তৃতীয় অধ্যায়: ময়দানে প্রত্যাবর্তন- পঞ্চম পরিচ্ছেদ:দাগিস্তান: উপায় শেষ হওয়ার পর সাহায্য- প্রথম বিষয়: ককেশাসের পরিস্থিতি নিয়ে কিছু ভাবনা- তৃতীয় ভাগ:
(পূর্ব প্রকাশের পর)
২- আগ্রাসী সরকারি বাহিনীর বিপরীতে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ঈমানদার দলগুলো
ক- ভূমিকা:
ডিসেম্বর ১৯৯৪ হতে আগষ্ট ১৯৯৬ পর্যন্ত চেচনিয়া-রাশিয়ার প্রথম যুদ্ধকে জিহাদি জনগণের একটি পরিপূর্ণ সফল যুদ্ধের আদর্শ দৃষ্টান্ত হিসাবে গণ্য করা হয় কিংবা নন-জিহাদি সমরবিদদের পরিভাষায় যাকে গেরিলা যুদ্ধ বলা হয়ে থাকে। এতে গেরিলা যুদ্ধের উপাদানগুলো সফলভাবে বাস্তবায়িত হয়েছিল। ফলে তা সুস্পষ্ট ফলাফল এনে দিয়েছে, যেমনটা এক্ষুণি আনাতুল লেভিন উল্লেখ করলেন। এখন আমি এ যুদ্ধে চেচেন মুজাহিদগণ ও তাদের সহযোগীদের কিছু সফল কর্মপন্থার উপর (-সবগুলোর উপর নয়) আলোকপাত করব, যা রাশিয়ান সেনাদের নাক ধুলোয় ধুসরিত করে দিয়েছে।
খ- গেরিলা যুদ্ধ হল শক্তিমানদের বিরুদ্ধে দুর্বলদের যুদ্ধ। একারণে এটা সামরিক সমাপ্তির দিকে যায় না। বরং শত্রুকে অব্যাহত ক্ষতি বরদাশত করিয়ে এক পর্যায়ে নিরাশ করে যুদ্ধ থামাতে এবং আলোচনা করতে বাধ্য করার মাধ্যমে একটি রাজনৈতিক পরিসমাপ্তির দিকে যায়।
আবু বকর আকিদাহ বলেন:
“রাশিয়ান সেনাবাহিনী চেচনিয়ার ভূমিতে ঢুকে পড়ে এবং ২২ মাস ব্যাপী সেখানে প্রায় পরিপূর্ণভাবে ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু এটা তাদের স্বীকারুক্তি মতেই তাদেরকে নব্বই হাজার লাশ ফেলে আসতে বাধ্য করে। আর প্রকৃত সংখ্যা এর থেকে অনেক বেশি হবে। এছাড়াও অসংখ্য আহত, অচল এবং বিশাল উপকরণগত ক্ষতি, যা তাদেরকে এই অন্ধ গলি থেকে বের হওয়ার জন্য একটি সম্মানজনক পথ খোঁজতে করতে বাধ্য করে। কারণ চেচনিয়ায় এভাবে চলতে থাকা তাদের জন্য ধ্বংসাত্মক।”
আবু মুসআব আস-সুরী (আল্লাহ তাকে কারামুক্ত করুন) বলেন:
“গেরিলা যুদ্ধের পদ্ধতিটি বিভিন্ন সামরিক কলা-কৌশল নিয়ে গঠিত একটি শিল্প, যা বর্তমানে পরিচিত ও সমাদৃত হয়ে গেছে এবং বিভিন্ন মূলনীতি সহ একটি শাস্ত্রে পরিণত হয়েছে। যেখানে দুর্বলগণ তাদের স্বল্প সামর্থ্য নিয়ে কাজ চালিয়ে যায় দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধের মাধ্যমে প্রতিপক্ষকে এমন একটি রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে নিয়ে যেতে বাধ্য করার জন্য, যা তার সামনে দু’টি অপশনই বাকি রাখে: হয়ত যুদ্ধ থেকে সরে পড়া অথবা ভিতর থেকে ধ্বংস হয়ে যাওয়া।
গেরিলা যুদ্ধের গোটা ইতিহাসে কখনো এটা যুদ্ধের অর্জন হিসাবে প্রতিপক্ষের শক্তি ও সেনাবাহিনীকে পরিপূর্ণ ধ্বংস করার যুদ্ধ হিসাবে পরিগণিত ছিল না। বরং আধুনিক যুগের তেমন কোন যুদ্ধই শত্রুপক্ষের চূড়ান্ত আক্ষরিক ধ্বংসের মাধ্যমে সমাপ্ত হয় না, একেবারে বিরল কিছু স্থান ব্যতিত। বরং এখন যুদ্ধগুলো শত্রুপক্ষকে এমন কোন রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতির মধ্যে নিয়ে যায়, যা তাকে পরাজয় ও ব্যর্থতার অবস্থানে ফেলে দেয়।
..................
এ স্থানের সারকথা ও প্রতিপাদ্য বিষয় হল: গেরিলা যুদ্ধ বিভিন্ন রাজনৈতিক উপায় ও মিডিয়ার মাধ্যমে সংখ্যা, শক্তি ও সামর্থ্যরে দিক থেকে নিজেদের থেকে বহুগুণ উপরের শত্রুর বিরুদ্ধে নিজেদের ছোট ছোট গ্রুপ বা দুর্বল যোদ্ধাদের সামরিক চেষ্টা-প্রচেষ্টার একটি নিশ্চিত ফলাফল প্রদান করে। অর্থাৎ যুদ্ধে সামরিক প্রচেষ্টা, মিডিয়া কার্যক্রম ও রাজনৈতিক কলা-কৌশলের সমন্বয় ঘটিয়ে দীর্ঘমেয়াদি ক্ষয়যুদ্ধের মাধ্যমে শত্রুকে দেশীয় জনমত কিংবা আন্তর্জাতিক জনমতের চাপের মুখে ফেলে এমনভাবে পতনের অবস্থায় নিয়ে যাওয়া, যাতে এ অবস্থায় যুদ্ধ চালিয়ে গেলে নিজেদের অস্তিত্বের স্তম্ভগুলো ঠিক রাখা এবং নিজেদের স্বরাষ্ট্রীয় ও বহির্রাষ্ট্রীয় সম্পর্কগুলো ঠিক রাখা অসম্ভব হয়ে পড়ে।
মোটকথা, এ ধরণের প্রতিরোধে সামরিক বিজয়টি হয় রাজনৈতিক প্রকৃতির। তবে এটা বাস্তবিক সামরিক কার্যক্রম এবং এমন লড়াই ছাড়া বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়, যা শত্রুকে বাস্তবিক আঘাত ও কার্যকরী ক্ষয়-ক্ষতির সম্মুখীন করে। ”
হানি আদ দারদিরী বলেন:
“সুতরাং গেরিলা যুদ্ধ হল সামরিক শক্তির বিরুদ্ধে রাজনৈতিক যুদ্ধ। স্বৈরাচারি সামরিক শক্তির মোকাবেলায় বিশ্বাসগত অবিচলতার যুদ্ধ। অর্থাৎ এটি বস্তুতগতভাবে শক্তিশালীর বিরুদ্ধে দুর্বলের যুদ্ধ। এ হিসাবে এটা তখনই বাস্তবায়ন করা সম্ভব, যখন আমরা সামরিক সমাপ্তি থেকে দূরে থাকব এবং এর পরিবর্তে রাজনৈতিক সমাপ্তির আশ্রয় নিব, যেমনটা সামনে আলোচনায় আসবে ইনশাআল্লাহ।
সামরিক সমাপ্তি থেকে বেঁচে থাকার জন্য গেরিলা যোদ্ধগণ যেকোন মূল্যে যুদ্ধকে দীর্ঘায়িত করতে চায়। যদিও এর জন্য স্থানগতভাবে পিছাতে হয়। কারণ যখন দিন দিন রাজনৈতিক জটিলতা বাড়ছেই, তখন এ ধরণের স্থানগত পিছু হটা কোন সমস্যা নয়।”
মুজাহিদগণের কোন ভূমি আঁকড়ে থাকার গুরুত্বহীনতা প্রকাশ করতে গিয়ে খাত্তাব রহ. বলেন:
“আমি একটি বিষয় বলতে চাই, যেটা বর্তমানে অনেক সমরবিদগণই ভুলে যান, তা হল: চেচনিয়ার শহরগুলো, এমনকি তার রাজধানীরও পতন ঘটা মুজাহিদগণের পরাজয় বুঝায় না বা রাশিয়ান বাহিনীর বিজয় বুঝায় না। বরং আমার মূল্যায়নমতে শহরগুলোর পতন তাদের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়াবে। কারণ তারা এখন আক্রমণের নীতি থেকে আত্মরক্ষার নীতি এবং পদানত অঞ্চলগুলো রক্ষা করার নীতিতে ফিরে যাবে।
প্রথম যুদ্ধের ঘটনাবলী পর্যবেক্ষণকারীগণ বুঝতে পারবেন যে, শহরগুলোর পতন মুজাহিদগণের পরাজয় ও তাদের শত্রুদের বিজয় হিসাবে পরিগণিত হয়নি। কারণ প্রথম যুদ্ধে প্রায় পুরো চেচনিয়া প্রজাতন্ত্র রাশিয়ান বাহিনীর হাতে পদানত হয়। কিন্তু তা সত্ত্বেও রাশিয়ান বাহিনী ২০ মাসের অধিক সময় ধরে চেষ্টা করে মুজাহিদ বাহিনীর সামনে টিকে থাকতে পারেনি। উপরন্তু এ যুদ্ধে মুজাহিদগণের অবস্থা তাদের পূর্বের অবস্থা থেকে আরো শক্তিশালী ছিল। অপরদিকে এ যুদ্ধে রাশিয়ান বাহিনীর অবস্থা তাদের পূর্বের অবস্থা থেকে দুর্বল ছিল। আমরা আল্লাহর নিকট আশা রাখি, তিনি নিজ সাহায্যের মাধ্যমে আমাদেরকে শক্তিশালী করবেন এবং আমাদের শত্রুদেরকে পরাজিত করবেন। নিশ্চয়ই তিনি এর উপর সামর্থ্যবান। তাই যত যাই হোক, আমরা তো বস্তুগত ও সামরিক পরিমাপের উপর ভরসা করতে পারি না। আমরা ভসরা করব বিশ^জগতের রবের শক্তি ও অনুগ্রহের উপর ।”
গ- তাই গেরিলা যুদ্ধ হল জনগণ ও উম্মাহর যুদ্ধ। অর্থাৎ জনগণের অগ্রবাহিনী পুরো জনগণ ও উম্মাহর প্রতিরক্ষার জন্য যুদ্ধ করে। এজন্য যখন গেরিলা যোদ্ধাদের জনসমর্থন থাকবে না, তখন তারা যেন নিজেদের জন্য পরাজয় অবধারিত করে নিল।
ক্লজ ফিটস তার বই ‘যুদ্ধে’ এর মধ্যে গুরুত্বের সঙ্গে বলেন: এমন কিছু শর্ত আছে, যা গেরিলা যুদ্ধ সফলভাবে চলমান থাকার জন্য মৌলিক হিসাবে গণ্য। তা হল: এ আন্দোলনকে অবশ্যই জনসমর্থন অর্জন করতে হবে, দেশের ভিতরে আক্রমণ করতে হবে এবং দূর্গম অঞ্চলের এমন বিশাল দূরত্বের মধ্যেও আক্রমণ করতে হবে, যেখানে পৌঁছা কঠিন। এমনিভাবে তিনি এও উল্লেখ করেন যে, কোন একটি ঘটনা এর ফলাফল চূড়ান্ত করতে পারে না।
এজন্য গেরিলা যুদ্ধে লিপ্ত মুজাহিগণ কখনো কোন স্থান থেকে পিছু হটতে বাধ্য হলে বা কোন যুদ্ধে পরাজিত হলে নিরাশ হওয়া উচিত নয়।
এই জনসমর্থনের ব্যাপারেই রবার্ট তাবার বলেন:
“যখনই আমরা গেরিলা যুদ্ধ নিয়ে কথা বলি, তখনই আমাদের চিন্তা-ভাবনায় রাজনৈতিক বিজয়ের চিন্তা-ভাবনাগুলো উদয় হয়। একজন গেরিলা একজন স্বশস্ত্র নাগরিক, যার প্রধান অস্ত্র বন্দুক বা ছুরি নয়, বরং প্রধান অস্ত্র হল জনগণ ও জাতির সাথে সম্পর্ক, যাদের ছত্রছায়ায় ও যাদের স্বার্থেই এ যুদ্ধ করছে। ”
তিনি আরো বলেন:
“এখন থেকে আমাদেরকে সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করতে হবে যে, জনগণই পুরো যুদ্ধের চাবি হিসাবে গণ্য। এটাই বাস্তব। এই চিন্তা-ধারাটি পশ্চিমা বিশ্লেষকদের যতই ক্রোধের কারণ হোক, প্রকৃতপক্ষে জনগণই যুদ্ধ চালিয়ে নিয়ে যায়। গেরিলা সদস্যগণ জনগণের সাথে এ পরিমাণ সম্পৃক্ত থাকবে, যে পরিমাণ সরকারি সৈনিকরা পারবে না। “যদি সরকার জনগণের ভালোবাসা না হারাত, তাহলে তো বিদ্রোহের উদ্ভবই ঘটত না।”
গেরিলাগণ দেশীয় জনসাধারণের সাহায্য নিয়ে যুদ্ধ করে। এ জনগণই তার ছদ্মবেশ, তার সাহায্যের উৎস, তার অনুদানের কেন্দ্র, তার যোগাযোগের জাল এবং তার গোয়েন্দা পরিসেবা হিসাবে বিবেচিত হয়। যারা সব জায়গায় আছে এবং অত্যন্ত কার্যকরী।
তাই জনগণের সম্মতি ও কার্যকর সহযোগীতা ছাড়া গেরিলা যোদ্ধাগণ ডাকাত দলে পরিণত হবেন এবং বেশিদিন টিকে থাকতে পারবেন না। যদি এই বিদ্রোহের বিরোধী সেনারা একই ধরণের সহযোগীতা পেয়ে যেত, তাহলে কোন গেরিলা সদস্যই থাকত না এবং কোন যুদ্ধ ও বিপ্লবও সংঘটিত হত না। বরং সমস্যা বৃদ্ধি পেত এবং মৌলিক সংস্কারের ব্যাপারে জনগণের স্পৃহা নিস্প্রভ হয়ে যেত।
এভাবে আমরা সেই টার্গেটগুলোর মূল পয়েন্টে পৌঁছতে পারি, যার ভিত্তিতে উভয় বাহিনী তাদের যুদ্ধনীতি ও কৌশলগুলো সাজাবে।
তাই একজন গেরিলা সবকিছুর পূর্বে একজন দায়ী, উদ্ধুদ্ধকারী, বিপ্লবী চিন্তা-চেতনা বিস্তারকারী, যিনি স্বয়ং লড়াইটিকেই, তথা প্রত্যক্ষ সংঘর্ষটিকেই উৎসাহ দানের মাধ্যম হিসাবে ব্যবহার করেন। তার প্রধান লক্ষ্য হল বিদ্রোহের প্রেক্ষাপট উন্নত করণ, অতঃপর জনগণের অংশগ্রহণ, এমনকি তার জটিল বিন্দুটিরও অংশগ্রহণ। যাতে বিদ্রোহ পুরো দেশে সাধারণভাবে ছড়িয়ে পড়ে এবং সাধারণ জনগণই চূড়ান্ত কাজটি পরিপূর্ণ করে। অর্থাৎ চলমান শাসনব্যবস্থা ধ্বংস করা এবং (অধিকাংশক্ষেত্রে, সবক্ষেত্রে নয়) তার প্রতিরক্ষাকারী বাহিনীকেও ধ্বংস করা।
এর বিপরীতে বিদ্রোহের বিরোধী বাহিনীর টার্গেট হল নেতিবাচক ও আত্মরক্ষামূলক। কথা ও কাজে আশ্বস্ত করতে ব্যর্থ হয়ে অস্ত্রশক্তির মাধ্যমে সরকারকে স্থিতিশীল রাখা, দেশ রক্ষা করা এবং বিরাজমান পরিসেবা ও পরিবেশগুলো রক্ষা করার নিশ্চয়তা বিধানের চেষ্টা করা। কখনো তাদের ব্যবহৃত পন্থা রাজনৈতিকও হয়, যখন অনেক বেশি আশ্বস্ত করার চেষ্টা করা হয়। যেমন সামাজিক ও অর্থনৈতিক সংস্কারেরর বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি এবং বিভিন্ন প্রকার পাল্টা বিজ্ঞাপন ও চেতনা প্রসার করা। কিন্তু সব কিছুর পূর্বে বিপ্লবের বিরোধী বাহিনীর জন্য আবশ্যক হল, বিপ্লবীদের প্রতিশ্রুতি ধ্বংস করার মাধ্যমে তাদের বিপ্লবকে ধ্বংস করা। অর্থাৎ সামরিকভাবে এই প্রমাণ পেশ করা যে, এ বিপ্লব সফল হওয়া সম্ভব নয় এবং কখনো সফল হবেও না।”
তিনি আরো বলেন:
“গেরিলা যুদ্ধ মৌলিকভাবে রাজনৈতিক ও সামাজিক। আর তার পন্থাগুলো যতটা রাজনৈতিক, ততটাই সামরিক। আর তার লক্ষ্যগুলো প্রায় পুরোটাই রাজনৈতিক।
....................
গেরিলা যুদ্ধ একটি বিপ্লবী যুদ্ধের সমতুল্য। এটা হল অস্ত্রের মাধ্যমে রাজনৈতিক প্রসার।
যতক্ষণ পর্যন্ত ওই সকল (বিদ্রোহের) বিরোধী যোদ্ধারা এটা বুঝতে না পারবে, ততক্ষণ পর্যন্ত তারা বিজয় অর্জন করার জন্য কোন কৌশল বা উপায়ই খুঁজে পাবে না। অপরদিকে যখন বিদ্রোহ পরিচালনাকারী নেতৃবৃন্দ এটা বুঝতে পারবে, তখন তারা কখনোই একেবারে ব্যর্থ হবে না, চাই পরিস্থিতি যাই হোক না কেন। কারণ বিপ্লবী যুদ্ধ শুরুই হয় এমন প্রেক্ষাপটে, যখন তার সফলতা লাভের পরিবেশগুলো বিদ্যমান থাকে।”
তিনি আরো বলেন:
“একজন গেরিলা যোদ্ধার জন্য শুধুমাত্র জীবন নিয়ে বেঁচে থাকতে পারাটাই একটি রাজনৈতিক বিজয়। এটাই সংশ্লিষ্ট সরকারের বিরুদ্ধে জনগণের বিদ্রোহে অনুপ্রেরণা যোগায় ও তা বৃদ্ধি করে। গেরিলা সদস্যগণ একজন কৃষকের ছদ্মবেশ ধারণ করেও নিজ বার্তা প্রসারের কাজ চালিয়ে যেতে পারে। কখনো কার্যতই কৃষক হতে পারে। পক্ষান্তরে বিপ্লবের বিরোধী সৈন্যরা পুলিশের গাইড হিসাবে পরস্পর সেম অবস্থায় থাকে। আর কোন বার্তা প্রসার করতে পারে না।”ৎ
‘মাও’ থেকে বর্ণনা করা হয়:
“গেরিলা যুদ্ধের পরিণাম ব্যর্থতা, যদি তাতে রাজনৈতিক টার্গেট না থাকে, অথবা টার্গেট গণ-আকাঙ্খার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ না হয় বা জনগণের সহানুভূতি, সহযোগীতা ও অংশগ্রহণ অর্জন করতে না পারে। সুতরাং গেরিলা যুদ্ধের মূল কথাই হল রাজনীতি।”
হানি আদ-দারদিরি বলেন:
জন সমর্থনের ভিত্তিতে হতে হবে। সুতরাং জন আকাঙ্খার বিপরীতে বা তার প্রতি জনগণের কোন ভ্রুক্ষেপহীনতা থাকা অবস্থায় কোন গেরিলা যুদ্ধ দাঁড়াতে পারে না। সুতরাং গেরিলা বাহিনীগুলোর জন্য জনসমর্থন হল জন্মগত সাথী। একারণে গেরিলা চিন্তাবিদগণ গেরিলা যুদ্ধে সফলতার জন্য জনসমর্থন অর্জনের আবশ্যকীয়তার ব্যাপারে একমত পোষণ করেছেন।
Comment