মিল্লাতে ইব্রাহিম থেকে.....
## তাওহীদ প্রতিষ্ঠা করা রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার চাইতে অগ্রগণ্য। বস্তুত রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা তাওহীদ তথা আল্লাহর ভূমিতে আল্লাহর আইন বাস্তবায়নের এক অনিবার্য প্রক্রিয়া। কিন্তু কালের আবর্তনে যদি কখনো এ'দুয়ের মাঝে সাংঘর্ষিকতা পরিলক্ষিত হয়, তখন বলার অপেক্ষা রাখে না যে, তাওহীদকেই প্রাধান্য দিতে হবে।এটা প্রমাণিত হয়, আসহাবে কাহ্ফের ঘটনা দ্বারা। একইভাবে প্রমাণিত হয় যে সকল নবী আলাইহিমুস সালাম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হননি, কোরআন বিধৃত তাদের ঘটনাবলির দ্বারা। হাদিসে বলা হয়েছে, সকল নবী-রাসুল (আ.) বৈমাত্রিক ভ্রাতার ন্যায়। অর্থাৎ, পূর্ণাঙ্গ তাওহীদ প্রতিষ্ঠায় সকলেই সমান।অতএব, এ কথা বলার সুযোগ নেই যে, তাদের শরীয়ত ভিন্ন।
## মুশরিক এবং তাদের বাতিল মাবুদদের ব্যাপারে দলীয়ভাবে নীরব থাকার কোন সুযোগ যদি ইসলামে থাকতো, তাহলে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবায়ে কেরামকে (রা.) হাবশায় হিজরতের নির্দেশ/অনুমতি দিতেন না।
## মুশরিকদের উপাস্যদেরকে গালি দিলে মৌলিকভাবে অসুবিধা নেই।কারণ কোরানের বহু জায়গায় তাদেরকে জাহান্নামের জ্বালানী,যৌথ প্রচেষ্টায় হলেও একটি সামান্য মাছি সৃষ্টি করতে অক্ষম ইত্যাকার নানান অপমানসূচক কথা বলে ছোট করা হয়েছে।এতদসত্ত্বেও কুরআনে তাদেরকে গালাগাল করতে নিষেধ করা হয়েছে এই কারণে যে, প্রতিশোধস্বরূপ তাদের নির্বোধ উপাসকেরা আবার না আল্লাহকে গালি দিয়ে বসে।
অতএব, উদারনীতি এবং পরধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাবোধের নাম দিয়ে যাচ্ছেতাই কাজ করার কোন সুযোগ নেই। সাম্প্রদায়িক ট্যাগ খেলেও নেই।
## একটি আয়াত রয়েছে —"
ٱدۡعُ إِلَىٰ سَبِيلِ رَبِّكَ بِٱلۡحِكۡمَةِ وَٱلۡمَوۡعِظَةِ ٱلۡحَسَنَةِ* ۖ وَجَـٰدِلۡهُم بِٱلَّتِى هِىَ أَحۡسَنُ ۚ إِنَّ رَبَّكَ هُوَ أَعۡلَمُ بِمَن ضَلَّ عَن سَبِيلِهِۦ* ۖ وَهُوَ أَعۡلَمُ بِٱلۡمُهۡتَدِينَ
তোমার প্রভুর রাস্তায় আহ্বান করো জ্ঞান ও সুষ্ঠু উপদেশের দ্বারা, আর তাদের সাথে পর্যালোচনা কর এমনভাবে যা শ্রেষ্ঠ। নিঃসন্দেহ তোমার প্রভু স্বয়ং ভাল জানেন তাকে যে তাঁর পথ থেকে ভ্রষ্ট হয়েছে, আর তিনি ভাল জানেন সৎপথাবলন্বীদের।(নাহল-১২৫)
ক্বিতাল এবং কোরআনের বহু জায়গায় উল্লেখিত কঠোরতার নির্দেশকে এন্টি হেকমত ধরার কোন সুযোগ নেই,বরং উপযুক্ত জায়গায় এগুলোই হেকমত;এরপরও যারা হেকমত বললেই তেল মাখামাখি বুঝে থাকেন,তাদের জন্য বলতে হয়, যেহেতু কোরআনের একাংশ অন্য অংশের তাফসির স্বরূপ, উপরের আয়াতটিকে তাফসীর করে হেকমত ও নম্র ব্যবহারের ক্ষেত্রকে সংকুচিত করে দিচ্ছে নিম্নোক্ত আয়াত —
۞ وَلَا تُجَـٰدِلُوٓاْ أَهۡلَ ٱلۡڪِتَـٰبِ إِلَّا بِٱلَّتِى هِىَ أَحۡسَنُ إِلَّا ٱلَّذِينَ ظَلَمُواْ مِنۡهُمۡ* ۖ وَقُولُوٓاْ ءَامَنَّا بِٱلَّذِىٓ أُنزِلَ إِلَيۡنَا وَأُنزِلَ إِلَيۡڪُمۡ وَإِلَـٰهُنَا وَإِلَـٰهُكُمۡ وَٲحِدٌ وَنَحۡنُ لَهُ ۥ مُسۡلِمُونَ
আর গ্রন্থধারীদের সঙ্গে তর্কবিতর্ক করো না যা সুন্দর সেইভাবে ব্যতীত -- তাদের ক্ষেত্রে ছাড়া যারা তাদের মধ্যে অন্যায়াচরণ করে, আর বলো -- ''আমরা বিশ্বাস করি তাতে যা আমাদের কাছে অবতীর্ণ হয়েছে আর তোমাদের কাছেও অবতীর্ণ হয়েছে, আর আমাদের উপাস্য ও তোমাদের উপাস্য একই, আর আমরা তাঁরই প্রতি আ*ত্মসমর্পিত (আনকাবুত-৪৬)
অতএব, জালেমদের সঙ্গে সুন্দর ও নম্র আচরণের উদ্দেশ্যমূলক সবক শুনিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করার কোন সুযোগ নেই।
Comment