Announcement

Collapse
No announcement yet.

একিউ দাইশঃ পার্থক্য পর্যালোচনা ২ / দাইশের উত্থান নিয়ে জরুরী কিছু কথাঃ—

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • একিউ দাইশঃ পার্থক্য পর্যালোচনা ২ / দাইশের উত্থান নিয়ে জরুরী কিছু কথাঃ—


    একিউ দাইশঃ পার্থক্য পর্যালোচনা ২

    দাইশের উত্থান নিয়ে জরুরী কিছু কথাঃ—

    আ ই এ স সৃষ্টির সংক্ষিপ্ত বর্ণনা: ইরাকে একিউর প্রথম আত্মপ্রকাশ ঘটে শাইখ আ বু মু স আ ব যারকাভী রহিমাহুল্লাহ’র নেতৃত্বে।

    এর নাম রাখা হয়েছিল ‘কা য়ে দা তু ল জি হা দ ফি বিলাদির রাফিদাইন।’

    আরও কিছু দল ও উপদলের মিশ্রণের পর এর নামকরণ করা হয় ‘মাজলিসু শুরা আল-মুজাহিদিন।’

    এই মজলিস গঠনের মাধ্যমে শাইখ যারকাভী রহিমাহুল্লাহ ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বীজ বপন করতে চেয়েছিলেন। তিনি তাতে সফলও হয়েছেন। তবে তার শাহাদাতের পর যখন আবু উ ম র বা গ দা দী কে তার স্থলাভিষিক্ত করা হয় তখন তিনি ‘দাওলাতুল ইরাক আল ইসলামিয়া’র ঘোষণা দেন, যা ছিল চরমভাবে প্রশ্নবিদ্ধ সিদ্ধান্ত।

    এমন পরিস্থিতিতে সি.আই.এ-এর প্রধান পেট্রাউস মুজাহিদদের স্বপ্নের ইসলামী রাষ্ট্র ও তাদেরকে নিঃশেষ করতে এক অভিনব পরিকল্পনা হাতে নেয়।

    তার এই নীলনকশার ভিত্তি ছিল;
    সুন্নিদের মধ্য থেকে একটি সশস্ত্র গ্রুপ তৈরি করতে হবে, যারা সুন্নি এলাকাগুলো থেকে জিহাদের উপস্থিতি ধ্বংস করার দায়িত্ব নিজেদের কাঁধে তুলে নেবে।

    পেট্রাউস যেমনটি চেয়েছিল ঠিক তেমনটিই হয়েছে। সুন্নি এলাকাসমূহ মুজাহিদশূন্য হয়ে পড়ল।

    মুজাহিদগণ আম্বারের মরু অঞ্চলে আশ্রয় নিতে বাধ্য হলেন এবং সেখানেই থাকতে লাগলেন। রাফেজি প্রধানমন্ত্রী নুরি আল মালিকীর বিরুদ্ধে নির্যাতিত সুন্নিদের বিদ্রোহ শুরু হওয়ার পূর্বে তারা আর ফিরে আসেনি।

    বিদ্রোহ শুরু হওয়ার পর মুজাহিদগণ আম্বারে ফিরে আসেন এবং বিদ্রোহীদেরকে সাহায্য করতে থাকেন। সে সময়টিতে নুরি’র সৈনিকরা বিদ্রোহীদের অবস্থানসমূহে হামলা করছিল এবং তাদের শিবিরগুলো জালিয়ে দিচ্ছিল।

    দাওলাতুল ইরাক আল-ইসলামিয়ার মুজাহিদগণ আম্বারে ফিরে আসার সময়টিতে সিরিয়ায় বিদ্রোহ শুরু হয়ে যায়।
    ইতিমধ্যে সরকারি বাহিনী দাওলাতুল ইরাক আল ইসলামিয়ার আ মী র আ বু উমর বাগদাদী এবং যুদ্ধমন্ত্রী আ বু হা ম জা মুহাজির-এর অবস্থান চিহ্নিত করতে সক্ষম হয়। তাই বড় ধরনের হামলা চালিয়ে সরকার তাদেরকে হত্যা করে এবং তাদের স্ত্রীদেরকে বন্দি করে।

    আ বু উ ম র বা গ দা দী নিহত হওয়ার পর আ বু ব ক র বাগদাদীকে তার স্থলাভিষিক্ত নির্বাচন করা হয়। একিউ আ বু ব ক র বাগদাদীকে চিনতেন না। তাই এই নির্বাচনে তারা সায় দেয়নি। একিউ তার অপসারণ দাবি করে। কিন্তু ইরাকী নেতৃবৃন্দ এই বলে অক্ষমতা প্রকাশ করে যে, তারা বিষয়টি ঘোষণা করে দেওয়ার পর তা আর প্রত্যাহার করতে পারবেন না।

    অগত্যা একিউ বাগদাদীর ভালোমন্দ জানতে তার জীবন-চরিত পাঠানোর অনুরোধ করেন। কিন্তু তারা তা করেনি।

    সিরিয়ার বিদ্রোহের সূচনাকালে বাগদাদী শামবাসীকে সাহায্য করতে আবু মুহাম্মদ জাওলানীর নেতৃত্বে একটি বাহিনী প্রেরণ করেন। এর নাম দেওয়া হয় ‘জাবহাতুন নুসরাহ লী আহলিশ-শাম’।

    এ পর্যায়ে জাবহাতুন নুসরাহ ও বাগদাদীর দলের মাঝে চুক্তি হয় যে, জাবহাতুন নুসরাকে দাওলাতুল ইরাক আল-ইসলামিয়ার অনুগত বাহিনী হিসেবে ঘোষণা করা যাবে না। এর মাধ্যমে হয়তো দাওলাতুল ইরাক আল-ইসলামিয়ার অন্যান্য ঘোষণার কিছুটা প্রায়শ্চিত্ত হবে এবং পশ্চিমা লেখকদের টার্গেট হওয়া থেকে নিরাপদ থাকা যাবে।

    আবু মুহাম্মদ জাওলানীর নেতৃত্বে জাবহাতুন নুসরাহ যখন বিশাল সফলতা অর্জন করল তখন বাগদাদী তাদেরকে নিজের অনুগত বলে ঘোষণা করলেন এবং দাওলা ও জাবহাতুন নুসরাহর সমন্বিত নাম রাখেন- ‘দাওলাতুল ইসলামিয়া ফিল ইরাক ওয়াশ-শাম (আ ই এ স/দাইশ)।

    জাওলানী উক্ত সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করেন এবং এককিউর প্রতি তার আনুগত্যের বিষয়টি পুনঃর্ব্যক্ত করেন।

    জাওলানী ও বাগদাদীর মাঝে এ নিয়ে দ্বন্দ্ব যখন তীব্র আকার ধারণ করে তখন তারা উভয়ে শাইখ আইমান হাফিঃ শালিস হিসেবে মেনে নেন। যারা এ বিষয়ে মধ্যস্থতা করছিলেন তারা জাওলানী ও বাগদাদীর কাছ থেকে শপথ গ্রহণ করেন যে, সিদ্ধান্ত যাই আসুক তারা মেনে নেবেন।

    অতঃপর শাইখ আইমান হাফিঃ বাগদাদীকে ইরাকে ফিরে যেতে এবং জাওলানীকে শামে অবস্থানের নির্দেশ দেন।

    তখন বাগদাদী তার শপথ ভঙ্গ করেন এবং শাইখ যাওয়াহিরীকে জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী বলে অভিযোগ উত্থাপন করেন। এ পর্যায়ে এসে তিনি খিলাফাহ ঘোষণা করেন এবং জাওলানী, শাইখ যাওয়াহিরী এবং সকল জিহাদি দল ও উপদলসমূহকে তার আনুগত্য করার এবং তাকে বাইআত দেওয়ার আহ্বান জানান। তিনি এখানেই থেমে থাকেননি, জাওলানীকে তার কথিত খেলাফতের অনুগত বানাতে তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করেন। এক পর্যায়ে তার এই যুদ্ধ অন্যান্য জি হা দি দলসমূহের বিরুদ্ধেও সম্প্রসারিত হয়।

    তারপর আসে তাকফিরের পালা (কাফের ঘোষণা)। তিনি এবং তার দল মিলে সবগুলো দলকে একেরপর এক কাফের আখ্যা দিয়ে (তাকফির করে) তবেই ক্ষান্ত হয়।

    প্রতিটি দলের বিরুদ্ধে তারাই প্রথমে যুদ্ধ শুরু করত, তারপর তারা সেই দলকে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার অপরাধে তাকফির করত। ইরাকে তারা যে নীতি ও কর্মপন্থা গ্রহণ করেছে সিরিয়াতেও তারা তা প্রয়োগ করতে চেয়েছিল। অথচ ইরাক ও সিরিয়ার অবস্থা মোটেও এক ছিল না।

    কারণ ইরাকের সাহাওয়াত (দল) আমেরিকার পক্ষ হয়ে মু জা হি দ গণকে নিঃশেষ করার চেষ্টা করছিল। আমেরিকার পক্ষাবলম্বী সাহাওয়াতের বিরুদ্ধে দাইশ সফলতা পেয়েছে।
    অপরদিকে সিরিয়ার মু জা হি দ গণ যুদ্ধ করছিলেন আত্মরক্ষার খাতিরে এবং তারা যুদ্ধ করছিলেন দাইশের আগ্রাসন প্রতিহত করার লক্ষ্যে। তারা শুধু নির্বিচারে তাকফির করেই ক্ষান্ত হয়নি বরং বিদ্রোহী বহু দল ও গোত্রের বিরুদ্ধে নির্মম গণ হ ত্যা চালিয়েছে। নারী ও শিশুদের সামনে তারা শুয়াইত্বাত গোত্রের পুরুষদের হ ত্যা করেছে। জিহাদি ও বিদ্রোহী বহু নেতৃবৃন্দকে তারা শি র শ্ছে দ করেছে। তাঁদেরকে হ ত্যা করতে তারা বিভিন্ন ফাঁদ পেতেছে, আ ত্ম ঘা তী হামলা চালিয়েছে। তাদের হা ম লা র হাত থেকে আল্লাহর ঘর মসজিদও রক্ষা পায়নি।

    আহরারুশ-শামের কতিপয় মু জা হি দ এক মসজিদে তারাবিহ পড়ছিলেন, বাগদাদীর সেনারা তাদেরকে নামাজরত অবস্থায়ই হ ত্যা করে।

    এই পর্যায়ে এসে একিউ নীরবতা ভাঙ্গতে বাধ্য হয়, তারা আইএসের সাথে একিউ বিচ্ছিন্নতা ঘোষণা করেন। তারা জানিয়ে দেন যে, হ ত্যা, জ বা ই ও তাকফির করার যে নীতি দাইশ গ্রহণ করেছে তা একিউর নীতি নয়। তারা এগুলো সমর্থন করে না।



    ---------------------------------------------------------------------------------
    লেখকঃ- যুবায়ের মুশরিফ
    --------------------------------------------------------------------------------

  • #2
    প্রিয় ভাই আরেটু ক্লিয়ার হওয়ার জন্য প্রতিটা ক্ষেত্রের সন উল্লেখ করা টা আমি মনে করি ভালো হবে।

    Comment


    • #3
      মুসলিমানদের নিজেদের মধ্যে এমন লড়াই হলে শুনতে কি আর ভালো লাগে।
      পৃথিবীর রঙ্গে রঙ্গিন না হয়ে পৃথিবীকে আখেরাতের রঙ্গে রাঙ্গাই।

      Comment

      Working...
      X