আসুন! মোদি ঠেকাও আন্দোলনকে জনসচেতনতা তৈরীর উপায় হিসেবে গ্রহণ করি
বিশুদ্ধ চিন্তা চেতনার ওপর আনার জন্য কাজ করা এক কথা আর পাবলিককে দিয়ে কাজ আদায় করা কিছুটা ভিন্ন কথা। আপনি আপনার সহি ও বিশুদ্ধ ঈমান-আকিদার কথা কথা শোনানোর জন্য সবাইকে পাবেন না। অনেকে কানই দিতে চাইবে না।কিন্তু আপনার কথা শুনতে না চাওয়া ঐ মানুষগুলোর মধ্যেও এমন পাবেন যারা আল্লাহর দ্বীনের জন্য কিছু করতে চায় এবং তাদের আবেগ রয়েছে ও আন্তরিকতা রয়েছে। আমি প্রধানত তাদের কথাই বলতে চাচ্ছি বক্ষ্যমাণ এই রচনায়।
চলছে মোদি ঠেকাও আন্দোলন। ৬ই মার্চ দেশব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। আমরা সবাই জানি নরেন্দ্র মোদী আসা না আসার সঙ্গে ভারতের মুসলমানদের লাভ-ক্ষতির কোন সম্পর্ক নেই। তবুও মোদি ঠেকাও আন্দোলন যুক্তিসঙ্গত হবার দাবী রাখে। ভারত ও হিন্দুত্ববাদ বিরোধী গণ সচেতনতা তৈরীর জন্য এমন জাগরণ অবশ্যই ফলপ্রসূ। সরকারের কথা হলো তারা মোদিকে আনবেই। আর তাই এই সুযোগে সরকারের আসল চেহারা মানুষের সামনে তুলে ধরা এবং তাদের হিন্দুত্ববাদের প্রতি নতজানু দৃষ্টিভঙ্গির কথা মানুষকে জানানো অতি জরুরী।
আমরা যারা তাওহীদ ও জিহাদের কথা বলি, প্রায়ই আমাদের মধ্যে দেখা যায় এজাতীয় অসম্পূর্ণ আন্দোলনগুলোর ঢালাওভাবে বিরোধিতা করতে থাকি এবং পাবলিকের সামনে সে বিরোধিতা প্রকাশ করে দেই। আর তখনই ভুল বুঝাবুঝির তৈরি হয় এবং তানজীমের বদনাম হয়। আপনি বিশুদ্ধ চিন্তা ধারা উপস্থাপন করতে চাইলে অবশ্যই এ সমস্ত আন্দোলনের অসম্পূর্ণতা তুলে ধরতে হবে, কিন্তু সেটা তো সবার কাছে তুলে ধরার প্রয়োজন নেই। কিন্তু তা না করে যদি আপনি বাদ যত এসমস্ত আন্দোলনের বৈধ বিষয়গুলোর সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে জনমানুষের মাঝে কিছু কাজ করেন তাহলে তাওহীদ ও জিহাদের দাওয়াত দেওয়ার জন্যেও আপনি অনেক মানুষকে পেয়ে যাবেন। কারণ এমন একেকটা ইস্যু কথা বলার জন্য বিরাট সুযোগ'। তাই অপ্রয়োজনীয়' সমালোচনা পরিহার করে চলুন আমরা গণসচেতনতা তৈরীর লক্ষ্যে কাজ করি।
আমি লক্ষ করেছি,সমাজের বিভিন্ন মহল এবং পরিবেশ এরকম রয়েছে যেখানে তাওহীদ ও জিহাদের কথা তো দূরের কথা, সামান্য ভারতের গণহত্যা ইস্যু, আওয়ামী লীগ সরকারের ইসলামবিরোধী কার্যকলাপ ইত্যাদির নাম পর্যন্ত উঠানো যায় না। আপনাকে জিহাদের কথা বলতে হবে না। আপনাকে তালেবানের বিজয়ের কথা বলতে হবেনা।আপনি জাস্ট ভারতের গণহত্যা নিয়ে কিছু বললেই বা এই ইস্যুটা আপনার আলোচনায় তুললেই অনেকেই আপনার দিকে বিভিন্নভাবে তাকাবে। এই সমস্ত মহলে কাজ করার জন্য এই জাতীয় আন্দোলনগুলো অনেক বড় সুযোগ। তাই বুদ্ধি-বিবেচনাহীন বিরোধিতায় এই সুযোগ হাতছাড়া করা কিছুতেই উচিত হবে না। তবে হ্যাঁ,এ সমস্ত মহলেও কাজ করতে গিয়ে চিন্তাশীল যে সমস্ত মানুষকে পাবেন তাদেরকে এ সমস্ত আন্দোলনের অসম্পূর্ণতা এবং অসঙ্গতি জানান ওটা আপনার কর্তব্য কিন্তু সেটা ব্যাপকভাবে নয় বরং বিশেষভাবে। পাবলিক মহল এবং বিশেষ মহলের এই পার্থক্যটা জানা আমাদের জন্য খুবই জরুরী।
যাই হোক, অত্যন্ত প্রজ্ঞার সঙ্গে গণ সচেতনতা তৈরীর এই কাজটা আমাদেরকে আঞ্জাম দিতে হবে। এখানে আমরা সঙ্গী হিসেবে পেয়ে যাব জামাতের ভাইদেরকে। পেয়ে যাব হিযবুত তাহরীরের ভাইদেরকে। এমন আরও অনেক ইসলামী দলের সঙ্গী-সাথীদেরকে আমরা পেয়ে যাব। আমাদেরকে সংকীর্ণতা পরিহার করতে হবে। জামাত এবং হিযবুত তাহরীরের বিভ্রান্তিগুলোকে সমর্থন করুন —সে কথা বলছি না।কিন্তু তাদের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে কাজ করার অর্থ এই নয় যে তাদের বিভ্রান্তিগুলোকে সমর্থন করছি আমরা।
বিশেষ দ্রষ্টব্য: এসমস্ত আন্দোলনের সমস্ত অংশ বৈধ নয় কারণ এসমস্ত আন্দোলনে মুজিব বর্ষ নামক একটা পদার্থ রয়েছে সেটার সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করা হয়, অথচ তা সম্পূর্ণ নাজায়িয এবং শিরক। দাওয়াতি কাজ করতে গিয়ে এসমস্ত আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করার অর্থ এই নয়, এ সমস্ত নাজায়েজ এবং শিরিকি কাজকে প্রমোট করা হবে। এ বিষয়ে আমাদের সবার সতর্ক থাকা প্রয়োজন এবং কথা বলার ক্ষেত্রে খুবই চিন্তা করে বলা প্রয়োজন।
সর্বশেষে আবু বাসির রাযিআল্লাহু তা'আলা আনহুকে উদ্দেশ্য করে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সেই বিখ্যাত উক্তিটির মতো করে বলতে চাই—
ওহে আমার অজানা লোন উলফ ভাইয়েরা! মোদী আসার দিনে এবং পুরো দেশ উত্তপ্ত হবার দিনে আপনাদের সঙ্গে যদি পর্যাপ্ত সামর্থ্য ও সক্ষমতা থাকতো.......!!
আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে তাঁর সন্তুষ্টি অনুযায়ী কাজ করার তৌফিক দান করুন! আমিন!
Comment