ইমারাতের বিজয়ে উপমহাদেশীয় ভাবনা
হাদীসে পারস্পরিক স্নেহ-ভালোবাসায় মুসলিম উম্মাহকে 'দেহ' এর সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গের সমষ্টিই হল দেহ। দেহের একটি অংশ আক্রান্ত হলে অন্যগুলোও ব্যথিত হয়, আক্রান্ত হয়। আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহর ইচ্ছায় দীর্ঘ ২০ বছর পর আফগানিস্তান নামক মুসলিম উম্মাহর একটি অংশের ব্যাথা লাঘব হতে যাচ্ছে- ইমারতে ইসলামিয়ার আকাঙ্ক্ষিত শরীয়াহর শাসনের ছায়াতলে! এটা আমাদের জন্য এবং প্রতিটা নির্যাতিত মুসলিম জনপদের জন্য আনন্দের যে, তালিবান মুজাহিদীনদের এই বিজয়ে পুরো মুসলিম উম্মাহর ব্যাথার ভার কিছুটা হলেও লাঘব হবে। মুসলিম উম্মাহর একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ- নিকৃষ্ট আইম্মাতুল কুফর আমেরিকার দখলদারিত্বের থেকে মুক্ত হবে। এমতাবস্থায় কুরআনুল কারীম আমাদেরকে মহান আল্লাহ তাআলার চিরাচরিত একটি সুন্নাহ স্মরণ করিয়ে দেয়, আল্লাহ তাআলা বলেছেন, "এরা ছিল এক জাতি যারা অতিক্রান্ত হয়েছে। তারা যা উপার্জন করেছে তা তাদের, আর তোমরা যা উপার্জন করছ তা তোমাদের। তারা যা করত সে সম্পর্কে তোমাদেরকে জিজ্ঞাসা করা হবে না।" (সূরা বাকারা, ১৩৪)
.
এটি এমন একটি সুন্নাতুল্লাহ বর্তমান প্রেক্ষাপটে যা বুঝা খুব জরুরী। মুসলিম উম্মাহ একটি দেহ-তুল্য কিন্তু এ দেহ যেমন পারস্পরিক সাহায্য-সহযোগিতা ছাড়া চলতে পারে না তেমনি অংশগত স্বার্থ কেন্দ্রিক সমস্যার সমাধানে স্বউদ্যোগ প্রচেষ্টা ছাড়া এটি বাস্তবতায় রূপায়িতও হয় না! আল্লাহর ইচ্ছায় ইমারতে ইসলামিয়ার মুজাহিদরা তাই পেয়েছে যা তারা উপার্জন করতে চেয়েছিল আর তা হল: আল্লাহর সাহায্য ও বিজয়। এটা তো গেল তাদের অর্জন কিন্তু আমাদের অর্জন...? হ্যাঁ, আমাদের অর্জন সম্পর্কে ইলাহী ফয়সালা হলঃ "..আর তোমরা যা উপার্জন করছ তা তোমাদের। তারা যা করত সে সম্পর্কে তোমাদেরকে জিজ্ঞাসা করা হবে না।" এভাবেই... যদিও তালিবানদের বিজয়ের অংশিদার সমগ্র মুসলিম উম্মাহ কিন্তু আমাদের আঞ্চলিক সমস্যা (যা হল শরীয়াহর অনুপস্থিতি) এর সমাধান আমাদের নিজেদেরই করতে হবে। কেননা 'ইমারাহ' খিলাফাহর মতো স্বাধীন নয় (এবং ইমারাহ গঠনই চূড়ান্ত বিষয় নয়, হাত্তা লা তাকুনা ফিতনাহ), এছাড়া ইমারাহর আন্তর্জাতিক প্রভাব বলয় এতোটা বিস্তৃত হবে না যে মুসলিম উম্মাহ চাইলেই তার সব আশা-আকাঙ্ক্ষা তার কাছে পেশ করবে এবং সে তা যথাযথ পূরণ করতে বাধ্য থাকবে...!? অতএব তালিবান মুজাহিদীনরা দিল্লি-ঢাকা উদ্ধারের জন্য সম্মুখাভিমুখী দল পাঠাবে- এরকম দীর্ঘ আশা লালন করা অবিবেচনা-প্রসূত চিন্তাভাবনা বলেই মনে করি । ভারত উপমহাদেশীয় সমস্যার সমাধানে বাংলাদেশের মুসলিমদের যে স্বাতন্ত্র্য ভূমিকা রয়েছে এক্ষেত্রে তা পালন করাই শ্রেয়।
Comment