সরকার এখনও বুঝতে পারছে না কেন?
অনেক আগে থেকেই শুনে আসছি দাওয়াত একটি ফরিজা। দাওয়াত দিতে হবে। বুঝাতে হবে শাসকদের। বুঝিয়ে ভাল পথে আনতে হবে। মুজাদ্দিদে আলফে সানির দৃষ্টান্তও এখানে টেনে আনা হয়। জিহাদের কথা বলা হলেই এ প্রসঙ্গটা উঠিয়ে মুজাহিদদের সমালোচনা করা হয়। আমরা না’কি দাওয়াত না দিয়েই কাফের ফতোয়া দিয়ে দিচ্ছি। দাওয়াত না দিয়েই না’কি আমরা মানুষ মেরে ফেলছি।
যাহোক, দাওয়াতের নববী তরিকা কোনটা সেটার কথা যদি বাদও দিই, তাহলেও এখন প্রশ্নটা সবার মনেই দেখা দিচ্ছে, সরকার এখন বুঝছে না কেন? সারা দেশের সকল আলেম এক হয়ে সর্বসম্মতভাবে ভাস্কর্য হারাম বলছেন। মিটিং করছেন। মিছিল করছেন। সংবাদ সম্মেলন করছেন। ঐক্যবদ্ধ ফতোয়াও জারি হয়েছে। আলোচনাও হয়েছে, হচ্ছে। সব ঘরানার আলেম একমত। কিন্তু সরকারকে তো আর বুঝানো যাচ্ছে না। সরকারপক্ষ তো বরাবর বলেই আসছে, ভাস্কর্য আর মূর্তি এক নয়। মূর্তি হারাম। ভাস্কর্য জায়েয। যারা এ দুটির পার্থক্য বুঝে না তারা...। তারা কি?
# তারা মূর্খ। এরা আলেমই নয়। এরা কিসের লেখাপড়া করে?
# এরা ধর্মের মুখোশধারী।
# এরা ধর্ম ব্যবসায়ী।
# এরা মৌলবাদি।
# এরা পাকিস্তানি।
# এরা তালেবানি মোল্লাতন্ত্র।
# এরা স্বাধীনতার চেতনা বিরোধী।
# এরা দেশদ্রোহী।
# এরা সাম্প্রদায়িক।
# এরা দেশটা আফগানিস্তান বানিয়ে ফেলতে চাইছে।
# এরা নষ্ট-ভ্রষ্ট।
# এরা অপশক্তি।
# এরা একাত্তরের পরাজিত শক্তি।
# এরা উগ্রবাদি জঙ্গি ...।
এরা আরও অনেক কিছু, যেগুলো আপনারা পত্রিকার পাতা খোললেই দেখতে পাচ্ছেন।
সারা দেশের উলামা জনতা মিলেও সরকারকে বুঝাতে পারছেন না। উল্টো উলামা সমাজ বহু রকমের আলকাব আর বিশেষণে ভূষিত হচ্ছেন, যেগুলোর সবগুলো হয়তো এখন পর্যন্ত জঙ্গিরাও পায়নি।
এখন প্রশ্ন, ব্যর্থতা কার? উলামাদের দাওয়াত হচ্ছে না? আর কি করার বাকি আছে যা করলে সরকার বুঝতে পারবে?
মুহতারাম উলামায়ে কেরাম! নববী তরিকায় ফিরে আসুন। বুঝতে বেশি দিন লাগবে না। কই, মক্কায় তো রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তের বছর দাওয়াত দিলেন। নিজের ভাই, চাচা এদেরকেই তো বুঝালেন। কিন্তু বুঝতে তো পারলো না। অপরদিকে ফাতহে মক্কার দিন যখন তরবারি নিয়ে মক্কাবাসীর মাথার উপর সওয়ার হলেন, একদিনে সবাই বুঝে গেল। দু’দিনে কালিমা পড়ে মুসলমান হয়ে গেল। শুধু তাই নয়, দু’দিন পরেই তরবারি হাতে দ্বীনের নুসরতে হুনাইনে রওয়ানা হয়ে গেল। তরবারির ঝলমলানি এক নিমিষেই হক বুঝিয়ে দিল।
সিদ্দিকে আকবারের মতো হুংকার দিন: আল্লাহর কসম, একটা রশি দিতে অস্বীকার করলেও আমি এদের বিরুদ্ধে লড়াই করে যাব। আমার সাথে একজনও যদি না যায়, আমি একাই এদের বিরুদ্ধে লড়বো।
হুংকার দিন। এত দাওয়াত লাগবে না। দু’দিনেই সব বুঝে এসে যাবে। অন্যথায় বনী ইসরাইলের মতো দাওয়াতের তীহ ময়দানে শুধু উদভ্রান্ত হয়ে ঘুরতেই থাকবেন আর নতুন নতুন বিশেষণ যোগ হতে থাকবে। বুঝে আর আসবে না।
***
Comment