Tweet
[ এই লেখার সাথে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট পুরোপুরি মিলবে না। তবে এখান থেকে আপনারা কিছু ধারণা লাভ করতে পারবেন ইনশাআল্লাহ। এজন্য অনুমোদন দেওয়া হল। -মডারেটর ]
আলহামদুলিল্লাহ। দুরূদ ও সালাম মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উপর। শুরু করছি পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে।
ইন্টারনেটে খোজাখুজি করার সময় কাকতালীয়ভাবে beating police interrogation শিরোনামের একটি বইয়ের অপ্রকাশিত পাণ্ডুলিপি পেয়ে যাই। বেনামি লেখকের দাবি, তিনি দীর্ঘদিন ফ্লোরিডা পুলিশ ডিপার্টমেন্টের গোয়েন্দা বিভাগে কাজ করেছেন এবং Florida Department of Law Enforcement (FDLE) নামক প্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষক হিসাবে নিয়োগ পান। গুপ্তহত্যা নিয়ে তানজিমের বই থাকলেও এজাতীয় বই এখনও বিরল। ১৬৪ নিয়ে কিছু পরামর্শ দেয়া হলেও গুম থাকা ভাইদের জন্য বিস্তারিত হ্যান্ডবুক নেই। তাই বইটি সংক্ষেপে ভাবানুবাদের কাজে হাত দিলাম। হয়তো তেমন উপকারে আসবে না। কিন্তু, আমরা সুযোগ হাতছাড়া করতে পারি না। আবার অনুবাদের পরে ত্বাগুত বাহিনী জিজ্ঞাসাবাদের এই খেলাকে অন্য স্তরেও নিয়ে যেতে পারে, যেহেতু তারা নিয়মিত ফোরাম পড়ে। কিন্তু তাতে কি যায় আসে? যেমনটা শাইখ আওলাকি (রাহ
বলেছেন; এই যুদ্ধ শুরু থেকেই মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ ছিল। আর চূড়ান্ত বিজয় মুমিনদের জন্য। - অনুবাদক
জিজ্ঞাসাবাদ চলাকালে
মূলনীতি-
পৃষ্ঠা ১৩, লেখক এখানে পরামর্শ দিয়েছেন যে, যদি কখনো জিজ্ঞাসাবাদ কক্ষে আপনাকে নিয়ে যাওয়া হয় সর্বোচ্চ চেষ্টা করুন মুখ না খোলার জন্য। কথা যত কম বলবেন, ততই আপনার জন্য ভালো। যদি কিছু বলতেই হয় তাহলে এটা বলুন যে, আমি শুধু আমার উকিলের সাথে কথা বলব।
পৃষ্ঠা ১৮, উকিল আপনার পকেট থেকে টাকা হাতে নেয়ার চেষ্টা করবে, আর পুলিশ আপনাকে জেলে ভরার চেষ্টা করবে। এই অবস্থায় আপনার হাতে মাত্র তিনটি মূলনীতি থাকবে যা আপনাকে বেঁচে ফিরে আসতে সাহায্য করতে পারে। তিনটি মূলনীতি হল-
[QUOTE] এক. Admit Nothing. কোন কিছু স্বীকার করবেন না
2. Deny Everything. সবকিছু অস্বীকার করবেন
3. Demand Proof. প্রমাণ দাবি করবেন
আত্মরক্ষার নিয়ম [\QUOTE]
পৃষ্ঠা ২২, জিজ্ঞাসাবাদের ফাকফোকর দিয়ে পালিয়ে আসার প্রথম নিয়ম হচ্ছে কখনো পুলিশকে বোকা মনে করবেন না। আপনার কাছে যদি বানানো গল্প থাকে, সেটা দিয়েও সব সময় পার পাওয়া যায় না। উত্তম হচ্ছে চুপ থাকা। একজন উকিল আপনাকে সর্বোচ্চ এই পরামর্শ দিতে পারবে যে, সে না আসা পর্যন্ত যেন আপনি কোন কথা না বলেন। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে পুলিশ আপনার উকিলের সাথেও অ্যাডভান্স সাইকোলজিকাল কৌশল ব্যবহার করতে পারে। বইয়ের লেখক একবার এরকম একজন উকিল কে বোকা বানিয়েছিলেন। সেই উকিল তার মক্কেলকে পরামর্শ দিয়েছিল রিমান্ডে সব স্বীকার করার জন্য, আর বাকিটা সে আদালতে দেখে নিবে। লেখক উকিলকে সেভাবেই ঘোল খাইয়েছিল। বর্তমানে তার মক্কেল যাবজ্জীবন সাজা খাটছে।
পৃষ্ঠা ২৪, জিজ্ঞাসাবাদ থেকে বাঁচার দ্বিতীয় নিয়ম কখনও আপনার অপরাধের কথা অন্য কাউকে জানাবেন না। মিথ্যা গল্প তৈরি করার চেয়ে সাক্ষী না থাকার ব্যাপারে বেশি সতর্কতা অবলম্বন করুন। ব্যয়বহুল উকিল রাখার চেয়ে এটা সবচেয়ে সস্তা এবং কার্যকরী পরামর্শ।
পাতা ২৭, উপন্যাস বা চলচ্চিত্রে যা দেখেছেন, পুলিশের তদন্ত বাস্তবে তেমন হয় না। পুলিশ মূলত আপনার পরিচিত সকল মানুষের সাথে কথা বলবে; বন্ধু, প্রতিবেশী, সহকর্মী, ব্যবসায়িক অংশীদার, আত্মীয়স্বজন (বিশেষত, স্ত্রী)। তাদের সবার থেকে আপনার ব্যাপারে খুটিনাটি জানবে। কি খান, কি করেন, কখন ঘুমান, কি বই পড়েন, কোথায় যান ইত্যাদি। তারপর যেকোন তুচ্ছ তথ্য দিয়ে রিমান্ডে আপনার গলা চেপে ধরবে-
"তোমার এক বন্ধু বলল, তুমি গণতন্ত্র পছন্দ কর না। ফেসবুকে দেখলাম, অমুক হুযুরকে ফলো কর। মোবাইলে অমুক লেখকের বই আছে দেখছি"।
পাতা ২৮, শুধু তাই না, এবার পুলিশ বলবে যে, "আমিও একসময় নব্য-নাতসি বাহিনীতে ছিলাম। মাঝেমাঝে আমিও বাচ্চা মেয়েদের দেখে উত্তেজিত হই। আমিও চাই, দেশে ইসলামি শাসন থাকুক।"
পাতা ২৯, people always talk about the things they do, legal, or otherwise. It's a fatal flaw in the human psyche that the police have become experts in exploiting. Do not ever talk about the illegal things you have done, to anyone, ever. Furthermore, the less people know about you, the better.
অর্থাৎ, মানুষ সর্বদা তার পছন্দের ব্যাপার অন্যদের বলে। এটা মানব মনস্তত্ত্বের মারাত্মক ত্রুটি যা পুলিশ নিজেদের কাজে লাগায়। আপনার ব্যাপারে অন্যান্য লোকেরা যত কম জানবে ততই ভাল।
(আশা করি, দ্বৈত পরিচয় ও সোস্যাল মিডিয়া ত্যাগের ব্যাপারে আর অতিরিক্ত জানার দরকার নেই।)
পাতা ৩১, The techniques taught and used by these people are extremely sophisticated and have been compared to brainwashing – but they are still legal.
অর্থাৎ কিভাবে আপনার আশেপাশের লোক থেকে আপনার ব্যাপারে তথ্য বের করা যাবে সেসব জটিল পদ্ধতিকে মগজধোলাইয়ের সাথে তুলনা করা যায়।
পাতা ৩৪, If the interrogator knows even a little about you, he will use this information to try to exert psychological pressure on you to force you to confess (sometimes whether you committed the crime or not).
অর্থাৎ আপনার ব্যাপারে সামান্যতম তথ্য দিয়েই আপনাকে মানসিক চাপ দিয়ে স্বীকারোক্তি আদায় করা যায়, যদিও আপনি ঐ অপরাধে যুক্ত না-ও থাকেন। জেলে এমন অনেক নিরপরাধ লোক পাবেন যারা স্বেচ্ছায় বা ভুলবশত স্বীকারোক্তি দিয়ে ফেলেছে। তাই নিজের মতাদর্শের ব্যাপারে একটুও বেফাস কথা আশেপাশের কাউকে বলবেন না।
পাতা ৩৯, মনে রাখবেন, আপনাকে রিমান্ডে নেয়ার আগেই পুলিশ আপনার ব্যাপারে তথ্য যোগাড় করবে। প্রথমে তাদের ডাটাবেজে আপনার অতীত আইনি মামলা ও সমস্যা খুজবে। তারপর মোবাইল কোম্পানি থেকে আপনি কখন কার সাথে কত সময় কথা বলেন, সেটা বের করে যাদের সাথে কথা বলেন তাদের আগে জিজ্ঞাসাবাদ করবে।
আধুনিক যুগে Facebook, WhatsApp, telegram এগুলো থেকে চ্যাট হিস্ট্রি সংগ্রহ করে সেসব লোকদের আগে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
(একারনে সোস্যাল মিডিয়া ছেড়ে দাওয়াহ ইলাল্লাহ ফোরাম ব্যবহার করুন। এখানে আপনি ধর্ম-রাজনীতি সবকিছুর আপডেট পাবেন। একটু কষ্ট করে অভ্যস্ত হলেই হবে। ফেসবুকের আগের যামানায় মানুষ ফোরাম-ই ব্যবহার করত। সুতরাং সোস্যাল মিডিয়ার পরিবর্তে ফোরাম ব্যবহার যুক্তিসঙ্গত বটে)
পাতা ৪০, আপনার কম্পিউটারের রিসাইকেল বিন আপনি কেমন বই পড়েন সেই তথ্যের অন্যতম উৎস।
পাতা ৪২, কোথাও অপরাধ সংগঠন করতে গেলে ট্রাফিক আইন বা অন্যান্য আইন লঙ্ঘন করবেন না। এতে ধরা পড়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। অনেক দুর্দান্ত আসামী এই ভুলের কারণে গ্রেফতার হয়েছে। যেমন, টেড বান্ডি মাতাল হয়ে গাড়ি চালিয়ে।
তদন্তের ধাপসমূহ-
পাতা ৪৪, আপনার পরিচিত কাউকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সেগুলো সাধারণত থানার বাইরে হয়ে থাকে। আর তখন স্বাভাবিক তথ্য জানা হন। যেমনঃ কোথায় থাকে, কি করে, অফিস কয়টায় ইত্যাদি।
Neighbors are the nosiest people on earth, I have found.
প্রতিবেশীদের হক্ব আদায়ে সচেষ্ট থাকুন। অন্তত তাদের ক্রুদ্ধ করা থেকে বিরত থাকুন। সাধারণত পুলিশ সন্দেহভাজন ব্যক্তির প্রতিবেশীকে ক্যামেরা ও রেকর্ডার প্রদান করে এবং ১ সপ্তাহ পরে তা প্রতিবেশী থেকে সংগ্রহ করে থাকে।
somebody always is willing to cooperate with the police to put your ass in jail. If the interrogator learns of ex-girlfriends or boyfriends, he will exploit them to no end.
কেউ না কেউ আপনার ক্ষতি করার জন্য পুলিশকে সহায়তা করবেই। অতীত জীবনে কোন প্রেমিকা ছিল জানতে পারলে পুলিশের কপাল খুলে যায়। তারা আপনার জীবনকে জাহান্নাম বানাতে আদালতে সাক্ষ্য দেয়ার জন্যেও পর্যাপ্ত সময় বের করে নেয়।
পাতা ৪৬, Beware of anyone you know who has gone to jail, or been interrogated recently. If they start coming around to your place acting friendly and asking questions, your “buddy” has probably turned informant.
কিছুদিন আগে জেলে গিয়েছিল কিংবা পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল, এমন লোকেরা হঠাৎ করেই বন্ধুসুলভ হয়ে গেলে সাবধান হয়ে যান। খুব সম্ভবত তারা পুলিশের সংবাদদাতা হিসাবে কাজ করছে। অভিজ্ঞতা বলছে যে, কাউকে কিছু বললে সে আরও তিন জনের কাছে সেই তথ্য ছড়িয়ে দেয়। সেই তিন জন আরও তিন জন বিশ্বস্ত (!!!) ব্যক্তিকে জানিয়ে দেয়। এসব বিশ্বস্ত (!!!) ব্যক্তিদের বোকা বানিয়ে কথা বের করার জন্য ইনফরমারদের মাসে হাজার হাজার ডলার দেয়া হন।
পাতা ৪৮, আপনার ব্যাপারে আরও তথ্য সংগ্রহের উপায় হল, আপনার বাড়ি থেকে এক ঘণ্টার দূরত্ব অবধি চষে বেড়ান। মানুষ সাধারণত এর বেশি দূরত্বে যায় না। পুলিশ দেখবে আপনি কোন দোকান থেকে বিকাশ/নগদে টাকা পাঠান, মোবাইল রিচার্জ করেন, কোন বইয়ের দোকানে যান, কোন ব্যাংকের কোন শাখা থেকে গ্যাস-পানি-বিদ্যুত বিল দিতে যান।
(ব্যস! আপনার মোবাইল নাম্বার আর একাউন্ট নাম্বার / ভিসা কার্ডের নাম্বার পেয়ে গেল। এবার ss7 এট্যাক করে two factor authentication করার SMS পুলিশের মোবাইলে রিসিভ হবে। আপনার ফেসবুক, ইমেইল চেক হবে, লোকেশন ট্র্যাক হবে। অন্যদিকে, আপনি কোথায় কি খেয়েছেন, কি কিনেছেন, অনলাইনে কি অর্ডার দিয়েছেন সব তথ্য এসে যাবে।
Ss7 attack সাধারণ হ্যাকাররাও করতে পারে। তাই আর্থিক লেনদেনের জন্য সুরক্ষিত মোবাইল নাম্বার ব্যবহার করুন যেন আপনার মোবাইল নাম্বার কারও কাছে না থাকে; না অনলাইনে ওয়েবসাইটে, না দোকানদারের খাতায়। আর্থিক লেনদেন ও কথা বলার জন্য আলাদা আলাদা সিম ব্যবহার করুন। যোগাযোগ WhatsApp/telegram দিয়ে করুন। - অনুবাদক)
আলহামদুলিল্লাহ। দুরূদ ও সালাম মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উপর। শুরু করছি পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে।
ইন্টারনেটে খোজাখুজি করার সময় কাকতালীয়ভাবে beating police interrogation শিরোনামের একটি বইয়ের অপ্রকাশিত পাণ্ডুলিপি পেয়ে যাই। বেনামি লেখকের দাবি, তিনি দীর্ঘদিন ফ্লোরিডা পুলিশ ডিপার্টমেন্টের গোয়েন্দা বিভাগে কাজ করেছেন এবং Florida Department of Law Enforcement (FDLE) নামক প্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষক হিসাবে নিয়োগ পান। গুপ্তহত্যা নিয়ে তানজিমের বই থাকলেও এজাতীয় বই এখনও বিরল। ১৬৪ নিয়ে কিছু পরামর্শ দেয়া হলেও গুম থাকা ভাইদের জন্য বিস্তারিত হ্যান্ডবুক নেই। তাই বইটি সংক্ষেপে ভাবানুবাদের কাজে হাত দিলাম। হয়তো তেমন উপকারে আসবে না। কিন্তু, আমরা সুযোগ হাতছাড়া করতে পারি না। আবার অনুবাদের পরে ত্বাগুত বাহিনী জিজ্ঞাসাবাদের এই খেলাকে অন্য স্তরেও নিয়ে যেতে পারে, যেহেতু তারা নিয়মিত ফোরাম পড়ে। কিন্তু তাতে কি যায় আসে? যেমনটা শাইখ আওলাকি (রাহ
বলেছেন; এই যুদ্ধ শুরু থেকেই মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ ছিল। আর চূড়ান্ত বিজয় মুমিনদের জন্য। - অনুবাদকজিজ্ঞাসাবাদ চলাকালে
মূলনীতি-
পৃষ্ঠা ১৩, লেখক এখানে পরামর্শ দিয়েছেন যে, যদি কখনো জিজ্ঞাসাবাদ কক্ষে আপনাকে নিয়ে যাওয়া হয় সর্বোচ্চ চেষ্টা করুন মুখ না খোলার জন্য। কথা যত কম বলবেন, ততই আপনার জন্য ভালো। যদি কিছু বলতেই হয় তাহলে এটা বলুন যে, আমি শুধু আমার উকিলের সাথে কথা বলব।
পৃষ্ঠা ১৮, উকিল আপনার পকেট থেকে টাকা হাতে নেয়ার চেষ্টা করবে, আর পুলিশ আপনাকে জেলে ভরার চেষ্টা করবে। এই অবস্থায় আপনার হাতে মাত্র তিনটি মূলনীতি থাকবে যা আপনাকে বেঁচে ফিরে আসতে সাহায্য করতে পারে। তিনটি মূলনীতি হল-
[QUOTE] এক. Admit Nothing. কোন কিছু স্বীকার করবেন না
2. Deny Everything. সবকিছু অস্বীকার করবেন
3. Demand Proof. প্রমাণ দাবি করবেন
আত্মরক্ষার নিয়ম [\QUOTE]
পৃষ্ঠা ২২, জিজ্ঞাসাবাদের ফাকফোকর দিয়ে পালিয়ে আসার প্রথম নিয়ম হচ্ছে কখনো পুলিশকে বোকা মনে করবেন না। আপনার কাছে যদি বানানো গল্প থাকে, সেটা দিয়েও সব সময় পার পাওয়া যায় না। উত্তম হচ্ছে চুপ থাকা। একজন উকিল আপনাকে সর্বোচ্চ এই পরামর্শ দিতে পারবে যে, সে না আসা পর্যন্ত যেন আপনি কোন কথা না বলেন। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে পুলিশ আপনার উকিলের সাথেও অ্যাডভান্স সাইকোলজিকাল কৌশল ব্যবহার করতে পারে। বইয়ের লেখক একবার এরকম একজন উকিল কে বোকা বানিয়েছিলেন। সেই উকিল তার মক্কেলকে পরামর্শ দিয়েছিল রিমান্ডে সব স্বীকার করার জন্য, আর বাকিটা সে আদালতে দেখে নিবে। লেখক উকিলকে সেভাবেই ঘোল খাইয়েছিল। বর্তমানে তার মক্কেল যাবজ্জীবন সাজা খাটছে।
পৃষ্ঠা ২৪, জিজ্ঞাসাবাদ থেকে বাঁচার দ্বিতীয় নিয়ম কখনও আপনার অপরাধের কথা অন্য কাউকে জানাবেন না। মিথ্যা গল্প তৈরি করার চেয়ে সাক্ষী না থাকার ব্যাপারে বেশি সতর্কতা অবলম্বন করুন। ব্যয়বহুল উকিল রাখার চেয়ে এটা সবচেয়ে সস্তা এবং কার্যকরী পরামর্শ।
পাতা ২৭, উপন্যাস বা চলচ্চিত্রে যা দেখেছেন, পুলিশের তদন্ত বাস্তবে তেমন হয় না। পুলিশ মূলত আপনার পরিচিত সকল মানুষের সাথে কথা বলবে; বন্ধু, প্রতিবেশী, সহকর্মী, ব্যবসায়িক অংশীদার, আত্মীয়স্বজন (বিশেষত, স্ত্রী)। তাদের সবার থেকে আপনার ব্যাপারে খুটিনাটি জানবে। কি খান, কি করেন, কখন ঘুমান, কি বই পড়েন, কোথায় যান ইত্যাদি। তারপর যেকোন তুচ্ছ তথ্য দিয়ে রিমান্ডে আপনার গলা চেপে ধরবে-
"তোমার এক বন্ধু বলল, তুমি গণতন্ত্র পছন্দ কর না। ফেসবুকে দেখলাম, অমুক হুযুরকে ফলো কর। মোবাইলে অমুক লেখকের বই আছে দেখছি"।
পাতা ২৮, শুধু তাই না, এবার পুলিশ বলবে যে, "আমিও একসময় নব্য-নাতসি বাহিনীতে ছিলাম। মাঝেমাঝে আমিও বাচ্চা মেয়েদের দেখে উত্তেজিত হই। আমিও চাই, দেশে ইসলামি শাসন থাকুক।"
পাতা ২৯, people always talk about the things they do, legal, or otherwise. It's a fatal flaw in the human psyche that the police have become experts in exploiting. Do not ever talk about the illegal things you have done, to anyone, ever. Furthermore, the less people know about you, the better.
অর্থাৎ, মানুষ সর্বদা তার পছন্দের ব্যাপার অন্যদের বলে। এটা মানব মনস্তত্ত্বের মারাত্মক ত্রুটি যা পুলিশ নিজেদের কাজে লাগায়। আপনার ব্যাপারে অন্যান্য লোকেরা যত কম জানবে ততই ভাল।
(আশা করি, দ্বৈত পরিচয় ও সোস্যাল মিডিয়া ত্যাগের ব্যাপারে আর অতিরিক্ত জানার দরকার নেই।)
পাতা ৩১, The techniques taught and used by these people are extremely sophisticated and have been compared to brainwashing – but they are still legal.
অর্থাৎ কিভাবে আপনার আশেপাশের লোক থেকে আপনার ব্যাপারে তথ্য বের করা যাবে সেসব জটিল পদ্ধতিকে মগজধোলাইয়ের সাথে তুলনা করা যায়।
পাতা ৩৪, If the interrogator knows even a little about you, he will use this information to try to exert psychological pressure on you to force you to confess (sometimes whether you committed the crime or not).
অর্থাৎ আপনার ব্যাপারে সামান্যতম তথ্য দিয়েই আপনাকে মানসিক চাপ দিয়ে স্বীকারোক্তি আদায় করা যায়, যদিও আপনি ঐ অপরাধে যুক্ত না-ও থাকেন। জেলে এমন অনেক নিরপরাধ লোক পাবেন যারা স্বেচ্ছায় বা ভুলবশত স্বীকারোক্তি দিয়ে ফেলেছে। তাই নিজের মতাদর্শের ব্যাপারে একটুও বেফাস কথা আশেপাশের কাউকে বলবেন না।
পাতা ৩৯, মনে রাখবেন, আপনাকে রিমান্ডে নেয়ার আগেই পুলিশ আপনার ব্যাপারে তথ্য যোগাড় করবে। প্রথমে তাদের ডাটাবেজে আপনার অতীত আইনি মামলা ও সমস্যা খুজবে। তারপর মোবাইল কোম্পানি থেকে আপনি কখন কার সাথে কত সময় কথা বলেন, সেটা বের করে যাদের সাথে কথা বলেন তাদের আগে জিজ্ঞাসাবাদ করবে।
আধুনিক যুগে Facebook, WhatsApp, telegram এগুলো থেকে চ্যাট হিস্ট্রি সংগ্রহ করে সেসব লোকদের আগে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
(একারনে সোস্যাল মিডিয়া ছেড়ে দাওয়াহ ইলাল্লাহ ফোরাম ব্যবহার করুন। এখানে আপনি ধর্ম-রাজনীতি সবকিছুর আপডেট পাবেন। একটু কষ্ট করে অভ্যস্ত হলেই হবে। ফেসবুকের আগের যামানায় মানুষ ফোরাম-ই ব্যবহার করত। সুতরাং সোস্যাল মিডিয়ার পরিবর্তে ফোরাম ব্যবহার যুক্তিসঙ্গত বটে)
পাতা ৪০, আপনার কম্পিউটারের রিসাইকেল বিন আপনি কেমন বই পড়েন সেই তথ্যের অন্যতম উৎস।
পাতা ৪২, কোথাও অপরাধ সংগঠন করতে গেলে ট্রাফিক আইন বা অন্যান্য আইন লঙ্ঘন করবেন না। এতে ধরা পড়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। অনেক দুর্দান্ত আসামী এই ভুলের কারণে গ্রেফতার হয়েছে। যেমন, টেড বান্ডি মাতাল হয়ে গাড়ি চালিয়ে।
তদন্তের ধাপসমূহ-
পাতা ৪৪, আপনার পরিচিত কাউকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সেগুলো সাধারণত থানার বাইরে হয়ে থাকে। আর তখন স্বাভাবিক তথ্য জানা হন। যেমনঃ কোথায় থাকে, কি করে, অফিস কয়টায় ইত্যাদি।
Neighbors are the nosiest people on earth, I have found.
প্রতিবেশীদের হক্ব আদায়ে সচেষ্ট থাকুন। অন্তত তাদের ক্রুদ্ধ করা থেকে বিরত থাকুন। সাধারণত পুলিশ সন্দেহভাজন ব্যক্তির প্রতিবেশীকে ক্যামেরা ও রেকর্ডার প্রদান করে এবং ১ সপ্তাহ পরে তা প্রতিবেশী থেকে সংগ্রহ করে থাকে।
somebody always is willing to cooperate with the police to put your ass in jail. If the interrogator learns of ex-girlfriends or boyfriends, he will exploit them to no end.
কেউ না কেউ আপনার ক্ষতি করার জন্য পুলিশকে সহায়তা করবেই। অতীত জীবনে কোন প্রেমিকা ছিল জানতে পারলে পুলিশের কপাল খুলে যায়। তারা আপনার জীবনকে জাহান্নাম বানাতে আদালতে সাক্ষ্য দেয়ার জন্যেও পর্যাপ্ত সময় বের করে নেয়।
পাতা ৪৬, Beware of anyone you know who has gone to jail, or been interrogated recently. If they start coming around to your place acting friendly and asking questions, your “buddy” has probably turned informant.
কিছুদিন আগে জেলে গিয়েছিল কিংবা পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল, এমন লোকেরা হঠাৎ করেই বন্ধুসুলভ হয়ে গেলে সাবধান হয়ে যান। খুব সম্ভবত তারা পুলিশের সংবাদদাতা হিসাবে কাজ করছে। অভিজ্ঞতা বলছে যে, কাউকে কিছু বললে সে আরও তিন জনের কাছে সেই তথ্য ছড়িয়ে দেয়। সেই তিন জন আরও তিন জন বিশ্বস্ত (!!!) ব্যক্তিকে জানিয়ে দেয়। এসব বিশ্বস্ত (!!!) ব্যক্তিদের বোকা বানিয়ে কথা বের করার জন্য ইনফরমারদের মাসে হাজার হাজার ডলার দেয়া হন।
পাতা ৪৮, আপনার ব্যাপারে আরও তথ্য সংগ্রহের উপায় হল, আপনার বাড়ি থেকে এক ঘণ্টার দূরত্ব অবধি চষে বেড়ান। মানুষ সাধারণত এর বেশি দূরত্বে যায় না। পুলিশ দেখবে আপনি কোন দোকান থেকে বিকাশ/নগদে টাকা পাঠান, মোবাইল রিচার্জ করেন, কোন বইয়ের দোকানে যান, কোন ব্যাংকের কোন শাখা থেকে গ্যাস-পানি-বিদ্যুত বিল দিতে যান।
(ব্যস! আপনার মোবাইল নাম্বার আর একাউন্ট নাম্বার / ভিসা কার্ডের নাম্বার পেয়ে গেল। এবার ss7 এট্যাক করে two factor authentication করার SMS পুলিশের মোবাইলে রিসিভ হবে। আপনার ফেসবুক, ইমেইল চেক হবে, লোকেশন ট্র্যাক হবে। অন্যদিকে, আপনি কোথায় কি খেয়েছেন, কি কিনেছেন, অনলাইনে কি অর্ডার দিয়েছেন সব তথ্য এসে যাবে।
Ss7 attack সাধারণ হ্যাকাররাও করতে পারে। তাই আর্থিক লেনদেনের জন্য সুরক্ষিত মোবাইল নাম্বার ব্যবহার করুন যেন আপনার মোবাইল নাম্বার কারও কাছে না থাকে; না অনলাইনে ওয়েবসাইটে, না দোকানদারের খাতায়। আর্থিক লেনদেন ও কথা বলার জন্য আলাদা আলাদা সিম ব্যবহার করুন। যোগাযোগ WhatsApp/telegram দিয়ে করুন। - অনুবাদক)
Comment