Announcement

Collapse
No announcement yet.

জিজ্ঞাসাবাদ কক্ষ ৩

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • জিজ্ঞাসাবাদ কক্ষ ৩

    জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ ২টা ব্যাপারে নিশ্চিত হতে চায়:
    - আপনি মিথ্যা বলেন কিনা। যদি বলেন, তার মানে হল, আপনি অপরাধী অথবা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানেন।
    - আপনাকে আবার রিমান্ডে নিবে কিনা। যদি মিথ্যা বলেন, তাহলে অবশ্যই নিবে।
    আবারও বলছি, পুলিশ আপনাকে পুরো জিজ্ঞাসাবাদে মিথ্যার পর মিথ্যা বলবে। প্রমাণ না থাকলেও স্পষ্ট প্রমাণ আছে দাবি করবে। এটাই তাদের কাজ। মিথ্যা তার জনককে দুর্বল করে দেয়। তাই এই পর্যায়ে সে অবশ্যই বেরিয়ে যাবে। আপনার সাক্ষাৎকার পুন:বিবেচনা ও পুন:মূল্যায়ন করবে।
    এরপর যদি সে ফিরে এসে বলে যে, আপনার মত চোরের সাথে তার এক বিন্দু কথা বলার ইচ্ছা নেই। বুঝতে হবে, আপনাকে সে নিরপরাধ মনে করে অথবা সে বুঝেছে, আপনি ধুরন্ধর ব্যক্তি (সেক্ষেত্রেও সে আপনাকে ছেড়ে দিবে এবং ভবিষ্যতে অন্য অপরাধে ফাসাতে চেষ্টা করবে)। উভয় ক্ষেত্রেই আপনি বিজয়ী।
    চূড়ান্ত ধাক্কা
    উল্লেখ্য, লেখক তার ক্যারিয়ারে কিছু ব্যতিক্রম দেখেছেন। যেমনঃ তার এক সহকর্মী একবার এক অপরাধীকে ছেড়ে দিতে মন:স্থ করে। কিন্তু রুমে ঢুকে একটি ফাইল টেবিলে ছুড়ে দিয়ে বলল, তোমার অপরাধ প্রমাণ হয়ে গেছে। দরকার হলে ফাইল খুলে সব পড়ে দেখ।
    ব্যস! অপরাধী আর নিজেকে আটকে রাখতে পারে নি। এমতাবস্থায় করণীয় হল, শব্দ করে একটু হেসে দেয়া। যদি ক্লান্ত হয়ে থাকেন তাহলে বলুন যে, আমার উকিল বাকিটা দেখে নিবে।
    যদি মানসিক শক্তি থেকে থাকে তাহলে আরও কিছুটা খেলে নিন। এই পর্যায়ে পুলিশ আরো তিনটি পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারে।
    ১। বিষয়বস্তু প্রস্তুত: এখানে পুলিশ কিছু ভালো কারণ বলবে। ভালো কারণ হচ্ছে অপরাধ সংগঠন করার মানবিক ব্যাখ্যা। যেমন: সে বলবে তুমি চুরি করেছো কারণ তুমি ক্ষুধার্ত ছিলে; তোমার টাকা দরকার ছিল। এক মুঠো ভাত খাওয়ার জন্য চুরি করা খারাপ নয়।" এটাও একটা ফাদ। আদালতে আপনি কেন চুরি করেছেন সেটা বিবেচনা করা হবে না। স্বীকারোক্তি আদায় করার জন্য পুলিশ এই পথে নানা তাল বাহানা করবে ।
    ২। আপনার বিরুদ্ধে উপস্থাপন করার মত সবচেয়ে শক্তিশালী প্রমাণ আপনাকে দেখাবে। সেটা আঙুলের ছাপ কিংবা অন্য কিছু। মনে রাখবেন, যদি এই প্রমাণ আপনার বিরুদ্ধে যথেষ্ট হত, তাহলে জবানবন্দি নেয়ার প্রয়োজন ছিল না। কাজেই পাত্তা দেবেন না।
    ৩। তৃতীয় পদ্ধতি হচ্ছে উপরের দুই পদ্ধতির মিশ্রণ। আপনাকে প্রমাণ দেখানো হবে, আবার পাশাপাশি আপনাকে ভালো কারণ দেখানো হবে। কিছু ক্ষেত্রে পুলিশ আরো অগ্রসর হয়ে নানা প্রকারের গল্প বলে থাকে, যেখানে সত্য স্বীকারোক্তি দেওয়ার কারণে বিভিন্ন অপরাধী আদালতে পার পেয়ে গিয়েছে; অল্প সাজা পেয়েছে কিংবা মুক্তি পেয়েছে ইত্যাদি বলে আপনার মনকে নরম করার চেষ্টা করবে । বলাবাহুল্য, এ সকল গল্পের কোন ভিত্তি নেই। যারাই জিজ্ঞাসাবাদ কক্ষে সততা দেখায়, তাদের কেউ স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারে না, জেলখানাতেই থাকে।
    মনে রাখবেন, জিজ্ঞাসাবাদ কক্ষে মিথ্যা কিংবা আধা সত্য বলে ধরা পড়া, আর সত্য সাক্ষ্য দেওয়া একই কথা। দৃঢ় কন্ঠে, দ্রুততার সাথে অপরাধ অস্বীকার করুন।
    জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ ২টি জিনিস চায়-
    ১। অপরাধ মেনে নেয়া বা জড়িত থাকার কথা স্বীকার করা। পুলিশ বলবে, "আমি জানি তুমি খুন করার মত মানুষ না, তুমি শুধু ওদের সাথে উপস্থিত ছিলে। কিন্তু ওরা খুন করে ফেলবে একথা তুমি কল্পনাও কর নি। আমি আদালতে তোমার জন্য সুপারিশ করব। তুমি বাকিদের নাম বলে নিজের জড়িত থাকার কথা মেনে নাও।"
    ২। অপরাধ করেছে স্বীকার করা। এক্ষেত্রে যাবজ্জীবন হতে পারে, তবে হত্যা পরিকল্পিত ছিল বলে স্বীকারোক্তি দিলে ফাসি।
    দক্ষ প্রশ্নকর্তার সাথে মোলাকাতের ৪টি ফলাফল-
    ১। আপনি মেনে নেন
    ২। স্বীকার করেন
    ৩। চুপ থাকেন, উকিল ছাড়া কথা বলেন না
    ৪। স্বীকারোক্তি দেন না, হয়তো প্রশ্নকারীকে বিশ্বাস করাতে সক্ষম হন যে, আপনি নির্দোষ ।
    একজন বিরক্তিকর মানুষের সামনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আত্মবিশ্বাসের সাথে বসে থাকাই এখানে পরীক্ষা ।
    পুলিশ ও উকিলের আত্মবিশ্বাস বিপরীতমুখী
    পাতা ১৪৫, you can force a good interrogator to give up, you will profoundly shake his faith in your guilt!
    যদি প্রশ্নকর্তাকে কক্ষ ত্যাগ করাতে পারেন, তাহলে আপনি তার মনে আপনার অপরাধী হবার বিশ্বাসকে নড়বড়ে করে দিতে পারলেন।
    আগেও বলেছি, আপনার উকিল থানায় পৌছানোর পর আপনার ব্যাপারে পুলিশের রিপোর্ট সাদা কাগজের মতো হতে হবে। উকিল এবং পুলিশ পরস্পর তথ্য বিনিময় করে।
    I've seen cases quietly dropped because a cop has told a prosecutor that he “doesn't feel right” about a case. The last thing prosecutor wants on the stand is a cop who is not sure about the defendant's guilt.
    উকিল নীরবে মামলা ত্যাগ করবে, যদি পুলিশ তাকে বলে যে, কিছু একটা ঘাপলা আছে। উকিল শুধু শুনতে চায় যে, পুলিশ এখনো নিশ্চিত না। তাই পুলিশের আত্মবিশ্বাস ভেঙে দেয়াই এখানে লক্ষ্য। অন্তত উকিল যখন পুলিশের রিপোর্ট তলব করবে, তখন স্বীকারোক্তি না থাকা চাই।
    রাগের ক্ষতি
    People who are accused of crimes are often angry about it, and show it. The difference between the innocent person and the guilty is that the guilty either cannot maintain anger well, or stay angry too long.
    অভিজ্ঞতা বলছে যে, অপরাধীরা থানায় রাগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করে। নিরপরাধ ব্যক্তিরাও করে, তবে অপরাধীরা ক্ষোভ নির্দিষ্ট স্তরে বজায় রাখতে পারে না কিংবা অস্বাভাবিক দীর্ঘ সময় ক্রুদ্ধ থাকে।
    If I told you a joke when you are truly angry, you would not laugh. However, guilty suspects “slip in and out” of feigned anger easily, and trip themselves up that way.
    এই অবস্থায় পুলিশ আশেপাশে হাসি ঠাট্টা করে। আর চতুর্দিক থেকে চোখ ও ক্যামেরা আপনার দিকে তাক করা থাকবে। সাধারণত অপরাধীরা তখন হেসে দেয়। তাদের ক্রোধ বজায় রাখতে পারে না।
    নিরপরাধ ব্যক্তিরা এসব কৌতুকে হাসে না। তারা জিজ্ঞাসাবাদের মাঝামাঝি পর্যায়ে এসে শান্তও হয়ে যায়। কিন্তু অপরাধীরা স্বীকারোক্তি দেয়ার আগ পর্যন্ত ক্রুদ্ধ থাকে।
    আপনার যদি রাগের অসুখ থাকে। তাহলে শুরুতেই বলুন যে, আমি উকিলের সাথে কথা বলব।
    অধ্যায় ৪
    অনিশ্চিত পরিস্থিতি

    এতক্ষণ যা আলোচনা করলাম তা নিয়মতান্ত্রিক দক্ষ অফিসারদের আচরণ । আপনি যেহেতু জঙ্গি, আপনাকে বাঘা বাঘা গোয়েন্দারা বিরক্ত করার কথা। এবং তানজিমের বিভিন্ন ভাইদের বক্তব্যও তেমন ইঙ্গিত দেয়। কিন্তু কিছু পুলিশ থাকবেই যাদের আচরণ unpredictable. আর বাংলাদেশের পুলিশদের শিক্ষা-দীক্ষার অভাব আছে। তারা কাঠামোগত জিজ্ঞাসাবাদে অভ্যস্ত না। তাই এদের দেখা আপনি অহরহ পাবেন। এই জাতীয় প্রশ্নকারীরা ভিন্ন রকমের চ্যালেঞ্জের সৃষ্টি করে। আমরা আগে দেখবো এই জাতীয় প্রশ্নকারীদের বৈশিষ্ট্য কি। তাহলে আপনি শুরুতেই আন্দাজ করতে পারবেন যে, আপনার কৌশল পরিকল্পনা মাফিক এগোতে না-ও পারে।
    - সে শুরুতেই আপনাকে আসল বা নকল প্রমাণ উপস্থাপন করে ঘাবড়ে দিতে চাইবে।
    - আপনাকে স্বীকারোক্তি দেয়ার উপকারিতা নিয়ে ওয়াজ মাহফিল শুরু করবে।
    - নানাভাবে সিনেমা স্টাইলে ভয় দেখাবে।
    - সে বলবে, "আরে তোর ব্যাপারে আমি সব জানি। তুই অমুক অমুক কাজ করিস, অমুক জায়গায় যাস, তোর বন্ধু অমুক। ইত্যাদি"। দক্ষ গোয়েন্দারা সাধারণত এসব গুরুত্বপূর্ণ তথ্য শুরুতেই ফাস করে না। এগুলো তাদের শেষ চাল চালার জন্য জমিয়ে রাখে।
    - একবার এক কথা বলবে, একটু পরেই আবার আরেক কথা বলবে।
    - একজন সহকারীকে নিয়ে ভাল পুলিশ-মন্দ পুলিশ খেলা খেলবে। মানে, একজন কঠোর স্বভাবের অভিনয় করবে, আরেকজন বন্ধুসুলভ।
    - আপনাকে মারধর করবে।
    - আপনার জীবন অতিষ্ট করে তুলবে বলে তর্জন গর্জন করবে।
    - আপনি স্বীকারোক্তি দিলে পুলিশ সাজা মওকুফের সুপারিশ করবে বলে ওয়াদা দিবে।
    করণীয়:
    - সবর: এই পর্যায়ে সময় গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় । আপনি তাকে যতক্ষণ অপেক্ষা করাবেন, তার উপর তত চাপ আসতে থাকবে। সে তত বেশি হন্যে হয়ে উঠবে। আপনাকে আপনার জড়িত থাকার প্রমাণাদি বমি করে বলে দিবে। এই সময়ে উকিলের সাথে পরামর্শ করে কৌশল ঠিক করে নিন।
    - তারা সাধারণত আধা ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করে। এক ঘণ্টা কখনই অতিক্রম করে না।
    - তার কৌশল ফুরিয়ে গেলে আবার শুরু থেকে কৌশলের পুনরাবৃত্তি করবে।
    - শান্ত থাকুন। আগের অধ্যায়ের বাঘা উকিলের চেম্বার থেকে বাগিয়ে আনা ভিজিটিং কার্ড ভদ্রতার সাথে ব্যবহার করুন।
    - অপেক্ষা করতে হবে যেন তার জিজ্ঞাসাবাদ শেষে একজন দক্ষ অফিসার আসে।
    সতর্কবার্তা
    After they gave up on a suspect, I would roll in and ask if I could try to get a confession, and I usually did. The reason is that after the unsophisticated interrogator gave up, the suspect got lax.
    অনেক ক্ষেত্রে দক্ষ অফিসার পৌছানোর আগেই জুনিয়র পুলিশরা স্বীকারোক্তি আদায় করে হিরো সাজতে চায়। কিন্তু তারা ব্যর্থ হলে সন্দেহভাজন ব্যক্তি অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস লাভ করে। সে মনে করে, আগের জনকে বোকা বানিয়েছি, এটাকেও বানাবো। আগেই বলেছি, সিনিয়র অফিসার সবসময় পেশাদার পরিপাটি পোশাকে থাকে না। আর এভাবে অপরাধী তার শিথিলতার কারনে পরের জিজ্ঞাসাবাদে ফেসে যায়।​

  • #2
    জাযাকাল্লাহু খাইরান ভাই
    ‘যার গুনাহ অনেক বেশি তার সর্বোত্তম চিকিৎসা হল জিহাদ’-শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ.

    Comment


    • #3
      আগেই বলেছি, সিনিয়র অফিসার সবসময় পেশাদার পরিপাটি পোশাকে থাকে না। আর এভাবে অপরাধী তার শিথিলতার কারনে পরের জিজ্ঞাসাবাদে ফেসে যায়।​
      জাযাকাল্লাহু খাইরান ভাই!
      ভালো একটা বই আমাদেরকে সুন্দর করে বিশ্লষণসহ বুঝিয়ে দেয়ার জন্যে।
      رَبَّنَا لَا تَجۡعَلۡنَا فِتۡنَۃً لِّلَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا وَاغۡفِرۡ لَنَا رَبَّنَا ۚ اِنَّکَ اَنۡتَ الۡعَزِیۡزُ الۡحَکِیۡمُ ‘হে আমাদের প্রতিপালক! তুমি আমাদেরকে কাফিরদের পীড়নের পাত্র কর না। হে আমাদের প্রতিপালক! তুমি আমাদেরকে ক্ষমা কর; তুমি তো পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।’ —আল মুম্‌তাহিনাহ্‌ - ৫


      Comment


      • #4
        [আয়াত...]
        হে নবী! কাফের ও মুনাফিকদের বিরুদ্ধে জেহাদ করুন এবং তাদের প্রতি কঠোর হোন। তাদের ঠিকানা জাহান্নাম। সেটা কতই না নিকৃষ্ট স্থান।-আত তাহরীম - ৯


        [Mahmud Ansary ভাই, মূল আয়াতের টেক্সট উল্লেখ করা শুধু অনুবাদ দেওয়া সমীচীন নয়। তাই মূল আয়াত যুক্ত করে দিলে ভাল হয়।-মডারেটর]​
        Last edited by Munshi Abdur Rahman; 2 days ago.

        Comment

        Working...
        X