Announcement

Collapse
No announcement yet.

আরব বসন্তঃ আল-কায়েদার সম্প্রসারণ, ক্রমবিকাশ ও সীমাবদ্ধতার এক দশক। (পর্ব -১)

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • আরব বসন্তঃ আল-কায়েদার সম্প্রসারণ, ক্রমবিকাশ ও সীমাবদ্ধতার এক দশক। (পর্ব -১)

    এক দশক পুর্বে যখন সারা আরব বিশ্বজুড়ে গণঅভ্যুত্থান ও প্রশাসনিক অকাঠামো পরিবর্তনের জন্য আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছিল; তখন 'যুদ্ধ ও প্রতিরক্ষা' সংক্রান্ত পশ্চিমা বিশেষজ্ঞরা বলেছিল যে, "এই আন্দোলনের সাথে তানজিম আল-কায়েদার মতাদর্শের কোন প্রাসঙ্গিকতা নেয়। তাদের ভাষ্যমতে, আরব বসন্তের গণবিপ্লবের উদ্দেশ্য হচ্ছে, 'গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও প্রশাসনের কাঠামোগত সংশোধন'- ইসলাম বা খিলাফত নয়।" তাই গ্লোবাল জিহাদের মতাদর্শ আরব বসন্তের উপর কোন প্রভাব ফেলবে না।

    এমনকি আরব বসন্তের প্রক্কালে মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগ দাবি করে যে, মার্কিন সন্ত্রাসবিরোধী অপারেশনের ফলে আল-কায়েদা কার্যপরিধি ক্রমশ ছোট হয়ে আসছে। এবং ২০১১ সালের মে মাসে ইমামমুল মুজাহিদিন শায়খ উসামা বিন লাদেন (رحمه الله وأسكنه الجنة)-এর শাহাদাত আল-কায়েদার মানহাযের উপর এমন ব্যাপক আঘাত হেনেছে যার ফলে তানজিমের আন্দোলন (জিহাদ) পতনের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে।

    কিন্তু, খুবই দ্রুত মার্কিন প্রশাসন ও নীতি-নির্ধারকরা অনুধাবন করতে সক্ষম হয় যে, আরব বসন্তের সাথে তানজিম আল-কায়েদার সম্পৃক্ততা সংক্রান্ত তাদের সকল দাবী, রিপোর্ট, পর্যালোচনা ও অনুসন্ধান পরিপূর্ণভাবে ভুল। কেননা, সরকারের বিরুদ্ধে একত্রিত হওয়া এই বিশাল জনগোষ্ঠীকে তথা আরব বসন্ত নামক এই গণবিপ্লবকে তানজিম আল কায়দার নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গরা 'ইসলামী শরীয়ত প্রতিষ্ঠা'র আন্দোলনের দিকে পরিচালনা করতে বদ্ধপরিকর ছিলেন। তারা আরব বসন্তের প্রাথমিক সময়ে সরাসরি সংঘাতে জড়িয়ে যাওয়ার পরিবর্তে আরববিশ্বের গ্লোবাল জিহাদের ভিত্তিস্থাপন ও সম্প্রসারণকে অগ্রধিকার দিয়েছিলেন। আর এই সম্প্রসারণকালে সম্মানিত শাইয় ও কমান্ডাররা যদিও আরব ভূমির দিকে পূর্ণ মনোযোগী ছিলেন; কিন্তু তারা এক মুহূর্তের জন্যও গ্লোবাল জিহাদের মতাদর্শের ব্যাপারে উদাসীন হননি।

    বর্তমান সময়ে আল-কায়দা হচ্ছে গ্লোবাল সালাফী জিহাদের সবচেয়ে অগ্রগামী (Vanguard) তানজিম। আল-কায়েদার শায়খেরা উম্মাহর কাছে স্পষ্ট করতে সক্ষম হয়েছেন যে, জিহাদ প্রতি মুসলমানের উপর ফরজ (ফর‍যে আই'ন) হয়ে গিয়েছে; কেননা আজ ইসলাম ও মুসলমানরা শত্রুদের আক্রমণের মুখে পতিত। সারা বিশ্বে প্রতিষ্ঠিত কুফর ও জালিম শাসনব্যবস্থাকে প্রতিস্থাপন করে ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক শাসন প্রতিষ্ঠা করার সংগ্রামে মুসলিম উম্মাহকে একত্রিত করার তাদের উদ্দেশ্যে। যাতে আল্লাহর ভূমিতে আল্লাহর বিধান প্রতিষ্ঠিত করা যায়। যার একমাত্র উপায় হচ্ছে, الجهاد في سبيل الله (জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ)।

    আরব বসন্ত বিপ্লব মুসলিম-সংখ্যাগরিষ্ঠ রাষ্ট্রসমূহের মুরতাদ সরকার ও প্রশাসনগুলোকে উৎখাত করার জন্য আল-কায়েদার প্রচেষ্টাকে পুনরায় শুরু করার ক্ষেত্রে অনেকখানি সহায়ক হয়েছিল। গণ আন্দোলনের ফলে আরব বিশ্বে সৃষ্ট শাসন ​​ও নিরাপত্তার বিপর্যয় আরব মুসলমানদের আল-কায়েদার প্রভাব বিস্তার ও মানহায প্রসারের পথকে তৈরি করেছিল।

    ইসলামিক স্টেট যখন তাদের বেপরোয়া উত্থান ও অপরিপক্ক আক্রমণগুলোর মাধ্যমে নিজেদের সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করতে ব্যস্ত ছিল, তখন তানজিম আল-কায়েদা নিজেদের শক্তিশালী করেছে। তারা জনগণের মাঝে ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা তৈরি করেছেন; যাতে মুসলিম সমাজকে পরিবর্তন করার জন্য বৃহত্তর কৌশলগত লক্ষ্য অনুসরণ করে এগিয়ে যেতে পারেন।

    মার্কিন কর্মকর্তারা আবারও আল-কায়েদার নীরবতার কৌশল (Strategy of Silence)- কে
    'তারা পতনের দ্বারপ্রান্তে উপস্থিত' হিসেবে চিহ্নিত করে। কিন্তু তানজিম আল-কায়েদার সামরিক অভিযানের ক্ষেত্রে সাময়িক স্থগিতাদেশ শত্রুদের মাঝে ভুল ধারণা তৈরি করার পাশাপাশি তানজিমকে তাদের চূড়ান্ত লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যাওয়ার গতিকে ত্বরান্বিত করেছিল।



    নোটঃ বর্তমানে সারা বিশ্বে যত যুদ্ধ কৌশল উপস্থিত আছে তার মধ্যে আল-কায়েদার মানহায বা যুদ্ধকৌশল সর্বাধিক উন্নত ও বাস্তবসম্মত। এমনি আল্লাহর দ্বীনের শত্রুরা পর্যন্ত এই কথা সাক্ষী দেয়। অনেক বলে থাকেন যে, আল-কায়েদার সম্মানিত শায়খদের চিন্তাধারার পরিশুদ্ধতা ও উম্মাহর প্রতি দায়বদ্ধতার কারণে তারা এই মানহাযকে এত বেশি উন্নত করতে পেরেছেন। কিন্তু এই বিষয়ে স্বয়ং শায়খদের মত হচ্ছে, এই মানহায এত উন্নত ও বাস্তবসম্মত কেননা এর উৎস হচ্ছে কুরআন ও সুন্নাহ। জেনারেল শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে আগত ভাইয়েরা যারা বিশ্ব ও চলমান বিষয়াদির উপর নজর রাখেন তাদের জন্য আল-কায়েদার মানহাযকে বুঝা ও প্রয়োগ করা অনেক সহজ হবে। কিন্তু তার চেয়ে বেশি আল-কায়েদার মানহাযকে বুঝা মাদ্রাসা (বিশেষ করে কাওমি মাদ্রাসার)
    ​​​আলেম ও তালিবে ইলম ভাইদের জন্য সহজ;যেহেতু তারা তাদের জীবনের অনেক বড় অংশ সরাসরি শরীয়তের ইলমের পিছে খরচ করেন। তাই, বাাংলার জিহাদের ময়দানে আনুপাতিক হারে মাদ্রাসার ভাইদের উপস্থিত অনেক বেশি।

    ​​​​​​
    পরিশেষে, আল্লাহর কাছে দো'আ করি, আল্লাহ যাতে আমাদের জিহাদের খেদমতগুলো কবুল করুন। -- আমিন।।


  • #2
    জাযাকাল্লাহু খায়রান, ভাই।

    বাংলাদেশের বিস্ফোরণ্মুখ জনরোষকে কীভাবে আমাদের মহান উমারাদের মত করে ব্যবহার করতে পারি তা নিয়ে আমাদের জ্ঞানীদের অবশ্যই ভাবতে হবে যেভাবে আরব বসন্তকে আমাদের আকাবিরগণ ব্যবহার করে নিজেদের জিহাদের পালে হাওয়া দিয়েছেন। দরকার হলে আমাদের আরব বসন্ত নিয়ে বারবার অধ্যয়ন করতে হবে।

    জেনারেল শিক্ষিত যেসব ভাইয়েরা আছেন তারাও দ্বীনি ইলম শিক্ষায় নিজেদের নিবেদিত করুন। যেন উলামা-উমারাদের সিদ্ধান্তের ব্যাপারে আস্থাশীল হতে পারেন এবং তাদের সাথে আমাদের চিন্তাচেতনার দূরত্ব কমে আসে। যেন আমরা ঝর্ণার মত হতে পারি। কবি বলেন-

    ধূসরের উষরের কর তুমি অন্ত;
    শ্যামলিয়া ও পরশে কর গো শ্রীমন্ত।


    তাই আমরা যেন এমন দায়ী, আলেম ও মুজাহিদ হতে পারি যাতে যে মারিকাতে যাবো সেখানে যত অজ্ঞতা-জাহেলিয়াতের ধূসরতা-উষরতা আছে তা দূর করে তাওহীদ ও সুন্নাতের সবুজ শ্যামল উদ্যানে পরিণত করতে পারি। 'এক শহীদের কলমে আরেক শহীদ' প্রবন্ধে হামযা নামক এক ভাইয়ের কথা এসেছে যে মুজাহিদ ভাইদের তাজবীদ শিক্ষা দিতেন। খুব সম্ভব সেখানে আরব এক শায়েখের কথাও রয়েছে যিনি শামের মা-বোনদের জন্য মাদ্রাসার স্থাপন করেছেন। এর ফলে মা-বোনদের মাঝে পর্দা ও অন্যান্য দ্বীনি বিষয়ে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আসে। আল্লাহ্ উনাদের উত্তম প্রতিদান দিন। উনাদের মত আমাদেরও ক্ববুল করুন।

    আমরা আমালে, আমরা আখলাক্বে, আমরা আদাবে, আমরা ইলমে, আমরা সাদাক্বায়, আমরা তলোয়ারে, আমরা ফিকিরে, আমরা সবখানে- আল্লাহ্ যেন আমাদের এমনভাবে কবুল করেন। আমীন, ইয়া রাব্বাল আ-লামিন।

    Comment


    • #3
      আসসালামু আলাইকুম ভাই। কিন্তু বাংলাদেশ এর মানুষ কবে সরাসরি জিহাদ এ অংশগ্রহণ করতে পারবে?

      Comment


      • #4
        ভাই পরবর্তী পর্ব চাই

        Comment


        • #5
          জাযাকাল্লাহ ভাই। অনেক সুন্দর লিখেছেন।

          Comment


          • #6
            মা- শা আল্ল-হ
            আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহ তায়ালার নুসরত ও রহমতে আলকায়েদার মানহাজই সেরা।
            আপনাকে অনেক অনেক জাযাকাল্লাহু খইরন আহসানাল জাযা এমন একটি সুন্দর আলোচনা উপহার দেয়ার জন্য।
            আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে তানজিমুল ক্বায়েদার সাথে যুক্ত হওয়ার তাওফিক দান করুন আমিন!
            হয় শাহাদাহ নাহয় বিজয়।

            Comment

            Working...
            X