Announcement

Collapse
No announcement yet.

শরিয়াহ ও মানহাজ: পার্থক্য পর্যালোচনা

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • শরিয়াহ ও মানহাজ: পার্থক্য পর্যালোচনা

    শরিয়াহ ও মানহাজ: পার্থক্য পর্যালোচনা

    গত কয়েক দশকে মানহাজ কেন্দ্রিক আলোচনার একটা নির্দিষ্ট রূপ অনেক বেশি প্রচারিত হয়েছে। যা হয়ত ইসলামের ইতিহাসে পূর্বে কখনোই হয় নি। যারা ইহার ব্যপারে ভালভাবে জানে না, তাদের মধ্যে অনেক প্রশ্ন দেখা দেয়। মানহাজ নিয়ে আলোচনা কারীদের অনেক কাজ তাদের কাছে শরিয়াহর সাথে খটকা লাগে। তারা জিজ্ঞাস করে, মানহাজ কি শরিয়ার অন্তর্ভুক্ত? ইহার উৎস কি? নির্দিষ্ট মানহাজের অনুরসন কি আবশ্যক? এই প্রবন্ধে শরিয়াহ ও মানহাজের স্বরূপ ও প্রচলিত মানহাজের বাস্তবতা নিয়ে আলোচনা করা হবে ইনশাআল্লাহ।

    আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ
    لِكُلٍّ جَعَلْنَا مِنكُمْ شِرْعَةً وَمِنْهَاجًا
    আমি তোমাদের প্রত্যেককে একটি (শরিয়াহ) আইন ও (মানহাজ) পথ দিয়েছি।

    আল্লাহ তায়ালা মানব জাতির জন্যে দুইটা বিষয় নাজিল করেছে, শরিয়াহ ও মানহাজ। সংক্ষিপ্তভাবে ইহার পরিচয় হল; শরিয়াহ হচ্ছে আল্লাহ তায়ালার সমস্ত হুকুম-বিধান, আর মানহাজ হচ্ছে সেই হুকুম বাস্তবায়নের সঠিক পথ ও পদ্ধতি। অর্থাৎ আল্লাহ তায়ালা হালাল-হারাম যত বিধান দিয়েছেন সব হচ্ছে শরিয়াহ, আর সেই বিধানগুলো বাস্তবায়নের নববী পদ্ধতিকে মানহাজ গন্য করা হবে।

    ধরুন, আপনাকে ৫টা কাজের আদেশ দেয়া হল। এখন আপনি হয়ত একটা আগে করবেন, আরেকটা পরে করবেন। একটা অর্ধেক করবেন ও আরেকটা পূর্ন করবেন। একটা হয়ত ছেড়ে দিবে ও আরেকটা করবেন। অর্থাৎ আপনার সক্ষমতা ও পরিস্থিতি অনুজায়ী কাজগুলো আদায় করবেন। এখানে আদেশগুলো হচ্ছে শরিয়াহ ও পালনের পদ্ধতি হচ্ছে মানহাজ। যদি আপনাকে ৫ তা রুটি খেতে বলা হয়, তখন সক্ষমতা না থাকায় ৩ টা খেয়ে ২ টা রেখে দেয়া বা অসুস্থতার ফলে একটাও না খেতে পারা, এটা কিন্তু আদেশ অমান্য করা নয়। যদিও বাহ্যিক ভাবে আদেশের বিপরীত মনে হচ্ছে।

    ঠিক তেমনি, আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে অনেক হুকুম দিয়েছে, এখন এগুলোর মধ্যে একটা আগে পালন হবে তো আরেকটা পরে, একটা ছেড়ে দেয়া হবে তো আরেকটা ধরা হবে। যেগুলো ছেড়ে দিয়েছেন, এর অর্থ এই নয় যে আপনি আল্লাহর হুকুম অমান্য করেছেন। বরং সক্ষমতা ও পরিস্থিতির ফলে কাজটাকে একটু ভিন্ন ভাবে আদায় করছে। এটাই হচ্ছে মানহাজ।

    উদাহারণতঃ শরিয়াহ বলে ইসলাম সর্বদা উচু থাকবে, কাফেরদেরকে কোন ভাবে ছাড় দেয়া যাবে না। কুরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেছেনঃ {{ কাফেরদের জন্য মুমিনদের উপর কোন কতৃত নেই}}। কিন্তু হুদাইবিয়া সন্ধির সময় কাফেরদেরকে বেশি সুযোগ দেয়া হয়েছিল, মক্কা থেকে ইসলাম গ্রহন করে আসা মুমিনদের উপর কতৃত দেয়া হয়েছিল। ইহা বাহ্যিক ভাবে শরিয়াহকে ছেড়ে দেয়া মনে হলেও এটাই ছিল নববী মানহাজ বা কর্মপদ্ধতি।

    এই ক্ষেত্রে লক্ষণীয় বিষয় হল; শরিয়াহর মাসায়ালা ক্ষেত্রে কোন ছাড় নেই, পূর্ণভাবে শিখতে, শিখাতে ও কোন কিছু গোপন করা ব্যতিত স্পষ্টভাবে প্রকাশ করতে হবে। অন্যদিকে মানহাজ বা শরিয়াহর বিধানগুলো প্রয়োগের ক্ষেত্রে কিছুটা ভিন্ন হতে পারে, কিন্তু মনগড়া হিকমত ও মাসলাহাতের দোঁহাই দিয়ে নিজে থেকেই মানহাজ তৈরি করা যাবে না। কারণ যেহেতু আল্লাহ তায়ালা (لِكُلٍّ جَعَلْنَا مِنكُمْ شِرْعَةً وَمِنْهَاجًا) এই আয়াতে বলেছেন, তিনিই মানহাজ নাজিল করেছেন। তাই আমাদেরকে নবী ও সাহাবাদের মানহাজের অনুসরন করতে হবে। ইহাই হবে আমাদের জন্য মানহাজের উৎস, এর উপর ভিত্তি করেই নতুন মানহাজ ইজতিহাদ করা হবে। কেহ যদি নববী মানহাজ বাদ দিয়ে নজস্ব যুক্তিতে কোন মানহাজ তৈরি করে তা বাতিল বলে গন্য হবে।

    বর্তমান মুজাহিদদের মানহাজ নববী মানহাজের অনুযায়ী নাকি বিপরীত তা জানার জন্যে কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে ইনশাআল্লাহ।

    => আক্রমনের ক্ষেত্রে প্রধান ও প্রথম টার্গেট আয়িম্মাতুল কুফর। সম্পূর্ণ মনযোগ কুফরি ব্যবস্থার বিরুদ্ধে যুদ্ধের উপর রাখা এবং অন্য কোনো পার্শ্বযুদ্ধে না জড়ানো।

    শরিয়াহর আদেশ হল, সমস্ত কাফেরদেরকে হত্যা করতে হবে। যেখানেই পাওয়া যাবে সেখানেই আক্রমন করতে হবে। কাছের কিংবা দূরের কোন কাফেরকেই ছাড় দেয়া যাবে না। কিন্তু মুজাহিদরা পার্শবর্তি কাফেরদেরকে ছেড়ে দিচ্ছে, ছোট ত্বাগুতদেরকে ছেড়ে দিচ্ছে। যা অনেকটা শরিয়ার হুকুমকে ছাড় দেয়া বা পরিবর্তন করার মত মনে হয়।

    কিন্তু আমরা যদি তালাশ করি তাহলে দেখব নবী ও সাহাবাদের মানহাজ এমনটাই ছিল। তারা কখনো অপ্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে নিজেদের শক্তি ব্যবহার করতেন না, বরং মূল মাথাকে আয়ত্বে আনার চেষ্টা করতেন ও সাধারনদেরকে ছেড়ে দিতেন। ইয়াহুদী ও কুরাইশদের ক্ষেত্রে আল্লাহর নবী সা. এই মানহাজ বাস্তবায়ন করেছেন। যখন যেটার পক্ষ থেকে আশংকা তৈরি হয়েছে সেটাকে দমন করেছেন। হজরত উমর রাজি. যখন হমুজানকে জজ্ঞাস করেছিলেনঃ- রুম, পারস্য ও বাইতুল মাকদিসের মধ্যে কোনটাকে আগে বিজয় কতে হবে? তখন যে বলেছিলঃ রুম ও পারস্য হচ্ছে পাখির দুই ডানার মত, আপনি ডানাতে আঘাত করুন পাখি দূর্বল হয়ে যাবে। তিনি বললেনঃ হে আল্লাহর শত্রু, মিথ্যা বলেছিস। বাইতুল মাকদিস হচ্ছে মাথা, এই মাথা দখল করলে দুই ডানা এমনিতেই পতন হয়ে যাবে।

    এখান থেকেই এসেছে ‘সাপের মাথায় আঘাত করা’র বাস্তবসম্মত মানহাজ। অর্থাৎ অন্য সব শত্রু থেকে ফোকাস সরিয়ে শুধু সেই শত্রুর উপর আক্রমন করা যার মাধ্যমে অন্যগুলো টিকে আছে। এটা করতে গিয়ে অনেক ভূমিতে কাফেরদের উপর আক্রমন ছেড়ে দিতে হলেও সেটা শরিয়াহর হুকুম অমান্য করা নয়।

    এখানে আনুসাংগিক ভাবে তালেবানের ভিবিন্ন কুফুরি শক্তির সাথে চুক্তির বিষয়টা উঠে আসে। বাহ্যিক ভাবে কারো কাছে শরিয়াহগত সমস্যাযুক্ত মনে হলেও নববী মানহাজে তার প্রমান পাই। রাসূল সা. মদীনায় গিয়েই ইয়াহুদীদের সাথে চুক্তি করেছিলেন, যাতে কিছুটা নিশ্চিন্তে নিজেদের শক্তিকে গুছিয়ে নিতে পারে। পরবর্তিতে কুরাইশদের সাথে যুদ্ধের সময় অন্যান্য শত্রুদেরকে চুক্তি করে চুপ করে রেখেছিলেন। আবার অন্যদের সাথে যুদ্ধের সময় কুরাইশের সাথে হুদাইবিয়া সন্ধি করেছিলেন। ঠিক এই কাজটাই বর্তমানে তালেবান মুজাহিদরা করছে। যদিও শরিয়াহর আদেশ ছিল পৃথিবীর সকল কাফেরের বিরোদ্ধে যুদ্ধ করে নিঃশেষ করে দেয়া। মূলত সব কুফুরীকে শেষ করার মাধ্যম হিসবেই এটা করা হচ্ছে।

    মোটকথা, জামাআত প্রত্যেক এমন লক্ষ্যবস্তুকে নিশানা বানানো অথবা হত্যা করা থেকে বিরত থাকে, যাকে হত্যা করা শরীয়ত অনুযায়ী হয়তো জায়েয, কিন্তু এই হত্যাকাণ্ডের ফলে জিহাদের লাভ অপেক্ষা ক্ষতি বেশি হয় অথবা যা মুসলিম উম্মতের উপলব্ধির বাইরে এবং মুসলিম উম্মতকে জিহাদ থেকে দূরে সরিয়ে দেয়।

    => যেহেতু পার্শ্বযুদ্ধ থেকে দূরে থাকে, তাই আঞ্চলিক বসবাররত কাফেরদের সাথে যুদ্ধে জড়াতে চায় না। বরং কাফের ও মুরতাদদের সাথে একই সাথে অবস্থান করে থাকেন। স্থানীয় মুরতাদ প্রশাসনের সাথে সশস্ত্র সংঘাত যতদূর সম্ভব এড়িয়ে চলেন।

    অন্যদিকে শরিয়াহর হুকুম হচ্ছে, কাফেরদের সাথে কোন ভাবেই সম্পর্ক করা যাবে না। তাদের সাথে বন্ধুত্ব ঈমানের ক্ষেত্রে সমস্যা সৃষ্টি করবে। কাফেরদেরকে ঘৃনা করতে হবে ও যেখানে পাওয়া যাবে হত্যা করতে হবে। কিন্তু মানহাজ অনুরাসীদের আচরনে মনে হতে পারে ওয়ালা বারার আকীদার পূর্ন বাস্তবায়ন করছে না, বরং আকীদার ক্ষেত্রে ছাড় দিয়ে ফেলছে।

    আমরা এখন নববী মানহাজের দিকে লক্ষ করব, রাসূল সা. এর সময়ের মুনাফিকরা ছিল সর্ব নিকৃষ্ট কাফের। তাদের সাথেও শরিয়াহর সব হুকুম প্রয়োগের কথা ছিল, কিন্তু মুসলিমরা তাদের সাথে বাহ্যিক বারাআহ করে নি। এক সাথে বসবাস ও সৌজন্য সম্পর্ক ছিল। তাদেরকে হত্যাও করা হয় নি। কারণ আল্লাহর নবী বলেছেনঃ যদি তাদেরকে হত্যা করা হয় তখন অন্যরা বলবে, দেখ মুসলিমরা নিজেরাই নিজেদেরকে হত্যা করছে। ফলে তারা ইসলামের আসা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিবে। এছাড়া মুনাফিকদের সাথে যুদ্ধ হলে মূল শত্রুর বিরোদ্ধে আক্রমনের পর্যাপ্ত শক্তি থাকবে না।

    তাই বর্তমানেও বড় ক্ষতি থেকে বাচার জন্যে ও নিজেদের শক্তিগুলোকে সংরক্ষনের জন্যে পার্শ্বযুদ্ধে না জড়িয়ে বরং অনেকটা সহাবস্থান করা হচ্ছে।

    => হিজরতকেই একমাত্র সামরিক পরিকল্পনা হিসাবে বিবেচনা করেন না

    শরিয়ার হুকুম হচ্ছে দারুল কুফুর থেকে হিজরত করতে হবে। এই জন্যে অনেককে এই প্রশ্ন করেন যে, তাদের মতে যেহেতু এই দেশ দারুল কুফুর তাহলে হিজরত করছেন না কেন?

    রাসূল সা. এর ইন্তিকালের পর শুধু তিনটা মক্কা, মাদিনা ও কুবা ছাড়া বাকি সব এলাকায় ব্যপক ভাবে মুরতাদ হয়ে যাচ্ছিল। এমন কোন মাসজিদ ছিল না যেখানে জামাত কায়েম হত। কিন্তু এই হালতে সাহাবারা সবাই মক্কা বা মাদিনায় এসে বসে থাকেন নি, সব জায়গায় ছড়িয়ে থেকে মুরতাদদের বিরোদ্ধে যুদ্ধ করেছে, সমাজকে ঠিক করার চেষ্টা করেছেন। ফলে আবার ইসলামের পূর্বের অবস্থা ফিরে আসে।

    এখন যে সমস্ত ভূমিতে আগে কখনো ইসলাম ছিল, সেখান থেকে হিজরত না করে আবার ইসলাম ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করলে সাহাবাদের মানহাজ অনুজায়ী ভুল হবে না, বরং এটাই হবে সবচেয়ে সঠিক কাজ।

    => ই’দাদ বা প্রস্তুতির মারহালাগুলো সবরের সাথে অতিক্রম করা।

    শরিয়াহর আদেশ হচ্ছে, জিহাদ ফরজে আইন। তাই এখন থেকে সবার উপর শত্রুর বিরোদ্ধে আক্রমন চালিয়ে যাওয়া ফরজ। যুদ্ধ না করে বসে থাকার অর্থ হচ্ছে আল্লাহ বিধান বাস্তবায়ন থেকে বিরত থাকা। ই’দাদ ভিন্ন এক ফরজ, যা আরেক ফরজকে রহিত করতে পারে না।

    আল্লাহর নবীর সময়ে প্রত্যেক যুদ্ধে অনেক পূর্ব থেকেই প্রস্তুতির ঘোষনা দেয়া হত। যেদিন যুদ্ধের প্রয়জন হত সেদিনই ঝাপিয়ে পরতেন না, যদিও শরিয়াহর বাহ্যিক হুকুম থেকে তেমনটাই বুঝা যায়। খন্দক যুদ্ধের পূর্বে পরিখা খনন করেছেন, যুদ্ধ প্রতিহত করার চেষ্টা করেছেন। ইহা থেকে বুঝা যায়, যুদ্ধের পূর্বে অবশ্যই মূল উদ্দেশ্য অর্জনের জন্যে পর্যাপ্ত প্রস্তুতি গ্রহন করতে হবে এবং এগুলো মূল জিহাদের ফরজিয়্যাতের অন্তর্ভুক্ত হবে।

    => এই দেশে জিহাদ করা হবে না বরং এই ভূমিকে সাপোর্টেড ভূমি হিসেবে গন্য করা হয়

    শরিয়াহর আদেশ মতে, যেহেতু আমাদের দেশেও জিহাদ ফরজ তাই এখানেই যুদ্ধ শুরু করতে হবে। কিন্তু তা না করে এই ভূমিতে জিহাদ শুরু করা থেকে নিষেধ করা হচ্ছে। যার ফলে বাহ্যিক ভাবে মনে হচ্ছে, আল্লাহর ফরজকে নিষিদ্ধ করে দেয়া হচ্ছে।

    এই ক্ষেত্রে প্রথমত যে বিষয়টা বুঝতে হবে, কাফেরদের তৈরি দেশ ভিত্তিক বিভাজন ইসলাম গ্রহন করে না। সমস্ত উম্মাহ এক দেহের মত, পূরা পৃথিবী এক ভূমির মত। অঞ্চল ভিত্তিক ফরজ আদায়কে ভাগ করা যাবে না।

    দ্বিতীয়ত, আল্লাহর নবী একবার মদিনায় থেকে যুদ্ধ করেছে, আরেকবার মদিনার বাহিরে গিয়ে যুদ্ধ করেছেন। একবার মরুভূমির এক প্রান্তে যুদ্ধ করেছেন, আরেকবার আরেক প্রান্তে। যুদ্ধের ক্ষেত্রে আল্লাহর নবীর উপযুক্ত পরিবেশ বাছাই করে যুদ্ধ করতেন। যে অঞ্চল যুদ্ধের উপযোগী নয় সেখানে যুদ্ধ করতে না। ঠিক তেমনি, বর্তমানে গ্লোবাল জিহাদের ক্ষেত্রে বিশ্বটাকে যদি একটা মাঠের সাথে তুলনা করা হয়, তাহলে এখানে যুদ্ধের সবচেয়ে উপযোগী স্থানগুলো নির্ধারন করতে হবে। আর যে সব স্থান যুদ্ধের উপযোগী নয় সেখান থেকে তাদেরকে রসদ সরবরাহ করা হবে।

    তাই বর্তমানে যে সমস্ত ভূমিতে জিহাদ হচ্ছে না, সেখানে এমন নয় যে জিহাদের হুকুম রহিত হয়ে গেছে, বরং নববী মানহাজের অনুসরনের ভিত্তিতেই সেখানে জিহাদ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে না, যদিও শরিয়াহগত ভাবে সেখানেও ফরজে আইন। সেখানের অধিবাসিরা এই ফরজ আদায় করবে, নিজদের প্রস্তুতি গ্রহন ও অন্যদের সাপোর্ট দেয়ার মাধ্যমে।

    => মুজাহিদরা সবার মধ্যে ঐক্য ধরে রাখার জন্যে আঞ্চলিক উলামাদের ফিকাহ অনুরসন করবে

    অর্থাৎ কেহ হানাফী, সে যদি শাফেয়ীদের অঞ্চলে যায় তাহলে সেখানে তাই পালন করবে। যদি কোন মাসায়ালা হানাফী মানহাব অনুজায়ী না জায়েজ হয়, আর শাফেয়ি মাজহাবে জায়েজ হয়। তাহলে ইমাম শাফেয়িকেই অনুসরন করবে। এখন প্রশ্ন হতে পারে, এত দিন যা হালাল মানা হয়ে এখন তা হারাম হিসেবে মানব কিসের ভিত্তিতে? ঐক্যের জন্যে হারামকে হালাল করে দেয়া যায়?

    মিথ্যা বলা মহাপাপ। কিন্তু আল্লাহর নবী তিন অবস্থাতে মিথ্যা বলার অনুমতি দিয়েছেন। তার মধ্যে একটি হল, দুই মুসলিমের মাঝে ঐক্য তৈরি করা। অনেকে বলেছেন, তাওরিয়া করতে হবে। তবে ইমাম নববী সরাসরি মথ্যা বলাকে জায়েজ বলেছেন। এটা হচ্ছে, মৌলিক উসুল যার ভিত্তিতে শরিয়াহর সাধারন অনেক ফুরূয়ী বিষয়কেও উম্মাহর ঐক্যের জন্যে ছাড় দেয়ার বৈধতা পাওয়া যায়। তবে এখানে কিভাবে এই উচিত ব্যবহার হবে তা নির্ধারন করবেন আলেমগণ।

    ঠিক তেমনি ভাবে তারা দাওয়াহর ক্ষেত্রে সমাজের জিহাদ বিরোধী আলেমদের নিন্দা করার পক্ষে নয়। কারণ তাতে হয়ত তাদের মুখোশ উন্মুচন হলেও মৌলিক ভাবে সাধারনদেরকে এই কাজের প্রতি বিরুপ ধারনা তৈরি করবে। আর আল্লাহর নবী কাউকে ইসলামের দিকে দাওয়াত দিতে গিয়ে কখনো কাফের নেতাদের বিরোদ্ধে দাওয়াত দেন নি বা নিন্দা করেন নি। এটা বলেন নি যে, আবু জাহেল কাফের তাই তাকে ত্যাগ কর। বরং ইসলামের বুঝিয়েছেন ফলে তারা বুঝেশুনে তাদের ত্যাগ করেছিল।

    মোট কথা, শরিয়াহ ও মানহাজ আল্লাহ প্রদত্ত দুইটা বিষয়। একটা হচ্ছে হুকুম ও আরেকটি হচ্ছে তার সঠিক প্রয়োগিক পথ। কোন ব্যক্তি কথা ভাল-মন্দ যাচাইয়ের আগে দেখতে হবে তা শরিয়াহর নাকি মানহাজের অন্তভুক্ত। যদি শরিয়াহকে শরিয়াহ দিয়ে ও মানহাজকে নববী মানহাজ দিয়ে যাচাই করতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে, শরিয়াহ যেমন মনগড়া পালন হয় না তেমনি মনগড়া মানহাজ অনুসরন বৈধ নয়। বরং প্রত্যেকটা ক্ষেত্রে নববী মানহাজ বুঝে সেই অনুজায়ী আমল করা আবশ্যক।
    মুমিনদেরকে সাহায্য করা আমার দায়িত্ব
    রোম- ৪৭

  • #2
    মাশাআল্লাহ, আল্লাহ তায়ালা আরো বারাকাহ দান করুন, অনেক সুন্দর হয়েছে। অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরেছেন। ইনশাআল্লাহ সকল ভাইদের জন্য উপকারী হবে, সকলেই গুরুত্ব দিয়ে লেখাটি পরে নেই।

    Comment


    • #3
      আল্লাহু আকবার ওয়ালিল্লাহিল হামদ।
      ان المتقین فی جنت ونعیم
      سورة الطور

      Comment


      • #4
        এমন অারোও অাশা করি ভাইয়েরা।
        অাল্লাহ অামাদেরকে উপকৃত করুন এবং দ্বীনের জন্য যোগ্য হিসেবে গড়ে উঠতে সাহায্য করুন। অামরা যেন অাল্লাহর মাকবুল গোলাম হয়েই যাই। অামিন ইয়া অাল্লাহ।

        Comment


        • #5
          জাঝাকাল্লাহ খইর ভাই৷
          এই লেখাটি ভাইদের মাধমে ইমারাহর সকল ভাইদের কাছে পৌছে দিলে খুব ভালো হয় ইনশাআল্লাহ৷
          কারণ, আমরা অনেকে অনেক কিছু বুঝতে ভুল করি৷
          আল্লাহ তাআলা আমাদের সঠিক বুঝ দান করুন৷ ভাইদের কাজগুলো কবুল করে নিন, আমিন ইয়া রব্বাল আলামিন৷

          Comment


          • #6
            আখি,অনেকদিন পরে হলেও উত্তম কিছু নিয়ে আগমন! জাযাকাল্লাহ।
            والیتلطف ولا یشعرن بکم احدا٠انهم ان یظهروا علیکم یرجموکم او یعیدو کم فی ملتهم ولن تفلحو اذا ابدا

            Comment


            • #7
              মাসাআল্লাহ, উত্তম পোষ্ট।
              মুহতারাম ভাইয়েরা-
              সবাই এই লেখা থেকে উপকৃত হওয়ার চেষ্টা করি, ইনশা আল্লাহ।
              আর পোষ্টকারী সম্মানিত ভাইয়ের প্রতি আরয থাকবে, লেখাটিতে আরেকটু নযর দিতে, যাতে যে সমস্ত বানান ভুল আছে, তা সংশোধন করে দিতে পারেন। *শুকরান
              “ধৈর্যশীল সতর্ক ব্যক্তিরাই লড়াইয়ের জন্য উপযুক্ত।”-শাইখ উসামা বিন লাদেন রহ.

              Comment


              • #8
                মাসাআল্লাহ, অনেক সুন্দর ও জরুরী একটি পোষ্ট।
                আল্লাহ তা‘আলা ভাইয়ের ইলমে আরো বারাকাহ দান করুন এবং সকল খেতমতকে কবুল করুন। আমীন ইয়া রাব্বাল আলামীন।
                মুহতারাম ভাই- এ জাতীয় পোষ্ট আরো চাই.......ইনশা আল্লাহ
                ‘যার গুনাহ অনেক বেশি তার সর্বোত্তম চিকিৎসা হল জিহাদ’-শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ.

                Comment


                • #9
                  পোষ্টের মধ্যে একটি প্যারাগ্রাফ আছে যে "শরিয়ার বলে ইসলাম সর্বদা উঁচু থাকবে" এই লাইনের নিচেই সম্ভবত একটি টাইপে "না" শব্দটি বাদ পরেছে। একটু দেখে ইডিট করলে ভাল হতো ভাই।
                  আমার নিদ্রা এক রক্তাক্ত প্রান্তরে,
                  জাগরণ এক সবুজ পাখি'র অন্তরে।
                  বিইযনিল্লাহ!

                  Comment


                  • #10
                    আল্লাহু আকবার আল্লাহ্! অল্প শব্দে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট তুলে ধরেছেন। মুহতারাম আপনাকে আল্লাহ্* জন্য ভালবাসি, আমরা আপনাদের লেখনী নিয়মিত চাই, আল্লাহ আপনার ইলম,আমল ও সময়ে বারাকাহ ঢেলে দিক আমীন।
                    .
                    ইখওয়া ও মামুর ভাইদের আবশ্যক পাঠ্য বলে মনে করি।

                    Comment


                    • #11
                      মাশাআল্লাহ অনেক জ্ঞানসমৃদ্ধ ফাকাহাতপুর্ন আলোচনা।আল্লাহ তায়ালার পথে চললে পড়ে আল্লাহ তায়ালাই রাহনুমায়ি করেন আল্লাহতায়ালা তাওফীক বাড়িয়েদিন।

                      Comment


                      • #12
                        অনেক সাথী আছে যারা কাজে যোগদান করার পর কিছুদিন যোগাযোগ রক্ষা করেছে ঠিক কিন্তু একটু সময় যেতেই কেটে পড়েছে/ যোগাযোগ রাখেনি। তাদের ব্যাপারে আমাদের কর্মপদ্ধতি কী হবে???
                        ان المتقین فی جنت ونعیم
                        سورة الطور

                        Comment


                        • #13
                          প্রিয় ভাইয়েরা, শাইখ আবু ইমরান হাফিয্বাহুল্লাহ এর নতুন আপনাদের কাছে থাকলে অধমকে দেওয়ার অনুরোধ।
                          ولو ارادوا الخروج لاعدواله عدةولکن کره الله انبعاثهم فثبطهم وقیل اقعدوا مع القعدین.

                          Comment


                          • #14
                            আলহামদুলিল্লাহ অনেক উপকারী ও গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করেছেন ভাই। আল্লাহ আমাদেরকে শরিয়তের উপর অটল থেকে নববী মানহাজে চলার তৌফিক দান করুন।
                            فَقَاتِلُوْۤا اَوْلِيَآءَ الشَّيْطٰنِ

                            Comment


                            • #15
                              masaallah, Allah vaider modde barakah Dan korub

                              [এটা যেহেতু বাংলা ফোরাম। তাই বাংলাতে কমেন্ট করাই মুনাসিব।-মডারেটর]

                              Comment

                              Working...
                              X