হামাস (Hamas) ফিলিস্তিন ভিত্তিক একটি ইসলামিক রাজনৈতিক ও সামরিক সংগঠন, যা ১৯৮৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি মূলত গাজা উপত্যকা এবং পশ্চিম তীরে সক্রিয়। হামাসের কাঠামো বিভিন্ন ইউনিটে বিভক্ত, যা রাজনৈতিক, সামাজিক এবং সামরিক কার্যক্রম পরিচালনা করে। নিচে তাদের বিভিন্ন ইউনিটের কাজের সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেওয়া হলো:.......
১. রাজনৈতিক শাখা
উদ্দেশ্য: ফিলিস্তিনের জনগণের রাজনৈতিক অধিকার রক্ষা এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে কূটনৈতিক সম্পর্ক তৈরি করা।
কাজ:
নির্বাচন পরিচালনা ও অংশগ্রহণ।
রাজনৈতিক নীতি নির্ধারণ এবং আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের প্রচেষ্টা।
আন্তর্জাতিক সংগঠনের সাথে সংযোগ রাখা।
২. সামাজিক শাখা (দাওয়াহ)
উদ্দেশ্য: ফিলিস্তিনের জনগণের জীবনমান উন্নত করা এবং ইসলামিক মূল্যবোধ প্রচার করা।
কাজ:
স্কুল, হাসপাতাল, এবং মসজিদ নির্মাণ ও পরিচালনা।
দারিদ্র্য বিমোচন কার্যক্রম এবং দাতব্য কাজ।
ধর্মীয় ও শিক্ষামূলক কার্যক্রম পরিচালনা।
৩. আল-কাসাম ব্রিগেড (সামরিক শাখা)
উদ্দেশ্য: ফিলিস্তিনের ভূখণ্ড রক্ষা এবং ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ।
কাজ:
সামরিক অভিযান পরিচালনা।
আত্মরক্ষা এবং প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা।
গাজা উপত্যকার নিরাপত্তা রক্ষা।
৪. গোপন ইউনিট
উদ্দেশ্য: সামরিক ও কৌশলগত তথ্য সংগ্রহ এবং অপারেশন পরিচালনা।
কাজ:
গুপ্তচরবৃত্তি এবং শত্রুর তথ্য সংগ্রহ।
সাইবার কার্যক্রম পরিচালনা।
কৌশলগত নিরাপত্তা পরিকল্পনা।
৫. আর্থিক ও লজিস্টিক শাখা
উদ্দেশ্য: সংগঠনের অর্থায়ন এবং রসদ সরবরাহ নিশ্চিত করা।
কাজ:
স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক দাতব্য থেকে তহবিল সংগ্রহ।
অস্ত্র ও সরঞ্জাম সংগ্রহ এবং সরবরাহ।
গাজা উপত্যকার আর্থিক ব্যবস্থা পরিচালনা।
৬. মিডিয়া ও প্রোপাগান্ডা ইউনিট
উদ্দেশ্য: ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার পক্ষে জনমত গঠন করা।
কাজ:
প্রচারপত্র, ভিডিও, এবং বিবৃতি প্রকাশ।
সামাজিক মাধ্যম এবং আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় প্রভাব বিস্তার।
হামাসের আদর্শ ও কার্যক্রম প্রচার করা।
৭. আইন এবং বিচার বিভাগ
উদ্দেশ্য: গাজা উপত্যকার আইন-শৃঙ্খলা নিশ্চিত করা।
কাজ:
শারিয়া আইন কার্যকর করা।
আদালত পরিচালনা এবং ফিলিস্তিনি জনগণের মধ্যে বিরোধ নিষ্পত্তি।
-------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
হামাসের সামরিক শাখা ইজ্জাদ্দিন আল-কাসসাম ব্রিগেড গাজা ও ফিলিস্তিনে প্রতিরোধমূলক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সুসংগঠিত এবং বিভিন্ন ইউনিটে বিভক্ত। প্রতিটি ইউনিট আলাদা বিশেষায়িত কার্যক্রম পরিচালনা করে। নিচে তাদের বিভিন্ন ইউনিট এবং কাজের সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেওয়া হলো:
১. পদাতিক (ইনফ্যান্ট্রি) ইউনিট
ভূমিতে যুদ্ধ পরিচালনার মূল বাহিনী।
সীমান্ত রক্ষা ও শত্রুর অগ্রগতি প্রতিহত করা।
ভূগর্ভস্থ টানেল থেকে অভিযান চালানো।
২. রকেট ইউনিট
কাসসাম, গ্রেড, এবং অন্যান্য উন্নত ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির দায়িত্বে।
গাজার বাইরে ইসরায়েলের লক্ষ্যবস্তুতে রকেট হামলা পরিচালনা।
শত্রু অঞ্চলে দীর্ঘপাল্লার হামলা পরিকল্পনা।
৩. স্নাইপার (গোপন শুটার) ইউনিট
দূরপাল্লার সুনির্দিষ্ট আক্রমণ পরিচালনা।
গুরুত্বপূর্ণ শত্রু লক্ষ্যবস্তু ধ্বংস করা।
সীমান্ত পর্যবেক্ষণ ও নিরাপত্তা।
৪. সামুদ্রিক (মেরিটাইম) ইউনিট
সমুদ্রপথে হামলা ও প্রতিরোধের দায়িত্ব পালন।
ডুবুরি এবং বিশেষায়িত অপারেশন পরিচালনা।
শত্রুর নৌবাহিনী বা সমুদ্র বন্দর লক্ষ্যবস্তুতে হামলা করা।
৫. ড্রোন ইউনিট
নজরদারি এবং গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের জন্য ড্রোন পরিচালনা।
আক্রমণাত্মক ড্রোন ব্যবহার করে বিস্ফোরণ ঘটানো।
শত্রু স্থাপনার ছবি ও ভিডিও সংগ্রহ করা।
৬. গুপ্তচরবৃত্তি ও সাইবার ইউনিট
শত্রুর সামরিক এবং প্রযুক্তিগত তথ্য চুরি।
ইসরায়েলের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভেঙে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ।
সাইবার যুদ্ধ পরিচালনা এবং হামাসের তথ্য সুরক্ষিত রাখা।
৭. সুরঙ্গ (টানেল) ইউনিট
শত্রুর এলাকা অতিক্রম করার জন্য গোপন টানেল তৈরি।
সরঞ্জাম ও অস্ত্র পরিবহন করা।
শত্রু অঞ্চলে হঠাৎ আক্রমণের জন্য নিরাপদ পথ তৈরি।
৮. অভিযান (কমান্ডো) ইউনিট
দ্রুত এবং উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ আক্রমণ পরিচালনা।
বিশেষ লক্ষ্যবস্তুতে সফল অভিযান পরিচালনার জন্য প্রশিক্ষিত।
শত্রুর সামরিক ঘাঁটিতে আক্রমণ।
৯. গোলাবারুদ ও অস্ত্র উন্নয়ন ইউনিট
ক্ষেপণাস্ত্র, বিস্ফোরক, এবং অন্যান্য অস্ত্র তৈরি।
অস্ত্রের কার্যকারিতা বাড়ানোর জন্য গবেষণা ও উন্নয়ন।
১০. গার্ড এবং নিরাপত্তা ইউনিট
হামাসের শীর্ষ নেতৃত্ব এবং গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার নিরাপত্তা প্রদান।
শত্রুদের গুপ্ত হামলা থেকে রক্ষা করা।
১১. লজিস্টিক ও সরবরাহ ইউনিট
অস্ত্র, গোলাবারুদ, এবং অন্যান্য সরঞ্জাম সরবরাহ।
সামরিক বাহিনীর জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্য ও রসদ সরবরাহ।
১২. মিডিয়া ইউনিট
সামরিক সাফল্য প্রচারের মাধ্যমে মনোবল বৃদ্ধি করা।
হামাসের আদর্শ প্রচার এবং শত্রুর মনোবল দুর্বল করার কার্যক্রম।
হামাসের ইজ্জাদ্দিন আল-কাসসাম ব্রিগেডের আরও বিশেষায়িত ইউনিট রয়েছে, যেগুলো নির্দিষ্ট কার্যক্রম পরিচালনা করে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে:
১৩. আন্তঃনির্দেশনা ও গোয়েন্দা (ইন্টেলিজেন্স) ইউনিট
শত্রুর সামরিক পরিকল্পনা, অবস্থান এবং দুর্বলতা সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ।
স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে গোয়েন্দা নেটওয়ার্ক পরিচালনা।
গোপন অভিযানের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদান।
১৪. বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞ ইউনিট
বোমা তৈরির জন্য কাঁচামাল সংগ্রহ এবং উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার।
শত্রু স্থাপনা এবং যানবাহনে বিস্ফোরণ ঘটানোর জন্য বিশেষায়িত।
আইইডি (ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস) সেটআপ।
১৫. মোবাইল অপারেশন ইউনিট
দ্রুত গতিতে শত্রুর আক্রমণ প্রতিহত করার জন্য মোবাইল এবং আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার।
মোটরগাড়ি, বাইক, এবং অন্যান্য মোবাইল মাধ্যম ব্যবহার করে বিশেষ অপারেশন।
শত্রুর ভূখণ্ডে দ্রুত হামলা এবং সরে যাওয়া।
১৬. অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক ইউনিট
শত্রুর ট্যাংক এবং ভারী সাঁজোয়া যান ধ্বংসের জন্য প্রশিক্ষিত।
আধুনিক অ্যান্টি-ট্যাংক ক্ষেপণাস্ত্র (যেমন: করনেট) পরিচালনা।
সীমান্তে ট্যাংক অগ্রগতি প্রতিরোধ।
১৭. কেমিক্যাল ও প্রযুক্তি ইউনিট
সামরিক অস্ত্র উন্নত করতে রাসায়নিক উপাদান ব্যবহার।
কৌশলগতভাবে রাসায়নিক এবং প্রযুক্তিগত উপকরণ ব্যবহার করে শত্রুর মনোবল ভাঙা।
১৮. এয়ার ডিফেন্স ইউনিট
শত্রুর বিমান এবং ড্রোন প্রতিরোধ করার জন্য অস্ত্র তৈরি ও পরিচালনা।
মিসাইল এবং উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন মেশিনগান ব্যবহার করে বিমান প্রতিরোধ।
শত্রুর বিমান ঘাঁটিতে আক্রমণের পরিকল্পনা।
১৯. গোপন পরিবহন ইউনিট
অস্ত্র, রসদ, এবং যোদ্ধাদের নিরাপদে স্থানান্তর।
গোপন পথ এবং টানেলের মাধ্যমে সরবরাহ ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।
শত্রু নজরদারি এড়িয়ে বিশেষ মিশনে সমর্থন।
২০. মানব ঢাল ইউনিট (Human Shield Coordination)
কৌশলগতভাবে জনসমর্থন ও মানব ঢাল ব্যবহার করে শত্রুকে বাধা প্রদান।
শত্রুর আক্রমণকে মনস্তাত্ত্বিকভাবে দুর্বল করার কৌশল।
২১. অস্ত্রোপচার ও মেডিকেল ইউনিট
আহত যোদ্ধাদের দ্রুত চিকিৎসা প্রদান।
মোবাইল মেডিকেল টিমের মাধ্যমে যুদ্ধে আহতদের উদ্ধার।
সামরিক অভিযানের সময় চিকিৎসা সরঞ্জাম সরবরাহ।
২২. বিশেষ প্রশিক্ষণ ইউনিট
নবীন যোদ্ধাদের সামরিক কৌশল, অস্ত্র ব্যবহারে দক্ষতা বৃদ্ধি।
গোপন অপারেশন এবং টানেল ব্যবহারের প্রশিক্ষণ।
স্নাইপার এবং ড্রোন অপারেটরদের বিশেষায়িত প্রশিক্ষণ।
২৩. মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ ইউনিট
শত্রুর মধ্যে বিভ্রান্তি ও মানসিক চাপ তৈরি করা।
সামাজিক মিডিয়া এবং প্রচারণা ব্যবহার করে শত্রুর মনোবল দুর্বল করা।
হামাসের কার্যক্রমকে জনসমর্থন বাড়ানোর জন্য পরিকল্পিত প্রচারণা চালানো।
২৪. ইলেকট্রনিক প্রতিরক্ষা ইউনিট
শত্রুর যোগাযোগ এবং সাইবার সিস্টেমে বিঘ্ন ঘটানো।
ইসরায়েলের ড্রোন, রাডার, এবং নজরদারি সিস্টেমকে ব্যাহত করা।
হামাসের নিজস্ব যোগাযোগ সিস্টেম রক্ষা।
২৫. শহীদ মিশন ইউনিট
আত্মঘাতী মিশন পরিচালনার জন্য বিশেষায়িত বাহিনী।
শত্রুর গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটি, জনসমাগম, বা স্থাপনা ধ্বংস করা।
আল-কাসসাম ব্রিগেডের "ছায়া ইউনিট" সম্পর্কিত সুনির্দিষ্ট তথ্য খুবই সীমিত এবং গোপনীয়, কারণ এটি একটি অত্যন্ত সংবেদনশীল এবং গোপন ইউনিট। তবে কিছু সাধারণ দিক এবং ধারণা পাওয়া যায়, যা তাদের কর্মকাণ্ডের উপর আলোকপাত করে।
ছায়া ইউনিটের মূল উদ্দেশ্য ও কার্যক্রম:
১. গুপ্তচরবৃত্তি এবং তথ্য সংগ্রহ (Espionage and Intelligence Gathering)
ছায়া ইউনিটের প্রধান কাজ হলো শত্রুর সম্পর্কে গোপন তথ্য সংগ্রহ করা এবং হামাসের জন্য গুরুত্বপূর্ন সাংগঠনিক ও সামরিক সুবিধা তৈরি করা। শত্রু বাহিনীর গতিবিধি, তাদের কৌশল, এবং অপারেশন পরিকল্পনার তথ্য সংগ্রহ করা তাদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কাজ।
২. গোপন অপারেশন (Covert Operations)
এই ইউনিটটি বিশেষভাবে এমন অপারেশনগুলি পরিচালনা করে যা নজরদারি থেকে মুক্ত থাকে। এরা শত্রুর সাথে সরাসরি যোগাযোগ না করে কিংবা শত্রু বাহিনীর আক্রমণাত্মক অবস্থানে আক্রমণ চালায়। তারা আক্রমণগুলোর পূর্বে শত্রু অবস্থানগুলো পর্যবেক্ষণ করতে পারে এবং তা সঠিক সময়ে আক্রমণ করতে সক্ষম হয়।
৩. গুপ্ত হত্যা এবং অপহরণ (Assassination and Kidnapping)
ছায়া ইউনিটগুলি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের অপহরণ বা হত্যা করার মাধ্যমে শত্রুর শক্তি ভেঙে ফেলতে এবং তাদের সামরিক সক্ষমতা দুর্বল করতে ভূমিকা রাখে। বিশেষ করে, সেনা কর্মকর্তা বা গোপন তথ্য সংগ্রহের জন্য তারা প্রতিপক্ষের শক্তিশালী ব্যক্তিদের টার্গেট করতে পারে।
৪. গোপন রুট এবং নিরাপদ সঞ্চালন (Underground Routes and Safe Passage)
গাজা উপত্যকায় যুদ্ধের সময়ে, ছায়া ইউনিটগুলি এমন সুরক্ষিত রুট তৈরি করে যা গোপনীয়ভাবে যোদ্ধাদের এবং বন্দিদের নিরাপদ স্থানান্তর নিশ্চিত করে। এসব রুট ও সুড়ঙ্গের মাধ্যমে, তারা শত্রুর নজরদারি এড়িয়ে তাদের জিহাদী কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারে।
৫. প্রচারণা এবং মনোবল ভাঙা (Psychological Warfare)
শত্রুর বিরুদ্ধে মনোবল ভাঙানোর জন্য ছায়া ইউনিট মাঝে মাঝে প্রতিপক্ষের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে দেয়। এর মাধ্যমে শত্রুর মধ্যে অস্থিরতা এবং বিভ্রান্তি তৈরি করে তাদের যুদ্ধের উদ্দেশ্য এবং কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটানোর চেষ্টা করা হয়।
৬. উন্নত প্রযুক্তি এবং সাইবার আক্রমণ (Advanced Technology and Cyber Attacks)
ছায়া ইউনিট নতুন প্রযুক্তির সাহায্যে শত্রুর সাইবার নিরাপত্তায় আক্রমণ চালাতে পারে। এসব ইউনিট যুদ্ধের কৌশল এবং অস্ত্রের উন্নতির জন্য নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করে। এর মাধ্যমে, তারা শত্রুর যোগাযোগ ব্যবস্থা বা তথ্য ব্যবস্থায় আক্রমণ চালাতে সক্ষম হতে পারে।
৭. অন্তর্ভুক্ত অপারেশন এবং সুরক্ষা ব্যবস্থা (Infiltration Operations and Security)
ছায়া ইউনিট বিপদজনক ও অত্যন্ত গোপনীয় এলাকায় প্রবেশ করে শত্রুর বিরুদ্ধে কার্যক্রম পরিচালনা করে। এই ধরনের অপারেশনগুলি সাধারণত অন্তর্দ্বন্দ্ব বা একে অপরের বিরুদ্ধে হামলা চালানোর উদ্দেশ্যে হতে পারে, যা শত্রুর পক্ষে ক্ষতিকর প্রমাণিত হয়।
৮. বন্দি নিরাপত্তা (Prisoner Protection)
গাজা উপত্যকায়, যেখানে সাধারণত অবরোধ এবং বোমাবর্ষণ চলে, ছায়া ইউনিট বন্দিদের সুরক্ষা এবং তাদের গোপন আশ্রয়ে অবস্থান নিশ্চিত করতে কাজ করে। তারা শত্রুর নজরদারি থেকে বাঁচানোর জন্য বন্দিদের দীর্ঘ সময় ধরে নিরাপদ রাখতে সক্ষম হয়েছে, যা হামাসের জটিল নিরাপত্তা কৌশলের একটি বড় উদাহরণ।
সারসংক্ষেপ:
ছায়া ইউনিট-এর কাজগুলি অত্যন্ত গোপনীয়, ঝুঁকিপূর্ণ এবং কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ। তারা সরাসরি সংঘর্ষে না গিয়ে শত্রুর সাথে পরোক্ষভাবে লড়াই করে এবং সাধারণত নিজেদের অবস্থান গোপন রেখে অপারেশন চালায়। তাদের কাজের গোপনীয়তা, দক্ষতা, এবং নির্ভীকতার জন্য আল-কাসসাম ব্রিগেডের এই ইউনিটটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
এটি একটি অত্যন্ত সুষম ও দক্ষ ইউনিট যা একাধিক সামরিক অপারেশনের সফল বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এবং আধুনিক প্রযুক্তির সঙ্গে সজ্জিত।
যেহেতু এটি একটি অত্যন্ত গোপন ইউনিট, সেজন্য এর কার্যক্রম সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া কঠিন।
সারমর্ম:
ইজ্জাদ্দিন আল-কাসসাম ব্রিগেডের ইউনিটগুলো একে অপরের সাথে সমন্বয় করে কার্যক্রম পরিচালনা করে। প্রতিটি ইউনিটের আলাদা দায়িত্ব থাকলেও তাদের মূল লক্ষ্য একটাই—ফিলিস্তিনি ভূমির প্রতিরক্ষা এবং শত্রুর ওপর প্রতিরোধ চালানো। এটি একটি সুসংগঠিত এবং কার্যকর প্রতিরোধ আন্দোলনের প্রতীক।
ইজ্জাদ্দিন আল-কাসসাম ব্রিগেড অত্যন্ত সুগঠিত এবং প্রতিরোধমূলক কার্যক্রমে দক্ষ। তাদের প্রতিটি ইউনিট নির্দিষ্ট দায়িত্ব পালন করে এবং হামাসের সামগ্রিক সামরিক কার্যক্রমকে শক্তিশালী করে তোলে।
-সংগৃহীত
================================================
শেষ কিছু কথা,জিহাদী চেতনা লালনকারী প্রত্যেককে বাস্তববাদি হতে হবে,ধর মার কাটো এই নীতি থেকে বের হয়ে লং টার্ম গোল এর জন্য (দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য) স্ট্র্যাটেজিক্যালি (কৌশলগতভাবে) দক্ষ হতে হবে।পাশাপাশি ইসলামিক রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দদেরকেও গতানুগতিক শত বছরে আগের ধ্যানধারণা থেকে বের হয়ে উম্মাহকে জাগ্রত করার সফল কৌশল সম্পর্কে আপ টু ডেট থাকতে হবে। উপরের লেখা গুলো তারই একটা ক্ষুদ্র অংশ।
১. রাজনৈতিক শাখা
উদ্দেশ্য: ফিলিস্তিনের জনগণের রাজনৈতিক অধিকার রক্ষা এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে কূটনৈতিক সম্পর্ক তৈরি করা।
কাজ:
নির্বাচন পরিচালনা ও অংশগ্রহণ।
রাজনৈতিক নীতি নির্ধারণ এবং আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের প্রচেষ্টা।
আন্তর্জাতিক সংগঠনের সাথে সংযোগ রাখা।
২. সামাজিক শাখা (দাওয়াহ)
উদ্দেশ্য: ফিলিস্তিনের জনগণের জীবনমান উন্নত করা এবং ইসলামিক মূল্যবোধ প্রচার করা।
কাজ:
স্কুল, হাসপাতাল, এবং মসজিদ নির্মাণ ও পরিচালনা।
দারিদ্র্য বিমোচন কার্যক্রম এবং দাতব্য কাজ।
ধর্মীয় ও শিক্ষামূলক কার্যক্রম পরিচালনা।
৩. আল-কাসাম ব্রিগেড (সামরিক শাখা)
উদ্দেশ্য: ফিলিস্তিনের ভূখণ্ড রক্ষা এবং ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ।
কাজ:
সামরিক অভিযান পরিচালনা।
আত্মরক্ষা এবং প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা।
গাজা উপত্যকার নিরাপত্তা রক্ষা।
৪. গোপন ইউনিট
উদ্দেশ্য: সামরিক ও কৌশলগত তথ্য সংগ্রহ এবং অপারেশন পরিচালনা।
কাজ:
গুপ্তচরবৃত্তি এবং শত্রুর তথ্য সংগ্রহ।
সাইবার কার্যক্রম পরিচালনা।
কৌশলগত নিরাপত্তা পরিকল্পনা।
৫. আর্থিক ও লজিস্টিক শাখা
উদ্দেশ্য: সংগঠনের অর্থায়ন এবং রসদ সরবরাহ নিশ্চিত করা।
কাজ:
স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক দাতব্য থেকে তহবিল সংগ্রহ।
অস্ত্র ও সরঞ্জাম সংগ্রহ এবং সরবরাহ।
গাজা উপত্যকার আর্থিক ব্যবস্থা পরিচালনা।
৬. মিডিয়া ও প্রোপাগান্ডা ইউনিট
উদ্দেশ্য: ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার পক্ষে জনমত গঠন করা।
কাজ:
প্রচারপত্র, ভিডিও, এবং বিবৃতি প্রকাশ।
সামাজিক মাধ্যম এবং আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় প্রভাব বিস্তার।
হামাসের আদর্শ ও কার্যক্রম প্রচার করা।
৭. আইন এবং বিচার বিভাগ
উদ্দেশ্য: গাজা উপত্যকার আইন-শৃঙ্খলা নিশ্চিত করা।
কাজ:
শারিয়া আইন কার্যকর করা।
আদালত পরিচালনা এবং ফিলিস্তিনি জনগণের মধ্যে বিরোধ নিষ্পত্তি।
-------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
হামাসের সামরিক শাখা ইজ্জাদ্দিন আল-কাসসাম ব্রিগেড গাজা ও ফিলিস্তিনে প্রতিরোধমূলক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সুসংগঠিত এবং বিভিন্ন ইউনিটে বিভক্ত। প্রতিটি ইউনিট আলাদা বিশেষায়িত কার্যক্রম পরিচালনা করে। নিচে তাদের বিভিন্ন ইউনিট এবং কাজের সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেওয়া হলো:
১. পদাতিক (ইনফ্যান্ট্রি) ইউনিট
ভূমিতে যুদ্ধ পরিচালনার মূল বাহিনী।
সীমান্ত রক্ষা ও শত্রুর অগ্রগতি প্রতিহত করা।
ভূগর্ভস্থ টানেল থেকে অভিযান চালানো।
২. রকেট ইউনিট
কাসসাম, গ্রেড, এবং অন্যান্য উন্নত ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির দায়িত্বে।
গাজার বাইরে ইসরায়েলের লক্ষ্যবস্তুতে রকেট হামলা পরিচালনা।
শত্রু অঞ্চলে দীর্ঘপাল্লার হামলা পরিকল্পনা।
৩. স্নাইপার (গোপন শুটার) ইউনিট
দূরপাল্লার সুনির্দিষ্ট আক্রমণ পরিচালনা।
গুরুত্বপূর্ণ শত্রু লক্ষ্যবস্তু ধ্বংস করা।
সীমান্ত পর্যবেক্ষণ ও নিরাপত্তা।
৪. সামুদ্রিক (মেরিটাইম) ইউনিট
সমুদ্রপথে হামলা ও প্রতিরোধের দায়িত্ব পালন।
ডুবুরি এবং বিশেষায়িত অপারেশন পরিচালনা।
শত্রুর নৌবাহিনী বা সমুদ্র বন্দর লক্ষ্যবস্তুতে হামলা করা।
৫. ড্রোন ইউনিট
নজরদারি এবং গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের জন্য ড্রোন পরিচালনা।
আক্রমণাত্মক ড্রোন ব্যবহার করে বিস্ফোরণ ঘটানো।
শত্রু স্থাপনার ছবি ও ভিডিও সংগ্রহ করা।
৬. গুপ্তচরবৃত্তি ও সাইবার ইউনিট
শত্রুর সামরিক এবং প্রযুক্তিগত তথ্য চুরি।
ইসরায়েলের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভেঙে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ।
সাইবার যুদ্ধ পরিচালনা এবং হামাসের তথ্য সুরক্ষিত রাখা।
৭. সুরঙ্গ (টানেল) ইউনিট
শত্রুর এলাকা অতিক্রম করার জন্য গোপন টানেল তৈরি।
সরঞ্জাম ও অস্ত্র পরিবহন করা।
শত্রু অঞ্চলে হঠাৎ আক্রমণের জন্য নিরাপদ পথ তৈরি।
৮. অভিযান (কমান্ডো) ইউনিট
দ্রুত এবং উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ আক্রমণ পরিচালনা।
বিশেষ লক্ষ্যবস্তুতে সফল অভিযান পরিচালনার জন্য প্রশিক্ষিত।
শত্রুর সামরিক ঘাঁটিতে আক্রমণ।
৯. গোলাবারুদ ও অস্ত্র উন্নয়ন ইউনিট
ক্ষেপণাস্ত্র, বিস্ফোরক, এবং অন্যান্য অস্ত্র তৈরি।
অস্ত্রের কার্যকারিতা বাড়ানোর জন্য গবেষণা ও উন্নয়ন।
১০. গার্ড এবং নিরাপত্তা ইউনিট
হামাসের শীর্ষ নেতৃত্ব এবং গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার নিরাপত্তা প্রদান।
শত্রুদের গুপ্ত হামলা থেকে রক্ষা করা।
১১. লজিস্টিক ও সরবরাহ ইউনিট
অস্ত্র, গোলাবারুদ, এবং অন্যান্য সরঞ্জাম সরবরাহ।
সামরিক বাহিনীর জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্য ও রসদ সরবরাহ।
১২. মিডিয়া ইউনিট
সামরিক সাফল্য প্রচারের মাধ্যমে মনোবল বৃদ্ধি করা।
হামাসের আদর্শ প্রচার এবং শত্রুর মনোবল দুর্বল করার কার্যক্রম।
হামাসের ইজ্জাদ্দিন আল-কাসসাম ব্রিগেডের আরও বিশেষায়িত ইউনিট রয়েছে, যেগুলো নির্দিষ্ট কার্যক্রম পরিচালনা করে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে:
১৩. আন্তঃনির্দেশনা ও গোয়েন্দা (ইন্টেলিজেন্স) ইউনিট
শত্রুর সামরিক পরিকল্পনা, অবস্থান এবং দুর্বলতা সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ।
স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে গোয়েন্দা নেটওয়ার্ক পরিচালনা।
গোপন অভিযানের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদান।
১৪. বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞ ইউনিট
বোমা তৈরির জন্য কাঁচামাল সংগ্রহ এবং উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার।
শত্রু স্থাপনা এবং যানবাহনে বিস্ফোরণ ঘটানোর জন্য বিশেষায়িত।
আইইডি (ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস) সেটআপ।
১৫. মোবাইল অপারেশন ইউনিট
দ্রুত গতিতে শত্রুর আক্রমণ প্রতিহত করার জন্য মোবাইল এবং আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার।
মোটরগাড়ি, বাইক, এবং অন্যান্য মোবাইল মাধ্যম ব্যবহার করে বিশেষ অপারেশন।
শত্রুর ভূখণ্ডে দ্রুত হামলা এবং সরে যাওয়া।
১৬. অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক ইউনিট
শত্রুর ট্যাংক এবং ভারী সাঁজোয়া যান ধ্বংসের জন্য প্রশিক্ষিত।
আধুনিক অ্যান্টি-ট্যাংক ক্ষেপণাস্ত্র (যেমন: করনেট) পরিচালনা।
সীমান্তে ট্যাংক অগ্রগতি প্রতিরোধ।
১৭. কেমিক্যাল ও প্রযুক্তি ইউনিট
সামরিক অস্ত্র উন্নত করতে রাসায়নিক উপাদান ব্যবহার।
কৌশলগতভাবে রাসায়নিক এবং প্রযুক্তিগত উপকরণ ব্যবহার করে শত্রুর মনোবল ভাঙা।
১৮. এয়ার ডিফেন্স ইউনিট
শত্রুর বিমান এবং ড্রোন প্রতিরোধ করার জন্য অস্ত্র তৈরি ও পরিচালনা।
মিসাইল এবং উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন মেশিনগান ব্যবহার করে বিমান প্রতিরোধ।
শত্রুর বিমান ঘাঁটিতে আক্রমণের পরিকল্পনা।
১৯. গোপন পরিবহন ইউনিট
অস্ত্র, রসদ, এবং যোদ্ধাদের নিরাপদে স্থানান্তর।
গোপন পথ এবং টানেলের মাধ্যমে সরবরাহ ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।
শত্রু নজরদারি এড়িয়ে বিশেষ মিশনে সমর্থন।
২০. মানব ঢাল ইউনিট (Human Shield Coordination)
কৌশলগতভাবে জনসমর্থন ও মানব ঢাল ব্যবহার করে শত্রুকে বাধা প্রদান।
শত্রুর আক্রমণকে মনস্তাত্ত্বিকভাবে দুর্বল করার কৌশল।
২১. অস্ত্রোপচার ও মেডিকেল ইউনিট
আহত যোদ্ধাদের দ্রুত চিকিৎসা প্রদান।
মোবাইল মেডিকেল টিমের মাধ্যমে যুদ্ধে আহতদের উদ্ধার।
সামরিক অভিযানের সময় চিকিৎসা সরঞ্জাম সরবরাহ।
২২. বিশেষ প্রশিক্ষণ ইউনিট
নবীন যোদ্ধাদের সামরিক কৌশল, অস্ত্র ব্যবহারে দক্ষতা বৃদ্ধি।
গোপন অপারেশন এবং টানেল ব্যবহারের প্রশিক্ষণ।
স্নাইপার এবং ড্রোন অপারেটরদের বিশেষায়িত প্রশিক্ষণ।
২৩. মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ ইউনিট
শত্রুর মধ্যে বিভ্রান্তি ও মানসিক চাপ তৈরি করা।
সামাজিক মিডিয়া এবং প্রচারণা ব্যবহার করে শত্রুর মনোবল দুর্বল করা।
হামাসের কার্যক্রমকে জনসমর্থন বাড়ানোর জন্য পরিকল্পিত প্রচারণা চালানো।
২৪. ইলেকট্রনিক প্রতিরক্ষা ইউনিট
শত্রুর যোগাযোগ এবং সাইবার সিস্টেমে বিঘ্ন ঘটানো।
ইসরায়েলের ড্রোন, রাডার, এবং নজরদারি সিস্টেমকে ব্যাহত করা।
হামাসের নিজস্ব যোগাযোগ সিস্টেম রক্ষা।
২৫. শহীদ মিশন ইউনিট
আত্মঘাতী মিশন পরিচালনার জন্য বিশেষায়িত বাহিনী।
শত্রুর গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটি, জনসমাগম, বা স্থাপনা ধ্বংস করা।
আল-কাসসাম ব্রিগেডের "ছায়া ইউনিট" সম্পর্কিত সুনির্দিষ্ট তথ্য খুবই সীমিত এবং গোপনীয়, কারণ এটি একটি অত্যন্ত সংবেদনশীল এবং গোপন ইউনিট। তবে কিছু সাধারণ দিক এবং ধারণা পাওয়া যায়, যা তাদের কর্মকাণ্ডের উপর আলোকপাত করে।
ছায়া ইউনিটের মূল উদ্দেশ্য ও কার্যক্রম:
১. গুপ্তচরবৃত্তি এবং তথ্য সংগ্রহ (Espionage and Intelligence Gathering)
ছায়া ইউনিটের প্রধান কাজ হলো শত্রুর সম্পর্কে গোপন তথ্য সংগ্রহ করা এবং হামাসের জন্য গুরুত্বপূর্ন সাংগঠনিক ও সামরিক সুবিধা তৈরি করা। শত্রু বাহিনীর গতিবিধি, তাদের কৌশল, এবং অপারেশন পরিকল্পনার তথ্য সংগ্রহ করা তাদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কাজ।
২. গোপন অপারেশন (Covert Operations)
এই ইউনিটটি বিশেষভাবে এমন অপারেশনগুলি পরিচালনা করে যা নজরদারি থেকে মুক্ত থাকে। এরা শত্রুর সাথে সরাসরি যোগাযোগ না করে কিংবা শত্রু বাহিনীর আক্রমণাত্মক অবস্থানে আক্রমণ চালায়। তারা আক্রমণগুলোর পূর্বে শত্রু অবস্থানগুলো পর্যবেক্ষণ করতে পারে এবং তা সঠিক সময়ে আক্রমণ করতে সক্ষম হয়।
৩. গুপ্ত হত্যা এবং অপহরণ (Assassination and Kidnapping)
ছায়া ইউনিটগুলি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের অপহরণ বা হত্যা করার মাধ্যমে শত্রুর শক্তি ভেঙে ফেলতে এবং তাদের সামরিক সক্ষমতা দুর্বল করতে ভূমিকা রাখে। বিশেষ করে, সেনা কর্মকর্তা বা গোপন তথ্য সংগ্রহের জন্য তারা প্রতিপক্ষের শক্তিশালী ব্যক্তিদের টার্গেট করতে পারে।
৪. গোপন রুট এবং নিরাপদ সঞ্চালন (Underground Routes and Safe Passage)
গাজা উপত্যকায় যুদ্ধের সময়ে, ছায়া ইউনিটগুলি এমন সুরক্ষিত রুট তৈরি করে যা গোপনীয়ভাবে যোদ্ধাদের এবং বন্দিদের নিরাপদ স্থানান্তর নিশ্চিত করে। এসব রুট ও সুড়ঙ্গের মাধ্যমে, তারা শত্রুর নজরদারি এড়িয়ে তাদের জিহাদী কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারে।
৫. প্রচারণা এবং মনোবল ভাঙা (Psychological Warfare)
শত্রুর বিরুদ্ধে মনোবল ভাঙানোর জন্য ছায়া ইউনিট মাঝে মাঝে প্রতিপক্ষের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে দেয়। এর মাধ্যমে শত্রুর মধ্যে অস্থিরতা এবং বিভ্রান্তি তৈরি করে তাদের যুদ্ধের উদ্দেশ্য এবং কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটানোর চেষ্টা করা হয়।
৬. উন্নত প্রযুক্তি এবং সাইবার আক্রমণ (Advanced Technology and Cyber Attacks)
ছায়া ইউনিট নতুন প্রযুক্তির সাহায্যে শত্রুর সাইবার নিরাপত্তায় আক্রমণ চালাতে পারে। এসব ইউনিট যুদ্ধের কৌশল এবং অস্ত্রের উন্নতির জন্য নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করে। এর মাধ্যমে, তারা শত্রুর যোগাযোগ ব্যবস্থা বা তথ্য ব্যবস্থায় আক্রমণ চালাতে সক্ষম হতে পারে।
৭. অন্তর্ভুক্ত অপারেশন এবং সুরক্ষা ব্যবস্থা (Infiltration Operations and Security)
ছায়া ইউনিট বিপদজনক ও অত্যন্ত গোপনীয় এলাকায় প্রবেশ করে শত্রুর বিরুদ্ধে কার্যক্রম পরিচালনা করে। এই ধরনের অপারেশনগুলি সাধারণত অন্তর্দ্বন্দ্ব বা একে অপরের বিরুদ্ধে হামলা চালানোর উদ্দেশ্যে হতে পারে, যা শত্রুর পক্ষে ক্ষতিকর প্রমাণিত হয়।
৮. বন্দি নিরাপত্তা (Prisoner Protection)
গাজা উপত্যকায়, যেখানে সাধারণত অবরোধ এবং বোমাবর্ষণ চলে, ছায়া ইউনিট বন্দিদের সুরক্ষা এবং তাদের গোপন আশ্রয়ে অবস্থান নিশ্চিত করতে কাজ করে। তারা শত্রুর নজরদারি থেকে বাঁচানোর জন্য বন্দিদের দীর্ঘ সময় ধরে নিরাপদ রাখতে সক্ষম হয়েছে, যা হামাসের জটিল নিরাপত্তা কৌশলের একটি বড় উদাহরণ।
সারসংক্ষেপ:
ছায়া ইউনিট-এর কাজগুলি অত্যন্ত গোপনীয়, ঝুঁকিপূর্ণ এবং কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ। তারা সরাসরি সংঘর্ষে না গিয়ে শত্রুর সাথে পরোক্ষভাবে লড়াই করে এবং সাধারণত নিজেদের অবস্থান গোপন রেখে অপারেশন চালায়। তাদের কাজের গোপনীয়তা, দক্ষতা, এবং নির্ভীকতার জন্য আল-কাসসাম ব্রিগেডের এই ইউনিটটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
এটি একটি অত্যন্ত সুষম ও দক্ষ ইউনিট যা একাধিক সামরিক অপারেশনের সফল বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এবং আধুনিক প্রযুক্তির সঙ্গে সজ্জিত।
যেহেতু এটি একটি অত্যন্ত গোপন ইউনিট, সেজন্য এর কার্যক্রম সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া কঠিন।
সারমর্ম:
ইজ্জাদ্দিন আল-কাসসাম ব্রিগেডের ইউনিটগুলো একে অপরের সাথে সমন্বয় করে কার্যক্রম পরিচালনা করে। প্রতিটি ইউনিটের আলাদা দায়িত্ব থাকলেও তাদের মূল লক্ষ্য একটাই—ফিলিস্তিনি ভূমির প্রতিরক্ষা এবং শত্রুর ওপর প্রতিরোধ চালানো। এটি একটি সুসংগঠিত এবং কার্যকর প্রতিরোধ আন্দোলনের প্রতীক।
ইজ্জাদ্দিন আল-কাসসাম ব্রিগেড অত্যন্ত সুগঠিত এবং প্রতিরোধমূলক কার্যক্রমে দক্ষ। তাদের প্রতিটি ইউনিট নির্দিষ্ট দায়িত্ব পালন করে এবং হামাসের সামগ্রিক সামরিক কার্যক্রমকে শক্তিশালী করে তোলে।
-সংগৃহীত
================================================
শেষ কিছু কথা,জিহাদী চেতনা লালনকারী প্রত্যেককে বাস্তববাদি হতে হবে,ধর মার কাটো এই নীতি থেকে বের হয়ে লং টার্ম গোল এর জন্য (দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য) স্ট্র্যাটেজিক্যালি (কৌশলগতভাবে) দক্ষ হতে হবে।পাশাপাশি ইসলামিক রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দদেরকেও গতানুগতিক শত বছরে আগের ধ্যানধারণা থেকে বের হয়ে উম্মাহকে জাগ্রত করার সফল কৌশল সম্পর্কে আপ টু ডেট থাকতে হবে। উপরের লেখা গুলো তারই একটা ক্ষুদ্র অংশ।
Comment