আল হিকমাহ মিডিয়া কর্তৃক প্রকাশিত
দাওয়াতের পদ্ধতি ও জিহাদী মানহাজের হেফাযত
শাইখ উসামা মাহমুদ হাফিযাহুল্লাহ.
এর থেকে
পর্ব- ১৬
==================================================
===============================
দাওয়াতের পদ্ধতি ও জিহাদী মানহাজের হেফাযত
শাইখ উসামা মাহমুদ হাফিযাহুল্লাহ.
এর থেকে
পর্ব- ১৬
==================================================
===============================
ইন্টারনেটের ষড়যন্ত্র এবং জিহাদ ও মুজাহিদীনের হেফাযতের
গুরুত্ব ও পারস্পরিক সম্পর্ক
গুরুত্ব ও পারস্পরিক সম্পর্ক
মুজাহিদ ও জিহাদের মানহাজের হেফাযত ও শক্তিশালী করা দুটি আলাদা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। দুটির কোন একটির ব্যাপারে অবহেলা অপূরণীয় ক্ষতির কারণ। বাস্তবতা হলো, জিহাদের মানহাজের হেফাযত মুজাহিদদের হেফাযত থেকেও বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ মুজাহিদদের দৌড়-ঝাপ, কুরবানির উদ্দেশ্যই হলো হকের দাওয়াত ও পয়গাম বিজয়ী হোক। কিন্তু মানহাজ যদি খারাপ হয়, সফরের রাস্তা যদি ভুল হয়ে যায়, তখন মুসাফির যতই উদ্দীপনা ও ইখলাসের সাথে পথ চলুক, সে কখনও মনযিলে পৌঁছতে পারবে না।
পূর্বে উল্লেখ করেছি যে, এ অবস্থায় দাওয়াত নিজে নিজে ধ্বংস হয়ে যায় এবং আন্দোলন নিজের কর্মীদের দ্বারাই বরবাদ হয়ে যায়। আর যদি মানহাজ সহীহ হয় তাহলে তা তখনই সফল হয় যখন তার কর্মীরা শক্তিশালী হয় এবং সম্মুখসমরেও বিজয়ী হয়। সুতরাং মুজাহিদ ও জিহাদের মানহাজ রক্ষা ও শক্তিশালী করা, উভয়টিই জরুরি এবং একটি আরেকটির সাথে সম্পৃক্ত।
দ্বীনের দুশমনদের যুদ্ধ এই দুই ময়দানেই চালু আছে। তারা জিহাদের ময়দানে মুজাহিদদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত। বিভিন্ন পন্থায় তাদেরকে হত্যা করা, বন্দী করা এবং তাদের বস্তুগত ক্ষতি করার চেষ্টায় লিপ্ত। অন্যদিকে তারা জিহাদের মানহাজ নষ্ট করা ও জিহাদি কাফেলার মোড় ঘুরিয়ে দেয়ার জন্য বিভিন্ন চালবাজি করছে। তারা এই উদ্দেশ্যে ইন্টারনেটও ব্যবহার করে। সুতরাং ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ভাইদের দুশমনের এই দুই হামলার পদ্ধতি জানা এবং তা থেকে সতর্ক থাকা জরুরি।
আসল-নকল চিহ্নিতকরণ
সব ময়দানেই আসল নকলের মিশ্রণ থাকে। বাজারের মধ্যে আসল জিনিস শেষ করার জন্য নকল জিনিসটি পরিচিত করানো হয়। বিভিন্নভাবে নকলের খুব প্রচার করা হয়। হক বাতিলের এই লড়াইয়েও বাতিল এই পদ্ধতি গ্রহণ করেছে।
এটি তো স্পষ্ট যে, বাতিল হকের দাওয়াতকে বন্ধ করতে পারে না, কিন্তু যদি বাতিল হকের বিজ্ঞাপনফলক ও নামফলক সহকারে উপস্থিত হয়, তাহলে হকের কিছু না কিছু ক্ষতি হয়। আমেরিকার ‘RAND Corporation’ এর পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, যদি মুসলিমরা মোল্লা উমর দাঁড় করায়, তাহলে আমাদের মোল্লা ব্রেডলি (নকল মোল্লা) দাঁড় করানো উচিৎ।
এজন্য আমেরিকার ওই সমস্ত ব্যক্তির প্রতি বিশেষ দৃষ্টি থাকে, যারা বাহ্যিকভাবে হকের দাওয়াত দেয়, কিন্তু ভিতরে ভিতরে তারা মানুষকে হক থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে চায়। যেহেতু আল্লাহ মানুষের স্বভাবে হকের প্রতি আকর্ষণ রেখেছেন (যদি অন্তর নষ্ট না হয়ে থাকে) এজন্য বাতিল শুধু বাতিল বেশে, বাতিল শিরোনামে হকের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে না। সে হয়ত স্বভাব-প্রকৃতি নষ্ট করে দিতে পারে। ফলে হিরোইন ও বিষকে মহৌষধ মনে করে সেবন করে। অথবা অন্য কোন পদ্ধতিতে ধোঁকার আশ্রয় নেয়, আর নিজেদের বাতিলের ওপর হকের শিরোনাম লাগিয়ে লোকদেরকে হকের নামে গোমরাহ করে।
নেটের জগতে উভয় কাজই হয়। একদিকে স্বভাব নষ্ট করার খুব চেষ্টা হচ্ছে, অন্যদিকে জিহাদি আন্দোলনের বিরুদ্ধে ধোঁকাবাজির জাল বিছানো হচ্ছে। ভুল চিন্তা-চেতনা ও আমলকে সঠিক হিসেবে খুব প্রচার করা হচ্ছে। হক্ব পছন্দকারী ব্যক্তিদের সামনে গোমরাহীর রাস্তাকে সঠিক বলে দেখানো হচ্ছে। এ অবস্থায় মনযিলে মাকসুদে পৌঁছতে আগ্রহী ব্যক্তি, যার জযবার সাথে প্রয়োজনীয় হুশ নেই, সঠিক ইলম অর্জনে আগ্রহী নয়, সে ধোঁকার শিকার হয়। এই কপালপোড়া জিহাদের নামে নিজেও ধ্বংস হয়, সেই সাথে জিহাদি কাফেলারও বদনামের কারণ হয়। এ অবস্থায় শুধু ওই ব্যক্তিই শেষ পর্যন্ত টিকে থাকে, যে জিহাদের জযবার সাথে জিহাদের বুঝ এবং হুশ ঠিক রাখে। এই সৌভাগ্যবান ব্যক্তি শরিয়তের ইলমের বাতি হাতে নেয়, তারপর পূর্ববর্তী মুজাহিদদের দেখানো রাস্তায় চলতে থাকে।
Comment