Announcement

Collapse
No announcement yet.

পাঠচক্র- ৩০ || “এই তো গাযা… গাজা সংঘাত সীমান্ত নির্ধারণী সংঘাত নয় বরং অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই (4) ” ।। সালেম আল শরীফ || ৫ম পর্ব

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • পাঠচক্র- ৩০ || “এই তো গাযা… গাজা সংঘাত সীমান্ত নির্ধারণী সংঘাত নয় বরং অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই (4) ” ।। সালেম আল শরীফ || ৫ম পর্ব

    আন নাসর মিডিয়া পরিবেশিত

    এই তো গাযা
    গাজা সংঘাত সীমান্ত নির্ধারণী সংঘাত নয় বরং অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই (4)


    ।।সালেম আল শরীফ||

    এর থেকে৫ম পর্ব



    পারস্পরিক বার্তা বিনিময় ও বিরতি :


    * ইহুদীবাদী-ক্রুসেডার অ্যাকশনের প্রতিক্রিয়ায় যেকোনো সামরিক অভিযান বন্ধ করা আদতে আত্মসমর্পণের ব্ল্যাংক চেক। কারণ তাতে শক্তিশালী পক্ষেরই লাভ হবে। দুটি তলোয়ার একটি খাপে মিলিত হতে পারে না। এই বাস্তবতা মুসলিম এবং পশ্চিমা উভয়পক্ষ বিশ্বাস করে। পার্থক্য হলো মুসলিমরা প্রতিপক্ষকে চিন্তা করার, কোনো একটা অপশন বেছে নেওয়ার সুযোগ দেয়, অন্যদিকে পশ্চিমা এবং তাদের ভাবধারার লোকেরা কেবল ধ্বংস এবং ধ্বংস চায়। ইতিহাসে এর বহু উদাহরণ রয়েছে। মুসলিম ও ইহুদীবাদের মধ্যে নিরবচ্ছিন্নভাবে যুদ্ধ অব্যাহত থাকবে। পরিষ্কার এক্সিট স্ট্রাটেজি (Exit strategy) ছাড়া এই যুদ্ধ বন্ধ করার কোনো উপায় নেই। আমরা সামনে সে বিষয়টা দেখব।

    * সংঘাতের প্রথম ধাপ হলো পশ্চিমাদেরকে আমাদের সম্পদ ভোগ থেকে বিরত রাখা। আমাদের সম্পদ দিয়ে তারা আমাদের ওপর কর্তৃত্ব করে। যেহেতু তাবেদার সরকারগুলো কিছুই করবে না, তাই জনগণকে অবশ্যই সম্পদের খনি, কূপ এবং বাণিজ্য পথ ও রুটগুলি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এমনকি যদি তারা খনি ও কূপ নিষ্ক্রিয় করতে এবং সমুদ্র প্রণালী বন্ধ করতে বাধ্য হয় তবে সেটাও করতে হবে।

    * পশ্চিমে বসবাসরত মুসলমান এবং দুর্বলদের একটি বিরাট দায়িত্ব হলো, শত্রুর অস্ত্র কারখানাগুলি নিষ্ক্রিয় করা। আমাদের কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া আকরিক থেকে লাভবান পশ্চিমে শত্রুদের কারখানাগুলিতে আরো কার্যকরী ফলদায়ক আক্রমণ করা সেখানকার মুসলিমদের দায়িত্ব। বিশেষত ফ্রান্সের কারখানাগুলো। তারা ইসলামিক মাগরেবে আমাদের দেশ থেকে লোহা লুট করে। আফ্রিকার মুসলিম ভূমি থেকে চুরি করা ইউরেনিয়ামের উপর নির্ভরশীল তাদের পারমাণবিক চুল্লিতেও হামলার হুমকি দিতে হবে।

    * গাজা যুদ্ধ থেকে একটি শিক্ষা হলো, শত্রুকে শক্তিশালী হামলা করতে হবে এবং বন্দী ও জিম্মীকরণ কার্যক্রম সীমিত করতে হবে। কারণ জিম্মিদেরকে দিয়ে ইহুদীদেরকে প্রতিহত করা আগেও সম্ভব হয়নি, ভবিষ্যতেও হবে না। ইহুদীরা একথা নিশ্চিতভাবে জেনেই সমস্ত ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে যে, মুসলিমরা কখনোই জিম্মিদের কোনো প্রকার কষ্টের কারণ হবে না; কারণ ইসলাম তাদেরকে তেমনটাই শিক্ষা দেয়। এটা আমাদের বুঝতে হবে, আমাদের জন্য ইসলামের নির্দেশনা হলো, বন্দী করার চেয়ে প্রবল আক্রমণকে প্রাধান্য দিতে হবে। বিজয়ের পর গনীমতের সঙ্গে বন্দীদেরকে রাখা হবে। আল্লাহ তাআলা বলেন:
    مَا كَانَ لِنَبِيٍّ أَن يَكُونَ لَهُۥٓ أَسۡرَىٰ حَتَّىٰ يُثۡخِنَ فِي ٱلۡأَرۡضِۚ تُرِيدُونَ عَرَضَ ٱلدُّنۡيَا وَٱللَّهُ يُرِيدُ ٱلۡأٓخِرَةَۗ وَٱللَّهُ عَزِيزٌ حَكِيمٞ



    “কোনো নবীর জন্য সংগত নয় যে, তার নিকট যুদ্ধবন্দী থাকবে, যতক্ষণ না তিনি জমিনে (তাদের) রক্ত প্রবাহিত করেন তোমরা কামনা কর পার্থিব সম্পদ এবং আল্লাহ্‌ চান আখিরাত; আর আল্লাহ্‌ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়” [সূরা আনফাল ০৮:৬৭]

    * পরের সকালে; ইহুদীবাদী জোট (আমেরিকা, ব্রিটেন, ইহুদী, ফ্রান্স, জার্মান) যদি যুদ্ধের কাঙ্ক্ষিত উদ্দেশ্য হাসিল করতে পারে, তবে তারা বিশ্বজুড়ে তাদের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণের স্ট্রাটেজি (strategy) বাস্তবায়নের জন্য আরেকটি সামরিক অধিবেশন ডাকবে, যে যুদ্ধে তাদের প্রতিপক্ষদের শীর্ষে থাকবে মুসলিম বিশ্ব, তারপরে বাকি পৌত্তলিক দেশগুলি। এ জন্য- নির্যাতিত জাতি হিসাবে- পরের দিন রাতের আগে ইহুদীবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম শুরু করার সিদ্ধান্ত নিতে হবে, যাতে শত্রু-আক্রমণের সকাল আমাদের দেখতে না হয়, বরং ঐ প্রভাত যেন আমাদের জন্য আনন্দের বার্তা নিয়ে আসে, আমরা যেন বিজয়ের সুমিষ্ট ফল ভোগ করতে পারি।
    ***




    সান্ত্বনা এবং সুসংবাদ

    গাজা ও ফিলিস্তিনে


    আমাদের ভাই-বোনদের সাথে যা কিছু হচ্ছে, সে পরিস্থিতির কারণে সেখানকার দুর্গত মুসলিম ভাই বোনেরা যেই মানবেতর জীবনযাপন করছে, তাদের সেই দুঃখ কষ্টের গভীরতা স্পর্শ করার মতো সান্ত্বনা বাণী লিখতে কলম ও কালি অক্ষম। তবে কখনও কখনও অক্ষমতার শক্তি আরো মারাত্মক হয়ে ওঠে। শক্তি দিয়ে যা করতে মানুষ অক্ষম হয়ে যায়, অক্ষমতা সেটা করে দেয়গাজায় যা ঘটছে, ইনশাআল্লাহ পরবর্তীতে তার ফলাফল ও পরিণতি হবে বৈশ্বিক স্তরে, উম্মাহর আন্তর্জাতিক স্তরে এবং বিভিন্ন জাতি গোষ্ঠী ও সমাজের পর্যায়ে। আমাদের যে প্রজন্মটার গায়ে পশ্চিমা বিশ্ব ও ইহুদীবাদীদের নাপাক হাত লাগেনি, তারা আরো অধিক মানবিক, নৈতিক ও আত্মউৎসর্গমূলক ভবিষ্যৎ নির্মাণের লক্ষ্যে পরিবর্তন ও বিপ্লবের দুর্বার বাতাস বইয়ে দেয়ার জন্য অচিরেই আসছেহে গাজা ও ফিলিস্তিনের জনগণ! বিশ্বের সকল নিষ্ঠাবান মানুষকে বলছি, আপনাদের ত্যাগ বৃথা যায়নি; আপনারা বিজয়ী হয়েছেন মানবতা পুনর্গঠনের জন্য ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধে।

    আমি নিশ্চিত- ইনশাআল্লাহ গাজার ঘটনা প্রবাহ ঔপনিবেশিক, ক্রুসেডার-জায়নবাদী পশ্চিমের কফিনে চূড়ান্ত পেরেক ঠুকেছে। খুব শীঘ্রই গোটা বিশ্ব গত শতাব্দী থেকে চলে আসা পশ্চিমাদের দুর্নীতি ও পথভ্রষ্টতা থেকে মুক্তি পেতে চলেছে। পশ্চিমা বিশ্ব ও ইহুদীবাদীরা সর্বশেষ কয়েক শতাব্দী যাবৎ এই বিশ্বের বুকে মানবতাকে নেতৃত্ব দানের পূর্ণ সুযোগ পেয়েছিল; কিন্তু তারা শোচনীয় ভাবে ব্যর্থ হয়েছে। মানবতার উন্নয়ন অগ্রগতির পরিবর্তে পশ্চিমা মডেলটি মানব-সভ্যতার সকল ক্ষেত্রে নৈতিকতা ও মানবিক মূল্যবোধের সঙ্গে দ্রোহাত্মক একটি স্বার্থপর, সুবিধাবাদী ব্যবস্থায় পরিণত বলে প্রমাণিত হয়েছে। পশ্চিমা ও জায়নবাদ সমস্ত সুস্থ, সত্য, নৈতিকতার প্রামাণিক উত্তরাধিকারকে হেয় করেছে এবং তা থেকে বিচ্যুত হয়েছে। শয়তান এবং তার পুত্রদের সমস্ত প্রচেষ্টার চেয়েও বেশি কঠোর ও নিষ্ঠুর ভাবে তারা মানবতার টুটি চেপে ধরেছে; ইবলীসকেও তারা হার মানিয়েছে। মানব সভ্যতা প্রতিষ্ঠিত আল্লাহর মাহাত্ম্য স্বীকার, দীনকে আঁকড়ে ধরা, দেশ প্রেম, পরিবারের প্রতি ভালোবাসা ও যত্নশীলতা, নৈতিকতা আখলাক ও উৎকৃষ্ট চারিত্রিক প্রবণতার মূল্যায়ন, আত্ম-উৎসর্গ, আত্মত্যাগ— এ বিষয়গুলোর উপর। পশ্চিমা বিশ্ব, জায়নবাদ এবং নব্য জায়নবাদী তাবেদার আমাদের সরকারগুলো সম্মিলিতভাবে উপর্যুক্ত সমস্ত বিষয় ধ্বংস করেছে, করে যাচ্ছেমানব সমাজের মাঝে স্বার্থপরতা, সংকীর্ণতা ও ব্যক্তিত্ববাদ প্রচার করেছে। তারা সুবিধাবাদের জন্ম দিয়েছে। সেই সাথে মানবিক স্বভাবজাত বৈশিষ্ট্যভুক্ত মূল্যবোধ ও নৈতিকতার পতন ঘটিয়েছে। এই নিবন্ধে নৈতিক পতন, সামাজিক অবক্ষয়, ব্যক্তিগত দুর্নীতি এবং সহজাত বিচ্যুতির অবস্থা উল্লেখ করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়, কিন্তু... গাজা ধৈর্য ও অবিচলতার সাথে বিশ্বব্যাপী অন্যদের বেদনায় সহানুভূতির মূল্যবোধ পুনরায় জাগিয়ে দিয়েছে। নৈতিকতার জ্বলন্ত অঙ্গারের ওপর জমে থাকা ছাই সরিয়ে দিয়েছে। এই প্রজন্মের কেউ কেউ পরিবর্তনের ব্যাপারে হতাশাগ্রস্ত হয়ে ছিল, কিন্তু গাজা -আল্লাহর দয়া ও অনুগ্রহে- পরিবর্তনের চেতনাকে পুনরুজ্জীবিত করে দিয়েছে। পশ্চিমারা এই চেতনাকে দমন করার চেষ্টা করেছিল। গাজার ঘটনা সেই দমন প্রচেষ্টা নস্যাৎ এবং ইহুদীবাদীদের বিকৃত চেহারা থেকে মুখোশ খুলে দিয়েছে। যে আত্মত্যাগের ঘটনাগুলো ইতিহাসের গর্ভে বিলীন হতে চলেছিল, পুনরায় সেই চেতনা উম্মাহর মাঝে সঞ্চার করেছে। তাই বিশ্বময় তারুণ্যের জাগরণ গাজার সার্থকতা ও বরকতের ফসল। ছাত্র আন্দোলন কখনো থামিয়ে দেয়া যায় না। তরুণরাই জীবনের নির্মাতা। এই কারণে নতুন করে মানব সভ্যতার পুনর্জীবন ও পুনর্নির্মাণে তারুণ্যকে কাজে লাগাবার কোনো বিকল্প নেই। ফিরে আসতে হবে আল্লাহর মাহাত্ম্য স্বীকারের পথে... দীনের পথে... স্বদেশকে ভালোবাসতে হবে... পরিবারের প্রতি যত্নশীল হতে হবে... মূল্যবোধ ও নৈতিকতার মূল্যায়ন করতে হবে... ত্যাগ ও মুক্তির চেতনা ছড়িয়ে দিতে হবে।
    ***





    আরও পড়ুন​
    ৪র্থ পর্ব ------------------------------------------------------------------------------------------------ শেষ পর্ব
    Last edited by tahsin muhammad; 6 hours ago.

  • #2
    আমাদের মাঝে ফিরে আসুক সালাহ উদ্দিনের চেতনা ।
    হে রব আমাদের ই‘দাদকে কবুল করুন।
    প্রত্যেকে যার যার জায়গা থেকে প্রস্তুত থাকুন ।
    অস্ত্রসমূহকে ধার দিয়ে রাখুন

    Comment

    Working...
    X