إِنَّمَا يُرِيدُ الشَّيْطَانُ أَن يُوقِعَ بَيْنَكُمُ الْعَدَاوَةَ وَالْبَغْضَاءَ فِي الْخَمْرِ وَالْمَيْسِرِ وَيَصُدَّكُمْ عَن ذِكْرِ اللَّهِ وَعَنِ الصَّلَاةِ
অর্থ: শয়তান তো চায় যে, মদ ও জুয়ার মাধ্যমে তোমাদের পরস্পরের মধ্যে শত্রুতা ও বিদ্বেষ সৃষ্টি করুক এবং তোমাদেরকে আল্লাহর স্মরণ ও নামায থেকে বিরত রাখুক।
(সূরা আল-মায়িদাহ ৫:৯১)
অর্থ: শয়তান তো চায় যে, মদ ও জুয়ার মাধ্যমে তোমাদের পরস্পরের মধ্যে শত্রুতা ও বিদ্বেষ সৃষ্টি করুক এবং তোমাদেরকে আল্লাহর স্মরণ ও নামায থেকে বিরত রাখুক।
(সূরা আল-মায়িদাহ ৫:৯১)
আজকের যুগে মোবাইল ফোন এবং ইন্টারনেট প্রযুক্তি যেমন একদিকে মানুষের জীবনে অগ্রগতির দ্বার উন্মোচন করেছে, ঠিক তেমনি অন্যদিকে এর অপব্যবহার সমাজে এক ভয়াবহ নৈতিক অবক্ষয়ের পথ তৈরি করেছে। যুব সমাজ, যারা একটি জাতির ভবিষ্যৎ হিসেবে বিবেচিত, তারাই আজ প্রযুক্তির এই অপব্যবহারের কারণে মারাত্মক এক ব্যাধির শিকার হয়ে পড়েছে—পর্নোগ্রাফি। এটি এমন একটি নীরব ঘাতক, যা একবার যে হৃদয়ে স্থান করে নেয়, ধীরে ধীরে তার মানসিক জগৎ, নৈতিক চেতনা, পারিবারিক সম্পর্ক এবং এমনকি আল্লাহর প্রতি ভয়-ভক্তিকেও গ্রাস করে ফেলে। সমাজে আলেম-ওলামা, দীনদার ব্যক্তিবর্গ এবং সচেতন অভিভাবকেরা বিষয়টির ভয়াবহতা অনুধাবন করে বারবার এ নিয়ে আলোচনা করছেন, মানুষকে সতর্ক করছেন, এবং তরুণদের ইহজাগতিক ও পরকালীন ক্ষতি থেকে বাঁচানোর জন্য পথ দেখাচ্ছেন।
কিন্তু পর্নোগ্রাফির এই আগ্রাসন এখন আর একা নেই। প্রযুক্তি-নির্ভর এই যুগে তার পাশাপাশি আরেকটি ভয়ংকর ফাঁদ সমাজকে গ্রাস করছে, আর তা হলো গেম—বিশেষ করে সহিংস, আসক্তিকর এবং মানসিক বিকার তৈরি করা ডিজিটাল গেম। কিছু গেম এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে, যেন তা সরাসরি শিশু-কিশোরদের চিন্তাভাবনায় অশান্তি, হিংসা, প্রতিশোধপরায়ণতা এবং বাস্তবতা থেকে পালিয়ে বেড়ানোর এক অলীক জগৎ তৈরি করে দেয়। এসব গেমের মাধ্যমে ধীরে ধীরে একজন কোমলমতি শিশুর মনোজগতে যে পরিবর্তন আসে, তা কেবল ক্ষণিকের বিনোদনে সীমাবদ্ধ থাকে না; বরং এটি তার চরিত্র গঠনের প্রক্রিয়াকে ধ্বংস করে, বাস্তব জীবন সম্পর্কে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে এবং আত্মনিয়ন্ত্রণের শক্তিকে ভেঙে চুরমার করে দেয়।
এই দুই বিপদ—পর্নোগ্রাফি ও গেম—আধুনিক সমাজের এমন ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে, যা পরিবার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং ধর্মীয় নেতৃত্ব—সবার জন্যই গভীর উদ্বেগের কারণ।
কিন্তু আজকে আমাদের সমাজে এমন একটি ব্যাধি খুবই গভীরভাবে শিকড় গেড়ে বসেছে, যা নিঃশব্দে, কিন্তু ধীরে ধীরে, আমাদের চিন্তা, চরিত্র, পরিবার ও ভবিষ্যৎকে গ্রাস করে নিচ্ছে—আর সেটি হচ্ছে জুয়া। এক সময়ে এই ‘খেলা’ ছিল লোকচক্ষুর আড়ালে—অন্ধকার গলিতে, কোনো গোপন কোঠায়, প্রশাসনের মদদ বা নজরদারির ফাঁক গলে যেটুকু সম্ভব হতো। সেখানে জড়াতে হলে সাহস দরকার হতো, সঙ্গে ‘ব্যবস্থা’ রাখতে হতো। সমাজও তখন একে ঘৃণা করত, প্রতিরোধ করত, অন্তত লজ্জা বোধটা ছিল। কিন্তু এখন এই জুয়া আমাদের সবার হাতের মুঠোয়—একটা স্মার্টফোন আর ইন্টারনেট কানেকশন হলেই তুমি একজন বেটার, একজন জুয়াড়ি, আর সেটা কোনো কুপ্রবৃত্তির দরকার হয় না—লোভটাই যথেষ্ট।
এই ডিজিটাল যুগের জুয়া আগের সেই তাসের আসর নয়। এখন এটা মোড় নিয়েছে সফ্টওয়্যার আর অ্যালগরিদমে মোড়া এক মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধের দিকে, যেখানে কোটি কোটি টাকার প্রলোভন, লাভের মায়াজাল আর সহজ রোজগারের স্বপ্ন আমাদের সন্তানদের, ভাইদের, ছাত্রদের, এমনকি শিক্ষকদের পর্যন্ত পোক্তভাবে বেঁধে ফেলেছে। প্লে স্টোর আর অ্যাপ স্টোরে গেলেই আপনি পাবেন শতাধিক বেটিং অ্যাপ—1xBet, Bet365, Melbet, Mostbet, Fairplay, Parimatch, Crickex, Dafabet—তালিকা দীর্ঘ, জাল বিশাল, আর শিকার? আমরা সবাই।
এই অ্যাপগুলো প্রথমেই দেয় “ফ্রি বোনাস” বা “ওয়েলকাম গিফট”—তোমাকে শুধু অ্যাকাউন্ট খুলতে বলবে, ২০০ টাকা ‘ফ্রি’, সাথে “প্রেডিকশন টিপস”। তুমি খুশি, ভাবো: ‘টাকা আসছে, খেলা দেখে তো আমি এমনিতেই ভবিষ্যৎ বলতে পারি!’—সেখানেই শুরু হয় প্রথম পতন। তারপর তুমি জিতলে তারা বলে, “আরেকটু দাও, আরও জিতবে”—তুমি হেরে গেলে বলে, “আজ নয়, কাল ঘুরে দাঁড়াবে”—এইভাবে তারা তোমাকে শেখায়, কিভাবে টাকা খোয়াতে হয় আর মনকে বুঝ দিতে হয়। এটা আর খেলা থাকে না—এটা হয়ে যায় আসক্তি, একপ্রকার ডিজিটাল মাদক, যার তৃষ্ণা কখনো মেটে না।
এই ‘খেলার’ নামেই গত এক বছরে দক্ষিণ এশিয়ায় ৭০ বিলিয়ন ডলার লেনদেন হয়েছে—তার ভেতর অন্তত কয়েক হাজার কোটি টাকা বাংলাদেশ থেকে গেছে, অফশোর অ্যাকাউন্টে, ক্রিপ্টোকারেন্সির মাধ্যমে, মোবাইল ব্যাংকিংয়ের গোপন চ্যানেলে। বিকাশ, নগদ, রকেট—সবকিছু ব্যবহার হচ্ছে, অথচ কেউ জানে না কার কাছে টাকা যাচ্ছে। প্রতিদিন হাজার হাজার তরুণ ঢুকছে এই খেলায়, অনেকে আবার নিজেদের পড়ার টাকা, বাসা ভাড়ার টাকা, এমনকি মায়ের গয়না বন্ধক রেখে খেলে যাচ্ছে। প্রতিমাসে বাংলাদেশে অনলাইন বেটিংয়ের মাধ্যমে ৩০০ থেকে ৫০০ কোটি টাকা হারিয়ে যাচ্ছে—এটা কেবল অর্থনীতি নয়, এক বিশাল নৈতিক, মানসিক ও সামাজিক বিপর্যয়ের ইঙ্গিত।
শুধু শহরে নয়, এই জুয়া এখন গ্রামে ঢুকে পড়েছে। স্মার্টফোন হাতে নিয়ে এক কিশোর রাতভর খেলে, আর সকালে স্কুলে যায় না। কেউ কেউ টিকটকে ‘বেটিং টিপস’ দিচ্ছে, ইউটিউবে লাইভে খেলা বিশ্লেষণ করছে, আর দর্শকদের বলছে—“দেখুন আমি কিভাবে দিনে ৫০০০ টাকা ইনকাম করছি।” বাস্তবটা হল, এই ইনকাম নয়, এটি একপ্রকার বিভ্রান্তি। এবং এই বিভ্রান্তির মধ্যে দিয়ে একেকজন হারিয়ে ফেলছে তার আত্মসম্মান, পরিবার, পড়ালেখা, ভবিষ্যৎ—সবকিছু।
আমাদের উদ্দেশ্য কখনোই এই নয় যে, আমরা আমাদের সব সমস্যার জন্য পশ্চিমাদের দোষ দেই বা তাদের সাথে জড়িয়ে ফেলি। বরং আমাদের প্রকৃত উদ্দেশ্য হচ্ছে—মানুষকে এই মৌলিক সত্যটা উপলব্ধি করানো যে, ইসলামী জীবনব্যবস্থার বাইরে কোনো জীবনব্যবস্থা, দর্শন বা তন্ত্র-মন্ত্রকে গ্রহণ করলে আমাদের কী কী বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হয়। ইতিহাস, সমাজ এবং বাস্তবতা আমাদেরকে দেখিয়ে দিয়েছে—আল্লাহর নাজিলকৃত হিদায়াত ছাড়া মানবজাতির বানানো কোনো শাসনব্যবস্থা বা সামাজিক কাঠামো মানুষের প্রকৃত কল্যাণ নিশ্চিত করতে পারে না। বরং এসব ব্যবস্থা মানুষকে ধীরে ধীরে স্বজাতিচ্যুত করে, নৈতিকভাবে ধ্বংস করে এবং তাকে দুনিয়ার এক নেশাগ্রস্ত গৃহপালিত প্রাণীতে পরিণত করে ফেলে।
এই বাস্তবতার একটি নির্মম উদাহরণ হচ্ছে—অনলাইন জুয়া এবং এই জুয়া-ভিত্তিক অ্যাপগুলোর অনুপ্রবেশ। এটা নিছক কাকতালীয় নয় যে, এইসব অ্যাপ এখন শিশু-কিশোর, যুবক এমনকি গৃহিণীদের মাঝেও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ছে। এর মূল পেছনে কাজ করছে এক ভয়ানক পুঁজিবাদী কর্পোরেট সংস্কৃতি—একটা এমন দর্শন যার জন্য মানবতা, মূল্যবোধ, নৈতিকতা, এমনকি ব্যক্তির ধ্বংসও কোনো ব্যাপার না—যতক্ষণ না লাভ হচ্ছে। তাদের কাছে মানুষের আসক্তি মানে মুনাফা। মানুষের দুর্বলতা মানে তাদের বাজার। এবং মানুষের পতন মানে তাদের বিজয়।
এখন এই কর্পোরেশনগুলো কখনো ‘বিনোদন’-এর মোড়কে, কখনো ‘উদ্ভাবন’ বা ‘স্টার্টআপ কালচার’-এর নামে আমাদের সমাজে ঢুকছে। তারা এমন এক বাস্তবতা তৈরি করছে যেখানে নেশা, আসক্তি, ঝুঁকি, লোভ, এবং ত্বরিত সাফল্যের মায়াজালে মানুষ আটকে পড়ে। মানুষ ভাবতে থাকে—একটু কৌশলে আমি লাখপতি হয়ে যাবো, এক ক্লিকেই আমার ভাগ্য বদলে যাবে। কিন্তু তারা বুঝতে পারে না, এই খেলা—এই ডিজিটাল ফাঁদ—আসলে তাদের সময়, টাকা, সম্পর্ক এবং ঈমান—সবকিছু নিঃশেষ করে দিচ্ছে।
আর এই ফাঁদের মূল কারণ শুধু প্রযুক্তি নয়, এর পেছনের দর্শন। কারণ প্রযুক্তি নিজে নিরপেক্ষ—তা আপনি ইসলামি খিদমতে ব্যবহার করবেন না কি মানুষ ধ্বংসে, সেটা নির্ধারণ করে আপনার দৃষ্টিভঙ্গি। আর এই দৃষ্টিভঙ্গিটিই যখন পুঁজিবাদী, তখন প্রযুক্তিও রূপ নেয় এক ভয়ংকর অস্ত্রে, যা আমাদের কিশোরদের ঈমান কেড়ে নিচ্ছে, পরিবারগুলোতে অশান্তি ঢুকিয়ে দিচ্ছে, এবং একে একে আমাদের পুরো সমাজকে নৈতিক দেউলিয়াত্বের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
আমরা যদি ইসলামের মৌলিক জীবনব্যবস্থাকে ফিরিয়ে না আনি, তাহলে শুধু অনলাইন জুয়াই নয়—এইরকম হাজারো ব্যাধি আমাদের সমাজকে গিলে খাবে। কারণ এসব ব্যাধি কোনো বিচ্ছিন্ন সমস্যা নয়, বরং একটি বিকৃত সভ্যতার অভিন্ন ফল। সুতরাং আমাদেরকে শুধু প্রতিরোধেই নয়, বিকল্প গঠনে মনোনিবেশ করতে হবে—ইসলামী আদর্শের আলোকে একটি পূর্ণ জীবনব্যবস্থা গড়ে তোলার কাজ শুরু করতে হবে। যেন মানুষ বুঝতে পারে, প্রকৃত মুক্তি শুধুই ইসলামি হিদায়াতে, আল্লাহর বিধানে।
এই পরিস্থিতিতে আমাদের সবচেয়ে জরুরি করণীয় হলো—সচেতনতা সৃষ্টি। এবং এই সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে কেবল সমাজে নয়, শুরু করতে হবে নিজের ভেতর থেকেই। প্রথমেই নিজেকে সচেতন করতে হবে, নিজের চোখ খুলতে হবে। এরপর বোঝাতে হবে নিজের পরিবার-পরিজনকে, ভাই-বান্ধবকে, সন্তানেরা যারা ভবিষ্যতের নেতৃত্বের উত্তরাধিকারী—তাদেরকে। ধীরে ধীরে সমাজের প্রতিটি স্তরে ছড়িয়ে দিতে হবে এই হুঁশিয়ার বার্তা: ইসলামবিরোধী জীবনধারা আমাদের ধ্বংস করছে, আর এর থেকে মুক্তির একমাত্র পথ হল ফিরে যাওয়া ইসলামের দিকে।
হ্যাঁ, এটা ঠিক যে একজন ব্যক্তির পক্ষে গোটা উম্মাহ বা একটি রাষ্ট্রকে একা সচেতন করা সম্ভব নয়। কিন্তু যদি প্রতিটি ব্যক্তি নিজ নিজ পরিসরে এই দায়িত্ব পালন করে—তাহলে ব্যক্তির দ্বারা পরিবার, পরিবার দ্বারা সমাজ এবং সমাজ দ্বারা একদিন গোটা রাষ্ট্রে পরিবর্তন আসা মোটেও অসম্ভব নয়। ইতিহাসে এমন বহু দৃষ্টান্ত রয়েছে যেখানে একটি সজাগ আত্মা থেকে সূচিত হয়েছে একটি বৈপ্লবিক জাগরণ।
এই দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে আমরা শায়খ তামিম আল আদনানি হাফিজাহুল্লাহ-র মতো আলেমদের অনুসরণ করতে পারি। তিনি দীর্ঘদিন ধরে মুসলিম উম্মাহকে ঘুম ভাঙানোর জন্য একের পর এক প্রাঞ্জল, হৃদয়ছোঁয়া, যুক্তিপূর্ণ আলোচনা প্রদান করে আসছেন। তিনি সতর্ক করেছেন আমাদের—যেন আমরা জীবনকে খেলাধুলা, বিনোদন আর অনুকরণে মগ্ন করে না ফেলি। তিনি দেখিয়েছেন, কীভাবে বর্তমানের বিষাদগ্রস্ত যুবসমাজ পুনরায় আল্লাহর পথে ফিরে আসতে পারে। শাইখের আলোচনাগুলো যেন আরো বেশি মানুষের কাছে পৌঁছায়, সে জন্য আমাদেরকেই উদ্যোগ নিতে হবে।
যেখানে সম্ভব, সেগুলো বড় স্ক্রিনে বা প্রজেক্টরে দেখানোর ব্যবস্থা করুন—হয়তো সেটা মসজিদের এক কোণে, পাড়া-মহল্লার একটি কেন্দ্রে, বা কোনো যুব সংঘের উদ্যোগে। আপনারা চাইলে ‘মোবাইল দাওয়াহ’ আকারে—একটি সাইকেল, একটি ছোট প্রজেক্টর ও স্পিকারে করেও এই বার্তাগুলো মানুষের দ্বারে পৌঁছে দিতে পারেন।
কেউ যদি মনে করেন, শায়খ তামিম আল আদনানি হাফিজাহুল্লাহ-র আলোচনার প্রচারে কোনো সমস্যা হতে পারে, তাহলেও চিন্তার কিছু নেই। ইসলামী বিশ্বে বহু দায়ী, বহু স্কলার আছেন যাঁদের আলোচনা আরবি ও ইংরেজিতে অনুবাদিত বা রেকর্ডকৃত অবস্থায় পাওয়া যায়—সেগুলোর বাংলা ডাবিং বা সাবটাইটেল তৈরি করুন। এরপর তা সহজেই ছড়িয়ে দিতে পারবেন পরিবারের মাঝে, যুবকদের মাঝে, স্কুল-কলেজ বা কর্মস্থলের বন্ধুবান্ধবদের মাঝে। কারণ শায়খ আদনানি হাফিজাহুল্লাহ এমন কিছু দাওয়াত দিচ্ছেন না যা নতুন, উদ্ভাবিত বা ইসলামে নতুন করে সংযুক্ত—বরং তিনি কেবলমাত্র সেই চিরন্তন, বিশুদ্ধ ইসলামী আদর্শকেই তুলে ধরছেন যা কুরআন, সুন্নাহ এবং সালাফে সালেহীনের পথের সাথে সরাসরি সংগতিপূর্ণ।
সুতরাং যতক্ষণ পর্যন্ত আমাদের দাওয়াহ কুরআন, সুন্নাহ এবং সালাফে সালেহীনের পথ ও পন্থার উপর প্রতিষ্ঠিত থাকবে—ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা শায়খ তামিম আল আদনানি হাফিজাহুল্লাহ-র লেকচার ব্যবহার করি কিংবা অন্য কোনো হকপন্থী দাঈ বা আলেমের লেকচার প্রচার করি—তাতে কোনো সমস্যা নেই, বরং এটিই আমাদের দ্বীনি দায়িত্বের অংশ। কারণ আমরা মানুষকে নিজের কোনো মতবাদে আহ্বান করছি না, বরং আহ্বান করছি সেই দ্বীনের দিকে—যা আল্লাহ তাঁর রাসূল ﷺ এর মাধ্যমে আমাদের জন্য পরিপূর্ণভাবে নাজিল করেছেন এবং যেটার ওপর সালাফে সালেহীন চলেছেন।
মূল কথা হচ্ছে—যে নেশা, গেম, পর্নোগ্রাফি, অনলাইন জুয়া বা বিনোদনের ফাঁদ আমাদের সমাজকে গ্রাস করছে—তার প্রকৃত সমাধান কোনো টেকনোলজিক্যাল ফিল্টার, অ্যাপ ব্লকার, কিংবা বাহ্যিক কড়াকড়ি নয়। এর একমাত্র কার্যকর সমাধান হচ্ছে—a deep internal awakening—a consciousness rooted in Tawheed, accountability before Allah, and the reality of Akhirah।
فَهَلْ أَنتُم مُّنتَهُونَ
তবে কি তোমরা নিবৃত্ত হবে না?
(সূরা আল-মায়িদাহ ৫:৯১)
তবে কি তোমরা নিবৃত্ত হবে না?
(সূরা আল-মায়িদাহ ৫:৯১)
Comment