হেদায়েতপ্রাপ্ত দল আর হেদায়েতবঞ্চিত দলের মাঝে সমীকরণ
আমার ভাইগণ! এটা হেদায়েতপ্রাপ্ত আন্দোলনের নিদর্শন। পক্ষান্তরে হেদায়েতের পথ থেকে বিচ্যুত আন্দোলন এ হিসাব নেয় না যে, আমরা শরিয়তের উপর আমল করছি কি করছিনা। তার সদস্যদের এ চিন্তা হয় না যে, আমরা আল্লাহর সন্তুষ্টির পথে পরিচালিত হচ্ছি নাকি সে রাস্তা থেকে বিচ্যুত। তাদের ভাবনা কী হয়? তাদের সর্বদা ভাবনা শুধু-, মানুষ আমাদেরকে সাহায্য করেনি। যদি লোকেরা আমাদের ভোট দেয় তবে সারা দুনিয়ায়, এই যমিনে এবং এ দেশে মুহুর্তে সফলতা আসবে। দুধ আর মধুর ঝরণাধারা প্রবাহিত হবে। এখানে শান্তির পরিবেশ চলে আসবে। এ আন্দোলনগুলো শান্তির যে এলান দেয় তা অনর্থক। তারা এটা দেখেনা যে, উম্মতের যে খারাপ অবস্থা, তো উম্মতের যে খারাপ অবস্থা তার সমাধান এটা হবে যে, উম্মতকে এ খারাপ অবস্থা থেকে বের করার জন্য আমরা দাঁড়িয়ে যাব। আমরা ব্যর্থ হচ্ছি, লোকেরা আমাদের দাওয়াতে সাড়া দিচ্ছেনা, মানুষ আমাদের থেকে দূরে চলে যায়, হয়তো আমাদের আমলে কোন সমস্যা আছে, হয়তো আমরা শরিয়ত থেকে দূরে সরে গেছি। এটা না! বরং তাদের সামনে শুধু একটা বিষয় থাকে। মানুষ আমাদের সমর্থন করে না। তারা মানুষকে দোষারোপ করে। তাদের মনোযোগ মানুষের দিকে থাকে। তাদের মনোযোগ হয়– মানুষ আমাদের কথা মানবে। মানুষ তাদের কথা মানবে তাদের দওয়াত কবুল করবে এজন্য তারা নিজের দিকে মনোযোগ দেয় না।
.
এভাবে হেদায়েতের পথ থেকে বিচ্যূত যে আন্দোলন, সে সর্বদা বাতিলকে এবং দুশমনকে ভেঙ্গে ফেলার চেষ্টা করে। কিন্তু সে নিজের ভিতর শক্তিশালী করার ব্যাপারে কোন সময় দেয় না। তো হেদায়েত থেকে বিচ্যূত এবং গোমরাহ আন্দোলনের বড় ব্যবধান হল এটা।
.
আর ইহুদী খৃস্টারা বলত আমরা আল্লাহর পূত্র এবং তাঁর প্রিয় মানুষ।
.
তারা বলত আমরা আল্লাহর প্রিয়পাত্র, আমাদের ইমান, আল্লাহর সাথে আমাদের সম্পর্ক, আমাদের আমল শরিয়তের উপর হচ্ছে কিনা? আমাদের দাওয়াত ও কর্মে কোন সমস্যা আছে কিনা এসব তাদের আলোচনার বিষয় হয় না। বরং তারা বলত আমরা তো আল্লাহর প্রিয় মানুষ। আল্লাহ না করুন, যদি আমাদের জি'হ।দী তানযিম দুর্বল হয়ে যায়, জি'হ।দী তানযিমের সদস্যরা দুর্বল হয়ে যায় তখন আমরা যেন না বলি, আমরা তো আল্লাহর প্রিয়পাত্র। আমরা তো মুজাহিদ। ভাই মুজাহিদ তো মুজাহিদ হবেই। তাই বলে কি আমরা নিজেদের ফজিলত ও র্মযাদার ঘোষণা করে বেড়াব, আর উম্মতরে ব্যাপারে এ মন্তব্য করব যে, যদি ভ্রান্তি ও ত্রুটি থাকে তাহলে তা শুধু উম্মতের মাঝেই রয়েছে। উম্মত আমাদের সঙ্গ দিচ্ছে না। যদি কোন সমস্যা থাকে তাহলে তা বাতিলের মাঝেই আছে। বাতিল শক্তিশালী। বাতিল শক্তিশালী একারণেই উম্মত আমাদের সঙ্গ দেয়নি। আর আমরা মুজাহিদ হয়ে নিজেদের আমল, নিজেদের দাওয়াত ও কার্যক্রমের প্রতি মনোযোগ দিবো না। এ এক বড় ব্যবধান।
.
এটি অনেক বড় দূর্ভাগ্য হবে যে, জি'হ।দী আন্দোলন যে দিকে দৃষ্টি দেওয়া দরকার সেদিকে দৃষ্টি না দেওয়া। সর্বপ্রথম যেদিকে দৃষ্টি ফেরানো উচিত সেদিকে পরে দৃষ্টি ফেরানো।
.
প্রথম দৃষ্টি কোথায় দিতে হবে? নিজের অন্তর, নিজের আমল, নিজের দাওয়াত, নিজের কর্ম, নিজের পথ এবং নিজের মানহাজের দিকে। কোথায় আমাদের ত্রুটি হচ্ছে, কোথায় আমাদের ভুল হচ্ছে। সেটা কোন কাজ যা করা উচিত ছিল না তা আমরা করেছি। সেটা কোন কাজ যা করা দরকার ছিল তা আমরা করিনি? যদি আমরা এই ছোট বিষয়টিকে আমাদের আন্দোলনে কার্যকর না করি তবে যতই আমরা উম্মতকে বলি ‘আমাদের দিকে আসুন’। যতই আমরা বাতিলকে দোষারোপ করিনা কেন ভবিষ্যতে আমরা দুর্বল হতে থাকব। ভবিষ্যতে আমাদের উপস্থিতিই এ উম্মতের বোঝা হয়ে দাঁড়াবে। এজন্য আবশ্যক হল নিজেদের সংশোধন করে নেওয়া।
.
.
(উদ্ধৃত অংশটি শাইখ উস্তাদ উ@স]ম। ম]হ-মুদ হাফিজাহুল্লাহর "হেদায়েতপ্রাপ্ত দল আর হেদায়েতবঞ্চিত দলের মাঝে সমীকরণ" থেকে চয়ন করা হয়েছে।)
Comment