ফুঁ দিয়ে এই চেরাগ নিভানো যাবে না!
পর্ব - ১০
পর্ব - ১০
হুমকি–ধমকির বিপরীতে মুমিনদের কর্মনীতি :
.
যখন মুমিনদের সামনে দুনিয়ার ধন-দৌলত ও বিভিন্ন উপঢৌকন উপস্থাপন করে ব্যর্থ হয়ে যায়, তখন মুমিনদের বিরুদ্ধে পত্রিকায় ও সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখালিখি শুরু হয়ে যায়, টিভি চ্যানেলে এসে বারবার বলতে থাকে, সমস্ত মাধ্যম প্রয়োগ করে যখন সফল না হয় তখন অতীত স্বরণ করিয়ে ভয় দেখানো হয় যে, তোমাদের ভবিষ্যত অন্ধকার! তোমরা বন্ধ পথে যাচ্ছ! বন্ধ পথ!
.
আলহামদুলিল্লাহ! এটা বন্ধ পথ নয়, এটা মহাসড়ক! এটা মহাসড়ক! এই পথ আল্লাহর দিকে যায়। আমরা বন্ধ পথে যাচ্ছি না। আলহামদুলিল্লাহ! যেদিন আমরা নিজেদের ঘর থেকে বের হয়েছি ইখলাসের সাথে বের হয়েছি। কে তোমাদের বলেছে সে এজন্য বের হয়েছে যে, সে ফ্লাট বানাবে, বড়বড় গাড়ি নিবে, খুব প্রসিদ্ধি অর্জন করবে, বড়বড় জায়গা নিজের নামে লিখবে? সে জানে যে, সে চীফ অফ আর্মি স্টাফ হবে না। এই পথের মুজাহিদ যেদিন ঘর থেকে বের হয়েছে সেদিন সিদ্ধান্ত নিয়েই বের হয়েছে। সে ঐ শামের দিকে বের হয়েছে, যে শাম সম্পর্কে তোমরা ভয় দেখাও- হত্যা! হত্যা! মৃত্যু!, যে শাহাদাত সম্পর্কে তোমরা ভয় দেখাতে, সে তো সেই শাহাদাত লাভের জন্যই বের হয়েছে! যখন তাঁর উপর চাপ প্রয়োগ করা হয়, হুমকি দেওয়া হয় তখন এই মুমিনদের উপমা ঐ দরবারী নওমুসলিমের মতো হয়, যারা ফেরাউনের দরবারে মুসলমান হয়েছে। যখন ফেরাউন তাদের ভয় দেখাল-
فَلَأُقَطِّعَنَّ أَيْدِيَكُمْ وَأَرْجُلَكُمْ مِنْ خِلَافٍ وَلَأُصَلِّبَنَّكُمْ فِي جُذُوعِ النَّخْلِ
আমি তোমাদের হাত পা উল্টাদিকে থেকে কেটে ফেলব, খেজুরের কাণ্ডে তোমাদের শুলিতে চড়াব, তোমাদের ফাসি দেব।
কেউ বাঁচতে পারবে না। বোমা মেরে দেব, মিসাইল মেরে দেব, মাথায় গুলি করব, হত্যা করে ফেলব, জেলখানা ও রিমান্ডে ঢুকিয়ে দেব। ফেরাউন যখন তাদেরকে ভয় দেখায় তখন তারা বলে,
قَالُوا لَنْ نُؤْثِرَكَ عَلَى مَا جَاءَنَا مِنَ الْبَيِّنَاتِ وَالَّذِي فَطَرَنَا
তারা বলল, কিছুতেই আমরা তোমাকে প্রাধান্য দিব না, যে স্পষ্ট সত্য আমাদের নিকেট এসেছে তার উপর এবং যিনি আমাদের সৃষ্টি করেছেন তার উপর।
.
আল্লাহর শপথ! কখনো আমরা এ সত্য ছেড়ে দেব না। কিছুতেই তোমাদের সামনে ঝুকব না। এজন্য যে, আমরা সত্য চিনে ফেলেছি। জীবনের রাস্তা পেয়ে গিয়েছি যে, কোনটি মহাসড়ক আর কোনটি বন্ধ গলি। আমরা বুঝে ফেলেছি কোনটি উন্নতি কোনটি অবনতি, কোনটি উঁচুতা আর কোনটি নীচতা। আল্লাহর শপথ! আমরা তোমার দ্বীনে ফিরে আসব না। তোমার সামনে ঝুকব না। অতঃপর আগ্রসর হয়ে ফেরাউনের সামনে বলল,
فَاقْضِ مَا أَنْتَ قَاضٍ
তুমি যা করার কর!
إِنَّمَا تَقْضِي هَذِهِ الْحَيَاةَ الدُّنْيَا
তুমি তো কেবল এই দুনিয়াতেই করতে পারবে!
.
তোমরা কেবল এই দুনিয়ার জীবনেই কিছু করতে পারবে। আমাদের আখেরাতের জীবনে তোমাদের কোনো হস্তক্ষেপ নেই। ফাঁসি দিলে তো দাও। এছাড়া আর কী করতে পারবে? তোমরা ডাক্তার উসমান রহ. -এর কোনো ক্ষতি করতে পেরেছ? এই যাদেরকে তোমরা ফাঁসি দিচ্ছ; দুই তিনশত ভাইকে তোমরা ফাঁসি দিয়েছ, তারা তো জান্নাতে পৌছে গেছে ইনশাআল্লাহ। দুনিয়াতেই তোমাদের ক্ষমতা আছে। আখেরাতে তোমাদের কোনো ক্ষমতা নেই। এমন মুমিনগণ শক্তিশালীর চেয়ে শক্তিশালীদের মোকাবেলায়ও নিজের এই মহান ও অতুলনীয় সম্পদ ঈমান, আমলে সালেহ, দাওয়াত ও জিহাদ ইত্যাদির হিফাজত মূল বিষয় মনে করে। এরাই ঐ মুখলিস লোক, যাদের মাধ্যমে আল্লাহ তা‘আলা এই খাঁটি ও মহান দ্বীনের দাওয়াত ছড়িয়ে দেন। দায়ী এমন লোকেরাই হয়। তাদের মাধ্যমে দাওয়াত ছড়িয়ে পড়ে। এমন মুখলিসদেরকে আল্লাহ তা‘আলা কুফরের মুকাবিলা করার জন্য, কুফরিকে খতম করার জন্য এবং এই অন্ধকারকে দূরীভূত করার জন্য বাছাই করেন। আল্লাহ তা‘আলা আমাদের সবাইকে তাদের অন্তর্ভুক্ত করুন। আমরা সবাই দূর্বল। আমরা দোয়া করি, যবান দ্বারা বলি, আল্লাহ তা‘আলা কার্যত অন্তর থেকে এমন বনিয়ে দিন। তিনি এমন মুমিনদের সিফাত আমাদের দান করুন। আমরা খুবই দূর্বল। তিনি আমাদের সাহায্য করুন। তিনি আমাদের শক্তি ও তাওফীক দান করুন।
.
চলবে...
Comment