Announcement

Collapse
No announcement yet.

পাঠচক্র- ১৭|| “বাংলাদেশ ইসলামের বিজয়ের আশা জাগানিয়া ভূখণ্ড” ।। উস্তাদ উসামা মাহমুদ হাফিযাহুল্লাহ || ১ম পর্ব

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • পাঠচক্র- ১৭|| “বাংলাদেশ ইসলামের বিজয়ের আশা জাগানিয়া ভূখণ্ড” ।। উস্তাদ উসামা মাহমুদ হাফিযাহুল্লাহ || ১ম পর্ব

    আন নাসর মিডিয়াপরিবেশিত
    বাংলাদেশ ইসলামের বিজয়ের আশা জাগানিয়া ভূখণ্ড ।।
    উস্তাদ উসামা মাহমুদ হাফিযাহুল্লাহ
    এর থেকে || ১ম পর্ব

    ===================

    ভূমিকা

    الحمدللہ رب العالمین والصلاۃ والسلام علی رسول اللہ محمد وآلہ وصحبہ أجمعین وبعد!




    সমস্ত প্রশংসা রাব্বুল আলামীন আল্লাহর জন্য! রহমত ও প্রশান্তি (সালাত ও সালাম) বর্ষিত হোক রাসূল মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর, তাঁর পরিবার-পরিজন এবং সাহাবীদের ওপর।

    সালাত ও সালামের পর-



    বাংলাদেশের জনসাধারণ এবং বিশেষভাবে দীনদার ভাইদের প্রতি-

    আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু

    এটা কোনো সাধারণ ঘটনা নয় যে, যেই বাহিনী জুলুম-অত্যাচার ও অনাচারে প্রবাদতুল্য বনে গিয়েছিল, যারা বাংলাদেশের মুসলিমদেরকে মুশরিক হিন্দুদের গোলাম বানিয়ে কর আদায়ের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছিল, যাদের হাতে দীনদার ব্যক্তিরা নেহায়েত জুলুম-অত্যাচারের মুখোমুখি হচ্ছিল, আজ তাদের বিরুদ্ধে বাংলার মুসলমানেরা ক্ষোভ ও বিদ্রোহের তুফান হয়ে দাঁড়িয়েছেন। তারা না কোনো গুলির পরোয়া করেছেন, না ডাণ্ডা বেড়ির। সমস্ত প্রতিকূল দশা ডিঙ্গিয়ে অবশেষে সেকুলারিজম ও ধর্মহীনতার মূর্তিগুলো ভেঙে ফেলা হয়েছে। সেগুলো মাটির উপর মুখ থুবড়ে পড়েছে। আল্লাহর অনুগ্রহ ছিল বিধায় খুব বেশি সময় এই গণজোয়ার থামিয়ে দেয়া সম্ভব হয়নি।

    এভাবেই অপরাধীর দল পালিয়ে গিয়েছে এবং জুলুম অত্যাচারের একটা যুগের অবসান ঘটেছে। আজ জনসাধারণের চেহারায় যেই প্রত্যয়-দীপ্তি, তাদের বুকে যেই জযবা ও উদ্দীপনা এবং তাদের চোখে যে আশা ও প্রত্যাশার আলো দেখা যাচ্ছে, তা কেমন যেন এ কথা ঘোষণা করছে যে, এই জাতি এখন আর জুলুম অত্যাচার, অন্যায়-অনাচার সহ্য করে নেবে না। তারা এখন কুফর ও নাস্তিকতাকে আর প্রচার-প্রসার হতে দেবে না। লাঞ্ছনা ও ভয়ের চাদর তারা ঝেড়ে ফেলেছে। সম্মান-মর্যাদা, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ও ন্যায়-ইনসাফের জন্য জীবন দিতে জাতিগতভাবে তারা শিখে গিয়েছে। এই লড়াই এখন তাদের জাতীয় লড়াই। আল্লাহ তাদের এই উদ্দীপনা স্থায়ী করুন এবং এই জাতিকে প্রতিটি বিষয়ে সঠিক পথ ও অবিচল থাকার নেয়ামত দান করুন। এই আন্দোলনে ছাত্র জনতা যারাই অংশগ্রহণ করেছে তারা অবশ্যই প্রশংসার দাবিদার। জুলুম অত্যাচারের বিরুদ্ধে এই সংগ্রামে যারা শহীদ হয়েছেন আল্লাহ তাদের উপর রহম করুন। আহতদেরকে আল্লাহ তাআলা সুস্থতা দান করুন। এখন সকলকে তিনি এই তাওফীক ও অবিচলতা দান করুন যে, তারা আর কখনো জুলুমের সামনে মাথা নত করবে না, কখনো শয়তানের গুণাবলি সম্পন্ন প্রতারকদের দ্বারা প্রতারিত হবে না। নিজেদের প্রত্যয়, দৃঢ়তা, ইখলাস, একনিষ্ঠতা এবং কর্ম প্রচেষ্টাকে ওই সময় পর্যন্ত নিজেদের হাতিয়ার হিসেবে তারা ধরে রাখবে, যতদিন পর্যন্ত বাংলাদেশ ইসলামের প্রকৃত দুর্গ হয়ে না ওঠে; যতদিন পর্যন্ত সত্যিকার অর্থে এখানে ইনসাফ ও ন্যায় সঙ্গত ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত না হয়।



    বিপ্লবের সাফল্য …… গন্তব্য এখনো অনেক দূরে!

    প্রিয় ভাইয়েরা! এই সময়টা নিঃসন্দেহে আনন্দের। কিন্তু আমি আপন ভাইদের কাছে অত্যন্ত শ্রদ্ধার সঙ্গে তুলে ধরতে চাই, এটাই আমাদের গন্তব্য নয়। গন্তব্য এখনো অনেক দূরে। যদি আমরা সজাগ ভাবে সচেতনতা ও দায়িত্বশীলতার সঙ্গে কাজ না করি, তাহলে আশঙ্কা রয়েছে যে, এই বিজয় ও আনন্দ আমাদেরকে নিজেদের আসল গন্তব্য থেকে অনেক দূরে ঠেলে দিবে। শুধু কিছু ব্যক্তি ও চেহারার পরিবর্তন এবং দুটি চারটি সংশোধনীর দ্বারা এই জুলুম ও অনাচার পূর্ণ ব্যবস্থার পরিবর্তন ঘটতে পারে না। কারণ এই ব্যবস্থার ভিত্তি অনেক গভীরে এবং সেগুলো অনেক পুরানো। এই ব্যবস্থার সঙ্গে দুনিয়ার অনেক বড় বড় শয়তানের স্বার্থ মিশে আছে। বিপ্লব অনেক বড় বিষয়। জনসাধারণের জেগে ওঠা এবং অতি উচ্চ লক্ষ্য সামনে রেখে জালিমের মুখোমুখি হওয়া ছোটখাট ব্যাপার নয়। কিন্তু তার চেয়ে বড় বিষয় হলো এই বিপ্লবের সাফল্য এবং সুফলগুলো ঘরে তুলতে পারা।


    আরব বসন্তের ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা


    সম্মানিত ভাইয়েরা! আপনারা জানেন যে, কয়েক বছর পূর্বে পৃথিবীবাসী আরব বসন্ত দেখেছে। লক্ষ লক্ষ কোটি কোটি মানুষ ঘর ছেড়ে বেরিয়ে এসেছে। এত বিরাট আন্দোলন আরব বিশ্ব ইতিপূর্বে কখনো দেখেনি। সেখানেও শাসকদের পতন হয়েছে। ব্যক্তি পরিবর্তন হয়েছে। মিশরে তো ৩০ বছর যাবৎ চেপে বসা সামরিক স্বৈরাচারী শাসক জেলে চলে গিয়েছে। শুধু তাই নয় বরং তারপর ইলেকশন হয়েছে। জনপ্রতিনিধিরা সরকার গঠন করেছে। কিন্তু তারপর কি হয়েছে? কিছুদিন পর ওই জনপ্রতিনিধিদেরকে হয় জেলে পাঠানো হয়েছে অথবা শহীদ করে দেয়া হয়েছে। আজও অত্যাচারী এবং শত্রুবাহিনীর তাবেদার বাহিনী এককভাবে মিশরের শাসন ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রেখেছে। আরব বিশ্বের কোনো একটি দেশেও বিপ্লব তার গন্তব্য পর্যন্ত পৌঁছুতে পারেনি। জনসাধারণ আগের মতোই বঞ্চিত, নিপীড়িত এবং পরাজিত রয়ে গেছে। জনগণের ও ইসলামের শত্রুরা আজও বিজয়ী হয়ে বসে আছে।


    একই কথা পাকিস্তানের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। সেখানেও জনসাধারণ অগণিত বার আন্দোলন করেছেন। কখনো এই নামে কখনো ওই নামে। প্রত্যেকবার দাসত্বের শৃঙ্খল ভেঙে ফেলার আশা দেয়া হয়েছে, কিন্তু পাকিস্তানের ইতিহাস সাক্ষী, সেখানে বাহ্যিকভাবে যাকেই ক্ষমতার চেয়ারে বসানো হয়েছে, প্রতিবার আসল ক্ষমতা দীনের দুশমন ফৌজি জেনারেলদের হাতেই থেকেছে।

    এ কারণে আজ যদি আমরা কিছু বাহ্যিক সাফল্য পেয়ে তৃপ্তির ঢেকুর তুলি, এতোটুকুতেই আশ্বস্ত হয়ে পড়ি, ইসলামী বিশ্বের বিপ্লবগুলোকে ব্যর্থ ও অকার্যকর করার যেই দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে তা থেকে শিক্ষা গ্রহণ না করি, গালভরা স্লোগান ও চিল্লাচিল্লিতে যদি উচ্চাভিলাষী হয়ে পড়ি, তাহলে সেটা আমাদের অনেক বড় দুর্ভাগ্যের কারণ হবে। এই জাতির সঙ্গে ওই সমস্ত জুলুম অত্যাচারের কিছুই বদলাবে না, যেগুলো বিগত ৭০ বছর যাবৎ নিজেদের এবং অন্যদের হাতে এই জাতি সহ্য করে এসেছে। এমনকি আজ জনসাধারণ এ কথা কল্পনাও করতে পারছে না যে, তারা আরও বেশি প্রতারিত হবে এবং নিজেদের ব্যাপারে শত্রুদেরকে হাসাবে। আজ মুসলিম উম্মাহর সামগ্রিক অবস্থা এমন নয় যে, আরো একবার ইখলাস, একনিষ্ঠতা, সদিচ্ছা এবং পবিত্র উদ্দীপনা অবলম্বন করে জনসাধারণ বিরাট ত্যাগের নজরানা পেশ করবে।





    আরও পড়ুন
    Last edited by tahsin muhammad; 4 days ago.

  • #2
    জাযাকাল্লাহ খাইরান
    গুরুত্বপূর্ণ এই প্রবন্ধটি পাঠচক্রাকারে পোস্ট করার জন্য।

    Comment

    Working...
    X