তালিবান ও আল-কায়েদার মধ্যকার সম্পর্ক নিয়ে উত্থাপিত আপত্তিসমূহের জবাব (১)
মুনশি আব্দুর রহমান
ভূমিকা:
আজকের দিনে আমরা প্রায়শই এমন কিছু প্রশ্নের মুখোমুখি হই, বিশেষ করে সামাজিক মাধ্যমগুলোতে, যেগুলো তালিবান ও আল-কায়েদা (একিউ) সম্পর্কিত বিভ্রান্তি কিংবা জিজ্ঞাসা তুলে ধরে। যেমন:
তালিবান ও আল-কায়েদার মধ্যে সম্পর্ক কেমন?
আল-কায়েদা কি তালিবানদের অধীনস্থ?
তালিবান কি আল-কায়েদার বৈশ্বিক জিহাদের অনুমোদন দিয়েছে?
আল-কায়েদা কি তালিবানকে ঠকিয়েছে?
তালিবান কি আল-কায়েদাকে গ্রহণ করেছে, নাকি দূরে ঠেলে দিয়েছে?
এই ধরনের নানা প্রশ্নের উত্তর জানার আগ্রহ অনেকের মনেই রয়েছে। তাই ইনশা আল্লাহ, আমি এখানে কিছু মূল বিষয়ের আলোকপাত করবো এবং তালিবান ও আল-কায়েদার সম্পর্ক বিষয়ে বাস্তব ও দলিলভিত্তিক একটি প্রেক্ষাপট তুলে ধরার চেষ্টা করবো। ওমা তাওফিকী ইল্লা বিল্লাহ
ইতিহাসের সংক্ষিপ্ত পটভূমি:
প্রথমেই এই মৌলিক সত্যটি জানা জরুরি যে, আল-কায়েদার গোড়াপত্তনই আফগানিস্তানের ভূমিতে। এই সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতাগণ—মুজাহিদ ও শায়খরা—তালিবান সরকারের আবির্ভাবের আগেই আফগানিস্তানে জিহাদের মাঠে সক্রিয় ছিলেন। তালিবান যখন আফগানিস্তানের ক্ষমতা গ্রহণ করে, তখন শায়খ উসামা বিন লাদেন রহিমাহুল্লাহ সুদানে অবস্থান করছিলেন। পরবর্তীতে তিনি আফগানিস্তানে ফিরে আসেন এবং এখানেই আল-কায়েদার আনুষ্ঠানিক কাঠামো গড়ে ওঠে।
শায়খ উসামা রহিমাহুল্লাহ তালিবানদের প্রথম আমীর, আমীরুল মুমিনীন মোল্লা মুহাম্মদ উমর রহিমাহুল্লাহ-কে বাইআত প্রদান করেন—এটি ইতিহাসের এক অমোঘ সত্য। এমন নয় যে এটি কোনো গোপন বিষয়; বরং বিভিন্ন প্রমাণ ও বক্তব্যে এটি বারবার উঠে এসেছে। একইভাবে এটি স্বীকৃত যে, তালিবান নেতৃত্বও সেই বাইআত গ্রহণ করেছিল।
এই আলোচনা আমি বিভাগভিত্তিক উপস্থাপন করবো, যাতে করে পাঠকের বোধগম্যতা ও অনুধাবন সহজ হয় ইনশা আল্লাহ। আমার বিনীত অনুরোধ— আপনারা যেন ধৈর্য্য সহকারে পুরো আলোচনা মনোযোগ দিয়ে পড়েন। আশা করছি, এতে করে আপনাদের সংশয় দূর হবে এবং তালিবান ও আল-কায়েদার সম্পর্ক বিষয়ে একটি স্বচ্ছ ধারণা লাভ করতে পারবেন ইনশা আল্লাহ।
আলোচনার কাঠামো
প্রথম অধ্যায়:
শায়খ উসামা রহিমাহুল্লাহ কর্তৃক তালিবানের প্রথম আমীর, আমীরুল মুমিনীন মোল্লা মুহাম্মদ উমর রহিমাহুল্লাহ-কে বাইআত প্রদান এবং আমীরের পক্ষ থেকে তার জবাব।
দ্বিতীয় অধ্যায়:
শায়খ আইমান আয-যাওয়াহিরী কর্তৃক তালিবানের দ্বিতীয় আমীর, মোল্লা আখতার মুহাম্মদ মানসুর রহিমাহুল্লাহ-কে বাইআত এবং সেই বাইআতের জবাবে তালিবান আমীরের প্রতিক্রিয়া।
তৃতীয় অধ্যায়:
বর্তমান তালিবান আমীর, আমীরুল মুমিনীন মোল্লা হিবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা (হাফিজাহুল্লাহ)-কে শায়খ আইমান আয-যাওয়াহিরীর বাইআত প্রদান।
চতুর্থ অধ্যায়:
তালিবান আল-কায়েদাকে কীভাবে দেখে? তাদের পারস্পরিক দৃষ্টিভঙ্গি ও সহযোগিতার বাস্তবতা।
পঞ্চম অধ্যায়:
আল-কায়েদা কি তালিবানদের আদেশ ও দিকনির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করে?
এই আলোচনার মধ্য দিয়ে আমরা এক ঐতিহাসিক, নীতিগত ও বাস্তব প্রেক্ষাপটে তালিবান ও আল-কায়েদার সম্পর্ককে বোঝার চেষ্টা করবো ইনশা আল্লাহ।
*****
চলবে...ইনশা আল্লাহ
Comment