Announcement

Collapse
No announcement yet.

লুম্পেনঃ ভেতরের শত্রু!

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • লুম্পেনঃ ভেতরের শত্রু!


    সম্ভাব্য সমর্থকদের মধ্যে সবচেয়ে নিকৃস্ট হলো এই লুম্পেনরা, যারা সমাজের নর্দমার অংশ। এ অংশটিকে অতি সহজে কেনা যায়। এরা স্বতন্ত্র এক গোষ্ঠী যাদের নিজস্ব কোনো স্বকীয়তা নেই।
    ​​​​​​
    সেতুর যে অংশ দিয়ে গেলে স্বার্থ হাসিল হয়, তাদেরকে সেপাশেই পাওয়া যায়। ব্যাক্তিস্বার্থের জন্য এই নীতিবিবর্জিত শ্রেণীটি তাৎক্ষনিকভাবে যে কোনো চরিত্রে নিজেকে রূপান্তর করতে সক্ষম।

    আমরা মুসলিমরা এজাতীয় লোকদের ব্যাপারে আমাদের রব ও নবী সাঃ এর পক্ষ থেকে অবগত আছি।

    مُّذَبۡذَبِیۡنَ بَیۡنَ ذٰلِکَ ٭ۖ لَاۤ اِلٰی ہٰۤؤُلَآءِ وَ لَاۤ اِلٰی ہٰۤؤُلَآءِ ؕ وَ مَنۡ یُّضۡلِلِ اللّٰہُ فَلَنۡ تَجِدَ لَہٗ سَبِیۡلًا

    "দোটানায় দোদুল্যমান, না এদের দিকে, না ওদের দিকে! আর আল্লাহ যাকে পথভ্রষ্ট করেন আপনি তার জন্য কখনো কোন পথ পাবেন না।"

    রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, মুনাফিকের উদাহরণ হচ্ছে, ঐ ছাগীর ন্যায়, যে দুই পাঠা ছাগলের মধ্যে ঘুরে বেড়ায়। (প্রবৃত্তির তাড়নায়) কখনও এটার কাছে যায়, কখনও অপরটির কাছে যায়। [মুসলিম: ২৭৮৪]


    এখন অনেকে মনে করতে পারেন, নিফাকাক্রান্ত বা মুনাফিক বলতে যাদেরকে বোঝানো হয়, লুম্পেন তাদেরই অন্তর্ভুক্ত।

    কিন্তু,
    প্রথমত, লুম্পেন এমন এক ব্যাক্তিত্বহীন, নীতিবিগর্হিত শ্রেনী যাদেরকে শুধু এভাবে চিহ্নিত করা সম্ভব না।

    দ্বিতীয়ত, শরয়ী বাধ্যবাধকতার কারণে কাউকে মুনাফিক আখ্যায়িত করাটা কিছুটা স্পর্শকাতর। শুধুমাত্র উপরোল্লিখিত কিছু আলামত পেলেই কাউকে মুনাফিক সাব্যস্ত করা যায় না। এছাড়াও মুনাফিক পরিভাষাটি একটি ব্যাপক অর্থ বহন করে।
    ​​​​​
    সেক্ষেত্রে লুম্পেন এমন একটি শব্দ যা চারিত্রিক তারল্যের দোষে দুষ্ট ব্যাক্তিদের ক্ষেত্রে সহজেই ব্যবহার্য।

    কোনো রাস্ট্র বা সংগঠন নিজেদের পেটুয়া বাহিনী হিসেবে সাধারণত লুম্পেনদের বেছে নেয়। যেমন- যে পুলিশ কনস্টেবলকে ৫বছর যে এমপি বা মন্ত্রীকে সকালসন্ধ্যা স্যলুট দিতে দেখা যায়, তাকেই আবার ভিন্ন সরকারের মেয়াদে স্যলুটপ্রাপ্ত প্রাক্তন মুরুব্বীকে নির্দ্বিধায় পেটাতে দেখা যায়।

    যে আলেমের ওয়াজ সারাদিন এয়ারফোন লাগিয়ে বা ওয়াজ মাহফিলে গিয়ে শোনে, সেই আলেমকেই বেধড়ক লাঠিপেটাও এরা করতে পারে অনুশোচনাবিহীন ভাবে।

    প্রশাসনিক কাঠামোর নিচের দিকে সাধারণত এদের দেখা মিলে। ফ্রেডারিক এংগেলস এদেরকে 'লুম্পেন প্রোলেতারিয়েত' আখ্যায়িত করেছিল। যারা সাধারণত রেললাইন বা শহরতলির বস্তি থেকে উঠে আসে।

    কিন্তু এখন সমস্যা হচ্ছে,
    আমরা এমন এক দেশে বাস করি যা কি না দুশ বছর ব্রিটিশ উপনিবেশ ছিল। যারা নিজ খরচে ব্রিটিশদের গোলামী করেছে। এবং এখনো ব্রিটিশ আদর্শে দীক্ষিত হয় বাপের জমি বিক্রী করে।
    আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, কোনো সীমাবদ্ধতার কারণে তা না হতে পারলে একে অক্ষমতাও মনে করা হয়।
    আরও অবিশ্বাস্য হচ্ছে, যারা এই গোলামীকে অস্বীকার করে বা মুখ ফিরিয়ে নেয় তাদেরকে অনগ্রসর সাব্যস্ত করা হয়!

    যার ফলে লুম্পেনদের যে "লাজারোনি" বা "ব্যাক্তিত্বহীন" মনোবৃত্তি একসময় শুধু প্রোলেতারিয়েত বা বঞ্চিতদের মাঝে দেখা যেত, তা আমাদের জাতির সকল শ্রেনীর মাঝেই ছড়িয়ে পড়েছে।

    জানা কথা, আমাদের জাতির মানুষ আকার-আকৃতিতেও বড় নয়। আর না আছে তাদের পূর্বপুরুষদের সে অর্থে তেমন কোনো গৌরবোজ্জল ইতিহাস!
    এক মুষ্ঠি সাইজের পাকস্থলীর চাহিদা নিবারণ, অসার লৌকিকতার পশ্চাদ্ধাবন কিংবা বাদামী চেহারায় সাদা মুখোশ পরিধানের নির্লজ্জ প্রবণতার ফলে- গোটা জাতির বর্ণ-ধর্ম-পেশা নির্বিশেষে বড় একটি অংশের লুম্পেনে পরিণত হওয়া এক সাধারণ বাস্তবতা!

    সমাজে সংখ্যাধিক্য থাকায় আদর্শবিহীন, ধীকৃত এই গোষ্ঠীটির উপস্থিতি তাই আদর্শিক আন্দোলনেও দেখা যায়। কেননা স্বার্থের জন্য এরা যে কোনো সময় গিরগিটির মতো রং বদলাতে দ্বিধাবোধ করে না। এজন্য সদাপ্রস্তুত মাসলাহাতের দলীল তাদের পকেটেই থাকে।
    সাধারণত, কপটতা ও বিশ্বাসঘাতকতার মতো নিচুতাও এদের চরিত্রে প্রকাশ পায়।
    তবে সার্বিকভাবে বাকপটু লুম্পেনরাই বেশী মারাত্মক হয়ে থাকে।

    অসচেতনতার ফলে যদি এদের অনুপ্রবেশ ঘটেও, তথাপি সংশ্লিষ্টদের উচিৎ হবে এদের মূল অংশ থেকে সরিয়ে ফেলা।

    আর স্বজনপ্রীতি, অদূরদর্শীতা বা অসচেতনতার দরুন এই শ্রেনীটিকে আন্দোলনের কেন্দ্রে নিয়ে আসা হবে বিপ্লবের সাথে বেঈমানীরই নামান্তর।

    আল্লাহ তা আলা আমাদের বিষয়টি বোঝার তাওফিক দিন।

  • #2
    তারা সংগঠনের এমন ক্ষতি করতে পারবে যা অন্য কেউ করতে পারবে না

    Comment


    • #3
      যারা সাধারণত রেললাইন বা শহরতলির বস্তি থেকে উঠে আসে।
      সম্মানিত ভাই, আপনার কথার সাথে এইটুকু যোগ করতে চাচ্ছি যে, আমাদের দেশের লুম্পেনরা শুধু বস্তি বা সমাজের উচ্ছিষ্ট অংশ থেকে উঠে আসে না বরং সমাজের অনেক এলিট অংশ থেকে আসছে। উচ্চ শিক্ষিত- নামকরা করা প্রতিষ্ঠান থেকে তাদের আগমন।

      এখন তো দেখা যাচ্ছে যাদের কলার যত সাদা তারাই ততবেশি লুম্পেন।

      Comment


      • #4
        জী। সহমত। আসলে মধ্যবিত্ত মানসিকতার যে সমস্যা, এটিও সামগ্রিকভাবে চিহ্নিত করা প্রয়োজন আমাদের।
        নিজের অর্জনকে বা ব্যাক্তিত্বকে হাইলাইট করার যে ব্যাধি, স্বাভাবিক বাস্তবতা হিসেবেই এটি এখন মড়কে পরিণত হয়েছে।
        বিশেষত আদর্শিক আন্দোলনে আত্মম্ভরী, সুযোগসন্ধানী ও লৌকিকতাপ্রেমীদের অন্তর্ভুক্ত হওয়াটা এখন অগ্নিপরীক্ষার ন্যায় হয়ে দাড়িয়েছে।

        আল্লাহ তা আলা সবাইকে ইসলাহ করেন।

        Comment


        • #5
          Originally posted by Hasan Abdus Salam View Post
          সম্ভাব্য সমর্থকদের মধ্যে সবচেয়ে নিকৃস্ট হলো এই লুম্পেনরা, যারা সমাজের নর্দমার অংশ। এ অংশটিকে অতি সহজে কেনা যায়। এরা স্বতন্ত্র এক গোষ্ঠী যাদের নিজস্ব কোনো স্বকীয়তা নেই।
          ​​​​​​
          সেতুর যে অংশ দিয়ে গেলে স্বার্থ হাসিল হয়, তাদেরকে সেপাশেই পাওয়া যায়। ব্যাক্তিস্বার্থের জন্য এই নীতিবিবর্জিত শ্রেণীটি তাৎক্ষনিকভাবে যে কোনো চরিত্রে নিজেকে রূপান্তর করতে সক্ষম।

          আমরা মুসলিমরা এজাতীয় লোকদের ব্যাপারে আমাদের রব ও নবী সাঃ এর পক্ষ থেকে অবগত আছি।

          مُّذَبۡذَبِیۡنَ بَیۡنَ ذٰلِکَ ٭ۖ لَاۤ اِلٰی ہٰۤؤُلَآءِ وَ لَاۤ اِلٰی ہٰۤؤُلَآءِ ؕ وَ مَنۡ یُّضۡلِلِ اللّٰہُ فَلَنۡ تَجِدَ لَہٗ سَبِیۡلًا

          "দোটানায় দোদুল্যমান, না এদের দিকে, না ওদের দিকে! আর আল্লাহ যাকে পথভ্রষ্ট করেন আপনি তার জন্য কখনো কোন পথ পাবেন না।"

          রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, মুনাফিকের উদাহরণ হচ্ছে, ঐ ছাগীর ন্যায়, যে দুই পাঠা ছাগলের মধ্যে ঘুরে বেড়ায়। (প্রবৃত্তির তাড়নায়) কখনও এটার কাছে যায়, কখনও অপরটির কাছে যায়। [মুসলিম: ২৭৮৪]

          ভদ্রবেশি এই ওয়েনগার/লুম্পেন /ভাড়াটিয়াদের থেকে নিজেদের হেফাজত রাখতে হবে।

          Last edited by Munshi Abdur Rahman; 06-04-2023, 04:33 PM.

          Comment


          • #6
            আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, কোনো সীমাবদ্ধতার কারণে তা না হতে পারলে একে অক্ষমতাও মনে করা হয়। আরও অবিশ্বাস্য হচ্ছে, যারা এই গোলামীকে অস্বীকার করে বা মুখ ফিরিয়ে নেয় তাদেরকে অনগ্রসর সাব্যস্ত করা হয়।
            আল্লাহ আমাদের হেফাজত করেন । আমীন ।

            Comment


            • #7
              সংগঠনের দায়িত্ব দেওয়ার আগে ১০০ বার ভাবা উচিত। সংগঠন সবাই করতে পারে না। তাছাড়া বিশাল ত্বাগুতি শক্তিকে চ্যালেঞ্জ করে সংগঠন দাড় করানো, এটি অনেক বড় কাজ।
              Last edited by Rakibul Hassan; 06-05-2023, 09:09 AM.

              Comment


              • #8
                (হে আল্লাহ) এ নিকৃষ্টদের হাত থেকে আমাদের ও সকল মুমিনদের রক্ষা করেন। আমীন
                Last edited by Rakibul Hassan; 06-05-2023, 09:08 AM.

                Comment


                • #9
                  কোন ভাই যদি সম্মানতি Hasan Abdus Salam ভাইয়ের পোস্টগুলো একসাথে করে পোস্ট দিতেন তাহলে আমরা অনেক বেশী উপকৃত হতাম মনে হয়।
                  ফোরামের দায়িত্বশীল ভাইয়েরা এদিকে মনোযোগ দিলে উত্তম হয় ইনশাআল্লাহ।
                  ‘যার গুনাহ অনেক বেশি তার সর্বোত্তম চিকিৎসা হল জিহাদ’-শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ.

                  Comment

                  Working...
                  X