Announcement

Collapse
No announcement yet.

বাংলাদেশঃ পরিবর্তনের দ্বারপ্রান্তে দাড়িয়ে

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • বাংলাদেশঃ পরিবর্তনের দ্বারপ্রান্তে দাড়িয়ে

    যখন বিশ্বের চতুর্থ বৃহৎ মুসলিম জনগোষ্ঠীকে সেকুলারিজম গিলে খাওয়ানোর অন্যায় চেষ্টা চালানো হয় তখন ‘শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ-সমাবেশ’ এবং ‘গণতান্ত্রিক পরিবর্তন’ এর কথা ভুলে গিয়ে নতুন কিছু ভাবতে হয়। যখন দুই হাজারেরও বেশী মানুষকে এই দেশে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয় এমন একটি দাবি জানানোর ‘অপরাধে’ যা কি না মুসলিম বিশ্বের অন্য যেকোন জায়গায় এমনিতেই গ্রহণযোগ্য,তখন অবশ্যই বৃথা হা-হুতাশ জানানো যথেষ্ট থাকে না। যখন আমাদের প্রিয় নবী(সাঃ) (তাঁর জন্য আমাদের জান কুরবান হোক) কে এই জমিনের কিছু নর্দমার কীট ব্যাঙ্গ-বিদ্রুপ করে তখন শুধু মৌখিকভাবে নিন্দা জানালে চলবে না।




    আমরা,বাংলাদেশের মুসলিমদের এই প্রশ্নগুলো নিজেদের করতে লজ্জিত হওয়া উচিত নয়ঃ আমরা কি আমাদের দেশটাকে আতাতুরকের মস্তিস্কপ্রসুত সেকুলারিজমের প্রতলিপি হিসেবে দেখতে চাই? ব্রিটিশ দাসত্বের সেই অন্ধকার দিনগুলো-যখন একজনকে দাঁড়ি রাখা বা মুসলিম নাম ধারণ করার জন্য ট্যাক্স দিতে হত, আমরা কি সেই স্মৃতি আবার ফিরিয়ে আনব? এদেশের কিছু কুলাঙ্গার নাস্তিক যারা ‘শাহবাগ আন্দোলনের’ মত প্লাটফর্মকে ব্যাবহার করে তাদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করবে অথচ সাধারণ মুসলিম যারা ইসলামের মৌলিক অধিকারগুলোর দাবি জানাবে তারা মতিঝিলে নির্মম গণহত্যার শিকার হবে, আমরা কি এটা মেনে নেব? এ সবকিছু বাস্তবায়ন হয়ে যাবে আর আমরা কি নীরবে মার খেয়ে যাব? ‘জাতীয় চেতনার’ অযাচিত ব্যাবহার আমাদের ইসলামী পরিচয়কে ধূলিসাৎ করে দিবে,এটা কি আমরা মেনে নেব? ‘প্রতিশোধ পরায়নতার’ বীজ সতর্কতার সাথে ধীরে ধীরে এ জাতির জনমনে বপন করে একটি গোষ্ঠীকে দৈত্যে পরিনত করা হয়েছে যাতে আমরা তাদের ঘৃণা করি, আমরা কি এটা মেনে নেব? আমরা কি এটা মেনে নিতে পারি যে, ‘একাত্তরের চেতনা’ একটি দাবানলে পরিনত হবে আর তা গোটা জাতিকে গ্রাস করবে?“যে জাতির নেতা একজন মহিলা তারা উন্নতি করতে পারে না”(বুখারিঃ৪৪২৫)-প্রিয় নবী(সাঃ) এর এই হাদিসটি কি আমরা ভুলে গেছি?অবশ্যই আমরা উন্নতি করবনা যখন হাসিনা ওয়াজেদের মত একজন বিবেকবর্জিত মহিলা এ জাতিকে নেতৃত্ব দিবে!‘যুদ্ধপরাধের’ সাজান নাটক বা এ বিষয়ে কোন একটি রাজনৈতিক দলের ভুমিকা কিংবা অন্য কোন দলের জুলুমের পক্ষে অবস্থান নেয়া,এর কোনটাই বর্তমানে বাংলাদেশের ইস্যু নয়। ১৯৭১ সালে যারা জুলুমের শিকার হয়েছিল তাদের ন্যায়বিচার দেয়াও উদ্দেশ্য নয়। এগুলো তাদের মুখের কথা......এমনকি এদেশের সেকুলারিজমের অন্ধভক্ত গোষ্ঠী গত দেড় বছর ধরে সংঘটিত তাদের নির্দয় আচরণ থেকেও নিজেদের মুক্ত মনে করে।ক্ষমতা দখল করে থাকা এই ক্ষুদ্র দলটির কাজকর্ম সবদিক থেকে নীতি বর্জিত যা সকলের কাছেই স্পষ্ট।পশ্চিমবঙ্গের মদদপুষ্ট বাংলাদেশের শাসকগোষ্ঠী ইসলামের ভুমি থেকে ইসলামের নাম-নিশানা মুছে দেয়ার পরিকল্পনায় ব্যাস্ত।



    ইসলামের প্রতি তাদের অন্তরের অন্তঃস্থলে লুকিয়ে থাকা ঘৃণা অবশেষে সবার সামনে প্রকাশ পেয়েছে।তারা যে একটি মুসলিম সমাজে জন্ম নিয়েছে,এই সেকুলার গোষ্ঠী যেন সেটাই অস্বীকার করতে চায় এবং সম্ভবত তারা তাদের চামড়ার রঙ্গকেও ঘৃণা করে।তাদের প্রভুদের অনুকরণে তারা অনেকটুকুই এগিয়ে গেছে।(অধিকাংশ মুসলিম দেশের শাসকদের প্রভু হলঃআমেরিকা/পশ্চিমা বিশ্ব।বাংলাদেশের শাসকগোষ্ঠীর সাথে অন্যদের পার্থক্য হচ্ছে তাদের দ্বিতীয় প্রভুও আছে,ভারত এবং তার সাথে তাদের পশ্চিমা প্রভু।)এই স্বাধীন জাতিটি ধীরে ধীরে ভারতের দাস হিসেবে বিক্রি হয়ে গেছে।কয়েক বছর আগে সংঘটিত হওয়া বিডিআর বিদ্রোহের নির্মম হত্যাযজ্ঞ প্রমাণ করে যে,শাসকগোষ্ঠী ভারতকে খুশি করতে কতদূর যেতে পারে।অল্প কিছু সৈন্য যখন এই পক্ষপাতমূলক সিস্টেমের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করল তাদের এমনভাবে দমন করা হল যেন তারা বাংলাদেশকে আক্রমণ করতে আসা বিদেশি শত্রু। এমনকি তাদের পরিবারের সদস্যদেরও নিরাপত্তা বাহিনীদের হাতে অশালীন অবমাননার শিকার হতে হল। সবশেষে যখন এই গণহত্যার পেছনে ভারতের পৃষ্ঠপোষকতা প্রকাশ করে দেবার জন্য কিছু মানুষ যখন ইশতিহার বিলি করার সাহস দেখাল তখন তাদেরকেও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অপবাদ দিয়ে নাস্তানাবুদ করা হল। বর্তমানে বাংলাদেশে ভারতীয় প্রভাব শুধু রাজনীতি বা অর্থনীতিতেই সীমাবদ্ধ নয়। এমনকি সাংস্কৃতিক দিক দিয়েও এই মুসলিম রাষ্ট্র ভারতীয় উপনিবেশে পরিণত হচ্ছে। মসজিদের শহর ঢাকা মূর্তির শহরে পরিণত হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের পূর্ণ সহায়তায় নোংরা ও জঘন্য হিন্দু সংস্কৃতি ক্যান্সারের মত বিস্তার লাভ করছে। মদ্যপান ও মাদকাসক্তি বর্তমানে ব্যাপক বিস্তৃত। অশ্লীলতা বর্তমানে একটি অপরাধে পরিণত হয়েছে। সরকার দলীয় ছাত্রসংগঠন, অল্পবয়সী তরুণীদের যৌন হয়রানি করা এবং এই সকল অপরাধের ভিডিও ধারন করে তা দ্বারা হয়রানির শিকার তরুণীদের ব্ল্যাকমেল করা একটি দৈনন্দিন কার্যক্রম বানিয়ে নিয়েছে। এমন একটি দেশ যেখানে মানুষজন বেঁচে থাকার অধিকারটাও পায় না, সেখানে ধর্ম নিরপেক্ষতাবাদীরা তাদের ওকালতি করছে যাদের এই সমাজ কলুষিত করার অপরাধে হদ্দ শাস্তির (ইসলামে নির্দিষ্ট অপরাধের জন্য নির্দিষ্ট শাস্তি) মুখোমুখি করা উচিৎ। এইতো সেদিন এক কনফারেন্সে ছাত্রসংগঠনটির ভাইস ইউনিয়নের সভাপতিকে মানবাধিকার কমিশনের সভাপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পাশে বসতে দেওয়া হয়েছিল। এই মহান মিটিং এর উদ্দেশ্য ছিল ব্যভিচারের বৈধতার পক্ষে ওকালতি করা। ক্ষমতাসীন দলের তীব্র ইসলাম বিদ্বেষ বোঝা যায় সংবিধান থেকে ‘মহান আল্লাহ্*র প্রতি পূর্ণ আস্থা’ লেখাটি যা আগে থেকেই অকার্যকর ছিল, তা তুলে দেওয়ার মাধ্যমে! সুতরাং, কেন একজন মুসলিম ধর্ম নিরপেক্ষতার উপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত এই সিস্টেমের প্রতি এক পয়সার ও আনুগত্য করবে? কেন একজন এই সিস্টেমের আইন কানুন মেনে চলবে যে সিস্টেমের বৈধ-অবৈধ বিষয়গুলো এমন সংবিধান দ্বারা নির্ধারিত যে সংবিধান আমাদের রবের নাম ও সহ্য করতে পারে না? ইসলামের কোথায় আপনি দেখবেন যে লক্ষ লক্ষ মুসলিমকে এই দূষিত ‘গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায়’ শিকলবদ্ধ করে রাখাটাকে ন্যায়সঙ্গত বলে মনে করা হচ্ছে?কেন আপনি এমন একটি অন্ধকার সুড়ঙ্গের ভেতর দিয়ে যাবেন যে সুড়ঙ্গ তৈরি করা হয়েছে আপনাকে এমন একটা পরিস্থিতিতে নিয়ে যাবার জন্য যেখানে আপনাকে পশ্চিমাদেরই দাস হয়ে থাকতে হবে? এই অকার্যকর পথে আমাদের কর্মশক্তি বিনষ্ট করা থেকে ফিরে আসার জন্য কি আলজেরিয়া, তুরস্ক এবং সবশেষে মিসরের অভিজ্ঞতাগুলো যথেষ্ট নয়? প্রবাদ আছে, বারবার বিভিন্ন ভুল করে একই ফল পাওয়াটা বোকামি নয়, বরং বোকামি হল একই ভুল বারবার করে বিভিন্ন ফল আশা করা। আমাদের অবশ্যই এই সিস্টেমের সাথে নিজেদের বেড়িবদ্ধ করা উচিৎ না যে সিস্টেমের আমাদের জনসাধারণদের কিছুই দেবার নেই। মতিঝিল ও সাতক্ষীরায় ঘটে যাওয়া গণহত্যাগুলোর কারণে আমরা যেন আমাদের উদ্দীপনা না হারিয়ে ফেলি।চলুন, আমরা প্রমাণ করে দিই যে মৃত্যুদণ্ডাদেশ, প্রহসনমূলক বিচার, নেতৃস্থানীয় ইসলামী ব্যক্তিদের ফাঁসি এবং সর্বশেষ ব্যাপক হারে বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড- এগুলোর কোন কিছুই আমাদের পথের বাঁধা হয়ে দাড়াতে পারবে না। যে উদ্দীপনা এদেশের যুবকদের ইসলাম ও মহানবী (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর বিরুদ্ধে এক নাস্তিক ব্লগারের ছড়িয়ে পড়া বিষ দমনে অনুপ্রাণিত করেছিল, আসুন আমরা তাদের সে আশা পূরণ করি। আলহামদুলিল্লাহ্*, দেশের জনসাধারণের অধিকাংশই এখন নির্বাচনে ভোটদানের বিপক্ষে। এখন আমাদের সময় এক ধাপ এগিয়ে গিয়ে আরও অর্থবহ কিছু করার। যখন ব্যালট পরিবর্তন আনতে ব্যর্থ হয়, যেটা সবসময়ই হয়ে থাকে, তখন বুলেট পরিবর্তন আনে। এখন আমাদের সংগঠিত হওয়া উচিৎ একটি জনপ্রিয় ও সর্বব্যাপী বিপ্লবের জন্য। হ্যাঁ, এখন আমাদের সময় বিদ্রোহ করার। শুনতে যতই কঠোর লাগুক না কেন, হাজী শরীয়তউল্লাহ্*র এই জমিনে এই অত্যাচারী শাসনতন্ত্রের বিরুদ্ধে সশস্ত্র বিদ্রোহই আমাদের প্রয়োজন। সেই সাথে চলুন, আমরা ফরায়েজী আন্দোলনের সেই উদ্দীপনার পুনর্জাগরণ ঘটাই আর আমাদের আসল শেকড়ে ফিরে যাই। আমাদের ব্যক্তিগত ও সমষ্টিগত জীবনে ইসলামের পুনর্জাগরণই আমাদের উত্তর হওয়া উচিৎ তাদের প্রতি যারা এই মুসলমানের দেশ বাংলাদেশ থেকে ইসলামকে উচ্ছেদ করতে চায়।



    "তারা মুখের ফুঁৎকারে আল্লাহর নূরকে নিভিয়ে দিতে চায়, কিন্তু আল্লাহ তাঁর নূরকে পূর্ণরূপে বিকশিত করবেন যদিও কাফেররা তা অপছন্দ করে। " (আল কুরআন)
    এ কথা মনে রাখা উচিৎ যে উপরোক্ত আয়াতটি উহুদ যুদ্ধের পর হিজরতের তৃতীয় বছরে নাজিল হয়েছিল। মুসলিমরা সবেমাত্র পরাজয়ের গ্লানিতে ভুগছিল। ইসলাম- শুধুমাত্র কয়েক হাজার অনুসারীদের নিয়ে মদীনায় সীমাবদ্ধ; আর অন্যদিকে সমগ্র আরব ইসলামের নাম নিশানা মুছে দিতে বদ্ধপরিকর। প্রবল বাতাসের মাঝে নিভু নিভু মোমবাতির মত ইসলামের আলোও নিভে যাবার মতন ভয়ানক পরিস্থিতিতে পড়েছিল। এই বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে আল্লাহ্* এই আয়াত নাজিল করে নিশ্চয়তা দিলেন যে ইসলামের আলো পূর্ণরূপে বিকশিত হবেই, কাফিররা তা যতই অপছন্দ করুক না কেন।



    আজ আমরা দেখতে পাচ্ছি, হাজারো শহীদের রক্তের বিনিময়ে পশ্চিম আফ্রিকার দূরতম স্থান থেকে শুরু করে বাংলাদেশ ও বার্মায় মুসলিম উম্মাহর জন্য নতুন ভোরের আলো উঁকি দিচ্ছে; তাহলে চলুন আল্লাহ্*র তার দ্বীনের নূর পূর্ণরূপে বিকশিত করার ওয়াদার উপর পূর্ণ আস্থা রেখে আমরা আবার মাথা উঁচু করে দাঁড়াই, প্রাচ্য ও পশ্চিমের কাফিররা তা যতই অপছন্দ করুক না কেন।
    Last edited by abu_aqsa; 02-09-2016, 11:34 PM.
    আল-&#248 http://up.harajgulf.com/do.php?img=487835

  • #2
    এই লিখাটি কার জানিনা , আল্লাহ ভাইকে উত্তম জাযা দান করুন
    আল-&#248 http://up.harajgulf.com/do.php?img=487835

    Comment

    Working...
    X