Announcement

Collapse
No announcement yet.

বিকাশের (Bkash) ধারা ===>

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • বিকাশের (Bkash) ধারা ===>

    আমরা প্রায়শই মনে করি, ব্যাংক বন্ধ করে দেওয়া বা স্বর্ণ দিয়ে ব্যবসা শুরু করলেই যেন পশ্চিমা আধিপত্যমূলক অর্থব্যবস্থার বিরুদ্ধে আমরা একটি স্বাধীন, বিকল্প ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারবো। কিন্তু এই ভাবনাটি একটি অনেক বড় ও জটিল পাজলের (Puzzle) ক্ষুদ্র একটি খণ্ডমাত্র। বাস্তবতা হলো, আধুনিক অর্থব্যবস্থা শুধুই সুদের উপর নির্ভরশীল ব্যাংকিং বা কাগুজে মুদ্রার একটি প্রক্রিয়া নয়; এটি একটি গভীর, বহুস্তরীয় কাঠামো, যেখানে ব্যাংক, কেন্দ্রীয় ব্যাংক, সংসদীয় অর্থনীতি, ফিয়াট কারেন্সি, ট্রেজারি বিল, আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং প্রযুক্তিগত কাঠামো—সব মিলিয়ে একত্রে কাজ করে একটি নির্দিষ্ট আধিপত্য বজায় রাখতে।

    এই কাঠামোটি দীর্ঘকাল ধরে মুসলিম সমাজে কার্যত আলোচনার বাইরে ছিল। বিশেষ করে ভারতীয় উপমহাদেশে এই বিষয়ে সচেতন আলোচনার সূচনা মাত্র কয়েক বছর আগে শুরু হয়েছে। ব্যাংকিং ও সুদের সমালোচনা কিছুটা হলেও প্রবাহিত ও প্রসারিত হতে শুরু করেছে, কিন্তু কারেন্সির প্রকৃতি, তার ইতিহাস, রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ এবং এর মাধ্যমে মানসিক ও অর্থনৈতিক দাসত্ব কিভাবে তৈরি হয়—এই জটিল বিষয়গুলো সাধারণ মানুষের কাছে এখনও তেমনভাবে পৌঁছায়নি। এরই মধ্যে আমরা লক্ষ্য করছি একটি 'আমূল পরিবর্তন'—অর্থাৎ এক ধরনের আর্থিক শাসনের রূপান্তর, যা আমাদের অগোচরেই ঘটছে।

    মাত্র কিছু বছর আগেও নগদ অর্থ ছিল লেনদেনের প্রধান মাধ্যম। অথচ আজকের দিনে বাংলাদেশের প্রায় প্রত্যেক মানুষের একটি করে মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিস (MFS) অ্যাকাউন্ট আছে—বিকাশ, নগদ কিংবা উপায়। এই রূপান্তর কোনো জোরপূর্বক আইন দ্বারা ঘটেনি, যেমনটি হয়েছিল এক সময় স্বর্ণের জায়গায় কাগুজে টাকা ব্যবহারে। বরং এটি ছিল একধরনের নীরব, নরম রূপান্তর—‘স্মার্ট আধিপত্য’—যা মানুষের অভ্যাস, প্রয়োজন, এবং নীতিনির্ধারক কাঠামোর মধ্যে ধীরে ধীরে গেঁথে দেওয়া হয়েছে।

    প্রথমে তারা এই নতুন ব্যবস্থা আমাদের সামনে তুলে ধরল—সহজ, দ্রুত, আধুনিক, সময় বাঁচায়—এমন সব ভাষায়। তারপর এই সেবাকে ছড়িয়ে দেওয়া হলো দেশের প্রতিটি প্রান্তে। প্রতিটি মোড়, দোকান, পাড়া-মহল্লায় বিকাশ বা নগদের এজেন্ট, বুথ তৈরি করা হলো। তারপরে এলো বিশাল এক পরিবর্তন—প্রায় প্রতিটি খুচরা ব্যবসা, ফার্মেসি, বিল পরিশোধ, টিকিট কেনা, এমনকি ভিক্ষাও (!) এই ডিজিটাল মাধ্যমে গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠল। ধীরে ধীরে মানুষ বিকল্প খুঁজে না পেয়ে বাধ্য হলো এই ব্যবস্থাকে গ্রহণ করতে।

    আজকের দিনে বাংলাদেশে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ১৫০০ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয় মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিসের মাধ্যমে (বিকাশ একাই প্রায় ৫০% এর বেশি দখলে রাখে)। বাংলাদেশ ব্যাংকের ২০২৪ সালের তথ্য অনুযায়ী, দেশে মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিস ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় ১৪ কোটির কাছাকাছি পৌঁছেছে। এটি শুধুই প্রযুক্তিগত রূপান্তর নয়; এটি একধরনের ক্ষমতা হস্তান্তর, যেখানে নগদ অর্থের ওপর মানুষের স্বাধীনতা কমে গিয়ে একটি নজরদারি-নির্ভর, রাষ্ট্র ও কর্পোরেট-নিয়ন্ত্রিত সংখ্যায় রূপান্তর ঘটেছে।

    এখন আমাদের অবচেতনেই আমরা নগদ অর্থ থেকে সরে এসে অনলাইনে কয়েকটি ডিজিটাল সংখ্যায় সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছি। এই সংখ্যাগুলো দেখতে নিরীহ হলেও, এগুলো আমাদের লেনদেন, জীবনযাপন, এমনকি স্বাধীনতাকে নিয়ন্ত্রণ করার এক নতুন পদ্ধতির ভিত্তি। একসময় যেটা ছিল আমাদের পকেটের নিয়ন্ত্রণে, এখন সেটা হয়ে গেছে সার্ভারে সংরক্ষিত, সফটওয়্যার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত, এবং অদৃশ্য নীতিনির্ধারকদের ইচ্ছার উপরে নির্ভরশীল।

    আমার আলোচনার লক্ষ্য বিকাশ বা নগদের ইতিহাস বিশ্লেষণ করা নয়। বরং আমি যে দিকটি সামনে আনতে চাই, তা হলো—এই ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলো কীভাবে ধাপে ধাপে আমাদের অভ্যাস, চিন্তা এবং আর্থিক আচরণকে পরিবর্তন করেছে। এটি ছিল এক সুনিপুণ ও কৌশলগত প্রক্রিয়া, যা আমাদের প্রতিদিনকার জীবনে এমনভাবে প্রবেশ করেছে যে, আমরা বুঝতেই পারিনি কখন আমাদের পুরনো অভ্যাসগুলো ভেঙে নতুন এক মানসিক কাঠামোর মধ্যে আমরা ঢুকে পড়েছি।

    এখানেই আসে আমাদের আলোচনার একটি গভীর মোড়—একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন: যদি অভ্যাস ও মানসিকতা এমন কৌশলে পরিবর্তিত করা হয়, তাহলে কি আমরা মুসলিম উম্মাহর মাঝে শুধু সচেতনতা তৈরি করলেই কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তন আনতে পারবো? অনেকেই এই প্রশ্নের উত্তরে আশাবাদী কণ্ঠে বলেন—“হ্যাঁ, সচেতনতা দিয়েই সংস্কৃতি গড়ে ওঠে। যদি মানুষ বুঝে ফেলে, তাহলে তারা নিজেই তাদের অভ্যাস বদলে ফেলবে।”

    কিন্তু বাস্তবতা এতটা সরল বা নিরীহ নয়।

    এই কথাটা শুনতে যতটা আশাবাদী শোনায়, বাস্তবে তা এক ধরনের ছলনা, এক ধরনের আত্মপ্রবঞ্চনা। কারণ, যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আমাদের অভ্যাস ও চিন্তাকে বদলে ফেলা হচ্ছে—তা কেবল সচেতনতার খেলা নয়, বরং এটি এক দীর্ঘমেয়াদি শক্তি-রাজনীতির অংশ, যার চূড়ান্ত পরিণতি হচ্ছে রাষ্ট্রীয় আইনের মাধ্যমে দমন এবং বাধ্যতামূলক গ্রহণ।

    এই বাস্তবতাটি বোঝা জরুরি: আজ আমাদের অভ্যাস বদলানো হচ্ছে যেন কালকের আইন আমরা সহজে মেনে নেই। আজকের “স্বেচ্ছা” হচ্ছে আগামীকালের “বাধ্যতা”-র প্রস্তুতি। যখন মানুষ নিজে থেকেই একটি নতুন পদ্ধতির প্রতি অভ্যস্ত হয়ে যায়, তখন আইনের মাধ্যমে সেই পদ্ধতিকে বাধ্যতামূলক করে তোলা আর কোনো বড় প্রতিরোধের মুখে পড়ে না। বরং তা হয়ে ওঠে 'স্বাভাবিক'। যে ব্যক্তি তখন নিজের স্বাধীনতার দোহাই দিয়ে সেই আইন মানতে অস্বীকৃতি জানাবে, তাকে তখন সমাজবিরোধী, প্রযুক্তিবিরোধী, এমনকি 'বিপজ্জনক' বলে চিহ্নিত করা হবে।

    এই পর্যায়ে এসে আর কোনো আলোচনার অবকাশ থাকবে না। তখন বলপ্রয়োগই হবে একমাত্র পথ। আপনার ডিজিটাল অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা হবে, আপনি হয়তো সরকারি বা বেসরকারি সেবা থেকে বঞ্চিত হবেন, সামাজিকভাবে বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হবে, এবং আপনি নিজেকে এক নিষ্ঠুর ব্যবস্থার সামনে একা ও অসহায় মনে করবেন।

    এই প্রেক্ষাপটে আমাদের করণীয়কে আমরা মোটাদাগে দুইটি প্রধান ধারায় ভাগ করতে পারি।

    প্রথমত, আমাদের নিজেদের ভেতরে এমন বিকল্প লেনদেনব্যবস্থা ধীরে ধীরে চালু করতে হবে, যেগুলো শরিয়াহ্‌সম্মত, নৈতিক এবং আত্মনির্ভর। উদাহরণস্বরূপ, পণ্য-বিনিময় (barter), স্বর্ণ বা রৌপ্যের মাধ্যমে লেনদেন, রুক্‌ (written contract)-এর ভিত্তিতে ব্যবসা, কিংবা কোনো সেবার পরিবর্তে সরাসরি পণ্যের বিনিময়—এইসব পদ্ধতি আজ তাত্ত্বিক মনে হলেও, এগুলোর ভেতরেই রয়েছে এক সম্ভাবনাময় ভবিষ্যতের বীজ। এই প্রথাগুলো আমাদের ফিকহ ও ঐতিহ্যে সুপ্রতিষ্ঠিত, এবং এগুলোকে আধুনিক প্রযুক্তি ও সাংগঠনিক কৌশল দিয়ে পুনরুজ্জীবিত করা সম্ভব।

    তবে এখানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হলো—আমাদের নিজেদের মধ্যে এই পদ্ধতিগুলো চালু করার সময় পারস্পরিক ছাড় ও ধৈর্যের চর্চা। যেহেতু এগুলো এখনো আমাদের দৈনন্দিন অভ্যাসের বাইরে, তাই শুরুতে এগুলোকে কঠোরভাবে আরোপ করা যাবে না। বরং আমাদের প্রয়োজন, এগুলোকে ধীরে ধীরে প্রাকৃতিক অভ্যাসে পরিণত করা—যাতে মানুষের কাছে এটি ‘অতিরিক্ত চেষ্টা’ নয় বরং ‘স্বাভাবিক বিকল্প’ হয়ে দাঁড়ায়। এই ধাপটি অত্যন্ত কৌশলগত: আমরা কেবল নতুন পদ্ধতি প্রস্তাব করছি না, বরং সেই পদ্ধতির চারপাশে এমন একটি cultural comfort zone তৈরি করছি, যেখানে মানুষ নিজেকে নিরাপদ ও যুক্তিযুক্তভাবে জড়িত মনে করবে।

    এই রূপান্তর ঘটাতে গেলে আমাদের প্রতিপক্ষের (যেমন: বিকাশ বা নগদের) কৌশল থেকেই শিখতে হবে। তারা যেভাবে ধাপে ধাপে আমাদের চিন্তা, অভ্যাস ও প্রয়োজনকে বদলেছে—আমরাও তেমনিভাবে, কিন্তু শরিয়াহ্‌সঙ্গত ও নৈতিক ভিত্তিতে, এক বিকল্প ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারি। প্রথমে ছোট পরিসরে, তারপর মসজিদভিত্তিক কমিউনিটি, তারপর স্থানীয় বাজার—এভাবে পরস্পর-নির্ভর, বিশ্বাসভিত্তিক লেনদেনের একটি পরিকাঠামো ধীরে ধীরে দাঁড় করানো সম্ভব।

    এখানে মূল কৌশল হলো—প্রথমে মানুষকে ‘স্বেচ্ছায়’ এই ব্যবস্থার সাথে অভ্যস্ত করে তোলা, যেন পরবর্তীতে এটি একটি প্রতিষ্ঠিত রেওয়াজে পরিণত হয়। আর এই প্রক্রিয়ায় কোনো একদিন হয়তো আমরাও এমন একটি অর্থব্যবস্থা দাঁড় করাতে পারবো, যেটি শুধু বিকল্প নয়, বরং মানুষকে সত্যিকার অর্থে মুক্ত করে, দায়িত্ববান করে, এবং আল্লাহর বিধান অনুযায়ী জীবন যাপন করতে সহযোগিতা করে।


    দ্বিতীয় করণীয়তে প্রবেশ করার আগে একটি বিষয় এখানে স্পষ্টভাবে বলে রাখা জরুরি—আমাদের প্রথম করণীয়টি মূলত মানুষের অভ্যাস ও মানসিকতার পরিবর্তন ঘটানো। অর্থাৎ, মানুষ যেন বিকল্প পদ্ধতির সঙ্গে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অভ্যস্ত হয়ে ওঠে—এটাই প্রথম পর্যায়ের উদ্দেশ্য। কিন্তু এটিই শেষ নয়।

    প্রথম করণীয়টি যতটা ‘মাঠ তৈরি’ করার কাজ, দ্বিতীয় করণীয়টি ঠিক ততটাই ‘কেল্লা গড়া’র কাজ। অর্থাৎ, আমাদের দ্বিতীয় এবং প্রধান করণীয় হলো—এই বিকল্প পদ্ধতিকে একটি সুসংগঠিত প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া।

    কেবল ব্যক্তিগত প্রয়াস বা বিচ্ছিন্ন লেনদেনের মাধ্যমে কোনো পদ্ধতি দীর্ঘস্থায়ী হয় না। এটি তখনই সমাজে গ্রহণযোগ্যতা পায়, যখন সেই পদ্ধতির পেছনে থাকে একটি শক্ত, টেকসই ও প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো—যা সামাজিকভাবে স্বীকৃত, সাংগঠনিকভাবে আত্মনির্ভরশীল, এবং বাইরের আঘাত প্রতিহত করতে সক্ষম।

    এই প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে হলে আমাদের কয়েকটি স্তরে কাজ করতে হবে:

    ১) একটি কাঠামো তৈরি করতে হবে, যা পদ্ধতির বিধি-বিধান নির্ধারণ করবে এবং প্রয়োগ করবে।

    ২) একে স্থানীয় ও সামাজিকভাবে গ্রহণযোগ্য করতে হবে, যেন এটি "বাইরের কিছু" মনে না হয়, বরং "আমাদেরই ব্যবস্থা" বলে বোধ হয়।

    ৩) এই কাঠামোর বিরুদ্ধে যদি কোনো বহিরাগত আঘাত আসে—হোক তা আইনগত, চিন্তাগত বা সরাসরি বলপ্রয়োগ—তাহলে তা প্রতিহত করার জন্য আমাদের সকল দিক থেকে প্রস্তুত থাকতে হবে।

    এই প্রস্তুতি কেবল বক্তৃতা বা লেখনীর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলে চলবে না। আমাদের বুদ্ধিবৃত্তিক প্রতিরোধ, সাংগঠনিক প্রতিরোধ এবং শারীরিক প্রতিরোধ—এই তিন স্তরেই সমানভাবে সক্ষম হতে হবে। কারণ ইতিহাসের এক অমোঘ সত্য হলো—যখনই আপনি প্রচলিত শক্তির বিরুদ্ধে একটি বিকল্প ব্যবস্থা দাঁড় করাতে যাবেন, তখনই আপনার উপর চাপ আসবে। সেই চাপ কখনো আসবে কাগজে-কলমে, কখনো মিডিয়ায়, কখনো সমাজে আপনাকে "উগ্র", "প্রত্যাশাহীন", বা "অবাস্তববাদী" বলে চিহ্নিত করে; আবার কখনো তা সরাসরি বাধা, নিষেধাজ্ঞা বা শাস্তির রূপে নেমে আসবে।

    এই চাপ মোকাবেলার জন্য প্রয়োজন শারীরিক ও মানসিক প্রস্তুতি—শুধু ধৈর্য নয়, আত্মরক্ষা এবং সংগঠিত প্রতিরোধের ক্ষমতা। কারণ কোনো একক ব্যক্তি নয়, একটি প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোই পারে দীর্ঘমেয়াদি প্রতিরোধ গড়ে তুলতে এবং সেই বিকল্প ব্যবস্থাকে সুরক্ষা দিতে।

    আমাদের পূর্ববর্তী আলোচনাগুলোর ধারাবাহিকতায়, সামনে আমরা আলোচনা করব—সমাজে কাঠামোগত পরিবর্তন সাধনের জন্য কী কী করণীয় থাকতে পারে, কোন পথ ও কৌশল আমাদের গ্রহণ করা উচিত, এবং কীভাবে আমরা একটি দীর্ঘমেয়াদি পরিবর্তনের রূপরেখা নির্মাণ করতে পারি।

    এই প্রেক্ষাপটে, আমরা বিশেষভাবে তাকাবো বাংলার ঐতিহাসিক ফরায়েজী আন্দোলনের দিকে, যা হাজী শরীয়তুল্লাহ (রহ.)-এর নেতৃত্বে একটি মৌলিক সামাজিক ও ধর্মীয় পুনর্জাগরণের রূপ নিয়েছিল। ইনশাআল্লাহ, আমরা তাঁর আন্দোলনের রূপরেখাকে একটি মডেল বা ভিত্তি হিসেবে ধরে আমাদের আলোচনায় এগোতে চাই। এই রূপরেখার আলোকে আমরা বিশ্লেষণ করব—কীভাবে একটি ইখলাসভিত্তিক, স্বতন্ত্র চিন্তা-চেতনা ও সাংগঠনিক প্রয়াস গড়ে তোলা যায় যা মুসলিম উম্মাহকে আবার একটি ঐক্যবদ্ধ, আত্মনির্ভরশীল কাঠামোর দিকে নিয়ে যেতে পারে।

    পাশাপাশি আমরা বিশ্লেষণ করব—ফরায়েজী আন্দোলনের কাঠামোগত বৈশিষ্ট্য ও কর্মপন্থার সঙ্গে তিতুমীর (রাহিমাহুল্লাহ)-এর প্রতিরোধ-ভিত্তিক আন্দোলনকে একত্রিত করা কীভাবে সম্ভব। এই দুইটি ধারার মধ্যে—একদিকে যেমন রয়েছে ফরায়েজীদের সুসংগঠিত, দীর্ঘমেয়াদি, সামাজিক সংস্কার ও আধ্যাত্মিক শুদ্ধতার দিকে ধাবিত কাঠামো; অন্যদিকে রয়েছে তিতুমীরের দুর্ধর্ষ আত্মরক্ষা ও সামরিক জিহাদের দৃষ্টান্ত, যা জুলুম ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে সরাসরি প্রতিরোধ গড়েছিল।

    وَمَا تَوْفِيقِي إِلَّا بِاللَّهِ
    فَاَعۡرِضۡ عَنۡهُمۡ وَ انۡتَظِرۡ اِنَّهُمۡ مُّنۡتَظِرُوۡنَ

  • #2
    মাশাআল্লাহ, আরেক মাস্টারপিস
    আল্লাহ তাআলা আপনার ইলম ও হায়াতে বারাকাহ দান করুন, আমীন
    এমন আরও লিখার তাওফিক আল্লাহ তাআলা আপনাকে দান করুন, আমীন​
    বছর ফুরিয়ে যাবে এতো রিসোর্স আছে https://gazwah.net সাইটে

    Comment


    • #3
      বারাকাল্লাহু ফি ইলমিকা, আমাদের দায়িত্ব হলো চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া...

      Comment

      Working...
      X