আন-নাসর মিডিয়া পরিবেশিত
“ধর্মীয় রাজনৈতিক দলগুলোর সমীপে দরদমাখা আহবান”|| তোমরা আল্লাহর সাহায্যকারী হও!|| প্রথম পর্ব ।। দ্বীনের প্রহরীগণ কোথায়?।। উস্তাদ উসামা মাহমুদ হাফিযাহুল্লাহ এরথেকে || প্রথম পর্ব
==================================================
=====
“ধর্মীয় রাজনৈতিক দলগুলোর সমীপে দরদমাখা আহবান”|| তোমরা আল্লাহর সাহায্যকারী হও!|| প্রথম পর্ব ।। দ্বীনের প্রহরীগণ কোথায়?।। উস্তাদ উসামা মাহমুদ হাফিযাহুল্লাহ এরথেকে || প্রথম পর্ব
==================================================
=====
بِسْمِ اللّہِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِیْمِ
الحمد لله رب العالمين. والصلوة والسلام على رسوله الكريم. أما بعد...
হামদ ও সালাতের পর-
পাকিস্তানে বসবাসরত আমার দ্বীন প্রিয় মুসলিম ভাইয়েরা!
হামদ ও সালাতের পর-
পাকিস্তানে বসবাসরত আমার দ্বীন প্রিয় মুসলিম ভাইয়েরা!
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ।
সুপ্রিয় দ্বীনদার ভাইয়েরা আমার- আজ আমি আপনাদের উদ্দেশ্যে কিছু কথা নিবেদন করতে চাই। আপনারা আমার এমন সব ভাই যাদের অন্তরে দ্বীনের মহব্বত রয়েছে এবং আপনারা সমাজে দ্বীনদার হিসাবে পরিচিত। আমার এই নিবেদন বিশেষ করে সেই সব দ্বীনী ভাইদের প্রতি, যারা কোন ধর্মীয় রাজনৈতিক দলের সাথে সম্পৃক্ত।
২০১৮ইং সালের নির্বাচনী হাঙ্গামা শেষ হয়েছে মাত্র কিছুদিন হল। এতে আপনাদের স্বল্প পরিমাণ প্রার্থীরাই এসেম্বলিতে পৌঁছাতে পেরেছেন। এর ফলে আপনারা অতীতের ন্যায় আজও এ বিষয়ে পেরেশানীতে রয়েছেন। এমনিভাবে আপনারা নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ করেছেন। নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে কি হয় নাই এটা আমাদের আজকের মজলিসের আলোচ্য বিষয় নয়। বরং আমাদের মূল উদ্দেশ্য ও আলোচ্য বিষয় এর চাইতে আরো অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের এই আলোচনাটি সংক্ষিপ্ত চারটি পর্বে সমাপ্ত করা হবে (ইনশা আল্লাহ)। আল্লাহ তা‘আলা এই আলোচনাকে আমাদের সকলের জন্য উপকারী হিসেবে কবুল করে নিন।(আমীন)
মুহতারাম ভাইয়েরা আমার!
আপনাদের মাঝে হয়তো কেউ কেউ এটা মনে করে থাকতে পারেন যে, আমরা মুজাহিদীনরা আপনাদের ভাল চাই না অথবা প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করি (আল্লাহ এমনটি না করুন)। আমার প্রিয় ভাই ও বন্ধুরা! আসলে বিষয়টি কক্ষনো এমন নয়। যদিও আমরা আপনাদের এই গণতন্ত্রভিত্তিক রাজনীতির উপর সন্তুষ্ট নই। আল্লাহ তা‘আলাকে সাক্ষী রেখে বলছি - আমরা নিজেদের জন্যও গণতন্ত্রের পথ ধরে চলাকে পছন্দ করিনা। বরং এই পথের পথিক হওয়াকে নিজেদের দ্বীন ও আখিরাতের জন্য বিপদজনক মনে করি।
হে প্রিয় ভাইগণ!
আপনারা হলেন দ্বীনের ধারক বাহক। তাই আপনাদের এই সুস্পষ্ট অনিষ্টের পথে ও ইবলিসের তৈরীকৃত এই ভ্রান্তিমূলক পথে উদাসীন হয়ে ঘুরে ফিরে চলার চাইতে নিজেদের দ্বীনি পরিচয় ও পরিচিতি নিয়ে থাকাটা অধিক উত্তম ও সুউচ্চ মর্যাদার বিষয়। নতুবা এর ফলশ্রুতিতে দ্বীন-ইসলামের শক্ররা দ্বীনের ধারক বাহকদের নিয়ে হাসি-তামাশা করার সুযোগ পাবে! সুতরাং আপনারা নিশ্চিত বিশ্বাস রাখুন যে, আমরা আপনাদের অহিতকামী নই। বরং আপনাদের হিতকামী। আপনাদের দুশমন নই, বরং আপনাদের ভাই ও বন্ধু। ইনশা আল্লাহ আমরা কখনো আপনাদের জন্য এমন কোন বিষয় পছন্দ করব না, যা আমরা নিজেরা নিজেদের জন্য পছন্দ করি না। আর তা এই জন্য যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পবিত্র হাদীসে ইরশাদ করেছেন:
عَنْ أَنَسٍ عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لَا يُؤْمِنُ أَحَدُكُمْ حَتَّى يُحِبَّ لِأَخِيهِ مَا يُحِبُّ لِنَفْسِهِ.
হযরত আনাস রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু থেকে বর্ণিত, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন- “তোমাদের কেউ প্রকৃত মু’মিন হবে না, যতক্ষণ না সে তার ভাইয়ের জন্য তা-ই পছন্দ করবে, যা নিজের জন্য পছন্দ করে”। (সহীহ বুখারী)
দ্বিতীয় কথা হচ্ছে: আমরা যখন আপনাদেরকে উদ্দেশ্য করে কোন কথা নিবেদন করি, তখন আমাদের প্রতিও আপনাদের পক্ষ থেকে পাল্টা প্রশ্ন আসতে পারে যে, আপনারা মুজাহিদীনরা দ্বীনের কী কী সাহায্য-সহযোগিতা করেছেন? বাতিলদের কোন কোন পথ অবরুদ্ধ করেছেন? উম্মাতে মুসলিমার জখমগুলোতে কোন ধরনের প্রতিকারের ব্যবস্থা নিয়েছেন? তাহলে শুনুন- ইনশা আল্লাহ, আমরা মনে করি (প্রকৃত অবস্থা তো আল্লাহ তা‘আলাই ভালো জানেন) এ কথা বলা কোন ধরণের বাড়াবাড়ি হবে না যে - আলহামদুলিল্লাহ, মুজাহিদীনে কেরাম তাদের সাধ্যের সবটুকু উজাড় করে দিয়ে উম্মাতে মুসলিমার কল্যাণ সাধনে আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছেন। এক্ষেত্রে তারা তাদের নিকট বা তাদের নিয়ন্ত্রনে কোন কিছুই অবশিষ্ট রেখে দেননি। বরং তাদের নিকট যা ছিল, সে সব কিছুই এই মহান দ্বীনের জন্য, দ্বীনের দাওয়াত ও প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার জন্য ও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মাজলুম উম্মতের সাহায্যের জন্য অনবরত বিলিয়ে দিয়ে যাচ্ছেন (ইনশা আল্লাহ ভবিষ্যতেও বিলিয়ে যাবেন)।
ছুম্মা আলহামদুলিল্লাহ, বর্তমানে আফগানিস্তান থেকে ইয়েমেন ও মালি পর্যন্তই নয় বরং পুরো দুনিয়াতে আল্লাহর এই প্রিয় বান্দারা নিজেদের ফরয জিহাদ আদায় করে চলেছেন।
অন্যদিকে আমরা অতি দুঃখের সাথে এই বিষয়টিও আপনাদের সমীপে পেশ করতে চাই যে, পবিত্র জিহাদের নাম আইএস-এর মত অপরাধীরা নিয়েছে। তারপর তারা বিশ্বময় জিহাদের বদনাম করেছে। জিহাদের মত পবিত্র নাম ব্যবহার করে বিভিন্ন অপরাধ করেছে। ফলশ্রুতিতে ইসলাম ও মুসলিমদেরকে অনেক জুলুম সহ্য করতে হয়েছে। পাশাপাশি এর দ্বারা কুফর ও কাফিরদের অনেক উপকার সাধিত হয়েছে। এরপর গোপনীয় গোয়েন্দাসংস্থাগুলো আইএসের পন্থায় বিভিন্ন অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে, যাতে করে ইসলাম ও মুসলিমদের অনেক বেশী বদনাম হয় এবং জুলুম ও ফ্যাসাদের এই রাত্রি কখনো শেষ না হয়।
অতঃপর কথা হচ্ছে: আমরা এটাও স্বীকার করি যে, প্রকৃত মুজাহিদীনরা ফেরেশতা নন, তারা মানুষ। তাই তাদের থেকেও ভুল-ভ্রান্তি প্রকাশ পেতে পারে। সুতরাং আমাদের দাবী এটা নয় যে, জিহাদের নামে যে কেউ যা কিছু করবে সবই সঠিক বলে গণ্য হবে। আর আপনারাও তাদের দেখাদেখি সেই সব কিছু করে বেড়াবেন। বরং আমাদের আহবান হচ্ছে এই যে, আল্লাহ তা‘আলার এই মহান দ্বীনের যে দাবী এবং শরীয়াহর যে চাহিদা রয়েছে, আমরা ও আপনারা সবাই তার উপর আমল করবো। কিয়ামতের দিন আমাদের নিজেদেরকে অন্য কারো ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে না, বরং আমাদেরকে আমাদের আকীদা-বিশ্বাস ও আমল সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে। সুতরাং কেউ দ্বীনের নুসরত করার জন্য প্রস্তুত হোক বা না হোক; আমরা ও আপনারা দ্বীনের নুসরতের জন্য কোমর বেঁধে কাজে লেগে যাব। পাশাপাশি আমরা ঐ সমস্ত ভুল-ভ্রান্তি থেকেও বেঁচে থাকার চেষ্টা করবো, যার কারণে অন্যরা দ্বীনের যথাযথ নুসরত করতে পারেনি। এটাই আমাদের মূললক্ষ্য হওয়া উচিত এবং এ সম্পর্কেই আমরা জিজ্ঞাসিত হব।
প্রিয় ভাই ও বন্ধুরা!
সম্প্রতি পাকিস্তানে আল্লাহ তা‘আলার এই মহান দ্বীনের উপর চূড়ান্ত পর্যায়ের আঘাত এসেছে। যার ফলে সংকটময় পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছে। হয়তোবা এমন পরিস্থিতি নিকট অতীতে আর কখনো আসেনি। যুগের ভাষায় এই মহান দ্বীন যেন আমাদেরকে ডেকে ডেকে বলছে যে, مَنْ أَنْصَارِي إِلَى اللَّهِ অর্থাৎ আল্লাহর জন্য কারা আমার সাহায্যকারী হবে? এবং كُونُوا أَنصَارَ اللَّهِ অর্থাৎ তোমরা আল্লাহর সাহায্যকারী হও...। যেহেতু আমাদের মধ্য থেকে প্রত্যেকেই এই মহান দ্বীনের সম্বোধিত ব্যক্তি - তাই আমাদের প্রত্যেককেই সম্বোধন করে বলছে যে, এই মহান দ্বীনের সাহায্যকারী কেউ আছো কি? আছো কি কেউ জাহিলিয়্যাতের চিৎকার ও ঔদ্ধত্যতার মাঝে এই মহান দ্বীনের প্রকৃত অবস্থা ও দ্বীনের মৌলিক পয়গামের ঝান্ডাকে উর্ধ্বে তুলে ধরবে? কেউ আছো কি পাকিস্তানে তুফানের ন্যায় ধেয়ে আসা এই ধর্মহীনতার প্রবল স্রোতের বিপরীতে দ্বীনের প্রতিরক্ষা বিধানের নিমিত্তে প্রাচীরের ন্যায় দাঁড়িয়ে যাবে? এই মহান দ্বীন তো আমাদেরকে ও আপনাদেরকে সকলকেই সম্বোধন করে বলছে যে, কে এই জাহিলিয়্যাতের চিৎকার, ঔদ্ধত্যতা এবং অন্ধকারের প্রচন্ডতার এই বাদুড় সদৃশ লোকদের দ্বারা ভীত হওয়ার পরিবর্তে তাদের উপর মারাত্মকভাবে আঘাত হানবে? তাদের চোখে চোখ রাখবে? তাদেরকে চরম পর্যায়ের অসম্মান ও লাঞ্ছনার পরিস্থিতিতে ফেলবে এবং ইসলামের সম্মান ও শরীয়তের মর্যাদা দুনিয়াতে প্রতিষ্ঠিত করবে?
আরও পড়ুন
Comment