আল-ক্বাদিসিয়াহ মিডিয়া
কর্তৃক পরিবেশিত
জিহাদের পথে স্থায়ী ও অবিচল বিষয় সমূহ
-শাইখ ইউসূফ আল উয়াইরি
[এর উপরে লেকচার দিয়েছেন ইমাম আনোয়ার আল-আওলাকি (রহিমাহুল্লাহ)||
এর থেকে
৩য় পর্ব
==================================================
===============================
কর্তৃক পরিবেশিত
জিহাদের পথে স্থায়ী ও অবিচল বিষয় সমূহ
-শাইখ ইউসূফ আল উয়াইরি
[এর উপরে লেকচার দিয়েছেন ইমাম আনোয়ার আল-আওলাকি (রহিমাহুল্লাহ)||
এর থেকে
৩য় পর্ব
==================================================
===============================
অধ্যায়ঃ ১
প্রথম বৈশিষ্ট্যঃ কিয়ামত দিবস পর্যন্ত জিহাদ চলতে থাকবে
আহলে কিতাবীদের সাথে মুসলিমদের সম্পর্কঃ
কিছু মানুষ বলে যে, আহলে কিতাবীদের সাথে আমাদের শান্তি এবং মতামত আদান-প্রদানের ভিত্তিতে সম্পর্ক হওয়া উচিত ।
অথচ আল্লাহ্ বলেনঃ
﴿ قَاتِلُوا الَّذِينَ لَا يُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَلَا بِالْيَوْمِ الْآَخِرِ وَلَا يُحَرِّمُونَ مَا حَرَّمَ اللَّهُ وَرَسُولُهُ وَلَا يَدِينُونَ دِينَ الْحَقِّ مِنَ الَّذِينَ أُوتُوا الْكِتَابَ حَتَّى يُعْطُوا الْجِزْيَةَ عَنْ يَدٍ وَهُمْ صَاغِرُونَ ﴾
“যাদের প্রতি কিতাব অবতীর্ণ হয়েছে তাদের মধ্যে যারা আল্লাহ্-তে ঈমান আনে না ও শেষদিনেও না এবং আল্লাহ্ ও তাঁর রসূল যা হারাম করেছেন তা হারাম গণ্য করে না এবং সত্য দ্বীন অনুসরণ করে না; তাদের সাথে যুদ্ধ করবে, যে পর্যন্ত না তারা নত হয়ে স্বহস্তে জিয্য়া দেয়।”
আল্লাহ্ আরও বলেনঃ
﴿فَإِذَا انْسَلَخَ الْأَشْهُرُ الْحُرُمُ فَاقْتُلُوا الْمُشْرِكِينَ حَيْثُ وَجَدْتُمُوهُمْ وَخُذُوهُمْ وَاحْصُرُوهُمْ وَاقْعُدُوا لَهُمْ كُلَّ مَرْصَدٍ فَإِنْ تَابُوا وَأَقَامُوا الصَّلَاةَ وَآَتَوُا الزَّكَاةَ فَخَلُّوا سَبِيلَهُمْ إِنَّ اللَّهَ غَفُورٌ رَحِيمٌ﴾
“অতঃপর নিষিদ্ধ মাস অতিবাহিত হলে মুশরিকদেরকে যেখানে পাবে হত্যা করবে, তাদেরকে বন্দী করবে, অবরোধ করবে এবং প্রত্যেক ঘাঁটিতে তাদের জন্য ওঁৎ পেতে থাকবে। কিন্তু যদি তারা তওবা করে, সলাত কায়েম করে ও যাকাত দেয় তবে তাদের পথ ছেড়ে দিবে; নিশ্চয়ই আল্লাহ্ অতিশয় ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।”
এই ধরনের ইবাদতকে সন্ত্রাসবাদ বা জঙ্গীবাদ এবং এর অনুসারীদের সন্ত্রাসী, জঙ্গী, উগ্রপন্থী, মিলিশিয়া ইত্যাদি নাম দিয়ে কাফিররা এর বিরূদ্ধে লড়ছে। আর মুনাফিকরা তাদেরকে নিম্মোক্তভাবে সাহায্য করে আসছে-
১) তারা বলে যে, জিহাদ কেবলই আত্মরক্ষামূলক এবং আক্রমণাত্মক নয়।
২) জিহাদ কেবলই একটি মুসলিম অঞ্চল বা রাষ্ট্রকে মুক্ত করার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
৩) জিহাদ কেবল মাত্র ইমামের অনুমতি ও নির্দেশ অনুযায়ী করা যাবে।
৪) জিহাদ বর্তমান বিশ্বব্যাপী শান্তির সময়ের জন্য প্রযোজ্য নয়।
দুঃখজনকভাবে, আমাদের আলিমগণ জিহাদ সম্পর্কিত এ সমস্ত ভুল তথ্যাবলী প্রচার করছে। আমরা পশ্চিমা মত অনুযায়ী জিহাদের ব্যাখ্যা কেন করব, যেখানে রসূল ﷺ-এর হাতে গড়া সাহাবাদের থেকে আমরা জিহাদ বুঝতে পারি? আমাদের পূর্ববর্তী সালাফগণ আমাদেরকে জিহাদ মানে কি তার শিক্ষা দিয়েছেন, তাই এ বিষয়ের উপরে কোন অমুসলিম অথবা তথাকথিত মুসলিম পুতুল সরকারের উপদেশ বাণী আমাদের দরকার নেই।
কিয়ামত পর্যন্ত জিহাদ চলবে- এ ব্যাপারে প্রাথমিক দলিল সমূহঃ
কিয়ামত না আসা পর্যন্ত জিহাদ বন্ধ হবে না- আল্লাহ্ ও তাঁর রসূল আমাদের এটা জানিয়ে দিয়েছেন। এর প্রমাণ কী?
আল্লাহ্ বলেনঃ
﴿يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آَمَنُوا مَنْ يَرْتَدَّ مِنْكُمْ عَنْ دِينِهِ فَسَوْفَ يَأْتِي اللَّهُ بِقَوْمٍ يُحِبُّهُمْ وَيُحِبُّونَهُ أَذِلَّةٍ عَلَى الْمُؤْمِنِينَ أَعِزَّةٍ عَلَى الْكَافِرِينَ يُجَاهِدُونَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَلَا يَخَافُونَ لَوْمَةَ لَائِمٍ ذَلِكَ فَضْلُ اللَّهِ يُؤْتِيهِ مَنْ يَشَاءُ وَاللَّهُ وَاسِعٌ عَلِيمٌ﴾
“হে মুমিনগণ, তোমাদের মধ্যে যে স্বীয় ধর্ম থেকে ফিরে যাবে, অচিরে আল্লাহ্ এমন সম্প্রদায় সৃষ্টি করবেন, যাদেরকে তিনি ভালবাসবেন এবং তারা তাঁকে ভালবাসবে। তারা মুসলমানদের প্রতি বিনয়-নম্র হবে এবং কাফেরদের প্রতি কঠোর হবে। তারা আল্লাহর পথে জিহাদ করবে এবং কোন তিরস্কারকারীর তিরস্কারে ভীত হবে না। এটি আল্লাহর অনুগ্রহ-তিনি যাকে ইচ্ছা দান করেন। আল্লাহ্ প্রাচুর্য দানকারী, মহাজ্ঞানী।”
এ আয়াতে একটি ব্যাপার উল্লেখ করা হয়েছে, সেটা হচ্ছে ‘সুন্নাহ রব্বানিয়্যাহ’। এটা হচ্ছে আল্লাহর একটি সুন্নাহ যা চিরস্থায়ী। আর এখানে সেই চিরস্থায়ীটি হচ্ছে ‘প্রতিস্থাপন’ সংক্রান্ত। যারাই তাদের দায়িত্ব পরিত্যাগ করবে, আল্লাহ্ তাদের প্রতিস্থাপন করবেন, তারা যেই হোক না কেন। মনে রাখবেন, এই আয়াতটি সাহাবাদের উদ্দেশ্যে নাযিল হয়েছিল। এ থেকে স্পষ্ট হয় যে, আল্লাহ কারও সাথে কোন বিশেষ সম্পর্ক স্থাপন করেন না। ইহুদীরা ভেবে নিয়েছিল যে তারা আল্লাহর ‘মনোনীত দল’ এবং এরপর তারা তাদের দায়িত্ব পালনে অস্বীকৃতি জানালে আল্লাহ্ তাদের অভিশপ্ত জাতিতে পরিণত করেন।
অনেক ইসলামি জামা’আত বলে থাকে যে তাদের জামা’আত ২০-৩০ বছর ধরে টিকে রয়েছে। অতএব, তারাই সরল সঠিক পথের উপর রয়েছে। এটা মোটেও ঠিক নয়। যেই মূহুর্তে আপনি আপনার উপর অর্পিত দায়িত্ব পরিত্যাগ করবেন, আল্লাহ্ আপনাকে প্রতিস্থাপন করবেন। শেষে যে কাজটি আপনি করেছেন বা করবেন সেটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যদি সেই কাজের উপর মৃত্যুবরণ করেন, ভাল বা মন্দ যাই হোক না কেন, তাই বিচার দিবসে আপনার অবস্থার ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। পাপ করা অবস্থায় মৃত্যু ইসলামে অত্যন্ত নিন্দনীয়।
অনেক মানুষই একটি প্রশ্ন করে যে, চারদিকে এত ইসলামী দল, আমরা কোন্টাতে যোগ দিব? আমরা যদি ঠিক জায়গায় দেখি, তাহলে আর বিভ্রান্ত হব না, বরং আমাদের উত্তর খুঁজে পাব। রসূল ﷺ আমাদের আত-তায়ীফা আল-মানসূরাহ (বিজয়ী দল) সম্বন্ধে বলেছেন। তিনি শুধু আমাদের এটুকুই বলেননি যে তারা বিজয়ী, বরং তিনি এই বিজয়ী দলের বৈশিষ্ট্যগুলোও বলে দিয়েছেন। যে কেউ এই বৈশিষ্ট্যগুলো শুনবে সে আর উপরোক্ত প্রশ্নটি করবেন না। কুরআনে বর্ণিত বৈশিষ্টগুলো দিয়েই শুরু করা যাক। (সূরা মায়িদাঃ ৫৪) নং আয়াতে আল্লাহ্ তোমাদের স্থলাভিষিক্ত বা প্রতিস্থাপন করবেন তাদের দ্বারাঃ-
১) ‘আল্লাহ্ যাদের ভালবাসেন’
২) ‘তারা আল্লাহকে ভালবাসবে’
এই দুইটি বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে আমরা কখনই হয়ত জানতে পারব না, কারণ এগুলো সবই আমাদের কাছে অদৃশ্য। কিন্তু যদি কেউ তাদের দায়িত্ব কর্তব্য সম্পন্ন করে, তবে তারাই সেই সব ব্যক্তি যাদের আল্লাহ্ ভালবাসেন এবং তারাও আল্লাহ্কে ভালবাসে।
৩) ‘তারা মু’মিনদের প্রতি বিনয়ী হবে’
এর অর্থ তারা মু’মিনদের ভালবাসে, তাদের জন্য উদ্ধিগ্ন। মুসলিমদের ঘটনাগুলো নিয়ে তাঁরা উদ্ধিগ্ন হবে। সমগ্র পৃথিবীর মুসলিমদের সাথে কি ঘটছে, সেই খবর তারা রাখে। পৃথিবীর যেকোন জায়গায় যে মুসলিমই থাকুক, সে তাদেরই ভাই, তাদেরই বোন। যদি পশ্চিমে বসবাসকারী কোন মুসলিম শুনে যে পূর্বের কোন মুসলিম ভাইকে হত্যা করা হয়েছে, তাকে রক্ষা করা তারই দায়িত্ব বলে মনে করে। এই ভাইয়েরা, যখন শুনে যে তাদের ভাই-বোনদের সাথে খারাপ কিছু হচ্ছে, তখন তারা তাদের ডাকে সাড়া দেয় এবং সত্যিই সেখানে যায়। তারা মু’মিনদের রক্ষা করতে নিজের জীবন দিয়ে দিতে রাজী। নিজেদের টাকা-পয়সা ও সম্পত্তি খরচ করে তাদের ভাইদের, ঈমানদারদের রক্ষা করতে তারা রাজী। অপরদিকে, আমরা দেখি যে, এমন অনেক মুসলিম আছে, যারা অন্য মুসলিমদের ব্যাপারে ভীষণ সমালোচনাকারী। আপনারা দেখবেন যে, তারা কুফ্ফারদের সাথে একই কাতারে দাড়াতে ইচ্ছুক এবং মুসলিমদের উপর গুপ্তচরগিরি ও তাদের বিরূদ্ধে যুদ্ধ করতে আগ্রহী।
৪) ‘তারা কুফ্ফারদের প্রতি কর্কশ রূঢ়’
তারা কুফফারদের প্রতি কর্কশ রূঢ়। তারাই কুফফারদের অত্যাচারের বিরূদ্ধে রুখে দাঁড়াতে ইচ্ছুক। তারাই সেই দল যারা কুফফারদের সন্ত্রস্ত ও আতঙ্কগ্রস্ত করতে চায়, যেমন আল্লাহ্ বলেছেনঃ “তোমরা কাফিরদের মোকাবিলা করার জন্য যথাসাধ্য শক্তি ও সদাসজ্জিত অশ্ববাহিনী প্রস্তুত রাখবে যদ্দারা আল্লাহর শত্রু ও তোমাদের শত্রুদেরকে ভীত সন্ত্রস্ত করবে ...।”
অপর দিকে, এমন মুসলিম দেখা যায় যারা অন্য মুসলিমদের প্রতি অত্যন্ত সমালোচনাকারী কিন্তু কুফ্ফারদের প্রতি ভীষণ নম্র। তারা এ ব্যাপারে দাওয়ার যুক্তি দেখায়। কিন্তু ব্যাপারটা মোটেও তা নয়। তারা ওদেরকে ঠিক করে বলছে না ইসলাম আসলে কি। তারা ইসলাম সম্বন্ধে ওদেরকে ভুল ধারণা দিচ্ছে।
৫) ‘তারা আল্লাহর পথে য্দ্ধু করে’
বর্তমান সময়ে কারা আল্লাহর পথে য্দ্ধু করছে- এটা বের করা কঠিন কিছু নয়।
৬) ‘তারা অপবাদকারীদের মিথ্যারোপে ভীত নয়’
মুনাফিকরা তাদের দোষারোপ করবে। আর স্বাভাবিকভাবেই কুফ্ফাররা তাদের বিরূদ্ধে সংবাদপত্র, টেলিভিশন, রেডিও ইত্যাদিতে অপপ্রচার চালাবে। সবচেয়ে বিখ্যাত সংবাদ মাধ্যম, সংবাদপত্র তাদের ব্যাপারে কি বলল এ ব্যাপারে তারা সম্পূর্ণ উদাসীন। যতক্ষণ পর্যন্ত আল্লাহ্ তাদের কাজে সন্তুষ্ট, আর কোন কিছুতেই তাদের কিছু যায় আসে না।
সা’দ বিন মু’য়ায (রাযিঃ) জাহিলিয়্যার যুগে বানু কুরাইদার মিত্র ছিল। উনি যখন মুসলিম হলেন, সাথে সাথে এই সম্পর্ক ছিন্ন করলেন, কেননা ইসলামের দাবী অনুসারে এখন তার আনুগত্য কেবলমাত্র আল্লাহ্, তাঁর রসূল ও মু’মিনদের প্রতি। পরে যখন বানু কুরায়দা আত্মসমর্পন করে তারা সা’দ বিন মুয়ায (রাযিঃ) -এর নির্দেশ মেনে নিতে সম্মত হয়, যেহেতু জাহিলিয়্যার যুগে সে তাদের মিত্র ছিল। আল আওস গোত্র সা’দ (রাযিঃ) -কে তার বিচারে দয়া প্রদর্শন করতে বলল। সা’দ (রাযিঃ) বললঃ “সা'দের জন্য এটাই সময় আল্লাহর জন্য নিন্দুকের নিন্দা ভয় না করার।” একথা শোনার সাথে সাথে তারা বুঝে গেল যে, তাদের পূর্বের মিত্রতা শেষ! সা'দ (রাযিঃ) ইহুদীদের জিজ্ঞাসা করল যে, ‘তার বিচার মেনে নিতে তারা একমত কিনা’, তারা বলল, ‘হ্যাঁ’। একইভাবে, ‘সে মুসলিমদেরকে-ও একই প্রশ্ন করল যে, তার সিদ্ধান্ত তারা মেনে নিবে কিনা’। তারাও ‘হ্যাঁ’ সূচক উত্তর দিল। সা’দ (রাযিঃ)বললঃ “আমার সিদ্ধান্ত এটাই যে- সমস্ত পুরুষদের হত্যা করা হবে এবং তাদের মহিলা ও শিশুরা মুসলিমদের অধিকৃত হবে।” রসূল ﷺ বললেনঃ “তোমার রায় আর সাত আসমানের উপর থেকে আল্লাহর রায় একই।” সে দিন ৯০০ জন ইহুদীকে হত্যা করা হয়েছিল। কেন এমন করা হয়েছিল? কারণ তারা বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল।
এখন আসুন, আত-তায়ীফা আল-মানসূরা’র বৈশিষ্ট্য সমূহের প্রতি আমরা লক্ষ্য করি, যা বিভিন্ন হাদীসে বর্ণিত হয়েছেঃ-
- তারা আল্লাহর পথে জিহাদ করে।
- তারা জামা‘আহ বদ্ধ হয়ে একত্রে কাজ করে।
- যে কেউ তাদের সাথে দ্বিমত পোষণ করে অথবা তাদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে- যে যাই বলুক, সে মুসলিম হোক আর অমুসলিম হোক, কিছুই তাদের কোন ক্ষতি করতে পারে না।
বাস্তবে তারা সংখ্যায় বৃদ্ধিই পাচ্ছে। রামসফেল্ড তার গোপন ডায়রীতে বলেছিল যে, আমেরিকা বহু জঙ্গী ধরেছে, হত্যা করেছে, কিন্তু তারপরও ওদের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। এর কারণ তোমরা আত-তায়ীফা আল-মানসূরার সাথে যুদ্ধ করছ, যাদেরকে আল্লাহ্ স্বয়ং রক্ষা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তারা যতই থামাক বা গ্রেফতার করুক না কেন, জিহাদ চলবেই ইনশাল্লাহ্।
লেখক কেন এই আয়াত (সূরা আল-মায়িদাঃ ৫৪) উল্লেখ করলেন সে দিকে ফিরে যাই। উনি উল্লেখ করেছেন যে আয়াতে আছে “يُجَاهِدُونَ ” যার অর্থ “তারা জিহাদ করছে”- এটা বর্তমান কালের ক্রিয়া। অন্যভাবে বলতে গেলে, যে কোন সময়ে আপনি এই আয়াত তিলাওয়াত করবেন, কোথাও না কোথাও, কেউ না কেউ জিহাদ ফী সাবিলিল্লাহ্ করতে থাকবে। এটি একটি নিদর্শন বা ইঙ্গিত যে কিয়ামত পর্যন্ত জিহাদ চলতে থাকবে।
আল্লাহ্ যিনি অসীম দয়ালূ তিনি বলেনঃ
﴿ وَقَاتِلُوهُمْ حَتَّى لَا تَكُونَ فِتْنَةٌ وَيَكُونَ الدِّينُ لِلَّهِ فَإِنِ انْتَهَوْا فَلَا عُدْوَانَ إِلَّا عَلَى الظَّالِمِينَ ﴾
“ফিত্না দূরীভূত হয়ে আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত তোমরা তাদের সাথে যুদ্ধ কর, অতঃপর যদি তারা নিবৃত্ত হয়, তাহলে অত্যাচারীদের উপর ব্যতীত শত্রুতা নেই।”
এই আয়াতে ফিত্না অর্থ কুফর। অর্থাৎ এই আয়াত বলছে যে, যুদ্ধ কর যতক্ষণ পর্যন্ত না কুফর (অবিশ্বাস) দূরীভূত হয়। আর রসূল ﷺ এর হাদীস সমূহ থেকে আমরা জানতে পারি যে, কিয়ামত পর্যন্ত কুফর (অবিশ্বাস) থাকবে। আর যেহেতু আমাদেরকে পৃথিবী থেকে কুফর দূরীভূত না হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যেতে বলা হয়েছে, অতএব জিহাদও চলবে।
এখানে উল্লেখ্য যে, জিহাদ শেষ হবে যখন ঈসা এই পৃথিবী শাসন করবেন। এর কারণ কি? কেননা, ঈসা কুফরের বিরূদ্ধে যুদ্ধ করবেন এবং এরপর আর কোন কুফর থাকবেনা। ঈসা -এর মৃত্যুর পর আর কোন জিহাদ হবে না, কারণ আল্লাহ্ ঈমানদারদের জান নিয়ে নিবেন এবং দুনিয়াতে কেবল কুফ্ফাররাই অবশিষ্ট থাকবে শেষ সময় অতিবাহিত করার জন্য। আরও উল্লেখ্য যে, ইয়াজুজ ও মাজুজের বিরূদ্ধে কোন জিহাদ হবে না, কারণ ওদের বিরূদ্ধে জিহাদের সামর্থ্যই নেই। তারা অলৌকিকভাবে ধ্বংস প্রাপ্ত হবে।
আরও পড়ুন
Comment