Announcement

Collapse
No announcement yet.

আকাবিরের চোখে দারুল উলূম দেওবন্দ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য ও চেতনা:

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • আকাবিরের চোখে দারুল উলূম দেওবন্দ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য ও চেতনা:

    আকাবিরের চোখে
    দারুল উলূম দেওবন্দ প্রতিষ্ঠার
    লক্ষ্য ও চেতনা:


    1) দারুল উলূম দেওবন্দের প্রতিষ্ঠাকালীন ছাত্র, সাবেক শায়খুল হাদীস ও সদরুল মুদাররিসীন শায়খুল হিন্দ মাহমুদ হাসান দেওবন্দী রহিমাহুল্লাহ বলেন:

    “হজরতুল উস্তাজ আল্লামা নানূতবী (রহ.) কি এ মাদরাসাকে কেবল দারস-তাদরীস ও তা’লীম-তা’আল্লুমের উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন?”
    মাদরাসা তো আমার সামনেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
    আমি যতটুকু জানি, ১৮৫৭ সালের যুদ্ধে বিপর্যয়ের পর এ ইদারা প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে-
    এমন এক কেন্দ্র গড়ে তোলার লক্ষ্যে, যার তত্ত্বাবধানে মানুষদেরকে ১৮৫৭ সালের ব্যর্থতার প্রতিকারের লক্ষ্যে প্রস্তুত করা সম্ভব হয়।

    (তারীখে দারুল উলূম দেওবন্দ, সাইয়েদ মাহবুব, ১/৪৪)

    2) দারুল উলূমের সাবেক মুহতামিম হাকিমুল ইসলাম হজরত কারী তাইয়েব (রহ.) বলেন-

    "এ ওয়ালিউল্লাহী ও ইবদাদুল্লাহী পরিকল্পনার উপরিভাগে ছিল তা’লীমের আবরণ আর এর নেপথ্যে লুকায়িত ছিল ই’লায়ে কালিমাতুল্লাহ, মুসলমানদের বিশ্বব্যাপী গৌরব পূণরুদ্ধার এবং মুসলিম উম্মাহর আন্তর্জাতিক খেদমতের সামগ্রিক চেতনা।
    [তারীখে দারুল উলূম ১/৪৪]

    তিনি আরো বলেনঃ

    "শিক্ষাদানের মাধ্যমে দেওবন্দী ধারার সূচনা, তাবলীগ/প্রচারের মাধ্যমে এর বিকাশ, সমাজ-সংশোধনের মাধ্যমে এর ভিত্তি সংহতকরণ, বিচারব্যবস্থার মাধ্যমে এর প্রবৃদ্ধি, শরীরচর্চা ও রণকুশলতার মাধ্যমে এর উত্থান, প্রবৃত্তি নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে এর প্রশিক্ষণ, আধ্যাত্মিকতার মাধ্যমে এর আত্মরক্ষা এবং দা’ওয়াতের মাধ্যমে এর আন্তর্জাতিকতা”।

    [দেওবন্দী উলামাদের মতাদর্শ- মূল: ক্বারী তাইয়েব রহ., পৃষ্ঠা: ৬৪, অনুবাদ: ড. খালিদ হোসাইন]

    3) আল্লামা ইউসুফ বানূরী রহ. লিখেন:

    “দারুল উলূম নামের এই মহিমান্বিত প্রতিষ্ঠান যেমনিভাবে কুরআন-সুন্নাহর ইলমসমূহ সংরক্ষণের শক্তিশালী ও গুরুত্বপূর্ণ একমাত্র অবলম্বন ছিল, একইভাবে এটি উম্মাহর হৃদয়ে জিহাদের প্রাণ উজ্জীবনে বিশেষতঃ উলামা-ত্বলাবার মাঝে জিহাদী চেতনার স্ফুরণে গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হিসেবে কাজ করেছে।
    এ রাজনৈতিক চেতনায় আকাবিরে দেওবন্দ তখনও সচেষ্ট/জাগ্রত ছিলেন, যখন অন্যরা ছিল নিদ্রায়। এবং দ্বীন ও দেশের সেবায় রত ছিলেন, যখন তথাকথিত কর্ণধারেরা ছিলেন অচেতন। আজ (দেওবন্দী সিলসিলার) এসব প্রতিষ্ঠান হতে যারা শিক্ষাগ্রহণ করে ফারেগ হন, তাদের রক্তে-মাংসে মিশে থাকে এই চেতনা।

    [দারুল উলূম দেওবন্দ: আসআদী, পৃষ্ঠা: ২৯৩]

    4) সাইয়েদ আবুল হাসান আলী নদভী রহিমাহুল্লাহ বলেনঃ

    “এই মাদরাসাসমূহের উলামা-ত্বলাবাদের একটি বৈশিষ্ট্য এই যে, এরা আযাদী আন্দোলনে এবং ইংরেজ বিতাড়নে অগ্রসৈনিক ছিলেন, জাতীয় বিপ্লবের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে ছিলেন।
    প্রকৃতপক্ষে দখলদারদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের চেতনা তাদের কাছ থেকেই উত্থিত হয়েছে। তারা তাদের সর্বোচ্চ সামর্থ্য ব্যয় করে অনেকগুলো সশস্ত্র সংগ্রামের নেতৃত্ব দিয়েছেন। তাদের কেউ শহীদ হয়েছেন, কেউ ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলেছেন, অনেকেই আন্দামান দ্বীপে নির্বাসিত হয়েছেন, কেউ মাল্টায় নির্বাসিত হয়েছেন, অনেকে নিজ দেশের কারাগারেই জীবনের বিরাট অংশ কাটিয়ে দিয়েছেন।”

    [আল মুসলিমুনা ফিল হিন্দ, পৃষ্ঠা- ২৩৭]

    5) হজরত মাও. মানজুর নোমানী (রহ.)

    মাসলাকে দেওবন্দের বুনিয়াদ হিসেবে চারটি বিষয় আলোচনা করেছেন”:

    ১. হানাফী মাযহাবের অনুসরণের সাথে হাদীস ও সুন্নাহ চর্চায় গভীর মনোনিবেশ, অন্য মাযহাব ও মুহাদ্দিসীনের প্রতি আযমত রাখা।

    ২. ইলমী, ফিকহী বৈশিষ্ট্য রক্ষার সাথে সাথে আহলে হক সূফিয়ায়ে কেরামের নিসবত অর্জনে সচেষ্ট থাকা, অন্ততঃ তাদের প্রতি শ্রদ্ধা রাখা।
    ৩. ইত্তেবায়ে সুন্নাত আর শিরক-বিদআত এর প্রতি নফরত এবং এর অপনোদনের মজবুতি প্রদর্শন করা।
    ৪. ইলায়ে কালিমাতুল্লাহ তথা আল্লাহর জমিনে আল্লাহর দ্বীনকে গালিব করার বিরামহীন প্রচেষ্টা।

    [হায়াতুন নবী থেকে সংক্ষেপিত, পৃষ্ঠা: ১৯-২২]

    * হাকীমুল ইসলাম ক্বারী তাইয়েব (রহ.) আরো লিখেনঃ দারুল উলূম প্রতিষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ লক্ষ্য নিম্নরূপ:

    ১. পবিত্র কুরআন-হাদীস এবং এতদসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন উলূমের শিক্ষাদানের উদ্দেশ্যে মাদরাসা ও দ্বীনি গবেষণাকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা।
    ২. আত্মার পরিশুদ্ধি ও আধ্যাত্মিক প্রশিক্ষণ।
    ৩. মুসলমানদের পারিবারিক আইনের সংরক্ষণ এবং ইসলামী বিধি-বিধানের বাস্তব প্রয়োগের ব্যবস্থাকরণ।
    ৪. দারুল উলূমের শিক্ষার্থীদের মাঝে সামরিক প্রশিক্ষণ ও মুজাহিদসুলভ চেতনাবোধ জাগ্রত করণ।
    ৫. খৃষ্টান মিশনারী, আর্য সম্প্রদায় ও অপরাপর ইসলামবিরোধী ও বাতিল ফিরকাসমূহের অপতৎপরতার বিরুদ্ধে দাওয়াতী ও বুদ্ধিবৃত্তিক সংগ্রাম পরিচালনা।
    ৬. ওয়াজ-নসীহত, আলোচনা সভা ইত্যাদির মাধ্যমে মুসলিম সমাজে প্রবিষ্ট বিভিন্ন বদ রসম ও কুসংস্কার এর ব্যাপারে সচেতনতা সৃষ্টি ও সমাজের সাথে সম্পর্ক ঘনিষ্ট করা।
    ৭. বিদেশী ভাষার চর্চা ও বিদেশে তা’লীম-তাবলীগের দায়িত্ব পালন। অর্থাৎ ইসলামের সহীহ দাওয়াত বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়া।
    ৮. যুগ-চাহিদার প্রেক্ষিতে গবেষণা ও লেখালেখির কার্যক্রম পরিচালনা করা।
    ৯. দেশ ও জাতির খেদমতের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক ইসলামী দেশসমূহের সাথে সম্পর্ক স্থাপন এবং মুসলমানদের কেন্দ্র হিসেবে বিবেচিত ইসলামী খেলাফতের হেফাজত ও সংরক্ষণ।
    ১০. স্বশাসন, প্রভাববিমুখ দ্বীনি শিক্ষা পরিচালনা এবং জাতীয় স্থিতিশীলতার উদ্দীপনার বাস্তব লালন।

    [দেওবন্দী উলামাদের মতাদর্শ। ক্বারী তাইয়েব রহ., অনুবাদ: ড. খালিদ হোসাইন, পৃষ্ঠা: ৫৮-৬৪]

    সংগৃহীত...!

  • #2
    দেওবন্দিয়াতের প্রকৃত সংজ্ঞা অনুধাবনের জন্য সংকলনটি উপকারি। মাশাআল্লাহ !
    Last edited by Rakibul Hassan; 07-21-2023, 09:37 PM.

    Comment


    • #3
      ঈমানের হিফাজতের জন্য জিহাদের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। যেই ঈমানে জিহাদের মাত্রা যত কম হবে সেই ঈমান তত দূর্বল হবে।
      পৃথিবীর রঙ্গে রঙ্গিন না হয়ে পৃথিবীকে আখেরাতের রঙ্গে রাঙ্গাই।

      Comment


      • #4
        আমাদের প্রজন্মকে প্রকৃত দেওবন্দি চেতনা ধারণ করে উম্মাহর মুক্তির সংগ্রামে অগ্রবর্তী ভূমিকা রাখার তৌফিক দিন, ইয়া রব্বাল আলামিন।

        Comment


        • #5
          আজ যদি আকাবিররা বেঁচে থাকতেন তাহলে হয়তো বর্তমান হালত দেখে আফসোস করতেন। তারা যে আদর্শ লালন করেছেন তা আজ কতই না বিকৃত হয়ে পড়েছে।
          হে আল্লাহর পথের সৈনিক! ধৈর্যধারণ করুন ও হকের উপর অবিচল থাকুন। নিশ্চয়ই আল্লাহর ওয়াদা সত্য।

          Comment

          Working...
          X