Announcement

Collapse
No announcement yet.

পাঠচক্র- ০৬ || জিহাদের পথে স্থায়ী ও অবিচল বিষয় সমূহ || - শাইখ ইউসূফ আল উয়াইরি [এর উপরে লেকচার দিয়েছেন ইমাম আনোয়ার আল-আওলাকি (রহিমাহুল্লাহ)] || ১২তম পর্ব

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • পাঠচক্র- ০৬ || জিহাদের পথে স্থায়ী ও অবিচল বিষয় সমূহ || - শাইখ ইউসূফ আল উয়াইরি [এর উপরে লেকচার দিয়েছেন ইমাম আনোয়ার আল-আওলাকি (রহিমাহুল্লাহ)] || ১২তম পর্ব

    আল-ক্বাদিসিয়াহ মিডিয়া
    কর্তৃক পরিবেশিত
    জিহাদের পথে স্থায়ী ও অবিচল বিষয় সমূহ
    -শাইখ ইউসূফ আল উয়াইরি
    [এর উপরে লেকচার দিয়েছেন ইমাম আনোয়ার আল-আওলাকি (রহিমাহুল্লাহ)||
    এর থেকে
    ২তম পর্ব

    ==================================================
    ===============================
    ইসলামে বিজয়ের ১১ টি অর্থ রয়েছেঃ




    বিজয়ের নবম অর্থঃ কাফিরদের জন্য দারিদ্রতা

    বিজয়ের আরেকটি রূপ হল, কাফিরদের জন্য কুফরের উপর অধিষ্ঠিত মৃত্যু এবং দরিদ্রতা, তার একটি কারণ হচ্ছে জিহাদ। এটা তাদের সঠিক পথ প্রাপ্ত হওয়ার ক্ষেত্রে বাধা দেয়। এটা বিজয়ের একটি রূপ। আল্লাহ্ ও তাঁর মুজাহিদীনের বিপক্ষে যুদ্ধ করার মাধ্যমে কুফ্ফাররা তাদের কুফরীতে দৃঢ় হয় এবং গভীরভাবে কুফরীতে লিপ্ত হয়, যতক্ষণ না তারা কাফির অবস্থায় মৃত্যু বরণ করে। যখন তারা দেখে মুজাহিদীনরা যুদ্ধ করছে এবং জয়লাভ করছে, তারা হিংস্র হয়ে ওঠে এবং এটা তাদের যুদ্ধ করার এবং কুফরীর উপর মৃত্যু বরণ স্পৃহাকে মজবুত করে। আল্লাহ  সুরা ইউনুস-এ বলেন, মুসা  আরয করলেন,
    ﴿ وَقَالَ مُوسَى رَبَّنَا إِنَّكَ آَتَيْتَ فِرْعَوْنَ وَمَلَأَهُ زِينَةً وَأَمْوَالًا فِي الْحَيَاةِ الدُّنْيَا ...



    মুসা  বলল, হে আমাদের রব! তুমি তো ফিরআওন ও তার পরিষদবর্গকে পার্থিব জীবনে শোভা ও সম্পদ দান করেছো....।”

    এর মাধ্যমে আমরা শিক্ষা লাভ করতে পারি যে, আল্লাহর নৈকট্যের ক্ষেত্রে সম্পদ কোন চিহৃ নয়। অনেক আম্বিয়া ছিল যারা অত্যন্ত দরিদ্র ছিল এবং অনেক কুফফার আছে যারা মাত্রাতিরিক্ত ধনী।

    দুর্ভাগ্যবশত, কে আল্লাহর অধিক নিকটবর্তী, তা মুসলিমরা সম্পদশালী হওয়ার উপর ভিত্তি করে নিরূপন করে। কিন্তু এটা বলা উচিত নয় যে, “আল-হামদুলিল্লাহ্ ! আল্লাহ্ আমাকে এসব সম্পদ দিয়েছেন, এটা একটি নিদর্শন যে আমি ভাল মুসলিম।” অনুরূপ কোন ব্যক্তি দরিদ্র এবং বলে “আমি নিশ্চয়ই অনেক পাপ করেছি আর এজন্যই আমি দরিদ্র।” তুমি কতখানি ভাল মুসলিম তার উপর সম্পদের কোন ভূমিকা নেই। সম্পদ এমন জিনিস যা তোমাকে কোন ভাল বা খারাপ দিকে পরিচালিত করবে, যা নির্ভর করে, তুমি কিভাবে তা ব্যবহার করছ তার উপর। মুসা  বলেনঃ
    ﴿... رَبَّنَا لِيُضِلُّوا عَنْ سَبِيلِكَ ...



    “... হে আমাদের রব! যেই কারণ আপনার পথ হতে বিভ্রান্ত করে (মানবমন্ডলীকে)।”

    অন্যকথায়, তার এসব সম্পদ ও ক্ষমতা মানুষকে বিভ্রান্ত করতে ব্যবহার করে। সুতরাং তাঁর দু’আ ছিলঃ-
    ﴿... رَبَّنَا اطْمِسْ عَلَى أَمْوَالِهِمْ وَاشْدُدْ عَلَى قُلُوبِهِمْ فَلَا يُؤْمِنُوا حَتَّى يَرَوُا الْعَذَابَ الْأَلِيمَ ﴾



    হে আমাদের রব! তাদের সম্পদগুলোকে নিশ্চিহ্ন করে দিন এবং তাদের অন্তরসমুহকে কঠিন করে দিন, যাতে তারা ঈমান আনতে না পারে এবং যতক্ষণ না তারা যন্ত্রণাময় আযাবকে দেখতে পারে।”

    মুসা  তাদের পথপ্রাপ্তির জন্য দো‘আ করছেন না। তিনি এ জন্য দো‘আ করছেন যাতে তারা পথভ্রষ্ট হয়। মুসা  বলছেন, “হে আল্লাহ্ ! তাদেরকে বিশ্বাসীতে পরিণত করোনা, যতক্ষণ পর্যন্ত না খুব দেরী হয়ে যায়।” মুসা  ফিরাউনের কুফরের কারণে অত্যন্ত হতাশ ছিলেন। তিনি চাননি যে, ফিরআউন বিশ্বাস স্থাপনের কোন সুযোগ পাক। ফিরআউন শেষ পর্যন্ত ইসলাম গ্রহণ করার দাবী করেছিল কিন্তু তা কবুল করা হয়নি, কারণ তার আত্মা তখন দেহ হতে বেরিয়ে যাচ্ছিল। সুতরাং আল্লাহ্ পুংখানুপুঙ্খরূপে মুসা  এর দো‘আ গ্রহণ করলেন। যখন ফিরাউন আল্লাহর শাস্তি অবলোকন করল তখন সে বলল, “ ...আমি ঈমান আনলাম, যে মাবুদের উপর বনী ইসরাঈল ঈমান এনেছে, তিনি ছাড়া দ্বিতীয় কোন মাবুদ নেই, আমিও (তাঁর) অনুগতদের একজন।” কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরী হয়ে গিয়েছে।

    জিব্রাইল  মুহাম্মদ এর কাছে আসলেন এবং তাঁকে বললেন, যখন ফিরাউন ডুবে যাচ্ছিল “জিব্রাইল তার মুখে মাটি ছুড়ে মারছিল, যাতে আল্লাহ্ ফিরাউনের উপর কোনরূপ দয়া না করেন। জিব্রাইল  পর্যন্ত চাননি ফিরাউন মুসলিম হোক। তিনি চেয়েছিলেন সে কাফির অবস্থায় মারা যাক, তিনি তাকে কোন ভাবে জান্নাতের যোগ্য মনে করেননি।”

    এটা একটি বিজয়। কারণ, মুসলিমরা শত্রুদের উপর আল্লাহর প্রদত্ত শাস্তি দেখে খুশি হয়। পরিশেষে, ঈমানদাররা তাদের মত হবে যারা মুচকি হাসবে, অন্যদিকে ফিরাউনের মত লোকরা ভীষণ আযাবের মধ্য দিয়ে যাবে। কাজেই, কুফর, স্বেচ্ছাচারিতা, শয়তানী কর্মকান্ড এবং কুফ্ফারদের দাবীসমূহ যা তারা নিজেদের রক্ষা করতে ব্যবহার করে যেমন- স্বাধীনতা, সভ্যতা এবং সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ- এসবই তাদের মৃত্যুর সাথে সাথে শেষ হয়ে যাবে, যা তাদের নিকট রয়েছে। তাদের জীবনের যে অংশ অবশিষ্ট রয়েছে, তা যা ইতিমধ্যে অতিক্রান্ত হয়ে গিয়েছে তা হতে কম। সেদিন অবশ্যই আসবে যখন ঈমানদাররা জান্নাতে অবস্থান করবে এবং কাফিরদেরকে জাহান্নামের আগুনের তীব্র শাস্তির সম্মুখীন হতে দেখবে।

    ইহুদীদের বিরুদ্ধে রসূলুল্লাহ্ এর জিহাদ সমূহ তাদের কুফরের উপর মৃত্যু বরণ করা এবং শেষ মূহুর্ত পর্যন্ত কুফরের উপর জেদ করে অবস্থান করার কারণ।

    বিজয়ের দশম অর্থঃ আল্লাহ্ শাহাদাত দান করে

    আল্লাহ্ তোমাদের মধ্য থেকে শুহাদা বেছে নিবেন। আল্লাহু রাহমানির রাহীম বলেনঃ

    ﴿ إِنْ يَمْسَسْكُمْ قَرْحٌ فَقَدْ مَسَّ الْقَوْمَ قَرْحٌ مِثْلُهُ وَتِلْكَ الْأَيَّامُ نُدَاوِلُهَا بَيْنَ النَّاسِ وَلِيَعْلَمَ اللَّهُ الَّذِينَ آَمَنُوا وَيَتَّخِذَ مِنْكُمْ شُهَدَاءَ وَاللَّهُ لَا يُحِبُّ الظَّالِمِينَ



    যদি তোমাদের আঘাত লেগে থাকে, অনুরূপ আঘাত তো তাদেরও লেগেছে। মানুষের মধ্যে এই দিনগুলির পর্যায়ক্রমে আমি আবর্তন ঘটাই, যাতে আল্লাহ্ মু’মিনগণকে জানতে পারেন এবং তোমাদের মধ্য হতে কতককে শহীদরূপে গ্রহণ করতে পারেন এবং আল্লাহ্ যালিমগণকে পছন্দ করেন না।”

    অন্যকথায়, আল্লাহ্ বেছে নেন আমাদের মধ্যে কারা শহীদ হবে। এটাই বিজয়। শাহাদাহ এমন জিনিস যা প্রত্যেক মুজাহিদ আশা করে। যখন কুফ্ফাররা তোমাকে আল্লাহর রাস্তায় মরতে দেখবে তারা ভাববে, এটা তাদের বিজয় কিন্তু সত্যিকার অর্থে তুমিই জয়ী। কুফ্ফাররা তোমাকে জান্নাতে যাওয়ার জন্য বিনামূল্যে একটি প্রবেশপত্র দিয়েছে। তাদের দুঃখের কথা ভাব, যখন তারা তোমাকে শেষ বিচারের দিন দেখবে, তারা বলবে, “আমাদের শত্রুদের দেখ! আমরা তাকে জান্নাতের চাবি দিয়েছি।”

    রসূলুল্লাহ্ নিজে শহীদ হিসেবে মৃত্যুবরণ করতে চেয়েছেন এবং তিনবার বলেছেন, “আমি যদি ফী সাবিলিল্লাহ্ যুদ্ধ করতে পারতাম, অতঃপর নিহত হতাম এবং পুনরুত্থিত হতে পারতাম।” তিনি তিনবার শহীদ হিসেবে মৃত্যুবরণ করতে চেয়েছেন। আল্লাহ্ মহামহিম বলেনঃ
    ﴿ وَلَا تَحْسَبَنَّ الَّذِينَ قُتِلُوا فِي سَبِيلِ اللَّهِ أَمْوَاتًا بَلْ أَحْيَاءٌ عِنْدَ رَبِّهِمْ يُرْزَقُونَ



    যারা আল্লাহর পথে নিহত হয়েছে তাদেরকে কখনই মৃত মনে কর না, বরং তারা জীবিত এবং তাদের রবের নিকট হতে তারা জীবিকা প্রাপ্ত।”

    যখন কুফ্ফার তোমাকে হত্যা করে, সে আল্লাহর ইচ্ছায় তোমাকে অনন্ত জীবন দান করে । মহান আল্লাহ্  বলেনঃ
    ﴿ وَلَا تَقُولُوا لِمَنْ يُقْتَلُ فِي سَبِيلِ اللَّهِ أَمْوَاتٌ بَلْ أَحْيَاءٌ وَلَكِنْ لَا تَشْعُرُونَ



    আল্লাহর পথে যারা নিহত হয় তাদেরকে তোমরা মৃত বলবে না, বরং তারা জীবিত; কিন্তু তোমরা উপলব্ধি করতে পারো না।”

    সহীহ্ বুখারী এবং মুসলিম-এ একটি কাহিনী উল্লেখ রয়েছে যা আনাস ইবনে মালিক (রাযিঃ) বর্ণনা করেছেন, রসূলুল্লাহ্ কিছু সংখ্যক সাহাবাকে একটি অভিযানে প্রেরণ করেন এবং তাদেরকে ইসলাম সম্পর্কে বলতে বলেন, আনাস ইবনে মালিকের মামা হারাম বিন মিলহান (রাযিঃ) কথা বলছিলেন এবং এমতাবস্থায় পশ্চাতে বর্শা বিদ্ধ হন, বর্শা তার বুক দিয়ে বেড়িয়ে এসেছিল। তিনি তাঁর হাত রক্তে ভেজালেন এবং তাঁর রক্ত হাতে এবং মুখে মুছে নিলেন এবং বললেনঃ “কাবার রবের কসম! আমি সফলকাম হয়েছি।” যে লোকটি তাঁকে বর্শাবিদ্ধ করেছিল, জানত না এই ব্যক্তি কি বিষয়ে বলছে। সে এতই বিস্মিত হল যে, চতুর্দিকের মুসলিমদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে বেড়িয়ে পড়ল, যাতে তারা তাকে ব্যাখ্যা করে যে কি ঘটেছে। তারা তাকে বলল, ‘এটা শাহাদাহ’। তিনি জান্নাতে অবস্থান করছেন এবং তা উপভোগ করছেন। যখন এ জাতীয় ঘটনা অন্য কোন ব্যক্তির বেলায় ঘটে যে ইসলামের পরোয়া করেনা, তখন তারা কাঁদতে শুরু করে, আর্তনাদ করতে থাকে এবং মানুষকে বলে যেন তাকে হাসপাতালে নেয়া হয় ইত্যাদি। যে লোকটি তাঁকে হত্যা করেছিল সব ঘটনা শোনার পর সে মুসলিম হয়ে যায়।

    সুবহানাল্লাহ্! হারাম বিন মিলহান (রাযিঃ) নিজ হন্তাকারীর মুসলিম হওয়ার কারণ হয়ে যান।

    ফিদায়ী হামলার ক্ষেত্রে, যখন কোন মুসলিমের দুনিয়ার দৃষ্টিকোণ থেকে সাফল্যের সুযোগ রয়েছে, অথচ শহীদ হওয়ার জন্য সে খুঁজে ফেরে। এটা কাফিরদের তত্ত্ব (Theory) পুরোপুরিভাবে ধ্বংস করে এবং কাফেরদেরকে সত্যিকার কারণের প্রতি দৃষ্টি দানের জন্য বাধ্য করে যে, কি কারণে কতিপয় ব্যক্তি নিজ নিজ জীবন বিসর্জন দেয়।

    বিজয়ের একাদশ অর্থঃ যুদ্ধ ক্ষেত্রে বিজয়।

    এই সেই বিজয় যা রসূলুল্লাহ্ শেষ পর্যন্ত অর্জন করেছিলেন। যখন তিনি মারা গেলেন, তিনি তাঁর চেষ্টার ফল দেখতে পেলেন এবং একই সাথে তার কর্তব্যের ফলাফল পেলেন। আল্লাহ্  বলেনঃ

    যখন আল্লাহর সাহায্য ও বিজয় আসবে এবং তুমি মানুষকে দলে দলে আল্লাহর দ্বীনে প্রবেশ করতে দেখবে, তখন তোমার রবের প্রশংসাসহ তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা প্রার্থনা করবে, তিনি তো তওবা কবুলকারী।”

    ১১টা রূপ ছাড়াও বিজয়ের আরও রূপ আছে। আল্লাহ্  বলেনঃ

    “... মু’মিনদেরকে সাহায্য করা আমার দায়িত্ব।”

    আমরা এখন বিজয়ের ১১টি বিভিন্ন রূপের পরিচয় পেয়েছি, আমরা পরিষ্কারভাবে দেখি যে, মুজাহিদরা বিজয় অর্জন করেছে। একইভাবে, যেসব নবীগণের কোন অনুসারী ছিলনা, তাঁরাও বিজয় লাভ করেছেন। একজন মুসলিম যে সর্বদা দৃঢ়পদ জয়লাভ করে এবং কখনও হেরে যায় না। প্রত্যেক মুসলিমেরই দৃঢ়তার প্রয়োজন রয়েছে।

    নিশ্চয়ই, এই উম্মাহ পরিশেষে যুদ্ধক্ষেত্রে বিজয় অর্জন করবে এবং এই পুরো পৃথিবীর দায়িত্ব নিবে। এ ব্যাপারে অনেক হাদীস রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ- রসূলুল্লাহ্ বলেছেন, “এই ব্যাপার (ইসলাম) যেসব স্থানে রাত এবং দিন পৌছে সেসব স্থানে পৌছে যাবে” এর অর্থ পুরো গ্রহ। রাত ও দিন পুরো পৃথিবীতে পৌছে। তিনি আরও বলেন, “ইসলাম প্রতি গৃহে, শহরে, জেলায় এবং গ্রামে পৌছাবে।” এই দু’ হাদীস ইসলামের দাওয়াহ্কেও নির্দেশ করে। এটা সবখানে পৌছে যাবে। তিনি আরও বলেছেন, “নিশ্চয়ই আল্লাহ্ আমাকে পুরো পৃথিবী দেখিয়েছেন এবং আমাকে বলেছেন যে, আমার জাতির রাজত্ব এর পুরো অংশে পৌছে যাবে।” এ হাদীস ইসলামিক খেলাফতের দিকে নির্দেশ করে। একদা রসূলুল্লাহ্ -কে জিজ্ঞাসা করা হয়, “কোন শহর আগে বিজয়লব্ধ হবে কন্সট্যান্টিনেপল না রোম?” তিনি বলেন, “প্রথমে কন্সট্যান্টিনেপল বিজয়লব্ধ হবে।” এ হাদীস থেকে দেখা যায় যে, পর্যায়ক্রমে পরবর্তীটি বিজয়লব্ধ হবে। ইমাম আল-মাহদীর উপর একটি হাদীসে যুদ্ধক্ষেত্রের বিজয়কে বুঝানো হয়েছে। শুধুমাত্র এ বিষয় আরও অনেক হাদীস রয়েছে। তিনি পুরো পৃথিবী ৭ বছরে দখল করবেন।

    পর্যায়ক্রমে উম্মাহ জয়ী হবে। এর সাথে সাথে, আমাদের এসব হাদীসের উপর নির্ভর করে বসে থাকলে চলবে না এবং এই কথা বললে চলবে না যে, আল্লাহ্ই তাঁর দ্বীনকে বিজয়ী করবেন সুতরাং আমাদের জন্য কিছু না করাই যৌক্তিক। না, বরং তোমার এতে একটি অংশ থাকতে হবে। উম্মাহর বিজয় দিয়ে কি হবে, যদি তুমি কিছু না কর? ফলে তুমি কোন আযরই প্রাপ্ত হলে না? আমাদের সকলকে ইসলামের এ বিজয় ফিরিয়ে আনতে যার যার ভূমিকায় কাজ করতে হবে। এর জন্য প্রচুর আজর দেয়া হবে এবং আমাদের এতে অংশ নেয়া উচিত।

    সারসংক্ষেপঃ

    চলুন বিজয়ের ১১টি প্রয়োগকে পুনঃআলোচনা করা যাক-

    ১. সূরা আত-তাওবা-তে যে ৮টি প্রতিবন্ধকতার কথা উল্লেখ করা হয়েছে, তার উপর বিজয় লাভ করা।

    ২. শয়তানের বিরুদ্ধে বিজয়।

    ৩. মুজাহিদীনরা আল্লাহ্ তা‘আলার তরফ থেকে পথ প্রাপ্ত হন, কারণ তিনি তাদেরকে পথ প্রদর্শন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। যেমনটি তিনি বলেছেন, “যারা আমার উদ্দেশ্যে চেষ্টা সাধনা করে আমি তাদেরকে অবশ্যই আমার পথে পরিচালিত করব। আল্লাহ্ অবশ্যই সৎকর্ম পরায়ণদের সঙ্গে থাকেন।”

    ৪. নিরুৎসাহিতকারীদের বিরুদ্ধে বিজয়। এরা হচ্ছে সেই সকল মুনাফিক্বীন যারা পরহেজগার মুসলিম অথবা আলিমের রূপে হয়ে থাকে কিংবা ঐ সকল ইসলামীক দল যারা জিহাদের ব্যাপারে মানুষকে নিরুৎসাহিত করে থাকে

    ৫. জিহাদের পথে দৃঢ়পদ থাকা।

    ৬. আক্বীদা রক্ষা করার জন্য নিজের জান ও মালের কোরবানী দেয়া।

    ৭. মুজাহিদীনদের আদর্শের বিজয়। এক্ষেত্রে আস-হাবুল উখদুদ-এর অধিবাসীদের দৃষ্টান্ত হচ্ছে একটি উত্তম দৃষ্টান্ত।

    ৮. কারামাহ্র মাধ্যমে শত্রুকে ধ্বংস করা। পূর্বের যুগের মধ্যে এর উত্তম দৃষ্টান্ত হচ্ছে ফিরাউন ও তার বাহিনীর ধ্বংস আর বর্তমান যুগের মধ্যে এর উত্তম দৃষ্টান্ত হচ্ছে মুজাহিদীনদের হাতে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন।

    ৯. কাফিরদের জন্য কুফরের উপর অধিষ্ঠিত মৃত্যু এবং দরিদ্রতা, তার একটি কারণ হচ্ছে জিহাদ এবং মুজাহিদীন।

    ১০. আল্লাহ্ তা‘আলা ঈমানদারদের মধ্য থেকে শহীদদের বেছে নিবেন।

    ১১. যুদ্ধের ময়দানে বিজয় লাভ করা


    আরও পড়ুন
    ১১তম পর্ব ----------------------------------------------------------- ১৩তম পর্ব

    Last edited by tahsin muhammad; 10-04-2023, 05:02 PM.

  • #2
    আল্লাহ্‌ তাআলা আমাদের উনার পথে দৃঢ় থেকে শাহাদাত অর্জনের সৌভাগ্য নসিব করুন, আমীন

    Comment


    • #3
      আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে হিদায়াত দিয়েছেন, সে জন্য আমাদের শুকরিয়া আদায় করা উচিৎ, কারণ আল্লাহ আমাদেরকে পথভ্রষ্ট করলে আমাদের কিছুই করার থাকত না, তাই পথভ্রষ্ট লোকদের কল্যাণকামী , এবং তাদের প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়াই আমাদের কাম্য , রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে সাহাবায়ে কিরাম কাফেরদের বিরুদ্ধে বদদোয়া করতে বললে তিনি তাদের হিদায়েতের দোয়া করেছেন, ওহুদের যুদ্ধে আল্লাহর রাসূল যখন বললেন , কিভাবে এমন সম্প্রদায় সফল কাম হবে যারা তাদের নবীদের রক্ত ঝরিয়েছে , তখন আল্লাহ তায়ালা এর প্রেক্ষিতে কুরানের আয়াত নাজিল করলেন যে , তোমার এখানে কোন ধরনের কর্তৃত্ব নেই, এবং ইব্রাহীম খলিল আঃ বলেছিলেন, যে আমার অনুসরণ করে সে আমারি অন্তর্ভূক্ত আর যে আমার অবাধ্য হয় তাহলে প্রভু তুমি অত্যান্ত দয়ালু ক্ষমাশীল,
      হযরত ঈসা আঃ বলেছিলেন হে প্রতিপালক তুমি যদি তাদেরকে শাস্তি দাও তাহলে তো সেগুলো তোমারি বান্দা আর যদি তুমি তাদেরকে ক্ষমা কর তাহলে তো তুমি দয়ালু ক্ষমাশীল, হযরত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে যখন পাহাড়ের ফেরেস্তা এসে তায়েফ বাসিকে পাহাড় চাপা দিয়ে ধ্বংস করে দেওয়ার অনুমতি চাইছিল , তখন তিনি অনুমতি দেননি বরং তিনি বলেছিলেন আমি চাই তাদের এমন কিছু সন্তানাদি হোক যারা এক আল্লাহর ইবাদত করত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে কাফেররা মেরে রক্তাক্ত করে দিত , কিন্তু তিনি মুখ থেকে রক্ত মুছতেন এবং বলতেন হে আল্লাহ আপনি আমার সম্প্রদায়কে ক্ষমা করে দিন , কেননা তারা অবুঝ, আমাদের নবী ছিলেন দয়ার নবী , তিনি দুনিয়া আখেরাতের রহমত স্বরূপ প্রেরিত, কাফেররাও তো আমাদের নবীর উম্মত, আল্লাহর বান্দা, সুতরাং তারা জাহান্নামি হয়ে মারা গেলে এটা তাদের জন্যও বেদনা দায়ক, আল্লাহ কোন উম্মাতকে সহজে ধ্বংস করতে চান না, তারা অনেক অন্যায় করার পর এবং তাদেরকে অনেক সুযোগ দেওয়ার পর আল্লাহ ধ্বংস করেন। আল্লাহ তো দয়াশীল , তাই আল্লাহ সহজে কাউকে ধ্বংস করতে গেলে তার দয়ায় টান পড়ে । রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন , তোমার মাধ্যমে কেউ হিদায়াত পাওয়া তোমর জন্য লাল উট থেকেও বেশি উত্তম ।
      একজন মুমিন যখন ঈমান আনল এবং শরিয়তের বিধান অনুযায়ী চলল , তখন সে সর্ব অবস্থায় বিজয়ী। কিন্তু আমরা আল্লাহর রাসূলের উম্মত হয়ে তার রহমতকে ব্যাপক করে দিব। এবং তার ধরন হল যেই সকল কাফেররা আমাদেরকে সাথে যুদ্ধ করতে আসবে তাদেরকে হত্যা করে তাদের অশুভ ছায়া এই উম্মত থেকে সরিয়ে ফেলতে হবে।আর যারা যুদ্ধ করবে না তাদেরকে আমরা হত্যা করব না। তাদেরকে আমরা বাঁচিয়ে রেখে জিজিয়া আরোপের মাধ্যমে চাপ প্রয়োগ করে , এবং বুঝিয়ে ধীরে ধীরে ইসলামের পথে নিয়ে আসব। এতে করে একটা মানুষ হিদায়াত পেয়ে গেল এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের রহমত ব্যাপক হয়ে গেল এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কিয়ামতের দিন অধিক উম্মাতের কারণে ফখর করতে পারবেন।
      পৃথিবীর রঙ্গে রঙ্গিন না হয়ে পৃথিবীকে আখেরাতের রঙ্গে রাঙ্গাই।

      Comment

      Working...
      X