আন নাসর মিডিয়া পরিবেশিত
“এই তো গাযা…
গাজা সংঘাত সীমান্ত নির্ধারণী সংঘাত নয় বরং অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই (১)”
।।সালেম আল শরীফ||
এর থেকে– শেষ পর্ব
“এই তো গাযা…
গাজা সংঘাত সীমান্ত নির্ধারণী সংঘাত নয় বরং অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই (১)”
।।সালেম আল শরীফ||
এর থেকে– শেষ পর্ব
এই অঞ্চলে কেন ইসরাইলের বীজ বপন করা হলো?
অধিকৃত ফিলিস্তিনে ইহুদীবাদী ও জায়নবাদী চক্র[1] আমেরিকা ও পশ্চিমা বিশ্বের জন্য মূল সেতুবন্ধন। ইসলাম ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে ইহুদীবাদী ও ক্রুসেডারদের ঐতিহাসিক লড়াইয়ে এই দুই গোষ্ঠী জোটবদ্ধ হয়েছে। তারা নিজেদের ঐতিহাসিক রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, ধর্মীয় ও সামাজিক লক্ষ্যগুলো ঐক্যবদ্ধভাবে অর্জন করতে চাচ্ছে। এসবের সাথেই ইহুদীদের রাজার আত্মপ্রকাশের পটভূমি প্রস্তুত করা, খ্রিস্টানদের পবিত্র বিষয়গুলো রক্ষা করা এবং আল কুদস নিয়ন্ত্রণ করার সম্পর্ক। একইভাবে জায়নবাদী এই চক্র মুসলিমদের যে কোনো বাস্তবসম্মত উন্নতি-অগ্রগতির প্রচেষ্টা অথবা শক্তি অর্জনের পথে মুসলিমদের জন্য হুমকি স্বরূপ। মুসলিম নামধারী তাদের তাবেদার শাসকবর্গকে সুরক্ষা দেয়া_ বিশেষ করে মিশর জর্ডান এবং উপসাগরীয় অঞ্চলগুলোতে শাসকবর্গের গদি টিকিয়ে রাখা, এতদঞ্চলের ইতিহাসকে বিকৃত অপমিশ্রিত ও মিথ্যা প্রতিপন্ন করা, মুসলিমদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ যুদ্ধবিগ্রহ উস্কে দেয়া, প্রকৃত শত্রুর ব্যাপারে জনগণের মনে অবহেলা ঢুকিয়ে দেয়া[2] এই অঞ্চলকে এমন ছোট ছোট রাষ্ট্র ও আমিরাতে পুনরায় বিভক্ত করে দেয়া, যারা ক্ষুধা পিপাসা নিবারণের ক্ষেত্রেও পরনির্ভরশীল হবে এবং যাদেরকে নিয়ে খুব সহজেই তামাশা করা যাবে; একইভাবে স্থল ও নৌ বাণিজ্যিক পথগুলোর নিয়ন্ত্রণ নেয়া, তাওহীদ ও একত্ববাদের ভূমিতে নাস্তিকতার প্রচার-প্রসার ঘটানো, এই অঞ্চলের বসবাসকারীদেরকে ভোগ-বিলাস, আমোদ ফুর্তি, অশ্লীলতা ও ব্যাভিচারে অভ্যস্ত করে তোলা, সমকামী সম্প্রদায়কে সমর্থন করা, নৈতিকতা ও প্রকৃতিবিরুদ্ধ নারীবাদীদেরকে সাহায্য করা— উপর্যুক্ত উদ্দেশ্যগুলো সহ এমনই আরো বিভিন্ন লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য যেই সেতুবন্ধন, পরিবহনকারী বিমান ও মজবুত কেন্দ্র দরকার, সেগুলোরই অপর নাম হলো এক বাক্যে ইহুদী ও ইহুদীবাদী অস্তিত্ব। এই অঞ্চলে ইহুদী গোষ্ঠী এবং তাদেরকে রক্ষাকারী জায়নবাদী লবি হলো ইসলাম ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে সামগ্রিক যুদ্ধের অপর নাম। এই ইহুদীবাদীরাই প্রকৃত শত্রু। এই চক্র যে নামেই আসুক (ইহুদী-ইউরোপ-আমেরিকা-আরবের শাসক মহল... অন্য যাই হোক না কেন) — সবই এক।
উপর্যুক্ত উদ্দেশ্যসমূহের ভিত্তিতে আমরা বলতে পারি যে, যুগ যুগ ধরে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে তাদের মিশনের কিছু ধর্মীয় কারণ রয়েছে। ইতিপূর্বে ক্রুসেড হামলাগুলো কারণগুলো ব্যক্ত করেছে। এগুলোই নিঃসন্দেহে আমেরিকায় খ্রিস্টীয়-জায়নবাদের কল্পনাকে সুড়সুড়ি দেয়, তাই আমেরিকা কোনো সীমা-পরিসীমা ছাড়াই জায়নবাদীদেরকে সাহায্য করে- যেমনটা করেছে হতভাগা ‘লিন্ডসে গ্রাহাম’ Lindsey Graham এবং তার ভাইয়েরা)। ধর্মীয় কারণগুলি সর্বদাই গণহত্যার মূল প্রণোদনা হিসেবে ইতিহাস জুড়ে চর্চিত হয়ে এসেছে এবং আজও হচ্ছে। ফিলিস্তিনের কৌশলগত অবস্থানের সাথে সম্পর্কিত ভূ-রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কারণও রয়েছে। ফিলিস্তিন হলো পূর্ব-পশ্চিমকে সংযুক্তকারী একটি স্থল করিডোর। কারণ লেভান্ট ও মিশরের বাকি অংশগুলোর পাশাপাশি ফিলিস্তিনের উপকূল হলো লোহিত সাগর ও ভূমধ্যসাগরের মাধ্যমে পশ্চিমা বিশ্বের জন্য প্রাচ্যের প্রবেশদ্বার। উপসাগরীয় তেল নিয়ন্ত্রণ থেকে রাশিয়া ও অন্যদের উচ্চাকাঙ্ক্ষা প্রতিহত করা, আরব বাজারে চীনের অংশীদারিত্ব সীমিত করা এবং ক্ষমতা বদলের জন্য অভ্যন্তরীণ যেকোনো বিপ্লব প্রতিরোধ কিংবা বিকৃত করার মধ্য দিয়ে নিজেদের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক স্বার্থকে নিরাপদ ও সুরক্ষিত রাখার লক্ষ্যে এই অঞ্চলে তাদের আধিপত্য প্রয়োজন।
খুনি (নেতানিয়াহু) এবং তার ব্যাকটেরিয়া বাহিনী বরকতময় অক্টোবরের ৭ তারিখে গাজার জনগণের বিরুদ্ধে গণহত্যা অব্যাহত রাখার মাধ্যমে নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকার একটা স্বর্ণালী সুযোগ খুঁজে পায়। সংঘাতের পরিধি বিস্তৃত করার প্রয়াসে মুসলমানদের উস্কে দেয়াও তাদের প্ল্যানের অংশ। তারা নিজেদের অগ্রযাত্রাকে একটি আঞ্চলিক যুদ্ধের দিকে ঠেলে দিচ্ছে এবং সম্ভবত এই যুদ্ধ আঞ্চলিক পরিসর অতিক্রম করবে (একটি বিশ্বযুদ্ধ দাঁড় করাবে)। তারা বর্তমান পরিস্থিতিকে কাজে লাগানোর জন্য মধ্যপ্রাচ্যে নিজেদের শত্রুদেরকে একাকী অবস্থায় নির্মূল করার জন্য পুরোদমে কাজ করছে। অন্য জনগোষ্ঠী প্রস্তুত হবার আগেই এবং অন্যান্য শক্তি বেড়ে ওঠার আগেই তারা এ কাজ সম্পন্ন করে নিতে চাচ্ছে। তারা চায় এই অঞ্চলকে নতুন করে বণ্টন করতে। নীলনদ থেকে ফুরাত নদী পর্যন্ত তাদের স্বপ্নের ভূমি দখল করে টেম্পল নির্মাণের পর পুরো অঞ্চলে তারা রাজ করতে চায়। তারই ভূমিকা হিসেবে তারা প্রথমে ফিলিস্তিনকে দখল করতে চাচ্ছে। খুনি নেতানিয়াহুর কত সুন্দর দিবা স্বপ্ন! আন্তর্জাতিক জায়নবাদীরা যুদ্ধের শিখা প্রজ্বলিত করতে পারদর্শী- বিশেষ করে তাদের শত্রুদের মধ্যে। যে সমস্ত বিপ্লবী আন্দোলন অথবা দুর্বল রাষ্ট্র তাদের বিরুদ্ধে কথা বলে, সেগুলোকে শক্তি খর্ব করে দুর্বলভাবে টিকিয়ে রাখতে চায়। ইউক্রেনে এমনটাই ঘটেছে। কিন্তু ফলাফল তাদের ইচ্ছানুরূপ হবে না কখনোই।
গত শতাব্দীর বহু অভিজ্ঞতা এবং এই শতাব্দীর শুরুর দিকে আফগানিস্তানের বিশেষ অভিজ্ঞতার পর এ বিষয়টা সুস্পষ্ট হয়ে দাঁড়িয়েছে, পশ্চিমা বিশ্ব অতঃপর আমেরিকা নিজেদের স্বার্থ রক্ষার কৌশলগত কারণে যুদ্ধবিগ্রহে সরাসরি আর জড়াবে না। তারা মিত্রগোষ্ঠীকে শুধু সমর্থন দিয়ে, অর্থায়ন করে, সামরিকভাবে শত্রুকে নিঃশেষ করে দেয়ার হুমকি দিয়ে, শক্তির বড়াই দেখিয়ে, অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গু করে দিয়ে এবং রাজনৈতিকভাবে বিচ্ছিন্ন করে দিয়েই ক্ষান্ত থাকবে— যেমন করে ইউরোপ-আমেরিকার ইহুদীবাদী-ক্রুসেডার পশ্চিমারা তাদের প্রতিপক্ষকে সামাজিকভাবে ছিন্নভিন্ন করার জন্য, শত্রুর অভ্যন্তরীণ সংহতিকে নষ্ট করার জন্য, আদর্শগতভাবে বিভক্ত করার জন্য শত্রুবলয়ে প্রবেশের মধ্য দিয়ে প্রথম পর্যায়ে সফট পাওয়ার ব্যবহার করে। পরবর্তী পর্যায়ে শত্রুপক্ষ বেশিরভাগ ক্ষমতা হারিয়ে ফেলার পরে সহজেই তাদেরকে নির্মূল করা যায়। এই কৌশলটি ইহুদীবাদী-ক্রুসেডার পশ্চিমকে ভয়াবহ ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে। কারণ আমেরিকা আফগানিস্তানে বিব্রতকর মানবিক ক্ষতি ছাড়াও দুই ট্রিলিয়ন ডলারের ক্ষতি স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছে।
উদাহরণস্বরূপ আমরা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে পশ্চিমাদের এই কৌশলের ব্যবহার পুরোপুরি দেখতে পাই। ইউক্রেন এমন একটি ফ্রন্টে পরিণত হয়েছে, যেখানে পশ্চিমারা প্রাচ্যের বিরুদ্ধে আত্মরক্ষার জন্য ইউক্রেনকে প্রয়োজনীয় অস্ত্র ও অর্থ সরবরাহ করেছে। ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনীর মধ্যে কতটা দুর্নীতি ছড়িয়ে পড়েছে সে কথা নাই বললাম। কিন্তু এই যুদ্ধগুলো সবাইকে বিপর্যয়ের দিকে নিয়ে যেতে পারে, কারণ আমেরিকা ইউক্রেনকে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করতে চলেছে, যা একটি বিশ্বযুদ্ধের পথ প্রশস্ত করতে পারে—বিশেষ করে যখন রাশিয়ার পক্ষ থেকে মহাকাশযুদ্ধের প্রস্তুতির কথা বলা হয়েছে। অতএব আপনি যতই সাবধানতা ও বুদ্ধির সাথে কাজ করেন না কেন, রণাঙ্গনে যখন যুদ্ধের আগুন প্রজ্জ্বলিত হয়ে যায়, তখন শাসকবর্গের অহংকার দমিয়ে রাখা যায় না। সেই গর্ব অহংকারের কারণে কারো পক্ষেই বলা সম্ভব নয়, এই যুদ্ধের গতিপথ কি হবে এবং কোথায় গিয়ে যুদ্ধ শেষ হবে? কিন্তু যুদ্ধ যদি শুরু হয়ে যায় তাহলে এতোটুকু অনুমান অবশ্যই সম্ভব: বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়বে।... কিন্তু যারা সংঘর্ষে জড়ায় না তাদের জন্য এটা ব্যবধান কমানোর একটি পদক্ষেপ হতে পারে![3]
একইভাবে আমরা ফিলিস্তিনের ব্যাপারে পশ্চিমা স্ট্র্যাটেজিও লক্ষ্য করতে পারি। খুনি (নেতানিয়াহু)[4] যদিও একটি নতুন আঞ্চলিক সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য আমেরিকাকে মধ্যপ্রাচ্ছে একটি উন্মুক্ত যুদ্ধে সরাসরি অংশগ্রহণ করানোর চেষ্টা করছে, কিন্তু আমেরিকা ও ইউরোপের প্রতিক্রিয়া ও প্রতিউত্তর থেকে এতটুকু বোঝা গিয়েছে, ইউক্রেনে তারা যে ভূমিকা পালন করেছে, এখানেও তার চাইতে অতিরিক্ত কিছু তারা করছে না। এমনকি লোহিত সাগরের অভিযান, প্রথমে ইহুদী জাহাজ, তারপরে ব্রিটিশ ও আমেরিকান জাহাজের জন্য বাব এল মান্দেব বন্ধ করার প্রচেষ্টার মধ্য দিয়ে তাদের সামুদ্রিক বাণিজ্য হুমকির মুখে থাকা সত্ত্বেও পশ্চিমারা স্থল অভিযানে না জড়িয়ে শুধু বিমান হামলা করে ক্ষান্ত থাকছে। তারা বিভিন্ন কারণে এমনটা করছে যার মধ্যে রয়েছে : জিবুতিতে তাদের সামরিক ঘাঁটি আক্রান্ত হবার আশঙ্কা। উক্ত ঘাঁটি ইয়েমেনি জনগণ এবং সোমালিয়ার মুজাহিদীনের নাগালের মধ্যে রয়েছে। তারা জানে যে, ইয়েমেনি জনগণ যুদ্ধবাজ ও সশস্ত্র। আরবের জায়নবাদীরা যদি ইয়েমেনে আল-কায়েদার মুজাহিদীন ও গোত্রগুলোর বিরুদ্ধে অযৌক্তিক যুদ্ধ ও সীমালঙ্ঘনের মাধ্যমে তাদেরকে ব্যস্ত না রাখত, তাহলে আমরা ঈমান ও হেকমতের অধিকারী ইয়ামেনি সন্তানদের পক্ষ থেকে হৃদয় শীতলকারী উদ্যোগ অবশ্যই দেখতে পেতাম। এই অঞ্চলের জনগণ- ইহুদী, ক্রুসেডার পশ্চিমা গোষ্ঠী এবং তাদের পরিচালিত জায়নবাদী মিশনকে ঘৃণা করার উপর্যুপরি কারণ রয়েছে। জনগণের বিক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া শুধু সময়ের ব্যাপার।
উপর্যুক্ত আলোচনার সারসংক্ষেপ হলো, ডক্টর আব্দুল ওয়াহাব আল-মাসরি বলেছেন: ইসরাঈল একটি বিমানবাহী রণতরী মাত্র। দখলদাররা ফিলিস্তিনিদের কোনো অধিকার প্রদান করবে না। প্রতিরোধই একমাত্র সমাধান। ইজরায়েলের পতন অনিবার্য। ইহুদীবাদী আমলারা আরও বেশি বিপজ্জনক।
একটি বিষয় এখানে স্পষ্ট করে দেয়া প্রয়োজন।
ইহুদীদের সমর্থনের জন্য ইসরাঈলমুখী জাহাজগুলোকে বাব এল-মান্দাবে হামলা করার প্রক্রিয়াটি ইহুদীবাদী-ক্রুসেডার পশ্চিমের সব হিসাব-নিকাশ উল্টে দিয়েছে। এই অপারেশনগুলি এমন এক দরজা খুলে দিয়েছে, যা এই অঞ্চলের বাকি জনগণের চোখ খুলে দেখিয়ে দিয়েছে, আমেরিকা ও পাশ্চাত্যের স্বার্থকে আঘাত করতে হবে—চাই সেটা এই অঞ্চলে হোক, পশ্চিমা বিশ্বের কোনো ভূমিতে হোক কিংবা তাদের স্বার্থ জড়িত বিশ্বের যেকোনো জায়গায় হোক। সর্বত্র তাদের স্বার্থ বিরোধী গোপন অপারেশন পরিচালনায় অনুপ্রাণিত করেছে উপর্যুক্ত অপারেশন। পাহাড়ের মতো অটল গাজার মুসলিমদের বিরুদ্ধে যদি গণহত্যা অব্যাহত থাকে, রমযান মাসের আবির্ভাবের সাথে সাথে গোপন অপারেশনের এই পদক্ষেপ এমন লোকদের পক্ষ থেকে যৌক্তিক উদ্যোগ হতে পারে, যারা বিলাসিতা ও অনৈতিকতায় নিমজ্জিত তাদের বিশ্বাসঘাতক শাসকদের কার্যকলাপে হতাশ। শীঘ্রই দেখা যাবে আগামী দিনে কি ঘটতে চলেছে।
খুব শীঘ্রই ইনশাআল্লাহ, জনগণকে নীরব দর্শকের অবস্থান ত্যাগ করতে হবে, উম্মাহ এবং উম্মাহর স্বার্থগুলোকে রক্ষার জন্য নেমে পড়তে হবে। উম্মাহর ভূমিগুলো স্বাধীন করা, সামরিক, রাজনৈতিক ও মনস্তাত্ত্বিক ঔপনিবেশিকতার যুগের অবসান ঘটানো এবং বিশ্বকে নেতৃত্ব দেয়ার জন্য এই উম্মাহর কাছ থেকে প্রত্যাশিত ও প্রকৃত ভূমিকা পালন করার জন্য জেগে উঠতে হবে।
কথা এখনো বাকি আছে.....
কথা বলার জন্য সময় আরো বাকি আছে
-সালেম আশ শরীফ
যুদ্ধের পরের দিনের রাত
যুদ্ধের পরের দিনের রাত
[1] কেউ কেউ মনে করেন; জায়নবাদী চিন্তাধারার সূচনা হয়েছিল ইংল্যান্ডে সপ্তদশ শতাব্দীতে কিছু চরমপন্থী প্রোটেস্ট্যান্ট মধ্যবিত্তের হাত ধরে। চরমপন্থী ওই ধারাটি পুনর্গঠনবাদী মতবাদের আহ্বান জানিয়েছিল, যার অর্থ ছিল পরিত্রাণ এবং খ্রিস্টের প্রত্যাবর্তনের জন্য ফিলিস্তিনে ইহুদীদের ফিরে আসা প্রয়োজন। কিন্তু যা ঘটেছিল তা হলো : ইংল্যান্ডের ধর্মনিরপেক্ষ ঔপনিবেশিক সার্কেলগুলো এই থিসিসগুলি গ্রহণ করে এবং সেগুলোকে সেক্যুলারাইজ করে। তারপর উনবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি অ-ইহুদী, এমনকি ইহুদী-বিরোধী চিন্তাবিদদের মাধ্যমে ধারণাগুলো সম্পূর্ণরূপে স্বচ্ছ আকারে সামনে আসে। ইহুদীরা যাকে ‘এন্টি-সেমিটিজম (Anti-Semitism)’ (যার অর্থ দাঁড়ায় সেমিটীয় সম্প্রদায়ের প্রতি বিদ্বেষ) বলে, তার প্রতিক্রিয়া হিসাবে ইহুদীবাদের উদ্ভব হয়েছিল এই সত্যটির দিকেও দৃষ্টি আকর্ষণ করা গুরুত্বপূর্ণ। তাই ইহুদীবাদী আন্দোলনের লক্ষ্য দাঁড়িয়েছিল ইউরোপ মহাদেশের ইহুদীদের বাস্তবতাকে একটি জাতীয় রাষ্ট্রে পরিণত করা, যেখানে সারা বিশ্বের ইহুদীরা একত্রিত হবে।
—সূত্র: উইকিপিডিয়া।
[2] ফুটবলকে কেন্দ্র করে মিশর ও আলজেরিয়ার মধ্যে বিদ্বেষ ছড়ানোর দ্বারা বোঝা যায় শাসকদের কতটা অবনতি ঘটেছে, অথচ দশম রমযানের যুদ্ধে আলজেরিয়া মিশরের সবচেয়ে বড় সমর্থক ছিল!
[3] বিশ্বযুদ্ধে অংশগ্রহণ না করার দ্বারা দূরত্ব ও ব্যবধান যে কমে আসবে সেটা কাদের মধ্যকার দূরত্ব? কিংবা কি দিয়ে ব্যবধান কমবে? দুর্বল এবং সাবেক শক্তিশালীদের মধ্যকার ব্যবধান কমবে কি? নাকি সংঘাত সীমিত করার মতো সহাবস্থানের দৃষ্টিভঙ্গি তৈরির লক্ষ্যে মানবতা, মনুষ্যত্ব ও মানবিক মূল্যবোধকে পরিপক্ক করার পথের দূরত্ব কমবে? নাকি বিশ্ব নেতৃত্বে ইসলাম ও মুসলমানদের প্রত্যাবর্তনের পথ কমে আসবে?
[4] খুনি (নেতানিয়াহু) এই অঞ্চলের ইহুদীদের ভবিষ্যতের জন্য হুমকি যেকোনো কিছু ধ্বংস করার একটি সুযোগ দেখছে, একই সাথে সাইকস-পিকট চুক্তির ভিত্তিতে এই অঞ্চল বিভক্ত হওয়ার পরে এই অঞ্চলের দেশগুলিকে পুনরায় বিভক্ত ও বণ্টন করার একটি সুযোগ দেখছে। নেতানিয়াহু কি এমন একটি বেপরোয়া সামরিক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে যাচ্ছে, যা এই অঞ্চলকে একটি উন্মুক্ত যুদ্ধে টেনে নিয়ে যাবে? তারপরে আমেরিকা ও ইউরোপকে সে যুদ্ধে টেনে আনবে? আমি এটাকে অসম্ভব মনে করি না। যদি তাই হয় তাহলে মনে রাখতে হবে, ইউক্রেন এবং ফিলিস্তিনে বিশ্বযুদ্ধের ঢোল বেজেই চলেছে? যেকোনো তুচ্ছ কারণে বিশ্বযুদ্ধের অগ্নিস্ফুলিঙ্গ ছড়িয়ে পড়তে পারে।
Comment