Announcement

Collapse
No announcement yet.

ফিরে দেখা ভাষ্কর্য আন্দোলন : কিছু কথা!!!

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • ফিরে দেখা ভাষ্কর্য আন্দোলন : কিছু কথা!!!

    ভাষ্কর্য ইস্যুতে আলেমজনতা জেগে উঠেছেন। বলা যায়, আলেম সমাজের জাগরণের পিছনে আল্লাহর ঘরের সামনে মূর্তি স্থাপন-ই দায়ী। ঠিক একই অবস্থা সুপ্রিম কোর্টের সামনে স্থাপিত দেবী থেমিসের মূর্তির ক্ষেত্রে। আলেমসমাজ তখন-ও জোরদার আন্দোলন চালিয়েছেন। কারণ, বাংলাদেশের মতো মুসলিম প্রধান দেশের বিচারালয়ের মতো পবিত্র স্থানের সম্মুখে মূর্তি স্থাপন করা যায় না। অথচ তখন তাঁরা নীরব-নিস্তব্ধ থাকেন কেন জানা নেই, যখন মুসলিম দেশের পবিত্র আদালতগুলো অসভ্য মালাউন মুশরিক ও ত্বাগুতি বিচারকদের নাপাক পদচারণায় মূর্তি অপেক্ষা দশগুন বেশি অপবিত্র হয়ে ওঠে। আল্লাহ তায়ালাই ভাল জানেন!

    বলছিলাম চলমান ভাস্কর্য ইস্যু নিয়ে। তো বিহামদিল্লাহ উলামায়ে কেরাম এই বিষয়ে সোচ্চার হয়েছেন। এখানে প্রথমে প্রাসঙ্গিকভাবে যে বিষয়টি আমি উপস্থাপন করতে চাই তা হল, মূলত ভাষ্কর্য নির্মাণের অবৈধতা দৃশ্যমান প্রাণীর ছবি নির্মাণের অবৈধতার একটি অংশ। যার ফলে অনেকে আগ্রহভরে এই প্রশ্নের সুযোগ পাচ্ছেন যে, ভাষ্কর্য নির্মাণ যদি অবৈধ হয়, তবে তো বর্তমান ফটো, ভিডিও কিংবা রেকর্ডেড লাইভ ইত্যাদি-ও হারামের পর্যায়ে পড়ে?

    আমার ক্ষুদ্র দৃষ্টিতে এখানে কিছুটা বিশ্লেষণ করা যায়। প্রথম হল ভাষ্কর্য-মূর্তি কিংবা প্রতিমা। দ্বিতীয় হল ছবি নির্মাণ অর্থাৎ অঙ্কন। তৃতীয় হল, আধুনিক ক্যামেরার ছবি। জেনে রাখা প্রয়োজন যে, প্রথম প্রকারকে ছায়াদার ছবি বলে। আর দ্বিতীয় প্রকার হল ছায়াহীন। প্রথম দুপ্রকার হল 'মানসুস আলাইহি' তথা যার নিষেধাজ্ঞা কুরআন-সুন্নাহ সরাসরি দিয়েছে এবং কুরআন-সুন্নাহয় এর বিরুদ্ধে স্পষ্ট বর্ণনা আছে। তবে আমার জানামতে তৃতীয় প্রকার মানসুস আলাইহি নয়। অর্থাৎ পরবর্তীতে সংগঠিত হওয়ায় কুরআন-সুন্নাহয় এর সরাসরি নিষেধাজ্ঞা বা স্পষ্ট বর্ণনা নেই।

    আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআহ'র মাযহাবত্রয় হানাফি শাফিয়ি ও হাম্বলি মাযহাবের ঐক্যমতে কেয়ামত পর্যন্তের জন্য যেকোন প্রয়োজনে ছায়াদার ও ছায়াহীন প্রাণীমূর্তি নির্মাণ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। আর মালিকি মাযহাব মতে ছায়াদার ছবিনির্মাণ নিষিদ্ধ হবার ক্ষেত্রে কোনো দ্বিমত নেই। তবে ছায়াহীন ছবি বা অঙ্কল নিয়ে কিছুটা মতপার্থক্য আছে।

    অতএব, বুঝা গেল, ছায়াদার ও ছায়াহীন উভয়প্রকার ছবি নির্মাণ-ই হারাম ও নিষিদ্ধ। এখন-ও কেউ যদি কোনো ছবি অংকন করে, আমরা তাকে জায়েয বলি না। আর তাই শিল্পকলা আর সংস্কৃতি-বিনোদনের নাম দিয়ে গাছপালা অংকনের পাশাপাশি প্রাণীমূর্তি নির্মানের যে খেলা আজ বৃটিশপ্রণীত অসভ্য শিক্ষাব্যবস্থায় চলছে, তা স্পষ্টভাবে হারাম ও নিষিদ্ধ। তবে ছায়াহীন ছবির তুলনায় ছায়াদার ছবি অর্থাৎ মূর্তি-ভাষ্কর্য ইত্যাদি নির্মাণ আরো বেশি জঘন্য। কারণ, এতে শিরকের মতো ভয়ানক অপরাধের গন্ধ পাওয়া যায়। এখানে অনেকে ডিজিটাল ছবিকে ভাষ্কর্যের সাথে তুলনা করছেন। ডিজিটাল ছবির সাথে ছায়াদার ভাষ্কর্যের কোনো তুলনা হয় না। হ্যাঁ, দলিল -ব্যাপক হবার কারণে- সবগুলোতেই পরিব্যপ্ত। তুলনা যদি করতে হয়, তবে তা ছায়াহীন ছবির সাথে; ছায়াদারের সাথে নয়। এসব ভাষ্কর্য-মূর্তি সর্বাবস্থায় হারাম ও নিষিদ্ধ।

    রয়ে গেল আধুনিক যুগের ছবি প্রসঙ্গ। যেহেতু এটি নব আবিষ্কৃত একটি বিষয়, আবার প্রাণীর ছবি অংকনের সাথে এর সাদৃশ্য-ও রয়েছে, তাই সংখ্যাগরিষ্ঠ উলামায়ে কেরাম 'কিয়াসের' মাধ্যমে এটিকে বিশেষ প্রয়োজন ব্যতিত হারাম ও নাজায়েজ বলে আখ্যায়িত করেছেন। প্রাসঙ্গিকভাবে বলতে পারি, বিশেষ প্রয়োজনের একটি হল মিডিয়ায় ছবির ব্যবহার। কারণ, মনে রাখা দরকার, এই যুগ হল মিডিয়ার যুগ। ইলেকট্রনিক মিডিয়া আর প্রিন্ট মিডিয়া আজ ইসলামের বিরুদ্ধে কাফেরদের মনস্তাত্বিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক আগ্রাসনের এক কার্যকরী কৌশল। মিডিয়ার রয়েছে বিশেষ ক্ষেত্র, সীমা ও পরিধি। রয়েছে নির্দিষ্ট লক্ষ্য-উদ্দেশ্য।

    এখানে আমি আমার ভাষায় বলতে পারি যে, এক তো হল জরুরত। অর্থাৎ, যা না হলে নয়। আর একটি হল হাজত। অর্থাৎ, কাজ হবে। তবে এটি না হলে প্রচুর কষ্ট হয়ে যাবে। তাবলীগে দ্বীনের উদ্দেশ্য মিডিয়ায় ছবি-ভিডিও-র ব্যবহার, লাইভ ইত্যাদি করা আমি হাজত বলতে পারি। তাবলীগে দ্বীনের জন্য যে মিডিয়াই লাগবে, এটি না হলে নয় তা কিন্তু নয়। কেননা, এর জন্য আমরা "মুযত্বর্র" হয়ে যাই নি। কিন্তু যেহেতু প্রতিপক্ষ তাদের মতবাদ প্রচারে এটিকে সুকৌশলে কাজে লাগাচ্ছে, অতএব আমাদের-ও দ্বীন প্রচারে একই সিস্টেমে কাজ করা প্রয়োজন। এ ছাড়া প্রতিপক্ষের মিডিয়া ব্যবহার বয়কট না করে নিজেরা এ থেকে দূরে থাকা নির্বুদ্ধিতা বৈ কিছুই নয়।

    তবে মুজাহিদীনের জন্য যে মিডিয়া ব্যবহার জরুরি বরং ফরজ— এতে কোনো সন্দেহ নেই। কারণ, এটি হেফজে দ্বীনের জন্য জরুরতের পর্যায়ে পড়ে, যা অনায়াসে হারামকে হালাল করে দেয়। যাকে কুরআনের ভাষায় "এযত্বেরার" বলে। আর উসুলবিদদের কায়েদা আছে, "জরুরত নিষিদ্ধ বস্তুকে প্রয়োজন পরিমাণ সিদ্ধ করে দেয়"। এখানেও জরুরত থেকে " এযত্বেরার" উদ্দেশ্য। আল্লাহু আ'লাম!

    বলছিলাম ভাষ্কর্য ইস্যু নিয়ে। ভাষ্কর্য নির্মাণের প্রতিবাদ নিয়ে আমার কোনো আপত্তি নেই। তবে তৎসংশ্লিষ্ট কিছু ব্যাপার নিয়ে হয়তো আমার মতো অনেকে দ্বিধা-সংশয়ে ভোগে। তাই আসলে কোনটা সঠিক তা এবং সংশয় দূর করার জন্যই এই কটি কথা।

    ত্বাগুতের রাষ্ট্রনীতি কী বলে...

    সেই রাষ্ট্রযন্ত্রের কাছে আন্দোলন করে কী লাভ, যাদের সংবিধান আমাদের দাবি-দাওয়ার নীতিগুলোতে বিশ্বাসই করে না? এই রাষ্ট্রযন্ত্র এমন এক সংবিধানে বিশ্বাসী, যে সংবিধান ইসলামের পূর্ণাঙ্গ এক জীবনব্যবস্থাকে মেনে নেয় না। বরং প্রবর্তিত এক লেজকাটা গণতন্ত্রই হল তাদের পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা। এই সংবিধান পূর্বযুগের ইয়াসিক অপেক্ষাও বর্বর এক সংবিধান, যার প্রতিটা হরফ ও লাইন আল্লাহর আইনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করছে!

    আমি তো সেদিনই থরথর করে কেঁপে উঠেছি, যেদিন জেনেছি যে, এই সংবিধান কুরআনকে রাষ্ট্র পরিচালনার ভিত্তি হিসেবে বিশ্বাস করে না! হায় হায়! এ কেমন সংবিধান! এ কেমন বর্বর সংবিধান!! এ কেমন আকিদা!!! চৌদ্দশত বছর ধরে আমাদের কোন্ আকিদা শেখানো হল, আর আজ চোখের সামনে আমাদের কোন্ আকিদা বাস্তবায়িত দেখতে হল!

    কুরআন যে কর্মের ব্যাপারে বলে, এটা করতে হবে বা জরুরি, তার ব্যাপারে এই সংবিধান হয়তো স্পষ্টভাবে বলে এটা করা যাবে না অথবা বলে, করতেও পার, নাও করতে পার। আর কুরআন যে কর্মের ব্যাপারে বলে যে, এটা করা যাবে না বা হারাম, তখন এই সংবিধান তার ব্যাপারে বলে যে, এটা করতেই হবে কিংবা বলে, ছাড়তেও পার নাও ছাড়তে পার। উদাহরণত, জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ। কুরআন বলে, মুমিনদের উপর জিহাদ ফরজ করা হয়েছে। আর এই সংবিধান বলে, জিহাদ করা যাবে না। নামাজকে কুরআন ফরজ ও বাধ্যতামূলক করেছে। আর এই সংবিধান বলছে, নামাজের জন্য কাউকে বাধ্য করা যাবে না। এটা তার ব্যক্তিগত অধিকার। ভাষ্কর্য ও প্রতিকৃতি নির্মাণকে কুরআন অবৈধ সাব্যস্ত করেছে। আর এই সংবিধান বলছে, (কুলাঙ্গার) শেখ মুজিবের ভাষ্কর্য করতেই হবে। কারণ, স্বাধীনতার চেতনার প্রতি সম্মান জানানো আমাদের ফরজ দায়িত্ব। এছাড়াও মুক্তিযুদ্ধে নিহতদের স্মরণে ভাষ্কর্য নির্মাণ জাতীয় কর্তব্য। আর তুমি তোমার মূর্তি ঘরে বানিয়ে রাখতে পার। এটি তোমার সাংবিধানিক অধিকার। তোমাকে বাঁধা দেওয়ার অধিকার সাংবিধানিকভাবে কারো নেই। নাউজুবিল্লাহ মিন যালিক!!! কুরআনের ফরজ এই সংবিধানে হারাম বা মুবাহ সাব্যস্ত হল। আর কুরআনের হারাম এই সংবিধানে ফরজ বা জায়েয সাব্যস্ত হল!

    কুরআন-সুন্নাহর শত নস, উম্মাহর হাজারো ত্যাগী ফকিহের বর্ণনা আজ শত বছর পর এমন বিকৃত ধিকৃত ও উপেক্ষিত হল? ওরা কারা, যারা এই সংবিধানকে শ্রদ্ধা জানায়? কী লাভ, এই ত্বাগুত রাষ্ট্রযন্ত্র ও রাষ্ট্রনীতির সামনে দাবি পেশ করে আল্লাহর শরিয়তকে অপমানিত করার? কী লাভ!!!

    রাষ্ট্রীয়তার অদ্ভুত দোহাই...

    'দেশের বিভিন্ন স্পটে ভাষ্কর্য রয়েছে এবং খোদ শেখ মুজিবের-ও বিভিন্ন স্থানে ভাষ্কর্য রয়েছে। তাহলে কেবল এই ভাষ্কর্যের বিরুদ্ধেই তীব্র আন্দোলন কেন'— এই প্রশ্নের উত্তরে জোরালো ভাষায় যে বক্তব্যটি উপস্থাপিত হয়েছে তা হল, অন্যান্য স্থানে নির্মিত ভাষ্কর্যগুলোর অবস্থা, অবস্থান এবং স্থাপনকারী ছিল বিভাগীয় বা আঞ্চলিক। কিন্তু, এই ভাষ্কর্য নির্মিত হচ্ছে রাষ্ট্রীয়ভাবে এবং মসজিদের সন্নিকটে। যে ভাষ্কর্য নির্মাণ হলে রাষ্ট্রীয়ভাবে আল্লাহর রহমত উঠে যাবে। তাই তীব্র আন্দোলন!

    সুবহানাল্লাহ! কত সুন্দর যুক্তি! তার মানে এতদিন পর্যন্ত হাজারো ভাষ্কর্যের পদতলে আমরা ঘুরে বেড়াচ্ছিলাম এই জন্যে যে, এগুলো রাষ্ট্রীয়ভাবে হয় নি? এবং এর অর্থ কি এটাও যে, কুলাঙ্গার শেখ মজিবের ভাষ্কর্য যদি আজ এই স্থানে গড়ে না উঠত, তবে এই ভূখণ্ডের প্রান্তে প্রান্তে গড়ে উঠা হাজারো মূর্তি অনায়াসে আমাদের সামনে বিরাজমান থাকা দেশের ইসলাম ও মুসলমানদের জন্য সমস্যাজনক বলে বিবেচিত হত না? আর এর অর্থ কি এটাও যে, চলমান আন্দোলন কেবল সেই ধোলাইপাড়ের মূর্তি নিয়ে, যা নির্মিত না হলে অন্যসব ভাষ্কর্য থাকাতে কিছু আসে যায় না? কিংবা এর অর্থ কি এটাও যে, ভাষ্কর্য বিরোধী সম্মিলিত ফতওয়ার প্রয়োগ কেবল এই ধোলাইপাড়ের মূর্তি নিয়েই? অন্য ভাষ্কর্যগুলো ধর্তব্য নয়? কিংবা অন্যান্য ভাষ্কর্যগুলো শরিয়াহর মূলনীতিতে হারামই নয়?

    আমার মতো অনেকেই এই ভেবে খুশি হয়েছিল যে, যাক, আলেম সমাজ রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কথা বলছেন। কিন্তু আমার এই খুশিমুখ তখনই বিষাদে পরিণত হয়ে যায়, যখন দেখি যে, এই আন্দোলন রাষ্ট্রীয় কর্মের বিরুদ্ধে নয়। আমি আমার নিজেকে প্রশ্ন করেছি, আচ্ছা, আসলেই কি এই আন্দোলন রাষ্ট্রীয়ভাবে হচ্ছে এই জন্য? তাহলে শুধু ভাষ্কর্য কেন? রাষ্ট্রীয়ভাবে তো এরচে' ভয়ানক কিছুও হয়েছে। ইসলামকে দুহাতে ছুঁড়ে ফেলে সরকারব্যবস্থার জন্য গণতন্ত্রের নির্বাচন যে হয়েছে তা তো রাষ্ট্রীয়ভাবেই হয়েছে। যুগযুগ ধরে আল্লাহর হাকিমিয়্যাত নিয়ে সংসদ ভবনের আড্ডাখানায় যে নির্মম উপহাস-পরিহাস হয়েছে তা তো রাষ্ট্রীয়ভাবেই হয়েছে। আল্লাহর নবীর ইজ্জত নিয়ে ছিনিমিনি খেলা মুরতাদ শাতেমদের যে ক্ষনে ক্ষনে সম্মান-মর্যাদা ও নিরাপত্তা দেয়া হয় তা তো এই ত্বাগুতযন্ত্রের রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায়-ই হয়। এসব না হয় বাদই দিলাম। এই মুদ্রার নোট পয়সার নোটগুলোতে যে কুলাঙ্গার মুজিবের ছবি ও ভাষ্কর্য আঁকা হয়েছে তা কি রাষ্ট্রীয়ভাবে হয় নি? দেরহাম-দিনার পিঠে প্রাণীপ্রকৃতি অঙ্কনের বিরুদ্ধে পূর্বসূরিরা, স্পষ্ট ভাষায় ইমাম ইবনুল হুমাম রহ. মাসআলা লেখেন নি? তাহলে, আলেম সমাজের যুক্তি অনুসারে বাংলার জমিন থেকে তো আল্লাহর রহমত অনেক আগেই উঠে গেছে।

    বাস্তবেই আল্লাহর রহমত অনেক আগেই উঠে গেছে। হাজার বছরের খেলাফাহ শাসিত যে ভূমিতে আল্লাহর শাসনকে বাদ দিয়ে কুফর ও শিরকের তান্ত্রিক শাসন প্রতিষ্ঠা করা হয়, একেকটি আল্লাহদ্রোহী আইন প্রতিষ্ঠা করে যে ভুমির প্রান্তে প্রান্তে সেই আইনের বাস্তব প্রতিফলন ঘটানো হয়, আর অন্যদিকে সেই সমাজের দৃষ্টিসম্পন্ন ও আল্লাহর আইনের ধারক-বাহক লোকগুলো বোবা শয়তানের বেশ ধারণ করেন, তখন সেই সমাজে আল্লাহর রহমত থাকতে পারে না! রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ইসলামের কড়াগুলো এক এক করে বিধ্বস্ত হতে থাকবে। সর্বপ্রথম যে কড়াটি ভেঙে চুরমার হয়ে যাবে তা হল, শাসনব্যবস্থা। রাষ্ট্রীয়ভাবে আমাদের সামনে আজ এই কড়া ভেঙে চুরমার হয়ে গেল, কিন্তু কিছু সময়ের জন্যও আমাদের মসজিদ-মাদরাসা আর খানকাহর আনুষ্ঠানিকতায় কোনো ছেদ পড়ল না। আর আজ যখন দেয়ালে পিঠ ঠেকল, তখনই কেমন যেন একটু-আধটু গোঙ্গানোর সময় হল। কিন্তু আমি কসম খেয়ে বলতে পারি, আজ যদি কুফরি শাসনের এই রাষ্ট্রীয় দেয়ালকে উৎখাত করা না হয়, সেদিন হয়তো বেশি দূরে নয়, যেদিন এই দেয়ালের সাথে ধাক্কা খেয়ে ইসলাম তার সর্বশেষ কড়া সালাতকেও ধুলিতে গড়াগড়ি খেতে দেখবে। যেদিন এই দেয়ালের সাথে বারি খেয়ে মুসলিমরা তাদের অস্তিত্বের কবর রচনা হতে দেখবে।

    সরকারের সাথে দ্বন্দ্বে জড়াবো না...

    ঠিকাছে, ভাল কথা। সরকারের সাথে দ্বন্দ্বে জড়ানো হঠকারিতা। কিন্তু সেই সরকারের সাথে আমাদের কর্মনীতি কী হওয়া উচিত যাদের বিশ্বাস ও কথা-কাজে সবধরনের কুফরে বাওয়াহের স্পষ্ট উপস্থিতি রয়েছে? সেই শাসকের ব্যাপারে আল্লাহর শরিয়ত কী বলে, যে শাসক রাষ্ট্রীয়ভাবে ইক্বামতে সালাতকে অকেজো সাব্যস্ত করে? তবে কি সেই শাসককে পদচ্যুত করা, সক্ষমতা না থাকলে তার বিরুদ্ধে জিহাদ দাঁড় করানো কিংবা নিদেনপক্ষে অন্যকে তার বিরুদ্ধে জিহাদের উৎসাহ দেওয়া— আল্লাহর দেওয়া এই শরিয়ত নাউজুবিল্লাহ আমাদের কাছে হঠকারিতাপূর্ণ!? আলে রাসুল হযরত হুসাইন রযিয়াল্লাহু আনহু, মহাবীর হযরত আবদুল্লাহ বিন যুবাইর রযিয়াল্লাহু আনহু জালেম শাসকের বিরুদ্ধে রণক্ষেত্রে অস্ত্র ধারণ করেছিলেন। আজ কাফের শাসকের বিরুদ্ধে জিহাদকে হঠকারিতা প্রদর্শন বলে মুসলমানদের মাঝে এ কোন্ সাহাবিয়্যাত আমদানি করা হল? ইমামে আযম আবু হানীফা রহিমাল্লাহ জালেম শাসকের বিরুদ্ধে বিদ্রোহকে আল্লাহর পথের জিহাদ ফতোয়া দিয়েছেন। আজ তাহলে মুরতাদ শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে রণবিপ্লবের মানহাজকে হঠকারিতার ট্যাগ দিয়ে উম্মাহর মাঝে এ কোন্ হানাফিয়্যাতের ফেরি করানো হল? "তোমরা সেই গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে কেন লড়াই করছ না, যারা নিজেদের কৃত অঙ্গিকার ভঙ্গ করেছে এবং রাসূলকে এই দেশ থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার দৃঢ় সংকল্প করেছে। তারাই তো তোমাদের সাথে প্রথমে দ্বন্দ্বে জড়িয়েছে। তাহলে কি তোমরা তাদেরকে ভয় পাচ্ছ? নিশ্চয় আল্লাহই ভয় পাওয়ার সবচে' বেশি হকদার, যদি তোমাদের ঈমান থাকে। জিহাদ করো ওদের সাথে। আল্লাহ তোমাদের দিয়ে তাদের মার খাওয়াবেন। তাদেরকে লাঞ্ছিত করবেন। তোমাদেরকে তাদের উপর বিজয় দান করবেন এবং মুমিন জাতিসত্ত্বার হৃদয়কে প্রশান্তিতে ভরপুর করে দেবেন"। এরপর তোমরা পাবে এক নতুন সমাজ। এক নতুন সরকার। যেখানে থাকবে না কোনো আযাব, কোনো গজব। থাকবে না কোনো ফিৎনা, কোনো ফাসাদ। থাকবে না আল্লাহর দ্বীন ও শরিয়ত, আল্লাহর রাসূল ও তাঁর ওয়ারেসদের নিয়ে কোনো উপহাস আর কোনো তামাশা। দ্বন্দ্বে জড়িয়ে সেই পবিত্র সরকার প্রত্যাশা কি আদৌ বেশি বাড়াবাড়ি হয়ে যাবে?

    শেখ মুজিব মুসলমান? শেখ হাসিনা কি ত্বাগুত নয়?

    জানার বিষয় হল, গণতন্ত্র দিয়ে যারা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চায় তাদের হুকুম কি? দেশের এমন একজনও কথিত ইসলামি রাজনীতিবিদ নেই, যারা গণতন্ত্র দিয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার কথা বলেন। সবাই গণতন্ত্র দিয়ে ইসলাম প্রতিষ্ঠার কথা বলেন। কারণ, গণতন্ত্র তো একটি কুফুরি জীবনব্যবস্থা। যে গণতন্ত্র দিয়ে গণতন্ত্রের শাসনই প্রতিষ্ঠা করতে চায়, তার কুফর ও ইরতিদাদের ব্যাপারে তো কোনো সন্দেহ নেই। তাহলে এবার আপনারাই বলুন, যারা কোনোপ্রকার 'ইকরাহ', 'জাহল' কিংবা 'ফাহমে খতা' ব্যতিত স্বজ্ঞানে বুঝেশুনে কুফরি গণতন্ত্র দিয়ে গণতন্ত্রের কুফরি শাসনই প্রতিষ্ঠা করে, সেই সব শাসকদের ব্যাপারে ফিকহে ইসলামির ফতোয়া কী হবে? কী হবে ফতোয়া?? এখনও কি এই মাসআলার 'হল' হয় নি? নাকি ফিকহে ইসলামির ভাণ্ডারে এই মাসআলার কোনো সমাধান পাওয়া যায় নি?

    সমস্যা কি ফিকহে নাকি আমাদের "ওয়াহান" আক্রান্ত হৃদয়ে? কবরপূঁজা-মাজারপূঁজার মতো কুফর ও শিরকের ওল্ড ভার্সনের বিরুদ্ধে কথা বলা আলেমসমাজ যে কী কারণে গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ ও জাতীয়তাবাদের মতো কুফর ও শিরকের আপডেট ভার্সনগুলোতে বোবার বেশ ধারণ করেন তা আল্লাহ তায়ালাই ভাল জানেন।

    বাংলার জনগণকে ধুঁকে ধুঁকে মেরে যে কুলাঙ্গার শেখ মুজিব এই দেশ শাসন করেছে, আধুনিক সব তন্ত্রমন্ত্রের সংমিশ্রণ করে যে মুশরিক মুজিববাদি ধর্মের গোড়াপত্তন করেছে, এই সেই আল্লাহদ্রোহী, যে আল্লাহর এই জমিনে সর্বপ্রথম শিরকি শাসনব্যবস্থা, কুফরি আইন ও সংবিধান ও আল্লাহদ্রোহী বিচারব্যবস্থার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছে। আর আজ তারই প্রসবকৃত উত্তরসূরি রক্তচোষা শেখ হাসিনা জগাখিচুরি মার্কা সেই মুজিববাদি ধর্মের প্রচার-প্রসার ঘটিয়ে মুসলমানদের হৃদয় থেকে আল্লাহর দ্বীন ও বিধানের ছায়াশুদ্ধ সরিয়ে ফেলতে চাচ্ছে। কিন্তু আফসোস! এই মুরতাদের বিরুদ্ধে কথা বলার কেউ নেই!

    ভীনদেশীদের পলায়নের পর আজ ইমারাতে ইসলামিয়্যাহ কার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে? আফগান মুসলমানদের উপর চেপে বসা গণতান্ত্রিক সরকারের সাথে তো? কারণ, গণতান্ত্রিক এই সরকার খালেস এক কুফরি ধর্মের উপর প্রতিষ্ঠিত। তাহলে যারা আজ শেখ মুজিবকে মুসলমান শেখ হাসিনাকে ইসলামের অনুসারী বলে মিথ্যা ও ধোঁকাপূর্ণ এক বক্তব্যের অবতারণা করছে, তাদের কি বিষয়টি ভাবা উচিত নয়? সেই নাপাক ঘানীর গণপ্রজাতন্ত্রী আফগান সরকার আর এই মুরতাদ হাসিনার গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাঝে ফরকগুলো কী, যার কারণে এখানে এসে অনেকে পল্টি মারার সুযোগ খুঁজছে!

    আলেমসমাজ তাদেরকে মুসলিম বলুক, তাতে আমার আপত্তিতে কিছু যায় আসে না। কিন্তু, আল্লাহর কসম করে বলতে পারি, এই এক কুলাঙ্গার মুজিবকে মুশরিক বলতে পারা, হিন্দুত্ববাদের দালাল মুরতাদ হাসিনাকে ত্বাগুত বলতে পারা এটা সময়ের শ্রেষ্ঠ সাহসী উচ্চারণ। যুগে যুগে এভাবেই সাহসীরা সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন। ইমাম আবু হানীফা থেকে ইবনু তায়মিয়্যাহ হাররানী, সায়্যিদ কুতুব শহীদ থেকে মাওলানা রহমানী এভাবেই চলেছে সন্তান্বেষীদের দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠযাত্রা।

    প্রাসঙ্গিকভাবে, আমার ছোট চোখে আলেম সমাজের কর্মনীতিতে যে বিরাট এক ভুল ধরা পড়েছে, তা এখানে না বলে পারছি না। প্রায় মাঠে-ময়দানের সব বক্তাই জোর আওয়াজে বলে থাকেন, বিচ্ছিন্নাতাবাদী শাহবাগীদের এক তৃতীয়পক্ষ শাহবাগী স্যেকুলার গোষ্ঠী আলেমসমাজকে সরকারের বিপক্ষে এনে দাঁড় করানোর অপচেষ্টা করছে। অর্থাৎ, কেবল এই শাহবাগি গোষ্ঠীই হল দেশের সেক্যুলার গোষ্ঠী। আচ্ছা, দেশে স্যেকুলার গোষ্ঠী যদি শুধু ঐ শাহবাগীরাই হয়ে থাকে, তবে জানার বিষয় হল, রাষ্ট্র চালায় কে? সরকার। সরকার কোন নীতিতে চলে? সংবিধানের নীতিতে। তো সংবিধান তো কঠোরভাবে নির্দেশ দিয়েছে যে, দেশ চলবে তো গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ ও জাতীয়তাবাদের এই চার ভিত্তিতে। এর উপরই এই সরকার বিশ্বাস স্থাপন করেছে, সংসদে শপথ গ্রহণ করেছে এবং দিব্যি যুগের পর যুগ এই ভিত্তিগুলোর উপর পুরোদমে শাসন চালিয়ে যাচ্ছে। এরপরও আমাদের কাছে এই সরকার সেক্যুলারিজমের বিশ্বাস লালনকারী নয়?

    বলবেন, ওদের অনেকেই তো নামাজ পড়ে, কুরআন তেলাওয়াত করে? আমি তো বলবো, ওদের অনেকেই তো ভগমানের ইবাদত করে, মন্দিরে গিয়ে পূজা করে? আপনি বলবেন, করুক। সমস্যা কী? এসব তো তার ব্যক্তিজীবনের ধর্মপালন। তার মানে এটি এমন এক সরকারব্যবস্থা, যার সদস্যরা ব্যক্তিজীবনে বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী হলেও রাষ্ট্রীয় জীবনে সবাই ধর্মকর্ম পরিত্যাগ করেছে। ধর্ম যার যার, রাষ্ট্র সবার। ধর্ম থেকে রাষ্ট্র আলাদা হয়েছে। এটাই তো সেক্যুলারিজম। আশ্চর্য! যারা প্রকৃত সেক্যুলারিজমের চর্চা করছে, তাদের নিয়ে আমাদের কোনো মাথাব্যথা নেই? আমরা বারবার আগ্রহভরে এই ত্বাগুতকে মুসলিম প্রমাণের ব্যর্থ চেষ্টা করি, আর ওরা স্বেচ্ছায় বহির্বিশ্বে নিজেদেরকে পরিচয় দেয় সেক্যুলার সরকার হিসেবে। এসব কি আমাদের চিন্তার ভুল নাকি সেক্যুলার ত্বাগুত সরকারের বিরুদ্ধাচরণের ভয়ানক পরিণতি থেকে পিঠ বাঁচানোর জন্য ধোঁকাপূর্ণ একপেশে বক্তব্য!!! যদি চিন্তার ভুল হয়, তবে আহ্বান ফিরে আসার। আর যদি ধোঁকার আশ্রয় হয়, তবে আহ্বান এই হাদীস পড়ে দেখার।
    قال رسول الله صلى الله عليه و سلم من غشنا فليس منا
    মিল্লাতে ইবরাহীম ও শরিয়তে মুহাম্মদ।

    ভাষ্কর্য ইস্যুতে দেশ এখনও উতালপাতাল। অথচ, দিনশেষে দেখি, না বাস্তবায়িত হয়েছে মিল্লাতে ইবরাহীম, না বাস্তবায়িত হচ্ছে শরিয়তে মুহাম্মদ।

    ইবরাহীম আলাইহিস সালামের আদর্শ ছিল, মূর্তি ও মূর্তি নির্মাতাদের সাথে প্রকাশ্যে সম্পর্ক ছিন্ন করা। এই মূর্তি গুড়িয়ে দেওয়া। অথচ আজ সেই মূর্তিপূজক ও মূর্তিনির্মাতাদের সাথে বন্ধুত্ব ও সমঝোতা করা হচ্ছে। না হয়, ইতিহাস থেকে কেউ আমাকে দেখিয়ে দিক যে, ইবরাহীম আলাইহিস সালাম মূর্তির বিরোধিতা করে পরবর্তীতে আলোচনার জন্য নমরুদের সাথে গোলটেবিলে বৈঠক করেছিলেন, নমরুদ সরকারকে নিজের আপন ও আস্থাভাজন উপাধি দিয়েছিলেন! যেমনটা আজ এদেশে ঘটতে দেখা যাচ্ছে? আল্লাহ তায়ালা বলেছেন যে, মিল্লাতে ইবরাহীমের আদেশ দিয়ে তিনি আমাদের উপর কোনো সংকীর্ণতা আরোপ করেন নি। অতএব, সংকীর্ণমনাদের উচিত, এসব সংকীর্ণতা পরিহার করা।

    অনেকে বলছেন, আমরা আইন হাতে তুলে নেব না। আমাদের দায়িত্ব কেবল জানিয়ে দেওয়া। না ভাই, এসব চটকদার কথা বলে পার পাওয়া যাবে না। কারণ, এই সব বক্তৃতার মাধ্যমে ইবরাহীম আলাইহিস সালামের মিল্লাত কস্মিনকালেও বাস্তবায়ন করা যাবে না।

    এ যাবৎ সরকারের কাছে উলামায়ে কেরাম বহুভাবে বার্তা পাঠিয়েছেন। বিবৃতি দিয়েছেন। বৈঠক করেছেন। কিন্তু তারা কিছুতেই বুঝতে পারছে না। আসলে তারা বুঝতে চাইছেও না। যে স্বেচ্ছায় না বুঝার ভান করে, তাকে কি আপনি বুঝতে পারবেন? যাক বলছিলাম, এতটুকুতেই অনেকে মনে করছেন যে, আমরা আমাদের দায়িত্ব আদাই করে নিয়েছি। না না না, মনে রাখতে হবে, আমরা ইবরাহীম আলাইহিস সালামের শরিয়তে বাস করি না। আমরা শরিয়তে মুহাম্মাদ পালনের দায়িত্ব নিয়ে পৃথিবীতে এসেছি। এরা অবুঝ শাসক নয়, এরা মুরতাদ শাসকে পরিণত হয়েছে। মুরতাদদের সাথে বুঝানোর শরয়ি নীতি হল তলোয়ারের ভাষা। আজো পর্যন্ত শরিয়তে মুহাম্মদী বলবৎ আছে বলে যদি আমাদের ঈমান থেকে, তবে আমাদের উচিত, এই মুরতাদ শাসক ও তার কুফরি শাসননীতির বিরুদ্ধে আমাদেরকে লড়াইয়ের প্রস্তুতি নেওয়া। আল্লাহ তায়ালা আমাদের চিন্তাশক্তি শাণিত করুন!

    প্রিয় ভাই, আমরা শ্রেষ্ঠ জাতি। আমাদের শ্রেষ্ঠত্ব এই জন্য যে, আল্লাহ আমাদেরকে আমর বিল মারুফ ও নাহি আনিল মুনকারের জন্য জীবনের যেকোনো সময় যেকোনো স্থানে সশস্ত্র জিহাদের সুযোগ দিয়েছেন। যা আর কোনো উম্মতকে দেওয়া হয় নি। অতএব, যখনই দেখবে, পৃথিবীতে কেউ আল্লাহর দ্বীন নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে, তলোয়ারের এক আঘাতে তার কল্লা উড়িয়ে দেবে। যখনই দেখবে, পৃথিবীর কোনো কুলাঙ্গার আল্লাহর আইন নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে, আল্লাহর কোনো বিধানকে নিষিদ্ধ করবার পায়তারা করছে, ঐ জালেমের ধড় থেকে মস্তক আলাদা করে ফেলবে।

    এই জমিন আল্লাহর। আল্লাহর জমিনে শুধু আল্লাহর দ্বীন ইসলাম চলবেই। কেউ আল্লাহর ভূমি ব্যবহার করে, আল্লাহর আলোবাতাস খেয়ে খেয়ে আবার তাঁরই কোনো বিধান রহিত করার দুঃসাহস দেখাবে, সেই জালেমের কোনো রেহাই নেই!!!

    ইনশাআল্লাহ, খোরাসানের পবিত্র ভূমি থেকে ই'দাদ ও জিহাদের যে সয়লাব শুরু হয়েছে, শরিয়তে মুহাম্মদী বাস্তবায়নের যে নবজাগরণ আজ উম্মতে মুসলিমার মাঝে শুরু হয়েছে, এই তুফানের আঘাতে উপমহাদেশসহ বিশ্বজুড়ে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে ওঠা শয়তানের দোসরগুলো সব একে একে ধুলিস্যাৎ হয়ে যাবে। এই শয়তানেরও রেহাই নেই। তুফান জালেমদেরকে অবশ্যই গ্রাস করবে।

    قُلْ هَٰذِهِ سَبِيلِي أَدْعُو إِلَى اللَّهِ عَلَىٰ بَصِيرَةٍ أَنَا وَمَنِ اتَّبَعَنِي وَسُبْحَانَ اللَّهِ وَمَا أَنَا مِنَ الْمُشْرِكِينَ ﴿يوسف: ١٠٨
    "বলে দিন, এটাই আমার কর্মপন্থা। আমি আল্লাহর দিকে বুঝে সুঝে দাওয়াত দেই। আমি ও আমার অনুসারীরা— আল্লাহর পবিত্রতা বর্ণনা করে বলছি, আমি মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত নই"। [সূরা ইউসূফ (১২): ১০৮]


    প্রিয় পাঠকবৃৃন্দ! ভুলত্রুটি জানানোর আবেদন রইল।
    ভুল-ত্রুটি জানানোর অনুরোধ রইল!!!

  • #2
    আল্লাহ কবুল ও মাকবুল করুন!

    মাশা আল্লাহ, এই পোস্টে যথেষ্ট চিন্তা-ভাবনার খোরাক রয়েছে। আশা করি লেখাটি পাঠকদের চিন্তাশক্তি আরো শাণিত করবে।
    ইয়া আল্লাহ! সম্মানিত ইবনু যামান ভাইয়ের চিন্তাশক্তিতে বারাকাহ দিন এবং উত্তম থেকে উত্তম জাযা দিন। আল্লাহুম্মা আমীন।
    মুহতারাম ভাইয়েরা- যাদের পক্ষে সম্ভব, স্যোশাল মিডিয়াতে সর্বোচ্চ শেয়ার করি এবং অফলাইনেও সাধ্যানুযায়ী ছড়িয়ে দেই।
    “ধৈর্যশীল সতর্ক ব্যক্তিরাই লড়াইয়ের জন্য উপযুক্ত।”-শাইখ উসামা বিন লাদেন রহ.

    Comment


    • #3
      আমরা সকলে বেশি বেশি শেয়ার করার চেষ্টা করবো । ইনশাআল্লাহ
      গোপনে আল্লাহর অবাধ্যতা থেকে বেঁচে থাকার মধ্যেই রয়েছে প্রকৃত সফলতা ৷

      Comment


      • #4
        Originally posted by Munshi Abdur Rahman View Post
        মাশা আল্লাহ, এই পোস্টে যথেষ্ট চিন্তা-ভাবনার খোরাক রয়েছে। আশা করি লেখাটি পাঠকদের চিন্তাশক্তি আরো শাণিত করবে।
        ইয়া আল্লাহ! সম্মানিত ইবনু যামান ভাইয়ের চিন্তাশক্তিতে বারাকাহ দিন এবং উত্তম থেকে উত্তম জাযা দিন। আল্লাহুম্মা আমীন।
        মুহতারাম ভাইয়েরা- যাদের পক্ষে সম্ভব, স্যোশাল মিডিয়াতে সর্বোচ্চ শেয়ার করি এবং অফলাইনেও সাধ্যানুযায়ী ছড়িয়ে দেই।
        আমিন ছুম্মা আমিন
        শেয়ার করবো ইনশা-আল্লাহ্।

        Comment


        • #5
          Originally posted by Munshi Abdur Rahman View Post
          মাশা আল্লাহ, এই পোস্টে যথেষ্ট চিন্তা-ভাবনার খোরাক রয়েছে। আশা করি লেখাটি পাঠকদের চিন্তাশক্তি আরো শাণিত করবে।
          ইয়া আল্লাহ! সম্মানিত ইবনু যামান ভাইয়ের চিন্তাশক্তিতে বারাকাহ দিন এবং উত্তম থেকে উত্তম জাযা দিন। আল্লাহুম্মা আমীন।
          মুহতারাম ভাইয়েরা- যাদের পক্ষে সম্ভব, স্যোশাল মিডিয়াতে সর্বোচ্চ শেয়ার করি এবং অফলাইনেও সাধ্যানুযায়ী ছড়িয়ে দেই।
          আমীন ইয়ারাব্বাল আলামীন।
          মুসলিম হয়ে জন্মেছি আমি ইসলাম আমার ধর্ম
          লড়বো আমি খোদার পথে এটাই আমার গর্ব।

          Comment


          • #6
            মাশাআল্লাহ, লেখাটি হৃদয় ছুঁয়ে গেল। একদম বাস্তবধর্মী কথা বলেছেন ভাই..আপনাকে অনেক অনেক শুকরিয়া জানাই...জাযাকাল্লাহু খাইরান।
            ‘যার গুনাহ অনেক বেশি তার সর্বোত্তম চিকিৎসা হল জিহাদ’-শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ.

            Comment

            Working...
            X