Announcement

Collapse
No announcement yet.

ইসলাম তোমার দেশ, তুমি মুহাম্মাদের সৈনিক! || পর্ব - ৩

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • ইসলাম তোমার দেশ, তুমি মুহাম্মাদের সৈনিক! || পর্ব - ৩

    ইসলাম তোমার দেশ, তুমি মুহাম্মাদের সৈনিক!
    পর্ব - ৩

    প্রিয় ভাইয়েরা!
    .
    সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়টি আমাদের সামনে রাখতে হবে, তা হচ্ছে, আমরা বিপ্লব করি বা না করি, বাতিল কিন্তু আমাদের বিরুদ্ধে বিপ্লব করবেই। সে কখনোই থেমে থাকবে না। তারা আমাদের দ্বীনদারী সহ্য করবে, এটা কখনই সম্ভব নয়। শোয়াইব আ. ও তাঁর কওমের মাঝে যে আলোচনা হয়েছিল, তা কুরআন খুলে দেখুন। এ আলোচনা আজকের মুশরিকদের স্বভাব বুঝার জন্য যথেষ্ট। শোয়াইব আ. তাঁর কওমকে সম্বোধন করে বলেছিলেন-

    وَإِن كَانَ طَائِفَةٌ مِّنكُمْ آمَنُوا بِالَّذِي أُرْسِلْتُ بِهِ وَطَائِفَةٌ لَّمْ يُؤْمِنُوا فَاصْبِرُوا حَتَّىٰ يَحْكُمَ اللَّهُ بَيْنَنَا وَهُوَ خَيْرُ الْحَاكِمِينَ ﴿الأعراف: ٨٧﴾

    “আর যদি তোমাদের একদল ঐ বিষয়ের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে যা নিয়ে আমি প্রেরিত হয়েছি এবং একদল বিশ্বাস স্থাপন না করে, তবে ছবর কর যে পর্যন্ত না আল্লাহ আমাদের মধ্যে মীমাংসা করে দেন। তিনিই শ্রেষ্ট মীমাংসাকারী।” (সূরা আ‘রাফ: ৮৭)
    .
    উলামায়ে কেরাম এখানে ব্যাখ্যা করেছেন যে, শোয়ায়েব আ. তাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরেননি, তাদেরকে ধমক দেননি, উল্টো তিনি তাদেরকে যুদ্ধ-বিগ্রহ বাধাতে নিষেধ করেছেন। বলেছেন, কেউ কারো বিরুদ্ধে কোন ধরণের এ্যাকশন নিবে না। দেখা যাক আল্লাহ কী ফায়সালা দেন, অবস্থা কোন দিকে মোড় নেয়? ব্যস, আপনারা তার অপেক্ষা করুন। এরই মধ্যে ক্ষমতাধর লোকেরা বলে উঠল-

    قَالَ الْمَلَأُ الَّذِينَ اسْتَكْبَرُوا مِن قَوْمِهِ لَنُخْرِجَنَّكَ يَا شُعَيْبُ وَالَّذِينَ آمَنُوا مَعَكَ مِن قَرْيَتِنَا أَوْ لَتَعُودُنَّ فِي مِلَّتِنَا قَالَ أَوَلَوْ كُنَّا كَارِهِينَ ﴿الأعراف: ٨٨﴾

    “তার সম্প্রদায়ের দাম্ভিক সর্দাররা বললঃ হে শোয়ায়েব, আমরা অবশ্যই তোমাকে এবং তোমার সাথে বিশ্বাস স্থাপনকারীদেরকে শহর থেকে বের করে দেব অথবা তোমরা আমাদের ধর্মে প্রত্যাবর্তন করবে। শোয়ায়েব বললঃ আমরা অপছন্দ করলেও কি?” (সূরা আ‘রাফ: ৮৮)
    .
    অর্থাৎ হে শোয়ায়েব! অবশ্যই আমরা তোমাকে এবং তোমার সাথে যারা ঈমান এনেছে, তাদের সবাইকে আমাদের এলাকা থেকে বের করে দেবো। (তোমাদের জন্য রাস্তা একটাই, তা হলো-) অথবা তোমরা আমাদের ধর্মে ফিরে আসবে। (নাউযুবিল্লাহ, তারা মুশরিক হয়ে যাবে!)... এ ধরণের ধমক কুফর ও শিরকের পন্ডিতরা সর্বদা ঈমানদারদের দিয়ে থাকে। ‘মতবিনিময়’ আর সহাবস্থানের ধ্বজাধারীরা আজও যখন মুসলমানদের দুর্বল পায়, তখন তাদের সুর বদলে যায়। ‘অসাম্প্রদায়িকতা আর আইনের শাসন’ জাতীয় দাবিগুলির পর্দা চেহারাগুলো থেকে খুব দ্রুতই খুলে পড়ে যায়।
    .
    আমার ভাইগণ!
    .
    বলুন তো, মিয়ানমারের মুসলমানরা কাকে কষ্ট দিয়েছিল? তারা কার বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরেছিল? তারা কখন চরমপন্থা এবং সন্ত্রাসবাদের দাওয়াত দিয়েছিল? তারা তো লাঠি পর্যন্ত উঠায়নি। তারা তো একেবারে নিরস্ত্র ছিল। অসহয় দুর্বল ছিল। তারা মানবতা এবং স্বদেশের দোহাই দিয়ে নিরাপত্তা আর বেঁচে থাকার প্রাণ ভিক্ষা চেয়েছিল। তাদেরকে কি মাফ করা হয়েছে? তাদের প্রাণ ভিক্ষা দেওয়া হয়েছে? না, বরং তাদের উপর গণহত্যা চালানো হয়েছে। প্রায় লক্ষ মুসলিম নদীতে ডুবে মরেছে। হিংস্র হায়েনার হৃদয়েও দয়া-মায়া থাকে। মিয়ানমারের ভূমিতে মুসলিমদের সাথে যা কিছু করা হয়েছে, তা এমন নির্দয়ভাবে করা হয়েছে যে, বনের হিংস্র জানোয়াররা পর্যন্ত ব্যথায় ব্যথিত হয়েছে। এসব নির্যাতন আজকের মিডিয়া যুগে এবং বিশ্বশক্তির চোখের সামনে হয়েছে। চুপিসারে পর্দার আড়ালে হয়নি। বরং দিবালোকে... ক্যামেরার সামনে হয়েছে। লাঠি, খঞ্জর, আগুন আর পেট্রোল নিয়ে মুশরিক বৌদ্ধরা মুসলিমদের উপর হামলে পড়েছিল। পুলিশ আর সেনাবাহিনী ঐ গুন্ডাদের সমর্থন আর নিরাপত্তায় ছিল... নির্মমভাবে নতুন নতুন পন্থায় নির্যাতন করা হয়েছে... তাদেরকে কষ্ট দিয়ে দিয়ে মারা হয়েছে... শিশু-বাচ্চাদেরকে মা-বাবার সামনে আগুনে নিক্ষেপ করা হয়েছে। জীবিত মানুষের পর্যন্ত হাত-পা এবং কান কেটে ফেলা হয়েছে। মুসলিম নারীদের সাথে প্রকাশ্যে দুর্ব্যবহার করার পর তাদের শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন দেওয়া হয়েছে। এমন একটি দু’টি ঘটনা নয়, বরং অসংখ্য অগণিত ভিডিও ফুটেজ আছে। গ্রামের পর গ্রাম অল্প কিছুদিনের মধ্যে বিরান ভূমিতে পরিণত হয়েছে। এখনো আমাদের লাখ লাখ বোন ঘর ছাড়া হয়ে ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়ে নিজেদের সে সব জুলুমের দাস্তান শোনাচ্ছে।
    .
    প্রিয় ভাইয়েরা!
    .
    ইসলাম ‘লা ইলাহা’ বলে সকল উপাস্য এবং সকল মতবাদকে প্রত্যাখান করে। এরপর ‘ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ’ বলে শুধু ইসলামকেই হক বলে সত্যায়ন করে। জমিনে একমাত্র ইসলামই বিজয়ী থাকার অধিকারের স্বীকারোক্তি ও ঘোষণা দিয়ে থাকে। বাস্তবতা হচ্ছে, ইসলাম আল্লাহর বান্দাদের সকল মতবাদ থেকে স্বাধীন করে আল্লাহর দাসত্বে নিয়ে আসার পয়গাম। আল্লাহ তা‘আলা মুসলমানদের উপর এ দায়িত্বই ন্যস্ত করেছেন যে, তারা মানুষকে মানুষের দাসত্ব থেকে মুক্ত করে আসমান-জমিনের সৃষ্টিকর্তার দাসত্বে নিয়ে আসবে। সকল ধর্ম মতের জুলুম থেকে বের করে ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে সমবেত করবে। এটাই মুসলমানদের জিম্মাদারী ছিল। তাদের কর্তব্য ছিল, তারা কুফুর শিরকের বিরুদ্ধে বিপ্লব সাধন করবে। মানবতা আর মানবতার রবের মাঝে বাধার প্রাচীর গুড়িয়ে দিয়ে জমিনে আল্লাহর দ্বীনকে বিজয়ী ও শাসক বানাবে। যদি মুসলমান এই দায়িত্ব পালনে বেরিয়ে পড়ে এবং তা আদায়ে নিজের জান মাল কুরবান করে, তবে তার জীবনের উদ্দেশ্য সফল হবে। আল্লাহ তাকে দুনিয়াতেও সম্মান দান করবেন এবং পরকালেও সর্বদা সফলতার উচ্চ শিখরে রাখবেন।

    আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেছেন-

    انفِرُوا خِفَافًا وَثِقَالًا وَجَاهِدُوا بِأَمْوَالِكُمْ وَأَنفُسِكُمْ فِي سَبِيلِ اللَّهِ ذَٰلِكُمْ خَيْرٌ لَّكُمْ إِن كُنتُمْ تَعْلَمُونَ ﴿التوبة: ٤١﴾

    “তোমরা বের হয়ে পড় স্বল্প বা প্রচুর সরঞ্জামের সাথে এবং জিহাদ কর আল্লাহর পথে নিজেদের মাল ও জান দিয়ে, এটি তোমাদের জন্যে অতি উত্তম, যদি তোমরা বুঝতে পার।” (সূরা তাওবা: ৪১)
    .
    কিন্তু যদি অবস্থা এমন হয়, মুসলমানদের আশেপাশে জুলুম ও কুফরের জয় জয়কার। জীবনের সকল অঙ্গনে বাতিলের শাসন ও কর্তৃত্ব চলে, এতো কিছুর পরও মুসলমান নিশ্চিন্তে আরামে বসে থাকে। আল্লাহর আহ্বানে সাড়া না দেয়। এতো কিছুর পরও সে আল্লাহর আলো নিয়ে অন্ধকার দূর না করে বরং দুনিয়ার চার দিনের জীবনের জন্য বন্দী হয়ে যায়। নিরাপত্তা, শান্তি আর দুনিয়ার যশ-খ্যাতির উন্নতি ও সুখকেই প্রাধান্য দেয়। তো মহান আল্লাহ তাকে সতর্ক করে জানিয়ে দিচ্ছেন-

    إِلَّا تَنفِرُوا يُعَذِّبْكُمْ عَذَابًا أَلِيمًا وَيَسْتَبْدِلْ قَوْمًا غَيْرَكُمْ وَلَا تَضُرُّوهُ شَيْئًا وَاللَّهُ عَلَىٰ كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ ﴿التوبة: ٣٩﴾

    “যদি বের না হও, তবে আল্লাহ তোমাদের মর্মন্তুদ আযাব দেবেন এবং অপর জাতিকে তোমাদের স্থলাভিষিক্ত করবেন। তোমরা তাঁর কোন ক্ষতি করতে পারবে না, আর আল্লাহ সর্ববিষয়ে শক্তিমান।” (সূরা তাওবা: ৩৯)
    .
    চলবে...
Working...
X