Announcement

Collapse
No announcement yet.

শত্রুর চোখে - বাংলাদেশে আল-কায়েদার কৌশলের দুর্দান্ত সফলতা

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • শত্রুর চোখে - বাংলাদেশে আল-কায়েদার কৌশলের দুর্দান্ত সফলতা

    জোসেফ অলচিন কর্তৃক লিখিত। জোসেফ অলচিন একজন লেখক ও সাংবাদিক। বাংলাদেশে ইসলাম্পন্থীদের কর্মকান্ড নিয়ে সে বিভিন্ন লেখালেখি করেছে। অন্যান্য কাফির ও পশ্চিমা বিশেষজ্ঞদের মতো তার লেখায় সত্য ও মিথ্যার মিশ্রণ আছে। আছে সঠিক তথ্য, এবং ভুল তথ্য। তবে অন্যান্যদের তুলনায় তার লেখায় ভুল তথ্যের হার কম।

    নিচের লেখাটির সাথে কিছু কিছু বিষয়ে আমাদের দ্বিমত আছে। তবে মোটাদাগে আমরা মনে করি, এটি ভাইদের জন্য উপকারী হবে। আমরা এটাকে নিশ্চিত সঠিক বিশ্লেষণ হিসাবে দরকার নেই। বরং আমরা এটাকে “শত্রুর চোখে আমাদের কর্মকান্ডের বিশ্লেষণ” হিসাবে দেখতে পারি। আশা করি ভাইরা উপকৃত হবেন।

    ------------------

    বাংলাদেশে isis ও আল-কায়েদার কর্মপদ্ধতির পর্যালোচনা

    বাংলাদেশে is এর অনুসারীরা সাধারণত খবরের শিরোনাম কেড়ে নেওয়ার মত হামলাতে আগ্রহী। এদের অনেকেই ইউরোপ, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়া, সিরিয়া, জাপান থেকে এদেশে এসেছে অথবা বিভিন্ন সময়ে এসকল দেশে ভ্রমনের জন্য গিয়েছিল। একারণে এদের দেশীয় পর্যায়ে যোগাযোগের তুলনায় আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে যোগাযোগ বেশি।

    isis ও তাদের অনুসারীরা টার্গেট নির্বাচনের ক্ষেত্রে কোন নির্ধারিত নিয়মের অনুসরণ করে না। তারা সুনির্দিষ্ট অভিযোগের কারণে কাউকে হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত না করে, হামলার লক্ষ্যবস্তু নির্ধারণ করে ‘এলোমেলোভাবে’। তারা আক্রমণের ক্ষেত্রে সামরিক ‘নিয়ম-নীতি’র চাইতে ‘ভাগ্য’কে বেশি প্রাধান্য দেয়। অর্থাৎ তাদের আক্রমণ গুলো এমন হয় যে তারা সামরিক নিয়মগুলো মানে কিন্তু এটার উপর পুরোপুরি নির্ভর করে না। তারা সামরিক নিয়ম নীতির চাইতে তাদের ‘ভাগ্য’কে প্রাধান্য দেয় বেশি। তাদের চিন্তাধারা এমন যে, ভাগ্য ভালো হলে আক্রমণ সফল হবে।

    বাংলাদেশ ২০১৬ তে হলি আর্টিসানের ঘটনা ঘটে। হামলা চলাকালীন সময়ে ও পরে পুরো বিশ্ব মিডিয়ার নজর বাংলাদেশের উপর ছিল। মিডিয়ার কাভারেজের দিক চিন্তা করলে এই হামলা অবশ্যই সফল। কারণ এই এক ঘটনা সারা বিশের মনোযোগ বাংলাদেরশের দিকে টেনে এনেছিল। isis সে সময় গোপনীয়তার সাথে কাজ করতে। isis এর প্রথম দিককার যে সকল ঘটনা বিশ্ব মিডিয়াতে আলোচিত-সমালোচিত হয়েছিলে সেগুলোর মধ্যে হলি আর্টিসানের ঘটনা অন্যতম।

    হামলা চলাকালীন সময়ে হামলাকারীরা ভিতরকার অনেক ছবি প্রকাশ করেছিল। এটা মানুষের মধ্যে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ভয় ও ঘৃণা আরও বাড়িয়ে দিয়েছিল। পরবর্তীতে বাংলাদেশ সরকার আন্তর্জাতিক চাপ ও অভ্যন্তরীণ বিশৃঙ্খলা সামাল দেওয়ার জন্য জিহাদিদের বিরুদ্ধে বিশাল ‘ক্র্যাকডাউন’ চালায়।

    অন্যদিকে আল কায়েদার কর্মপদ্ধতি একেবারে ভিন্ন ছিল। অনেকেই মনে করেন যে, ২০১৪ সালে ভারতীয় উপমহাদেশ কেন্দ্র করে আল-কায়েদা তাদের যে শাখা (aqis) এখানে খুলেছিল সেটা আসলে উপমহাদেশে isis কে প্রতিহত করার জন্য করা হয়েছিল। বাংলাদেশে isis এর তুলনায় আল-কায়েদা দুর্দান্ত সফলতা পেয়েছে। আল-কায়েদা হয়তো isis এর মত বিশ্ব মিডিয়ার কেন্দ্রবিন্দু হওয়ার মত হামলা চালায়নি, তবে তারা যেভাবে কাজ করেছে সেটার প্রভাব দীর্ঘস্থায়ী।

    এই দুই দলের প্রভাব বিস্তারকে ‘কচ্ছপ ও খরগোসে’র ঘটনার সাথে তুলনা করা যেতে পারে। isis খরগোসের ন্যায় দ্রুত গতিতে মানুষের নজরে এসেছিল কিন্তু প্রভাব দীর্ঘস্থায়ী করতে পারে নি। অন্যদিকে আল কায়েদা ধীরে ধীরে তাদের সুচিন্তিত কার্যক্রমের মাধ্যমে মানুষের নজরে এসেছে। আর তাই তাদের প্রভাবও দীর্ঘস্থায়ী হয়েছে।

    এখন অবস্থা দেখে যেটা মনে হচ্ছে বাংলাদেশে আল-কায়েদা isis কে সফলভাবে প্রতিহত করতে সমর্থ হয়েছে। এই ভূমিতে আল-কায়েদার প্রভাব বিস্তারের অন্যতম একটা কৌশল হল তারা জনমানুষের সাথে সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোকে গুরুত্বের সাথে গ্রহণ করে এবং সে বিষয়ে তাদের অবস্থান সম্পর্কে মানুষকে জানায়। তারা তাদের অবস্থানের সাথে যায় এমন আন্দোলন ও অভ্যন্তরীণ ঘটনাবলীতে নিজেদেরকে জনমানুষ থেকে সরিয়ে রাখে না। বরং তারা যুব সম্প্রদায়ের ন্যায় সংগত অবস্থানে তাদের সমর্থন জানানোর মাধ্যমে যুবকদের আকৃষ্ট করতে আগ্রহী।

    aqis মূলত আঞ্চলিক কাজের ব্যাপারে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। তারা তাদের কাজের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির পরিবর্তে উপামহাদেশের ঘটনাবলী নিয়ে কাজে মনোযোগ বেশি দেয়। পাকিস্তানভিত্তিক সংগঠন হওয়ার কারনে এটি উপমদেশকেন্দ্রিক কাজকেই বেশি প্রাধান্য দিয়ে থাকে।

    aqis তার হামলার লক্ষ্যবস্তু খুব চিন্তা- ভাবনা করে নির্ধারণ করে। এই ক্ষেত্রে সংঘঠনের উপরের দিককার নেতৃবৃন্দ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকেন। তারা বিতর্কিত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে হামলার লক্ষ্যবস্তু হিসেবে নির্ধারণ করে থাকেন।

    তারা এমন ধরণের ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানগুলোকে গুরুত্বের সাথে নির্ধারণ করেন যেগুলো প্রচলিত সামাজিক মূল্যবোধ পরিবর্তনের জন্য কাজ করে থাকে। যার ফলে মানুষ এমনিতেই এদের ব্যাপারে বিরূপ মনোভাব ধারণ করে। অন্যদিকে বর্তমান রাষ্ট্রগুলো ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃত ভাবে এসকল ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে কাজ করতে দিতে বাধ্য থাকে। ফলে এমন একজন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে লক্ষ্যবস্তুতে রূপান্তর করার মাধ্যমে aqis একদিকে মানুষের সহানুভুতি পায় অন্যদিকে সরকারকে বিব্রতকর পরিস্থিতে ফেলতে পারে।

    বাংলাদেশে জামায়তে ইসলামির সাথে যারা আছেন তাদের অনেকেই ‘৭১ এর যুদ্ধাপরাধী’। এমন একটা অভিযোগ সেখানকার নাস্তিক ও সেকুলার ব্লগাররা দীর্ঘদিন যাবত করে আসছিল। এই সকল রাজনৈতিক নেতাদেরকে ব্লগাররা এমন একটি বিষয় নিয়ে অভিযুক্ত করে আসছিল যে বিষয়ের একটা ফিলসফিকাল ও ইমোশনাল প্রভাব সে দেশের মানুষের উপর রয়েছে।

    ২০১৫ সালের দিকে বাংলাদেশের যুব সম্প্রদায়ের একটা অংশ যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে ফুঁসে উঠে। ডানপন্থীদের পত্রিকা বলে পরিচিত ‘আমার দেশ’ সে সময় ব্যপক প্রোপাগান্ডা চালায়। এই পত্রিকাটির ‘বিএনপি’ নামক রাজনৈতিক দলের সাথে সংশ্লিষ্টতা রয়েছে।

    এ সময় নাস্তিক ও সেকুলার ব্লগারদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের মাদরাসা কেন্দ্রিক আলেম উলামাদের সমন্বয়ে ‘হেফাজতে ইসলাম’ নামক আন্দোলন শুরু হয়। সারাদেশের মাদ্রাসা ও মাদরাসা ছাত্রদের এই আন্দোলনে নিরুঙ্কুশ সমর্থন ছিল। aqis এই আন্দোলনের বিষয়বস্তু ও দাবীর সাথে পুরোপুরি একমত না হলেও হেফাজতের কাজকে সমর্থন করেছিল। অন্যদিকে দেশটির প্রধান দুই রাজনৈতিক দল চেষ্টা করছিল হেফাজতকে নিজেদের কাজে লাগানোর।

    ২০১৬ তে aqis সমকামীতার সাথে সংশ্লিষ্ট একজনকে হত্যা করে। aqis এই ব্যক্তির ক্ষেত্রে যে সকল অভিযোগ এনেছিল সেটা হচ্ছে - সে lgbtq আন্দোলনের সাথে সংশ্লিষ্ট। এই বিষয়টি বাংলাদেশের সামাজিক মূল্যবোধের সাথে সাংঘর্ষিক। অন্য আরেকটি অভিযোগ যেটা আনা হয়েছিল সেটা হছে তাকে ‘বিদেশী এজেন্ট’ বলে দাবি করা হয়।

    এই ঘটনা সরকারকে একটা বিরূপ পরিস্থিতে ফেলে দেয়। একদিকে বহির্বিশ্বের চাপ অন্যদিকে অভ্যন্তরীণ জনগণের চাওয়া নিয়ে সরকার উভয় সংকটে পড়ে। এই ঘটনার থেকে বুঝা যায় যে aqis তাদের কার্যক্রম সাধারণ বিষয়াবলী যেমন “দৈনন্দিন জীবনযাত্রা” বা “পথভ্রষ্ট মুসলিমদের পরিচয় উন্মোচন”এর মধ্যেই সীমাবদ্ধ করে রাখে না। অর্থাৎ তারা প্রচলিত ধর্মপালনের পদ্ধতির মধ্যেই নিজেদেরকে ‘সীমাবদ্ধ’ করে রাখে না।

    ২০১৮ সালে aqis বাংলাদেশের দুইটি অভ্যন্তরীণ ঘটনাতে তাদের অবস্থানের ব্যাপারে বিবৃতি প্রকাশ করে। একটা হচ্ছে ‘নিরাপদ সড়ক আন্দোলন’। এটা শুরু হয়েছিল স্কুলের ২ জন শিক্ষার্থীর বাস চাপায় মারা যাওয়ার কারণে। সাধারণ স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা এই আন্দোলন শুরু করেছিল।

    আরেকটি ঘটনা হচ্ছে মিয়ানমার থেকে সামরিক হামলার স্বীকার রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে অবস্থান গ্রহণ। এই ঘটনার সময়ও aqis বিবৃতি প্রকাশের মাধ্যমে এই ইস্যুতে তাদের অবস্থান তুলে ধরেছিল।

    আমেরিকার সাথে সংশ্লিষ্ট একজন lgbtq কর্মকর্তা থেকে মায়ানমারের মুসলিমদের জন্য সহমর্মিতা প্রকাশ- এই সকল ঘটনা থেকে aqis এর কাজের একটা প্যাটার্ন পাওয়া যায়।

    বাংলাদেশে সন্ত্রাসবাদের সম্ভাবনা কেমন এটা শুধুমাত্র তুলনামূলক পর্যালোচনার ভিত্তিতে নির্ণয় করতে গেলে ভুল করা হবে। এখানকার ঘটনাবলীকে আন্তর্জাতিক দৃষ্টিভঙ্গিতে না দেখে শুধুমাত্র অভ্যন্তরীণ ঘটনা হিসেবে দেখলেও ভুল করা হবে। বর্তমান বাংলাদেশ নানান কারণে জিহাদিদের একটি পছন্দের জায়গা। অন্যদিকে বয়সের হিসেবে এটা একটি শিশু রাষ্ট্র। মাত্র ৪৮ বছর বয়স এটার। সে হিসেবে এর আইন কানুনও এমন সমৃদ্ধ না যা সকল পরিস্থিতিকে সামাল দিতে পারবে। যার কারণে এখানে অনেক ক্ষেত্রেই দুর্নীতি ও বৈষম্য বৃদ্ধি পাচ্ছে।

    --------------
    Last edited by Ibrahim Husain; 01-12-2020, 04:45 PM.

  • #2
    খুব সুন্দর আলোচনা করেছেন ৷ আল্লাহ উপমহাদেশের সংগঠণকে হারাকাতুশ শাবাবের মত বড় পরিসরে কাজ করার সুযোগ করে দিন ৷ আমিন
    "জিহাদ ঈমানের একটি অংশ ৷"-ইমাম বোখারী রহিমাহুল্লাহ

    Comment


    • #3
      আলহামদুলিল্লাহ, সফলতা দেওয়ার মালিক শুধুমাত্র আল্লাহ তা‘আলা, আর মুমিনরাই বিজয়ী হবে ইনশাআল্লাহ
      দ্বীনকে আপন করে ভালোবেসেছে যারা,
      জীবনের বিনিময়ে জান্নাত কিনেছে তারা।

      Comment


      • #4
        আলহামদুলিল্লাহ, সফলতা দেওয়ার মালিক শুধুমাত্র আল্লাহ তা‘আলা, আর মুমিনরাই বিজয়ী হবে ইনশাআল্লাহ

        Comment


        • #5
          আল্লাহ আপনাদের কাজ কবুল করুন আমীন। খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি পোস্ট। মনে পড়ে চচট্রগ্রামের এসপির স্ত্রীর হত্যার কথা, নিজেই নিজের স্ত্রীকে হত্যা করে আকিসের উপর দোষ চাপায়! নিজের এপিএসের মাধ্যমে হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে মুজাহিদিনদের উপর পুরো চাপিয়ে দেয়! মানুষ নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে আখিরাতেও ছলচাতুরী তালাশ কিরবে, কিন্তু পারবে না।
          আল্লাহ আমাদের ঈমানী হালতে মৃত্যু দান করুন,আমিন।
          আল্লাহ আমাদের শহিদী মৃত্যু দান করুন,আমিন।

          Comment


          • #6
            জাযাকাল্লাহ ভাই আল্লাহ আপনাদের মেহনত কবুল করুন । আমীন

            Comment


            • #7
              জাযাকাল্লাহ। আল্লাহ আমাদের দ্বীনকে বিজয়ী করুন!!! আমরা যেন ধৈর্য ও বিচক্ষণতার সঙ্গে এই সুদূরপ্রসারী যুদ্ধ চালিয়ে যেতে পারি। প্রশংসাকারীর প্রশংসা আর শত্রুর শত্রুতা যেন আমাদেরকে বিভ্রান্ত না করে।

              Comment


              • #8
                আলহামদুলিল্লাহ, বিজয় তো কেবল আল্লাহর পক্ষ থেকেই আসে। সবশেষে প্রকৃত মু’মিনরাই বিজয়ের হাসি হাসবে, ইনশাআল্লাহ।
                “ধৈর্যশীল সতর্ক ব্যক্তিরাই লড়াইয়ের জন্য উপযুক্ত।”-শাইখ উসামা বিন লাদেন রহ.

                Comment

                Working...
                X