আল হিকমাহ মিডিয়া কর্তৃক প্রকাশিত
দাওয়াতের পদ্ধতি ও জিহাদী মানহাজের হেফাযত
শাইখ উসামা মাহমুদ হাফিযাহুল্লাহ.
এর থেকে
পর্ব- ৬
==================================================
===============================
দাওয়াতের পদ্ধতি ও জিহাদী মানহাজের হেফাযত
শাইখ উসামা মাহমুদ হাফিযাহুল্লাহ.
এর থেকে
পর্ব- ৬
==================================================
===============================
জিহাদের দাঈ কখন নিরাপদ থাকে
জিহাদের দাঈ যেই বিপদ ও নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে থাকে, খুব কম মানুষই এমন বিপদের মধ্যে থাকে। মাধ্যম, অস্ত্র, সংখ্যা সবদিক থেকেই নিজের থেকে অনেক বেশি শক্তিশালী শত্রুর মোকাবেলা করতে হয়। অনেক সময় যাদেরকে শত্রুর মোকাবেলায় নিজের সাথে রাখতে চায় তারাই বিরোধিতা শুরু করে, তখন খুব ধৈর্য ও হেকমতের প্রয়োজন হয়। তাছাড়া জিহাদের সফরে পদে পদে এমনসব বিষয় উপস্থিত হয়, যেখানে সামান্য ভুলও বড় ধরণের বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। অনেক সময় জযবা হুশের ওপর প্রাধান্য বিস্তার করে থাকে। এধরনের পরিস্থিতিতে আল্লাহর দয়া না থাকলে দাঈ ও মুজাহিদ সঠিক রাস্তা থেকে সরে যেতে পারে এবং নিজেই জিহাদের দাওয়াতের জন্য ক্ষতিকর প্রমাণিত হতে পারে। এই ক্ষতি থেকে দাঈ তখন বাঁচতে পারে যখন তার ফিকির ও মানহাজ সুন্নত অনুযায়ী হবে। তার কাজ-কর্ম ও দাওয়াত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সাহাবায়ে কেরাম ও সালাফে ছালেহিনের মতো হবে। আর এটা তো তখন হবে যখন সে সুন্নতের অনুসরণের জন্য আন্তরিকভাবে চেষ্টা করবে এবং এই ভয় করবে যে, আল্লাহ না করুন আমার কোন ত্রুটির কারণে আমার থেকে হেদায়াত ছিনিয়ে না নেয়া হয়।
এই নেয়ামতকে সিনার সাথে লাগানোর মাধ্যম হলো ওলামায়ে কেরামের অনুসরণ ও নেককারদের সোহবত। দ্বীনের দাঈর ফিকির ও মানহাজ তখনই হেফাজতে থাকবে যখন এমন ওলামায়ে কেরাম থেকে নিজের দ্বীনকে গ্রহণ করবে যাদের তাকওয়া-আখলাক, ইলম-ইনসাফ, ফিকহ-বুঝ, অভিজ্ঞতা ও সুস্থ রুচিসম্পন্ন হওয়া অন্যান্য ওলামায়ে কেরামের নিকট স্বীকৃত। তারা স্বজনপ্রীতি, প্রতিশোধ, রাগ বা নফসের চাহিদা অনুযায়ী ফতোয়া দেবে না; বরং কথা ও কাজে আল্লাহর ভয় প্রকাশ পাবে। তারা শরয়ী নীতিমালার ওপর পারদর্শী হবে। আর এইসব গুণ ওই সকল আলেমদের মাঝেই পাওয়া যাবে, যারা জিহাদের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে নিজের ইজতেহাদ অনুযায়ী ফতোয়া দেয় না। বরং এক্ষেত্রে নিজের থেকে ভালো অগ্রগামী আলেমদের অনুসরণ করে এবং সমসাময়িক আলেমদের সাথে পরামর্শ করে।
এমন ওলামায়ে কেরাম আজও বিদ্যমান আছে। যদি জিহাদের দাঈ নিজের ফিকির, কাজ-কর্ম ও দাওয়াতের পদ্ধতিতে এই ওলামায়ে কেরামের অনুসরণ করে তাহলে আশা করা যায় আল্লাহ তাকে গোমরাহ করবেন না এবং সে দ্বীন ও জিহাদের খেদমতও করতে পারবে। এখানে একথাটিও বলে দিই, ইমারাতে ইসলামিয়া আফগানিস্তানের বিগত তিন দশকের সফলতা ও জিহাদি অভিজ্ঞতা হোক, অথবা খোরাসান থেকে ইয়েমেন, মালি বা শাম পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়া বৈশ্বিক জিহাদি অভিজ্ঞতা হোক, এই সকল অভিজ্ঞতা উম্মতকে খুব দামি একটি সবক দিয়েছে। সেটি হচ্ছে, হক ওলামায়ে কেরামের অনুসরণেই প্রকৃত কল্যাণ নিহিত। উম্মতের প্রয়োজনীয় সকল বিষয়ে, এমনকি গুরুত্বপূর্ণ জিহাদি বিষয় সম্ভবত একটিও এমন নেই, যে বিষয়ে জিহাদি নেতারা বিচক্ষণতার সাথে সমাধান দেননি। সুতরাং আমরা যদি ওলামায়ে কেরাম ও জিহাদের নেতাদের দরসগুলো থেকে সবক নিতে থাকি তাহলে এই সফর খুব ভালোভাবে হেফাযতে থাকবে এবং বারবার ধাক্কা খাওয়া লাগবে না ইনশাআল্লাহ।
Comment