Announcement

Collapse
No announcement yet.

জিজ্ঞাসাবাদ কক্ষ ৪

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • জিজ্ঞাসাবাদ কক্ষ ৪

    অযোগ্যের পর যোগ্য
    অদক্ষের পর দক্ষ গোয়েন্দা আসলে কৌশলে কিছু পরিবর্তন হতে পারে। যেমনঃ
    - সে এসে আগের প্রশ্নকারীকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করবে।
    - নিজেকে উন্মাদ বা বোকা প্রমাণ করে এমন কাজ আসামীর সামনে করবে।
    - সরাসরি কাইনেসিক ইন্টারভিউ নিবে, তারপর চূড়ান্ত ধাক্কা দিবে।
    - তারপর আপনার উপস্থিতির কথা ভুলে গিয়ে মোবাইল ব্যবহার শুরু করবে। এভাবে ঘণ্টা পার করে ফেলবে। তারপর অপ্রাসঙ্গিক বিরক্তিকর আলোচনা শুরু করবে, যতক্ষণ না আপনি নিজে আলোচনা মামলার বিষয়ে না নিয়ে আসবেন। কিন্তু প্রশ্নকারী এই টপিক উপেক্ষা করা শুরু করবে যতক্ষণ না আসামী উতকণ্ঠা থেকে মুক্ত হতে স্বীকারোক্তি দেয়।
    - অথবা সে আপনার দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে থাকবে। এটাকে pregnant silence method বলে। এতে ব্যক্তির উপর অস্বস্তি ও মানসিক চাপের সৃষ্টি হয় এবং সে নীরবতা ভাঙতে কথা বলা শুরু করে।
    পুলিশকে সহযোগিতা
    একজন পুলিশ যদি আপনার বাসা, অফিসে যায় কিংবা ফোন করে কথা বলতে চায়। আপনি কি রাজি হবেন? অভিজ্ঞতা বলছে, নিরপরাধ এবং পাকা অপরাধীরাও রাজি হবে। এতে অপরাধীদের জন্য একটি ঝুঁকি তৈরি হয়। যেমনঃ
    - একবার এক দরজায় গিয়ে গোয়েন্দা দাবি করে, আমি জানি তোমার কাছে অমুকের পিস্তল আছে। তুমি সেটা আমাকে দাও। বেচারা, একটা দীর্ঘ শ্বাস ফেলে ঘরের পিছনে নিয়ে সেটা সমর্পণ করেছিল। এজন্য আমরা বইয়ের শুরুতেই তিনটি মূলনীতি বলেছি।
    - মাদক ব্যবসায়ীদের দরজায় ক্রেতা সেজে মাদক কিনতে চেয়ে লেখক অসংখ্যবার সফল হয়েছে। (অনেক ক্ষেত্রে, আপনার অবর্তমানে পুলিশ আপনার বাড়ি গিয়ে বলবে, আপনার হাজবেন্ডের আজকে একটা (বোমার) টাইমার সার্কিট দেয়ার কথা। আমরা সেটা নিতে এসেছি। আপনার স্ত্রী তা দিল না, কিন্তু বলল, আচ্ছা, ভেতরে বসুন। ব্যস! ফেসে যাওয়ার জন্য যথেষ্ট)
    কোন পুলিশ তদন্তের সাথে আপনার সাথে যোগাযোগ করাটা ঝুকিপূর্ণ। আপনি অপরাধী কিনা সেটা জরুরি না। পুলিশ শুধু কেস ক্লোজ করতে চায়। তাই থানায় দেখা করতে বলা মানে, আপনাকে রিমান্ডে নেয়া হবে।
    এই অবস্থায় ঝামেলা এড়াতে চাইলে, তার পোশাকের প্রশংসা করে আপনার উকিলের ভিজিটিং কার্ড দিয়ে বলুন যে, আপনার উকিল বলেছেন যে, সরাসরি তার সাথে কথা বলতে । কপাল ভাল থাকলে এই গোয়েন্দা আপনার পিছু ছেড়ে দিবে অথবা আপনার নামে ওয়ারেন্ট জারি করবে।
    প্রতিদিন যে পরিমাণ মামলার কাগজ টেবিলে জমা হয়, তার সামান্যই সমাধান করা হয় । আর মাস গেলে বেতনও তেমন পাওয়া যায় না। তাই তার সাথে প্রথম সাক্ষাৎ এড়াতে পারলেই সে আপনাকে ত্যাগ করে অন্য সহজ শিকার খুজবে। তবে আপনার নামে নিকটবর্তী থানায় আগেই কোন অপরাধের ফিরিস্তি থাকলে বেচে থাকা যাবে না। তাছাড়া অধিকাংশ তদন্তকারী অফিসারের কয়েক বছরের অভিজ্ঞতা থাকায় সহজে পিছু ছাড়ানো যায় না। আর আপনার যেহেতু দাড়ি-টুপি আছে, আপনাকে এত সহজে ছাড়বে না। তাই পরবর্তী অনুচ্ছেদে যান।
    উপদেশ: কখনোই পুলিশের সাথে কথা বলবেন না।
    অধ্যায় ৫
    পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ
    আপনি ভাবতে পারেন যে, পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে লাভ নেই। কিন্তু লাভ আছে। এক পুলিশ আরেক পুলিশের বিরুদ্ধে সবসময়ই লেগে থাকে সফলতার খ্যাতি নিজের নামে লিখিয়ে নেয়ার জন্য।
    আবার আলাদা প্রশাসনিক পুলিশ রয়েছে পুলিশের কুকর্ম তদন্তের জন্য। একই কর্মকর্তার নামে একাধিক অভিযোগের ইতিহাস থাকলে প্রশাসনিক পুলিশ আগমন করে। কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উৎপাদন করা ছাড়া এই প্রশাসনিক পুলিশের কোন কাজ নেই। সারাদিন টেবিলে বসে অভিযোগ প্রসব করে পেটের ভুড়ি গরম করাই তাদের কাজ।
    করণীয়:
    - স্থানীয় প্রশাসনিক পুলিশের দপ্তরে যান।
    - আপনার সাথে তদন্তকারী গোয়েন্দার কি কি কথোপকথন হয়েছে যেগুলোর সাথে আপনার বিরোধ রয়েছে সেগুলো বলুন। তবে মিথ্যা বলবেন না, ভুয়া প্রমাণ তৈরি করবেন না; তাহলে আরও ফেসে যাবেন।
    - কাগজে লিখুন
    - নোটারী করুন।
    - অফিসের বড় স্যারের কাছে বা তার চামচার কাছে যান।
    - বলুন যে, আপনি অমুক অফিসারের নামে তদন্ত করাতে চান। নতুবা আপনি আরও সিনিয়র প্রশাসনিক ভুড়ির টেবিলে যাবেন।
    মনে রাখবেন, ছোট ভুরির লোকেরা বড় ভুরিকে ভয় পায়। কারণ বড় ভুরি তার অধীনের ছোট ভুরি ঠিকমতো দায়িত্ব পালন করছে না জানলে ভুরি গরম হয়ে যাবে।
    - আপনার উকিলের ভিজিটিং কার্ড দেখান এবং বলুন যে, পরের বার আপনি আপনার উকিলকে সাথে নিয়ে আসবেন।
    উকিলরা তাদের ভুরি কমিয়ে নিজের ভুরি বাড়াতে পেনশনের টাকাও খেয়ে নিবে।
    ফলাফল: এবার পুলিশ স্বয়ং পুলিশের বিরুদ্ধে তদন্তে ব্যস্ত থাকবে।
    ফাযায়েল:
    - গোয়েন্দা নিজেই আরেক তদন্তে ব্যস্ত থাকবে।
    - প্রশাসনিক পুলিশ গোয়েন্দাকে চাপ দিবে। এমনকি খুনের মামলাতেও তারা জনগণকে হয়রানি করতে নিষেধ করার রেকর্ড আছে।
    - রাষ্ট্রপক্ষের উকিল চায় না যে, কোন অফিসারের বিরুদ্ধে অসদাচারণের তদন্ত চলমান থাকুক।
    রাযায়েল:
    - আপনি এবার ঘৃণার পাত্রে পরিণত হবেন। থানার সব পুলিশ আপনাকে চিনে ফেলবে।
    - গোয়েন্দার বিরুদ্ধে অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হলে আপনাকে ভাল মতো আপ্যায়ন করার চেষ্টা করবে। সেক্ষেত্রে আপনি আবার অভিযোগ দায়ের করতে পারেন।
    - একদিন না একদিন সে আপনাকে আবার ফাসানোর চেষ্টা করবে।
    মনে রাখবেন, ভাল হয় যদি অন্যান্য আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে জড়িত করা যায়। পুলিশে ধরলে র্যাবের কাছে, ডিজিএফআই, সিআইডি, পিআইবি, পিবিআই সর্বত্র চেষ্টা করুন। এতে কোন না কোন ভুরিতে ঢেউ উঠবেই। প্রয়োজনে সাংবাদিকদের ব্যবহার করুন। আজকাল কয়েক হাজার টাকা দিয়েই জাতীয় দৈনিকে সংবাদ বের করা যায়। অন্তত সরকার বিরোধী মিডিয়াকে তো ব্যবহার করাই যায়। এই পদ্ধতিতে বাংলাদেশের দুই জন প্রখ্যাত আলেম ও একাধিক জেনারেল লাইনের ভাইকে গিলে ফেলতে চাইলেও বমি করে দিতে বাধ্য হয়েছে র্যাব। যদিও তারা মানহাযী নয়, এবং জেনে বুঝে কাজটা তার আত্মীয়স্বজনরা করে নি। তারা অবশ্যই আল্লাহর রহমত প্রাপ্ত ছিলেন।
    মনে রাখবেন, প্রশাসনিক পুলিশ মাঠ পর্যায়ে কাজ করে অভ্যস্ত না। তাই সাধারণ স্বাভাবিক তদন্ত কার্যক্রমকেও অভিযোগ পত্রে হয়রানি হিসাবে উল্লেখ করা যায়। আর এটাই গোয়েন্দার পক্ষে খণ্ডণ করা মুশকিল। তবে ভুকেও মিথ্যা বলবেন না।
    আমাদের বুযুর্গদের দেখুন তারা মিথ্যা থেকে কিভাবে বেচে থাকত। মীরাটে হযরত গাংগুহী রাহ:-কে ম্যাজিস্ট্রেট জিজ্ঞাসা করলেন, আপনার কাছে বন্দুক আছে? তিনি তসবীহ দানা দেখিয়ে বললেন,এটাই আমাদের অস্ত্র।
    মাওলানা কাসেম নানুতুভী রাহ:-কে মসজিদে ঘেরাও করে ফেলা হল। পুলিশ তাকে চিনতো না। তাকে জিজ্ঞাসা করা হল, মাওলানা কাসেম কোথায়? তিনি উঠে দাড়িয়ে একটু সরে গিয়ে বললেন যে, একটু আগে এখানেই বসে ছিল।
    অনেক ভাই জিহাদে মিথ্যা বলা জায়েজ মনে করে ঢালাওভাবে মিথ্যা বলা শুরু করে। বিষাক্ত পদার্থের কিছু না কিছু প্রতিক্রিয়া আছে। প্রয়োজনে অভিযোগপত্রে ধোয়াশাচ্ছন্ন শব্দ ব্যবহার করুন।
    বাস্তব উদাহরণ
    একবার পুলিশ একটি জানালা ভাঙ্গা দেখতে পায়। নিচেই ঝোপের কাছে এক ব্যক্তি শুয়ে ছিল। তাকে জিজ্ঞাসা করা হল যে, সে জানালা চুরি করার জন্য ভেঙেছে কিনা। সে অস্বীকার করে এবং জানায় যে, সে রাস্তায় থাকে; তার বাড়িঘর নেই। তাই সে সেখানে শুয়ে আছে। কে জানালা ভেঙেছে তা সে জানে না। পুলিশ কথা শোনার পর একটি ফাঁদ পাতলো। সে তার সহকর্মী কে পাঠালো যেন সে কোন সাক্ষী খুঁজে আনে। সহকর্মী নিকটবর্তী একটি দোকানের মালিককে পাশের গলি থেকে নিয়ে এলো। দোকানদার কিছুই বলেনি শুধু তাকে যেভাবে শিখিয়ে দেয়া হয়েছিল সেভাবে দূর থেকে আসামির দিকে আঙুল তুলে ইশারা করে এবং মাথা নাড়িয়ে কিছু বলার অভিনয় করে। ব্যাস, এতেই আসামি স্বীকার করে নেয়।
    দ্বিতীয় উদাহরণ,
    পুলিশ জানে কিভাবে আপনাকে চাপ প্রয়োগ করতে হবে এবং আপনার বিরুদ্ধে সাক্ষী জোগাড় করতে হবে। থানায় এমন অনেক অভিযোগকারী আসে এবং ঘোরাফেরা করে যারা তাদের উপর জুলুম করেছে এমন ব্যক্তিকে খুঁজছে কিন্তু পাচ্ছে না। তাই পুলিশ এমন একজনের কাছে যাবে এবং বলবে, তোমার মোবাইল চুরি হয়েছে। আমি এমন একজনকে জানি, যে মোবাইল চুরি করে। তোমার মোবাইল কে নিয়েছে তা খুঁজে পাওয়া না গেলেও এরকম হাজার চোরের একজনকে তো শাস্তি দেয়া দরকার। তাই তুমি এর বিরুদ্ধে সাক্ষী দাও। এরকম অনেক ঘটনা ঘটেছে এবং প্রতি ক্ষেত্রেই অভিযোগকারী আসামির বিরুদ্ধে সাক্ষী দিতে প্রস্তুত হয়ে গেছে। মাঝে মাঝে আসামীকে মারধর করার চেষ্টাও করেছে। আপনার সাথেও এরকম হতে পারে। পুলিশ কোন সেকুলারকে বলবে , দেখো। অমুক জঙ্গি হামলায় মারা গেছে। আসল অপরাধী ধরা যাচ্ছে না। কিন্তু আমি এমন অনেক ইসলামপন্থীকে চিনি, যারা একই রকম মতাদর্শ ধারণ করে। এদের শাস্তি দিলেও অন্তত অমুকের আত্মা শান্তি পাবে। সুতরাং তুমি সাক্ষী দাও। অতঃপর আগের ঘটনার মত এই ব্যক্তি সাক্ষী দেয়ার অভিনয় করবে যেন আপনার স্বীকারোক্তি নেয়া যায়।​

  • #2
    বাস্তব উদাহরণ
    একবার পুলিশ একটি জানালা ভাঙ্গা দেখতে পায়। নিচেই ঝোপের কাছে এক ব্যক্তি শুয়ে ছিল। তাকে জিজ্ঞাসা করা হল যে, সে জানালা চুরি করার জন্য ভেঙেছে কিনা। সে অস্বীকার করে এবং জানায় যে, সে রাস্তায় থাকে; তার বাড়িঘর নেই। তাই সে সেখানে শুয়ে আছে। কে জানালা ভেঙেছে তা সে জানে না। পুলিশ কথা শোনার পর একটি ফাঁদ পাতলো। সে তার সহকর্মী কে পাঠালো যেন সে কোন সাক্ষী খুঁজে আনে। সহকর্মী নিকটবর্তী একটি দোকানের মালিককে পাশের গলি থেকে নিয়ে এলো। দোকানদার কিছুই বলেনি শুধু তাকে যেভাবে শিখিয়ে দেয়া হয়েছিল সেভাবে দূর থেকে আসামির দিকে আঙুল তুলে ইশারা করে এবং মাথা নাড়িয়ে কিছু বলার অভিনয় করে। ব্যাস, এতেই আসামি স্বীকার করে নেয়।
    দ্বিতীয় উদাহরণ,
    পুলিশ জানে কিভাবে আপনাকে চাপ প্রয়োগ করতে হবে এবং আপনার বিরুদ্ধে সাক্ষী জোগাড় করতে হবে। থানায় এমন অনেক অভিযোগকারী আসে এবং ঘোরাফেরা করে যারা তাদের উপর জুলুম করেছে এমন ব্যক্তিকে খুঁজছে কিন্তু পাচ্ছে না। তাই পুলিশ এমন একজনের কাছে যাবে এবং বলবে, তোমার মোবাইল চুরি হয়েছে। আমি এমন একজনকে জানি, যে মোবাইল চুরি করে। তোমার মোবাইল কে নিয়েছে তা খুঁজে পাওয়া না গেলেও এরকম হাজার চোরের একজনকে তো শাস্তি দেয়া দরকার। তাই তুমি এর বিরুদ্ধে সাক্ষী দাও। এরকম অনেক ঘটনা ঘটেছে এবং প্রতি ক্ষেত্রেই অভিযোগকারী আসামির বিরুদ্ধে সাক্ষী দিতে প্রস্তুত হয়ে গেছে। মাঝে মাঝে আসামীকে মারধর করার চেষ্টাও করেছে। আপনার সাথেও এরকম হতে পারে। পুলিশ কোন সেকুলারকে বলবে , দেখো। অমুক জঙ্গি হামলায় মারা গেছে। আসল অপরাধী ধরা যাচ্ছে না। কিন্তু আমি এমন অনেক ইসলামপন্থীকে চিনি, যারা একই রকম মতাদর্শ ধারণ করে। এদের শাস্তি দিলেও অন্তত অমুকের আত্মা শান্তি পাবে। সুতরাং তুমি সাক্ষী দাও। অতঃপর আগের ঘটনার মত এই ব্যক্তি সাক্ষী দেয়ার অভিনয় করবে যেন আপনার স্বীকারোক্তি নেয়া যায়।
    মিথ্যা বললে বক্তা মিথ্যা বাক্যটি প্রশ্নবোধক ভঙ্গিতে বলে যেমন কোন শিশুকে জিজ্ঞাসা করা হলে তুমি কি চকলেট চুরি করেছো সে বলবে না পার এই না বলার পরের ভেতর একটা প্রশ্ন লুকিয়ে থাকবে কিন্তু তুমি কি বিশ্বাস করো যে আমি চুরি করতে পারি কাজেই পুরো বয়ে আমরা মিথ্যা বলতে নিষেধ করেছি কিন্তু কখনো বলতে হলেই বাক্যটি প্রশ্নসূচক ভাব বা গলায় প্রশ্ন সূচক হওয়ার আনবেন না
    তৃতীয় উদাহরণ:
    পুলিশ নানা প্রকার বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীমূলক যন্ত্র ও প্রযুক্তির কথা বলবে। যেমনঃ উড়ে উড়ে তো খুন করতে যাও নি। আমাদের এক্সপার্ট টিম ঠিকই UV রশ্মি দিয়ে পায়ের ছাপ বের করবে।
    তারপর একটা ফাইল টেবিলে ছুড়ে দিয়ে বলবে, তোমার অপরাধ প্রমাণ হয়ে গেছে।
    উদাহরণ চার:
    আজকাল চারদিকে সিসি ক্যামেরার ছড়াছড়ি। কাইনেসিক প্রশ্নের সময় পুলিশ বলতে পারে, একটা সিসি ক্যামেরায় তোমাকে অমুক কাজ করতে দেখা গিয়েছে কেন?"
    সে আপনার চোখের গতিবিধি লক্ষ্য করবে।
    উদাহরণ পাচ:
    সাধারণত আমরা কথা বলার সময় চার থেকে সাত ফুট দূরত্ব রাখি। এর কমে সাধারণত ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিরা আসতে পারে। এই পদ্ধতিতে পুলিশ আপনার বিরুদ্ধে অভিযোগ ও প্রমাণের ফুলঝুরি ছুড়তে ছুড়তে আপনার দিকে এগিয়ে আসতে আসতে একদম কোলে চড়ে বসবে। এটাকে পাভলভের কৌশল বা কমান্ডার টাচ বলে। এতে আসামি শক খাওয়ার মত আতকে উঠে।
    এর সমাধান হল, সে আপনাকে স্পর্শের আগেই তাকে স্পর্শ করা। এতে করে পাল্টা সে আতকে উঠবে।
    উদাহরণ ছয়,
    আত্মমর্যাদা ও আত্মসম্মানে আঘাত করা। এই পদ্ধতিতে পুলিশ আপনাকে বলবে, তুমি একজন শিক্ষকের ছেলে হয়ে মিথ্যা কিভাবে বল? সাহাবীরা কি এই ইসলাম শিখিয়েছে? তারা তো বীরের মত শত্রুর সামনে দাড়িয়ে সত্য কথা বলতে দ্বিধা করত না ইত্যাদি।
    উদাহরণ সাত:
    সহযোগীর ধোকা: সহযোগী নিয়ে অপরাধ করলে পুলিশের সোনায় সোহাগা। সে আপনাকে বলবে, তোমার বন্ধু তো বলল যে, তুমি এই এই করেছ।
    এর সমাধান বইয়ের শুরুতে তিনটি মূলনীতি শিরোনামে বলা হয়েছে।
    তদন্তনামা
    মামলা এক:
    মামলার শুরু হয় হাসপাতালে পাওয়া একটা লাশ নিয়ে। তার পায়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধমনী ছাইদানি দিয়ে থেতলে দিয়েছে বলে সন্দেহ হল। এতে রক্তক্ষরণে সে মারা যায়। মারা যাবার আগে সে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেছিল, কিন্তু কয়েক পায়ের বেশি যেতে পারে নি। সন্দেহ কোন দক্ষ শল্যচিকিৎসকের দিকে কিন্তু ক্ষতস্থানে দক্ষতার ছাপ ছিল না। আর নিকটতম আত্মীয়দের মধ্যে ডাক্তার নেই। কারণ অভিজ্ঞতা বলে, খুনী সাধারণত নিকটতম আত্মীয় হয়, ডাকাতি মামলা ছাড়া। হাসপাতালে নিহতের বান্ধবীকেও পাওয়া গেল না।
    আমরা যখন বাড়িতে পৌছালাম, তখন দেখলাম তার বান্ধবী, মানে যার সাথে লিভ টুগেদার করত, সে সিড়ির রক্ত ধুচ্ছে। আমাদের হাতে কোন প্রমাণ ছিল না। তবে একজন বান্ধবীর ক্ষেত্রে ২ অবস্থা হতে পারে, সে আত্মরক্ষার জন্যে খুন করেছে (কারণ ক্ষতস্থানে এলোমেলো আঘাত ছিল) কিংবা প্রত্যক্ষদর্শী (কারণ একটা মেয়ের পক্ষে একজন পুরুষকে ধরাশয়ী করা মুশকিল। আর সে নিহতের হয়ে মামলা দায়ের করে নি। সম্ভাব্য ব্যাখ্যা হল, সে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত)। মেয়েটাকে এই দুই সম্ভাবনা মাথায় রেখে জোরালোভাবে জেরা করা হল। এতে বেশ অস্বস্তি পরিলক্ষিত হয়। অল্প কিছু সময়ের মধ্যেই সে তার উকিলের সাথে কথা বলতে চায়।
    (বাংলাদেশের সংবিধানের ৩৩ বা ৩৫ অনুচ্ছেদে গ্রেফতারের কারণ জানানো এবং উকিল নিয়োগের বা আইনি পরামর্শ প্রাপ্তির অধিকারের কথা থাকলেও জঙ্গিদের এই সুবিধা না দেয়া স্বাভাবিক)
    অধিকাংশ পুলিশ এই পর্যায়ে তদন্ত থেকে সরে যায়। কিন্তু আমি যখন উকিলের নাম জিজ্ঞাসা করলাম, জানতে পারলাম, সে সস্তা উকিল।
    দ্বিতীয় ভুল হল, উকিলের সাথে থানায় দেখা করার কথা বললে, উকিল থানায় আসতে রাজি হয়ে যায়। থানার চেয়ে চেম্বারে বা মোবাইলে যোগাযোগের ক্ষেত্রে উকিল বেশি কৌশল খাটাতে পারে, তার সহকর্মীদের থেকে পরামর্শ নিতে পারে
    যাইহোক, উকিল এলে তাকে বলা হল যে, আমাদের কাছে কোন প্রমাণ নেই। কিন্তু আঘাতটা যেহেতু মাথা, গলা বা বুকে নয়। খুব সম্ভবত মক্কেল আত্মরক্ষার চেষ্টা করেছিল। আমরা শুধু আপনার পক্ষ থেকে সহযোগিতা চাই।
    দক্ষ উকিলরা অহেতুক মক্কেলকে হয়রানি করতে বাধা দিত। কিন্তু সে রাজি হয়ে গেল।
    ব্যস, আমরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা জেরা করলাম। সে প্রথমে স্বীকার করল, সে আত্মরক্ষার জন্যে আঘাত করেছিল। পরে স্বীকার করল যে, লোকটার আরেকজন রক্ষিতা ছিল। তাই শাস্তি দেয়ার জন্য সে আঘাত করে। কিন্তু সে খুন করতে চায় নি।
    (সাধারণত মেয়েরা শুরুতে পুরুষদের কোন বস্তু দিয়ে আঘাত করে। কারণ সে পুরুষের উচ্চতা ও শারীরিক সক্ষমতা দ্বারা মানসিকভাবে নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে এবং আগে আঘাত করে এই নিরাপত্তাহীনতা দূর করতে চায়। কিছু সম্ভব না হলে, মুখ চালিয়ে যায়। - জর্ডান পিটারসন)
    উকিল অদক্ষ বলে মনে হলে তৎক্ষণাৎ উকিল পরিবর্তন করবেন।
    মামলা দুই:
    চুরি-ডাকাতির মামলায় অপরাধী খোজা ভুত খোজার মত। কারণ অপরাধ নির্দিষ্ট কোন প্যাটার্ন অনুসরণ করে না। একারনে অনেক সময় খুনের ঘটনা ডাকাতির সাথে সম্পৃক্ত করে কপিক্যাট টাইপ কাজ করা সুবিধাজনক। এরকম এক বৃদ্ধা বাড়ি ছেড়ে বেড়াতে গিয়েছিলেন। ফিরে এসে দেখেন ঘরের সব খাবার কে খেয়ে গেছে, আর মূল্যবান জিনিসপত্র নেই। সাথে এক জোড়া বুট নেই, যা তার এক নাতি নিতে চেয়েছিল।
    চুরির মামলায় পুলিশ কান দেয় না। কিন্তু বৃদ্ধা যখন তার দ্বিতীয় নাতিকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে বললেন, তখন লেখক একবার চেষ্টা করে দেখলেন। এক বোতল কোকের দাওয়াত দিতেই ছোট নাতি থানায় চলে এল। এখন উভয় নাতি জেলে আছে। এমনিতেও শিশুদের সাক্ষ্য আদালতে গ্রহণযোগ্য ।
    ঘটনা তিন:
    ঘরোয়া ঝগড়া কেন্দ্র করে লেখককে এক বাড়িতে যেতে হল। আগেই বলা হয়েছে, পুলিশ অহেতুক কাজের ঝামেলা পছন্দ করে না। দম্পতির সাথে কথা বলে জানা গেল যে, মহিলা ক্যাসিনোতে জুয়া খেলতে চেয়েছিল। স্বামী দেয় নি। লেখকের মাথায় রক্ত উঠে গেল। এক পর্যায়ে কোন কারণ ছাড়াই মহিলা বলল, সে যদি একই সময়ে একাধিক পুরুষকে বিয়ে করে তবে তাকে জেলে নেয়া হবে কিনা?
    লেখক বলল, না। বেরিয়ে এসে খোজ নিয়ে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেল। বর্তমানে মহিলা জেলে আছেন।
    ঘটনা চার:
    অনেক বছরের পুরাতন একটা ফাইল লেখকের ঘাড়ে চাপিয়ে দেয়া হল। একটা বাচ্চা মেয়েকে ধর্ষণ করা হয়েছিল। বাচ্চাটা মানসিকভাবে এত বিপর্যস্ত ছিল যে, কোন কথা বলছিল না। একজন দাতের ডাক্তারের উপর সন্দেহ ছিল , কিন্তু কোন প্রমাণ ছিল না।
    লেখক তার বাড়িতে দেখা করে জানতে পারলেন যে, তার কোন বউ বেশিদিন টিকে নি। তাকে কেন একটা পুরাতন ধর্ষণ মামলায় সন্দেহ করা হয়েছিল ব্যাপারে তার মতামত জেনে এবং থানায় এক বোতল কোক খাওয়ার দাওয়াত দিয়ে চলে এলেন।
    সে আসার পর তাকে লেখক তার স্ত্রীর মৃত্যুর গল্প শুনিয়ে এবং বর্তমানে রাস্তায় বাচ্চা মেয়েদের দেখে তার চোখ আটকে যাওয়া ও দেহের বিবরণ দিয়ে কিছু মন্তব্য করে আরও আপন করে নিল। একটা বাচ্চা মেয়ের ছবি দেখিয়ে লেখক বলল যে,এটা তার বর্তমান বান্ধবী। আসামী সেটা বিশ্বাসও করল। এক পর্যায়ে বলা হল যে, "আপনি সেই দাতের ডাক্তারের কথা শুনেছেন যে, বাচ্চা মেয়েদের এইডসে আক্রান্ত করছিল? এদের ধরা খুব সহজ, কারণ rna ভাইরাস পোষক দেহের ডিএনএ বহন করে আনে। এরকম কোন মেয়ের শরীরে কি আপনার ডিএনএ পাওয়া যেতে পারে?"
    সে বলল, "আআআ... চুমু দেয়ার কারণে হতে পারে"
    অত:পর তার সামনে প্রতিবেশীর কুকুরের বিরুদ্ধে অভিযোগের ফাইল রেখে বলা হল যে, তার বিরুদ্ধে সব প্রমাণিত হয়ে গেছে।
    ফাইলের সাইজ দেখে সে অবাক হয়ে বলল, সর্বনাশ! এত বড় ফাইল আমার উপরে করা!" বলে সে অজ্ঞান হয়ে গেল।
    জ্ঞান ফেরার পর তাকে পাভলভের পদ্ধতিতে নানা অভিযোগের ফুলঝুরি শুনিয়ে স্পর্শ করলাম। স্পর্শ করা মাত্রই সে লাফিয়ে উঠছিল। বর্তমানে সে জেলে আছে। আশা করি, সেখানে অনেকেই তাকে আরও স্পর্শকাতর স্থানে স্পর্শ করছে।​

    Comment

    Working...
    X