একটি সংশয় । সমাধান কামনা করছি
بسم الله الرحمن الرحيم
نحمده ونصلي على رسوله الكريم، أما بعد
তাবলীগ জামাতের সাথীদের কাছে একটি বই দেখা যায়, “মাছজিদওয়ার পাঁচ কাজ” শিরোনামে। লেখক- মুহাম্মাদ আবু ইউছুফ। উক্ত বইটিতে ১৯৩২ খৃস্টাব্দের দুইজন সাহাবীর লাশ স্থানান্তরের ঘটনা বর্ণনা করতে গিয়ে লেখক হযরত হুযাইফা রাযিয়াল্লাহু আনহু-এর বর্ণিত একটি হাদীস উল্লেখ করেছেন। হাদীসটির শেষাংশের তরজমা এসেছে এভাবে-“ … অমঙ্গল আসবে এবং এমন লোক পয়দা হবে, যারা মানুষকে গোমরাহ করবে এবং জাহান্নামের পথে নিয়ে যাবে। আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি যদি সেই জমানা পাই, তবে আমাকে কী করবে হবে? হুযূরে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, যদি তুমি তখন মুসলমানদের সম্মিলিত কোন জামাত পাও এবং তাদের কোন ‘আমীর’ থাকে, তবে তাদের সঙ্গে যোগ দাও, নচেৎ সব কয়টা দল ত্যাগ করে নির্জনে বা কোথাও গাছের তলায় বসে যাও এবং জীবনের শেষ মুহূ্র্ত পর্যন্ত সেখানেই কাটিয়ে দিবে।”
এরপর লেখক উক্ত হাদীসের প্রসঙ্গে যেসব কথার অবতারণা করেছেন, তা এখানে হুবহু তুলে ধরছি।
“... উলামায়ে কেরাম এবং বুযুর্গানে দীন বলেন যে, এটাই সে যুগ। ... এখন এমতাবস্থায় আমাদের কী করণীয়, তা এ হাদীসে স্পষ্টভাবে বলে দেয়া হয়েছে। সেটা হলো, মুসলমানদের সম্মিলিত যদি কোন জামাত থাকে, যার একজন আমীর (রয়েছে, তাহলে) সে জামাতের সাথে যোগদান করতে হবে। আর যদি এরূপ কোন জামাত না থাকে, তবে সব কয়টা দল ত্যাগ করে নির্জনে অথবা কোন গাছতলায় বসে যেতে হবে জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অর্থাৎ মৃত্যু পর্যন্ত। কেন এরূপ করতে হবে? দুনিয়াবী কৃষি, চাকুরী, ব্যবসা, ঘর সংসার কিছু করা যাবে না? না, কিছুই করা যাবে না। কারণ, কিছু করতে গেলে লোকে গোমরাহ করে ফেলবে, জাহান্নামের পথে নিয়ে যাবে, ঈমান বাঁচানো যাবে না, ঈমান নিয়ে মরা যাবে না।
আলহামদুলিল্লাহ! গাছের তলায় মৃত্যু পর্যন্ত বসে যাওয়া লাগবে না। কারণ, হুযূরে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুসলমানদের যে সম্মিলিত জামাতের কথা বলেছেন, যার একজন আমীর থাকবে, তা তো সারা বিশ্বব্যাপী রয়েছেই। সেটা হলো দাওয়াত ও তাবলীগের জামাত। যে জামাতের যাবতীয় কাজ এক আমীরের নির্দেশ মত হয়ে থাকে। বর্তমানে যদিও বিশ্ব মারকাযে এবং দেশীয় মারকাযসমূহে শূরার মাধ্যমে যাবতীয় কাজ চলছে, তথাপী প্রতিটি কাজের ফায়সালা শূরার পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময়ে একজন আমীর নিযুক্ত করা থাকে, তিনিই দিয়ে থাকেন। ফলে বর্তমান যামানায় মুসলমানদেরকে তাদের ঈমান আ’মাল বাঁচাতে হলে এই দাওয়াত ও তাবলীগের জামাতে যোগদান করে জামাতের কর্মপদ্ধতি অনুযায়ী প্রতিটি মুসলমানকে জান মাল সময় ব্যয় করে সাহাবীদের ন্যায় মেহনত করতে হবে। আর যদি কেউ একথা বলতে চায় যে, হুযূরে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুসলমানদের যে সম্মিলিত জামাতের কথা বলেছেন, দাওয়াত ও তাবলীগের জামাত সে জামাত নয়, তবে তাকে সব কয়টা দল ত্যাগ করে নির্জনে ঘরের কোণে অথবা কোন গাছের তলে বসে যেতে হবে এবং মৃত্যু পর্যন্ত সেখাতে কাটিয়ে দিতে হবে। দুনিয়াদারী করা যাবে না। দুনিয়াদারী করার কোন হুকুম নেই। কারণ, দাওয়াত ছাড়া দুনিয়াদারী করতে গেলে আর ঈমান বাঁচানো যাবে না। … এ ঘটনার পরও যারা সাহাবায়ে কেরামগণের মত ঝাপিয়ে পড়ে দাওয়াত ও তাবলীগের মহান কাজকে জীবনের একমাত্র উদ্দেশ্য বানিয়ে না করবে তারা তো তাদের নিজেদের পায়ে নিজেরাই কুড়াল মারলো এবং আখিরাতকে বরবাদ করলো। পিছনে ফেলে আসা তথা কেটে যাওয়া দিনগুলোতে আখিরাতের জীবনের যে ক্ষতি আর ঘাটতি করা হয়েছে, তার ক্ষতি এবং ঘাটতি পূরণ করার জন্য কোন দিকে না তাকিয়ে উঠে পড়ে লেগে যাওয়া। ঘাটতি পূরণের একই মাত্র রাস্তা, তা হলো দাওয়াত ও তাবলীগের কাজে নিবেদিতপ্রাণ হয়ে সাহাবায়ে কিরামগণের ন্যায় ঝাঁপিয়ে পড়া। কারণ, একা একা ইবাদাত বন্দেগী করে আর কতটুকু অগ্রসর হবেন, কতটুকু ক্ষতি আর ঘাটতি পূরণ করবেন? দাওয়াত ও তাবলীগের ময়দানে নিবেদিতপ্রাণ হয়ে ঝাপিয়ে পড়ে নিজেকে এবং হাজার হাজার লক্ষ লক্ষ মানুষকে যখন আল্লাহ তা‘আলার হুকুমের উপর আর নবীর নূরানী তরিকার উপর উঠিয়ে ফেলতে পারবেন, খাড়া করে ফেলতে পারবেন, তখন হবে পিছনের জীবনের ক্ষতি আর ঘাটতি পূরণ।
... উলামায়ে কেরাম হযরতগণের জন্য যিন্দেগীর মাকছাদ বানিয়ে দাওয়াত ও তাবলীগের কাজ করার দুই তরতীবের যে কোন একটা অবলম্বন করা। এক হলো, মাদরাসা থেকে ফারেগ হওয়ার পর এক সাথে এক সাল লাগিয়ে দেয়ার পর পুরা জীবন দাওয়াত ও তাবলীগের কাজে উৎসর্গ করে দেয়া। জরুরত একমাত্র নামাযের দ্বারা পূরণ করা। দ্বিতীয় কোন উসীলা বা মাধ্যম না রাখা। দুই হলো, সাল লাগানোর পর কোন মাদরাসার খিদমতে থাকা এই শর্তে যে, প্রতি বৎসর কমপক্ষে চার মাস করে আল্লাহ তা‘আলার রাস্তায় লাগানো।”
এখন জানার বিষয় হচ্ছে, তার এই বক্তব্য কতটুকু সঠিক কিংবা কতটুকু অসার? উপরোক্ত ভাষ্যে কি দীনের কোন তাহরীফ-বিকৃতি করা হয়েছে? কোন ভাই অনুগ্রহপূর্বক বিস্তারিত দলিল-প্রমাণের আলোকে এ সম্পর্কে আলোকপাত করলে খুব উপকৃত হতাম! জাযাকুমুল্লাহ খাইরান।
بسم الله الرحمن الرحيم
نحمده ونصلي على رسوله الكريم، أما بعد
তাবলীগ জামাতের সাথীদের কাছে একটি বই দেখা যায়, “মাছজিদওয়ার পাঁচ কাজ” শিরোনামে। লেখক- মুহাম্মাদ আবু ইউছুফ। উক্ত বইটিতে ১৯৩২ খৃস্টাব্দের দুইজন সাহাবীর লাশ স্থানান্তরের ঘটনা বর্ণনা করতে গিয়ে লেখক হযরত হুযাইফা রাযিয়াল্লাহু আনহু-এর বর্ণিত একটি হাদীস উল্লেখ করেছেন। হাদীসটির শেষাংশের তরজমা এসেছে এভাবে-“ … অমঙ্গল আসবে এবং এমন লোক পয়দা হবে, যারা মানুষকে গোমরাহ করবে এবং জাহান্নামের পথে নিয়ে যাবে। আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি যদি সেই জমানা পাই, তবে আমাকে কী করবে হবে? হুযূরে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, যদি তুমি তখন মুসলমানদের সম্মিলিত কোন জামাত পাও এবং তাদের কোন ‘আমীর’ থাকে, তবে তাদের সঙ্গে যোগ দাও, নচেৎ সব কয়টা দল ত্যাগ করে নির্জনে বা কোথাও গাছের তলায় বসে যাও এবং জীবনের শেষ মুহূ্র্ত পর্যন্ত সেখানেই কাটিয়ে দিবে।”
এরপর লেখক উক্ত হাদীসের প্রসঙ্গে যেসব কথার অবতারণা করেছেন, তা এখানে হুবহু তুলে ধরছি।
“... উলামায়ে কেরাম এবং বুযুর্গানে দীন বলেন যে, এটাই সে যুগ। ... এখন এমতাবস্থায় আমাদের কী করণীয়, তা এ হাদীসে স্পষ্টভাবে বলে দেয়া হয়েছে। সেটা হলো, মুসলমানদের সম্মিলিত যদি কোন জামাত থাকে, যার একজন আমীর (রয়েছে, তাহলে) সে জামাতের সাথে যোগদান করতে হবে। আর যদি এরূপ কোন জামাত না থাকে, তবে সব কয়টা দল ত্যাগ করে নির্জনে অথবা কোন গাছতলায় বসে যেতে হবে জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অর্থাৎ মৃত্যু পর্যন্ত। কেন এরূপ করতে হবে? দুনিয়াবী কৃষি, চাকুরী, ব্যবসা, ঘর সংসার কিছু করা যাবে না? না, কিছুই করা যাবে না। কারণ, কিছু করতে গেলে লোকে গোমরাহ করে ফেলবে, জাহান্নামের পথে নিয়ে যাবে, ঈমান বাঁচানো যাবে না, ঈমান নিয়ে মরা যাবে না।
আলহামদুলিল্লাহ! গাছের তলায় মৃত্যু পর্যন্ত বসে যাওয়া লাগবে না। কারণ, হুযূরে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুসলমানদের যে সম্মিলিত জামাতের কথা বলেছেন, যার একজন আমীর থাকবে, তা তো সারা বিশ্বব্যাপী রয়েছেই। সেটা হলো দাওয়াত ও তাবলীগের জামাত। যে জামাতের যাবতীয় কাজ এক আমীরের নির্দেশ মত হয়ে থাকে। বর্তমানে যদিও বিশ্ব মারকাযে এবং দেশীয় মারকাযসমূহে শূরার মাধ্যমে যাবতীয় কাজ চলছে, তথাপী প্রতিটি কাজের ফায়সালা শূরার পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময়ে একজন আমীর নিযুক্ত করা থাকে, তিনিই দিয়ে থাকেন। ফলে বর্তমান যামানায় মুসলমানদেরকে তাদের ঈমান আ’মাল বাঁচাতে হলে এই দাওয়াত ও তাবলীগের জামাতে যোগদান করে জামাতের কর্মপদ্ধতি অনুযায়ী প্রতিটি মুসলমানকে জান মাল সময় ব্যয় করে সাহাবীদের ন্যায় মেহনত করতে হবে। আর যদি কেউ একথা বলতে চায় যে, হুযূরে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুসলমানদের যে সম্মিলিত জামাতের কথা বলেছেন, দাওয়াত ও তাবলীগের জামাত সে জামাত নয়, তবে তাকে সব কয়টা দল ত্যাগ করে নির্জনে ঘরের কোণে অথবা কোন গাছের তলে বসে যেতে হবে এবং মৃত্যু পর্যন্ত সেখাতে কাটিয়ে দিতে হবে। দুনিয়াদারী করা যাবে না। দুনিয়াদারী করার কোন হুকুম নেই। কারণ, দাওয়াত ছাড়া দুনিয়াদারী করতে গেলে আর ঈমান বাঁচানো যাবে না। … এ ঘটনার পরও যারা সাহাবায়ে কেরামগণের মত ঝাপিয়ে পড়ে দাওয়াত ও তাবলীগের মহান কাজকে জীবনের একমাত্র উদ্দেশ্য বানিয়ে না করবে তারা তো তাদের নিজেদের পায়ে নিজেরাই কুড়াল মারলো এবং আখিরাতকে বরবাদ করলো। পিছনে ফেলে আসা তথা কেটে যাওয়া দিনগুলোতে আখিরাতের জীবনের যে ক্ষতি আর ঘাটতি করা হয়েছে, তার ক্ষতি এবং ঘাটতি পূরণ করার জন্য কোন দিকে না তাকিয়ে উঠে পড়ে লেগে যাওয়া। ঘাটতি পূরণের একই মাত্র রাস্তা, তা হলো দাওয়াত ও তাবলীগের কাজে নিবেদিতপ্রাণ হয়ে সাহাবায়ে কিরামগণের ন্যায় ঝাঁপিয়ে পড়া। কারণ, একা একা ইবাদাত বন্দেগী করে আর কতটুকু অগ্রসর হবেন, কতটুকু ক্ষতি আর ঘাটতি পূরণ করবেন? দাওয়াত ও তাবলীগের ময়দানে নিবেদিতপ্রাণ হয়ে ঝাপিয়ে পড়ে নিজেকে এবং হাজার হাজার লক্ষ লক্ষ মানুষকে যখন আল্লাহ তা‘আলার হুকুমের উপর আর নবীর নূরানী তরিকার উপর উঠিয়ে ফেলতে পারবেন, খাড়া করে ফেলতে পারবেন, তখন হবে পিছনের জীবনের ক্ষতি আর ঘাটতি পূরণ।
... উলামায়ে কেরাম হযরতগণের জন্য যিন্দেগীর মাকছাদ বানিয়ে দাওয়াত ও তাবলীগের কাজ করার দুই তরতীবের যে কোন একটা অবলম্বন করা। এক হলো, মাদরাসা থেকে ফারেগ হওয়ার পর এক সাথে এক সাল লাগিয়ে দেয়ার পর পুরা জীবন দাওয়াত ও তাবলীগের কাজে উৎসর্গ করে দেয়া। জরুরত একমাত্র নামাযের দ্বারা পূরণ করা। দ্বিতীয় কোন উসীলা বা মাধ্যম না রাখা। দুই হলো, সাল লাগানোর পর কোন মাদরাসার খিদমতে থাকা এই শর্তে যে, প্রতি বৎসর কমপক্ষে চার মাস করে আল্লাহ তা‘আলার রাস্তায় লাগানো।”
এখন জানার বিষয় হচ্ছে, তার এই বক্তব্য কতটুকু সঠিক কিংবা কতটুকু অসার? উপরোক্ত ভাষ্যে কি দীনের কোন তাহরীফ-বিকৃতি করা হয়েছে? কোন ভাই অনুগ্রহপূর্বক বিস্তারিত দলিল-প্রমাণের আলোকে এ সম্পর্কে আলোকপাত করলে খুব উপকৃত হতাম! জাযাকুমুল্লাহ খাইরান।
Comment