –
· মুজাহিদদের উপর আঘাত হানার চেয়ে শত্রুপক্ষ নিজেদের অবস্থান সুসংহত করতে বেশি ব্যস্ত থাকবে।
· মুজাহিদদের কাজের ক্ষেত্র, কাজের পরিধি এবং পরবর্তী পরিকল্পনা বুঝতে ব্যর্থ হবে।
· আক্রোশবসত অনেক ভূল কাজ করবে ও ভূল কথা বলবে যা জনমতকে বিষিয়ে তোলার জন্য যথেষ্ট।
· সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে ভূল করবে ইত্যাদি।
আলহামদুলিল্লাহ, কৌশলগত দিক থেকে আল-কায়দার মুজাহিদ ভাইয়েরা বাংলাদেশের তাগুত সরকারকে এখন পর্যন্ত যে চাপের মুখে রাখতে সক্ষম হয়েছে তার প্রমানস্বরুপ নিচে সামান্য একটি নথি পেশ করা হলো –
***
আল-কায়দাপন্থী জঙ্গী সংগঠন এখন ঝুঁকির কারণ - https://www.prothomalo.com/bangladesh/article/1610445
চলবে ইনশাআল্লাহ.....
Comment