জিহাদ ও শাহাদাতের ফজিলতের উপলব্ধি.....

[অশ্বারোহী]

★জিহাদ ও শাহাদাতের ফজিলতের উপলব্ধি
نحمده ونصلى على رسوله الكريم اما بعد، فاعوذ بالله من السيطان الرجيم بسم الله الرحمن الرحيم- قال جل شأنه-اِنَّ اللّٰهَ اشۡتَرٰی مِنَ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ اَنۡفُسَهُمۡ وَ اَمۡوَالَهُمۡ بِاَنَّ لَهُمُ الۡجَنَّۃَ ؕ یُقَاتِلُوۡنَ فِیۡ سَبِیۡلِ اللّٰهِ فَیَقۡتُلُوۡنَ وَ یُقۡتَلُوۡنَ ۟ وَعۡدًا عَلَیۡهِ حَقًّا فِی التَّوۡرٰىۃِ وَ الۡاِنۡجِیۡلِ وَ الۡقُرۡاٰنِ ؕ وَ مَنۡ اَوۡفٰی بِعَهۡدِهٖ مِنَ اللّٰهِ فَاسۡتَبۡشِرُوۡا بِبَیۡعِکُمُ الَّذِیۡ بَایَعۡتُمۡ بِهٖ ؕ وَ ذٰلِکَ هُوَ الۡفَوۡزُ الۡعَظِیۡمُ ﴿۱۱۱﴾

প্রিয় ভাইয়েরা আমার! জিহাদ ও শাহাদাতের ফজিলত বলে কয়ে শেষ করার মতো কোন বিষয় নয়। পবিত্র কোর'আনে ও মোবারক হাদিসে জিহাদ ও শাহাদাতের প্রচুর ফাজায়েল বর্ণনা করা হয়েছে। যার সংখ্যা নির্ধারণ করা কঠিন। আমরা সকলেই জিহাদ ও শাহাদাতের ফাজায়েল সম্পর্কে কম-বেশি জানি। এমনকি একথাও বাস্তব যে, জিহাদে ও শাহাদাতের ফাজায়েল জানা ও শুনা আমাদেরকে জিহাদের পথে আসতে অনেক বেশি সাহায্য করেছে।

কিন্তু এতদাস্বত্তেও জিহাদ ও শাহাদাতের পথে অবিরাম পথ চলার পথিক খুবি নগন্য। আল্লাহর জন্য কোরবানী করে যাওয়া মানুষের সংখ্যা অতিসামান্য। জিহাদ ও শাহাদাতের ফাজায়েল জানা ব্যাক্তিরাও যখন জিহাদের বাস্তবতা কল্পনা করে, তখন তারাও পিছু হটতে শুরু করে। তখন তারাও এমন কিছু খোঁড়াযুক্তি ও অজুহাত পেশ করতে থাকেন, যা আদৌ কোন মুমিনের জন্য শোভনীয় নয়। কেনো??! এর পেছনে কারণ কি???!

আজকে ভাইদের সামনে এবিষয়েই কিছু কথা মুজাকারা করার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ। মহান আল্লাহ তা'আলাই তাওফিক দাতা।

{★শুধু ফজিলত জানাই যথেষ্ট নয়, বরং প্রয়োজন প্রকৃত উপলব্ধি!★}

মুহতারাম ভাইয়েরা আমার! কোন একজন ব্যক্তির জন্য জিহাদের ময়দানের সকল দুঃখ-কষ্ট সহ্য করে যাওয়ার মানসকিতা তৈরি হওয়ার জন্য শুধুমাত্র জিহাদ ও শাহাদাতের ফাজায়েল জানাই যথেষ্ট নয়। বরং জিহাদ ও শাহাদাতের ফাজায়েলসমূহের গভীর ও প্রকৃত উপলব্ধিরও বিশেষ প্রয়োজন রয়েছে। কেননা, শুধু ফাজায়েল শুনে একজন ব্যক্তি জিহাদে শরিক হওয়া সম্ভব কিন্তু টিকে থাকা সম্ভবপর নয়।

(কারণ, জিহাদ ও শাহাদাতের ফাজায়েলের প্রকৃত উপলব্ধি না থাকার কারণে, তার কাছে আপাতত জিহাদের পথের কষ্টটাকেই বড় ও কঠিন মনে হবে। তাই তার টিকে থাকাটা কঠিন থেকে কঠিনতর হয়ে পড়বে। এর দৃষ্টান্ত আমাদের সামনে নেহায়েত কম নয়।)

{★তাহলে কিভাবে অর্জন করবো সেই গভীর ও প্রকৃত উপলব্ধি???★ }

বিভিন্ন উপায়ে আমরা জিহাদ ও শাহাদাতের ফাজায়েলসমূহের প্রকৃত উপলব্ধি অর্জন করতে পারি। যেমন-

১। বেশি বেশি জিহাদের বাস্তবতা নিয়ে চিন্তা ভাবনা করার মাধ্যমে। যখন আমরা চিন্তা করতে থাকবো যে, জিহাদ অন্যন্য সহজ আমলের মতো সহজ আমল নয়, বরং জিহাদ হচ্ছে একিসাথে জান, মাল ও বিবেক-বুদ্ধি সবকিছুর সমন্বয়ে সংঘটিত একটি আমল ; তেমনিভাবে অন্যান্য আমলে অন্তত জীবন দানের ব্যাপারটি আসেনা; কিন্তু জিহাদে সর্বপ্রথম নিজের জীবনকে মৃত্যুর সামনে সপে দিয়েই সামনে অগ্রসর হতে হয়- আর একারণেই অন্য সকল আমল থেকে জিহাদের ফজিলত অনেক বেশি ; তো তখন, বাস্তব ময়দানে আসতে থাকা কষ্টগুলোকে আর কষ্ট মনে হবেনা।

(কেননা এই উপলব্ধি আমাদের ভেতরে তৈরি হয়ে গেছে যে, এই কষ্টটুকুর কারণেই তো, আমাদের মর্যাদা- লাগাতার সালাত আদায়কারী, সিয়াম পালনকারী, হাজিদের তৃষ্ণা নিবারকারী এমনকি পবিত্র কা'বার পরিচর্যা ও আবাদকারির চেয়েও অনেক বেশি।)

আমার ভাই! নিঃসন্দেহে এই উপলব্ধি ও ভাবনা, আপনাকে মহান আল্লাহ তাআলার ইচ্ছায় জিহাদের পথে অটল-অবিচল রাখবে ইনশাআল্লাহ।

২। বারবার ও বেশি বেশি জিহাদের ফাজায়েলসমূহ নিয়ে আলোচনা করার মাধ্যমে। যখন কোন একটি বিষয় নিয়ে বারবার ও বেশি বেশি আলোচনা করা হয়-{এমনকি যদি তা মিথ্যা হয়ে থাকে তবু্ও } সে বিষয়ের প্রকৃত বুঝ এ উপলব্ধি মানুষের অন্তরে গেঁথে যায়। এবং এর ইয়াকিন ও বিশ্বাস অন্তরে সুদৃঢ় হয়ে যায়। আর জিহাদ ও শাহাদাতের প্রতি এই সুদৃঢ় বিশ্বাস নিঃসন্দেহে একজন মুজাহিদকে দুনিয়ার এই যৎসামান্য কষ্টটুকু সহ্য করতে ও মেনে নিতে খুশি ও প্রস্তুত রাখবে।

৩। জিহাদকাজগুলো করার সময়ও তার ফাজায়েলগুলো অন্তরে মুসতাহজার রাখা। এবং কাজ চলাকালীন অবস্থায় মহান আল্লাহ তাআলা র কাছে সেই ফাজায়েলগুলো চাইতে থাকা। ইনশাআল্লাহ! এইকাজ মুজাহিদের অন্তরে জিহাদের পথে এখলাস-একনিষ্ঠতা ও শাহাদাতের প্রতি আগ্রহের উপলব্ধি শুধু বৃদ্ধিই করবে।

৪। মহান আল্লাহ তাআলার কাছে এর প্রকৃত উপলব্ধি প্রার্থনা করা এবং এই উদ্দেশ্য সাদাকা করা।
মহান মালিক আমাদেরকে বোঝার ও এখালাস ও ইতকানের সাথে আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন ইয়া রব্বাল আলামিন।

[উবাইদা আল হিন্দ]

আল্লাহ তায়ালা আপনার কাজ কে কবুল করুন। আমি-ন