Announcement

Collapse
No announcement yet.

গণতন্ত্র মতপ্রকাশের স্বাধীনতা দেয় না

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • গণতন্ত্র মতপ্রকাশের স্বাধীনতা দেয় না

    গণতন্ত্র মতপ্রকাশের স্বাধীনতা দেয় না
    গণতন্ত্র মানুষকে এ কথাা বলে ধোঁকা দেয় যে: গণতন্ত্র হচ্ছে জনমতের প্রতিফলন, জনগণ যেভাবে চায় সেভাবে দেশ চলবে, যে ধরনের শাসন চায় সে ধরনের শাসন চলবে, দেশ কিভাবে চলবে সেটা জনগণই ঠিক করবে।

    চক্ষুষ্মান একজন সাধারণ মানুষও জানে কথাগুলো কত মিথ্যা। এই মিথ্যার উপরই গোটা গণতন্ত্র দাঁড়িয়ে। কিন্তু তার সফলতা হলো, সে ধোঁকা দিয়ে নিজের আসল চেহারা আড়াল করতে সক্ষম হয়েছে।

    ইসলামি শাসন বিলুপ্ত করে গণতান্ত্রিক শাসন শুরুুর পর থেকে আজ অবধি আমাদের দেশ যেভাবে চলছে, আমরা কি সে রকম একটা দেশ, সে রকম একটা শাসনই চেয়েছিলাম?

    আরও সহজ করে বলি: দেশটা যারা চালাচ্ছে, আমরা কি স্বেচ্ছায় তাদের নির্বাচন করেছি? তাদের শাসনে আমাদের কল্যাণ এই মনে করে স্বতঃস্ফূর্তভাবে তাদের হাতে শাসনভার তুলে দিয়েছি?

    উত্তর হবে : না। আমরাা তাদের নির্বাচন করিনি, তাদের হাতে শাসনভার তুলে দিইনি; তারা আমাদের ঘাড়ে চেপে ব‌‌‌সেছে। আমাদের ইচ্ছা-অবেগের বাইরে তারা রাষ্ট্র দখল করেছে, আমাদের অনিচ্ছায় আমাদের উপর শাসনের নামে খড়গ ঘুরাচ্ছে।

    যদি তাই হয়, তাহলে গণতন্ত্র আমাদের ইচ্ছা আকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটায় না। বরং আমাদের নাম বিকিয়ে তারা নিজেদের স্বার্থ উদ্ধার করে। নিজেদের আখের গুছায়। দেশ বিদেশে সম্পত্তির পাহাড় গড়ে।

    দেশটা আমার, আমি দেশের নাগরিক, আমি চাই না এইসব লোককে, আমি চাই না তাদের শাসন- এরপরও নাকি আমার আশা-আকাঙ্খা, আমার মতামতের ভিত্তিতে চলছে দেশ?! এরচেয়ে বড় ধোঁকা আর কি হতে পারে?! আমার নাম বিকিয়ে আমাকে শোষণ! কত চতুর তারা! কতবড় ভাওতাবাজ তারা!

    গণমত গ্রহণের সদিচ্ছা গণতন্ত্রে নাই
    সোজা সত্য বাস্তব কথাা হচ্ছে গণতন্ত্র কখনও গণমত গ্রহণ করে না। গণমত গ্রহণের সদিচ্ছা তার নাই। বরং সে গণমতের নাম করে ধোঁকা দেয়। এটাই বাস্তবতা। দুই দিক থেকে আমরা এটি দেখতে পাই:
    এক. গণতন্ত্র একটা স্যাকুলার শাসনের কাঠামো দিয়ে দেয়, এর বাহিরে যাওয়ার অনুমতি আপনার নাই। গেলে আপনি রাষ্ট্রদ্রোহী।
    দুই. কয়েকটা স্যাকুলার দল গঠন করে দেয়, এদের বাহিরে যাওয়ার আপনার জনগণের নাই।

    শাসন কাঠামোও আগে থেকে নির্ধারিত, শাসক দলও আগে থেকে নির্ধারিত- তাহলে আপনার স্বাধীনতা কোথায়? আর শাসনও এমন যে একজন মুসলিম হিসেবে আমি তা চাই না, শাসকও এমন যে একজন মুসলিম হিসেবে আমি তাকে ঘৃণাা করি। এরপরও আমাকে তা-ই গ্রহণ করতে হবে। তাহলে কোথায় আমার স্বাধীনতা? হয় মদ, না হয় পেশাব- এটাই গণতন্ত্র। দুধ গ্রহণের অধিকার আপনার নাই।

    অপরদিকে ইসলাম এর সম্পূর্ণ বিপরীত। ইসলামে কোনো দল নাই। একজন খলিফার ওফাতের পর উম্মত স্বাধীনভাবে আরেকজনকে বেছে নিবে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওফাতের পর উম্মত স্বতঃস্ফূর্তভাবে সকলের মধ্য্য থেকে আবুু বকরকে বেছে নেয়। তাঁর ওফাতের পর সকলের মধ্য থেকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে উমরকে, তার শাহাদাতের পর স্বতঃস্ফূর্তভাবে উসমানকে। রাদিয়াল্লাহু আনহুম আজমাইন।

    সামনে তো নির্বাচন আসছে এবং ধারণা করা হচ্ছে: অতীতের যেকোনো নির্বাচনের তুলনায় একটুু স্বচ্ছ নির্বাচন হবে। এই নির্বাচনে আপনার মত যাছাইয়ের জন্য (!!) তারা কয়েকটা দল দাঁড় করাবে, আপনার ইখতিয়ার থাকবে এই দলগুলো থেকে কোনো একটাকে গ্রহণ করা। তাও ধরলাম এখানে এক রকমের স্বাধীনতা আপনার আছে, যদিও পরিপূর্ণ না। পক্ষান্তরে এই দলগুলো যে সংবিধান দিয়ে রাষ্ট্র চালাবে, যে নিয়ম ও আইন দিয়ে আপনাকে শাসন করবে: সেটায় মত দেয়া তো দূরের কথা, সেটা জানার সুযোগ পর্যন্ত আপনার নাই। আর তারা এমনই চোর, এমনই অসৎ: সেই সংবিধানে কি আছে, সেই আইনে কি আছে, সেই আইন আপনি চাচ্ছেন কি'না- সেটা কখনও স্পষ্ট আলোচনা করবে না। বরং আপনাকে শুধুু আশার বাণী শুনাবে: আমরা এই করবো, সেই করবো। সব কথা, ওয়াদা অঙ্গিকার সব অস্পষ্ট। আসল হাকিকত নিয়ে আপনার সাথে কথা বলবে না, আপনি জানতেও পারবেন না। —— এমনই মত প্রকাশের স্বাধীনতা আপনার!!

    তারা যদি সৎ হতো, স্পষ্ট করে বলতো: আপনি একজন মুসলমান হিসেবে শরীয়তের শাসন চান, নাকি কাফেরদের রচিত সংবিধানের শাসন চান? তারা আসলে কাফেরদের থেকে আমদানি করাা কুফরি আইন দিয়ে আপনাকে শাসন করবে, কিন্তুু আপনাকে তা বলবে না। বিভিন্ন অস্পষ্ট বক্তৃতার মধ্য দিয়ে পাশ কাটিয়ে পার হয়ে যাবে। তারা যদি সৎ হতো, নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করতো। আপনার মতামত স্পষ্টভাবে শুনতো। এরপর তা গ্রহণ করলে স্পষ্টভাবে বলতো, আমরা গ্রহণ করছি, না করলে স্পষ্টভাবে বলতো, আপনার মতামত আমরা গ্রহণ করতে পারছি না।

    তারা তো কুরআনের শাসনের পরিবর্তে কুফরকে গ্রহণ করেছে, সেটা আপনার ঘাড়ে চাপাবে, কিন্তুু নাম বিকাবে আপনার: আপনি তাদের বেছে নিয়েছেন, আপনি এই শাসন চান। এভাবে আপনার নাম বিকিয়ে কুফর করে যাবে। কতবড় অসৎ তারা!
    কেন তারা নির্বাচনের সময় আপনাকে জিজ্ঞেস করলো না: আপনি মুসলমান হিসেবে আল্লাহর আনুগত্য্য চান, নাকি আমেরিকার আনুগত্য চান?

    কেন তারা এই অপশন দিলো না: আপনার এখনই মত দেয়ার সময়। আপনি যদি মুসলমান হিসেবে আল্লাহর শাসন চান, যে শাসন আপনাদের রাসূল দেখিয়ে গেছেন, আবুু বকর ওমর দেখিয়ে গেছেন, তাহলে আমরাা সেই শাসন কায়েম করবো। আর যদি আপনারা আমেরিকার কুফরি শাসন চান, তাহলে আমরা সেই কুফরি শাসন আমদানি করে আপনার মাথায় চাপাবো। আপনি এখনই পরিষ্কার মতামত দিন- আপনি কোনটা চান।

    এই রকম কোনোা ইশতিহার জীবনে কোনোদিন দেখেছেন বা শুনেছেন? দেখেননি, কখনও শুনেনওনি। তারা আসলে আপনার মতামত চায় না। তারা ইসলামী শাসন ফেলে দিয়ে একটা কুফর গ্রহণ করেছে, সুকৌশলে আপনাকে ধোঁকাা দিয়ে সেটা আপনার মাথায় চাপাবে। আপনার মতামতের কোনো মূল্য গণতন্ত্রে নাই।

    যদি তারা আপনাকে জিজ্ঞেস করতো: মুসলমান হিসেবে আপনি যে আল্লাহ ও রাসূলকে বিশ্বাস করেন, যে আবুু বকর উমরকে নিয়ে গর্ব করেন- আপনি সেই শাসন চান; নাকি আমেরিকা থেকে আমদানি করা কুফর চান- এই রকম অপশন দিলে কোনো মুসলমান কি আমেরিকা থেকে আমদানি করা কুফরের পক্ষ সমর্থন করতো? করতো না। মত দেয়ার এই অপশন তারা কখনও আপনাকে দিবে না। আপনার নাম বিকিয়ে আপনাকে ধোঁকা দেয়াই তাদের আসল মতলব। অতএব, সচেতন হোন হে মুসলিম ভাই। আপনি আজীবন প্রতারিত হচ্ছেন।

    আপনি যা করতে পারেন
    যেকোনো পার্টি আপনার কাছে ভোটের জন্য আসবে: জিজ্ঞেস করুন, দেখি তোমাদের সংবিধান। আমি যে আল্লাহ ও রাসূলকে বিশ্বাস করি, তোমরা সেই আল্লাহ ও রাসূলের শাসন কায়েম করছো কি'না দেখি।

    যদি তা না পারেন, তাহলে এটা করতে পারেন: যে কেউ ভোট চাইতে আসবে, বলবেন, আপনাদের আইন কি হবে তা দেশের বরেণ্য আলেম উলামাদের সামনে পেশ করুন। দেশের মানুষ যে সকল আলেম উলামাকে বিশ্বাস করে তাদের সামনে পেশ করুন। তারা যদি বলে: এটা আল্লাহ ও রাসূলের আইন, এই আইন আমাদের মুসলমানদের আইন- তাহলে আমরা ভোট দিবো।

    আপনি শুধুু হিম্মত করে একটু আগান, আর কিছু নয় শুধুু পরীক্ষার জন্য্য একটুু নাড়াা দেন: দেখবেন তারা কতবড় মুনাফেক, কতবড় বাটপার!

    ইসলামীী দলের বেলায় কি করবেন? তারাা তো বলবে আমরা ইসলাম কায়েম করতে চাই। তখন আপনি কি করবেন?
    আপনি বলবেন: আপনারা দেশের বর্তমান আইন কি কি আছে, সেগুলো জনগণের সামনে প্রকাশ করুন। সেই আইনগুলো কোনটাা কোনটাা ইসলামবিরোধী সেটা প্রকাশ করুন। সেগুলোর স্থলে ইসলামের আইন কোনটি প্রকাশ করুন। আপনারা ইসলামের আইনগুলো কতটুকুু বাস্তবায়ন করবেন বা করতে পারবেন জনগণের সামনে প্রকাশ করুন।

    যদি তারা এটা করতে না পারে, তাহলে যে লাউ সেই কদু। ক্ষমতায় গিয়ে যে সংবিধান ছিল সে কুফরি সংবিধান দিয়েই রাষ্ট্র পরিচালনাা করতে থাকবে বা করতে বাধ্য্য হবে। অতএব, আগে থেকে পরিষ্কার হওয়াা দরকার: আপনারা কি কি পরিবর্তন করতে চাচ্ছেন, আর কতটুকুু করার সামর্থ্য আপনাদের আছে। পারবেন শতভাগের একভাগ, কিন্তুু ইশতিহারে প্রচার করবেন: আমরা খেলাফত কায়েম করে ফেলবো- এটাও তো এক প্রকারের ধোঁকাই হলো। অধিকন্তু ক্ষমতায় যাওয়ার পর যখন বিশেষ কোনো পরিবর্তন করতে পারবেন না, তখন এমনি এমনি আপনাদের বিশ্বস্ততা নষ্ট হবে।
    ×××



  • #2
    আল্লাহ আপনার ইলম ও আমলে বারাকাহ দান করুন। আমিন

    পোস্টটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সর্বত্র ছড়িয়ে দেওয়া কাম্য।
    গোপনে আল্লাহর অবাধ্যতা থেকে বেঁচে থাকার মধ্যেই রয়েছে প্রকৃত সফলতা ৷

    Comment


    • #3
      হে আল্লাহ! তুমি আমাদেরকে গণতন্ত্রের ধোঁকা প্রতারণা বোঝার তৌফিক দাও। এর অসারতা থেকে বাঁচার তৌফিক দাও।
      এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু ওয়া আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর আদর্শ গ্রহণ করা ও তা বাস্তবায়নের তৌফিক দাও। আমীন। আমীন। আমীন।

      Comment


      • #4
        আল্লাহ আপনার ইলম ও কলমে বারাকাহ দান করুন এবং আমাদের বুঝার ও আমল করার তাওফিক দান করুন, আমীন।

        জাঝাকাল্লাহু খাইরান

        Comment

        Working...
        X