আকিদার রণাঙ্গনেই আমাদের প্রথম হুংকার!
-শাইখ তামিম আল-আদনানী হাফিজাহুল্লাহ
প্রিয় ভাই ও বোনেরা! ইতিহাসের সবচেয়ে অন্ধকার যুগে এবং সবচেয়ে বরবর সমাজে যখন প্রিয়নবী ﷺনবী হিসাবে আবির্ভূত হলেন আপনি কি জানেন, তখন সর্বপ্রথম তিনি কী করেছিলেন? সুস্পষ্ট ভাষায় সর্বপ্রথম তিনি তাওহিদের ডাক দিয়েছিলেন এবং মানুষকে এক আল্লাহর প্রতি ঈমান আনার আহবান জানিয়ে ছিলেন। মূর্তি দেব-দেবী ও বাতিল উপাস্যদের পরিত্যাগ করার আদেশ দিয়েছিলেন এক কথায় সকল তাগুতকে প্রত্যাখ্যান করার নির্দেশ জারি করেছিলেন সকলকে সম্মোধন করে তিনি উধাত্ত কণ্ঠে ঘোষনা করেছিলেন-
يَا أَيُّهَا النَّسّ قُوْلُوْا لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ تُفْلِحُوْنَ
'হে লোক সকল! তোমরা লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলো, তোমরা সফলতা লাভ করবে।'(মুসনাদু আহমাদ:১৬০২৩)
এই নবুওয়াতি দাওয়াতের লক্ষ্য উদ্দেশ্য বুঝতে তৎকালিন জাহেলি সমাজ বিন্দুমাত্র ভুল করেনি, এই দাওয়াতের অন্তর্নিহিত মর্ম কী তা জাহেলি সমাজব্যবস্থার পাহারাদার তাগুত নেতৃবৃন্দের সামনে মোটেও অস্পষ্ট ছিলনা। তাই সাফা পাহাড়ের পাদদেশে আল্লাহর নবীর কণ্ঠে তাওহিদের এই উধাত্ত আহ্বান শুনা মাত্রই তারা এই সত্য অনুধাবন করতে পারলেন যে, তাওহীদের এই ডাক মূলত জাহিলিয়াতের মর্মমূলে কুঠারাঘাত।
এটি এমন একটি তীর যা জাহিলিয়াতের হৃদপিন্ডে গিয়ে বৃদ্ধ হবে এবং তাগুতি শাসনব্যবস্থার মৃত্যু ডেকে আনবে। তাই তাওহিদের আহ্বান শুনে মূহুর্তেই চারদিকে সাজ সাজ রব পড়েগেল, নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষায় তাগুতরা ঢাল-তলোয়ার নিয়ে এক জীবন মরণ যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ল পবিত্র কুরআনের ভাষায়-
وَانْطَلَقُ الْمَلَأُ مِنْهُمْ أَنِ امْشُوا وَاصْبِرُوا عَلَیٰٓ ءَالِهَتِكُم إِنَّ هَٰذَالَشِیءٌيُرَادُ
"তাদের নেতারা এই বলে বেরিয়ে পড়ল যে, চলো চলো এবং তোমাদের দেবতাদের পথে অবিচল থাকো। এটিই এখন করণীয়।'(সূরা সোয়াদ, ৩৮:৬) শুধু রাসূলﷺনয় যুগে যুগে যত নবী রাসূল এসেছেন সকলের দাওয়াহ ছিল একটি "তোমরা আল্লাহর ইবাদত করো এবং তাগুতকে প্রত্যাখ্যানকর আল্লাহ তা'য়ালা বলেছেন-
وَلَقَدْ بَعَثْنَافِی كُلِّ أُمَّةِ رَّسُولًا أَنِ اعْبُدُو اللهَ وَاجْتَنِبُواْ الطَّٰغُوتَ
'আমি প্রত্যেক জাতির কাছে রাসূল পাঠিয়েছি এই নির্দেশ দিয়ে যে, তোমরা আল্লাহর ইবাদত করো এবং তাগুতকে বর্জন করো।'(সূরা নাহল,১৬:৩৬)
প্রিয় ভাই! তাওহিদের এই দাওয়াতের ফলে প্রিয় নবী ﷺও সাহাবাদের উপর নেমে এল নির্যাতন ও নিপীড়নের এমন এক তুফান ইতিহাসে যার নজির পাওয়া যায় না, আসলে এটি ছিল নববি দাওয়াতের সফলতা ও সার্থ্যকতার প্রমান। কারণ এর ধারা বুঝাগেল তিনি জাহিলিয়াত ও তাগুতি জীবনব্যবস্থার গোড়ায় সফল ভাবে আগাত হানতে পেরেছেন তাঁর নিক্ষিপ্ত তীর লক্ষ্য বৃদ্ধ হয়েছে।
প্রিয় ভাইয়েরা! এই গেল রাসূলুল্লাহর আনিত তাওহিদ এবং তাওহিদের দাওয়াহ এখানে কোনো লুকুচুরি নেই, একটু চিন্তা করে দেখুন আমাদের সমাজে তাওহিদের দাওয়াতের নামে কিসের দাওয়াত দেওয়া হচ্ছে, যে দাওয়াত তাগুতি জীবনব্যবস্থার সঙ্গে আপোষ করে, যে দাওয়াত জাহেলি শাসনব্যবস্থার ছায়ায় প্রতিপালিত হয় এটি কোন তাওহিদের দাওয়াত? রাসূলুল্লাহর দাওয়ার সঙ্গে এর কি সম্পর্ক, যে তাওহিদের মর্মই হল তাগুত ও জাহেলিয়াতকে প্রত্যাখ্যান সেই তাগুতের পৃষ্ঠপোষকতায়, সেই তাগুতের বেধে দেয়া সীমানায় কিভাবে তাওহিদের দাওয়াহ চলতে পারে? তাওহিদের এই দাওয়াত তো, মানুষকে মানুষের গোলামী ও মানব রচিত জাহিলি বিধি-বিধান থেকে বের করে আল্লাহর গোলামির দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য।
মনে আছে আপনার! পারস্যের প্রধান সেনাপতি ইতিহাসে প্রসিদ্ধ বীরপুরুষ রুস্তমের সামনে সাইয়্যিদুনা রিবয়ী বিন আমের রাদিঅাল্লাহু আনহু কি বলেছিলেন, তিনি উধাত্ত কণ্ঠে হুংকার দিয়েছিলেন-
اللهُ ابْتَعَثْنَا لِنُخْرِجَ مَنْ شَاءَ مِنْ عِبَادَةِ الْعِبَادِ إِلَی عِبَادَةِ اللهِ٭ وَمِنْ ضِيقِ الدُّنْيَا إِلَی سِعتِهَا وَمِنْ جَوْرِ الأَدْيَانِ إِلَی عَدْلِ الْإِسْلَامِ
'আল্লাহ তাআলা আমাদের প্রেরণ করেছেন, যেন আমরা মানুষকে মানুষের গোলামি থেকে মুক্ত করে এক আল্লাহর গোলামি দিকে বের করে আনি, দুনিয়ার সংকীর্ণতা থেকে বের করে আখিরাতের প্রশস্ততার দিকে নিয়ে যাই এবং মানবরচিত সকল ধর্ম ও মতবাদের জুলুম থেকে ইসলামের ইনসাফের দিকে বের করে আনি।'(আল-বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ: ৭/৪০)
প্রিয় ভাই! ইনশাআল্লাহ......চলমান শতাব্দীর বিশ্বের প্রন্তে প্রান্তে আজ ই'দাদ ও জিহাদের মহরা চলছে, উপমহাদেশেও এর ব্যতিক্রম নয় এখানেও বিপুল উদ্দ্যম ও তৎপরতার সঙ্গে চলছে দাওয়াহ ও ই'দাদের মোবারক কার্যক্রম। আকিদার ময়দান থেকে শুরু হয় ই'দাদের প্রথম ধাপ, তাই প্রথমে আমাদের এই ভূমিতে বিশুদ্ধ তাওহিদের আকিদার শিখর ছড়িয়ে দিতে হবে, আকিদার অঙ্গনেই শুনা যাবে আমাদের প্রথম হুংকার ইনশাআল্লাহ......
আল্লাহর তাওফিক শামিলে হালহলে আমরা আকিদা নিয়ে ধারাবাহিক আলোচনা করে যাব। আল্লাহ রব্বুল আলামিন আমাদের সবাইকে ই'দাদের এই ফরয আদায় করার তাওফিক দিন, আমীন। ইয়া রব্বাল আলামিন।
-শাইখ তামিম আল-আদনানী হাফিজাহুল্লাহ
প্রিয় ভাই ও বোনেরা! ইতিহাসের সবচেয়ে অন্ধকার যুগে এবং সবচেয়ে বরবর সমাজে যখন প্রিয়নবী ﷺনবী হিসাবে আবির্ভূত হলেন আপনি কি জানেন, তখন সর্বপ্রথম তিনি কী করেছিলেন? সুস্পষ্ট ভাষায় সর্বপ্রথম তিনি তাওহিদের ডাক দিয়েছিলেন এবং মানুষকে এক আল্লাহর প্রতি ঈমান আনার আহবান জানিয়ে ছিলেন। মূর্তি দেব-দেবী ও বাতিল উপাস্যদের পরিত্যাগ করার আদেশ দিয়েছিলেন এক কথায় সকল তাগুতকে প্রত্যাখ্যান করার নির্দেশ জারি করেছিলেন সকলকে সম্মোধন করে তিনি উধাত্ত কণ্ঠে ঘোষনা করেছিলেন-
يَا أَيُّهَا النَّسّ قُوْلُوْا لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ تُفْلِحُوْنَ
'হে লোক সকল! তোমরা লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলো, তোমরা সফলতা লাভ করবে।'(মুসনাদু আহমাদ:১৬০২৩)
এই নবুওয়াতি দাওয়াতের লক্ষ্য উদ্দেশ্য বুঝতে তৎকালিন জাহেলি সমাজ বিন্দুমাত্র ভুল করেনি, এই দাওয়াতের অন্তর্নিহিত মর্ম কী তা জাহেলি সমাজব্যবস্থার পাহারাদার তাগুত নেতৃবৃন্দের সামনে মোটেও অস্পষ্ট ছিলনা। তাই সাফা পাহাড়ের পাদদেশে আল্লাহর নবীর কণ্ঠে তাওহিদের এই উধাত্ত আহ্বান শুনা মাত্রই তারা এই সত্য অনুধাবন করতে পারলেন যে, তাওহীদের এই ডাক মূলত জাহিলিয়াতের মর্মমূলে কুঠারাঘাত।
এটি এমন একটি তীর যা জাহিলিয়াতের হৃদপিন্ডে গিয়ে বৃদ্ধ হবে এবং তাগুতি শাসনব্যবস্থার মৃত্যু ডেকে আনবে। তাই তাওহিদের আহ্বান শুনে মূহুর্তেই চারদিকে সাজ সাজ রব পড়েগেল, নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষায় তাগুতরা ঢাল-তলোয়ার নিয়ে এক জীবন মরণ যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ল পবিত্র কুরআনের ভাষায়-
وَانْطَلَقُ الْمَلَأُ مِنْهُمْ أَنِ امْشُوا وَاصْبِرُوا عَلَیٰٓ ءَالِهَتِكُم إِنَّ هَٰذَالَشِیءٌيُرَادُ
"তাদের নেতারা এই বলে বেরিয়ে পড়ল যে, চলো চলো এবং তোমাদের দেবতাদের পথে অবিচল থাকো। এটিই এখন করণীয়।'(সূরা সোয়াদ, ৩৮:৬) শুধু রাসূলﷺনয় যুগে যুগে যত নবী রাসূল এসেছেন সকলের দাওয়াহ ছিল একটি "তোমরা আল্লাহর ইবাদত করো এবং তাগুতকে প্রত্যাখ্যানকর আল্লাহ তা'য়ালা বলেছেন-
وَلَقَدْ بَعَثْنَافِی كُلِّ أُمَّةِ رَّسُولًا أَنِ اعْبُدُو اللهَ وَاجْتَنِبُواْ الطَّٰغُوتَ
'আমি প্রত্যেক জাতির কাছে রাসূল পাঠিয়েছি এই নির্দেশ দিয়ে যে, তোমরা আল্লাহর ইবাদত করো এবং তাগুতকে বর্জন করো।'(সূরা নাহল,১৬:৩৬)
প্রিয় ভাই! তাওহিদের এই দাওয়াতের ফলে প্রিয় নবী ﷺও সাহাবাদের উপর নেমে এল নির্যাতন ও নিপীড়নের এমন এক তুফান ইতিহাসে যার নজির পাওয়া যায় না, আসলে এটি ছিল নববি দাওয়াতের সফলতা ও সার্থ্যকতার প্রমান। কারণ এর ধারা বুঝাগেল তিনি জাহিলিয়াত ও তাগুতি জীবনব্যবস্থার গোড়ায় সফল ভাবে আগাত হানতে পেরেছেন তাঁর নিক্ষিপ্ত তীর লক্ষ্য বৃদ্ধ হয়েছে।
প্রিয় ভাইয়েরা! এই গেল রাসূলুল্লাহর আনিত তাওহিদ এবং তাওহিদের দাওয়াহ এখানে কোনো লুকুচুরি নেই, একটু চিন্তা করে দেখুন আমাদের সমাজে তাওহিদের দাওয়াতের নামে কিসের দাওয়াত দেওয়া হচ্ছে, যে দাওয়াত তাগুতি জীবনব্যবস্থার সঙ্গে আপোষ করে, যে দাওয়াত জাহেলি শাসনব্যবস্থার ছায়ায় প্রতিপালিত হয় এটি কোন তাওহিদের দাওয়াত? রাসূলুল্লাহর দাওয়ার সঙ্গে এর কি সম্পর্ক, যে তাওহিদের মর্মই হল তাগুত ও জাহেলিয়াতকে প্রত্যাখ্যান সেই তাগুতের পৃষ্ঠপোষকতায়, সেই তাগুতের বেধে দেয়া সীমানায় কিভাবে তাওহিদের দাওয়াহ চলতে পারে? তাওহিদের এই দাওয়াত তো, মানুষকে মানুষের গোলামী ও মানব রচিত জাহিলি বিধি-বিধান থেকে বের করে আল্লাহর গোলামির দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য।
মনে আছে আপনার! পারস্যের প্রধান সেনাপতি ইতিহাসে প্রসিদ্ধ বীরপুরুষ রুস্তমের সামনে সাইয়্যিদুনা রিবয়ী বিন আমের রাদিঅাল্লাহু আনহু কি বলেছিলেন, তিনি উধাত্ত কণ্ঠে হুংকার দিয়েছিলেন-
اللهُ ابْتَعَثْنَا لِنُخْرِجَ مَنْ شَاءَ مِنْ عِبَادَةِ الْعِبَادِ إِلَی عِبَادَةِ اللهِ٭ وَمِنْ ضِيقِ الدُّنْيَا إِلَی سِعتِهَا وَمِنْ جَوْرِ الأَدْيَانِ إِلَی عَدْلِ الْإِسْلَامِ
'আল্লাহ তাআলা আমাদের প্রেরণ করেছেন, যেন আমরা মানুষকে মানুষের গোলামি থেকে মুক্ত করে এক আল্লাহর গোলামি দিকে বের করে আনি, দুনিয়ার সংকীর্ণতা থেকে বের করে আখিরাতের প্রশস্ততার দিকে নিয়ে যাই এবং মানবরচিত সকল ধর্ম ও মতবাদের জুলুম থেকে ইসলামের ইনসাফের দিকে বের করে আনি।'(আল-বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ: ৭/৪০)
প্রিয় ভাই! ইনশাআল্লাহ......চলমান শতাব্দীর বিশ্বের প্রন্তে প্রান্তে আজ ই'দাদ ও জিহাদের মহরা চলছে, উপমহাদেশেও এর ব্যতিক্রম নয় এখানেও বিপুল উদ্দ্যম ও তৎপরতার সঙ্গে চলছে দাওয়াহ ও ই'দাদের মোবারক কার্যক্রম। আকিদার ময়দান থেকে শুরু হয় ই'দাদের প্রথম ধাপ, তাই প্রথমে আমাদের এই ভূমিতে বিশুদ্ধ তাওহিদের আকিদার শিখর ছড়িয়ে দিতে হবে, আকিদার অঙ্গনেই শুনা যাবে আমাদের প্রথম হুংকার ইনশাআল্লাহ......
আল্লাহর তাওফিক শামিলে হালহলে আমরা আকিদা নিয়ে ধারাবাহিক আলোচনা করে যাব। আল্লাহ রব্বুল আলামিন আমাদের সবাইকে ই'দাদের এই ফরয আদায় করার তাওফিক দিন, আমীন। ইয়া রব্বাল আলামিন।
Comment