Announcement

Collapse
No announcement yet.

এসো সকলে মিলে আল্লাহর রজ্জুকে আঁকড়ে ধড়ি (দ্বিতীয় অধিবেশন)

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • এসো সকলে মিলে আল্লাহর রজ্জুকে আঁকড়ে ধড়ি (দ্বিতীয় অধিবেশন)

    আল্লাহর অশেষ কৃপায় প্রথম অধিবেশনে আমরা আলোচনা করেছি জামাআবদ্ধ হওয়ার গুরুত্ব,জামাআর পরিচয় ও জামাআবদ্ধ হওয়ার মূলনিতী। আল্লাহ তা’য়ালা তাওফিক দিলে এ পর্বে আমরা আলোচনা করব কোন জামাত সবচেয়ে মর্যাদাবান,নিজ আমীর বা মাসউলের আনুগত্ব ও আনুগত্ব শুধু সৎ কাজে হবে। এ সম্পর্কে ইনশাআল্লাহ-
    কোন জামাত সবচেয়ে মর্যাদাবান?
    যদি আমাকে প্রশ্ন করা হয় কোন জামাত / দল সবচেয়ে বেশী র্মযাদার অধিকারী তাহলে আমি বলব মুজাহিদীনে কেরামের জামাত। কেননা আল্লাহ তাঁদের কে র্মযাদা দান করেছেন আর এজন্যই সকল সাহাবাগণ ছিলেন মুজাহিদ। এই জামাতে নাম লেখাতে কেউ পিছপা হননি।এমনকি আল্লাহ তা’য়ালা অন্ধ,খোড়া ও বৃ্দ্ধ হওয়ার ধরুণ যাদের কে ছাড় দিয়েছেন তারাও এই জামাতে শামেল হতে পাগল পাড়া ছিলেন।মুজাহিদগণের শ্রেষ্ঠত্বের ব্যপারে অসংখ্য আয়াত ও হাদিস রয়েছে এখানে শুধু দু`টি আয়াত উল্লেখ করা হল-
    قال الله تعالى: {لا يَسْتَوِي الْقَاعِدُونَ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ غَيْرُ أُولِي الضَّرَرِ وَالْمُجَاهِدُونَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ بِأَمْوَالِهِمْ وَأَنْفُسِهِمْ فَضَّلَ اللَّهُ الْمُجَاهِدِينَ بِأَمْوَالِهِمْ وَأَنْفُسِهِمْ عَلَى الْقَاعِدِينَ دَرَجَةً وَكُلّاً وَعَدَ اللَّهُ الْحُسْنَى وَفَضَّلَ اللَّهُ الْمُجَاهِدِينَ عَلَى الْقَاعِدِينَ أَجْراً عَظِيماً * دَرَجَاتٍ مِنْهُ وَمَغْفِرَةً وَرَحْمَةً وَكَانَ اللَّهُ غَفُوراً رَحِيماً} (النساء: 95 - 96)،
    মু’মিনদের মধ্যে যারা অক্ষম নয় অথচ ঘরে বসে থাকে ও যারা আল্লাহর পথে জান-মাল দ্বারা জিহাদ করে তারা সমান নয়।যারা নিজ জান-মাল দ্বারা জিহাদ করে আল্লাহ তাদের কে যারা ঘরে বসে থাকেন তাদের উপর র্মযাদা দিয়েছেন; আল্লাহ সকলকেই কল্যাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।যারা ঘরে বসে থাকেন তাদের উপর যারা জিহাদ করে তাদেরকে আল্লাহ মহা পুরুষ্কারের ক্ষেত্রে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন।
    وقال تعالى: {الَّذِينَ آمَنُوا وَهَاجَرُوا وَجَاهَدُوا فِي سَبِيلِ اللَّهِ بِأَمْوَالِهِمْ وَأَنْفُسِهِمْ أَعْظَمُ دَرَجَةً عِنْدَ اللَّهِ وَأُولَئِكَ هُمُ الْفَائِزُونَ * يُبَشِّرُهُمْ رَبُّهُمْ بِرَحْمَةٍ مِنْهُ وَرِضْوَانٍ وَجَنَّاتٍ لَهُمْ فِيهَا نَعِيمٌ مُقِيمٌ * خَالِدِينَ فِيهَا أَبَداً إِنَّ اللَّهَ عِنْدَهُ أَجْرٌ عَظِيمٌ} (التوبة: 20 - 22)،
    যারা ইমান আনে, হিজরত করে, এবং নিজেদের সম্পদ ও জীবন দ্বারা আল্লাহর পথে জিহাদ করে তারা আল্লাহর নিকট র্মযাদায় শ্রেষ্ঠ,আর তারাই সফলকাম।
    সুতরাং হে সম্মানিত উলামায়ে কেরাম, প্রিয় তালিবানে ইলম ভাইয়েরা ও মুসলিম উম্মাহের তরুণেরা! আসুন আমরা তাদের দলে শামিল হয়ে নিজেদের অপূর্ণতাকে পূর্ণ করি, র্মযাদা বৃদ্ধি করি।
    ইমাম কুরতুবী রহ: ৪৬৯ হিজরী সনের একজন বক্তার কথা নকল করেন যিনি বিশেষ ভাবে উল্লেখ করেছেন কীভাবে আসহাবে কাহাফের যুবকগণ কুরআনে বর্ণিত ফজিলত অর্জন করেছিলেন? তিনি বলেন যে ব্যাক্তি আহলে খায়রগণকে ভালোবেসেছে অবশ্যই সে তাদের বারাকাত লাভ করেছে।একটি কুকুর ভালবেসেছে মর্যাদাবান কিছু লোক কে এবং তাদের সংশ্রব গ্রহণ করেছে ফলে আল্লাহ তা’য়ালা তাঁর প্রজ্ঞাময় কিতাবে তার (কুকুরটির)আলোচনা করেছেন।
    অত:পর তিনি বলেন যদি নগন্য একটি কুকুর নেককার আল্লাহ ওয়ালাগণের সংশ্রবের কারণে এতো উঁচু র্মযাদা লাভ করতে পারে যে, আল্লাহ তা’য়ালা নিজ কিতাবে সেই কুকুরের আলোচনা করেন তাহলে একত্ববাদে বিশ্বাসী তাওহীদ প্রতিষ্ঠাকারী সৎ ব্যাক্তিবর্গ, আল্লাহভীরুদের সংশ্রব লাভকারী মুমিনদের ব্যাপারে তোমার ধারণা কী? নিশ্চয় এটা অসম্পূর্ণ র্মযাদাবান মুমিনের জন্য শান্তনা।(আর মুজাহীদগণই জাতীর শ্রেষ্ঠ সন্তান, আল্লাহর জমিনে সবচেয়ে বড় অলি।যাদের জীবনটা খোদাভীরুতায় ভরপূর।কতইনা উত্তম তাদের সংশ্রব! কতইনা মর্যাদাবান তাদের জামাত!সুতরাং আমাদের উচিৎ তাদের কাতারে শামিল হয়ে যাওয়া। হ্যাঁ যদি বাস্তবিক কোন উজর থাকার কারণে তাদের জামাতে শরিক হওয়া সম্ভব না হয় তাহলে তাদেরকে ভালবাসা ও সাধ্যমত যার যার অবস্থানে থেকে তাদেরকে সাহায্য করা উচিৎ।তা না করে যদি আমরা তাদের বিরোধিতা করি, তাদেরকে ঘৃণা করি,তাদের সমালোচনা করি তাহলে আমরা শুধু আমাদের নিজেদেরই ক্ষতি করব তাদের কোন ক্ষতি করতে পারব না।কেননা তাদের ব্যপারে মুহাম্মদে আরাবী সা: এর ঘোষণা আছে- لايضرهم من خذلهم ولامن خالفهم)

    আমীর ও নিজ মাসউলের ইতা’আত
    নিজ আমীর বা মাসউলের কথা শ্রবণ করা ও তাঁদের সৎ আদেশ মেনে চলা আল্লাহ তা’য়ালা মুমিনদের উপর ওয়াজিব করে দিয়েছেন।মাহান রব্বে কারীম ইরশাদক করেন-
    ياأيها الذين آمنوا أطيعوا الله وأطيعوا الرسول وأولي الأمرمنكم-النساء-59
    হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করো এবং তোমাদের মধ্য হতে জ্ঞানী ব্যাক্তিদের ও মেনে চল।
    উলুল আমর তাঁরা হলো শ্বাসক ও আমীরগণ।(ছোট ছোট ইউনিটের মাসউলগণও এর অন্তরভূক্ত হবেন।)কোন কোন মুফাসসিরগণ বলেছেন তাঁরা হলেন উলামা ও ফুকাহায়ে কেরাম।
    সহিহায়নে হযরত ইবনে আব্বাস রা: থেকে সাঈদ ইবনে জুবাইরের হাদিস বর্ণিত তিনি বলেন يا أيها الذين آمنوا--- উক্ত আয়াতটি নাযিল হয়েছে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে হুযাফা আসসাহমী রা:এর ব্যাপারে।তাঁকে রাসূল সা: এক সারিয়্যাতে পাঠিয়ে ছিলেন।(এই হাদিস থেকে মাসউলের আনুগত্য ওয়াজিব হওয়ার বিষয় টি সহজেই বোঝে আসে)
    হাদিসে এসেছে-
    عَنْ مُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- أَنَّهُ قَالَ : « الْغَزْوُ غَزْوَانِ فَأَمَّا مَنِ ابْتَغَى وَجْهَ اللَّهِ وَأَطَاعَ الإِمَامَ وَأَنْفَقَ الْكَرِيمَةَ وَيَاسَرَ الشَّرِيكَ وَاجْتَنَبَ الْفَسَادَ فَإِنَّ نَوْمَهُ وَنَبْهَهُ أَجْرٌ كُلُّهُ وَأَمَّا مَنْ غَزَا فَخْرًا وَرِيَاءً وَسُمْعَةً وَعَصَى الإِمَامَ وَأَفْسَدَ فِى الأَرْضِ فَإِنَّهُ لَمْ يَرْجِعْ بِالْكَفَافِ ». سنن أبي داود
    অর্থ: হযরত মুআয ইবনে জাবাল রা: থেকে বর্ণিত রাসূল সা: ইরশাদ করেন যুদ্ধ দুই প্রকার অত:পর প্রথম প্রকার সে ব্যাক্তির যুদ্ধ(জিহাদ) যে আল্লাহর সন্তুষ্টি চায়, নিজ আমীরের ইতাআত করে, উত্তম সম্পদ খরচ করে, আপন সাথীদের সাথে কোমল আচরণ করে,ফাসাদ থেকে বেঁচে থাকে।অবশ্যই তার নিদ্রা যাওয়া ও জাগ্রত থাকা সবই ইবাদাত বলে গণ্য হবে।দিত্বীয় প্রকার ঐব্যাক্তির যুদ্ধ(জিহাদ) যে বিরত্ব ও খ্যাতি লভের জন্য যুদ্ধ করে, আমীরের আনুগত্য করে না,বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে নিশ্চয় সে পরকালে সমান্য কিছুও পাবে না।
    وعن أنس رضي الله عنه، قال: قال رسول الله صلى الله عليهوسلمِ: (اسمعوا وأطيعوا وإن استعمل عليكم عبد حبشي كأن رأسه زبيبة) [رواه البخاري].
    হযরত আনাস রা: থেকে বর্ণিত রাসূল সা: ইরশাদ করেন তোমাদের উপর যদি কোন হাবশি গোলামকেও যার মাথাটা কিশমিশের মত আমীর নিযুক্ত করা হয় তাহলেও তোমরা তার কথা শুনবে এবং তার আনুগত্য করবে।
    সুতরাং অবশ্যই আমীরের/মাসউলের ইতাআত করনীয় বিষয়গুলো হতে একটি অবশ্য পালনীয় বিধান।কিন্তু দেখা যায় আমরা অনেকেই এমন আছি যে মাসউল আমার নিচের ক্লাসে পড়ে বা তার বয়স আমার চেয়ে কম, মাসউল আমার চেয়ে কম যোগ্য, মাসউল আমার মন মতো হয়নি এমন না হয়ে এমন হলে ভাল হত ইত্যাদি বিভিন্ন কারণে মানতে পারিনা। ভাই আমি আপনাকে অনুরোধ করব দয়া করে আপনি উপরের *দুটি হাদিস কয়েক বার পড়ুন ও ফিকির করুন যে এসমস্ত বাহানায় মাসউলের ইতাআত না করা বৈধ হবে কি না?

    আনুগত্ব শুধু সৎ কাজে হবে
    জেনে রাখা ভালো আনুগত্য শুধুমাত্র সৎ কাজে হবে।কেননা স্রষ্টার অবাদ্ধতায় সৃষ্টির কোন আনুগত্য চলবে না।(আক্বীদাতুত ত্বহাবী কিতাবের আরবী হাশিয়ায় আল্লামা ক্বারী ত্বয়্যব সাহেব রহ: বলেন উক্ত আয়াতে কারীমায় أطيعوا শব্দটি লফযে আল্লাহ ও লফযে রাসূলের শুরুতে এসেছে কিন্তু লফজে উলূল আমর এর শুরুতে আসে নায় এর দ্বারা বোঝানো হয়েছে আমীর/মাসউলের ইতা’আত ততক্ষণ চলবে যতক্ষণ তাঁরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আদেশের ভেতর থাকবে।)কেননা নবী-রাসূলগণ ছাড়া কোন পীর,বুযূর্গ আলেম বা মুফতি সাহেবের ব্যপারে আল্লাহ তা’য়ালা এই গ্যারান্টি দেননি যে তিনি মৃত্যু র্পযন্ত হক্বের উপর থাকবেন মানুষকে হক্ব ব্যতিত অন্য কোন আদেশ দিবেন না।
    সুন্নাহ থেকে-
    وعن ابن عمر رضي الله عنه عن النبي صلى الله عليه وسلم: (على المرء المسلم السمع والطاعة فيما أحب وكره، إلا أن يؤمر بمعصية، فإذا أمر فلا سمع ولا طاعة) [متفق عليه[
    হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রা: থেকে বর্ণিত রাসূল সা: বলেন মুসলিমের উপর আবশ্যক শ্রবণ করা ও ইতাআত করা তার পছন্দনীয় বিষয়ে হোক বা অপছন্দনীয় বিষয়ে তবে যদি অন্যায়ের আদেশ করা হয় তাহলে তা শুনা ও ইতাআত করা যাবে না।
    সহিহায়নে এসেছে- রাসূল সা: একজন আনসারী সাহাবীকে কোন এক সারিয়্যার আমীর নিযুক্ত করেছেন তাদের কে প্রেরণকালে নির্দেশ দিয়েছেন তারা যেন তার কথা শ্রবণ করে ও তাকে মেনে চলে।রাবী বলেন অত:পর কোন এক বিষয়ে মামুরগণ উক্ত আমীরকে রাগান্বিত করে ফেলে, ফলে তিনি আদেশ দিলেন আমার জন্য কাঠ জমা করো, তারা কাঠ জমা করলেন অত:পর তিনি আদেশ দিলেন আগুন জ্বালাতে, তারা তা করলেন, তখন তিনি বললেন, রাসূল সা: কি তোমাদের কে বলে দেননি যে, তোমরা আমার আনুগত্য করবে? সকলেই উত্তর দিল জ্বি অবশ্যই!তখন তিনি আদেশ দিলেন তাহলে তোমরা সকলে এই আগুনে ঝাঁপিয়ে পড়!তখন তারা একে অপরের দিকে তাকাতে লাগল আর বলল আমরা এই আগুন থেকে বাঁচার জন্যই (আমাদের কুফুরী জীবন ছেড়ে)নবিজীর দিকে ছুটে এসেছি।এক র্পযায়ে তাঁর রাগ থামল ও আগুন নিভে গেল।যখন নবিজীর কাছে এসে উক্ত ঘটনার বর্ণনা দিল তখন রাসূল সা: বললেন তোমরা যদি ঐ আগুনে ঝাঁপ দিতে তাহলে তা হতে বের হতে পারতে না!কেননা আনুগত্য শুধুমাত্র সৎ কাজে হবে।
    বোঝাগেল সৎ কাজ ছাড়া যে আমীরের আনুগত্য ওয়াজিব নয় তার ইতাআত করতে গিয়ে নিজেকে হারামে লিপ্ত করার কোন সুযোগ নেই।বরং আনুগত্য এমন হওয়া চাই যা স্বচ্ছতায় ভরপূর,যার অবলম্বনকারীকে সফলকাম গোষ্ঠির দিকে সম্বোধন করা হয় যারা, ইসলমী মূলনিতী মেনে ঈমানী পথে চলে এবং এ পথেই ফিরে আসে।
    কারণ এটা নিছক কোন সন্যাসি বা চাটুকারীতায় বশিভূত হওয়া নয় এবং তথা কথিত শুভকামীর প্রতি লোভী হওয়াও নয়! বরং এটা শরয়ী ব্যপার যা অন্যসব আনুগত্যের মত নয়।দায়ীগণ উক্ত আনুগত্যতাকে ঈমানের রুকন বলেছেন যা ছাড়া ঈমান পূর্ণতা লাভ করতে পারে না।যা শুণ্য হলে সব দিক থেকে অপূর্ণতা গ্রাস করে ফেলে।নিশ্চয় এরা এমন জাতী যারা নিজ আমীরকে সাহায্য করা আপন হক মনে করে ও তার আদেশ মানাকে ঈমান গণ্য করে।

  • #2
    আহমাদুলিল্লাহ, খুবই চমৎকার আলোচনা।
    আল্লাহ তায়ালা আপনার সকল মেহনতকে কবুল করুন,আমিন।
    ’’হয়তো শরিয়াহ, নয়তো শাহাদাহ,,

    Comment

    Working...
    X