Announcement

Collapse
No announcement yet.

পাঠচক্র- ৩০ || “এই তো গাযা… গাজা সংঘাত সীমান্ত নির্ধারণী সংঘাত নয় বরং অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই (4) ” ।। সালেম আল শরীফ || শেষ পর্ব

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • পাঠচক্র- ৩০ || “এই তো গাযা… গাজা সংঘাত সীমান্ত নির্ধারণী সংঘাত নয় বরং অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই (4) ” ।। সালেম আল শরীফ || শেষ পর্ব



    আন নাসর মিডিয়াপরিবেশিত

    এই তো গাযা
    গাজা সংঘাত সীমান্ত নির্ধারণী সংঘাত নয় বরং অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই (4)


    ।।সালেম আল শরীফ||

    এর থেকেশেষ পর্ব


    উপসংহার:


    দৃঢ়তার মূর্ত প্রতীক গাজায় ফিরে আসি; আমি তা থেকে আলাদা হইনি... তার ধ্বংসাবশেষ আমার অনুভূতিগুলোকে জড়িয়ে ফেলে, যখন এর ছায়াগুলি আমার কল্পনার মধ্য দিয়ে যায়, বিক্ষিপ্তভাবে কত বিচিত্র দৃশ্য জড়ো হয়, আমার বুকে ব্যথা বেদনা জ্বলে ওঠে, আর আমি দেখি: ঝুঁকে থাকা একজন বৃদ্ধের ছায়া। তার পিঠ একটি ধ্বংসপ্রাপ্ত দেয়ালের সাথে, যার ইটগুলো যেকোনো সময় বোমা হামলার প্রতিধ্বনি থেকে ভেঙে পড়তে পারে। আমি আরো দেখতে পাই ওই মায়ের ছায়া, যিনি নিজ সন্তানকে আলিঙ্গন করে আছেন, ছিন্নভিন্ন দেহের টুকরো, রক্তে রঞ্জিত তার পোশাক, তার বাচ্চা কাঁদছে; তাকে খাবার দিয়ে চুপ করানোর মতো কেউ নেই। তার চাইতে বেশি ওই সদ্য দুধ ছাড়ানো শিশুটির ছায়া আমাকে স্তব্ধ করে দেয়, যাওয়ার মতো কোনো জায়গা সে চেনে না; দেখি, ক্ষতগুলো তাকে বেদনা দিচ্ছে, রক্ত ঝরতে থাকা কাটা হাতের ওপর ভর দিয়ে সে তার দৃষ্টি ফেরাতে থাকে এদিকে সেদিকে; কাউকে খোঁজ করে; সে চিৎকার করে সাহায্য চায়: বাবা! মা! ভাইয়া! আপু! কিন্তু কেউ সাড়া দেয় না। তারা কেমন করে সারা দেবে? দুনিয়া থেকে ইতোমধ্যেই যে তারা বিদায় নিয়ে চলে গিয়েছে! তখন আরো অশ্রু ঝরে এবং রক্তক্ষরণের চেয়েও পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়াতে বুকের ভেতর হাহাকার ভেসে বেড়ায়। নিজের অপর হাত দিয়ে নিজের দেহ সে তুলতে পারে না। তাই সে মাটির দিকে মাথা ঝুঁকায়, চিৎ হয়ে বসে পড়ে যায়; আকাশের দিকে তার দৃষ্টি তুলে প্রভুর কাছে করুণা চায়, নিরবে চোখের ভাষায় বলতে থাকে: হে আমার ইলাহ! তুমি ছাড়া কে আছে যার কাছে আমি আশ্রয় নেব, যে আমাকে কাছে টেনে নেবে! তোমার কাছেই আমি আমার শক্তিহীনতা এবং মানুষের সামনে আমার অক্ষমতার অভিযোগ করছি! ইয়া আরহামার রাহিমীন! দয়ালুদের শ্রেষ্ঠ দয়ালু হে মালিক! তুমি তো সকল দুর্বলের রব ও প্রতিপালক! তুমি আমার রব! কার কাছে তুমি আমাকে ন্যস্ত করলে? এমন কারো কাছে, যে আমার দিকে কঠোর দৃষ্টিতে তাকায়; নাকি এমন কোনো শত্রুর কাছে, যাকে তুমি আমার বিষয়ে কর্তৃত্ব দিয়েছো?” তার অবিচলতা গাজায় অবিচলতার সুদৃঢ় প্রাসাদের আরও একটি ইট হিসেবে স্থাপিত হয়।... দয়া করে আমার জন্য কাঁদবেন না, আপনারা নিজেদের ব্যাপারে ক্রন্দন করুন। দিন কেটে যাবে, আমি বড় হবো... কিন্তু আমার বুকের গভীরে ঐ শৈশবের স্মৃতি আপনাদের প্রতি বিরূপ হয়ে থাকবে।


    গাজার বাস্তবতা সম্পর্কে ইয়েমেনের কবি ওসামা যা লিখেছেন তার চেয়ে বেশি সত্য

    সঠিক আর কি হতে পারে :

    আমি কে


    ‏خَيَالُ الليلِ يســـــكُنُ في رُؤايا

    ***
    وخيلُ الصمتِ تصهلُ في دُجــايا

    রাত্রির কল্পনা আমার স্বপ্নজুড়ে পেতেছে সংসার

    ***
    মৌনতার অশ্ব অন্ধকারে তোলে হ্রেষাধ্বনি

    صُراخُ الآهِ يصـخبُ في فؤادي

    ***
    وكلُ الحــُــــزْنِ يُخلقُ مِن أســَايا

    আমার হৃদয়জুড়ে বেজে ওঠে বিষন্ন হাহাকার

    ***
    আমার দুঃখেরা পৃথিবীর আর সব দুঃখের জননী


    سؤالٌ كشّـــــــرَ الأنيابَ نحوي

    ***
    ويســــــألُني بِعُنفٍ ... مَن أنــــا يا..؟

    এক বীভৎস প্রশ্ন দাঁত বের করে আমাকে দ্যাখায় ভয়

    ***

    আমাকে সওয়াল করে-“তুই কেডা, কী তোর পরিচয়”???

    يُعاتبُني و يُضميني بمــــاذا !

    ***

    ويسألُ منْ أنا و لِمَ حنـــايا


    জানতে চায় সে ভৎসনা আর জিজ্ঞাসার উৎপীড়নে

    কে আমি, কি সুখ পাই অতীতের স্মৃতি মন্থনে……………

    يُحاولُ مقتــــلي و يُريدُ صـــــلبي

    ***

    فأهربُ نحو أحضــــــــــان المرايا

    অনেক খায়েশ তার আমাকে হত্যা করে চড়াবে সে শূলে

    ***
    আতঙ্কে পালিয়ে আমি আয়নায় ঝাপিয়ে পড়ি নিজেরই কোলে

    أيسألُ من أنا؟ وأنا ســـــؤالٌ

    ***

    تُذَيّلُهُ القنـــــــــابلُ و الشظــــــايا

    নিজেই প্রশ্ন আমি, কেন সে জিজ্ঞেস করে – “কি আমার নাম”

    ***
    হাজারো বুলেট-বোমা আমাকে নিশ্চিহ্ন করে যায় অবিরাম

    أنا طِفــــــــلٌ وعُمري ألفُ عامٍ

    ***

    وليدُ غدي وأسكُنُ في صِبـــَـــايا

    আমি এক শিশুপ্রাণ, বেঁচে আছি যেন সহস্র বছর ধরে,
    ***

    আগামীর সন্তান আমি, অথচ বসবাস করি এখনো কৈশোরে …

    أُفَتِّشُ داخـــــــــلي عنّي فأحبو ..

    ***

    إلى أمســــــي و لا ألقى خُطـــــايا

    নিজেকেই খুঁজে চলি নিজের ভেতরে আমি হামাগুড়ি দিতে দিতে

    ***
    আমার পদচিহ্নে পৌঁছতে পারিনি, তবু ফিরেছি অতীতে

    أنا جَفْنٌ ضناهُ الدمـــــــــــــعُ نعياً

    ***
    أنا الطوفــــــــانُ يعبُرُ في حشـايا

    আমি অজস্র মৃত্যুতে অশ্রুপ্লাবিত এক চক্ষুকোটর

    ***
    তুফানের ঝড়ো হাওয়া বয়ে যায় আমার এই বুকের ভেতর...

    أنا الموؤدُ في رَمْسِ الأمــــــــــاني

    ***
    أنا حُـــلمٌ تُغــــازِلُه المَنـــــــــَــــــــايا

    সেই সত্ত্বা আমি আকাঙ্ক্ষার প্রতীকে যাকে পুতে রাখা হয়,

    ***
    আমি সেই স্বপ্ন- মৃত্যুর সাথে যার গভীর প্রণয়...

    أنا ابنُ الرّيـحِ والأمطــــــارُ أمي

    ***
    وخلف الغيمِ تمطِرني الحَكــــــــايا

    আমি বাতাসের সন্তান, আর বৃষ্টি আমার মা

    ***
    মেঘের আড়ালে গেলে আমার উপরে ঝরে মৃদু আফসানা

    أنا وطـــــــــــــــــنٌ تُؤَرِّقُهُ دُمُوعٌ

    ***

    جفافُ الأرضِ يُسـقى مِنْ بُكـــايا

    আমি দুখিনী মাতৃভূমি, রাত কেটে যায় নির্ঘুম কান্নায়

    শুষ্ক জমিন সজীব হয়ে ওঠে যার অশ্রুর বন্যায়

    أنا لونٌ ســـــــــــــماويٌ حَرُوْنٌ

    ***

    أُكــَابِرُ أنْ أعيش بِلا سمـــــــــــايا

    আমি অবাধ্য বর্ণ এক, আকাশের সারা বুকে গাঢ় আসমানী

    ***
    স্বাধীন আকাশ ছাড়া বেঁচে থাকা আমি মানিনি, মানিনি...


    أنا نجــــــــــــــــــمٌ تُؤَرِّقُهُ الليالي

    ***

    أنا رُكــْــنٌ حبيسٌ في الزوايـــــــا

    আমি নির্ঘুম নক্ষত্র এক, সারারাত ধরে একা একা জেগে থাকি

    ***

    নিভৃত এক কোণে স্তম্ভ যেন আমি, নিঃসঙ্গ, একাকী

    أتَعْرِفُنِي لِتقرأ صَمــْـــــــتَ بَوْحِي

    ***

    أتُدْرِكُ ما تُخبـــّــــــــئُه شِفـــــــايا ؟!

    আমাকে চেনো তুমি,পড়তে কি পারো শব্দের নীরবতা

    ***
    ধরতে কি পারো আমার ঠোঁটের অস্ফুট যত কথা

    أنا عنّي فَقِيْدٌ لَمْ أجــــِـــــــــدْني

    ***

    وتحمِلُني كما طفــــــــلٍ يــــــــدايا

    আত্মলুপ্ত, নিজেকেই আর পাইনি, খুঁজেছি

    ***
    আমার দুহাত আমাকে বহন করছে শিশুর মত

    أواري داخلي أوجـــــــاع قومي

    ***

    وأحمــل فوق أكتــــافي الضحـــــايا

    আমার ভেতর আমি স্বজাতির বঞ্চনা করে যাই চাষ

    ***

    জীর্ণ দুটি কাঁধে নিয়ত বয়ে যাই শহীদের লাশ

    خفــــــافيشُ المساءِ تنالُ صُبحاً

    ***

    وصُبْحي مات حزنا في مســـــايا

    সন্ধ্যার বাদুড়ও নতুন সকাল পায় পার হলে রাত,

    ***
    আর অকালসন্ধ্যায় বেদনাদগ্ধ হয়ে মরে আমার প্রভাত


    ***

    সংকলন ও বিন্যাস

    (সাইফ আল আদেল, হাযেম আল মাদানী, আবের সাবিল, সালেম শরীফ, মুহান্নাদ সালেম, আবু খালেদ সানআনী )
    মুহাম্মদ সালাহুদ্দীন আব্দুল হালিম যাইদান


    মুসলিম উম্মাহর একজন সন্তান



    আরও পড়ুন​
    Last edited by tahsin muhammad; 1 day ago.
Working...
X