ইসরাইলি একটি ইউনিভার্সিটির ইন্টারন্যাশনাল ইন্সটিটিউট ফর কাউন্টার টেররিজম কর্তৃক প্রকাশিত রিভিউ এর অনুবাদ
সংগ্রাম ও পরিবর্তনের হাওয়া - বিপ্লব এবং গেরিলা কৌশল
( Struggle and Winds of Change – Revolution and Guerrilla Strategies )
সাইফ আল-আদ্ল
রিভিউ লেখকঃ জেএমজি ডেস্ক , প্রকাশ তারিখঃ জুন ২৩, ২০১৬, ক্যাটাগরিঃ গ্লোবাল জিহাদ
সূত্রঃ শেষে দ্রষ্টব্য
[ আগের খণ্ড গুলোর রিভিউ ১ম পর্বে, লিঙ্ক কমেন্টে ]
তৃতীয় খণ্ড - "গেরিলা ওয়ারফেয়ার - বিপ্লবী লড়াই"
বইয়ের এই খণ্ডটি গেরিলা যুদ্ধের বিষয় নিয়ে লেখা এবং এর সংজ্ঞা নির্ধারন করতঃ গেরিলা যুদ্ধে জড়িত দলসমূহের বৈশিষ্ট্য চিহ্নিত করার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে। যায়দান গেরিলা যুদ্ধের লক্ষ্যগুলো স্পষ্ট করেছেন এবং তুলে ধরেছেন যে গেরিলা যুদ্ধ একটি বিপ্লবের চেয়ে দেশের অনেক বেশি ক্ষতি করে – বিশেষ করে অর্থনৈতিক ক্ষতি।
এই খণ্ডের অধ্যায়গুলো ষোলটি পরিচ্ছেদের অধীনে সাজানো যাদের শিরোনামগুলো অভ্যন্তরস্থ বিষয়বস্তু নির্দেশ করে। অনেক ক্ষেত্রে যায়দান তার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা এবং আফগান অঙ্গনে তার কার্যকলাপের উপর ভিত্তি করে উদাহরণ প্রদান করেছেন, যাতে তার বিষয়গুলো স্পষ্ট করতে পারেন। তিনি তার জন্মভূমি মিশরের ঘটনাবলীও উল্লেখ করেছেন।
পরিচ্ছেদ সমূহঃ
১। পরিস্ফুটন – বিভিন্ন পরিস্থিতি যেগুলো গেরিলা বিদ্রোহের দিকে নিয়ে যেতে পারে।
২। সচেতনতা এবং আকাঙ্ক্ষা - যখন মানুষ অন্যায় সম্পর্কে সচেতন হয়, তখন তাদের মধ্যে বিদ্রোহ করার ইচ্ছা জন্মায়।
৩। জনগণ - জনগণের প্রতি মনোযোগ দেওয়া উচিত, তার ভিন্ন ভিন্ন সকল গোষ্ঠীর দিকে, কারণ জনগণই লড়াইকে টিকিয়ে রাখে।
৪। নেতৃত্ব - একজন সফল নেতার বৈশিষ্ট্য, (শাইখ) বিন লাদেনকে (রাহিঃ ) রোল মডেল হিসেবে উপস্থাপন করে।
৫। যুদ্ধ - সফল যুদ্ধ পরিচালনায় সাহায্যকারী কারণসমূহ ও যোদ্ধাদের দলগত সংগঠন বিন্যাস।
৬। ধর্মীয় যোদ্ধা ব্যক্তিত্ব - অতীতের বিখ্যাত যোদ্ধাদের উল্লেখ সহ গেরিলা যোদ্ধাদের বিস্তারিত গুণাবলী।
৭। ভূমি - যে কার্যকারণগুলি যোদ্ধাদের মাঠে জিইয়ে থাকতে এবং যুদ্ধে বহাল রাখতে সক্ষম করে।
৮। ব্যাবস্থাপনা সঙ্ক্রান্ত - গেরিলা যুদ্ধের লজিস্টিক (রসদ সংক্রান্ত) দিকগুলির বর্ণনা (অস্ত্র প্রাপ্তি, পরিবহন, চিকিৎসা সেবা, ইত্যাদি)
৯। মিত্র - মিত্রদের সতর্কতার সাথে নির্বাচন করা উচিত এবং রাজনৈতিক মানচিত্রটি সঠিক ভাবে পড়তে পারতে হবে।
১০। সময় - গেরিলা যুদ্ধের জন্য উপযুক্ত সময় ক্ষয়িষ্ণু দেশের বিরুদ্ধে বেশ কাজ করে ।
১১। নিরাপত্তা - গেরিলা যুদ্ধের প্রতিটি পর্যায়ে একটি দক্ষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা প্রয়োজন।
১২। অর্থ – সাদাকা, গনিমত এবং অন্যান্য [ সকল হালাল ] উৎস থেকে গেরিলা যুদ্ধের অর্থায়নের উপায় খুঁজে বের করতে হবে।
১৩। সামগ্রিক কৌশল (Strategy) - গেরিলা যুদ্ধ মূলত একটি আক্রমণাত্মক ধরনের প্রতিরক্ষা।
১৪। মাঠ পর্যায়ের কৌশল (Tactics) - গেরিলা যুদ্ধের জন্য প্রয়োজনের সাথে তাল মিলানো এবং পরিবর্তনগ্রাহ্য কৌশল প্রয়োজন, যা তিনটি স্তরে গঠিতঃ ক্রমঃ ক্ষয়, সমতা বা ভারসাম্যে পৌঁছানো এবং পরাজয়।
১৫। নীতিমালা এবং জনসংযোগ - একটি স্পষ্ট নীতিমালা আঁকতে হবে, যা যুদ্ধ পরিচালনায় সাহায্য করবে, পাশাপাশি জনসংযোগের জন্য প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনে সহায়ক হবে ।
১৬। পুনঃনির্মান - যখন যুদ্ধ শেষ হবে, একটি ইসলামী সরকার স্থাপন করতে হবে, এবং সামাজিক কাঠামো পুনর্গঠন করতে হবে।
অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে, যায়দান ইসলামী আন্দোলন এবং ইসলামী দেশগুলির মধ্যে জোটের উপর জোর দেন এবং জোর দেন যে তাদের কাছ থেকে মুজাহেদিনদের সমর্থন পাওয়ার জন্য তাদের গোপন দরজা খুলতে হবে। যায়দান ব্যাখ্যা করেছেন যে একটি "জিহাদী-রাজনৈতিক প্রকল্প" প্রতিষ্ঠার জন্য মুজাহেদিনদের অবশ্যই ইসলামী জনগণের কাছে নিজেদেরকে তুলে ধরতে হবে।
এই খণ্ডের শেষ দুটি অধ্যায় আল-কায়েদা কর্তৃক জিহাদের ঐতিহাসিক ঘোষণা এবং আমেরিকানদের বিরুদ্ধে গেরিলা যুদ্ধের সূচনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। উভয় অধ্যায়ে যায়দান তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলি, উন্নয়নশীল দেশগুলি এবং ইসলামিক দেশগুলিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বিপ্লবী যুদ্ধে যোগদানের আহ্বান জানিয়েছেন। সেই প্রেক্ষাপটে, যায়দান বলেন যে ১১ সেপ্টেম্বরের হামলা ছিল একটি টার্নিং পয়েন্ট যা আমেরিকানদের সম্পর্কে [ মাজলুম জনগণের ] ভয় দূর করে দিয়েছে এবং বিভিন্ন জাতিকে আমেরিকান আধিপত্যের বিরুদ্ধে জেগে উঠতে সাহায্য করেছে।
খণ্ডের শেষের দিকে, যায়দান চারটি অক্ষের উপর ভিত্তি করে আমেরিকানদের বিরুদ্ধে কীভাবে যুদ্ধ করতে হবে তার একটি পরামর্শ রেখেছেনঃ
• সামাজিক অক্ষ - আমেরিকার সমাজের মধ্যে শ্রেণী বিভাজনকে কাজে লাগিয়ে এবং সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ও সমাজকল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠান স্থাপনের মাধ্যমে সত্যিকারের ইসলাম প্রচারের জন্য কাজ করে আমেরিকার সামাজিক কাঠামোকে অস্থিতিশীল করে ফেলতে হবে।
• রাজনৈতিক অক্ষ - মানবতার বিরুদ্ধে তার অপরাধ প্রকাশ করার জন্য এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্রদের মধ্যে একটি ফাটল ধরানোর জন্য, এবং আমেরিকা ও তার দীর্ঘকালের শত্রুদের মধ্যে বিবাদকে উস্কে দেওয়ার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ব্যাপক প্রচারণা কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে।
• অর্থনৈতিক অক্ষ - আমেরিকান অর্থনীতিকে পঙ্গু করার জন্য আমেরিকান পণ্য বয়কট করা উচিত। তেলের কূপ জ্বালিয়ে দিতে হবে, সেই সাথে ক্ষেত সমূহও যেখানে মাদক চাষ করা হয়।
• সামরিক অক্ষ - নির্বাচিত লক্ষ্যগুলি এমন হওয়া উচিত যা দেশকে দুর্বল করবে এবং জনমতকে এর বিরুদ্ধে ঘুরিয়ে দেবে। সম্ভাব্য লক্ষ্যগুলির মধ্যে রয়েছে: পারমাণবিক স্থাপনা, মহাকাশ প্রতিষ্ঠান, সরকারী এবং আর্থিক লক্ষ্যবস্তু (উদাহরণস্বরূপ, আমেরিকান তেল ট্যাঙ্কার ডুবিয়ে দেওয়া), কোটিপতিদের হত্যা করা, ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থা আক্রমণ করা, আমেরিকান সামরিক ঘাঁটি (স্থলে এবং সমুদ্রে), এবং বিভিন্ন অবকাঠামো (বাঁধ, বিদ্যুৎ নেটওয়ার্ক, যোগাযোগ অবকাঠামো, ইত্যাদি)।
উপসংহারে বলা যায়, বইটির পরিধি এবং এর বিস্তার (গভীরতা) কেবলমাত্র লেখকের বিস্তৃত জ্ঞানেরই পরিচায়ক নয়, বরং সাম্প্রতিক বছরগুলিতে আইএসআইএস-এর বিপরীতে দুর্বল হয়ে পড়া সত্বেও সংগঠন হিসাবে আল কায়েদার জন্য দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা তৈরির সক্ষমতাও নির্দেশ করে। তার এই গ্রন্থকর্মটিকে একটি সতর্কতা সংকেত হিসাবেই দেখা যেতে পারে। আজ হয়ত আল কায়েদার সেই অপারেশনাল সক্ষমতা নেই যা একাকালে তার গৌরবের দিনগুলিতে ছিল, কিন্তু, "দূরবর্তী শত্রু" - বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র -কে আক্রমণ করার তার যে আকাঙ্ক্ষা ও [ পরিকল্পনা] তা আজো প্রাসঙ্গিক এবং [ এখনও আমাদের সিকিউরিটির জন্য আমলে নেওয়া ] অপরিহার্য।
সূত্রঃ
সংগ্রাম ও পরিবর্তনের হাওয়া - বিপ্লব এবং গেরিলা কৌশল
( Struggle and Winds of Change – Revolution and Guerrilla Strategies )
সাইফ আল-আদ্ল
রিভিউ লেখকঃ জেএমজি ডেস্ক , প্রকাশ তারিখঃ জুন ২৩, ২০১৬, ক্যাটাগরিঃ গ্লোবাল জিহাদ
সূত্রঃ শেষে দ্রষ্টব্য
[ আগের খণ্ড গুলোর রিভিউ ১ম পর্বে, লিঙ্ক কমেন্টে ]
তৃতীয় খণ্ড - "গেরিলা ওয়ারফেয়ার - বিপ্লবী লড়াই"
বইয়ের এই খণ্ডটি গেরিলা যুদ্ধের বিষয় নিয়ে লেখা এবং এর সংজ্ঞা নির্ধারন করতঃ গেরিলা যুদ্ধে জড়িত দলসমূহের বৈশিষ্ট্য চিহ্নিত করার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে। যায়দান গেরিলা যুদ্ধের লক্ষ্যগুলো স্পষ্ট করেছেন এবং তুলে ধরেছেন যে গেরিলা যুদ্ধ একটি বিপ্লবের চেয়ে দেশের অনেক বেশি ক্ষতি করে – বিশেষ করে অর্থনৈতিক ক্ষতি।
এই খণ্ডের অধ্যায়গুলো ষোলটি পরিচ্ছেদের অধীনে সাজানো যাদের শিরোনামগুলো অভ্যন্তরস্থ বিষয়বস্তু নির্দেশ করে। অনেক ক্ষেত্রে যায়দান তার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা এবং আফগান অঙ্গনে তার কার্যকলাপের উপর ভিত্তি করে উদাহরণ প্রদান করেছেন, যাতে তার বিষয়গুলো স্পষ্ট করতে পারেন। তিনি তার জন্মভূমি মিশরের ঘটনাবলীও উল্লেখ করেছেন।
পরিচ্ছেদ সমূহঃ
১। পরিস্ফুটন – বিভিন্ন পরিস্থিতি যেগুলো গেরিলা বিদ্রোহের দিকে নিয়ে যেতে পারে।
২। সচেতনতা এবং আকাঙ্ক্ষা - যখন মানুষ অন্যায় সম্পর্কে সচেতন হয়, তখন তাদের মধ্যে বিদ্রোহ করার ইচ্ছা জন্মায়।
৩। জনগণ - জনগণের প্রতি মনোযোগ দেওয়া উচিত, তার ভিন্ন ভিন্ন সকল গোষ্ঠীর দিকে, কারণ জনগণই লড়াইকে টিকিয়ে রাখে।
৪। নেতৃত্ব - একজন সফল নেতার বৈশিষ্ট্য, (শাইখ) বিন লাদেনকে (রাহিঃ ) রোল মডেল হিসেবে উপস্থাপন করে।
৫। যুদ্ধ - সফল যুদ্ধ পরিচালনায় সাহায্যকারী কারণসমূহ ও যোদ্ধাদের দলগত সংগঠন বিন্যাস।
৬। ধর্মীয় যোদ্ধা ব্যক্তিত্ব - অতীতের বিখ্যাত যোদ্ধাদের উল্লেখ সহ গেরিলা যোদ্ধাদের বিস্তারিত গুণাবলী।
৭। ভূমি - যে কার্যকারণগুলি যোদ্ধাদের মাঠে জিইয়ে থাকতে এবং যুদ্ধে বহাল রাখতে সক্ষম করে।
৮। ব্যাবস্থাপনা সঙ্ক্রান্ত - গেরিলা যুদ্ধের লজিস্টিক (রসদ সংক্রান্ত) দিকগুলির বর্ণনা (অস্ত্র প্রাপ্তি, পরিবহন, চিকিৎসা সেবা, ইত্যাদি)
৯। মিত্র - মিত্রদের সতর্কতার সাথে নির্বাচন করা উচিত এবং রাজনৈতিক মানচিত্রটি সঠিক ভাবে পড়তে পারতে হবে।
১০। সময় - গেরিলা যুদ্ধের জন্য উপযুক্ত সময় ক্ষয়িষ্ণু দেশের বিরুদ্ধে বেশ কাজ করে ।
১১। নিরাপত্তা - গেরিলা যুদ্ধের প্রতিটি পর্যায়ে একটি দক্ষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা প্রয়োজন।
১২। অর্থ – সাদাকা, গনিমত এবং অন্যান্য [ সকল হালাল ] উৎস থেকে গেরিলা যুদ্ধের অর্থায়নের উপায় খুঁজে বের করতে হবে।
১৩। সামগ্রিক কৌশল (Strategy) - গেরিলা যুদ্ধ মূলত একটি আক্রমণাত্মক ধরনের প্রতিরক্ষা।
১৪। মাঠ পর্যায়ের কৌশল (Tactics) - গেরিলা যুদ্ধের জন্য প্রয়োজনের সাথে তাল মিলানো এবং পরিবর্তনগ্রাহ্য কৌশল প্রয়োজন, যা তিনটি স্তরে গঠিতঃ ক্রমঃ ক্ষয়, সমতা বা ভারসাম্যে পৌঁছানো এবং পরাজয়।
১৫। নীতিমালা এবং জনসংযোগ - একটি স্পষ্ট নীতিমালা আঁকতে হবে, যা যুদ্ধ পরিচালনায় সাহায্য করবে, পাশাপাশি জনসংযোগের জন্য প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনে সহায়ক হবে ।
১৬। পুনঃনির্মান - যখন যুদ্ধ শেষ হবে, একটি ইসলামী সরকার স্থাপন করতে হবে, এবং সামাজিক কাঠামো পুনর্গঠন করতে হবে।
অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে, যায়দান ইসলামী আন্দোলন এবং ইসলামী দেশগুলির মধ্যে জোটের উপর জোর দেন এবং জোর দেন যে তাদের কাছ থেকে মুজাহেদিনদের সমর্থন পাওয়ার জন্য তাদের গোপন দরজা খুলতে হবে। যায়দান ব্যাখ্যা করেছেন যে একটি "জিহাদী-রাজনৈতিক প্রকল্প" প্রতিষ্ঠার জন্য মুজাহেদিনদের অবশ্যই ইসলামী জনগণের কাছে নিজেদেরকে তুলে ধরতে হবে।
এই খণ্ডের শেষ দুটি অধ্যায় আল-কায়েদা কর্তৃক জিহাদের ঐতিহাসিক ঘোষণা এবং আমেরিকানদের বিরুদ্ধে গেরিলা যুদ্ধের সূচনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। উভয় অধ্যায়ে যায়দান তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলি, উন্নয়নশীল দেশগুলি এবং ইসলামিক দেশগুলিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বিপ্লবী যুদ্ধে যোগদানের আহ্বান জানিয়েছেন। সেই প্রেক্ষাপটে, যায়দান বলেন যে ১১ সেপ্টেম্বরের হামলা ছিল একটি টার্নিং পয়েন্ট যা আমেরিকানদের সম্পর্কে [ মাজলুম জনগণের ] ভয় দূর করে দিয়েছে এবং বিভিন্ন জাতিকে আমেরিকান আধিপত্যের বিরুদ্ধে জেগে উঠতে সাহায্য করেছে।
খণ্ডের শেষের দিকে, যায়দান চারটি অক্ষের উপর ভিত্তি করে আমেরিকানদের বিরুদ্ধে কীভাবে যুদ্ধ করতে হবে তার একটি পরামর্শ রেখেছেনঃ
• সামাজিক অক্ষ - আমেরিকার সমাজের মধ্যে শ্রেণী বিভাজনকে কাজে লাগিয়ে এবং সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ও সমাজকল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠান স্থাপনের মাধ্যমে সত্যিকারের ইসলাম প্রচারের জন্য কাজ করে আমেরিকার সামাজিক কাঠামোকে অস্থিতিশীল করে ফেলতে হবে।
• রাজনৈতিক অক্ষ - মানবতার বিরুদ্ধে তার অপরাধ প্রকাশ করার জন্য এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্রদের মধ্যে একটি ফাটল ধরানোর জন্য, এবং আমেরিকা ও তার দীর্ঘকালের শত্রুদের মধ্যে বিবাদকে উস্কে দেওয়ার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ব্যাপক প্রচারণা কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে।
• অর্থনৈতিক অক্ষ - আমেরিকান অর্থনীতিকে পঙ্গু করার জন্য আমেরিকান পণ্য বয়কট করা উচিত। তেলের কূপ জ্বালিয়ে দিতে হবে, সেই সাথে ক্ষেত সমূহও যেখানে মাদক চাষ করা হয়।
• সামরিক অক্ষ - নির্বাচিত লক্ষ্যগুলি এমন হওয়া উচিত যা দেশকে দুর্বল করবে এবং জনমতকে এর বিরুদ্ধে ঘুরিয়ে দেবে। সম্ভাব্য লক্ষ্যগুলির মধ্যে রয়েছে: পারমাণবিক স্থাপনা, মহাকাশ প্রতিষ্ঠান, সরকারী এবং আর্থিক লক্ষ্যবস্তু (উদাহরণস্বরূপ, আমেরিকান তেল ট্যাঙ্কার ডুবিয়ে দেওয়া), কোটিপতিদের হত্যা করা, ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থা আক্রমণ করা, আমেরিকান সামরিক ঘাঁটি (স্থলে এবং সমুদ্রে), এবং বিভিন্ন অবকাঠামো (বাঁধ, বিদ্যুৎ নেটওয়ার্ক, যোগাযোগ অবকাঠামো, ইত্যাদি)।
উপসংহারে বলা যায়, বইটির পরিধি এবং এর বিস্তার (গভীরতা) কেবলমাত্র লেখকের বিস্তৃত জ্ঞানেরই পরিচায়ক নয়, বরং সাম্প্রতিক বছরগুলিতে আইএসআইএস-এর বিপরীতে দুর্বল হয়ে পড়া সত্বেও সংগঠন হিসাবে আল কায়েদার জন্য দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা তৈরির সক্ষমতাও নির্দেশ করে। তার এই গ্রন্থকর্মটিকে একটি সতর্কতা সংকেত হিসাবেই দেখা যেতে পারে। আজ হয়ত আল কায়েদার সেই অপারেশনাল সক্ষমতা নেই যা একাকালে তার গৌরবের দিনগুলিতে ছিল, কিন্তু, "দূরবর্তী শত্রু" - বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র -কে আক্রমণ করার তার যে আকাঙ্ক্ষা ও [ পরিকল্পনা] তা আজো প্রাসঙ্গিক এবং [ এখনও আমাদের সিকিউরিটির জন্য আমলে নেওয়া ] অপরিহার্য।
সূত্রঃ
Comment