Announcement

Collapse
No announcement yet.

দাওয়াতের তরিকার মধ্যে বাড়াবাড়ি কেন সৃষ্টি হয়? || "পর্ব - ৩"

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • দাওয়াতের তরিকার মধ্যে বাড়াবাড়ি কেন সৃষ্টি হয়? || "পর্ব - ৩"

    দাওয়াতের তরিকার মধ্যে বাড়াবাড়ি কেন সৃষ্টি হয়?

    "পর্ব - ৩"


    তৃতীয় কারণ: মুদারাত (সৌজন্য) ও মুদাহানাতের (খোশামোদ, চাটুকারিতা) মাঝে পার্থক্য না করা

    দাওয়াতের মাঝে গুলুর আরেকটি কারণ হলো, মুদারাত ও মুদাহানাতকে এক মনে করা। অথচ উভয়ের মাঝে পার্থক্য আছে। একটি জায়েয এবং প্রশংসনীয়, অন্যটি নিন্দনীয়।
    ইমাম কুরতুবী রহিমাহুল্লাহ মুদারাত ও মুদাহানাতের মাঝে পার্থক্য এভাবে বর্ণনা করেছেন: “মুদারাত হলো দুনিয়া বা দ্বীন অথবা উভয়টির ফায়দার জন্য দুনিয়াবি কোনো কিছু ত্যাগ করা। যা জায়েয, অনেক সময় মুস্তাহাব কিন্তু মুদাহানাত হলো দুনিয়ার জন্য দ্বীনকে ত্যাগ করা।

    হাদীস শরীফে বর্ণিত হয়েছে: মানুষের সাথে সৌজন্য আচরণ সদকা (তাবারানী)
    .
    শারেহ ইবনে বাত্তাল রহিমাহুল্লাহ বলেন: “সৌজন্য মুমিনের আখলাকের অংশ। এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো মানুষের সামনে নিজের কাঁধ ঝুঁকিয়ে দেয়া। কথাবার্তায় তাদের সাথে শক্ত ব্যবহার না করা। এই গুণ নিঃসন্দেহে ভালোবাসা মহব্বত সৃষ্টির একটি উত্তম মাধ্যম”।

    সুতরাং শ্রোতার বিরোধিতায় ধৈর্য ধারণ করা, দাওয়াতের জন্য নরম-কোমল ও উপকারী পদ্ধতিতে হকের দিকে আহবান করা এবং শ্রোতার ভ্রান্ত মতকে কোনভাবেই সঠিক না বলা -এটা মুদারাত, এটা প্রশংসনীয়। কিন্তু যদি এই নরম ব্যবহারের সাথে বাতিলকে হক বলা হয়, তখন সেটা মুদাহানাত, এটা নিষেধ। এজন্যে দাঈর মুদারাত-মুদাহানাতের সীমারেখা বোঝা উচিৎ। যাতে মুদারাতের নাম দিয়ে মুদাহানাতে লিপ্ত না হয়। অথবা মুদাহানাতের বিরোধিতা করতে গিয়ে মুদারাতও পরিত্যাগ না করে।
    .
    আফসোস! আজ কিছু দ্বীনদার শ্রেণি দাওয়াতে বিচক্ষণতার নাম দিয়ে গণতন্ত্র,
    দেশপ্রেম, সেক্যুলারিজ্যমকে পর্যন্ত সমর্থন করে। অথচ কুফুরি শাসন ব্যবস্থার বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা, বিরোধিতা কাম্য। কিন্তু এই হযরতরা তাদের সাথে সমঝোতা ও সহযোগিতামূলক আচরণ করে। আর যদি কেউ ফরজ ডাকে ‘লাব্বাইক’ বলে বাতিল শাসনব্যবস্থার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে যায় এবং এই নিকৃষ্ট পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়, তখন তারা তাকে ফাসাদ সৃষ্টিকারী বলে অভিহিত করে। এই গণতন্ত্র ও অন্যান্য মানুষ নির্মিত মতবাদে অংশগ্রহণ ও সমর্থন শরীয়তের খেলাফ কাজ।

    কিন্তু আশ্চর্য! এসব অনৈসলামিক কাজকেও দীনী মাছলাহাত নাম দিয়ে ইসলামি কাজ বলে প্রমাণিত করা হচ্ছে। এটা স্পষ্ট মুদাহানাত। এটাই ঐ মহাবিপদ যার কারণে আজ আল্লাহর শ'রি;য়ত পরাজিত, আর গাইরুল্লাহর আইন বিজয়ী।
    সুতরাং এই মুদাহানাতের পরিচয় মানুষের সামনে তুলে ধরা এবং তার বিরোধিতা করা অত্যন্ত জরুরি। আর মু?জ।হি/দদেরও উচিৎ সর্বদা সতর্ক দৃষ্টি রাখা যাতে তাদের মধ্যে কোনভাবে এই মহামারী প্রবেশ না করে। আরেকদিকে এই মুদাহানাতের বিরোধিতা করতে করতে আমাদের কোন কোন কাফেলা মুদারাতকেও মুদাহানাত মনে করা শুরু করছে।
    .
    দাওয়াতের ক্ষেত্রে সঠিক পদ্ধতি হল বাতিলকে সরাসরি বাতিল বলা এবং হককে হক বলা। তারপর হকের দিকে দাওয়াত দেয়া এবং পুরো দাওয়াতি আমল শ'রি;য়ত অনুযায়ী করা। এই দাওয়াত নরম ও কোমল পদ্ধতিতে হেকমত অনুযায়ী হয়। মানসিকতার ভিন্নতার কারণে এই ধরণের দাওয়াত কারও কারও কাছে মুদাহানাত মনে হয়। তার কাছে এই দাওয়াত গ্রহণযোগ্য নয়। তার মানসিক শান্তি তখনই হয়, যখন দাওয়াতের প্রাণ ও ভাষা উভয় দিক থেকে খুব শক্ত হয়। যে দাওয়াতের মধ্যে শ্রোতার প্রতি কোন কল্যাণকামিতা বা দরদ ব্যাথা থাকে না বরং হিংসা, ঘৃণা, শত্রুতা ও খাটো করা হয় সেটা তার কাছে দাওয়াতের উত্তম পদ্ধতি মনে হয়। ভিন্ন এই মানসিকতার কারণে এই সমস্ত কাজকে সে হকের তাকাযা মনে করে। অথচ এটা গুলু বা বাড়াবাড়ি । এর কারণে দাওয়াতের উদ্দেশ্যই নষ্ট হয়ে যায় এবং জি#হা\দের উল্টা ক্ষতি হয়।
    .
    .
    চলমান...
    .
    .
    দাওয়াতের পদ্ধতি ও জি@হা/দি মানহাজের হেফাযত
    উস্তাদ উ@স]ম। ম]হ-মুদ হাফিজাহুল্লাহ​

  • #2
    আল্লাহ তাআলা আমাদের মুদারাত অবলম্বন করার এবং মুদাহানাত থেকে বেঁচে থাকার তাওফিক দিন, আমীন

    Comment

    Working...
    X