বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম।
বিভিন্ন সময় আমাদের সামনে বিভিন্ন ইস্যু আসে। ইস্যু ভিত্তিক আন্দোলনে মাঠ গরম হয়। আমরাও সেই আন্দোলনে কিছুটা রোমাঞ্চিত হই, আনন্দিত হই, আশ্বান্বিত হই। হোক সেটি শাপলা চত্বর কিংবা ফ্রান্স বিরোধী আন্দোলন কিংবা কসাই মুদি বিরোধী আন্দোলন।
তবে প্রায়শই আমাদের প্রত্যাশার সাথে বাস্তবতার মিল না পেয়ে অনেকে মনক্ষুণ্ণ হই। তাই ভাবছি - একটু মেথডিকালি / যুক্তিসম্মত পন্থায় এই ব্যাপারে চিন্তা করা যায় কিনা? এই ফোরামের সম্মানিত সাথীদের সাথে নিয়ে এমন কিছু প্রশ্নের তালিকা আমরা তৈরী করে নিতে পারি কিনা যেগুলো এ রকম বিভিন্ন ইস্যু সামনে আসলে কিংবা আপাত দৃষ্টিতে আশা জাগানিয়া কিছু সামনে আসলে - আমরা সহজে যাচাই-বাছাই করে নিতে পারি। আশা করা যায় - এ রকম একটি প্রশ্নের সেট আমাদের সাথে থাকলে এবং দু-একটি ইস্যুর ব্যাপারে এর উত্তরগুলো আমরা নিজেরা যাচাই-বাছাই করে নিলে এ রকম বেশীরভাগ ইস্যুর ব্যাপারে আমাদের প্রত্যাশা-চাহিদা-আবেগ-কর্মপন্থা আরও অধিক বাস্তবসম্মতভাবে পরিচালিত হবে ইনশাআল্লাহ।
আমি নিজেও কিছু প্রশ্নের তালিকা করছি - ভাইদেরও আহবান করছি - আপনাদের খেয়ালে যে সকল প্রশ্ন আসে - তা কমেন্ট আকারে জানিয়ে দিতে।
আল্লাহ আমাদের কাজে বারাকাহ দান করুন। আমীন।
প্রশ্ন তালিকা (শেষ আপডেটঃ ৩১ মার্চ ২০২১, রাত ১০ঃ৩০)
তানজিম আল-কায়েদার ব্যাপারে প্রশ্নঃ
- পুরো উপমহাদেশের কাজের ব্যাপারে তানজিম আল-কায়েদার দীর্ঘ-মেয়াদী উদ্দেশ্য ও কর্ম-পরিকল্পনা কী, কেমন? (আচরণবিধিতে তা উল্লেখ আছে)
উত্তরঃ
→ উদ্দেশ্য
১। তাওহীদ ও একত্ববাদের দাওয়াত দেয়া। অর্থাৎ, ইবাদত থেকে শুরু করে শাসনব্যবস্থা পর্যন্ত সবকিছু একমাত্র আল্লাহ তা’আলার জন্য নির্দিষ্ট করার আহ্বান জানানো।
২। মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আনিত শরীয়ত এবং তাঁর নবুওয়্যাতী পদ্ধতির খেলাফত প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করা। (ইসলামী ইমারাত আফগানিস্তানের প্রতিরক্ষা এবং তা শক্তিশালী করা এই লক্ষ্যেরই অংশ।)
৩। সকল অধিকৃত ইসলামী ভূখণ্ড এবং বায়তুল মুকাদ্দাসসহ সকল ইসলামী পবিত্র স্থান কাফেরদের দখল থেকে মুক্ত করা।
৪। অত্যাচার, অধিকার হরণ ও শোষণের পথ বন্ধ করা এবং এমন একটি ইসলামী সমাজ প্রতিষ্ঠা করা, যেখানে সর্বত্র শান্তি, শৃঙ্খলা, নিরাপত্তা, কল্যাণ ও ন্যায়পরায়ণতা বিরাজ করবে।
→ পরিকল্পণাঃ
⇒ জিহাদ ও কিতালের মাধ্যমে দ্বীনের পূর্ণ বিজয় অর্জনের চেষ্টা করা। (জামাআত আল-কায়েদা উপমহাদেশ, বৈশ্বিক কুফরি ব্যবস্থা ধ্বংস করার জন্য এবং শরীয়ত কার্যকর করার জন্য কিতাল ফী সাবিলিল্লাহকে ফরজ মনে করে এবং এই কিতাল করতে গিয়ে কোনো নিন্দুকের নিন্দায় পরোয়া করে না।)
⇒ পুরো কার্যক্রম দাওয়াত ও ক্বিতাল উভয় ময়দানের মাধ্যমে পরিচালিত হবে। দাওয়াত ও কিতাল যেন একে অপরের পরিপূরক থাকে। (জামাআত শরীয়ত প্রতিষ্ঠার জন্য দাওয়াত ও কিতালকে অত্যাবশ্যক মনে করে এবং চেষ্টা করে, যেন এই দুটির প্রত্যেকটি অপরটিকে এগিয়ে নেয় এবং শক্তিশালী করে)
⇒ এই মুহুর্তে উম্মাহর এই সামর্থ্য নেই যে, দুনিয়ার সকল স্থানে সরাসরি যুদ্ধ শুরু করার মাধ্যমে কুফফার-মুরতাদীনকে হটিয়ে ইসলামী শরীয়াত কায়েম করা। তাই নির্দিষ্ট-সম্ভাবনাময় কিছু ভূমিতে সম্মুখ যুদ্ধের কার্যক্রম পরিচালনা করা। সেই অনুযায়ী ইমারাতে ইসলামিয়াকে সামর্থ অনুযায়ী প্রতিরক্ষা করা ও একে শক্তিশালী করা যেন সেখানে মুজাহিদিনের পূর্ণ তামকিন অর্জিত হয়ে যায়।
→ পাকিস্তানের ব্যাপারে পরিকল্পনাঃ
⇒ প্রাথমিক পর্যায়ে কাবায়েলী এলাকায় বিশেষ নজর রেখে পাকিস্তানের কুফর শাসন ব্যবস্থার বিরুদ্ধে জিহাদ জারি রাখা। (আমরা পাকিস্তান সীমান্তের কবিলাভুক্ত তথা গোত্রীয় শাসনাধীন জনপদকে, অত্যাচারী কালাকানুন এবং গণতান্ত্রিক কুফরি শাসনব্যবস্থা থেকে মুক্ত করে, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আনিত নিরাপদ ও ন্যায়পরায়ণ শাসনব্যবস্থার অন্তর্ভুক্ত করতে চাই। এজন্য আমরা কাবায়েলী আলেম ও সর্দারদেরকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ মনে করি এবং তাঁদের মাধ্যমে এই জনপদের গোত্রগুলোকে ইসলামী বসন্তে নিয়ে আসার পদ্ধতিকেই উপযুক্ত মনে করি + যতক্ষণ পর্যন্ত পাকিস্তানকে কব্জা করে থাকা জালেম শাসনব্যবস্থার বিরুদ্ধে জিহাদ না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত না অত্যাচারী, সুদী ব্যবস্থা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব হবে; না কাশ্মীর এবং ভারতের মাজলুম মুসলমানদের সাহায্য করা সম্ভব হবে; আর না এই ভূখণ্ডে [নোট - উপমহাদেশ অঞ্চলে] শরীয়ত প্রতিষ্ঠার স্বপ্নপূরণ সম্ভব হবে)
→ ভারত ও বাংলাদেশের ব্যাপারে পরিকল্পনাঃ প্রাথমিকভাবে হিন্দুত্ববাদি ভারতীয় সরকারকে টার্গেট করে অপারেশন পরিচালনা। ভারতের ভিতরে সারিয়ার উদ্দেশ্য - ভারতকে নিজেদের ভিতরে ব্যস্ত রাখা যেন ইমারাতে ইসলামিয়ার উপর ওরা বেশী ফোকাস করতে না পারে। এবং ধীরে ধীরে ভারতীয় মেইন ল্যান্ডের মুসলিমদেরকে জাগিয়ে তোলা, তাদেরকে জিহাদে উজ্জীবিত করা। (ভারত এই পুরো ভূখণ্ডে (কাশ্মীর, ভারত, বাংলাদেশ ও বার্মায়) ইসলামী ও জিহাদি জাগরণের বিরুদ্ধে আমেরিকা, রাশিয়া ও ইসরাইলের বিশ্বস্ত বন্ধু. বাংলাদেশের ধর্মহীন সরকার এবং ধর্মহীন আন্দোলনগুলোর সবচেয়ে বড় রক্ষক ভারত এবং এই ভারতই রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অবমাননাকারী ও মুলহিদদের সব ধরনের সহযোগিতা ও পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান করে। বাংলাদেশের মুসলমানদের বিরুদ্ধে তারা নানা অপরাধে জড়িত। পানি কব্জা করে তাদের চাষাবাদ ধ্বংস করা এবং তাদের শিল্প কারখানা ও ব্যবসা বাণিজ্য দখল করার মত অপরাধ করে যাচ্ছে ভারত। ইতিহাস সাক্ষী– ভারত সবসময় চায়, বাংলার মুসলমানরা তার দাস হয়ে থাকুক। ভারতের রাষ্ট্রব্যবস্থা ইসলামী ভারত প্রতিষ্ঠার পথে মূল প্রতিবন্ধক + ভারত উপমহাদেশের কোনো জায়গায় হিন্দু, বৌদ্ধ এবং অন্যান্য ধর্মীয় গোষ্ঠীর জনসাধারণ, তাদের বসতবাড়ি এবং উপাসনালয় আমাদের লক্ষ্যবস্তু নয়। কারণ আমাদের যুদ্ধ এসব ধর্মীয় গোষ্ঠীর সশস্ত্র গ্রুপগুলোর সাথে, যারা মুসলমানদের উপর নির্যাতন করছে।)
- পুরো উপমহাদেশের কাজের পরিকল্পনার অধীনে বাংলাদেশের ভিতর কাজের ব্যাপারে তানজিম আল-কায়েদার দীর্ঘ-মেয়াদী উদ্দেশ্য ও কর্ম-পরিকল্পনা কী, কেমন? (আচরণবিধিতে তা উল্লেখ আছে)
উত্তরঃ
- ওপেন দাওয়াতের মাধ্যমে এদেশের মুসলিমদেরকে পরিপূর্ণ তাওহীদ ও জিহাদের দিকে দাওয়াত দেয়া। কুফর বিত তাগুত এবং আল ওয়ালা ওয়াল বা'রা এর আমল পূর্ণভাবে চালু করা।
- এদেশের মুসলিমদেরকে জিহাদের আনসার ও সমর্থনকারী বানানো। এই জিহাদ কোন একক জামাতের মাধ্যমে সম্পন্ন হবে না, উম্মাতকে জিহাদের সাথে সামিল করতে হবে।
- সর্বাত্বক ইদাদ জারি রাখা।
- সামর্থ্য অনুযায়ী নির্দিষ্ট টার্গেটে সারিয়া জারি রাখা। উল্লেখ্য আচরণবিধিতে বাংলাদেশের মুজাহিদিনের জন্যও অধিকাংশ সারিয়া টার্গেটই ভারতের ভিতরে যা এটি ইংগিত করে যে, বাংলাদেশের ভিতরে বা বাংলাদেশের মুরতাদ সরকারের বিরুদ্ধে তানজিম এখনই অপারেশন চায় না। বিগত কয়েক বছরের অপারেশনাল নীরবতা এমন ধারনাকে আরও জোরালো করে।
- বাংলাদেশের ভিতর তানজিম আল-কায়েদার কর্ম-পরিকল্পণার মূল স্তম্ভগুলো কী কী? (আচরণবিধিতে তা উল্লেখ আছে)
→ ওপেন দাওয়াহ
→ গোপন দাওয়াহ
→ জনগণকে জিহাদের আনসার ও সমর্থক বানানো
→ সামরিক প্রশিক্ষণ ও প্রস্তুতি জারি রাখা।
→ হিন্দে সারিয়া করা। (যেহেতু বেশীরভাগ টার্গেট হিন্দের, তাই এটি ধরে নেয়া যায়)
- বাংলাদেশে তানজিম আল-কায়েদার কর্ম-পরিকল্পণার মূল স্তম্ভগুলোর বড় বড় অংশ কী কী? (মূল স্তম্ভগুলোকে যদি আরেকটু ছোট ছোট ভাগে ভাগ করা যায় আর কি) (আচরণবিধিতে তা উল্লেখ আছে বা থাকতে পারে)
হেফাজতে ইসলামের ব্যাপারে প্রশ্নঃ
- হেফাজতে ইসলামের দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য কী কী?
→ বাংলাদেশে যে সকল ইসলামী তাহজীব-তামুদ্দীন এখনো অবশিষ্ট আছে - সেগুলোকে হেফাযত করা।
→ বাংলাদেশের সাধারণ মুসলিম জনগণকে সম্পৃক্ত করে ইসলাম বিরোধী শক্তির মোকাবেলা করা।
- হেফাজতে ইসলামের কর্ম-পরিকল্পনা আছে কিনা? থাকলে কী ও কেমন?
→ শানে রিসালাত সম্মেলন করা।
→ বিভিন্ন ওয়াজ মাহফিলের মাধ্যমে জনসচেতনতা তৈরী।
→ প্রচলিত কোন ইসলামী তাহজীব-তামুদ্দিন এর উপর নতুন কোন আঘাত আসলে রাজপথে মিছিল-মিটিং ইত্যাদির মাধ্যমে সেটিকে প্রতিহত করার চেষ্টা করা।
- হেফাজতে ইসলামের কর্ম-পরিকল্পণার মূল স্তম্ভগুলো কী কী?
- কসাই মুদি বিরোধী আন্দোলন হেফাজতের সেই কর্ম-পরিকল্পনার কোন অংশে পড়ে?
→ সার্বিকভাবে ইসলাম বিরোধী এই কুফফার এর আগমন রদ করা।
- কসাই মুদি বিরোধী আন্দোলন কীভাবে হেফাজতের দীর্ঘমেয়াদী উদ্দেশ্যকে সাহায্য করে?
→ সাধারণভাবে জনসচেতনতা তৈরী।
→ নেতা-কর্মীদেরকে চাংগা রাখা।
→ বর্তমান সরকারের জন-সমর্থন আরও কমিয়ে দেয়া। এই আন্দোলনের সুযোগে অন্য কেউ সরকারের পতন আন্দোলন শুরু করে কিনা দেখা। যাতে এই ইসলাম বিরোধী সরকারের পর একটু কম ইসলাম বিরোধী সরকার ক্ষমতায় আসে। আল্লাহু আলাম।
- হেফাজতের মুদি বিরোধী আন্দোলন সফল হবার সম্ভাবনা আছে কি না? থাকলে কতটুকু সম্ভাবনা আছে?
→ সম্ভাবনা নেই ও ছিল না। বর্তমান সরকার এই বিষয়ে কিছু মিছিল-মিটিং এর কারণে এই বিষয় থেকে ফেরত আসার সম্ভাবনা ছিল না।
- হেফাজতের মুদি বিরোধী আন্দোলন সফল হলে উম্মাহর কী কী ফায়দা অর্জিত হবে?
→ এই আন্দোলনের উদ্দেশ্যকে "জনসচেতনা তৈরী ও সামর্থ্য অনুযায়ী প্রতিবাদ করা" ধরে নিলে নিম্নোক্ত ফায়দা দেখতে পাওয়া যায়ঃ
→ মুরতাদ সরকারের বিরুদ্ধে যখন তেমন কেউ রাজপথে আওয়াজ করতে পারছিল না, তখন হেফাজত আওয়াজ তোলে। এতে অন্যরা সাহস পায়।
→ সাধারণ মুসলিমগণ আ'মভাবে ইসলামের বিভিন্ন ইস্যুতে মুরতাদ সরকার বিরোধী আন্দোলন করতে অভ্যস্থ হচ্ছে। এতে দীর্ঘ মেয়াদী দ্বীনের জন্য আন্দোলন-সংগ্রামে অভ্যস্থ হচ্ছে।
→ মুরতাদ সরকারের ইসলাম বিদ্বেষ সাধারণ মুসলিমদের কাছে দিনে দিনে সাফ হচ্ছে। যেমনঃ ছাত্রলীগকে কিছু মাদ্রাসা থেকে এইবার তাকফীর করা হয়েছে। আওয়ামী কিছু কিছু নেতাদের জানাজা পড়ানো হবে না বলে ঘোষণা দেয়া হয়েছে।
→ উম্মাতের মাঝে আল ওয়ালা ওয়াল বারা এর ধারনা কিছুটা চাংগা হওয়া।
বর্তমান ইস্যু-আন্দোলনের সাথে তানজিমের উদ্দেশ্য-কর্মপন্থার সম্পর্কঃ
- হেফাজতের বর্তমান মুদি বিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে কি তানজিম আল-কায়েদার দীর্ঘ-মেয়াদী কোন উদ্দেশ্য সরাসরি অর্জন হয়ে যাবার আশা আছে?
→ না, কোন দীর্ঘমেয়াদী উদ্দেশ্য সারসরি অর্জন হবার সম্ভাবনা নেই।
- হেফাজতের বর্তমান মুদি বিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে কি তানজিম আল-কায়েদার দীর্ঘ-মেয়াদী কোন উদ্দেশ্য পরোক্ষভাবে অর্জন হয়ে যাবার আশা বা সম্ভাবনা আছে?
→ না, কোন দীর্ঘমেয়াদী উদ্দেশ্য পরোক্ষভাবেও অর্জন হবার সম্ভাবনা নেই।
- হেফাজতের বর্তমান মুদি বিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে কি তানজিমের কর্ম-পরিকল্পনার কোন স্তম্ভ পুরোপুরি অর্জন হয়ে যাবার আশা বা সম্ভাবনা আছে?
→ না, কোন স্তম্ভ সম্পুর্ণ অর্জন হবার সভাবনা নেই।
- হেফাজতের বর্তমান মুদি বিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে কি তানজিমের কর্ম-পরিকল্পনার কোন স্তম্ভের বড় কোন অংশ পুরোপুরি অর্জন হয়ে যাবার আশা বা সম্ভাবনা আছে?
→ না, কোন বড় অংশ সম্পুর্ণ অর্জন হবার সভাবনা নেই।
- উপরুক্ত প্রশ্নগুলোর উত্তর 'না' বাচক হলে - হেফাজতের বর্তমান মুদি বিরোধী আন্দোলনে অন্য কোনভাবে কি তানজিমের কর্ম-পরিকল্পনার কোন স্তম্ভ বা বড় কোন অংশ অর্জনে আংশিক বা পূর্ণভাবে সাহায্য করে? করলে কীভাবে?
→ জ্বি, তানজিমের কর্ম-পরিকল্পনার কিছু স্তম্ভ অর্জনে এই আন্দোলন আংশিক সাহায্য করে। যেমনঃ
→ জনগণকে সরকার বিরোধী মনোভাব তৈরী ও এর বিরুদ্ধে আন্দোলন-সংগ্রামে অভ্যস্থ করা।
→ মুরতাদ সরকারের রিদ্দা কিছুটা সাফ হচ্ছে।
→ আল আল ওয়ালা ওয়াল বারা এর কিছুটা বাস্তব শিক্ষা।
→ জিহাদ-কিতাল একটি কঠিন বিষয়। এদেশের মানুষ এতে অভ্যস্থা না। এই আন্দোলন-সংগ্রাম-কিছু ভাইদের শাহাদাত বরণ ইত্যাদি ধীরে ধীরে মানসিকভাবে সবাইকে কিতালের জন্য কিছুটা এগিয়ে দিবে ইনশাআল্লাহ।
→ এদেশের পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে কিছু একশনের মাধ্যমে এদের ব্যাপারে অযাচিত ভীতি সকলের মন থেকে দূর হচ্ছে।
বর্তমান আন্দোলনের ব্যাপারে তানজিমের প্রত্যাশা সংক্রান্তঃ
- তানজিম আল-কায়েদার শক্তির জায়গাগুলো কী কী?
→ আক্বীদা ও মানহাজ সুস্পষ্ট। সালাফে সালেহীনদের অনুসরণকৃত।
→ উদ্দেশ্য ও পরিকল্পনা অনেকটাই ক্লিয়ার-কাট।
→ একটি লেভেল সু-সংগঠিত, নির্দিষ্ট উদ্দেশ্যে পরিচালিত।
→ আভ্যন্তরীণ যোগাযোগ ব্যবস্থা আল্লাহর ইচ্ছায় নিরাপদ রয়েছে, সহজেই কুফফাররা আভ্যন্তরীন যোগাযোগ এর তথ্য পাবে না ইনশাআল্লাহ।
- তানজিম আল-কায়েদার দূর্বলতার জায়গাগুলো কী কী?
→ যে কোন গোপন সংগঠনের যে বেসিক দূর্বলতা তার সবগুলোই আছে। অর্থাৎ বিডির মুসলিম জনগণকে তাওহীদ ও জিহাদের সঠিক দাওয়াত পৌছে দেয়া, নিজ সদস্যদেরকে সঠিক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ দেয়ার ক্ষেত্রে, তানজীমগতভাবে নিরাপত্তা দূর্বলতা ইত্যাদি। আর যে কোন গোপন জিহাদী সংগঠনের জন্য এগুলো অনিবার্য বাস্তবতা।
→ সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধি বনাম সাংগঠনিক কাঠামো সুসংহত রাখার ক্ষেত্রে ডাইলেমাও একটি বাস্তব সমস্যা।
→ দেশের মুসলিম জনসংখ্যার খুবই অল্প সংখ্যক মানুষকে দাওয়াহ পৌঁছাতে পারে এবং নিজেদের সাথে সংযুক্ত রাখা।
→ ওপেন কোন আন্দোলন করতে না পারা।
→ পর্যাপ্ত দক্ষ জনশক্তির অভাব। (এটিও গোপন যেকোন সংগঠনের জন্য কমন সমস্যা)
→ রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে কোন ইস্যুকে মুভ করতে পারার সক্ষমতা নেই।
- হেফাজতে ইসলামের শক্তির জায়গাগুলো কী কী?
→ দেশের অধিকাংশ উলামা সংযুক্ত থাকা।
→ দেশের অধিকাংশ মুসলিমদের সমর্থন থাকা।
→ চাইলে দেশের অধিকাংশ জনগণকে তাওহীদ ও সঠিক মানহাজের দাওয়াত পৌছানোর সক্ষমতা রয়েছে।
→ রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে কোন ইস্যুকে মুভ করতে পারার সক্ষমতা রয়েছে।
- হেফাজতে ইসলামের দূর্বলতার জায়গাগুলো কী কী?
→ মানহাজের ক্ষেত্রে অপরিষ্কার ধারনা / অবস্থান।
→ সাংগঠিক কাঠামো নেই বললেই চলে।
→ সু-নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য ও কর্ম-পরিকল্পনার অনুপস্থিতি। কী চাই, কীভাবে চাই? - এটি পরিষ্কার না।
→ আভ্যন্তরীণ যোগাযোগ ব্যবস্থা অনিরাপদ, তাগুতের হাতের মুঠোয়।
- উভয়ের উদ্দেশ্য-কর্মপন্থা-শক্তি ও দূর্বলতার আলোকে তানজিম আল-কায়েদা হেফাজতে ইসলামের চলমান আন্দোলন থেকে কী কী প্রত্যাশা করতে পারে বা করা বাস্তবসম্মত হবে?
→ এ রকম আন্দোলন দিয়ে শরীয়াত কায়েম হয়ে যাবে বলে আশা করা যায় না।
→ এককভাবে এমন আন্দোলনের কারণে সরকার পরিবর্তন হয়ে যাবে - এমনটিও আশা করা যায় না।
→ তানজিম আল-কায়েদার কোন দীর্ঘ-মেয়াদী উদ্দেশ্য অর্জন হয়ে যাবে বলে আশা করা যায় না।
→ তানজিম আল-কায়েদার কর্ম-পরিকল্পনার কিছু কিছু স্তম্ভ অর্জনে এ রকম আন্দোলন কিছুটা সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে ইনশাআল্লাহ। (আন্দোলন সফল হলে উম্মাহর কী কী ফায়দা অর্জিত হবে - প্রশ্ন দ্রষ্টব্য)
বর্তমান আন্দোলনের ব্যাপারে তানজিমের কর্মপন্থা সংক্রান্তঃ
- উপরুক্ত প্রত্যাশা অনুযায়ী হেফাজতে ইসলামের চলমান কসাই মুদি বিরোধী আন্দোলনের ব্যাপারে তানজিম আল-কায়েদার মনোভাব ও কর্মপন্থা কেমন হওয়া উচিত?
→ উপরুক্ত আলোচনার আলোকে হেফাজতের বিভিন্ন আন্দোলনের ব্যাপারে আমাদের প্রত্যাশার লাগাম টেনে রাখা উচিত হবে।
→ এসকল আন্দোলনে নিজেদের দীর্ঘমেয়াদী উদ্দেশ্যকে ব্যাহত না করে যতটুকু পারা যায় বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে সাহায্য করা।
→ তাওহীদ ও জিহাদের দাওয়াতের ক্ষেত্রে হেফাজতের এই শক্তিকে কাজে লাগানো যায় কিনা - এই ফিকির করা।
→ হেফাজতকে বিভিন্ন আন্দোলনের ইস্যু নির্ধারণে পরোক্ষাভাবে (সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে) সহায়তা করা।
→ হেফাজতকে দীর্ঘ-মেয়াদী লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নির্ধারণ করতে পরোক্ষাভাবে (সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে) সহায়তা করা।
→ হেফাজতের যে কোন আন্দোলন শুরু হলে সামর্থ অনুযায়ী সেটিকে যত বেশী পারা অ্যায় প্রলম্বিত করার প্রচেষ্টা রাখা। বারংবার সরকার পরিবর্তনের ফায়দা যেন পাওয়া যায় এই উদ্দেশ্যে।
→ এ সকল আন্দোলনে নিজেদের সাথীদেরকে শরীক রেখে মুরতাদ বাহিনীর ভীতি
আল্লাহু আ'লাম।
নোট - ভাইদের কাছে অনুরোধ বিভিন্ন পয়েন্টে এড / এডিট / ডিলিট সাজেষ্ট করুন।
বিভিন্ন সময় আমাদের সামনে বিভিন্ন ইস্যু আসে। ইস্যু ভিত্তিক আন্দোলনে মাঠ গরম হয়। আমরাও সেই আন্দোলনে কিছুটা রোমাঞ্চিত হই, আনন্দিত হই, আশ্বান্বিত হই। হোক সেটি শাপলা চত্বর কিংবা ফ্রান্স বিরোধী আন্দোলন কিংবা কসাই মুদি বিরোধী আন্দোলন।
তবে প্রায়শই আমাদের প্রত্যাশার সাথে বাস্তবতার মিল না পেয়ে অনেকে মনক্ষুণ্ণ হই। তাই ভাবছি - একটু মেথডিকালি / যুক্তিসম্মত পন্থায় এই ব্যাপারে চিন্তা করা যায় কিনা? এই ফোরামের সম্মানিত সাথীদের সাথে নিয়ে এমন কিছু প্রশ্নের তালিকা আমরা তৈরী করে নিতে পারি কিনা যেগুলো এ রকম বিভিন্ন ইস্যু সামনে আসলে কিংবা আপাত দৃষ্টিতে আশা জাগানিয়া কিছু সামনে আসলে - আমরা সহজে যাচাই-বাছাই করে নিতে পারি। আশা করা যায় - এ রকম একটি প্রশ্নের সেট আমাদের সাথে থাকলে এবং দু-একটি ইস্যুর ব্যাপারে এর উত্তরগুলো আমরা নিজেরা যাচাই-বাছাই করে নিলে এ রকম বেশীরভাগ ইস্যুর ব্যাপারে আমাদের প্রত্যাশা-চাহিদা-আবেগ-কর্মপন্থা আরও অধিক বাস্তবসম্মতভাবে পরিচালিত হবে ইনশাআল্লাহ।
আমি নিজেও কিছু প্রশ্নের তালিকা করছি - ভাইদেরও আহবান করছি - আপনাদের খেয়ালে যে সকল প্রশ্ন আসে - তা কমেন্ট আকারে জানিয়ে দিতে।
আল্লাহ আমাদের কাজে বারাকাহ দান করুন। আমীন।
প্রশ্ন তালিকা (শেষ আপডেটঃ ৩১ মার্চ ২০২১, রাত ১০ঃ৩০)
তানজিম আল-কায়েদার ব্যাপারে প্রশ্নঃ
- পুরো উপমহাদেশের কাজের ব্যাপারে তানজিম আল-কায়েদার দীর্ঘ-মেয়াদী উদ্দেশ্য ও কর্ম-পরিকল্পনা কী, কেমন? (আচরণবিধিতে তা উল্লেখ আছে)
উত্তরঃ
→ উদ্দেশ্য
১। তাওহীদ ও একত্ববাদের দাওয়াত দেয়া। অর্থাৎ, ইবাদত থেকে শুরু করে শাসনব্যবস্থা পর্যন্ত সবকিছু একমাত্র আল্লাহ তা’আলার জন্য নির্দিষ্ট করার আহ্বান জানানো।
২। মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আনিত শরীয়ত এবং তাঁর নবুওয়্যাতী পদ্ধতির খেলাফত প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করা। (ইসলামী ইমারাত আফগানিস্তানের প্রতিরক্ষা এবং তা শক্তিশালী করা এই লক্ষ্যেরই অংশ।)
৩। সকল অধিকৃত ইসলামী ভূখণ্ড এবং বায়তুল মুকাদ্দাসসহ সকল ইসলামী পবিত্র স্থান কাফেরদের দখল থেকে মুক্ত করা।
৪। অত্যাচার, অধিকার হরণ ও শোষণের পথ বন্ধ করা এবং এমন একটি ইসলামী সমাজ প্রতিষ্ঠা করা, যেখানে সর্বত্র শান্তি, শৃঙ্খলা, নিরাপত্তা, কল্যাণ ও ন্যায়পরায়ণতা বিরাজ করবে।
→ পরিকল্পণাঃ
⇒ জিহাদ ও কিতালের মাধ্যমে দ্বীনের পূর্ণ বিজয় অর্জনের চেষ্টা করা। (জামাআত আল-কায়েদা উপমহাদেশ, বৈশ্বিক কুফরি ব্যবস্থা ধ্বংস করার জন্য এবং শরীয়ত কার্যকর করার জন্য কিতাল ফী সাবিলিল্লাহকে ফরজ মনে করে এবং এই কিতাল করতে গিয়ে কোনো নিন্দুকের নিন্দায় পরোয়া করে না।)
⇒ পুরো কার্যক্রম দাওয়াত ও ক্বিতাল উভয় ময়দানের মাধ্যমে পরিচালিত হবে। দাওয়াত ও কিতাল যেন একে অপরের পরিপূরক থাকে। (জামাআত শরীয়ত প্রতিষ্ঠার জন্য দাওয়াত ও কিতালকে অত্যাবশ্যক মনে করে এবং চেষ্টা করে, যেন এই দুটির প্রত্যেকটি অপরটিকে এগিয়ে নেয় এবং শক্তিশালী করে)
⇒ এই মুহুর্তে উম্মাহর এই সামর্থ্য নেই যে, দুনিয়ার সকল স্থানে সরাসরি যুদ্ধ শুরু করার মাধ্যমে কুফফার-মুরতাদীনকে হটিয়ে ইসলামী শরীয়াত কায়েম করা। তাই নির্দিষ্ট-সম্ভাবনাময় কিছু ভূমিতে সম্মুখ যুদ্ধের কার্যক্রম পরিচালনা করা। সেই অনুযায়ী ইমারাতে ইসলামিয়াকে সামর্থ অনুযায়ী প্রতিরক্ষা করা ও একে শক্তিশালী করা যেন সেখানে মুজাহিদিনের পূর্ণ তামকিন অর্জিত হয়ে যায়।
→ পাকিস্তানের ব্যাপারে পরিকল্পনাঃ
⇒ প্রাথমিক পর্যায়ে কাবায়েলী এলাকায় বিশেষ নজর রেখে পাকিস্তানের কুফর শাসন ব্যবস্থার বিরুদ্ধে জিহাদ জারি রাখা। (আমরা পাকিস্তান সীমান্তের কবিলাভুক্ত তথা গোত্রীয় শাসনাধীন জনপদকে, অত্যাচারী কালাকানুন এবং গণতান্ত্রিক কুফরি শাসনব্যবস্থা থেকে মুক্ত করে, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আনিত নিরাপদ ও ন্যায়পরায়ণ শাসনব্যবস্থার অন্তর্ভুক্ত করতে চাই। এজন্য আমরা কাবায়েলী আলেম ও সর্দারদেরকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ মনে করি এবং তাঁদের মাধ্যমে এই জনপদের গোত্রগুলোকে ইসলামী বসন্তে নিয়ে আসার পদ্ধতিকেই উপযুক্ত মনে করি + যতক্ষণ পর্যন্ত পাকিস্তানকে কব্জা করে থাকা জালেম শাসনব্যবস্থার বিরুদ্ধে জিহাদ না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত না অত্যাচারী, সুদী ব্যবস্থা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব হবে; না কাশ্মীর এবং ভারতের মাজলুম মুসলমানদের সাহায্য করা সম্ভব হবে; আর না এই ভূখণ্ডে [নোট - উপমহাদেশ অঞ্চলে] শরীয়ত প্রতিষ্ঠার স্বপ্নপূরণ সম্ভব হবে)
→ ভারত ও বাংলাদেশের ব্যাপারে পরিকল্পনাঃ প্রাথমিকভাবে হিন্দুত্ববাদি ভারতীয় সরকারকে টার্গেট করে অপারেশন পরিচালনা। ভারতের ভিতরে সারিয়ার উদ্দেশ্য - ভারতকে নিজেদের ভিতরে ব্যস্ত রাখা যেন ইমারাতে ইসলামিয়ার উপর ওরা বেশী ফোকাস করতে না পারে। এবং ধীরে ধীরে ভারতীয় মেইন ল্যান্ডের মুসলিমদেরকে জাগিয়ে তোলা, তাদেরকে জিহাদে উজ্জীবিত করা। (ভারত এই পুরো ভূখণ্ডে (কাশ্মীর, ভারত, বাংলাদেশ ও বার্মায়) ইসলামী ও জিহাদি জাগরণের বিরুদ্ধে আমেরিকা, রাশিয়া ও ইসরাইলের বিশ্বস্ত বন্ধু. বাংলাদেশের ধর্মহীন সরকার এবং ধর্মহীন আন্দোলনগুলোর সবচেয়ে বড় রক্ষক ভারত এবং এই ভারতই রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অবমাননাকারী ও মুলহিদদের সব ধরনের সহযোগিতা ও পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান করে। বাংলাদেশের মুসলমানদের বিরুদ্ধে তারা নানা অপরাধে জড়িত। পানি কব্জা করে তাদের চাষাবাদ ধ্বংস করা এবং তাদের শিল্প কারখানা ও ব্যবসা বাণিজ্য দখল করার মত অপরাধ করে যাচ্ছে ভারত। ইতিহাস সাক্ষী– ভারত সবসময় চায়, বাংলার মুসলমানরা তার দাস হয়ে থাকুক। ভারতের রাষ্ট্রব্যবস্থা ইসলামী ভারত প্রতিষ্ঠার পথে মূল প্রতিবন্ধক + ভারত উপমহাদেশের কোনো জায়গায় হিন্দু, বৌদ্ধ এবং অন্যান্য ধর্মীয় গোষ্ঠীর জনসাধারণ, তাদের বসতবাড়ি এবং উপাসনালয় আমাদের লক্ষ্যবস্তু নয়। কারণ আমাদের যুদ্ধ এসব ধর্মীয় গোষ্ঠীর সশস্ত্র গ্রুপগুলোর সাথে, যারা মুসলমানদের উপর নির্যাতন করছে।)
- পুরো উপমহাদেশের কাজের পরিকল্পনার অধীনে বাংলাদেশের ভিতর কাজের ব্যাপারে তানজিম আল-কায়েদার দীর্ঘ-মেয়াদী উদ্দেশ্য ও কর্ম-পরিকল্পনা কী, কেমন? (আচরণবিধিতে তা উল্লেখ আছে)
উত্তরঃ
- ওপেন দাওয়াতের মাধ্যমে এদেশের মুসলিমদেরকে পরিপূর্ণ তাওহীদ ও জিহাদের দিকে দাওয়াত দেয়া। কুফর বিত তাগুত এবং আল ওয়ালা ওয়াল বা'রা এর আমল পূর্ণভাবে চালু করা।
- এদেশের মুসলিমদেরকে জিহাদের আনসার ও সমর্থনকারী বানানো। এই জিহাদ কোন একক জামাতের মাধ্যমে সম্পন্ন হবে না, উম্মাতকে জিহাদের সাথে সামিল করতে হবে।
- সর্বাত্বক ইদাদ জারি রাখা।
- সামর্থ্য অনুযায়ী নির্দিষ্ট টার্গেটে সারিয়া জারি রাখা। উল্লেখ্য আচরণবিধিতে বাংলাদেশের মুজাহিদিনের জন্যও অধিকাংশ সারিয়া টার্গেটই ভারতের ভিতরে যা এটি ইংগিত করে যে, বাংলাদেশের ভিতরে বা বাংলাদেশের মুরতাদ সরকারের বিরুদ্ধে তানজিম এখনই অপারেশন চায় না। বিগত কয়েক বছরের অপারেশনাল নীরবতা এমন ধারনাকে আরও জোরালো করে।
- বাংলাদেশের ভিতর তানজিম আল-কায়েদার কর্ম-পরিকল্পণার মূল স্তম্ভগুলো কী কী? (আচরণবিধিতে তা উল্লেখ আছে)
→ ওপেন দাওয়াহ
→ গোপন দাওয়াহ
→ জনগণকে জিহাদের আনসার ও সমর্থক বানানো
→ সামরিক প্রশিক্ষণ ও প্রস্তুতি জারি রাখা।
→ হিন্দে সারিয়া করা। (যেহেতু বেশীরভাগ টার্গেট হিন্দের, তাই এটি ধরে নেয়া যায়)
- বাংলাদেশে তানজিম আল-কায়েদার কর্ম-পরিকল্পণার মূল স্তম্ভগুলোর বড় বড় অংশ কী কী? (মূল স্তম্ভগুলোকে যদি আরেকটু ছোট ছোট ভাগে ভাগ করা যায় আর কি) (আচরণবিধিতে তা উল্লেখ আছে বা থাকতে পারে)
হেফাজতে ইসলামের ব্যাপারে প্রশ্নঃ
- হেফাজতে ইসলামের দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য কী কী?
→ বাংলাদেশে যে সকল ইসলামী তাহজীব-তামুদ্দীন এখনো অবশিষ্ট আছে - সেগুলোকে হেফাযত করা।
→ বাংলাদেশের সাধারণ মুসলিম জনগণকে সম্পৃক্ত করে ইসলাম বিরোধী শক্তির মোকাবেলা করা।
- হেফাজতে ইসলামের কর্ম-পরিকল্পনা আছে কিনা? থাকলে কী ও কেমন?
→ শানে রিসালাত সম্মেলন করা।
→ বিভিন্ন ওয়াজ মাহফিলের মাধ্যমে জনসচেতনতা তৈরী।
→ প্রচলিত কোন ইসলামী তাহজীব-তামুদ্দিন এর উপর নতুন কোন আঘাত আসলে রাজপথে মিছিল-মিটিং ইত্যাদির মাধ্যমে সেটিকে প্রতিহত করার চেষ্টা করা।
- হেফাজতে ইসলামের কর্ম-পরিকল্পণার মূল স্তম্ভগুলো কী কী?
- কসাই মুদি বিরোধী আন্দোলন হেফাজতের সেই কর্ম-পরিকল্পনার কোন অংশে পড়ে?
→ সার্বিকভাবে ইসলাম বিরোধী এই কুফফার এর আগমন রদ করা।
- কসাই মুদি বিরোধী আন্দোলন কীভাবে হেফাজতের দীর্ঘমেয়াদী উদ্দেশ্যকে সাহায্য করে?
→ সাধারণভাবে জনসচেতনতা তৈরী।
→ নেতা-কর্মীদেরকে চাংগা রাখা।
→ বর্তমান সরকারের জন-সমর্থন আরও কমিয়ে দেয়া। এই আন্দোলনের সুযোগে অন্য কেউ সরকারের পতন আন্দোলন শুরু করে কিনা দেখা। যাতে এই ইসলাম বিরোধী সরকারের পর একটু কম ইসলাম বিরোধী সরকার ক্ষমতায় আসে। আল্লাহু আলাম।
- হেফাজতের মুদি বিরোধী আন্দোলন সফল হবার সম্ভাবনা আছে কি না? থাকলে কতটুকু সম্ভাবনা আছে?
→ সম্ভাবনা নেই ও ছিল না। বর্তমান সরকার এই বিষয়ে কিছু মিছিল-মিটিং এর কারণে এই বিষয় থেকে ফেরত আসার সম্ভাবনা ছিল না।
- হেফাজতের মুদি বিরোধী আন্দোলন সফল হলে উম্মাহর কী কী ফায়দা অর্জিত হবে?
→ এই আন্দোলনের উদ্দেশ্যকে "জনসচেতনা তৈরী ও সামর্থ্য অনুযায়ী প্রতিবাদ করা" ধরে নিলে নিম্নোক্ত ফায়দা দেখতে পাওয়া যায়ঃ
→ মুরতাদ সরকারের বিরুদ্ধে যখন তেমন কেউ রাজপথে আওয়াজ করতে পারছিল না, তখন হেফাজত আওয়াজ তোলে। এতে অন্যরা সাহস পায়।
→ সাধারণ মুসলিমগণ আ'মভাবে ইসলামের বিভিন্ন ইস্যুতে মুরতাদ সরকার বিরোধী আন্দোলন করতে অভ্যস্থ হচ্ছে। এতে দীর্ঘ মেয়াদী দ্বীনের জন্য আন্দোলন-সংগ্রামে অভ্যস্থ হচ্ছে।
→ মুরতাদ সরকারের ইসলাম বিদ্বেষ সাধারণ মুসলিমদের কাছে দিনে দিনে সাফ হচ্ছে। যেমনঃ ছাত্রলীগকে কিছু মাদ্রাসা থেকে এইবার তাকফীর করা হয়েছে। আওয়ামী কিছু কিছু নেতাদের জানাজা পড়ানো হবে না বলে ঘোষণা দেয়া হয়েছে।
→ উম্মাতের মাঝে আল ওয়ালা ওয়াল বারা এর ধারনা কিছুটা চাংগা হওয়া।
বর্তমান ইস্যু-আন্দোলনের সাথে তানজিমের উদ্দেশ্য-কর্মপন্থার সম্পর্কঃ
- হেফাজতের বর্তমান মুদি বিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে কি তানজিম আল-কায়েদার দীর্ঘ-মেয়াদী কোন উদ্দেশ্য সরাসরি অর্জন হয়ে যাবার আশা আছে?
→ না, কোন দীর্ঘমেয়াদী উদ্দেশ্য সারসরি অর্জন হবার সম্ভাবনা নেই।
- হেফাজতের বর্তমান মুদি বিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে কি তানজিম আল-কায়েদার দীর্ঘ-মেয়াদী কোন উদ্দেশ্য পরোক্ষভাবে অর্জন হয়ে যাবার আশা বা সম্ভাবনা আছে?
→ না, কোন দীর্ঘমেয়াদী উদ্দেশ্য পরোক্ষভাবেও অর্জন হবার সম্ভাবনা নেই।
- হেফাজতের বর্তমান মুদি বিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে কি তানজিমের কর্ম-পরিকল্পনার কোন স্তম্ভ পুরোপুরি অর্জন হয়ে যাবার আশা বা সম্ভাবনা আছে?
→ না, কোন স্তম্ভ সম্পুর্ণ অর্জন হবার সভাবনা নেই।
- হেফাজতের বর্তমান মুদি বিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে কি তানজিমের কর্ম-পরিকল্পনার কোন স্তম্ভের বড় কোন অংশ পুরোপুরি অর্জন হয়ে যাবার আশা বা সম্ভাবনা আছে?
→ না, কোন বড় অংশ সম্পুর্ণ অর্জন হবার সভাবনা নেই।
- উপরুক্ত প্রশ্নগুলোর উত্তর 'না' বাচক হলে - হেফাজতের বর্তমান মুদি বিরোধী আন্দোলনে অন্য কোনভাবে কি তানজিমের কর্ম-পরিকল্পনার কোন স্তম্ভ বা বড় কোন অংশ অর্জনে আংশিক বা পূর্ণভাবে সাহায্য করে? করলে কীভাবে?
→ জ্বি, তানজিমের কর্ম-পরিকল্পনার কিছু স্তম্ভ অর্জনে এই আন্দোলন আংশিক সাহায্য করে। যেমনঃ
→ জনগণকে সরকার বিরোধী মনোভাব তৈরী ও এর বিরুদ্ধে আন্দোলন-সংগ্রামে অভ্যস্থ করা।
→ মুরতাদ সরকারের রিদ্দা কিছুটা সাফ হচ্ছে।
→ আল আল ওয়ালা ওয়াল বারা এর কিছুটা বাস্তব শিক্ষা।
→ জিহাদ-কিতাল একটি কঠিন বিষয়। এদেশের মানুষ এতে অভ্যস্থা না। এই আন্দোলন-সংগ্রাম-কিছু ভাইদের শাহাদাত বরণ ইত্যাদি ধীরে ধীরে মানসিকভাবে সবাইকে কিতালের জন্য কিছুটা এগিয়ে দিবে ইনশাআল্লাহ।
→ এদেশের পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে কিছু একশনের মাধ্যমে এদের ব্যাপারে অযাচিত ভীতি সকলের মন থেকে দূর হচ্ছে।
বর্তমান আন্দোলনের ব্যাপারে তানজিমের প্রত্যাশা সংক্রান্তঃ
- তানজিম আল-কায়েদার শক্তির জায়গাগুলো কী কী?
→ আক্বীদা ও মানহাজ সুস্পষ্ট। সালাফে সালেহীনদের অনুসরণকৃত।
→ উদ্দেশ্য ও পরিকল্পনা অনেকটাই ক্লিয়ার-কাট।
→ একটি লেভেল সু-সংগঠিত, নির্দিষ্ট উদ্দেশ্যে পরিচালিত।
→ আভ্যন্তরীণ যোগাযোগ ব্যবস্থা আল্লাহর ইচ্ছায় নিরাপদ রয়েছে, সহজেই কুফফাররা আভ্যন্তরীন যোগাযোগ এর তথ্য পাবে না ইনশাআল্লাহ।
- তানজিম আল-কায়েদার দূর্বলতার জায়গাগুলো কী কী?
→ যে কোন গোপন সংগঠনের যে বেসিক দূর্বলতা তার সবগুলোই আছে। অর্থাৎ বিডির মুসলিম জনগণকে তাওহীদ ও জিহাদের সঠিক দাওয়াত পৌছে দেয়া, নিজ সদস্যদেরকে সঠিক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ দেয়ার ক্ষেত্রে, তানজীমগতভাবে নিরাপত্তা দূর্বলতা ইত্যাদি। আর যে কোন গোপন জিহাদী সংগঠনের জন্য এগুলো অনিবার্য বাস্তবতা।
→ সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধি বনাম সাংগঠনিক কাঠামো সুসংহত রাখার ক্ষেত্রে ডাইলেমাও একটি বাস্তব সমস্যা।
→ দেশের মুসলিম জনসংখ্যার খুবই অল্প সংখ্যক মানুষকে দাওয়াহ পৌঁছাতে পারে এবং নিজেদের সাথে সংযুক্ত রাখা।
→ ওপেন কোন আন্দোলন করতে না পারা।
→ পর্যাপ্ত দক্ষ জনশক্তির অভাব। (এটিও গোপন যেকোন সংগঠনের জন্য কমন সমস্যা)
→ রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে কোন ইস্যুকে মুভ করতে পারার সক্ষমতা নেই।
- হেফাজতে ইসলামের শক্তির জায়গাগুলো কী কী?
→ দেশের অধিকাংশ উলামা সংযুক্ত থাকা।
→ দেশের অধিকাংশ মুসলিমদের সমর্থন থাকা।
→ চাইলে দেশের অধিকাংশ জনগণকে তাওহীদ ও সঠিক মানহাজের দাওয়াত পৌছানোর সক্ষমতা রয়েছে।
→ রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে কোন ইস্যুকে মুভ করতে পারার সক্ষমতা রয়েছে।
- হেফাজতে ইসলামের দূর্বলতার জায়গাগুলো কী কী?
→ মানহাজের ক্ষেত্রে অপরিষ্কার ধারনা / অবস্থান।
→ সাংগঠিক কাঠামো নেই বললেই চলে।
→ সু-নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য ও কর্ম-পরিকল্পনার অনুপস্থিতি। কী চাই, কীভাবে চাই? - এটি পরিষ্কার না।
→ আভ্যন্তরীণ যোগাযোগ ব্যবস্থা অনিরাপদ, তাগুতের হাতের মুঠোয়।
- উভয়ের উদ্দেশ্য-কর্মপন্থা-শক্তি ও দূর্বলতার আলোকে তানজিম আল-কায়েদা হেফাজতে ইসলামের চলমান আন্দোলন থেকে কী কী প্রত্যাশা করতে পারে বা করা বাস্তবসম্মত হবে?
→ এ রকম আন্দোলন দিয়ে শরীয়াত কায়েম হয়ে যাবে বলে আশা করা যায় না।
→ এককভাবে এমন আন্দোলনের কারণে সরকার পরিবর্তন হয়ে যাবে - এমনটিও আশা করা যায় না।
→ তানজিম আল-কায়েদার কোন দীর্ঘ-মেয়াদী উদ্দেশ্য অর্জন হয়ে যাবে বলে আশা করা যায় না।
→ তানজিম আল-কায়েদার কর্ম-পরিকল্পনার কিছু কিছু স্তম্ভ অর্জনে এ রকম আন্দোলন কিছুটা সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে ইনশাআল্লাহ। (আন্দোলন সফল হলে উম্মাহর কী কী ফায়দা অর্জিত হবে - প্রশ্ন দ্রষ্টব্য)
বর্তমান আন্দোলনের ব্যাপারে তানজিমের কর্মপন্থা সংক্রান্তঃ
- উপরুক্ত প্রত্যাশা অনুযায়ী হেফাজতে ইসলামের চলমান কসাই মুদি বিরোধী আন্দোলনের ব্যাপারে তানজিম আল-কায়েদার মনোভাব ও কর্মপন্থা কেমন হওয়া উচিত?
→ উপরুক্ত আলোচনার আলোকে হেফাজতের বিভিন্ন আন্দোলনের ব্যাপারে আমাদের প্রত্যাশার লাগাম টেনে রাখা উচিত হবে।
→ এসকল আন্দোলনে নিজেদের দীর্ঘমেয়াদী উদ্দেশ্যকে ব্যাহত না করে যতটুকু পারা যায় বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে সাহায্য করা।
→ তাওহীদ ও জিহাদের দাওয়াতের ক্ষেত্রে হেফাজতের এই শক্তিকে কাজে লাগানো যায় কিনা - এই ফিকির করা।
→ হেফাজতকে বিভিন্ন আন্দোলনের ইস্যু নির্ধারণে পরোক্ষাভাবে (সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে) সহায়তা করা।
→ হেফাজতকে দীর্ঘ-মেয়াদী লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নির্ধারণ করতে পরোক্ষাভাবে (সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে) সহায়তা করা।
→ হেফাজতের যে কোন আন্দোলন শুরু হলে সামর্থ অনুযায়ী সেটিকে যত বেশী পারা অ্যায় প্রলম্বিত করার প্রচেষ্টা রাখা। বারংবার সরকার পরিবর্তনের ফায়দা যেন পাওয়া যায় এই উদ্দেশ্যে।
→ এ সকল আন্দোলনে নিজেদের সাথীদেরকে শরীক রেখে মুরতাদ বাহিনীর ভীতি
আল্লাহু আ'লাম।
নোট - ভাইদের কাছে অনুরোধ বিভিন্ন পয়েন্টে এড / এডিট / ডিলিট সাজেষ্ট করুন।
Comment