ফুঁ দিয়ে এই চেরাগ নিভানো যাবে না!
পর্ব - ৪
তৃতীয় উদ্দেশ্য : শহীদদেরকে বাছাই করা
.
আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন, ویتخذ منکم شھداء অর্থাৎ তোমাদের মধ্য থেকে শহীদদেরকে গ্রহণ করবেন। আল্লাহ তা‘আলা তাঁর প্রিয় বান্দাদেরকে, যারা আল্লাহর রাস্তায় বের হয়েছে, যারা আল্লাহ জন্য নিজেকে কুরবানি করার তামান্না করে, যাদের অন্তর একনিষ্ঠতায় পরিপূর্ণ তাদেরকে তিনি নিজের কাছে ডেকে নিয়ে যেতে চান।
اِنَّ اللّٰهَ لا يَنظُرُ إلٰى أَجسامِكُمْ و لا أمْوالِكُمْ و لٰكن يَّنظُر الٰى قلوبكم
নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের শরীরের দিকে তাকান না এবং তোমাদের মালের দিকেও তাকান না বরং তিনি তোমাদের অন্তরের দিকে তাকান।
.
আল্লাহ তা‘আলা অন্তরের অবস্থা জানেন, অন্তরসমূহকে দেখেন তাই তিনি এই সমস্ত মুমিনদেরকে নিজের কাছে ডেকে নিয়ে যেতে চান, আর যখন তিনি তাকে নিজের সান্নিধ্যে নিতে চান তো সেই মুহূর্তে তার শত্রুকে তার ওপর বিজয়ী করে দেন। তখন সে দুশমনের বোমার আঘাতে, দুশমনের গুলির আঘাতে, দুশমনের কঠোরতার কারণে ও তার কষ্ট দেওয়ার মাধ্যমে শহীদ হয়ে যায়। দুশমন খুশি প্রকাশ করে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে তার মাধ্যমে মুমিনের ইচ্ছা পূর্ণ হয়, সারা জীবনের আশা বাস্তবায়িত হয়। তার মাধ্যমে সে তাঁর ঠিকানা পেয়ে যায় এবং সে তাঁর রবের পাশে জান্নাতে পৌছে যায়।
.
চতুর্থ উদ্দেশ্য : মুজাহিদদের প্রশিক্ষণ এবং সংশোধন
.
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
وَلِيُمَحِّصَ اللَّهُ الَّذينَ ءامَنوا
অর্থাৎ যেন আল্লাহ তা‘আলা মুমিনদের সংশোধন করতে পারেন।
.
সেই ঈমানদারের উপর যখন কোনো বিপদ আসে তখন সে তার গুনাহের উপর দৃষ্টি দেয়, সে বিরোধিতা এবং পিছিয়ে পড়ার মনোভাব প্রকাশ করে না বরং সে নিজের পর্যালোচনার সাথে কাজ করে। সাথে সাথে দৌড়ে যায় এবং নিজেকে পরিশুদ্ধ করে নেয়। সে তখন নিজেকে পরিশোধিত করে, নিজের আন্দোলনকে সংশোধন করে, নিজের জামাতের ইসলাহ করে, নিজের পূর্ণ সফরটাকে আবার ঠিক করে নেয়, তখন সে এই বিপদের মাধ্যমে নিজেকে পবিত্র করে পরিষ্কার হয়ে যায় এবং তার জি/হ।দী কার্যক্রম শক্তিশালী থেকে শক্তিশালী হয়। দ্রুত থেকে দ্রুততার সাথে সামনে বাড়ে। অভিজ্ঞতা অর্জন হয় এবং তার এই কার্যক্রম মুসলমান জনসাধারনের জন্য আরও অধিক রহমত এবং বরকতের কারণ হয়ে যায়।
.
পঞ্চম উদ্দেশ্য : দ্বীনের দুশমনদের ধ্বংস করা
.
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
وَيَمْحَقَ الْكَافِرِينَ
অর্থাৎ যাতে কাফেরদেরকে ধ্বংস করতে পারেন।
.
দ্বীনের শত্রুদের ধ্বংস এ বিপদের মধ্যে লুকিয়ে থাকে। মুমিনদের উপর যখন জালেমদেরকে সাময়িক বিজয় দেওয়া হয় তখন তাদের নষ্টামি, দ্বীনের বিরোধিতা এবং দ্বীনদারদের বিরোধিতা, দ্বীনের বিরুদ্ধে তাদের অন্তরে গোপন থাকা কঠিন ঘৃণা এবং বুকের মধ্যে লুকায়িত জানোয়ার থেকেও বেশি হিংস্র অন্তরটা খুলে সামনে এসে যায়। পাকিস্তানে এই জালেমদের অবস্থা দেখুন! এখন কেমনভাবে তাদের নষ্টামি, দ্বীনের বিরোধিতা এবং দ্বীনদারদের প্রতি ঘৃণা স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। বাংলাদেশের অবস্থা দেখুন! বাংলাদেশে মুমিন এবং মুসলমানদের সাথে কত কিছু হয়ে যাচ্ছে। সুতরাং এই বাতিলদের বাতিল হওয়াটা এই বিপদের মধ্যে আরও অধিক স্পষ্ট হয়ে যায়। প্রত্যেক প্রত্যক্ষকারী, ইনসাফ ও ন্যায়ের সাথে কাজ সম্পাদনকারীর অন্তরে জালেমদের নষ্টামির ব্যাপারে কোনো ধরনের সন্দেহ-সংশয় থাকে না এবং আল্লাহ তা‘আলাও তাদের বিরুদ্ধে প্রমাণ প্রতিষ্ঠা করে দেন, তখন তাদের ধ্বংসের সময় নিকটবর্তী হয়ে যায়। আল্লাহ তা‘আলা পুনরায় প্রমাণ পরিপূর্ণ করে তাদের রশিকে টানা শুরু করে দেন, যেন মুমিনদের এই বিপদের মাধ্যমে মূলত মুজাহিদদেরই উপকার হয়।
.
(উদ্ধৃত অংশটি শাইখ উস্তাদ উ@স]ম। ম]হ-মুদ হাফিজাহুল্লাহর "ফুঁ দিয়ে এই চেরাগ নিভানো যাবে না!" থেকে চয়ন করা হয়েছে।)
Comment