Announcement

Collapse
No announcement yet.

ওসামা রাহিঃ এর মানহাজের নামে ধোঁকাবাজী' এবং কে আসল "জিহাদের ইহুদী" আল-কায়দা নাকি আইএস।

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • ওসামা রাহিঃ এর মানহাজের নামে ধোঁকাবাজী' এবং কে আসল "জিহাদের ইহুদী" আল-কায়দা নাকি আইএস।


    বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
    শাইখ ওসামা রাহিঃ এর মানহাজের নামে ধোঁকাবাজী' এবং কে আসল "জিহাদের ইহুদী" আল-কায়দা নাকি আইএস।


    الحمد لله رب العلمين والصلاة والسلام علي رسوله الكريم أما بعد،

    মুহতারাম পাঠক/পাঠিকা!
    হঠাৎই একটি বই দৃষ্টিগোচর হলো। বইটির বিষয় এরকম ছিলো “জিহাদের ইহুদি”।
    যতটুকু বুঝ আসে তাতে এটা বুঝা যায় যে বইটি 'জামাতুল বাগদাদী' [আইএস] এর কোন সমর্থক হয়তো লিখেছে।

    লেখালেখি আগের মত তেমন করিনা, তবুও ভাবলাম এ বিষয়ে কিছু বলি। বইটিতে যা লেখা হয়েছে যদি আল্লাহ তায়ালা কখনো তাওফিক দান করেন তাহলে কোন এক সময়ে সে বিষয়ও কিছু লিখবো ইন-শাআল্লাহ।

    আজকে অবশ্য বইটির ভেতরে লিখিত কোন বিষয় নিয়ে আলোচনা করবোনা, বরং তাদের দাবি ❝আল-কায়দা জিহাদের ইহুদি❞ এই কথার উপরেই কিছু কথা বলবো ইন-শাআল্লাহ।
    আর একটি বিষয়ও সামান্য আলোকপাত করবো, তা হলো জামাতুল বাগদাদী [আইএস] এর দাবি ❝হাকিমুল উম্মাহ আইমান জাওয়াহীরী হাফিঃ এর এখনকার আলকায়দা শাইখ ওসমা বিন লাদেন রাহিঃ এর মানহাজে নেই বরং “তারাই [আইএস] নাকি শাইখ ওসামা বিন লাদেন রাহিঃ এর মানহাজে আছে❞।

    এই বিষয়টিও কিঞ্চিৎ আলোকপাত করার ইচ্ছে পোষণ করছি [আল্লাহর সাহায্য ও সহায়তায়]।
    অতি সংক্ষেপেই শুধু দুটি বিষয় আলোচনা করবো ইনশাআল্লাহ।
    ১। শাইখ ওসা-মা রাহিঃ এর মানহাজের নামে ধোঁকাবাজী" এবং
    ২। কে আসল "জিহাদের ইহুদী" আল-কায়দা নাকি আইএস।

    ✪✪✪
    প্রথম বিষয়ঃ শাইখ ওসা-মা রাহিঃ এর মানহাজের নামে ধোঁকাবাজী"।

    আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা বলেন-
    ❝হে ইমানদারগণ কেনো বলো তোমরা এমন কাজ/বিষয় যা তোমরা করোনা❞
    (সুরা ছফ-আয়াত ০২)

    প্রিয় পাঠক/পাঠিকা!! আমরা জানি!
    শাইখ আবু কাতাদা আল-ফিলিস্তিনীর মতো একজন গ্লোবাল জিহাদের সর্বচ্চ আলেম "জামাতুল বাগদাদীকে [আইএস]" কে "খারেজী" তথা "জাহান্নামের কুকুর" পর্যন্ত ঘোষনা দিলেন।

    এবং সেই সময় (আইএস তথাকথিত খেলাফত ঘোষনার কিছু পূর্ব মুহুর্তে) যখনই আলেমগণ তাদের ব্যাপারে বুঝতে পারলেন, তখনই তারা বলে আসছিলেন যে, 'আইএস বে-হক্ব ভাবে মুসলিমকে তাকফির করে" এবং তারা এটাও বলছিলেন যে আইএসের মধ্যে "খাওয়ারেজদের" আলামত পাওয়া যাচ্ছে।

    (এখানে একটু বারতি কথা বলা হচ্ছে কারণ যাতে আমাদের আলোচ্য বিষয়টি বুঝতে সুবিধা হয় পাঠক এই কথাগুলো মনে রাখবেন সামনে আমাদের আলোচনায় বুঝার জন্য প্রয়োজন হবে।)

    আইএস দাবি করে- শাইখ ওসামা রাহি এর মানহাজ থেকে শাইখ জাওয়াহীরী হাফিঃ এর মানহাজ বিচ্যুত হয়ে গেছে।

    আপনি বিশ্বাস করেন, আইএসের এক সমর্থক সদস্য তো এটা পর্যন্ত আমাকে বললো যে " জাওয়াহীরীর কায়দা হলো "নব্য কায়দা" আর শাইখ ওসামার কায়দার মানহাজে মূলত আমরাই (আইএস) আছি। (সুবহানাল্লাহ)
    এটা শুধু তার একারই দাবি নয় বরং জামাতুল বাগদাদীর [আইএসের] দেশি-বিদেশি সকলের আকিদাই এটা যে বর্তমানের আল-কায়দা, শাইখ ওসামা রাহিঃ এর মানহাজে নেই। সুবহানাল্লাহ!

    একজন বিজ্ঞ ও বিচক্ষন আলেমের দৃষ্টি আসলেই আমার ও আপনার মত সাধারণ ব্যক্তিদের কল্পনার বাইরে। সেটা দুদিন পর হলেও উম্মাহ বুঝতো পেরেছে।

    মুহতারাম পাঠক/পাঠিকা!
    আমরা বলেছিলাম আবু কাতাদা আল-ফিলিস্তিনী “জামাতুল বাগদাদীকে [আইএসক] খাওয়ারেজ তথা জাহান্নামের কুকুর বলেছিলেন।

    এখানে এর একটি বাস্তবতা দিয়ে আমরা আলোচনাটি পেশ করবো।

    "ইরাক" খারেজীদের উর্বর ভূমি।
    (হ্যাঁ এখান থেকে ভালো কিছু হতেই পারে, তবে খাওয়ারেজদের প্রথম আত্মপ্রকাশ এখান থেকেই ছিলো।)

    ইরাকের পূর্বের খাওয়ারেজরা অভিযুক্ত করেছিলো হজরত আলী রাযিঃ-কে। আর ইরাকের বর্তমানের খাওয়ারেজরা অভিযুক্ত করতেছে "হাকিমুল উম্মাহ শাইখ জাওয়াহীরী (হাফিঃ)কে।
    এই দুই প্রজন্মের খাওয়ারেজদের সাথে একটা আশ্চর্য ও গুরুত্বপূর্ণ মিল রয়েছে। উভয়ই ক্ষেত্রেই তাদের অভিযোগ হচ্ছে "❝মানহাজ পরিবর্তন হয়েছে" লিডাররা পরিবর্তিত হয়ে গেছে।❞
    ইরাকের বর্তমান খাওয়ারেজরা যেমনিভাবে শাইখ জাওয়াহীরীকে এই অভিযোগে অভিযুক্ত করে, ঠিক তাদের পূর্বপুরুষরাও হজরত আলী রাযিঃ-কে একই অভিযোগে অভিযুক্ত করেছিলো।

    হজরত আলীর মতো একজন জলিলুল ক্বদর সাহাবী, যিনি নবী সাঃ এর সাথে দীর্ঘ একটি সময় সংস্পর্শে থাকার পরেও বুঝলেন না কেমন ছিলো "বিশ্ব নবী সাঃ এর মানহাজ" কিন্ত যেই খারেজীরা নবী সাঃ এর সাথে একদিনও সময় লাগানোর সুযোগই পায়নি। যারা নবী সাঃকে কখনই চোখেও দেখেনি, সেই খারেজীরা হজরত আলিকে নবীর মানহাজ শিখাইতে গেলো এই শ্লোগান দিয়ে যে হজরত আলী রাযিঃ নবীর মানহাজে নেই [অর্থাৎ কোরআন দিয়ে ফায়সালা করছেনা] (নাউজুবিল্লাহ)।
    ঠিক একই পরিস্থিতিতে পড়েছেন শাইখ আইমান হাফিঃ। সুদীর্ঘ একটা সময় তার সবচেয়ে কাছের ও ঘনিষ্ঠ বন্ধু,সহযোদ্ধা শাইখ ওসামা রাহি এর সাথে চলার পরও তিনি(শাইখ আইমান) বুঝলেন না শাইখ ওসামার মানহাজ, তাই আজ যে লোকগুলো কখনই সামনাসামনি শাইখ ওসামাকে দেখিইনি,একদিনও সংস্পর্শ পায়নি সেই আদনানী ও বাগদাদীর দল আজ শাইখ আইমানকে শিখায় কি ছিল ওসামা রাহিঃ এর মানহাজ।
    সত্যি বিচিত্র এই খারিজিরা, বিচিত্র আদনানী ও বাগদাী আর ইবনে মুলজিমরা।
    যখন তারা বলে বর্তমান আল-কায়দা শাইখ ওসামার মানহাজে নেই বরং আমরাই (আইএস) মূলত শাইখ ওসামা রাহিঃ এর মানহাজে আছি, তাদের এই দাবি ও তাদের কর্মপন্থা এবং এর বাস্তবতা দেখলে একজন সাধারণ মানুষের দ্বারাই এর বাস্তবতা বুঝা সম্ভব।

    আমি সবসময় বলে থাকি
    শাইখ ওসামা রাহি-কে আল্লাহ তায়ালা বাচিয়েছেন। কারণ তিনি বেঁচে থাকলে
    কি হতো?? তাকে আর আনওয়ার আওলাকীকে?? যদি তারা জীবিতই থাকতো তাহলে তাদের অন্যান্য সহযোদ্ধাদের মতই পরিস্থিতিতে পড়তে হতো।

    কারণ; জামাতুল বাগদাদী(আইএস) যেভাবে ওসামা বিন লাদেন রাহি এর সহযোদ্ধা থেকে শুরু করে, আলেম-ওলামা এমনকি শাইখ ওসামা যাকে আমীর মানতেন সেই মহান নেতা আমীরুল মুমিনিন মোল্লা ওমর রাহিঃকে পর্যন্ত অপবাদ দিতে তার কুণ্ঠা বোধ করেনি(তাদের মুখপাত্র আদনানী তালেবানদের যত অপবাদ দিয়েছিলো তার একটাও তালেবানদের মধ্যে নতুন ছিলো না এবং তালেবান মোল্লা ওমর রাহিঃ এর মানহাজই ছিলো। তাই তাদের তিরস্কার এটা তো স্বয়ং আমীরুল মুমিনিনকেই তিরস্কার ও অপবাদ দেয়ারই নামান্তর)
    আর জামাতুল বাগদাদী, যে সকল সত্যবাদী আলেম ওলামা যারাই তাদের(দাওলা) বিরোধিতা করেছে তাদেরকেই তারা তিরস্কার করেছে অপদস্ত করেছে এবং তাদের বিরুদ্ধে কুৎসা রটিয়েছে।

    বিশ্বাস হয়না আপনার??

    বিশ্বাস না হলে কিংবা সন্দেহ থাকলে, আমাকে এমন একজন আলেমের নাম বলেন যিনি দাউলার বিরোধিতা করে সম্মানে থাকতে পেরেছেন অথবা দাউলা তাকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য ও তিরষ্কার করে নাই, পারবেন দেখাতে?? না ইনশাআল্লাহ কখনই পারবেন না।

    কিন্তু আমরা আল-কায়দার হিতাকাঙ্ক্ষীরাই পারবো এটা দেখাতে যে, তানজিমুল কায়দার বিরোধিতা করাকে কখনই আমরা ওয়ালা-বারার মাপকাঠি বানাইনি, বরং আমরা আমাদের সমালোচনাকারীর বক্তব্যকে প্রয়োজন অনুপাতে শুধু খন্ডনই করেছি মাত্র। এক্ষেত্রে তাদের সম্মান ও ইজ্জতের কোথাও কমতি রাখা হয়নি।

    ✪✪✪

    সম্মানিত ভাই/বোন!

    এখন চলুন শাইখ ওসামা রাহি এর মানহাজ ও আইএসের মানহাজটি একটু মিলিয়ে দেখি.........

    ☞ সোভিয়াত এর বিরুদ্ধে আফগান জিহাদের পর জিহাদী গ্রুপগুলো র নিজেদের মধ্যে যখন যুদ্ধ শুরু হয়ে গেলো তখন কি ছিলো শাইখ ওসামা রাহি এর ভূমিকা?

    আলকায়দার অবস্থানঃ আমরা দেখলাম তিনি [শাইখ ওসমা বিন লাদেন রাহিঃ] এই ভাতৃঘাতী যুদ্ধ বন্ধের চেষ্টায় যখন ব্যর্থ হলেন তখন তিনি আল-কায়েদাকে কোনো পক্ষেই যেতে নিষেধ করলেন ও কিছুদিন পরে তিনি তার বাহিনি নিয়েই আফগান ত্যাগ করলেন, তবুও নিজেদের মধ্যে সংঘাতে জড়ালেন না।

    দাওলার অবস্থানঃ আর দাওলা থেকে আমরা কি পেলাম??? শামে তো রক্তপাত হলই এমনকি জিহাদের পবিত্র ভূমি আফগানেও তাদের জন্য দলাদলি, রক্তপাত, ফিতনা না করার জন্য তালিবানরা যখন তাদেরকে 'ভাই শব্দে সম্নোধন করে বললো এবং তাদেরকে অনুরোধ করলো এসব না করতে, সেখানে দাওলার মুখপাত্র উল্টো তালেবানকেই " পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থার এলাই" (নাউজুবিল্লাহ) ঘোষনা দিয়ে দাওলার সদস্য দিয়ে সেখানে আঘাত হানতে বললো।

    তাহলে বলেন এটা কি করে ওসামা রাহি এর মানহাজ হয়??

    ★অথচ এই আদনাীই বলেছিলো, মোল্লা ওমরের জন্য আমার বাবা মা কোরবনা হোক। এবং বলেছিলো সকল মজলুম মুসলিমকে তালে-বানদের কাছে হিজরত করতে কারণ তালে-বানরা হলো উম্মাহর প্রটেকটর। যতক্ষণ পর্যন্ত তালে-বানদের শরীরে রক্ত থাকবে ততদিন পর্যন্ত ইসলাম পরাজিত হবে না।

    হে জামাতুল বাগদাদী! হে জামাতুল বাগদাদীর মুখপাত্র!
    বলো এসব কি তুমি বলোনি? তো আজ কি হলো যে রাতারাতি তালে-বানরা মুসলমানদের প্রটেকটর থেকে গোয়েন্দাসংস্হা হয়ে গেলো??? যে রক্ত, জীবন থাকলে ইসলাম পরাজিত হবে না বলেছিলে, আজকে কি হয়ে গেলো যে সেই রক্তই প্রবাহিত করার দরকার হয়ে গেলো..?
    কে আজ পরিবর্তন হয়ে গেলো???? মোল্লা ওমরের তালে-বান নাকি আদনানীর গং?? জওয়াব দাও যদি সত্যবাী হও!

    প্রিয় ভাই/বোন!
    আপনি দেখবেন জামাতুল বাগদাদীর অনেক সাপোর্টারেরা বলবে তালেবান অমুক চুক্তি করে বাতিল/পথভ্রষ্ট হয়েছে অমুকটা করে তমুকটা করে ইত্যাদি ইত্যাদি।
    আপনি তর্ক না করে তাকে সরাসরিই জিজ্ঞেস করেন যে, আইএসের মুখপাত্র তখন তালেবানদের বিরুদ্ধে যত অভিযোগ এনেছিলল তার সত্যতা তখন পেশ করতে বলবেন, দেখবেন মোড়ামুড়ি শুরু হয়ে যাবে।
    কোন কথা নাই আপনি বলবেন, আবু মুহাম্মদ আদনানীর [জামাতুল বাগদাদীর মৃত সাবেক মুখপাত্রের নাম] তখনের অভিযোগের সত্যতা দেখাতে, তারপরে দেখবেন তাদের এই সেই ছলচাতুরী।

    শুধু তা-ই নয় আমরা দেখেছি শাইখ জাওহারীর আগের হালাত,আকিদা আর এখনের হালাত ও আকিদা সব একই আছে কোনোই পরিবর্তন পাইনি অথচ আইএসের মুখপাত্র শাইখ আইমানকে "হাকিমুল উম্মাহ" পর্যন্ত বলেছে। এটা তো বাস্তব সত্য কথাই।
    তাহলে কেনো আইমান হাফিঃকে অকথ্য ভাষায় সম্বোধন? এখানেও জওয়াব দাও কে পাল্টে গেলো???

    ☞ যখন ওসামা বিন লাদেন রাহি আমেরিকার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনা করেন তখন বহু আলেম তাকে খারেজী বলেছিলো। ইহুদিদের দালাল বলেছিলো। আরো কত কি!!

    এক্ষেত্রে আলকায়দার অবস্থানঃ এত ট্যাগ লাগানের পরেও শাইখ ওসামা বিন লাদেন রাহিঃ কখনই কোনো আলেমকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য, ব্যাঙ্গাত্মক ও বিদ্রুপ করেন নি। তিনি তাদেরকে আল্লাহর হাওলায় ছেড়ে দিয়েছিলেন। আর নিজের কাজ করে গেছেন।

    দাওলার অবস্থানঃ আর দাওলা থেকে কি দেখতে পাচ্ছি??? মাদখালী আলেমদের কথা বাদ দিন, শাইখ কাতাদা আল-ফিলিস্তিনী, শাইখ আবু মুহাম্মদ আসিম আল-মাকদীসীর মতো গ্লোবাল জিহাদের আলেমরা যারা বছরের পর বছর তাগুতের জেলখানায় কাটালেন শুধুই তাওহীদের পথে চলতে গিয়ে, সেই তারাই যখন জামাতুল বাগদাদীর বিরোধিতা করলেন, তখনই তারা হয়ে গেলো "তাগুতের দালাল এমনকি আইএসের মুখপাত্র তো "জ্ঞানী গর্দভ" পর্যন্ত বলেছে তাদেরকে। [আল-আয়াজু বিল্লাহ]
    শুধু এই দুইজনই নয়, বরং যারাই তাদের বিরোধিতা করেছে দাওলা তাদের বিরুদ্ধেই লাগামহীনছাড়া বাক্য ব্যাবহার করেছে। আর তাদের অফিসিয়াল ম্যাগাজিন "দাবিক" হলো এসব প্রচারের মাধ্যম।

    সম্মানিত পাঠক/পাঠিকা!
    কত লিখবো বলেন?? কয়েক দিস্তা শেষ হবে তাদেরটা লিখতে। এখন আপনারা নিরপেক্ষভাবেই বলেন,
    এইসব কাজ করার পরও এটা কিভাবে ওসামার মানহাজ হয়??

    ☞ সাধারন মানুষের ক্ষয়ক্ষতি।

    আল-কায়দার মানহাজঃ শাইখ ওসামা বিন লাদেন রাহি এর নীতি ছিলো, সাধারণ মানুষের ক্ষতি হবার সম্ভাবনা আছে এমন কোন হামলা না করা। ইরাকে আবু মুসা আজ-জারকাবী রাহিঃ এবং পাকিস্তানের "টিটিপি-কে তিনি অনেকবারই এধরণের হামলা করা থেকে বিরত থাকতে বলতেন ও এধরণের হামলা না করার জন্য সতর্ক থাকতে বলতেন। এমনকি শাইখ আতিয়াতুল্লাহ আল-লিব্বী রাহিঃ এর সেই ঐতিহাসিক বক্তব্য ❝মুসলিমের রক্তের পবিত্রতা নামে❞ আজও আল-কায়দার মানহাজকে প্রমাণিত করছে।

    জামাতুল বাগদাদীর অবস্থানঃ অথচ দাওলা ইরাকে সামরিক(এটা বৈধ),বেসামরিক কোন বাছবিচার ছাড়াই ইয়াজিদি নারীপুরুষদের উপর হামলা চালিয়েছে। ও এখনো চালায়।
    ওসামা বিন লাদেন রাহি এর কাজের সম্পূর্ণ বিপরীত কাজ করেও কি করে তার মানহাজের দাবি করা যায়??? এটাকে কি মানহাজ মানার নামে জালিয়াতি নয়??


    সম্মানি পাঠক/পাঠিকা!
    আপনারা এই ছোট লেখাটি পড়লেন এখন বলেন তো - আল্লাহ তায়ালা যে বললেন, "কেনো বলো এমন যা তোমরা করো না" এই আয়াতের সাথে আইএসের অমিল কোথায়???

    ✪✪✪✪✪✪







    দ্বিতীয় বিষয়ঃ কে আসল "জিহাদের ইহুদী" আল-কায়দা নাকি আইএস?


    আরেকটি পয়েন্ট-
    আই-এস, কায়দাকে সরাসরি "জিহাদের ইহুদি" বলে থাকে।
    (তাদের একটি কিতাবও আছে এই নামে আমার কাছে, সম্ভবত তা অফিসিয়াল হবে হয়তোবা)।

    দেখবো-কায়দা কি ইহুদি মানহাজ গ্রহন করেছে নাকি আইএস নিজেরাই করেছে।

    আমি বলবো, আইএস তো শুধু ইহুদি নয় বরং সাথে খৃষ্টানদের ন্যয়ও দাবি করছে।
    আমরা একটি আয়াত উল্লেখ করেছি- মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন-
    ❝ইবরাহিম ইয়াহুদিও ছিলেন না এবং খৃষ্টানও ছিলেন না। তিনি একনিষ্ঠ মুসলিম ছিলেন আর তিনি মুশরিকও ছিলেন না❞ (সুরা আলে ইমরান-৬৭)

    অর্থাৎ "ইহুদিরা দাবি করে ইব্রাহিম আঃ ইহুদি ছিলেন, আর খৃষ্টানরা দাবি করে ইব্রাহিম আঃ খৃষ্টান ছিলেন আর মহান আল্লাহ বলেন- ইব্রাহিম না ইহুদি, আর না খৃষ্টান প্রকৃতপক্ষে তিনি একজন মুসলিম ছিলেন"

    আয়াতে সঠিক কি বলা হয়েছে-

    মূলত ইহুদি/খৃষ্টানেরা বলতে চাইলো যে, আদর্শের দিক দিয়ে ইব্রাহিম আঃ নাকি ইহুদি বা খৃষ্টানদের আদর্শের ছিলো আর আল্লাহ তায়ালা সেটাকে নাকচ করে দিলেন।
    নোটঃ এই আয়াত থেকে এটাও একটা শিক্ষা নেয়া যায় তা হলো "কিছু অসৎ ও নিকৃষ্ট মানুষ নিজেদেরকে সৎ ও উতকৃষ্ট বানানোর জন্য তারা কিছু সৎ মানুষের ব্যানার টাংগিয়ে রাখে, এটা নিজেদের হীন স্বার্থ উদ্ধারের জন্যই করে থাকে যা স্পষ্ট ইহুদি ও খৃষ্টানদের "ইহুদিদেরই একটা কর্মপন্থা"
    এবার আপনিই বলুন! এই আয়াতটি মিলান তো দেখেন ইহুদি ও খৃষ্টানদের কাজ।
    আর উপরে দেখলেন শাইখ ওসামা রাহি এর মানহাজে নাই তবুও তারা দাবি করছে তারাই ওসামার মানহাজে আছে এই মিথ্যাদাবিতে তাদের ও ইহুদরদের মধ্যে তফাত রইলো কই???
    শুধু যামানা ও মানুষের তফাত তা ছাড়া এই দাবিতে তাদের কি এমন পার্থক্য আছে বলেন???
    তারা আজগুবি আজগুবি সব তত্ত্ব পেশ করছে আর একেক অজুজাতে উম্মাহকে তাকফির করছে আর বলছে “হাজিহিল খিলাফাহ আলা মিনহাজিন নাবুওয়্যাহ” এটাই নবুওতি ধাঁচের খিলাফাহ। এই ঘোষনা'কে পুজি করেই তারা নিজের কুমতলব প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করেই যাচ্ছে।

    প্রিয় ভাই/বোন!
    আপনি আল-কায়দার অফিসিয়াল ওয়েবসাইটগুলোতে ভিজিট করুন এবং নিজের চোখেই দেখুন যে 'আল-কায়েদা' একশ আর্টিকেল আপলোড করলে সেখানে এরকম দুটো আর্টিকেল পাওয়া খুবই কঠিন হবে যা সরাসরি আইএস'র বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। বরং এই পথভ্রষ্ট দলটি যখন আহলুস সুন্নাহ থেকে বিচ্যুত হয় তখন আলকায়দা শুধু প্রয়োজনবোধে “তাদের ভ্রষ্টতা উম্মাহর নিকট তুলে ধরতে লেখালেখি ও বিবৃতি দিয়েছিলো যা ছিলো শরীয়াহ ও সময়ের অপরিহার্য দাবি”।
    যখন তাদের ভ্রষ্টতা উম্মাহর সামনে আল-কায়েদা স্পষ্ট করলো তখন আলকায়দা নিজের কাজে মন দিলো। আইএসের পেছনে পড়া থেকে সম্পূর্ণ বিরত থাকলো যেমনটি তারা শুরুতেই ছিলো।
    কিন্তু জামাতুল বাগদাদী? সুবহানাল্লাহ! এই বিষয়ে তো তাদের থেকে ফিরে আসা ভাইদের স্বীকৃতিই রয়েছে।
    আল-কায়েদা, তালেবান ও অন্যান্য মুজাহিদ যারা আইএস সমর্থন করেনি এমন সব জিহাদি দলগুলোর সমালোচনাই যেন জামাতুল বাগদাদীর বেঁচে থাকার অক্সিজেন।
    তাদের লিখনিতে আলকায়দা, তালেবান ও অন্যান্য মুজাহিদ যারা আইএস সমর্থন করেনি এমন সব জিহাদি দলগুলোর সমালোচনা, তিরষ্কার আর অপপ্রচারই তো তাদের মানহাজে পরিনত হয়েছে।
    তারা তাদের দলীয় সদস্যদের যতটুকু না শরীয়াহ শিক্ষা দেয় তার চাইতে বেশি শিক্ষা দেয় কিভাবে তালিবান ও আল-কায়েদাকে কাফের বলতে হবে সেই শিক্ষা। কারণ তারা তাদের দলীয় সদস্য/সমর্থকদের সমর্থন টিকিয়ে রাখতে চাইলে আল-কায়েদা ও তালেবানদের বিরুদ্ধাচারণ ছাড়া তো সম্ভব নয়। তাই তারা এই সত্যপন্থী মুজাহিদদের বিরুদ্ধে একট ঘৃণ্য মনোভাব তৈরি করার চেষ্টা করে যেন তাদের ফলওয়ার কমে না যায়।
    আর আল্লাহ তায়ালা তাদের ভালোর আড়ালে নিকৃষ্ট চেহারা প্রকাশ করে দিলেন, তাদের পতাকা দিখন্ডিত করলেন, তাদের নেতাদের হত্যা করলেন এবং তাদেরকে ভূমি ছাড়া করলেন।
    এখন তো গেরিলা আক্রমনকেও তারা খিলাফাহ বলে বেড়াচ্ছে [এটা হাস্যকর ছাড়া আর কি হতে পারে?]
    তারা গালগল্প করে বড় বড় বুলি আওড়িয়ে থাকে যে—
    “আল-কায়দা ও তালেবান নাকি তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য বদ্ধপরিকর এবং তালেবানকে নাকি আইএস দমনের জন্যই আমেরিকার সাথে চুক্তি করানো হয়েছে”
    এক্ষেত্রে আমি এতটুকুই বলবো যে, 'উক্ত বক্তব্য শুনে আপনারা হাসতে পারেন'।
    আল-কায়দার কোন সদস্যদের এমন কোন মনোভাবই নেই যে আমাদের শত্রুই হলো আইএস। বরং আল-কায়েদার অফিসিয়াল 'উপমহাদেশের আচারবিধি' খুলে দেখতে পারেন যে 'খারেজিদের বিষয়ে আলকায়দার মানহাজ স্পষ্ট আর তা হলো ২কারণে আমরা খারেজিদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরবো, ১। যদি তারা আমাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরে। ২। যদি তারা কোন মুসলিমের [সাধারণ মুসলিম যারা আল-কায়েদার সদস্য/সমর্থক নয়] বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরে।
    কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো এত স্পষ্ট করে আল-কায়দার মানহাজ বলা থাকলেও দলান্ধ, মস্তিষ্ক বিকৃত, আদর্শিক পদস্খলিত ব্যক্তিদের দৃষ্টিতে সেই লেখাগুলো কখনই পড়ে নাই।

    এক আহলুল ইলম বলেছিলেন,
    ❝আমি তার [আইএস যারা সমর্থন করে] সাথে কথা বলে বুঝলাম, তারা ৯০% এর বেশিই হলো উসুলের জ্ঞান না রাখা ব্যক্তি❞

    আশকরি আল-কায়েদার বিরুদ্ধে ‘মানহাজ নিয়ে তাদের মিথ্যাচার এবং আল-কায়েদাকে জিহাদের ইহুদি বলে অপবাদের বিষয়টি ক্লিয়ার হয়েছে।
    এটা বিতর্কমূলক কোন আর্টিকেল নয় বরং এটা পর্যালনামূলক একটি লেখা মাত্র। আমার উদ্দেশ্য শুধু এতটুকুই যে 'আমাদের হিতাকাঙ্ক্ষী ভাইয়েরা যেন আদর্শিকভাবে পদস্খলিত এসব ফিরকায় পতিত হওয়া থেকে রক্ষা পেতে পারে।

    সত্য ও সঠিকতা গ্রহনে আমাদের হৃদয় সর্বদাই উন্মুক্ত কিন্তু তা অবশ্যই হতে হবে দলিলসমৃদ্ধ।

    আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে ইমান ও ইখলাসের নবাবী পন্থায় সাথে দ্বীন কায়েমের আন্দোলনে ইস্তিক্বামাত তথা স্থিরতার সাথে চলার তাওফিক দান করুন আমীন ইয়া রাব্বাল আলামীন।

  • #2
    মাশাআল্লাহ. ..!
    অনেক গুরুত্বপূর্ণ লেখনি।
    আই এসের মিথ্যা প্রপাগান্ডার বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।

    Comment

    Working...
    X