আল হিকমাহ মিডিয়া কর্তৃক প্রকাশিত
দাওয়াতের পদ্ধতি ও জিহাদী মানহাজের হেফাযত
শাইখ উসামা মাহমুদ হাফিযাহুল্লাহ.
এর থেকে
পর্ব- ১৭
==================================================
===============================
দাওয়াতের পদ্ধতি ও জিহাদী মানহাজের হেফাযত
শাইখ উসামা মাহমুদ হাফিযাহুল্লাহ.
এর থেকে
পর্ব- ১৭
==================================================
===============================
ইন্টারনেটের ষড়যন্ত্র এবং জিহাদ ও মুজাহিদীনের
হেফাযতের গুরুত্ব ও পারস্পরিক সম্পর্ক
হেফাযতের গুরুত্ব ও পারস্পরিক সম্পর্ক
সতর্কীকরণ
জিহাদের রাস্তা অতিক্রমকারী মুজাহিদদেরকে এখানে একটি সমস্যা ও শত্রুদের একটি নিকৃষ্ট চাল সম্পর্কে সতর্ক করা জরুরি মনে করছি। তবে তার আগে একটি কথা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, তা হলো জিহাদের রাস্তা ধৈর্য ও সংকল্পের রাস্তা। এ রাস্তা কাঁটায় ভরা, তবুও এ রাস্তায় শেষ পর্যন্ত চলতে হয়; কারণ এটি জান্নাতের রাস্তা। এ পথে চলা ইচ্ছাধীন নয়, বরং বর্তমান সময়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ফরয হল, এ রাস্তায় চলা।
আপনারা জানেন যে, এ রাস্তায় চলা কখনও সহজ ছিল না। একারণেই প্রথম থেকেই মুমিন ও মুনাফিকের মাঝে পার্থক্য করে আসছে। এ অবস্থায় যে বাস্তবিক পক্ষেই আখেরাতকে চায়, যে সত্যিকারেই আল্লাহকে ভালোবাসে, যে উম্মতের এই দুর্দশায় আসলেই ব্যথিত, সে এই রাস্তায় পাহাড়ের মতো কঠিন সমস্যাকেও হাসিমুখে বরণ করে নেয়। সে জিহাদ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে নিরাপদ জিন্দেগী গ্রহণ করাকে আযাব মনে করে।
সে বোঝে যে, এখানকার দৌড়-ঝাপ, চেষ্টা-প্রচেষ্টা, কষ্ট-মসিবত, পেরেশানি, মারপিট, বন্দীত্ব, অনাহার, দেশান্তর এবং মৃত্যু সবই (আযর ও সাওয়াবের) মাইলফলক। তাই তারা এসব বিপদ দেখে ঘাবড়ায় না। অস্ত্র রেখে দেয় না, ভীত হয় না; বরং বিপদাপদের সামনে পাহাড়ের মতো দাঁড়িয়ে থাকে। আল্লাহর কাছে তাওফিক চেয়ে বিপদের এই পাহাড় কেটে নিজের জন্য জান্নাতের রাস্তা তৈরি করে। সে জানে আখেরাতের পথিক দ্বীনের দুশমনের শক্তি দেখে ভীত হয় না। তাদের ধোঁকাপূর্ণ চালবাজি ও ষড়যন্ত্র দেখে মন খারাপ করে না। সে বোঝে, হক রাস্তার হাতিয়ার হলো তাকওয়া ও সবর। এই দুটি জিনিস যদি থাকে তাহলে বাতিলের সমস্ত ষড়যন্ত্র, চালবাজি ধূলিসাৎ হয়ে যাবে। আর আল্লাহ তার বান্দাকে এই মহাসড়কে চলার তাওফিক দান করেন। এবং তাকে জান্নাতে নিয়ে যান।
সতর্কীকরণ হলো-
হকের রাস্তায় বাতিলের পক্ষ থেকে একটি বাধা হলো তাদের ধোঁকা। এটা এমন একটা চাল, যা বাতিল নিজের শক্তি শেষ হয়ে গেলে এবং সমস্ত মাধ্যম অকেজো হয়ে গেলে ব্যবহার করে। সব শক্তি শেষ হয়ে গেলে ধোঁকাবাজির জাল বিছায়। তাদের ধোঁকার একটি হলো তাদের কিছু গোলাম মুজাহিদ, দাঈ সেজে ইন্টারনেটের পথে মুখলিস মুজাহিদ পর্যন্ত পৌঁছে এবং তাকে ফাঁসিয়ে জেলে বন্দী করে। এই জাল তো মাকড়সার জালের মতো দুর্বল, কিন্তু মুজাহিদদের গাফলতির কারণে অনেক সময় তা ভয়ানক হয়ে উঠে।
দুশমনের এই সম্ভাব্য চাল যদি আগেই বোঝা যায়, তাহলে এর মোকাবেলা করা খুবই সহজ। দুশমন এক্ষেত্রেও ব্যর্থ হবে। কিন্তু এই ধরণের চাল সম্পর্কে যদি কোন ধারণাই না থাকে, তাহলে যেই জিহাদের কথা বলবে তাকেই সত্যিকারের মুজাহিদ মনে হতে থাকবে। আর এভাবেই আমরা নিজ পায়ে হেঁটে জালে আবদ্ধ হব। আরব হোক বা আফ্রিকা, আমেরিকা, ইউরোপ হোক বা ভারত উপমহাদেশ হোক সব জায়গায়ই দ্বীনের দুশমনরা এই চালবজি করছে। সুতরাং তাদেরকে চেনা এবং চিহ্নিত করা জরুরি।
আমরা ইন্টারনেটে এক্ষেত্রে দুই ধরণের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হই। আমাদের পাঠক ও সম্পৃক্ত ব্যক্তিদেরকে উভয় চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করার জন্য তৈরি করা জরুরি।
একটি চ্যালেঞ্জ হলো, সহীহ জিহাদি মানহাজকে বোঝা, শুধু তাকেই গ্রহণ করা এবং তাতেই অগ্রসর হওয়া।
দ্বিতীয় চ্যালেঞ্জ হলো, গোয়েন্দাদের অপতৎপরতা থেকে বাঁচা এবং শুধু আসল মুজাহিদদের সাথে সম্পৃক্ত থাকা।
ইন্টারনেট ও তার বাহিরে আমাদের এই চ্যালেঞ্জের সাথে যদি সংগ্রাম করতে হয়, আর আমরা জিহাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের মোকাবেলা করা আমাদের বুনিয়াদি দাওয়াতের অংশ না বানাই, তাহলে তা হবে ওই ব্যক্তির মত যে খরস্রোতা নদীতে ঝাঁপ দিলো কিন্তু সাতারের কোন খবর নেই। আল্লাহ আমাদেরকে এ ময়দানের হাতিয়ার গ্রহণ করার তৌফিক দান করুন, আমীন।
নিরাপত্তার জুজুবুড়ি ও জিহাদের দাঈদের করণীয়
দ্বীনের দুশমনদের চাহিদা হলো যুবকরা নেটে সবধরনের খারাপ জিনিস দেখুক, সব অশ্লীলতার গর্তে প্রবেশ করুক, আল্লাহর সন্তুষ্টি ও আসল জীবনের পথ দেখায় এমন বিষয় থেকে (দ্বীনের দাওয়াত ও জিহাদ থেকে) দূরে থাকুক। তাদের চেষ্টা হলো নেটে এমন এক পরিবেশ তৈরি করা, যাতে জিহাদ বিষয়ে কোন কিছু দেখলেই যুবকদের অন্তর কাঁপা শুরু হয় এবং এমন মনে করে যে, এসব বিষয় দেখলেই জিহাদের দুশমনরা তাকে উঠিয়ে নিয়ে গুম করে ফেলবে।
দুশমন তাদের এই চাহিদা ও চেষ্টাকে গোপন করেনি। বরং তাদের “RAND Corporation” তার রিপোর্টে উল্লেখ করেছে: নেটে নিরাপত্তার একটি ধোঁয়া তোলা উচিৎ (জিহাদি বিষয় দেখা রিস্ক, দেখলেই ধরবে এমন মানসিকতা সৃষ্টি করা)। এর দ্বারা অধিকাংশ মানুষ জিহাদি পেইজ ও সাইট থেকে দূরে সরে যাবে। নেটে দাওয়াতের কাজে নিয়োজিত ভাইদের জন্য জরুরি হলো এই ভয়ের চিকিৎসা করবে। তাদেরকে বোঝাবে যে, শুধু বিষয়টি দেখা বা পড়ার দ্বারা কোন সমস্যা হয় না। সাথে সাথে তাদেরকে এমন টেকনিক শেখাবে, যাতে নিজেকে নিরাপদ রেখে দাওয়াতি বিষয় পড়তে পারে। বাস্তবতা হলো শুধু জিহাদি বিষয় দেখা পড়ার দ্বারা কোন ক্ষতি নেই, সমস্যা হলো দাঈর বেশে থাকা বহুরূপি ইসলামের দুশমনকে আসল দাঈ মনে করা। তাকে নিজের আসল অবস্থান বলা, তার সাথে অফলাইনে সম্পর্ক করা। অথবা জিহাদ ধ্বংসকারী মানহাজকে আসল মানহাজ মনে করা। নেটের এই দুই দিকের সমস্যা বোঝা ও বেঁচে থাকা সকলের জন্য জরুরি।
আরও পড়ুন
১৬ তম পর্ব ------------------------------------------------------------ ১৮ তম পর্ব
Comment