বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম
[প্রথমেই বলে নিই, আমার লেখায় কোন ভুল-শাব্দিক বা মর্মগত- দৃষ্টিগোচর হলে ধরিয়ে দিবেন।]
বিড়ালের একটা স্বভাব আছে, সে কমফোর্ট জোনের (সুবিধাজনক স্থান) বাইরে যেতে চায়না।মানুষের ভিতরও এই স্বভাবটা বড় প্রকট। তাই কমফোর্টে জোনের বাহিরে গিয়ে কোন কাজ করা খুব কম মানুষই পারে। কমফোর্ট জোনের বাহিরের কোন কাজ আসলে, নানা টালবাহানা করে সেটা সরিয়ে দেয়।
এই কারণেই, যদি বলা হয় ব্যক্তিগত, সামাজিক এবং রাষ্ট্রীয়ভাবে ইসলাম কায়েম করতে হবে, তখন সে বলে ,হ্যাঁ ঠিক আছে, আসো ইসলাম কায়েমের কাজ করি। এতটুকু ঠিক আছে, বিপত্তিটা বাঁধে ঠিক তার পর থেকেই।
এখানে দু’টি বিষয়, এক ইসলাম কায়েম করতে হবে।দুই “কিভাবে”ইসলাম কায়েম করবে। প্রথমটিতে সকলের ঐক্যমত (যদি কারো দ্বিমত থাকে তাহলে তো তার ইমানের মাঝেই ব্যাপক গোলযোগ আছে) সমস্যা হচ্ছে দ্বিতীয়টিতে। এখানে এসে অধিকাংশ মানুষের চিরচারিত সেই “বিড়াল রুপটি” ফিরে আসে। কমফোর্ট জোন। ব্যক্তিগত, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনে ইসলামকে আনতে হলে আমাদের কমফোর্ট জোনের বাইরে যেতে হবে। কিন্তু ইনসাফ ও কমফোর্ট জোনের দ্বন্দ্বে আমরা কমফোর্ট জোনকেই প্রাধান্য দিই। সুতরাং ইসলাম কায়েম করতে হবে, তবে হার্ড কোন পথে যাওয়া যাবেনা। কুফফার ও তাদের দালাল শ্রেণীর সাথে দ্বন্দ্ব বাঁধে এমন কোন পথে যাওয়া যাবেনা। জেল-জুলুম, নির্যাতন-নিপীড়ন সইতে হয় এমন কোন পথের কথা মুখে আনা যাবেনা।হিজরত-নির্বাসন, বাড়ি-ঘর ত্যাগ করা, স্ত্রী-সন্তান বিধবা ও এতিম হয় এমন কোন পথের কথা চিন্তাও করা যাবেনা। যারা দ্বীন কায়েমের জন্য এমন পথের কথা বলে তাদেরকে জঙ্গি,খারেজী,উগ্র, চরমপন্থী, অতি-জঝবাতি, ইত্যাদী নানা ট্যাগে “ট্যাগায়িত” করতে হবে। যেহেতু তারা নিজেরাই শুধু এই পথে চলেনা, বরং অন্যদেরকে দাওয়াহ দিয়ে নিয়ে যায়, না আসলে ইসলামের গণ্ডির ভেতর থেকে তাদের সমালোচনা করে। ফলে এই সমালোচনা কমফোর্ট জোন ওয়ালাদের গায়ে গিয়েও তো বিঁধে।
বরং এর বিপরীতে দ্বীন কায়েমের জন্য তাযকিয়া-তাসফিয়া,খানকাহ,প্রচলিত শান্তিপূর্ণ দাওয়াহ,প্রতিটি এলাকায় মক্তব-মাদ্রাসা প্রতিষ্টা করা, গণতন্ত্র ইত্যাদি নানা পথ ও মতকে তারা প্রমোট করে। যদিও এই পথ গুলো ব্যবহার করে দ্বীন কায়েমের চেষ্টার অসারতা নানা ভাবে নানা সময়ে প্রকাশিত হয়েছে।ফলে এখন তা অনেকটা দিনের আলোর মতই স্পষ্ট।তবুও এগুলোই কেন তারা বারবার বেছে নেয়? কারণ এগুলো করতে জেল-জুলুমের ধার ধারে তেমন যাওয়া লাগেনা। আর হত্যা-বা স্ত্রী বিধবা হওয়ার মত কষ্টকর বিষয় তো বহুত দূর কি বাত হ্যায়।সুতরাং কমফোর্ট জোনের ভিতর থেকেই যদি দ্বীন কায়েমের কাজ করা যায় তাহলে মন্দ কিসে !
দ্বীন কায়েমের জন্য শারীয়াহ যদিও এই পথে হাঁটতে বলেনি, তবুও তারা এই পথেই হাঁটবে। এগুলো যদি ইসলাম সম্মত না হয় তাহলে ইসলামের লেভেল লাগিয়ে আর যদি ইসলাম সম্মত হয় তাহলে নানা যুক্তি-তর্ক ,হিকমাহ উপস্থাপন করে এগুলোকেই ষ্ট্যাবলিশ করতে হবে। এর বিপরীতে আল্লাহ প্রদত্ত পথকে নানা যুক্তি আর মনগড়া হিকমাহ দিয়ে আঁটকে দিতে হবে। যারা সেই পথে চলে তাদেরকে বাঁধা দিতে হবে।কারন সেগুলো আমাদের স্বভাব তথা কমফোর্ট জোনের বাহিরে।বরাবরই আমরা আমাদের কাপুরোষিত স্বভাবের কারণে বাস্তবতাকে উপেক্ষা করে কল্পনার জগতে বসে বসে আয়ুকাল কাটিয়ে দিতে চাই। আল্লাহ তাআলা বলেন…
وَعَسَىٰ أَن تَكْرَهُوا شَيْئًا وَهُوَ خَيْرٌ لَّكُمْ
“পক্ষান্তরে তোমাদের কাছে হয়তো কোন একটা বিষয় পছন্দসই নয়, অথচ তা তোমাদের জন্য কল্যাণকর।” (সূরা বাকারাহ{২}: ২১৬)
সুতরাং দ্বীন কায়েমের জন্য কমফোর্ট জোনের বাহিরে গিয়ে আল্লাহ প্রদত্ত পথকেই বেছে নিতে হবে। যেই পথে রয়েছে আমাদের জন্য দুই প্রতিদানের যে কোন একটি প্রতিদান আবশ্যিকভাবে। যদিও সেই পথ আমাদের কাছে খারাপ বা কষ্ট কর মনে হয়। আর তা হচ্ছে ক্বিতাল ফি সাবিলিল্লাহ।
আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে তাঁর পথে আমরণ লেগে থাকার তাওফীক দান করুন। তাঁর পথে মাকবুল শাহাদাতের মাধ্যমে আমাদের আয়ুকালের অবসান ঘটান। আমীন।
[প্রথমেই বলে নিই, আমার লেখায় কোন ভুল-শাব্দিক বা মর্মগত- দৃষ্টিগোচর হলে ধরিয়ে দিবেন।]
বিড়ালের একটা স্বভাব আছে, সে কমফোর্ট জোনের (সুবিধাজনক স্থান) বাইরে যেতে চায়না।মানুষের ভিতরও এই স্বভাবটা বড় প্রকট। তাই কমফোর্টে জোনের বাহিরে গিয়ে কোন কাজ করা খুব কম মানুষই পারে। কমফোর্ট জোনের বাহিরের কোন কাজ আসলে, নানা টালবাহানা করে সেটা সরিয়ে দেয়।
এই কারণেই, যদি বলা হয় ব্যক্তিগত, সামাজিক এবং রাষ্ট্রীয়ভাবে ইসলাম কায়েম করতে হবে, তখন সে বলে ,হ্যাঁ ঠিক আছে, আসো ইসলাম কায়েমের কাজ করি। এতটুকু ঠিক আছে, বিপত্তিটা বাঁধে ঠিক তার পর থেকেই।
এখানে দু’টি বিষয়, এক ইসলাম কায়েম করতে হবে।দুই “কিভাবে”ইসলাম কায়েম করবে। প্রথমটিতে সকলের ঐক্যমত (যদি কারো দ্বিমত থাকে তাহলে তো তার ইমানের মাঝেই ব্যাপক গোলযোগ আছে) সমস্যা হচ্ছে দ্বিতীয়টিতে। এখানে এসে অধিকাংশ মানুষের চিরচারিত সেই “বিড়াল রুপটি” ফিরে আসে। কমফোর্ট জোন। ব্যক্তিগত, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনে ইসলামকে আনতে হলে আমাদের কমফোর্ট জোনের বাইরে যেতে হবে। কিন্তু ইনসাফ ও কমফোর্ট জোনের দ্বন্দ্বে আমরা কমফোর্ট জোনকেই প্রাধান্য দিই। সুতরাং ইসলাম কায়েম করতে হবে, তবে হার্ড কোন পথে যাওয়া যাবেনা। কুফফার ও তাদের দালাল শ্রেণীর সাথে দ্বন্দ্ব বাঁধে এমন কোন পথে যাওয়া যাবেনা। জেল-জুলুম, নির্যাতন-নিপীড়ন সইতে হয় এমন কোন পথের কথা মুখে আনা যাবেনা।হিজরত-নির্বাসন, বাড়ি-ঘর ত্যাগ করা, স্ত্রী-সন্তান বিধবা ও এতিম হয় এমন কোন পথের কথা চিন্তাও করা যাবেনা। যারা দ্বীন কায়েমের জন্য এমন পথের কথা বলে তাদেরকে জঙ্গি,খারেজী,উগ্র, চরমপন্থী, অতি-জঝবাতি, ইত্যাদী নানা ট্যাগে “ট্যাগায়িত” করতে হবে। যেহেতু তারা নিজেরাই শুধু এই পথে চলেনা, বরং অন্যদেরকে দাওয়াহ দিয়ে নিয়ে যায়, না আসলে ইসলামের গণ্ডির ভেতর থেকে তাদের সমালোচনা করে। ফলে এই সমালোচনা কমফোর্ট জোন ওয়ালাদের গায়ে গিয়েও তো বিঁধে।
বরং এর বিপরীতে দ্বীন কায়েমের জন্য তাযকিয়া-তাসফিয়া,খানকাহ,প্রচলিত শান্তিপূর্ণ দাওয়াহ,প্রতিটি এলাকায় মক্তব-মাদ্রাসা প্রতিষ্টা করা, গণতন্ত্র ইত্যাদি নানা পথ ও মতকে তারা প্রমোট করে। যদিও এই পথ গুলো ব্যবহার করে দ্বীন কায়েমের চেষ্টার অসারতা নানা ভাবে নানা সময়ে প্রকাশিত হয়েছে।ফলে এখন তা অনেকটা দিনের আলোর মতই স্পষ্ট।তবুও এগুলোই কেন তারা বারবার বেছে নেয়? কারণ এগুলো করতে জেল-জুলুমের ধার ধারে তেমন যাওয়া লাগেনা। আর হত্যা-বা স্ত্রী বিধবা হওয়ার মত কষ্টকর বিষয় তো বহুত দূর কি বাত হ্যায়।সুতরাং কমফোর্ট জোনের ভিতর থেকেই যদি দ্বীন কায়েমের কাজ করা যায় তাহলে মন্দ কিসে !
দ্বীন কায়েমের জন্য শারীয়াহ যদিও এই পথে হাঁটতে বলেনি, তবুও তারা এই পথেই হাঁটবে। এগুলো যদি ইসলাম সম্মত না হয় তাহলে ইসলামের লেভেল লাগিয়ে আর যদি ইসলাম সম্মত হয় তাহলে নানা যুক্তি-তর্ক ,হিকমাহ উপস্থাপন করে এগুলোকেই ষ্ট্যাবলিশ করতে হবে। এর বিপরীতে আল্লাহ প্রদত্ত পথকে নানা যুক্তি আর মনগড়া হিকমাহ দিয়ে আঁটকে দিতে হবে। যারা সেই পথে চলে তাদেরকে বাঁধা দিতে হবে।কারন সেগুলো আমাদের স্বভাব তথা কমফোর্ট জোনের বাহিরে।বরাবরই আমরা আমাদের কাপুরোষিত স্বভাবের কারণে বাস্তবতাকে উপেক্ষা করে কল্পনার জগতে বসে বসে আয়ুকাল কাটিয়ে দিতে চাই। আল্লাহ তাআলা বলেন…
وَعَسَىٰ أَن تَكْرَهُوا شَيْئًا وَهُوَ خَيْرٌ لَّكُمْ
“পক্ষান্তরে তোমাদের কাছে হয়তো কোন একটা বিষয় পছন্দসই নয়, অথচ তা তোমাদের জন্য কল্যাণকর।” (সূরা বাকারাহ{২}: ২১৬)
সুতরাং দ্বীন কায়েমের জন্য কমফোর্ট জোনের বাহিরে গিয়ে আল্লাহ প্রদত্ত পথকেই বেছে নিতে হবে। যেই পথে রয়েছে আমাদের জন্য দুই প্রতিদানের যে কোন একটি প্রতিদান আবশ্যিকভাবে। যদিও সেই পথ আমাদের কাছে খারাপ বা কষ্ট কর মনে হয়। আর তা হচ্ছে ক্বিতাল ফি সাবিলিল্লাহ।
আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে তাঁর পথে আমরণ লেগে থাকার তাওফীক দান করুন। তাঁর পথে মাকবুল শাহাদাতের মাধ্যমে আমাদের আয়ুকালের অবসান ঘটান। আমীন।
Comment