কাদিয়ানি নিয়ে মুহতারাম আসিম উমর হাফিজাহুল্লাহ এর চমৎকার মন্ত্যব্য
ইসলামের আলোকে কাদিয়ানিরা আদি কাফির (কাফিরে আসলি) নাকি মুরতাদ বা জিন্দিক?
আলিমগণ জানেন , ইসলামের এই পরিভাষাত্রয় ভিন্ন ভিন্ন মর্মের জন্য ব্যবহার করা হয় । আর এগুলোর বিধান ও ভিন্ন ভিন্ন ।
কাদিয়ানিরা কখনোই আদি কাফির নয় । কারণ , তারা পূর্ব থেকেই নিজেদেরকে মুসলমান বলত । আবার মুরতাদও নয়। মুরতাদ এ জন্য নয় যে , তারা কুফরিতে লিপ্ত থাকার পরও নিজেদেরকে কাফির বলত না । বরং ভ্রান্ত চিন্তাধারা লালন করা সত্ত্বেও নিজেদেরকে মুসলমান প্রমাণ করতে অনমনীয় ও একগুঁয়ে ছিল।
বিধায় তাদের ওপর কেবল জিন্দিকের সংজ্ঞাই প্রযোজ্য হয়।
বিধায় তাদের ওপর কেবল জিন্দিকের সংজ্ঞাই প্রযোজ্য হয়।
এখন প্রশ্ন হলো , শরিয়তে জিন্দিকের হুকুম কী?
সমস্ত আহলের ইলমের নিকট জিন্দিকের হুকুম হলো , গ্রেফতার হওয়ার আগে তাওবা করলে তার তাওবা গৃহীত হবে । গ্রেফতার হওয়ার পর তাওবা করলে তা আর গৃহীত হবে না।
গ্রেফতার করার পর তাকে হত্যা করা হবে।
কিন্তু আমাদের দেশে কাদিয়ানিদেরকে কাফির ঘোষণা করে তাদেরকে জিম্মিদের মান দেওয়া হয়েছে । তাদের জান - মালের জন্য রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
অথচ শরিয়াহর হুকুম ছিল , প্রথমে তাদের আকিদা থেকে তাওবা করার নির্দেশ দেওয়া। তার মধ্যে পাকা | তাওবা করে খাঁটি মুসলমান হয়ে গেলে তো ঠিক আছে । অন্যথায় তাদেরকে হত্যা করা । তাদেরকে কাদিয়ানি হিসেবে বাকি রাখা এবং রাষ্ট্রীয় ও আইনি নিরাপত্তা প্রদান করার অর্থ তাদের ইলহাদের ওপর রাজি থাকা এবং দলীয়ভাবে তাদের নিরাপত্তা প্রদান করার জন্য রাষ্ট্রকে নির্দেশ করা।
অথচ এ বিষয়ের ওপর উম্মাহর ইজমা রয়েছে যে , হজরত মুহাম্মাদ এর সাথে যারা বেয়াদবি করবে , তারা ওয়াজিবুল কতল । তাদেরকে হত্যা করা অপরিহার্য । ইসলামি রাষ্ট্রের অনুমতি ছাড়াও যদি কোনো ব্যক্তি তাদেরকে হত্যা করে , তবে এর জন্য তাকে অভিযুক্ত করা হবে না । [১]
অথচ শরিয়াহর হুকুম ছিল , প্রথমে তাদের আকিদা থেকে তাওবা করার নির্দেশ দেওয়া। তার মধ্যে পাকা | তাওবা করে খাঁটি মুসলমান হয়ে গেলে তো ঠিক আছে । অন্যথায় তাদেরকে হত্যা করা । তাদেরকে কাদিয়ানি হিসেবে বাকি রাখা এবং রাষ্ট্রীয় ও আইনি নিরাপত্তা প্রদান করার অর্থ তাদের ইলহাদের ওপর রাজি থাকা এবং দলীয়ভাবে তাদের নিরাপত্তা প্রদান করার জন্য রাষ্ট্রকে নির্দেশ করা।
অথচ এ বিষয়ের ওপর উম্মাহর ইজমা রয়েছে যে , হজরত মুহাম্মাদ এর সাথে যারা বেয়াদবি করবে , তারা ওয়াজিবুল কতল । তাদেরকে হত্যা করা অপরিহার্য । ইসলামি রাষ্ট্রের অনুমতি ছাড়াও যদি কোনো ব্যক্তি তাদেরকে হত্যা করে , তবে এর জন্য তাকে অভিযুক্ত করা হবে না । [১]
এবার একটু ঠাণ্ডা মাথায় ভাবুন , যাদের ব্যাপারে শরিয়াহর এই নির্দেশ ছিল যে , তাদের প্রাণ ও সম্পদ মুসলমানদের জন্য মুবাহ (বৈধ)।কোনো মুসলমান রাষ্ট্রের অনুমতি ছাড়াও যদি তাদেরকে হত্যা করে , তাদের ধন - সম্পদ লুণ্ঠন করে , এ কারণে সে শরিয়াহর দৃষ্টিতে অপরাধী হবে না।
এখন এই শ্রেণির মানুষের প্রাণ ও সম্পদকে সম্মানিত ঘোষণা করে রাষ্ট্রের ওপর তাদের নিরাপত্তার দায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছে।
অথচ এখনো তারা পূর্ববৎ জিন্দিক ও মুলহিদই রয়েছে । তাদের উপাসনালয় পূর্বের থেকে বৃদ্ধি পেয়েছে । তাদের ধর্মপ্রচার আগের তুলনায় আরও প্রকাশ্যে হচ্ছে ।
এবার আপনারাই ভাবুন , কাদিয়ানিদের জন্য মন্দ হয়েছে নাকি ভালো হয়েছে ? আপনারা এমন একটা দলকে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন , যারা কোনো অবস্থায়ই দেশে থাকার অনুমতি পেতে পারে না । এরা আদি কাফির থেকেও নিকৃষ্ট । কারণ , আদি কাফিররা জিম্মি হয়ে মুসলিম দেশে থাকতে পারে ৷ কিন্তু জিন্দিক ও মুরতাদরা তা থাকতে পারে না । আশ্চর্যের বিষয় হলো , এরা শুধু দেশে আছে তা - ই নয় ; বরং এরা অন্য সবার মতো রাষ্ট্রীয় কর্মকাণ্ডের সঙ্গেও জড়িত রয়েছে।
যদি এ কথা বলা হয় যে , কাদিয়ানিরা আগে মুরতাদ ছিল আর এখন তাদের সন্তানেরা আদি কাফিরের হুকুমে । তাদের এই ধারণাও ভুল । কাদিয়ানিরা না আগে মুরতাদ ছিল , না এখন আদি কাফির । শরিয়তের দৃষ্টিতে তারা আগেও জিন্দিক ছিল , এখনো জিন্দিক রয়েছে ।
স্মরণ করা যেতে পারে , মুহাম্মাদ -এর প্রেমে পাগলপারা মুজাহিদরা যখন লাহোরে কাদিয়ানিদের কেন্দ্রে আক্রমণ করে , তখন কতিপয় মানুষ এ কথা বলে আক্রমণের নিন্দা জানিয়েছিল যে , কাদিয়ানিদেরকে যেহেতু কাফির ঘোষণা করা হয়েছে , সুতরাং তারা এখন জিম্মি । এমনকি কতিপয় ইলমের বোঝা বহনকারী এ কথা পর্যন্ত বলেন যে , কিয়ামতের দিন রাসুলুল্লাহ কাদিয়ানিদের সঙ্গে দাঁড়াবেন , তাদের সাথে থাকবেন ।
অথচ আহলে ইলমগণ জানেন যে , কাদিয়ানিরা জিন্দিক । আর জিন্দিকরা কখনো জিম্মি হতে পারে না । সুতরাং যেই ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ -এর বিরুদ্ধে এত বড় অপবাদ আরোপ করেছে যে , খাতামুন নাবিয়্যিন কিয়ামতের দিন এসব মালাউন ও অভিশপ্তদের সঙ্গে থাকবেন , যারা কিনা খতমে নবুওয়াতের আকিদাকে রক্তাক্ত করেছে , যারা রাসুলুল্লাহ ধ্ব - এর বিরুদ্ধে প্রকাশ্য শত্রুতা প্রদর্শন করেছে । যারা এমন মারাত্মক কথা বলেছেন , তাদের তাওবা করা উচিত।
অন্যথায় কাদিয়ানিদের প্রতি সম্প্রীতি লালন করার অপরাধে তাদের সঙ্গেই এসকল লোকের হাশর হওয়ার সমূহ আশঙ্কা রয়েছে।
অন্যথায় কাদিয়ানিদের প্রতি সম্প্রীতি লালন করার অপরাধে তাদের সঙ্গেই এসকল লোকের হাশর হওয়ার সমূহ আশঙ্কা রয়েছে।
—মাওলানা আব্দুল্লাহ আসিম হাফিঃ
আমীরুল কিতাল ফি শিবহিল কাররাতিল হিন্দিয়্যাহ
———————আমীরুল কিতাল ফি শিবহিল কাররাতিল হিন্দিয়্যাহ
[১] পড়ুন- আপসারিমুল মাসতুল , ইমাম ইবনু তাইমিয়া ; ফিতনার বজ্রধ্বনি , আলী হাসান উলামা