আন নাসর মিডিয়াপরিবেশিত
“বাংলাদেশইসলামের বিজয়ের আশা জাগানিয়া ভূখণ্ড” ।।
উস্তাদ উসামা মাহমুদ হাফিযাহুল্লাহ
এর থেকে || শেষ পর্ব
===================
“বাংলাদেশইসলামের বিজয়ের আশা জাগানিয়া ভূখণ্ড” ।।
উস্তাদ উসামা মাহমুদ হাফিযাহুল্লাহ
এর থেকে || শেষ পর্ব
===================
দীনদার শ্রেণির কর্তব্য ও এর তিনটি মৌলিক কারণ!
এ প্রসঙ্গে আমাদের পক্ষ থেকে মৌলিক ও সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ আবেদন হলো এই যে, দীনদার শ্রেণির কর্তব্য হলো সরকারের থেকে পুরোপুরি অমুখাপেক্ষী হয়ে জনসাধারণের মাঝে দাওয়াত ও আন্দোলনের প্রচার-প্রসার ঘটানো, আন্দোলন ও বিপ্লবের প্রস্তুতিকে আরো শক্তিশালী করা, তারই ভিত্তিতে সরকারকে বিভিন্ন সংশোধনী আনতে বাধ্য করা। এই কর্মপন্থা তারা অবলম্বন করবে। এই আবেদনের পেছনে তিনটি মৌলিক কারণ রয়েছে:
এক. এই বাস্তবতা আমরা ভুলে থাকতে পারি না যে, যতদিন পর্যন্ত এখানে ঔপনিবেশিক আমলের গঠিত ও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সেনাবাহিনী বিদ্যমান থাকবে এবং তাদের স্থলে আকীদা-বিশ্বাস চিন্তাধারা দৃষ্টিভঙ্গি ও কর্মপন্থার দিক থেকে বিশুদ্ধ ইসলামী বিপ্লবী বাহিনী না দাঁড়াবে, ততদিন পর্যন্ত দীনদারদের কোনো প্রতিরোধ, প্রতিরক্ষা ও নির্বাহী শক্তি যেহেতু অর্জিত হবে না, সেজন্য ওই সময় পর্যন্ত দীনদারগণ বিশ্বাসঘাতক সেনাবাহিনীর দয়ার ওপর নির্ভরশীল হয়ে থাকবে। সেনাবাহিনী যখন ইচ্ছা তাদেরকে সরকারি বাড়িতে থাকতে দেবে, আবার যখন ইচ্ছা ফাঁসিতে ঝোলাবে, তাদের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে, তাদেরকে জেলে ভরবে। এ কারণে দীনদারদের এমন দুর্বলতা এবং সেনাবাহিনীর শক্তি সক্ষমতার এই পরিস্থিতিতে কর্তব্য হলো- নিজেদের দাওয়াতকে বিস্তৃত সাধন ও ব্যক্তি ও সমাজের শক্তিময় অবস্থান তৈরির প্রতি মনোনিবেশ করা। এ কাজের জন্য জনসাধারণের মাঝে নিজেদের দাওয়াত ও আন্দোলনের শিকড় অত্যন্ত গভীরে প্রোথিত করতে হবে। কিন্তু তার পরিবর্তে যদি ইসলামপন্থীরা সেনাবাহিনীর ওপর নির্ভর করে সরকারের অংশীদার বনে যায়, তাহলে সেটা নিজেদের আন্দোলনের পায়ে নিজেদেরই কুঠারাঘাত করার সমতুল্য হবে।
দুই. যে রাজনৈতিক পক্ষগুলোকে আজ হাসিনা ওয়াজেদের পতনে সাহায্যকারী ও জোটবদ্ধ দেখা যাচ্ছে, ইসলামকে সামাজিক ও জীবন ব্যবস্থা হিসেবে গ্রহণের ক্ষেত্রে তাদের মধ্য থেকেই বিরাট অংশকে আগামীকাল ইসলামপন্থীদের বিরোধিতা করতে দেখা যাবে। তারা আপনার পথে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করবে। ইসলাম ও কুফর নিয়ে তাদের কোনো মাথাব্যথা নেই। তাদের নীতি হলো শুধু দুর্নীতির অভিযোগ ও পেরেশানি। তারা আজ ভারতের ক্রীতদাসদের প্রতি অসন্তুষ্ট দেখা যাচ্ছে কিন্তু আমেরিকার ক্রীতদাসদের ব্যাপারে তাদের কোনো অভিযোগ নেই। যারাই তাদের প্রবৃত্তির চাহিদা পূরণ করার জন্য কাজ করবে, রাজনৈতিক পক্ষগুলো তাদের হাতেই নিজেদেরকে সঁপে দেবে।
তিন. এই শাসন ব্যবস্থা দাঁড়িয়ে আছে গাইরুল্লাহর ইবাদত ও দাসত্ব এবং আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআলার সঙ্গে বিদ্রোহাত্মক দৃষ্টিভঙ্গির উপর। শরীয়তের নীতিমালার আলোকে এই শাসন ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব ও কর্তব্য। যতদিন পর্যন্ত এই কাজের জন্য দীনদারদের মাঝে আপনা আপনি এমন শক্তি দেখা না দিবে, পথ চলতে গিয়ে যে শক্তির সামনে কোনো রাজনৈতিক অথবা সামরিক প্রতিবন্ধকতা টিকে থাকতে পারবে না, ততদিন পর্যন্ত এই শাসন ব্যবস্থায় সরাসরি অংশগ্রহণের মাধ্যমে সত্যকে বিজয়ী করা সম্ভব হবে না; বরং এর দ্বারা উল্টো জুলুম ও সীমালঙ্ঘনের ওপর প্রতিষ্ঠিত ধর্মহীন শাসন ব্যবস্থা আরো শক্তিশালী হবে। তাগুতি শাসন ব্যবস্থায় যখনই দীনদারদেরকে সরকারে শামিল করা হয় তখন এর দ্বারা ওই শাসন ব্যবস্থা মোটেও ইসলামী হয়ে ওঠে না; বরং এ কাজের দ্বারা দীনদারদেরকে অকাট্য সুসংহত ইসলামী নীতিমালার ব্যাপারে আপোষ করতে হয়। এভাবে নিজেদের দাওয়াত ও আন্দোলনের প্রতি ফোকাস রাখা এবং মিথ্যার বিরুদ্ধে শক্তিশালী হবার পরিবর্তে মিথ্যাকেই আরো শক্তিশালী করা হয়। এভাবেই দীনদাররা আল্লাহর সমর্থন ও সাহায্য থেকে প্রকৃত অর্থে বঞ্চিত হয়ে যায়।
এ কারণে উচিত তথা করণীয় হলো, দীনদার শ্রেণি আগামী সরকারে নিজেরা শামিল থাকাকে লক্ষ্য স্থির করার পরিবর্তে বর্তমান এই বিপ্লব ও পরিবর্তনকে আল্লাহর দীনের বিজয়ের জন্য ব্যবহার করার সুচিন্তিত পরিকল্পনা ও পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। জনসাধারণকে সেই রূপরেখা লক্ষ্য-উদ্দেশ্যে দীক্ষিত করবেন। তাদের মাঝে আত্মশুদ্ধিমূলক কার্যক্রম চালাবেন। নিজস্ব শক্তিময় ও সুদৃঢ় অবস্থান তৈরির জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করবেন। এই প্রেক্ষাপটে নিজেদের বিপ্লবী শক্তি ও আন্দোলনের মাধ্যমে সেনাবাহিনী ও আমলাতন্ত্রসহ সমগ্র ব্যবস্থার তদারকি ও সংস্কারের দায়িত্ব গ্রহণ করবেন। আমলাতন্ত্র থেকে ইসলাম বিরোধীদেরকে অপসারণ করার পদক্ষেপ নীতি-কৌশল গ্রহণ করবেন। এই কাজের দায়িত্ব নিজেদের কাঁধে তুলে নেবেন। মোটকথা তারা প্রচলিত ব্যবস্থায় বিদ্যমান ইসলামের দুশমন ও গণশত্রুদের অপসারণকে নিজেদের আন্দোলনের লক্ষ্য হিসেবে স্থির করবেন।
অতএব আমাদের কর্তব্য দীনদার ব্যক্তিদেরকে কল্যাণের দিকে ডাকা, সৎ কাজের আদেশ করা, অসৎ কাজে বাধা প্রদান করার মতো গুরুত্বপূর্ণ ও বিশুদ্ধ শরীয়তের বিষয়গুলোর ওপর কাজ করার জন্য রূপরেখা তৈরি করতে হবে। তাগুতকে অস্বীকার, শাসনতন্ত্রে আল্লাহর একক কর্তৃত্বের অনুভূতি, শরীয়ত পালনের আবশ্যকতা, আল্লাহর জন্য ভালোবাসা ও ঘৃণা, আল্লাহর জন্য বন্ধুত্ব ও শত্রুতা— এ জাতীয় ইসলামের মৌলিক বিষয়গুলোকে নিজেদের দাওয়াত ও আন্দোলনের মূল পয়েন্ট তথা উপাদান বানাতে হবে।
বাংলা কীভাবে ইসলামের মুজাহিদদের প্রস্তুতিকেন্দ্র হিসেবে পরিগণিত হবে?
হে আমার প্রিয় ভাইয়েরা!
এই আন্দোলন কঠিন চেষ্টা-প্রচেষ্টা, নিরন্তর সাধনা, বিরাট ত্যাগ ও বিসর্জন, শেষ সময় পর্যন্ত দৃঢ়তা অবিচলতা ও অটলতা অবলম্বন করে চূড়ান্ত লক্ষ্যে উত্তীর্ণ হওয়া পর্যন্ত অব্যাহত রাখাই আমাদের কাছে দাবি করছে। কিন্তু কার্যকারিতার দিক থেকে ইনশাআল্লাহ এই আন্দোলন ঐ সমস্ত কর্ম প্রয়াস থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন হবে, অতীতে যেগুলোর এক্সপেরিমেন্ট করা হয়েছে। দাওয়াত-তরবিয়ত, শিক্ষা-দীক্ষা-প্রশিক্ষণ, প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ হলো আমাদের এই আন্দোলনের হাতিয়ার। তাৎক্ষণিকভাবে গন্তব্য আমরা দেখতে পাবো না এবং বিদ্যমান বাস্তবতায় কোনোভাবেই সেই গন্তব্যে আমরা পৌঁছতে পারবো না। কিন্তু এই আন্দোলন শুরু করার পর এক একটি দিন অতিবাহিত হবে, আমরা এক-একটি পদক্ষেপ গ্রহণ করব আর এদিকে এদেশের জনসাধারণ গন্তব্যের নিকট থেকে নিকটতর হতে থাকবে। উম্মাহর বৈশ্বিক পরিমণ্ডলে সত্য-মিথ্যার মধ্যকার লড়াই চলাকালেও এই অঞ্চলের মুসলিমরা শক্তিশালী ও কার্যকরী ভূমিকা পালন করবে। এভাবেই যেই বাংলা কোনো এক সময় জায়নবাদী হিন্দুত্ববাদীদের সামরিক বুদ্ধিবৃত্তিক চিন্তাগত কেন্দ্র ও মোর্চা হিসেবে বিবেচিত হতো, এই আন্দোলনের বদৌলতে আল্লাহর ইচ্ছায় তা ইসলামের মুজাহিদদের প্রস্তুতিকেন্দ্র হিসেবে পরিগণিত হবে ইনশাআল্লাহ।
খুবই পিচ্ছিল যে পথ!
কিন্তু হে আমার প্রিয় ভাইয়েরা!
তার বিপরীতে আরেকটা পথ আছে যা খুবই পিচ্ছিল। বিগত ৭০-৮০ বছর যাবৎ শুধু উপমহাদেশ নয় বরং গোটা মুসলিম বিশ্বের ইতিহাসে দীনদারদের এই অভিজ্ঞতার কথা লিখিত রয়েছে যে, তাদের রাজনৈতিক কর্মপ্রয়াস এবং প্রচলিত সরকার ব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্তিমূলক চেষ্টা প্রচেষ্টা পাকিস্তান, মিশর, বাংলাদেশ ও তিউনিসিয়া কোথাও তাদের জন্য কোনো প্রকার কল্যাণ বয়ে আনেনি; বরং বাস্তবতা হলো: প্রচলিত সরকার ও সেনাবাহিনীর বিপরীতে যেখানে ধর্মীয় দলগুলোর কর্তব্য ছিল সৎ কাজের আদেশ করা অসৎ কাজে বাধা প্রদান করা, সেখানে তারা ইসলামের শত্রুদের প্রণীত শাসন ব্যবস্থাকে সমর্থন ও হেফাযতের কাজ করেছেন। ফলস্বরূপ রাষ্ট্র ও সমাজে ইসলামের শত্রু ও ইসলাম বিদ্বেষী শক্তিগুলো আরো বেশি শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। এরপর দীনদারদেরকে ফাঁসানো হয়েছে, তাদের উপর গুলি চালানো হয়েছে, তাদেরকে দেশান্তর করা হয়েছে, তাদের দাওয়াত ও আন্দোলনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে, কিন্তু এতসব ত্যাগ ও বিসর্জনের পরেও তারা দুর্বল থেকে গেছেন। সেনাবাহিনী নামক কুফরী শক্তিগুলো আরো সুসংহত হয়েছে। এতই শক্তিশালী হয়েছে যে, আজ গাজা উপত্যকায় ইসরাঈলি সেনাবাহিনীর রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব তাদেরকে দেয়া হয়েছে। এরাই ওই সেনাবাহিনী, যারা নিজেদের দেশে বিগত ত্রিশ বছর যাবৎ আল-কুদসের মুজাহিদদের বিরুদ্ধে আমেরিকা ও ইসরাঈলের পক্ষে প্রতিরক্ষামূলক লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে।
তাই আমাদের মনে রাখতে হবে, ঈমানদার কখনো এক গর্তে দুইবার দংশিত হয় না। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন:
لَا يُلْدَغُ مُؤْمِنٌ مِنْ جُحْرٍ وَاحِدٍ مَرَّتَيْنِ
অর্থ: “কোনো ঈমানদার একই গর্তে দুইবার দংশিত হয় না।” (বুখারী শরীফ)
আমরা মুসলিমরা নিজ নিজ রাষ্ট্রে রাষ্ট্রীয় সেনাবাহিনী ও সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যাপারে নিজেদের কর্মপন্থা নিয়ে যদি দ্বিতীয়বার চিন্তাভাবনা না করি, আল্লাহর দীন ও উম্মাহর প্রয়োজনে যদি আমরা লাব্বাইক বলতে না পারি, আত্মশুদ্ধি, সংস্কার, সংশোধন কার্য, প্রতিবাদ ও প্রতিরোধের মাধ্যমে ইতিহাস ও বুদ্ধিবৃত্তিক এমনকি পৃথিবীর যেকোনো প্যারামিটারে আজ আমাদের কাঁধে চেপে বসা ধর্মীয় ও জাতীয় দায়িত্ব পালনে যদি আমরা সাড়া না দিই, তাহলে বলতেই হবে, সামগ্রিকভাবে দ্বিতীয়বার আমরা পুরানো গর্ত থেকে দংশিত হতে যাচ্ছি। এই দংশনের ফলেই আজ গাজায় আমাদেরকে জবাই করা হচ্ছে। কাশ্মীরে আমাদেরকে হত্যা করা হচ্ছে। পাকিস্তান ও হিন্দুস্তানেও আমাদেরকে কোণঠাসা করে ফেলা হচ্ছে। আমরা যদি এভাবেই চলতে থাকি তাহলে নিশ্চিতভাবে আমাদের জেনে রাখা উচিত, আল্লাহ তাআলা তাঁর দীনের জন্য অনেক আনসার ও মুজাহিদ তৈরি করবেন। কিন্তু আমরা সত্য-মিথ্যার এই লড়াইয়ে নিজেদেরকে এই যেই পজিশনে দাঁড় করাচ্ছি, তার ভয়াবহতা দুনিয়াতে তো আমরা দেখতে পাবোই কিন্তু আখিরাতে যদি আমাদেরকে জিজ্ঞেস করা হয়, তোমরা কেন নিজেদেরকে অসম্মান, লাঞ্ছনা ও ব্যর্থতার পথে নিক্ষেপ করেছিলে, তখন আমরা কি জবাব দেব? যদি আমাদেরকে জিজ্ঞেস করা হয়, কেন তোমরা শক্তি অর্জন ও প্রস্তুতি গ্রহণে আত্মনিয়োগ করোনি? কেন তোমরা নিজেদের দায়িত্ব পালন করোনি? আল্লাহ তাআলার কাছে প্রত্যাশা রাখি, আমাদের প্রিয় বাংলাদেশি ভাইয়েরা ইসলামকে বিজয়ী করার পথে পা বাড়াবেন, তারা ইসলামের শত্রুদের সমস্ত হাতিয়ার ও অস্ত্র এবং পরিকল্পনা ও ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করে দেবেন ইনশাআল্লাহ। তারা জুলুমের সামনে কখনো মাথা নত করবেন না। তারা কখনো প্রতারকদের দ্বারা প্রতারিত হবেন না। বরং তারা আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল ও ভরসা করে ওই সমস্ত শয়তানের সামনে থেকে ঈমানদারদের ঘাড়ে চেপে বসার সকল পথ বন্ধ করে দেবেন ইনশাআল্লাহ।
আমেরিকার নেতৃত্বে জায়নবাদী-হিন্দুত্ববাদী জোট সম্পর্কে আমাদের নিবেদন
পরিশেষে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় নিবেদন করতে চাই- ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর বিরুদ্ধে আমেরিকার নেতৃত্বে জায়নবাদী হিন্দুত্ববাদী জোটের পরিচালিত গাজার ধ্বংসলীলা আপনারা দেখতে পাচ্ছেন। সত্য কথা হলো আজ মুসলিম বিশ্ব প্রত্যক্ষভাবে অথবা পরোক্ষভাবে এই জোটের অধীন। তাদের জুলুমের কারণে পাকিস্তান, হিন্দুস্তান এবং কাশ্মীর থেকে নিয়ে গাজা ও আরব বিশ্ব পর্যন্ত গোটা মুসলিম বিশ্বে হাহাকার চলছে। বাংলাদেশে এতদিন যে সমস্ত জুলুম-অত্যাচার হয়েছে, সেগুলো এই জায়নবাদী হিন্দুত্ববাদী জোটের পরিচালিত নির্যাতন-নিপীড়নেরই একাংশ। কুফরী শক্তির কর্তা ব্যক্তি এবং তাদের তাবেদারদের বিরুদ্ধে জিহাদ করা প্রতিটি মুসলমানের উপর ফরযে আইন। তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করা আজ উম্মাহর সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ কর্তব্য। বৈশ্বিক পরিসরে এই লড়াই হবে। সেই লড়াইয়ে কুফরী শক্তির শীর্ষ ব্যক্তিদের স্বার্থগুলো আমাদের টার্গেট এবং আমাদের হামলার শিকার হবে। তাতে তাদের অহংকারের প্রাসাদ ভেঙে পড়বে আর তখনই আমাদের সাফল্য আসবে ইনশাআল্লাহ। সে সময় গাজার মুসলিমরা পুনরায় প্রশান্তির সঙ্গে শ্বাস নিতে পারবে। সে সময় মসজিদে আকসাও স্বাধীন হবে। সে সময় উপমহাদেশের মুসলিমদের জন্যও আল্লাহ সব দিক থেকে পথ খুলে দেবেন। তাই এই লড়াইয়ে আপনি নিজেও কার্যতভাবে অংশগ্রহণ করুন এবং গোটা জাতিকে এই লড়াইয়ে নিজের সাথে দাঁড় করাবার প্রচেষ্টায় আত্মনিয়োগ করুন।
আমি আল্লাহর কাছে এই প্রার্থনার মাধ্যমে আমার আলোচনা শেষ করছি যে, আল্লাহ আপনাদের এবং আমাদেরকে সঠিক পথের দিশা দান করুন, আমাদের হৃদয়কে ঈমান ইস্তেকামাত দিয়ে অটল-সুদৃঢ় করে দেন এবং হেদায়াত দ্বারা পরিপূর্ণ করে দেন। আমাদেরকে মজলুমদের পাশে দাঁড়াবার এবং দীন ইসলামের বিজয়ের জন্য কাজ করার তাওফীক দান করুন। আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জত বাংলাদেশের মুসলিমদেরকে সকল প্রকার অকল্যাণ থেকে হেফাযত করুন, আর তিনি এদেশবাসীর ভয়-ভীতিকে নিরাপত্তা দ্বারা, দুর্বলতাকে শক্তি দ্বারা, বিক্ষিপ্তততাকে ঐক্যের দ্বারা পরিবর্তন করে দিন। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআলা তাদেরকে নিজের দীনের সাহায্যে ব্যবহার করুন, তাদেরকে দুনিয়া আখিরাতের সর্বপ্রকার কল্যাণ দান করুন এবং সর্বপ্রকার অনিষ্ট থেকে হেফাযত করুন, আমীন সুম্মা আমীন।
وآخر دعوانا أن الحمد للہ رب العالمین!
٭٭٭٭٭
আরও পড়ুন
২য় পর্ব
Comment